Announcement

Collapse
No announcement yet.

চোখের হেফাযত করা:

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • চোখের হেফাযত করা:

    চোখের হেফাযত করা:



    যুব সমাজ ধ্বংসের অন্যতম কারণ হলো দৃষ্টি। রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার সর্বত্র উলঙ্গ, অর্ধ উলঙ্গ ও নগ্ন ছবি দেখে যুব সমাজ তাদের চরিত্রকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে প্রতি নিয়ত। এ ছাড়া ঘরে বসে টিভির পর্দায় বিভিন্ন ধরনের জোন উত্তেজক নাটক সিনেমা দেখে দেখে তারা ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। তাই যুব সমাজকে ধ্বংস ও অপ মৃত্যুর হাত থেকে বাচাতে হলে, অবশ্যই এ সব খারাপ দৃশ্য ও নগ্ন নাটক সিনেমা থেকে চোখকে হেফাযত করতে হবে। চোখ মানবাত্মার অন্তরে কোনো কিছু প্রবেশ করা বা উদ্রেকের জন্য বড় ধরণের সু-রঙ্গ ও প্রবেশদ্বার।
    ইমাম কুরতবী রহ. বলেন, চোখ অন্তরে কোনো কিছু প্রবেশের বড় দরজা। চোখের কারণেই মানুষের পদস্খলনটি বেশি হয়। ফলে চোখ থেকে অধিক সতর্ক হতে হবে। চক্ষুকে নিষিদ্ধ বস্তু ও ফিতনার আশংকা থাকে এমন সব বস্তুর দিক তাকানো হতে অবনত রাখতে হবে। আর চক্ষু অবনত রাখার অর্থ, একজন মুসলিম নিষিদ্ধ বস্তুর দিক তাকানো হতে বিরত থাকবে, সে শুধু বৈধ বিষয়সমূহ দেখবে। আর যদি অনিচ্ছায় কোনো নিষিদ্ধ বস্তুর দিক নজর পড়ে যায়, তবে সাথে সাথে তা ফিরিয়ে নেবে। দৃষ্টিকে দীর্ঘায়ত করবে না।
    আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    ﴿ قُل لِّلۡمُؤۡمِنِينَ يَغُضُّواْ مِنۡ أَبۡصَٰرِهِمۡ وَيَحۡفَظُواْ فُرُوجَهُمۡۚ ذَٰلِكَ أَزۡكَىٰ لَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرُۢ بِمَا يَصۡنَعُونَ ٣٠ ﴾ [النور : ٣٠]

    “মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত”।[1]

    আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে লজ্জাস্থানের হেফাজতের পূর্বে চোখের হেফাজত করার নির্দেশ দেন। কারণ, যাবতীয় দূর্ঘটনা ও বিপদের মূল হলো দৃষ্টি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাদিসে আমাদেরকে চক্ষু অবনত রাখতে নির্দেশ দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে প্রমাণিত তিনি বলেন,


    اضمنوا لي ستا من أنفسكم أضمن لكم الجنة: اصدقوا إذا حدثتم، وأوفوا إذا عاهدتم، وأدوا إذا ائتمنتم، واحفظوا فروجكم، وغضوا أبصاركم، وكفوا أيديكم".

    “তোমরা আমার জন্য ছয়টি জিনিসের জিনিসের দায়িত্ব নিলে, আমি তোমাদের জান্নাতের দায়িত্ব নিব। যখন কথা বল, সত্য বল। যখন প্রতিশ্রুতি দেবে তা পুরো করবে, আর যখন তোমার নিকট আমানত রাখা হবে, তা রক্ষা করবে। আর তোমরা তোমাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে, তোমাদের চক্ষুকে অবনত করবে এবং তোমরা তোমাদের হাতকে বিরত রাখবে”।[2]

    বরং অপর একটি হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চক্ষু অবনত রাখাকে রাস্তার হক হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি তার সাথীদেরকে বলেন,


    " إياكم والجلوس في الطرقات، فقالوا: يا رسول الله مالنا من مجالسنا بُدٌّ نتحدث فيها. فقال: " فإذا أبيتم إلا المجلس فأعطوا الطريق حقه. قالوا: وما حق الطريق يا رسول الله؟ قال: غض البصر، وكف الأذى ، ورد السلام، والأمر بالمعروف، والنهي عن المنكر".

