Announcement

Collapse
No announcement yet.

সমাগত ঈদুল আযহা : কিছু কথা

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সমাগত ঈদুল আযহা : কিছু কথা

    সমাগত ঈদুল আযহা : কিছু কথা




    الحمد لله وكفي وسلام على عباده الذين اصطفي، أما بعد
    প্রশংসা করছি মহান রবের যিনি আমাদের সুপথ প্রদর্শন করেছেন। যিনি আমাদেরকে ঈমানের আলোয় আলোকিত করেছেন। যিনি আমাদেরকে সুমহান দ্বীন ইসলামের মাধ্যমে সৌভাগ্যবান করেছেন। দুরূদ ও সালাম পড়ছি প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাঃ এর প্রতি যিনি পুরো মানব জাতির কাছে স্বীয় রবের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর পূত-পবিত্র সঙ্গীদের উপর যারা মানব জাতির জন্য স্থাপন করেছেন এক উত্তম আদর্শ। সাথে সাথে শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর সম্ভ্রান্ত পরিবার বর্গের উপর যারা দুর্দিনেও সঙ্গ ত্যাগ করেননি প্রিয় রাসূলের। পর কথা,


    ইসলামই একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা :

    ইসলাম এক পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এই দ্বীন ব্যতীত অন্য কোনো জীবন ব্যবস্থা নেই যা মানব জাতির সকল সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান দিতে পারে। এই ইসলামই একমাত্র জীবন ব্যবস্থা যা শত শত বছর ধরে কতিপয় সর্দারের গোলামির জিঞ্জিরে আবদ্ধ মানব জাতিকে মুক্তি দিয়েছে। ইসলামই একমাত্র দ্বীন যা অর্থের সুষম বন্টন করেছে। সুতরাং সকল সমস্যার সমাধান পেতে ইসলামের বিকল্প নেই। দারিদ্র মোচনে ইসলামই সর্বোত্তম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইসলাম ছাড়া সকল ব্যবস্থা দুর্বলদের ঠকিয়েছে। পুঁজিবাদ বলুন আর সমাজতন্ত্র বলুন সকল ব্যবস্থাই সম্পদকে গুটিকয়েক সন্ত্রাসের সম্পদে পরিণত করেছে। ইসলাম যাকাত, সাদাকার বিধান দিয়ে দারিদ্র মোচনে উত্তম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইসলাম সাদাকার বিভিন্ন ফযীলত বর্ণনা করেছে। ইসলাম মুসলিম উম্মাহকে দান সাদকা করতে উৎসাহিত করেছে। ইসলাম মুমিনদের জন্য দৈহিক ও আর্থিক বিভিন্ন প্রকারের ইবাদাত বিধিবদ্ধ করেছেন। দৈহিক ইবাদাত যেমন, নামায, রোজা ইত্যাদি। আর্থিক যেমন, হজ্জ, যাকাত, কুরবানী ইত্যাদি। এই প্রত্যেকটি ইবাদাত একজন সামর্থ্যবান মুমিনদের উপর আবশ্যক। কুরবানী অন্যতম একটি ইবাদাত।


    কুরবানী কী? :

    কুরবানী পূর্ববর্তী সকল নবীদের যমানায় ছিলো। তবে আমাদের মতো ছিলো না, বরং ভিন্ন ছিলো।
    কুরবানী হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টির নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ কিছু শর্ত পালন করে জবাই করা।


    কুরবানীর শিক্ষা :

    প্রতিবারের মতো তাওহীদ ও ঈমানী ভ্রাতৃত্বের সুমহান বার্তা নিয়ে আমাদের দ্বারে উপস্থিত। কুরবানী আমাদেরকে তাওহীদের চেতনায় উজ্জীবিত করে। কুরবানী আমাদের শেখায় সকল ইবাদাত একমাত্র মহান রবের জন্য হবে। ইবাদাত সর্ব প্রকার শিরকের পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত হতে হবে। মহান রবের ইরশাদ,
    قُلْ إن صلاتي ونسكي ومحياي ومماتي لله رب العالمين، لا شريك له وبذلك أمرت وأنا أول المسلمين
    আপনি বলুন, আমার সালাত, আমার নুসুক, আমার জীবন, আমার মৃত্যু সব একমাত্র আল্লাহর জন্য যিনি পৃথিবীবাসীর পালনকর্তা। তাঁর কোনো শরীক নেই। আর আমাকে এই আদেশই করা হয়েছে। এবং আমিই সর্বপ্রথম আত্মসমর্পণকারী। সূরা আনআম : ১৬২
    এখানে নুসুক অর্থ হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জবাইকৃত পশু।
    সুতরাং কুরবানী থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করবো যে, সব কিছু করবো একমাত্র আল্লাহর রেযামন্দির জন্য।


