Tweet
এক মুমিনের স্বপ্ন
এক মুমিনের স্বপ্ন
ফযরের কিছু পরে আবার ঘুমুতে গিয়েছিলাম। সেই ঘুমের মধ্যেই দেখলাম এই অসাধারণ স্বপ্নটা, যেটা এখন আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি...
স্বপ্নের সূচনা
আমি হাঁটছিলাম গাযার একটা শহরে, পাহাড়ের কাছে একটা শহর এলাকায়। বামদিকে দেখলাম বেশ কিছু কাঁচাপাকা বাড়িঘর। ডানদিকটা আবার অন্যরকম, বেশ খোলামেলা আর প্রায় জনমানবশূন্য একটা এলাকা....
মানুষজন ততক্ষণে শহর খালি করে পালিয়েছে। নিচ দিয়ে উড়ে যাওয়া ইসরায়েলি জেটগুলোর গমগমে শব্দ আকাশকে যেন চিরে ফেলছিলো। সাথে কান ফাটানো বিস্ফোরণের আওয়াজ তো আছেই। (আমি এসব আওয়াজ আগেও শুনেছি - বসনিয়া, সিরিয়া আর আফগানিস্তানে। কিন্তু ইসরায়েলি জেটের আওয়াজগুলো স্রেফ একটা আতংক!)...
নারী, পুরুষ, শিশু - সবাই দৌড়াচ্ছিলো খোলা এলাকাটার দিকে। বাচ্চাদের সংখ্যা ছিল অনেক। কিছুদূর এভাবে যাবার পর চোখে পড়লো দূরে বেশ কিছু ছায়ামূর্তি, এগিয়ে আসছে। আস্তে আস্তে একেবারে কাছে চলে এলো তারা.....
সবাই থমকে দাঁড়ালো। তাহলে কি স্থলপথে আগ্রাসনও শুরু হয়ে গেল? এগিয়ে আসা লোকগুলো কি তবে ইসরায়েলি স্পেশাল ফোর্স?
ছায়ামূর্তিগুলো স্পষ্ট হবার পর ভয়টা রূপ নিলো কৌতূহলে...
আগন্তুকদের পরনে সালওয়ার কামিজ, কাঁধে ভাঁজ করে ফেলে রাখা শাল। কারও কারও মাথায় কালো পাগড়ি, বাকিদের মাথায় আ|ফগানি পাকল। সবার পায়েই স্যান্ডেল। কয়েকজনের হাতে ওয়াকিং স্টিকও দেখলাম। কিন্তু সবাইকেই দেখলাম হয় একে৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল নয়তো আরপিজি লঞ্চার বহন করছেন নিজেদের সাথে।
কয়েকজন ফিলিস্তিনি চিৎকার করে উঠলো আফগান মুজাহিদরা চলে এসেছেন বলে। বাকিরা বলাবলি করতে লাগলো তালিবান এসেছে, তালিবান এসেছে! আফগানদের মত দেখতে আগন্তুকরা আমাদের কাছে এসে পৌঁছাতেই সবাই দৌড় বন্ধ করে দাঁড়িয়ে পড়লো। ইসরায়েলি জেটগুলোও ততক্ষণে চলে গিয়েছে বলেই মনে হয়েছিলো...
সবাই হাঁফ ছাড়লো কিছুক্ষণের জন্য। স্বস্তি অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না, একজন জিজ্ঞেস করে উঠলো, "এই জেটগুলোর মোকাবিলায় রাইফেল দিয়ে তারা করবেটা কি? আর এটা আফগানিস্তান নয় যে পাহাড় পর্বতের আড়ালে লুকিয়ে থেকে আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবো। এটা হচ্ছে গাযা, পৃথিবীর বৃহত্তম কারাগার, যেখানে আমরা ভূমি আর সাগর দুদিক দিয়েই আমাদের শত্রুর হাতে অবরুদ্ধ।"
আগন্তুকদের মধ্যে নেতাগোছের আফগান জবাব দিলেন:
"প্রিয় ভাই আমার, আপনি ঠিকই বলেছেন। হ্যাঁ এটা আফগানিস্তান নয়। কিন্তু আপনাদের কাছে এমন দুইটা জিনিস আছে যা আমাদের কখনও ছিল না। এই দুই জিনিস আমাদের পাহাড় পর্বতগুলোর চেয়েও অনেক অনেক বিশাল। আপনাদের আছে আল মাসরা আল মুবারাক (আল আক্বসা আর এর চারপাশের ভূমি) এবং আপনাদের সাথে আছে পুরো বিশ্বের পক্ষ থেকে সমর্থন আর সহানুভূতি। আর এজন্যই আমরাও চলে এসেছি এখানে, আপনাদের সাথে।"
ঠিক সেই মূহুর্তে, একজোড়া জেট আবার ফিরে এলো। জেটগুলো উড়ে আসতে লাগলো আমাদের দিকে। কিন্তু এবার কেউ জায়গা ছেড়ে নড়লো না। কেউই না। আমি আকাশের দিকে আমার হাত বাড়িয়ে দিলাম। সেই আকাশ, যে আকাশকে ইসরায়েলি জেট দূষিত করে রেখেছে। আকাশের দিকে হাত তুলে বাকি সবার সাথে মিলে তিনবার আল্লাহকে ডাকলাম এই বলে:
اللهم اسقط طائراتهم
اللهم اسقط طائراتهم
اللهم اسقط طائراتهم
(ইয়া আল্লাহ! তুমি তাদের বিমানগুলোকে ফেলে দাও।)
আমরা দু'আ করছিলাম। সেসময় একজন আফগান মুজাহিদ উনার কাঁধে তুলে নিলেন একটা রকেট লঞ্চার। নিশানা ঠিক করে তাক করলেন একটা জেটের দিকে...