    “তোমরা রাস্তা বা মানুষের চলাচলের পথে বসা থেকে বিরত থাক। সাহাবীরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! রাস্তায় বসা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নাই আমরা রাস্তায় বসে কথা-বার্তা বলি-আলোচনা করি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি তোমাদের বসতেই হয়, তাহলে তোমরা আল্লাহর হক আদায় কর। তারা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! রাস্তার হক কি? তিনি বললেন, চক্ষু অবনত করা, কষ্ট দায়ক বস্তু পথের থেকে সরানো, সালামের উত্তর দেয়া, সৎকাজের আদেশ দেওয়া ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ করা”।[3]


    وقد وجد النبي صلى الله عليه وسلم الفضل بن عباس رضي الله عنهما ينظر إلى امرأة جاءت تستفتيه صلى الله عليه وسلم فأخذ بذقن الفضل فعدل وجهه عن النظر إليها.

    একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একজন মহিলা ফতোয়া জানতে আসলে, তার দিক ফযল ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে তাকাতে দেখলে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থুতনী নীচে ধরে তার চেহারাকে অন্যদিক ফিরিয়ে দেন।[4]
    আল্লামা ইবনুল কাইয়েম রহ. বলেন, এ কাজটি হল, তাকে এ ধরনের দৃষ্টি হতে নিষেধ করা এবং কাজটি থেকে বারণ করা। যদি এ ধরনের কাজ বৈধ হত, তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ফিরিয়ে না দিয়ে আপন অবস্থায় ছেড়ে দিত।

    ---------------------------
    টীকা:
    [1] সূরা নূর, আয়াত: ৩০

    [2] আহমদ, হাদিস: ২২৭৫৭

    [3] মুসলিম, হাদিস: ২১২১

    [4] বুখারি, হাদিস: ৬২২৮


    Collected‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

  • #2
    ভাই আমি হেদায়া কিতাবে পেয়েছি কারো যদি শাহওয়াতের ভয় না থাকে, তাহলে জরুরতের কারণে মহিলাদের মুখের দিকে তাকাতে পারবে। এটা কি গ্রহণযোগ্য মত নাকি গ্রহণযোগ্য নয়?
    পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ ভাই, খুব উপকারী একটা পোষ্ট।

      Comment


      • #4
        Originally posted by mahmud123 View Post
        ভাই আমি হেদায়া কিতাবে পেয়েছি কারো যদি শাহওয়াতের ভয় না থাকে, তাহলে জরুরতের কারণে মহিলাদের মুখের দিকে তাকাতে পারবে। এটা কি গ্রহণযোগ্য মত নাকি গ্রহণযোগ্য নয়?
        এ বিষয়ে আলিম ভাইদের সহযোগিতা কাম্য।
        আপনি অফলাইনেও চেষ্টা করে জানতে পারেন ভাই।
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment


        • #5
          Originally posted by Abu Abid View Post
          জাযাকাল্লাহ ভাই, খুব উপকারী একটা পোষ্ট।
          আমীন, আমীন। ওয়া ইয়্যাকা আয়দান...
          ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

          Comment


          • #6
            মুহতারাম ভাইয়েরা- সবাই অনলাইনে নজর হিফাযতের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করি!

            চোখ আল্লাহ তা‘আলার অন্যতম নেয়ামত। যার চোখ নেই, সেই বুঝে কেবল চোখের দৃষ্টিশক্তির কি মূল্য!
            ইয়া আল্লাহ! আমাদের চোখকে ভালো কাজে ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার শোকর আদায় করার তাওফীক দিন!
            আপনি যা দেখাকে হারাম করেছেন, তা দেখা থেকে বিরত থাকার তাওফীক দিন! আমাদের চোখকে পরিত্র করে দিন!
            “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

            Comment


            • #7
              Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
              চোখ আল্লাহ তা‘আলার অন্যতম নেয়ামত। যার চোখ নেই, সেই বুঝে কেবল চোখের দৃষ্টিশক্তির কি মূল্য!
              ইয়া আল্লাহ! আমাদের চোখকে ভালো কাজে ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার শোকর আদায় করার তাওফীক দিন!
              আপনি যা দেখাকে হারাম করেছেন, তা দেখা থেকে বিরত থাকার তাওফীক দিন! আমাদের চোখকে পরিত্র করে দিন!
              আল্লাহুম্মা আমীন, আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।
              ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

