Announcement

Collapse
No announcement yet.

যামাকিতাল: কুরআনি মাইর! ~ শায়খ মুনসিফ উরগী রহ.

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • যামাকিতাল: কুরআনি মাইর! ~ শায়খ মুনসিফ উরগী রহ.

    যামাকিতাল: কুরআনি মাইর!
    শায়খ মুনসিফ উরগী রহ.
    -
    ব্রুসলি নামটা সারা বিশ্বে পরিচিত। মার্শাল আর্টের একজন পথিকৃত বলা যায় তাকে। বাস্তবে যাই হোক, প্রচারমাধ্যমের বদৌলতে একটা কথা বেশ রটে গিয়েছিল: বিশ্বে মানুষ থাকলে এই একজনই আছে। অপরাজেয়। দুর্ধর্ষ।
    -
    ছাত্রকালে গুরুজির কাছে টুকটাক যা কিছু শিখেছি, সঠিক ইতিহাস না জানার কারণে, চোখের সামনে সব সময় একটা ছবিই ভাসতো: ব্রুসলি। তার মতো হতে হবে। সবকিছু ভেঙে তছনছ করে দিতে হবে। ঘুষি মেরে একসাথে দশজনকে ফ্ল্যাট করে দিতে হবে। লাথির চোটে দমকা হাওয়া বইয়ে দিতে হবে।
    -
    মুসলিম লড়িয়ের চিত্র কল্পনা করলে, শুধু মোহাম্মাদ আলীর কথা মনে পড়তো। মনে মনে ভাবতাম একবার যদি ব্রুসলিকে আলির সামনে আনা যেতো, তাহলেই হতো। এক ঘুষিতেই চীনাম্যানের দফারফা হয়ে যেতো। বড় হয়ে বুঝতে পারলাম আলি যে ঘরানার ফাইটার, সেটা দিয়ে ব্রুসলির মুখোমুখি হওয়া সম্ভব নয়। এক ওস্তাদের আখড়াতেই একটা ঘটনা ঘটেছিল। ঢাকা থেকে একজন বক্সিং শিখে এল। সে কি হম্বিতম্বি! একে মেরে ফেলবে, ওকে শুইয়ে দিবে! বড় ওস্তাদ তার এক অভিজ্ঞ ছাত্রকে বললেন:
    -এই ব্যাটাকে একটু দেখিয়ে দে তো!
    লড়াই শুরু হলো। বক্সার মশায় প্রথম প্রথম বেশ লাফালাফি করলো। একটু পরে, মোক্ষম এক ‘গিরি’ (লাথি) খেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে এমন কাতরাতে লাগলো, দেখে মায়াই লাগলো।
    -
    মনে একটা খেদ থেকে গিয়েছিল, ব্রুসলিকে বুঝি হারানোর মতো কেউ নেই? এতদিন জানতে পারলাম: আছে। বরং বলা ভাল ছিল।
    -
    মানুষটার পরিচয় জানতে হলে যেতে হবে ‘তিউনিসিয়াতে’। শায়খ মুনসিফ উরগী রহ.। একজন খালিহাতে আত্মরক্ষাবিদ। একজন মুসলিম। বড়ই স্বাধীনচেতা মানুষ। ষোল বছর জেল খেটেছেন। তবুও স্বৈরাচারের সাথে আপোষ করেননি। তিউনিসিয়ার ক্ষমতাচ্যুত শাসক যায়নুল আবেদিন বেন আলির খায়েশ হলো, শায়খ উরগীর যোগ্যতাকে নিজের অনুকূলে কাজে লাগাবে। সেমতে প্রস্তাব দেয়া হলো:
    -সেনাবাহিনীর বিশেষ স্কোয়াডকে কমান্ডো ট্রেনিং দিতে হবে। এরা প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দিকটা দেখবে।
    -
    শায়খ রাষ্ট্রীয় প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করলেন। নানাভাবে ভয় দেখানো হলো। গুম-খুনের হুমকি-ধমকি দেয়া হলো। কিছুতেই টলানো গেলো না। সরকার এ কৌশলে ব্যর্থ হয়ে, বাঁকা পথে গেলো। শায়খ উরগিকে গ্রেফতার করা হলো। বলে দেয়া হলো:
    -প্রস্তাবে যতদিন রাজি হবে না, ততদিন কারাগারে পঁচতে হবে।