    কুরবানী সামর্থ্যবান প্রত্যেকটি মুমিনের উপর ফরয :

    কুরবানী প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুমিনের উপর ফরয। যে ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী ফরয। হাদীসে এসেছে,
    মিখনাফ বিন সুলাইম রাঃ বলেন,
    كنا وقوفا مع النبي صلى الله عليه وسلم بعرفات، فسمعته يقول يا أيها الناس علي كل أهل بيت في كل عام أضحية
    আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে আরাফায় অবস্থান করছিলাম। তখন আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি, হে মানব জাতি, প্রতি বছর প্রত্যেক ঘর ওয়ালার উপর কুরবানী আবশ্যক। জামে তিরমীযী : ১৫১৮। সুনানে আবী দাউদ : ২৭৮৮ মুসন্নাফ ইবনি আবী শাইবাহ : ২৪৭৮৬
    সামর্থ্যবান কুরবানী না করলে তার ব্যাপারে কঠিন ধমক এসেছে, আবু হুরায়রা রাঃ বলেন,
    قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من وجد سعة فلم يضح فلا يقربن مصلانا
    যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে কিন্তু সে কুরবানী করলো না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের ধারে কাছেও না আসে। মুস্তাদরাকে হাকীম : ৭৫৬৫ মুসনাদে আহমাদ : ৮২৭৩। সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩১২৩।
    সুতরাং সকল সামর্থ্যবান ভাইয়েরা কুরবানী করবো ইনশাল্লাহ।

    যেন ভুলে না যাই অসহায় ভাইদের :
    এই কুরবানী আল্লাহর পক্ষ থেকে ধনী - গরীব সকলের জন্য মেহমানদারি। এই দিনে ধনীগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে মেহমানদারির প্রতিনিধিত্ব করবেন। ধনীগণ গরীব ভাইদের কাছে ডেকে বসাবেন। তাদেরকে নিজের কুরবানীর গোশত শরীক করবেন। আল্লাহর নির্দেশ,
    فكلوا منها وأطعموا القانع والمعتر كذلك سخرنها لعلكم تشكرون
    তোমরা নিজেরা খাও। ধৈর্যশীল অভাবগ্রস্তকে খাওয়াও এবং তাকেও যে নিজের অভাব প্রকাশ করে। এভাবেই আমি এই পশুগুলোকে বশীভূত করে দিয়েছি যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। সূরা হজ্জ : ১৩৬
    সুতরাং আমরা সকলে আমাদের কুরবানীর আমাদের অভাবী ভাইদের শরীক করবো। অনেকে আছে লজ্জায় চায় না আমরা তাদের কাছে সসম্মানে পাঠিয়ে দিবো। মোট কথা কেউ যেন চাইতে না হয় সেই দিকটি লক্ষ্য রাখবো। প্রবন্ধকারের মূল লক্ষ্য ছিলো, এই অংশটি ভালো ভাবে আলোচনা করা কিন্তু সময় সংক্ষিপ্ততার দরুন হলো না। তথাপি আমরা বিশেষ ভাবে আমাদের অভাবী ভাইদের প্রতি লক্ষ্য রাখবো।
    وصلي الله علي خير خلقه محمد وعلى آله وصحبه أجمعين وسلم تسليما كثيراً
    আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে উত্তম ভাবে আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন।


    সকল ভাইদের নেক দোয়ার আশায়!

  • #2
    মাশাআল্লাহ, আপনার লেখাটি সুন্দর হয়েছে। জাযাকাল্লাহ
    নিয়মিত চালিয়ে যাবে ভাই। আরো সুন্দর হবে ইনশাআল্লাহ
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment


    • #3
      জিলহজ মাসের ফযিলত অনেক। অবহেলা আর গাফিলতির মাঝে না কাটিয়ে ইবাদতে কাটিয়ে দেওয়া উত্তম এ কয়েকটি দিন। কেননা,এ কয়েকটি দিনের ফাযায়েল অনেক অনেক বেশি। যা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমানিত।
      আমাদের উচিত এ কয়েকটি দিন বেশি বেশি ইবাদত করা। আল্লাহ আমাদের তাউফিক দান করুন। আমিন
      গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ, জাযাকাল্লাহ, খুবই উপকারী পোস্ট । আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে উত্তম ভাবে আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন

        Comment

        Working...
        X