              Comment


              • #8
                ভাই এ সকল হাদিসগুলো কীভাবে একত্রিত করেন আপনি?
                পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

                Comment


                • #9
                  আমার মতে দৃষ্টি ২ প্রকার:
                  ১। যা চোখের মাধ্যমে হয়ে থাকে
                  ২। যা অন্তরের পর্দায় ভেসে উঠে

                  আল্লাহ্ সুবাহানাহু তা'আলা আমাদের উভয় প্রকারের দৃষ্টি হিফাযতের ব্যাপারে সাবধান করেছেন।

                  আল্লাহ্ বলেন-
                  "তিনি চোখের খিয়ানত ও যা অন্তর লুকিয়ে রাখে তার ব্যাপারে সম্যক অবগত।"

                  যারা অতীতে জাহেলিয়াতের মাঝে ডুবে ছিলেন তারা যখন সংকল্প করেন যে এখন থেকে দৃষ্টির হিফাযত করবেন তখন তাদের জন্য ২য় প্রকারের দৃষ্টি প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। শয়তান গুনাহের মজা মনে করিয়ে দিয়ে তাকে আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালায়। এভাবে সে তার শক্তি ও ক্ষমতার কেন্দ্র তথা বিশ্বাসের দুর্গে আঘাত করে তাকে দুর্বল করে দেয়। তখন সে ১ম প্রকারের দৃষ্টি থেকেও বেঁচে থাকতে পারে না।

                  টাকায় টাকা আনে, গুনাহয় গুনাহ আনে। এজন্য জাহেলিয়াত থেকে উঠে আসার জন্য অনেক কঠিন চেষ্টা ও সাধনার দরকার হয়। সর্বোত্তম হলো শুরুতেই যদি গুনাহ মুক্ত জীবন গঠন করা যায়। কারণ গুনাহের যত ভিতরে যাবেন ততই ফিরে আসা কঠিন হবে। গুনাহ ছাড়তে চাইলেও যেন গুনাহ আপনাকে ছাড়ছে না।

                  আল্লাহ্ বলেন-
                  "তাওবা তো কেবল তাদের জন্য যারা অজ্ঞতাবশত মন্দ কাজ করে ফেলে, অতঃপর (গুনাহের উপলব্দি আসার) সাথে সাথে তাওবা করে।"

                  তাওবার আভিধানিক অর্থ 'ফিরে আসা'। এই অর্থে যদি আমরা আয়াতটাকে বিশ্লেষণ করি তাহলে একটা অর্থ এমন দাঁড়ায় যে, আল্লাহ্ তাকে ফিরে আসার তাওফীক্ব দেন, যে গুনাহের উপলব্দি আসার সাথে সাথেই ঐ কাজ ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।

                  দৃষ্টির হিফাযত না করার অনেক বড় বড় ক্ষতি রয়েছে। এর ফলে ইবাদতের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। কুরআন-হাদিসের উপদেশ অন্তরে কোন প্রভাব বিস্তার করে না। অন্তর কঠিন হয়ে যায় এবং এক সময় তা মরে যায়। চেহারার সৌন্দর্য্য নষ্ট হয়ে যায়। মানুষের নিকট মর্যাদা হারিয়ে ফেলে। আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়। সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়। জীবিকা সংকুচিত হয়ে পড়ে। ইলমের নিয়ামত ও অন্তরের নূর উঠিয়ে নেওয়া হয়। ইসলামের শ্বাশত বিধানের মাঝেও তার সন্দেহ হতে থাকে। আরো অনেক বলা যাবে।

                  আসলে বান্দা গুনাহ করে যখন আল্লাহ্'র পথে পিছিয়ে পড়ে তখন তাকে পাশ করানোর জন্য তিনি কোন না কোন মুসিবত দিয়ে থাকেন যাতে এই মুসিবতে ধৈর্য্য ধারনের মাধ্যমে সে পুরনো ক্ষত কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারে। কিন্তু মসিবতে ধৈর্য্য ধারনের ব্যাপারটা এত সহজ না। এর থেকে সহজ ছিলো শুরুতেই গুনাহটা ছেড়ে দেওয়া।