ফায়ার করার আগে তাঁর মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো "বিসমিল্লাহ" আর তারপরই ফায়ার...
দু'আ থেমে গেল সবার। সবগুলো চোখের দৃষ্টি গেঁথে গেল ইসরায়েলি জেটকে ধাওয়া করা মিসাইলটার ওপর...
বিস্ফোরণটা অবশ্য আশানুরূপ বিশাল হল না। কিন্তু আমাদের বিস্ময় মেশানো দৃষ্টির সামনে আকাশের মধ্যেই চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল প্লেনটা, আর তারপরই আগুনের একটা বলে রূপ নিয়ে আছড়ে পড়লো যমীনের বুকে। একটু আগেও যে জায়গাটাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করবে বলে উড়াল দিয়েছিল প্লেনটা, সেই জায়গাটাতেই আছড়ে পড়লো তার দলা পাকানো ধ্বংসাবশেষ। সম্মিলিত জনতার উল্লাস মেশানো "আল্লাহু আকবার" ধ্বনি প্লেন ক্র*্যাশের আওয়াজের চেয়েও বেশি হয়ে কানে ধরা দিলো।
"এই স্টিংগার অ্যান্টি এয়ারক্র*্যাফট সিস্টেম এমন একটা হাদিয়া যা শুধু আপনাদের জন্যই রেখে দিয়েছি আমরা", মিসাইল নিক্ষেপ করা মুজাহিদ হাসিমুখে বললেন কথাটি।
স্বপ্নটা শেষ হয়ে যাবার ঠিক আগে দেখতে পেলাম আফগান সেই দলটির নেতা বলছেন:
صبرا يا أهل فلسطين فإن نصر الله قريب
"সবর করুন, ও ফিলিস্তিনবাসী! নিশ্চিতভাবেই, আল্লাহর সাহায্য খুব কাছেই!"
Moazzam Begg এর টাইমলাইন থেকে নেওয়া। স্বপ্নটির বর্ণনা তাঁরই।
আমি হাঁটছিলাম গাযার একটা শহরে, পাহাড়ের কাছে একটা শহর এলাকায়। বামদিকে দেখলাম বেশ কিছু কাঁচাপাকা বাড়িঘর। ডানদিকটা আবার অন্যরকম, বেশ খোলামেলা আর প্রায় জনমানবশূন্য একটা এলাকা....
মানুষজন ততক্ষণে শহর খালি করে পালিয়েছে। নিচ দিয়ে উড়ে যাওয়া ইসরায়েলি জেটগুলোর গমগমে শব্দ আকাশকে যেন চিরে ফেলছিলো। সাথে কান ফাটানো বিস্ফোরণের আওয়াজ তো আছেই। (আমি এসব আওয়াজ আগেও শুনেছি - বসনিয়া, সিরিয়া আর আফগানিস্তানে। কিন্তু ইসরায়েলি জেটের আওয়াজগুলো স্রেফ একটা আতংক!)...
নারী, পুরুষ, শিশু - সবাই দৌড়াচ্ছিলো খোলা এলাকাটার দিকে। বাচ্চাদের সংখ্যা ছিল অনেক। কিছুদূর এভাবে যাবার পর চোখে পড়লো দূরে বেশ কিছু ছায়ামূর্তি, এগিয়ে আসছে। আস্তে আস্তে একেবারে কাছে চলে এলো তারা.....
সবাই থমকে দাঁড়ালো। তাহলে কি স্থলপথে আগ্রাসনও শুরু হয়ে গেল? এগিয়ে আসা লোকগুলো কি তবে ইসরায়েলি স্পেশাল ফোর্স?
ছায়ামূর্তিগুলো স্পষ্ট হবার পর ভয়টা রূপ নিলো কৌতূহলে...
আগন্তুকদের পরনে সালওয়ার কামিজ, কাঁধে ভাঁজ করে ফেলে রাখা শাল। কারও কারও মাথায় কালো পাগড়ি, বাকিদের মাথায় আ|ফগানি পাকল। সবার পায়েই স্যান্ডেল। কয়েকজনের হাতে ওয়াকিং স্টিকও দেখলাম। কিন্তু সবাইকেই দেখলাম হয় একে৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল নয়তো আরপিজি লঞ্চার বহন করছেন নিজেদের সাথে।
কয়েকজন ফিলিস্তিনি চিৎকার করে উঠলো আফগান মুজাহিদরা চলে এসেছেন বলে। বাকিরা বলাবলি করতে লাগলো তালিবান এসেছে, তালিবান এসেছে! আফগানদের মত দেখতে আগন্তুকরা আমাদের কাছে এসে পৌঁছাতেই সবাই দৌড় বন্ধ করে দাঁড়িয়ে পড়লো। ইসরায়েলি জেটগুলোও ততক্ষণে চলে গিয়েছে বলেই মনে হয়েছিলো...
