Announcement

Collapse
No announcement yet.

খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াই করার মহা ফাযীলাহ - ৩

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াই করার মহা ফাযীলাহ - ৩

    চতুর্থ ফাযীলাহ : সুসংবাদ খাওয়ারিজ হত্যাকারী ও তাদের হাতে নিহত ব্যক্তির জন্য


    سيكونُ في أُمَّتي اختلافٌ وفُرْقَةٌ ، قومٌ يُحْسِنونَ القِيلَ ، ويُسِيئونَ الفِعْلَ ، يقْرؤونَ القرآنَ لا يُجاوِزُ تراقِيَهم ، يَمْرُقونَ مِنَ الدِّينِ مُروقَ السَّهمِ مِنَ الرَّمِيَّةِ ، لَا يَرْجِعونَ حتى يَرْتَدَّ علَى فُوقِهِ ، هم شِرَارُ الخلْقِ والخلِيقَةِ ، طُوبَى لِمَنْ قتَلَهم وقتَلوهُ ، يُدْعَوْنَ إلى كتابِ اللهِ وليسوا منه فِي شيءٍ ، مَنْ قاتَلَهم كان أَوْلَى باللهِ منهم ، سيماهم التحليقُ
    আনাস ইবনু মালিক রাঃ এবং আবু সাঈদ খুদরী রাঃ বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, অচিরেই আমার উম্মাতের মাঝে বিভেদ ও ফাটল দেখা দিবে এবং এমন এক জাতি আত্মপ্রকাশ করবে যারা ভালো কথা বলবে, মন্দ কাজ করবে। তারা কুরআন পড়বে কুরআন তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে যেভাবে তীর ধনুক থেকে বেরিয়ে যায়। তারা দ্বীনের দিকে ফিরে আসবে না যতক্ষণ না তীর ধনুকের ছিলায় ফিরে আসে। তারা সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব। তাদের হত্যাকারী ও তাদের হাতে নিহত ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ। তারা কুরআনের দিকে ডাকবে কিন্তু নিজেরা তার ধারে কাছেও থাকবে না। তাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করবে তারা হবে উম্মাতের মধ্যে আল্লাহ তা'আলার সবচেয়ে নৈকট্যশীল বান্দা। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল তাদের চেনার নিদর্শন কী? উত্তরে তিনি বলেন, মাথা মুন্ডন করা (অর্থাৎ তারা অধিক মাথা মুন্ডাবে।)(সুনানু আবী দাউদ : ৪৭৬৫, আল মুসতাদরাক লিল হাকিম : ২৬৪৯, শাইখ নাসীরুদ্দীন আলবানী রহিঃ তাকে সহীহ বলেছেন। সহীহুল জামি' : ৩৬৬৮)

    ইবনু আবী আসিম রহিঃ এবং ইমাম নাসায়ী রহিঃ আয়েশা রাঃ থেকে দীর্ঘ এক বর্ণনায় উল্লেখ করেছেন যে, তিনি খাওয়ারিজের ব্যাপারে বলেছেন, সুসংবাদ ঐ ব্যক্তির জন্য যে তাদের ধ্বংস প্রত্যক্ষ করবে। ( কিতাবুস সুন্নাহ : ৯১৩, সুনানুন নাসায়ী আল কুবরা : ৮৫১৫) শাইখ নাসীরুদ্দীন আলবানী রহিঃ তাকে সহীহ বলেছেন। ( যিলালুল জান্নাহ : ২/৪৪৩)
    ইমাম আহমাদ রহিঃ সাঈদ ইবনু জুমহান থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমরা খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলাম। আমাদের সাথে আব্দুল্লাহ ইবনু আবী আউফা ছিলেন। তার একজন গোলাম খাওয়ারিজের সাথে গিয়ে মিলিত হলো। সে ঐ তীরে, আমরা এই তীরে। আমরা তাকে ডেকে বললাম, হে আবু ফাইরুয হে আবু ফাইরুয! ধ্বংস তোমার। এই যে তোমার মনিব আব্দুল্লাহ ইবনু আবী আউফা। উত্তরে গোলাম বললো, যদি সে হিজরত করতো কতই না উত্তম হতো! তিনি বলেন, তার মনিব জিজ্ঞেস করলো : আল্লাহর দুশমন কী বলে? তিনি বলেন, আমরা উত্তরে বললাম : সে বলে, ঐ ব্যক্তি কতই না উত্তম হতো যদি সে হিজরত করতো। তিনি বলেন, তারপর তার মনিব বললো : আমি রাসূলের সাথে হিজরত করেছি, তারপর কি আবার হিজরত করবো? তারপর তিনি বলেন, আমি রাসূলকে বলতে শুনেছি যে, সুসংবাদ তাদের হত্যাকারী ও তাদের হাতে নিহত ব্যক্তির জন্য । ( মুসনাদু আহমাদ ইবনি হাম্বাল : ১৯১৪৯, শাইখ শুয়াইব আরনাউত রহিঃ তাকে সহীহ বলেছেন)
    ইমাম তবরানী রহিঃ বর্ণনা করেছেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সর্বোত্তম শহীদ হলো তারা যাকে হত্যা করবে। তা তিনি তিন বার বলেন। সুসংবাদ খাওয়ারিজ হত্যাকারী ও তাদের হাতে নিহত ব্যক্তির জন্য । ( আল মু'জামুল কাবীর : ৮০৩৪)
    উলামায়ে কেরাম এবং ব্যাখ্যাকারগণ طوبى শব্দটির ব্যাখ্যায় মতানৈক্য করেছেন। কেউ কেউ বলেন, তা হলো জান্নাত। কেউ কেউ বলেন, জান্নাতের একটি বৃক্ষ। কেউ কেউ বলেন, তা হলো সবচেয়ে ভালো অবস্থা। কেননা طوبى শব্দটি فُعلي এর মতো যেমন حسني ( অনেক সুন্দর) كبري (সবচেয়ে বড়)। সুতরাং তার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, তাদেরকে তার সংবাদ দেওয়া কিংবা তাদের জন্য তার দোয়া করা।
    আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী রহিঃ বলেন, طوبى শব্দটি طيب থেকে এসেছে। উদ্দেশ্য হলো! তাদের প্রশংসা করা এবং তাদের জন্য উভয় জাহানে সৌভাগ্য ও সফলতার দোয়া করা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ : ৩৫৪৩ নং, ৭/১০৮ পৃঃ)
    বিভিন্ন হাদীসে এই বাকরীতিটি বিশেষ কিছু আমলের মর্যাদা উঁচু করার জন্য এসেছে।


