Announcement

Collapse
No announcement yet.

আল্লাহর ভয়ে সদা কম্পমান

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আল্লাহর ভয়ে সদা কম্পমান


    ১লা শাওয়াল । ঈদুল ফিতরের আনন্দ চারদিকে । কোলাকুলি হাসি ও আনন্দ মিছিল আর ফিরানী, পায়েশের ছড়াছড়ি ।
    ঈদের নামাজান্তে আমীরুল মুমিনীন হযরত উমরকে (রা.) কে দেখা যাচ্ছে না । হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন,
    আমি খুজতে খুজতে তার বাড়ীতে গেলাম । ভিতর থেকে বদ্ধ একটি কক্ষ থেকে খলীফার ক্রন্দনের আওয়াজ ভেসে আসছিল ।
    আমি বদ্ধ দরজায় করাঘাত করছিলাম । তিনি দরজা খুলে দিলে আমি বললাম, হে আমীরুল মুমিনীন!
    আজকে ঈদের খুশীর দিনে আপনি এভাবে কেন কাদছেন? কিসে আপনাকে কাদাচ্ছে? খলীফা বললেন, যারা খুশীর খবর পেয়েছে তাদেরকে খুশী করতে দাও,
    আবার তিনি কাদতে শুরু করলেন । “হে আবু হুরায়রা! রমযানের বদৌলতে যার জীবন থেকে গুনাহের কালিমা মুছে গেছে তার জন্য আজ আনন্দের দিন ।
    আর রমযান বিদায় হওয়ার পরও যার জীবন পাপমুক্ত হতে পারেনি তার জন্য আ ক্রন্দন করার দিন । তিনি বলেন,

    فاني لا ادرى انا ام من المقبةلين ام من المترودين
    “আমি জানি না আমি কি আল্লাহর মকবুল বান্দাদের অন্তর্গত নাকি আমি বিতাড়িতদের অন্তর্ভূক্ত”?

    মাঝে মাজে একাকী বসে তিনি কাদতেন, একখানি তৃণখন্ত হাতে নিয়ে বলতেন,

    يا ام عمر لة لم تلد عمر ولم اك من البشر
    “আহ! উমরের মা উমরকে কেন জন্ম দিয়েছিল? আমি যদি মানুষ না হয়ে একটি তৃণ হতাম কত ভালো হতো- আমাকে আল্লাহ তা’আলার কাছে জওয়াব দিতে হতো না” ।
    _একদিন এক বৃদ্ধার সাথে দেখা । কথার প্রসঙ্গে তিনি বললেন, আমীরুল মুমিনীন সম্পর্কে তোমার ধারণা কি? বৃদ্ধা উমর (রা.) কে চিনতেন না ।
    সে নির্বিঘ্নে বলল, সে মোটেও ভাল মানুষ নয় । আমি অতি কষ্টে আছি খলীফা আমার কোন খবর নেয়নি ।
    উমর (রা.) বললেন, তুমি খলীফাকে তোমার অবস্থার কথা কেন বলনি? তাকে না জানালে তিনি কি করে জানবেন?
    বৃদ্ধা মহিলাটি বলল, এটি খলীফার দায়িত্বত প্রজাদের খোজ খবর রাখা । উমর (রা.) বললেন, “হে মা!
    কি পরিমান অর্থ পেলে তোমার দুঃখ ঘুচবে আর তুমি খলীফাকে ক্ষমা করে দেবে”?
    সে সময় হযরত আলী (রা.) ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) সে পথ দিয়ে যেতে খলীফাকে আমীরুল মুমিনীন বলে সম্বোধন করে সালাম দিলেন ।
    বৃদ্ধা রমনীটি ভয়ে কেটে উঠল । হযরত উমর তাকে সাত্ত্বনা দিয়ে ৫০০শত স্বর্ণমুদ্রা তার হাতে তুলে দিয়ে বললেন,
    খলীফার বিরুদ্ধে তোমার আর কোন অভিযোগ আছে? তিনি বললেন, না ।

    “ঘর্মাক্ত কলেবরে তপ্ত মরুতে খলীফা কি যেন খুজছেন, গরমের মধ্যে আপনি কি খুজছেন? হযরত উমর (রা.) বলেন, হে আলী!
    বায়তুল মালের উটের হিসাব মিলছে না । আমি উট তালাশ করছি । আলী (রা.) বললেন,
    উট খোজার জন্য কি আর কেউ নেই? উমর (রা.) বললেন, মুসলমানদের বায়তুল মালের উটের জন্য কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা উমরকে জিজ্ঞাসা করবে” ।