    শায়খ উরগী মোটেও পাত্তা দিলেন না। একটানা ষোল বছর জেলে কাটিয়ে দিলেন। বাইরে তার বউ-বাচ্চা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটিয়েছিল, তা সত্ত্বেও আদর্শচ্যুত হননি।
    -
    মাত্র ১৪ বছর বয়েসেই মুজাহিদ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। আলজেরিয়াতে। ১৯৫৬ সালে। ফরাসীদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে তার দুঃসাহসিক ভূমিকা সবার ভূয়সী প্রশংসা লাভ করেছিল। কিন্তু শায়খ উরগী এসব প্রশংসার উর্ধে। তার কাছে ‘কিতাল-জিহাদ’ই ছিল ধ্যানজ্ঞানজপ।
    সারাক্ষণই কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করতেন। ছেলেবেলাতেই কুরআন কারীম হেফয করেছিলেন। বাবার কাছে শরীরচর্চার প্রথম পাঠ নিয়েছিলেন। একসাথে তিন দেশের সামরিক প্রশিক্ষণ নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। জার্মানি নাযি বাহিনী, ফরাসী বাহিনী ও আলজেরিয়ান মুজাহিদ বাহিনী।
    -
    ৮ বছর কাটিয়েছিলেন মুজাহিদ বাহিনীর সাথে। সার সহযোদ্ধাদের মধ্যে আলজেরিয়ার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুয়ারি বুমেদিনও ছিল। ১৯৪২ সালের দিকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা তিন বছর জার্মানিতে নাযি বাহিনীতে কাজ করেছিলেন। তাই বাবার কাছেই জার্মান যুদ্ধকৌশল শিখতে পেরেছিলেন। শিশুবেলাতেই বাবার সাথে একটানা ৭ বছর পায়ে হেঁটে চষে বেড়িয়েছেন তিউনিসিয়া-আলজেরিয়া-মরক্কোর পথে-প্রান্তরে। ফরাসি উপনিবেশের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার কাজে।
    -
    ছেলেবেলার পদব্রজে এই দীর্ঘ পথচলা শায়খ উরগীকে অনেক কিছু শিখিয়েছিল। যেখানেই গিয়েছেন, সেখানকার স্থানীয় আত্মরক্ষা বিদ্যা শেখার প্রতি সচেষ্ট হয়েছেন। আলজেরিয়ার স্বাধীনতার পর তিনি পায়ে হেঁটে বিশ্বভ্রমণে বের হয়ে পড়েন। প্রায় একলক্ষ তিশ হাজার কিলোমিটার পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন। ৩০টারও বেশি দেশে গিয়েছেন। এই দীর্ঘ পথপরিক্রমার উদ্দেশ্য একটাই: আত্মরক্ষা পদ্ধতি শেখা। যেখানেই এই শিল্পের ছিঁটেফোঁটা কিছু অবশিষ্ট আছে বলে তার কানে এসেছে, সেখানেই ছুটে গিয়েছেন। ভারত, পাকিস্তান, চীন, জাপান, কোরিয়া, বার্মা, ফিলিফাইন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বহুদেশে।
    -
    বিশ্বের বড় বড় ওস্তাদদের কাছ থেকে ‘বেল্ট’ পেয়েছেন। একটানা ষাট বছর তিনি এই বিদ্যা অর্জন করেছেন। আলজেরিয়ার স্বাধীনতার পর ১৯৬৬ সালের দিকে তিউনিসিয়ার ফিরে এসেছিলেন। বিমান বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু ধরাবাঁধা জীবন তার ভালো লাগলো না। একদিন চুপিচুপি জার্মানি চলে গেলেন। সেখানে গিয়ে অনেক নতুন আত্মরক্ষা পদ্ধতি শিখলেন। জার্মানরাও তাকে লুফে নিল।
    -
