ভারতে মুসলিম-বিরোধী দাঙ্গা 'পরিকল্পিত' হওয়ার কারণ, মুসলিম হত্যা, মুসলিমদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
অমিতাভ ভট্টশালী বিবিসি, কলকাতা
• ১২ এপ্রিল ২০১৮
রামনবমী পালনকে কেন্দ্র করে ভারতে গত মাসে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়েছিল, সেগুলো পরিকল্পনার ভিত্তিতেই হয়েছিল।
মার্চের শেষ সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গ আর বিহার রাজ্যে মোট দশটি জায়গায় উগ্র হিন্দুরা হামলা করেছিল।
ঘটনাগুলির তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, একই ভাবে ওইসব অশান্তি শুরু হয়েছিল, হাজির ছিলেন একই ধরণের যুবকরা, তাদের গলায় ছিল একই ধরণের স্লোগান।
হামলার শিকারও হয়েছিলেন অনেক মুসলমান।
তাই এ অশান্তি, হিংসা বা অগ্নিসংযোগ কোনও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়াই, অনিয়ন্ত্রিতভাবে, হঠাৎ ঘটে গেছে - ঘটনাক্রম বিশ্লেষণ করে এরকমটা মনে করা কঠিন।
বিহার আর পশ্চিমবঙ্গের দাঙ্গা বা হিংসা কবলিত এলাকাগুলি থেকে যেসব প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন, তার মধ্যে ৯টি বিষয় রয়েছে, যা প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই মোটামুটিভাবে এক । কোথাও তা দাঙ্গার রূপ নিয়েছিল, কোথাও ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের মধ্যেই শেষ হয়েছে।
এই ৯টি বিষয় থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায়, যে দশটি আলাদা শহরে বিচ্ছিন্নভাবে, কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই ওই হিংসাত্মক ঘটনাগুলি ঘটে নি।
*একই ধরণের নানা নামের সংগঠন উগ্র মিছিল বের করেছিল
১. উগ্র মিছিল, যুববাহিনী, গেরুয়া পতাকা, বাইক...
বিহারের ভাগলপুরে ১৭ই মার্চ সাম্প্রদায়িক অশান্তির শুরু। সেদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী চৌবের পুত্র অর্জিত চৌবে 'হিন্দু নববর্ষে'র দিন এক শোভাযাত্রা বের করেছিলেন।
সেখান থেকে মুসলমানদের ওপরে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটে ওই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়।
প্রতিটা জায়গাতেই রামনবমীর দিন উগ্র মিছিল বার করা হয়েছিল। বাইকে চেপে যুবকরা ওইসব মিছিলে সামিল হয়েছিল। তাদের মাথায় গেরুয়া ফেট্টি ছিল। সঙ্গে ছিল গেরুয়া ঝান্ডা।
হিন্দু নববর্ষ দিনটিও নতুন আবিষ্কার হয়েছে। রামনবমীর শোভাযাত্রাও বেশীরভাগ শহরেই আগে বড় করে হতে দেখে নি কেউ।
২. শোভাযাত্রাগুলির আয়োজন করেছিল একই ধরণের নানা নামের সংগঠন
যে সব এলাকায় রামনবমীর শোভাযাত্রা থেকে অশান্তি ছড়িয়েছে, সেগুলির প্রত্যেকটিরই আয়োজন করেছিল একই ভাবধারার সংগঠন, যদিও একেক জায়গায় তাদের নাম ছিল একেক রকম।
সংগঠনগুলি প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারতীয় জনতা পার্টি, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ আর বজরং দলের সঙ্গে কোনও না কোনওভাবে যুক্ত।
ঔরঙ্গাবাদ আর রোসড়ায় তো বিজেপি এবং বজরং দলের নেতারা সরাসরিই মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন।
বেশ কয়েকটি জায়গায় দেখা গেছে অপরিচিত কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠনও জমকালো শোভাযাত্রা বার করেছে।
পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল-রাণীগঞ্জ বা পুরুলিয়া অথবা উত্তর ২৪ পরগণা জেলাগুলির যেসব অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়িয়েছিল, সেখানেও বিজেপি নেতাদের সমর্থন ছিল রামনবমীর শোভাযাত্রাগুলিতে। তারা বিভিন্ন জায়গায় মুসলমানদের ঘরবাড়িতে আগুন দিয়ে ছিল।
৩. বিশেষ একটি রাস্তা ধরেই মিছিল নিয়ে যাওয়ার জেদ
অশান্তি ছড়িয়েছিল যেসব শহরে, তার প্রত্যেকটির ক্ষেত্রেই মুসলমান প্রধান এলাকা দিয়ে রামনবমীর শোভাযাত্রা নিয়ে যাওয়ার জন্য জিদ ধরা হয়েছিল। মিছিলের রুট পরিকল্পিতভাবেই মুসলমান প্রধান এলাকাগুলো দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
৪. উস্কানিমূলক স্লোগান আর ডিস্ক জকি
যেসব জায়গায় শোভাযাত্রা বার করা হয়েছিল, তার প্রতিটি জায়গাতেই মুসলমানদের 'পাকিস্তানী' বলা হয়েছে। বাজানো হয়েছে ডি জে-ও।
'যখনই হিন্দুরা জেগে উঠেছে, তখনই মুসলমানরা ভেগেছে' - এরকম স্লোগানও উঠেছে মিছিল থেকে।