                  একটা উদাহরণ দিয়ে বলি, আপনি হয়ত বিয়ের আগে দৃষ্টির হিফাযত একদমই করেননি। এখন এর ফল স্বরুপ আপনার এমন একজনের সাথে বিয়ে হলো যে আপনার একদমই পছন্দ না। এখন আপনি দ্বীন বুঝেছেন এবং দৃষ্টির হিফাযতের চেষ্টা করছেন। কিন্তু স্ত্রী যেহেতু আপনার পছন্দ না তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার হক্ব আদায় করে শরিয়তের উপর চলা আপনার জন্য কঠিন হয়ে গেল। অথবা অনেক চেষ্টা করেও আপনি উপযুক্ত পাত্রীর সন্ধান পাচ্ছেন না। অথবা জাহেলী অবস্থায় কোন এক জাহেলকেই বিয়ে করেছেন এখন আপনি দ্বীনের পথে আসলেও তাকে আনতে পারছেন না বা সে আপনাকেও পিছনে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। ফলে আপনার জন্য দ্বীন পালন করা কঠিন হয়ে গেল।

                  গুনাহ হচ্ছে ব্যর্থতা বা ফেল করা। আপনার সাথীরা যখন পাশ করে কর্মজীবন শুরু করে দিয়েছে তখনও আপনি পিছনের পড়াগুলো নিয়ে পড়ে আছেন। সহপাঠীরা পাশ করে চলে গেছে আর আপনি একা একা ক্যাম্পাসে পড়ে আছে। ছোট ভাইয়েরা ক্যান্টিনে গেলে আপনার দিকে তাকাচ্ছে। আপনি শিক্ষকদের নিকট ব্যর্থতার উপমা। যদি আপনি সবার সাথে পাশ করতেন তখন এটা আপনার জন্য সহজ ছিল। সবার থেকে সাহায্যও পেতেন। এখন আপনি সিলেবাসও খুঁজে পাচ্ছেন না। তারপরে দেখতাম যারা ফেল করা বিষয়ের পরীক্ষা পুনরায় দেয় তারা যত নাম্বারই পায় না কেন, তাদেরকে একটা নির্দিষ্ট গ্রেডের উপরে দেওয়া হয় না। যদি দুনিয়াতেই এমন হয় তাহলে পরকালের অবস্থা কেমন হবে, একটু চিন্তা করুন।

                  এখন প্রশ্ন হতে পারে, কেউ কেউ তো গুনাহ করেই যাচ্ছে তাদের তো কিছু হচ্ছে না। তাদের কিছু না হলেও অন্তরে যে মরে গেছে তাতো স্পষ্ট। এটাই তো সবচেয়ে বড় ক্ষতি। সবার ক্ষেত্রে যে সবগুলো ক্ষতি প্রকাশ পাবে তা আবশ্যক না।

                  যেমন পার্থিব বিষয়ে ক্ষতির পরিবর্তে উন্নতি হচ্ছে। তাহলে এর অর্থ হবে আল্লাহ্ তাকে আর পাশ করাতে চাচ্ছেন না। তিনি চাচ্ছেন সে গুনাহের উপর অটল থেকে মৃত্যু বরণ করে। যাতে সে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে পারে।

                  দৃষ্টির হিফাযতের রয়েছে বিশাল প্রতিদান। সূরা নূরে আল্লাহ্ তার জ্যোতির উপমা দানের পরপরই দৃষ্টির হিফাযতের কথা বলেছেন। এখান থেকে উলামাগণ বলেন, যে দৃষ্টির হিফাযত করবে আল্লাহ্ তার অন্তরে আল্লাহ্'র জ্যোতি থেকে জ্যোতি দান করবেন। যার ফলে হাজারো অন্ধকার ও ফিত্নার মাঝেও সে সঠিক পথ থেকে সরে যাবে না। তার চেহারা উজ্জ্বল হবে। রিজিকের প্রশস্ততা লাভ করবে। মানুষের ভালোবাসা পাবে। অন্তর নরম হবে এবং সেখানে আল্লাহর ভালোবাসার বীজ থেকে ঈমানের বিশাল মহীরুহের সৃষ্টি হবে। যার ছায়ায় এসে অন্যরা নিজের অন্তরকে শীতল করে নিবে।

                  নজরের হিফাযতের অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধক হলো পরিবেশ ও সহচর্য। যে পরিবেশে কেউই পর্দা করছেন না সেখানে গেলে আপনারও মনে হবে যে আলেম-উলামাগণ একটু বেশিই বলে। এতগুলো মানুষ কেউই তো পর্দা করছে না। আল্লাহ্ কি তাহলে এদের সবাইকে জাহান্নামে দিবেন!