    ১৯৭৩ সালে আবার তিউনিসিয়ায় ফিরে এলেন। কিন্তু মন টিকল না। এবার চলে গেলেন জাপান। পায়ে হেঁটে। পথে পথে পেলেন যুগোশ্লাভিয়া, আলবেনিয়া, তুরস্কসহ বহু দেশ। প্রতিটি দেশের নিজস্ব আত্মরক্ষা কৌশল শিখে নিলেন।
    -
    একটা সাক্ষাতকারে তার জীবনের মোটামুটি অনেকটাই উঠে এসেছে:
    -আপনার প্রায় পুরো জীবনই কেটেছে পায়ে হেঁটে। কারণ কী?
    -কুরআন কারীমের বাণী অনুসরণ করেই এটা করেছি। সুরা মূলকে আছে: তোমরা পৃথিবীর দিক-দিগন্তে হেঁটে দেখো।
    আরেক জায়গায় আছে: তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো।
    -গাড়িতে চড়ে গেলে সময় বাঁচতো না?
    -কিসের সময়? আমি তো মানুষের কাছ থেকে শিখতেই ভ্রমণে বের হয়েছি। আল্লারহ যমীন দেখার জন্যে বের হয়েছি। দ্রুত চলে গেলে কি দেখা হতো? বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে এতকিছু শেখা হতো? জানা হতো কোথায় আমার কাঙ্খিত বস্তু আছে?
    -
    ১৯৮২ সালে শেষবারের মতো তিউনিসিয়ায় ফিরে এসেছিলেন। ১৯৯২ সালে বন্দী হয়েছিলেন। ২০১১ সালে আরব বসন্তের পর মুক্তি পান। জেলখানায় বসে সময়টা নষ্ট করেননি। তার সারাজীবনের সঞ্চিত জ্ঞানকে একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দান করার কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। যামাকিতাল-এর ওপর বই রচনা করেছেন।
    -
    -আপনার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কিছু বলুন!
    -বলার মতো তেমন কিছু নেই। আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল ভারতে। বোম্বাই গিয়েছিলাম কিছু শেখার উদ্দেশ্যে। সেখানে ‘জীনাত আহমাদ’ নামে এক মুসলিম অভিনেত্রীর সাথে পরিচয় হয়। সম্পর্কটা বিয়ে পর্যন্ত গড়ানোর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। সবকিছু ঠিকঠাক! বিয়ের তারিখের আসার ঠিক আগমুহূর্তে সংবাদ পেলাম: শিখদের প্রধান ধর্মালয় গুরুদুয়ারায় এক বিশেষ পদ্ধতির আত্মরক্ষা পদ্ধতির চর্চা হয়। ব্যস অমনি সেখানে ছুট দিলাম। বিয়ের কথা মনেও রইল না।
    -তাহলে বিয়ে কখন হলো?
    -সেটা আরও পরে, মালয়েশিয়াতে। সেখানকার একগুরুর কাছে শিখতে গিয়েছি। সেখানেই একজনকে ভাল লেগে গেলো। সেও ছিল একজন দক্ষ যোদ্ধা।
    -আপনার যামাকিতাল সম্পর্কে বলুন:
    -যামাকিতাল হলো বিশ্বের সবচেয়ে নিখুঁত ও সমৃদ্ধ আত্মরক্ষা পদ্ধতি! বিশ্বের এমন কোনও কৌশল নেই, যেটা আমি অর্জন করার চেষ্টা করিনি। এশিয়া-ইউরোপ-আফ্রিকার সমস্ত ওস্তাদের কাছে আমি আত্মরক্ষার পাঠ নিয়েছি। সেসবকে একত্র করে আমি আমাদের ‘যামাকিতাল’ দাঁড় করিয়েছি।
    -এর বৈশিষ্ট্য কি?
    -এটা সম্পূর্ণ ইসলামি ‘মার্শাল আর্ট’। বিশ্বের অন্য স্থানের আত্মরক্ষা পদ্ধতিগুলোতে চায়না বা জাপানী পরিভাষা চলে। আমাদের পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ আরবী পরিভাষা। এবং কৌশলগুলো বের করা হয়েছে কুরআনের আয়াতকে সামনে রেখে। আমাদের একটা সঙ্গীত আছে। সেটা শুনলে যোদ্ধারা খাঁটি ইসলামি জিহাদে উদ্বুদ্ধ হয়। লড়াইয়ের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে হয়। দোয়া-দুরূদ পড়তে হয়।
