Announcement

Collapse
No announcement yet.

কোরবানির মূলশিক্ষা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কোরবানির মূলশিক্ষা

    কোরবানির মূলশিক্ষা - আল-ওয়ালাহ ওয়াল বারা’আহ
    ঈদুল আযহা-র থেকে শিক্ষা নিতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে ইতিহাসের পাতায়, ইব্রাহিম (আ) এর ঘটনায়, মিল্লাতে ইব্রাহীম যা আল্লাহ্* আমাদের মানতে নির্দেশ দিয়েছেন।

    “অতঃপর আপনার প্রতি প্রত্যাদেশ প্রেরণ করেছি যে, ইব্রাহীমের দ্বীন অনুসরণ করুন, যিনি একনিষ্ঠ ছিলেন এবং শিরককারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না”। [সূরা আন-নাহল ১৬-১২৩]

    প্রকৃতপক্ষে, আল্লাহ্* তা’আলা বলেছেন যে, যারা মিল্লাতে ইব্রাহীম থেকে দূরে সরে যাবে তারা অজ্ঞ লোক।

    “ইব্রাহীমের ধর্ম থেকে কে মুখ ফেরায়? কিন্তু সে ব্যক্তি, যে নিজেকে বোকা প্রতিপন্ন করে”।[সূরা আল-বাকারাহ ২-১৩০]

    মিল্লাতে ইব্রাহীমের দুইটি বৈশিষ্ট্য; তা হল আল-ওয়ালা ওয়ালা বারা’। মিল্লাতে ইব্রাহীমকে এই শিক্ষা প্রদান করা হয়েছে।

    আল ওয়ালাহঃ

    ‘ওয়ালা’ মানে হচ্ছে অনুগত থাকা, ভালবাসা থাকা, সমর্থন করা। তাই যেহেতু আল্লাহ্* আমাদের ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েই ফেলেছেন, আমাদের উচিত তাঁর প্রতি অনুগত থাকা, তাঁকে ভালবাসা, তা যে ধরনের নির্দেশই হোক না কেন। যদিও কোন কিছুকে উগ্র মনে হয়, যদি আল্লাহ্* নির্দেশ দেন, সামি’না ওয়া আতা’না (আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম)।

    প্রথম নিদর্শনঃ

    মিল্লাতে ইব্রাহীমের মধ্যে প্রথম অনুগত থাকার যে উদাহরণটি, তা হচ্ছে যখন নবী ইব্রাহীম (আ) তাঁর স্ত্রীকে রেখে যাওয়ার জন্য নির্দেশ প্রাপ্ত হলেন, যিনি কিনা সদ্য প্রসূত বাচ্চার জন্ম দিয়েছেন, এমন একটি অনুর্বর জায়গায় যেখানে কোন চাষাবাস হয় না।

    “হে আমাদের পালনকর্তা, আমি নিজের এক সন্তানকে তোমার পবিত্র গৃহের সন্নিকটে চাষাবাদহীন উপত্যকায় আবাদ করেছি”।[সূরা ইব্রাহীম ৩৭]

    সাধারণভাবে মনে হয়, তারা হয়তো মারা যেত, তাদের কাছে অল্প কিছুদিনের রসদ ছিল। কিন্তু এটা যেহেতু তাদের প্রতি আল্লাহ্* এর নির্দেশ ছিল তাই সামি’না ওয়া আতা’না, তারা সেখানে থেকে গেল।

    যখন তাঁর স্ত্রী তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন; হে আল্লাহ্*র নবী, আপনি কেন আমাদের এখানে রেখে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন? নবী ইব্রাহীম জবাবে বললেন যে এটা আল্লাহ্*র পক্ষ থেকে নির্দেশ। অবশেষে এটা তখন থেকেই আছে যে, আমাদের যমযমের পানি আছে, এবং সেই নির্দেশ সাফা থেকে মারওয়া পর্যন্ত সা’ই করা।

    দ্বিতীয় নিদর্শনঃ

    এবং দ্বিতীয় ওয়ালা হল যখন তাঁর ছেলে বেড়ে উঠলো, কা’বা ঘর নির্মাণ করায় তাঁর বাবাকে সাহায্য করার সমর্থ হল, তাঁর আখলাক ভাল ছিল, তাঁর অবয়বও ভাল ছিল। এরকম ছেলেকে কোন বাবাই বা ভালবাসবে না? একমাত্র ছেলেটি যিনি পরে নবী হয়েছিলেন, ইসমাইল।

    তারপর আবার নির্দেশ আসল; আপনার শিশুকে হত্যা করুন! যেহেতু এটা ছিল আল্লাহ্*র নির্দেশ, সামি’না ওয়া আতা’না। কুরআনে এটা এভাবে এসেছে,