                  যেখানে গেলে দৃষ্টির হিফাযত হবে না, সেখান থেকে যথা সম্ভব দূরে থাকুন। কেউ জানি কোন এক শায়েখকে প্রশ্ন করেছিল, "শায়খ দৃষ্টির হিফাযত তো অনেক কঠিন বিষয়। কীভাবে দৃষ্টির হিফাযত করা যায়?" শায়খের উত্তরটা খুব সম্ভব এমন ছিলো যে, মানুষের মাঝে ভালো ও মন্দ ২ টা প্রকৃতিই
                  বিদ্যমান। এই ২ টা প্রকৃতিকে যদি আমরা ২ টা প্রাণীর সাথে তুলনা করি। তাহলে ভালো প্রানীটির খাবার হলো নেক আমাল, আর খারাপ প্রানীটির খাবার হলো গুনাহ। সুতরাং যাকে তুমি বেশি বেশি খাওয়াবে সেই তো বেশি শক্তিশালী হবে এবং লড়াইয়ে জিতবে- এটাই তো স্বাভাবিক কথা।

                  আসলেই আপনি যে নিষিদ্ধ বিষয়ের দিকে মধ্যে তাকাচ্ছেন তার মধ্যে কিছুটা হলেও সৌন্দর্য্য আছে। কিন্তু ছেড়ে দিলে যা পাবেন তার সামনে এসব কিছুই না। তাই যখন অন্তর ব্যাকুল হয়ে যাবে তখন আখিরাতকে স্মরণ করবেন।

                  দৈনন্দিন আমালের প্রতি যত্নবান হোন এবং আমালের ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন। নিয়মিত অর্থ বুঝে কিছুটা হলেও কুরআন তিলাওয়াত করুন এবং পারলে কয়েকটা আয়াত করে প্রতিদিন মুখস্ত করতে পারেন। তাহাজ্জুদে উঠে সে আয়াত সমূহ খুব ধীরস্থিরতার সাথে তিলওয়াত করুন। শরয়ী ইলম অর্জনে ব্রতী হোন। দ্বীনদার ও আলেমদের সাথে উঠাবসা করুন। সামার্থ্য অনুযায়ী অসাহায়ের পাশে দাড়ান। দাওয়াহ ও ইসলাহের কাজে নিজেকে জড়িত রাখুন। বেশি বেশি আল্লাহর নিকট দুয়া করুন। নিয়তের ব্যাপারে সর্বদা সতর্ক থাকুন। ইনশাআল্লাহ দুনিয়াতেই জান্নাতের সন্ধান পাবেন। আর যে এই জান্নাতের সন্ধান পেল না, সে আসল জান্নাতও পাবে না।

                  আল্লাহ্ আমাদের বুঝার ও আমাল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।

                  Comment


                  • #10
                    musafir15 ভাই, আপনি হৃদয় প্রশান্তিকর একটি কমেন্ট করেছেন। আল্লাহ আপনাকে ভরপুর জাযায়ে খাইর দান করুন। আমীন
                    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                    Comment


                    • #11
                      Originally posted by musafir15 View Post

                      আল্লাহ্ আমাদের বুঝার ও আমাল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।
                      আমিন আমিন সুম্মা আমিন।

                      Comment


                      • #12
                        ভাইজান, পোস্টটি পিডিএফ করে দিলে ভালো হয়।
                        ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

                        Comment


                        • #13
                          Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
                          চোখ আল্লাহ তা‘আলার অন্যতম নেয়ামত। যার চোখ নেই, সেই বুঝে কেবল চোখের দৃষ্টিশক্তির কি মূল্য!
                          ইয়া আল্লাহ! আমাদের চোখকে ভালো কাজে ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার শোকর আদায় করার তাওফীক দিন!
                          আপনি যা দেখাকে হারাম করেছেন, তা দেখা থেকে বিরত থাকার তাওফীক দিন! আমাদের চোখকে পরিত্র করে দিন!
                          আমিন ইয়া রব্বাল আলামিন

                          Comment

                          Working...
                          X