    “সমগ্র পৃথিবী যে উমরের ভয়ে কম্পমান সে উমর আল্লাহর ভয়ে থর থর করে কাপছে । গোলামকে ডেকে বললেন-
    “আসলাম! তুমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছে আমাকে কিছুক্ষণ উটের রশি হাতে চলতে দাও । আর তুমি উটের পিঠে বস ।”
    গোলাম বললেন, অসম্ভব, এটা কখনও হতে পারে না । খলীফঅ বললেন, না সারাপথ প্রচন্ড গরমের মধ্যে তুমি উট টেনে চলবে এটা অমানবিক ।
    আমি জুলুমের জন্য আল্লাহকে জবাব দিতে পারব না । খলীফা নির্দেশ দিয়ে গোলামকে উটের পিঠে চড়িয়ে তিনি উটের রশি হাতে মরু পাড়ি দিলেন ।
    এইভাবে পালাক্রমে দিনের পর দিন অতিক্রম করে জেরুজালেম নগরীর প্রান্তে উপস্থিত হলেন ।
    খ্রিষ্টান নরপতি ও পাদ্রীগণ বিশ্বনন্দিত রাষ্ট্রনায়ক যার জন্য এতদিন অপেক্ষা করছেন
    সে উমরকে অভিবাদন জানাবার জন্য উটের আরোহীর দিকে সসম্মানে এগিয়ে গেলেন ।
    খলীফার গোলাম সিক্ত নয়েনে চিৎকার করে বললেন, উটের আরোহী খলীফঅ নয় উটের চালক খলীফা ।
    মুসলমান ও খ্রিষ্টান সেনাপতি, নরপতি ও হাজার হাজার কৌতূহলী জনতা এ দৃশ্য দেখে হতবাক!
    -রশি হাতে হযরত উমর (রা.) এর উপস্থিতি খ্রিষ্টান জনপদকে এত অভিবূত ও বিস্মিত করেছিল যে
    তাদের যুগযুগ ধরে যুদ্ধ করার সমরাস্ত্র, তীর, বল্লম, উন্মুক্ত কৃপাণ সবকিছু উপর (রা.) এর মানবতার কাছে আজ পরাভূত ও পরাজিত ।
    আজকের পৃথিবীর সমস্যা যেন একজন উমরের মধ্যে নিহিত রয়েছে ।
    আর যে ব্যাক্তিটি শুধু বিশ্ব জাহানের প্রভু আল্লাহ তা’আলার ভয়ে ছিল কম্পমান
    আর তারই ন্যায়দন্ডের সামনে গোটা পৃথিবী ছিল কম্পনা ।
    ------------------আল্লাহু আকবার কাবীর ।
    আনসার কে ভালবাসা ঈমানের অংশ ।

  • #2
    Originally posted by AL-ANSAR View Post

    .....রশি হাতে হযরত উমর (রা.) এর উপস্থিতি খ্রিষ্টান জনপদকে এত অভিবূত ও বিস্মিত করেছিল যে
    তাদের যুগযুগ ধরে যুদ্ধ করার সমরাস্ত্র, তীর, বল্লম, উন্মুক্ত কৃপাণ সবকিছু উপর (রা.) এর মানবতার কাছে আজ পরাভূত ও পরাজিত ।
    লেখক ভাইয়ের এই কথার সাথে একমত নই। উমর রদিঃ এর তরবারীই এই নাপাক ইয়াহুদি খ্রিষ্টানদেরকে উমর রদিঃ এর মানবতা বুঝতে সাহায্য করেছিল। যেমন করে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর মানবতা কুরাইশরা তখনই ভালো করে বুঝে ছিল যখন রাসুলুল্লাহ সাঃ শক্তি ও লোহা সহ মক্কায় প্রবেশ করেছিলেন...

    তাই কথা অবশ্যই ভুল যে উমর রদিঃ এর মানবতার কাছে ইয়াহুদী খ্রিষ্টানদের সমরাস্ত্র, তীর, বল্লম, পরাজিত হয়েছে...
    "হক হকের জায়গায়
    সম্মান সম্মানের জায়গায়
    আমরা বেছে নিয়েছি আল্লাহর দলকেই"

    Comment


    • #3
      আহা! কোথায় উনারা,
      আর কোথায় আমরা!
      শহিদী সুধার খোঁজে মোরা
      ছুটে চলি বিশ্বময়!

      Comment


      • #4
        Originally posted by abdullah yafur View Post
        লেখক ভাইয়ের এই কথার সাথে একমত নই। উমর রদিঃ এর তরবারীই এই নাপাক ইয়াহুদি খ্রিষ্টানদেরকে উমর রদিঃ এর মানবতা বুঝতে সাহায্য করেছিল। যেমন করে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর মানবতা কুরাইশরা তখনই ভালো করে বুঝে ছিল যখন রাসুলুল্লাহ সাঃ শক্তি ও লোহা সহ মক্কায় প্রবেশ করেছিলেন...

        তাই কথা অবশ্যই ভুল যে উমর রদিঃ এর মানবতার কাছে ইয়াহুদী খ্রিষ্টানদের সমরাস্ত্র, তীর, বল্লম, পরাজিত হয়েছে...
        জাযাকাল্লাহ ভাই ।
        আনসার কে ভালবাসা ঈমানের অংশ ।

        Comment


        • #5
          আজ আমাদের সে একজন ওমরের দরকার .............. তাহলে, সারা পৃথিবী মুসলিমদের হয়ে যাবে ...ইনশা....

          Comment


          • #6
            ইনশাআল্লাহ আল্লাহর সাহায্য আসবেই।
            আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
            আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

            Comment

            Working...
            X