ঔরঙ্গাবাদে কবরস্থানে গেরুয়া ঝান্ডা লাগিয়ে দেওয়ার ছবি এসেছে বিবিসি-র কাছে।
রোসড়ার 'তিন মসজিদ'-এ ভাঙ্গচুড় করে গেরুয়া ঝান্ডা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
প্রত্যেকটা মিছিলেই একই ধরণের রেকর্ড করা গান বাজানো হয়েছিল।
৫. মাপা হিংসা, বাছাই করে অগ্নিসংযোগ
মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষতি যাতে হয়, সেরকম ভাবেই হামলা হয়েছিল।
ঔরঙ্গাবাদে ৩০টি দোকান জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল - যার মধ্যে ২৯টি-ই মুসলমানদের দোকান। হিন্দুদের দোকানে নয়।
জেনে বুঝেই যে ঠিক মুসলমানদের দোকানেই আগুন দেওয়া হয়েছিল, সেটা বোঝাই যায়।
৬. প্রশাসনের ভূমিকা
বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে প্রশাসন একরকম নির্বাক দর্শকের ভূমিকায় থেকেছে।
ঔরঙ্গাবাদের ২৬ মার্চ যে মিছিল হয়েছিল, সেখান থেকে মসজিদের দিকে চপ্পল ছোঁড়া, কবরস্থানে গেরুয়া ঝান্ডা পুঁতে দেওয়া বা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপমানজনক স্লোগান দেওয়া হয়েছিল।
তবুও পরের দিন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা মুসলমান-প্রধান এলাকা দিয়েই মিছিল করার অনুমতি দিয়েছিল।
ঔরঙ্গাবাদে দাঙ্গা কবলিত এলাকার মানুষ বলেছেন যে প্রশাসনের চোখের সামনেই শহর জ্বলছিল।
৭. মুসলমানদের মধ্যে আতঙ্ক, অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দোল্লাস
ঔরঙ্গাবাদের এক বাসিন্দা ইমরোজ মধ্য প্রাচ্যে রোজগারের অর্থ জমিয়ে দেশে ফিরে এসে জুতোর ব্যবসা শুরু করেছিলেন।
তার দোকান জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Results 1 to 2 of 2
-
04-13-2018 #1
- Join Date
- Feb 2018
- Posts
- 332
- جزاك الله خيرا
- 0
- 560 Times جزاك الله خيرا in 212 Posts
ভারতে মুসলিম-বিরোধী দাঙ্গা 'পরিকল্পিত' হওয়ার কারণ, মুসলিম হত্যা
-
04-13-2018 #2
- Join Date
- Apr 2018
- Posts
- 66
- جزاك الله خيرا
- 0
- 31 Times جزاك الله خيرا in 22 Posts
এখন ইমরোজ ঠিক করেছেন এই দেশে আর ব্যবসা করবেন না। পরিবার নিয়ে তিনি হংকং চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
অন্যান্য এলাকার মুসলমানরাও ভাবতে শুরু করেছেন যে ব্যবসা বোধহয় তুলেই দিতে হবে।
উল্টোদিকে ওই সব এলাকায় বসবাসকারী হিন্দু যুবকদের মধ্যে একটা জয়ের আনন্দ দেখতে পাওয়া গেছে।
ভাগলপুরের এক যুবক শেখর যাদব বুক চিতিয়ে বলছিলেন, “এইভাবেই জবাব দেওয়া হবে।"
*সমগ্র ভারত জুড়েই উগ্রবাদী হিন্দুদের আগ্রাসন বাংলাদেশেও যার প্রভাব পড়ছে।
*ভারতকে মুসলিম মুক্ত করার ঘৃণ্য চক্রান্তে মেতে উঠেছে। আসাম থেকে লক্ষ লক্ষ মুসলিমদের ভিটা বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে যাচ্ছে। এমনিভাবে আসানসোলে ইমাম সাহেবের যুবক ছেলেকে ভর দুপুরে হত্যা করেছে। মোট কথা মুসলমানদের রক্তের হোলিখেলায় মেতে উঠেছে সন্ত্রাসী মালাউনরা। তবুও কি তাদের বিরুদ্ধে জাগার সময় হয়নি? এখনো কি মনে করবেন গাযওয়াতুল হিন্দ অনেক দূরে? সর্বত্র হিন্দু গো রক্ষকরা মুসলমানদের মারছে, বাড়ি ঘর ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করছে! আর মুসলমানদের ভাবখানা যেন এমন » হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই জিহাদের কোন প্রয়োজন নাই!!!
তবে জেন রেখ! যতই ভাই ভাই বল তারা মুসলমানদের চির শত্রু। কখনো বন্ধু হবে না!!
Similar Threads
-
অদ্ভুত সাঙ্ঘাতিকতাঃ হলুদ আলো জাতীয় গণমাধ্যম যেভাবে ধর্ষণকে ছড়িয়ে দিচ্ছে!
By umar mukhtar in forum ডকুমেন্টারিReplies: 10Last Post: 03-12-2019, 08:03 AM -
টঙ্গীতে জঙ্গী বিরোধী চিরুনী অভিযান
By ইলিয়াস গুম্মান in forum কুফফার নিউজReplies: 10Last Post: 10-29-2018, 01:28 PM -
ভারতে মুসলিম-বিরোধী দাঙ্গা 'পরিকল্পিত' হওয়ার কারণ, মুসলিম হত্যা, মুসলিমদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
By BANGLA NEWS in forum আখেরুজ্জামানReplies: 2Last Post: 05-28-2018, 12:45 PM -
"জঙ্গি মারো জঙ্গি ধরো জঙ্গি ভরো জেলে"- সম্প্রতি প্রকাশিত মুহিব খানের নতুন গানের প্রতিক্রিয়া
By hadid_bd in forum সাধারণ সংবাদReplies: 8Last Post: 12-09-2017, 06:54 PM -
আজওয়াদ বিজয়ের পূর্ণাঙ্গ ভিডিও
By tipo soltan in forum অডিও ও ভিডিওReplies: 1Last Post: 06-23-2016, 03:18 AM