    -নামের রহস্যটা কী?
    -(ক) যা: যামান বা সময়। সময় হলো দোধারী তলোয়ারের মতো। আমি না কাটলে আমাকেই কেটে ফেলবে। দ্রুত সময়কে কাজে লাগিয়ে আক্রমণ করতে হবে। তাহলে জেতা সহজ হবে।
    (খ) মা: মাকান বা স্থান। কোথায় মারবো? কুরআনে আছে:
    -তোমরা তাদের গর্দানের ওপর মারো। আঙুলের আগায় আগায় মারো।
    আমরাও আমাদের কৌশলগুলো এভাবে সাজিয়েছি। মাথা ও হাতকে মূল ধরে প্যাঁচগুলো তৈরী করেছি।
    (গ) কিতাল: লড়াই। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে বলেছেন:
    -তোমাদের ওপর কিতাল ফযর করা হয়েছে।
    এই আয়াত পড়ে আমার মনে হলো, কুরআনের ভাষ্য অনুযায়ী আমাদের নিজস্ব একটা কিতালপদ্ধতি থাকা দররকার। এজন্য পুরো বিশ্ব থেকে মাল-মশলা সংগ্রহ করতে গিয়েছি। দীর্ঘ সময় ব্যয় করেছি। কুরআনের আয়াতকে বাস্তবায়ন করার তাগিদে।
    -আপনার কৌশলের কথাও কি কুরআনে আছে?
    -হুবহু তো কিছু থাকে না। তবে আমাদের পুরো ‘শিল্প’টাই দাঁড়িয়ে আছে কুরআন কারীমের কয়েকটা আয়াতের ওপর:
    = ফিরআওন শাস্তি জাদুকরদেরকে শাস্তির ভয় দেখানোর সময় কী বললো? সে বললো:
    -আমি তোমাদের হাত-পা কাটবো ‘খিলাপী’ পদ্ধতিতে। অর্থাত বিপরীত দিক থেকে। ডান হাত কাটলে তারপর কাটবো বাম পা।
    শুধু ফিরআওনই নয়, আল্লাহ অপরাধীকে শাস্তি দেয়ার সময় এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে বলেছেন।
    আমার মাথায় এল, অন্যায় প্রতিরোধ বা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার ক্ষেত্রেও এই ধারা অনুসরণ করলে কেমন হয়? ভাবতে ভাবতেই মাথায় এল:
    = আক্রমণ বা আত্মরক্ষা। খিলাফী বা মুয়াযি। আবার লড়াইটা হাতে হবে বা পায়ে হবে বা লাঠিতে হবে। তিন ক্ষেত্রেই আমাদের দুইটা সূত্র মেনে চলি:
    ক: মুয়াযি। মানে আক্রমণ এলে ঠেকানো। ব্লক দেয়া।
    খ: খিলাফী। পাল্টা আক্রমণ।
    আমাদের লড়াই শুরুই হয় মুয়াযি বা ব্লক করা দিয়ে। তারমানে আমরা প্রথমে আক্রমণ করি না। যেচে গায়ে পড়ে মারামারি বাঁধাই না। ঠেকায় বা দায়ে পড়লে বাধ্য হয়ে লড়তে নামি। কারণ আমার শক্তি আছে বলেই হুড়ুদ্দুম কান্ড বাঁধিয়ে বসবো, এমনটা কুরআন আমাদের শিক্ষা দেয় না। কুরআন আমাদের ক্ষমা করতে শেখায়। আর ক্ষমা তো শক্তিমানেরই সাজে। দুর্বল ক্ষমা করবে কিভাবে?
    -
    আমাদের আরেকটা দর্শন হলো:
    = পেইন থেরাপি। অর্থাৎ ব্যথা দেয়া। আমরা যখন প্রতি আক্রমণ করি, নিয়ত থাকে আত্মরক্ষা। পাশাপাশি এটাও খেয়াল রাখি, অন্যায়কারীকে আঘাত করলে সওয়াব হবে। এবং মাঝেমধ্যে শরীরে ব্যাথা লাগলে, শরীর বেশি সুস্থ থাকে। এজন্য সময় সময় একটু আধটু ব্যথা পাওয়া দরকার।
    -