    “অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম তাকে বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে দেখিযে, তোমাকে যবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি দেখ। সে বললঃ পিতাঃ! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাহে তো আপনি আমাকে সবরকারী পাবেন”। [সূরা আস-সাফ্*ফাত: ১০২]

    ত সেই মুহূর্তে যখন তিনি বাস্তবিকই তাঁর ছেলেকে মাথা নুয়ে রাখার পর জবাই করতে উদ্যত হলেন, ফেরেশতা জিব্রাইল ইসমাইলের বদলে একটি ভেরা প্রতিস্থাপিত করে দিলেন।
    তো কোরবানির শিক্ষা হচ্ছে এখানেই, আমাদের অবশ্যই ওয়ালা মেনে চলার জন্য ত্যাগ করতে হবে। যদি এটা আল্লাহ্*র আদেশ হয়, যেরকম ত্যাগ ই হোক না কেন, সামি’না ওয়া আতা’না। যদিও সাধারণভাবে দেখায় যে, এই আদেশ পালন করতে গেলে মৃত্যু আসতে পারে, যতক্ষণ না আমার শক্তি আছে, আমি সেটা পালন করবই। আসলে, আল্লাহ্*র প্রত্যেকটি আদেশই ভাল, কোন আদেশই ক্ষতিকর নয়।

    আল বারা’আহঃ

    এবং দ্বিতীয়টি হল বারা’। মুনকার এর মুখোমুখি হওয়াতে নবী ইব্রাহীম ভেঙ্গে পড়েননি। সূরা মুমতাহিনায় এসেছে,

    “তোমাদের জন্যে ইব্রাহীম ও তাঁর সঙ্গীগণের মধ্যে চমৎকার আদর্শ রয়েছে। তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার এবাদত কর, তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের মানি না। তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করলে তোমাদের মধ্যে ও আমাদের মধ্যে চিরশত্রুতা থাকবে”।[সূরা আল-মুমতাহানা ৪]

    তাই, শিরকের মুখোমুখি বিষয়গুলিতে, কোন নিরবতা নেই। এমনকি নবী ইব্রাহিমও মূর্তি ভেঙেছিলেন, যদিও তাঁর কাজ ছিল দাওয়াহ্* করা। বড় মূর্তিটি ভাঙ্গা হল না, এবং তিনি তাঁর কুঠারটা মূর্তির গলায় ঝুলিয়ে দিলেন।

    তাই যদি আমরা তা জানি, আমাদের অবশ্যই সেরকম হতে হবে, যদি আমরা জানি কোন জায়গায় শির্*ক হচ্ছে, আমরা তা ধ্বংস করে দিতে পারি। সেটাই ছিল নবী ইব্রাহীমের আল-ওয়ালা ওয়ালা বারা’।

    এবং এটাই হল মিল্লাতে ইব্রাহীম, তাই নবী মুহাম্মদ (স) ও এই নীতির ওপর ছিলেন। নবী মুহাম্মদ (স) কুরাইশের লোকদের দ্বারা মন্দভাবে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। কুরাইশদের ইবাদত হিসেবে মূর্তি পূজা তাদের অনেক পূর্বপুরুষদের মধ্যেই ছিল, তারপর তারা সকলেই জানল যে নবী (স) এটার বিরোধিতা করছেন, কোন রকম ছাড় ব্যতীত। এ কারনে আবু জাহেল প্রস্তাব করেছিল যাতে রাসুল (সাঃ) নরম হন, সহযোগিতা করেন; তাদের ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী কিছুদিন আল্লাহ্*র উপাসনা করেন, তারপর তারাও তা করবে। আর এ কারনেই সূরা কাফিরুন নাজিল হয়েছিল।

    তাই মিল্লাতে ইব্রাহীমের উপাদান হচ্ছে দুইটি; আল-ওয়ালা ওয়ালা বারা’, এটাই আমাদেরকে চর্চা করার জন্য বলা হয়েছে। তাই, ঈদুল আযহা শুধু পশু কোরবানির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, কারন যা দরকার তা হল তাকওয়া।

    সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আল-ওয়ালা ওয়ালা বারা’ এর আকিদাহ বহন করা কারন দুইটার জন্যেই ত্যাগ তিতিক্ষা করতে হবে। এটাই হল ঈদুল আযহার সারমর্ম অর্থাৎ মিল্লাতে ইব্রাহীমের অটল থাকা।

    সংগ্রহীত

  • #2
    জাযাকাল্লাহ

    Comment

    Working...
    X