সবাই হাঁফ ছাড়লো কিছুক্ষণের জন্য। স্বস্তি অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না, একজন জিজ্ঞেস করে উঠলো, "এই জেটগুলোর মোকাবিলায় রাইফেল দিয়ে তারা করবেটা কি? আর এটা আফগানিস্তান নয় যে পাহাড় পর্বতের আড়ালে লুকিয়ে থেকে আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবো। এটা হচ্ছে গাযা, পৃথিবীর বৃহত্তম কারাগার, যেখানে আমরা ভূমি আর সাগর দুদিক দিয়েই আমাদের শত্রুর হাতে অবরুদ্ধ।"
আগন্তুকদের মধ্যে নেতাগোছের আফগান জবাব দিলেন:
"প্রিয় ভাই আমার, আপনি ঠিকই বলেছেন। হ্যাঁ এটা আফগানিস্তান নয়। কিন্তু আপনাদের কাছে এমন দুইটা জিনিস আছে যা আমাদের কখনও ছিল না। এই দুই জিনিস আমাদের পাহাড় পর্বতগুলোর চেয়েও অনেক অনেক বিশাল। আপনাদের আছে আল মাসরা আল মুবারাক (আল আক্বসা আর এর চারপাশের ভূমি) এবং আপনাদের সাথে আছে পুরো বিশ্বের পক্ষ থেকে সমর্থন আর সহানুভূতি। আর এজন্যই আমরাও চলে এসেছি এখানে, আপনাদের সাথে।"
ঠিক সেই মূহুর্তে, একজোড়া জেট আবার ফিরে এলো। জেটগুলো উড়ে আসতে লাগলো আমাদের দিকে। কিন্তু এবার কেউ জায়গা ছেড়ে নড়লো না। কেউই না। আমি আকাশের দিকে আমার হাত বাড়িয়ে দিলাম। সেই আকাশ, যে আকাশকে ইসরায়েলি জেট দূষিত করে রেখেছে। আকাশের দিকে হাত তুলে বাকি সবার সাথে মিলে তিনবার আল্লাহকে ডাকলাম এই বলে:
اللهم اسقط طائراتهم
اللهم اسقط طائراتهم
اللهم اسقط طائراتهم
(ইয়া আল্লাহ! তুমি তাদের বিমানগুলোকে ফেলে দাও।)
আমরা দু'আ করছিলাম। সেসময় একজন আফগান মুজাহিদ উনার কাঁধে তুলে নিলেন একটা রকেট লঞ্চার। নিশানা ঠিক করে তাক করলেন একটা জেটের দিকে...
ফায়ার করার আগে তাঁর মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো "বিসমিল্লাহ" আর তারপরই ফায়ার...
দু'আ থেমে গেল সবার। সবগুলো চোখের দৃষ্টি গেঁথে গেল ইসরায়েলি জেটকে ধাওয়া করা মিসাইলটার ওপর...
বিস্ফোরণটা অবশ্য আশানুরূপ বিশাল হল না। কিন্তু আমাদের বিস্ময় মেশানো দৃষ্টির সামনে আকাশের মধ্যেই চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল প্লেনটা, আর তারপরই আগুনের একটা বলে রূপ নিয়ে আছড়ে পড়লো যমীনের বুকে। একটু আগেও যে জায়গাটাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করবে বলে উড়াল দিয়েছিল প্লেনটা, সেই জায়গাটাতেই আছড়ে পড়লো তার দলা পাকানো ধ্বংসাবশেষ। সম্মিলিত জনতার উল্লাস মেশানো "আল্লাহু আকবার" ধ্বনি প্লেন ক্র*্যাশের আওয়াজের চেয়েও বেশি হয়ে কানে ধরা দিলো।
"এই স্টিংগার অ্যান্টি এয়ারক্র*্যাফট সিস্টেম এমন একটা হাদিয়া যা শুধু আপনাদের জন্যই রেখে দিয়েছি আমরা", মিসাইল নিক্ষেপ করা মুজাহিদ হাসিমুখে বললেন কথাটি।
স্বপ্নটা শেষ হয়ে যাবার ঠিক আগে দেখতে পেলাম আফগান সেই দলটির নেতা বলছেন:
صبرا يا أهل فلسطين فإن نصر الله قريب
"সবর করুন, ও ফিলিস্তিনবাসী! নিশ্চিতভাবেই, আল্লাহর সাহায্য খুব কাছেই!"
Moazzam Begg এর টাইমলাইন থেকে নেওয়া। স্বপ্নটির বর্ণনা তাঁরই।
Comment