    -আপনার কৌশলকে বিশ্বসেরা বলে দাবি করছেন! এই কৌশল দিয়ে ‘ব্রুসলি’কেও কি হারানো সম্ভব?
    -আমরা কুরআনকে মেনেই এই ‘শিল্প’ গঠন করেছি। আমাদের পদ্ধতি অবশ্যই বিশ্বসেরা। এতে কোনও কোনও সন্দেহ নেই। আমার ৬০ বছরের অভিজ্ঞতার নির্যাস হলো যামাকিতাল। আর ব্রুসলির কথা বলছেন? তার সাথেও আমার লড়াই হয়েছিল। লড়াই না বলে মুখোমুখি হয়েছিলাম বললেই ভাল।
    -কখন? জিতেছিলেন?
    -আমি তখন জার্মানিতে। জার্মানির হয়েই যুক্তরাষ্ট্রের এক মার্শাল আট টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে গিয়েছিলাম। ১৯৭২ সালে। সেখানেই দু’জন মুখোমুখি হয়েছিলাম। আমাদের কৌশল অনুযায়ী প্রতিপক্ষকে মুয়াযি মানে আক্রমণ করতে দিলাম। ব্লক করে একটা ‘কুরআনী’ খিলাফি হাঁকাতেই ব্রুসলি মিয়া কুপোকাত হয়ে মাটিতে পড়ে কাতরাতে শুরু করলো। আমি হাঁক ছেড়ে বললাম:
    -ইয়া হাবশী কুম! হেই ব্যাটা ওঠ! লড়াই কর!
    কিন্তু সে লড়াই চালিয়ে যেতে অস্বীকার করলো।
    -বলছেন কী? এতবড় ঘটনা পত্র-পত্রিকায় এলো না যে?
    -জার্মানির পত্রিকায় সে খবর এসেছিল এটা জানি। খোঁজ করলে পাওয়া যাবে। আর ব্রুসলি হলিউডের কারণে বিখ্যাত হয়েছিল। তাই বলে সে সেরা ফাইটার, এমনটা ভাবা ঠিক নয়।
    -কিন্তু তাই বলে সে একদম আনাড়ীও তো নয়?
    -তা অবশ্য নয়। কিন্তু আমি ছোটবেলা থেকেই জিহাদী ও কিতালী পরিবেশে বেড়ে উঠেছি। একদম বাচ্চাকাল থেকেই ফরাসীদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছি। আমাদের আমীরগন প্রতিটা অভিযানের আগে দুইটা কথা বলতেন:
    ১: কাফেররা হলো শয়তানের বন্ধু। তারা শয়তানের কাছ থেকেই কৌশল শেখে। কুরআন বলে: শয়তানের কৌশল দুর্বল। আমাদের চিন্তা কিসের? আমরা দুর্বলের বিরুদ্ধে লড়তে যাচ্ছি। আমাদেরই জয় হবে। সেটা হয়েছে তো। ফরাসীদেরকে আমরা তাড়িয়ে দেইনি?
    ২: কুরআনে আছে: একজন মুমিন যদি ধৈর্য ধরে ময়দানে টিকে থাকে, সে দশজন কাফিরকে প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে। আমরা ধৈর্য ধরে ময়দানে থাকলে, প্রতিপক্ষ পরাজয় বরণ করতে বাধ্য! কুরআনেরই কথা!
    .
    .
    .
    সব সময় পাগড়ী পরে থাকতেন। জীবনের দীর্ঘ সময় অমুসলিম দেশে কাটিয়েছেন। কিন্তু ইসলামকে ছাড়েননি। পুরোপুরি সুন্নাত তরীকায় দাঁড়ি রাখতেন। হক কথা বলতে ভয় পেতেন না। বাতিলের কাছে মাথা নোয়াতেন না। ২০১২ সালে এই মহান মানুষ ইহজীবন ত্যাগ করে।


    ~ কালেক্টেড ~
    মুমিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব
    রোম- ৪৭

  • #2
    এই বই এর কোন সফট কপি কি আছে ? যার মাধ্যমে ভাইরা উপকার পে্তে পারে

    Comment


    • #3
      জাজাকাল্লাহ শেয়ার করার জন্য।
      ইয়া রাহমান ! বিশ্বের নির্য়াতিত মুসলিমদেরকে সাহায্য করুন। তাগুতদেরকে পরাজিত করুন। আমিন।

      Comment

      Working...
      X