    পঞ্চম ফাযীলাহ : তাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করবে তারা হবে উম্মাতের মধ্যে আল্লাহ তা'আলার সবচেয়ে নৈকট্যশীল বান্দা


    পূর্বে আনাস ইবনু মালিক রাঃ এবং আবু সাঈদ খুদরী রাঃ এর বর্ণনা অতিবাহিত হয়েছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যারা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে তারা হবে উম্মাতের মধ্যে আল্লাহ তা'আলার সবচেয়ে নৈকট্যশীল বান্দা ।
    অর্থাৎ তারা অন্যান্য বান্দাদের থেকে আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী হবে। এই হাদীসে منهم শব্দটির هم সর্বনামটি (ضمير) নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন, এর দ্বারা গোটা উম্মাহ উদ্দেশ্য। তখন অর্থ হবে তারা অবশিষ্ট উম্মাহ থেকে আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী। কেউ বলেন, খাওয়ারিজ উদ্দেশ্য। তখন অর্থ দাঁড়ায় তারা খাওয়ারিজের থেকে আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী। এবং এখানে খাওয়ারিজ থেকে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কারণে খাওয়ারিজের জন্য উত্তমতা সাব্যস্ত হবে না। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেছেন, أصحاب الجنة يومئذ خير مستقرا وأحسن مقيلا সেদিন জান্নাতের অধিবাসীগণ সর্বোত্তম বাসস্থান ও শয্যার অধিকারী। এই কাফিরদের থেকে মুমিনদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কারণে এই কথা সাব্যস্ত হবে না যে, কাফিরদের জন্য সামান্য কল্যাণ রয়েছে। তবে তারা যেহেতু দাবি করে যে, তারা কুরআনের দিকে আহ্বান করে কিন্তু বাস্তবে তারা তার ধারে কাছেও নেই তাই আল্লাহ তিনি বলেছেন, খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াইকারীরা খাওয়ারিজের চেয়ে আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী। আর তারা হচ্ছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব।
    আল্লামা তীবী রহিঃ মেশকাতের ব্যাখ্যা গ্রন্থে লিখেছেন, أولى بالله منهم এর মধ্যে সর্বনামটি উম্মাহ বুঝাবে। তখন অর্থ হবে আমার উম্মাতের যারা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে তারা হবে উম্মাতের মধ্যে আল্লাহ তা'আলার সবচেয়ে নৈকট্যশীল বান্দা। আমি বলি এটা হলো في أمتي اختلاف وفرقة এর প্রথম ব্যাখ্যা অনুযায়ী। অর্থাৎ প্রথম ব্যাখ্যা অনুযায়ী في أمتي اختلاف وفرقة এর অর্থ হবে আমার উম্মাতের মাঝে মতভেদকারী হবে। অথবা هم সর্বনামটি বাতিল ফিরক্বা বুঝাবে। তখন এটা আল্লাহ তা'আলার কালাম أي الفريقين خير مقاما (উভয় দলের মধ্যে অবস্থানের দিক থেকে সর্বোত্তম কোন দল) এবং প্রবাদ العسل أحلي من الخل ( মধু সিরকা থেকে অধিক মিষ্টি) এর মতো হয়ে যাবে। সুতরাং অর্থ হলো তারা খাওয়ারিজের চেয়ে অধিক নিকটবর্তী। (শারহুত তীবী : ৩৫৪৩ নং হাদীস)



    চলবে ইনশাআল্লাহ......

    খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াই করার মহা ফাযীলাহ - ১
    https://dawahilallah.com/showthread.php?23896
    খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াই করার মহা ফাযীলাহ - ২
    https://dawahilallah.com/showthread.php?23971

  • #2
    আল্লাহ তা'য়ালা আপনার ইল্মের বারাকাহ দান করুক আমীন
    “কখনো ভাববেন না ইসলাম আপনাকে কি দিয়েছে? বরং, চিন্তা করুন আপনি ইসলামকে কি দিয়েছেন?”
    -শায়খ আহমাদ মুসা জিবরীল (হাফিযাহুল্লাহ)

    Comment


    • #3
      অনেক উপকারী একটি সিরিজ ধারাবাহিক ভাবে ফোরামে পেশ করে যাচ্ছেন। ধারাবাহিক ভাবে চলমান থাকুক....এই শুভ কামনা।
      আশা করি ভাইয়েরা এ থেকে উপকৃত হতে পারবেন। এজন্য লেখাগুলো গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়া দরকার।
      আল্লাহ ভাইয়ের ইলমে ও আমলে বারাকাহ দান করুন। আমিন
      গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ, সুন্দর হচ্ছে ভাই...জাযাকাল্লাহ
        নিয়মিত চালু রাখার অনুরোধ রইল।
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment

        Working...
        X