Announcement

Collapse
No announcement yet.

রমাযানের করণীয় ও বর্জনীয় || Al Ehsar Media

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • রমাযানের করণীয় ও বর্জনীয় || Al Ehsar Media


    http://i.cubeupload.com/liY94l.jpg

    PDF DOWNLOAD LINKS

    http://www.mediafire.com/file/jkf4we...nh/Ramdan_.pdf
    https://my.pcloud.com/publink/show?c...JdmAoo1hVKAusV
    https://ia601502.us.archive.org/2/it.../Ramdan%20.pdf
    https://upload.cat/171d4f9e85a56510
    https://ufile.io/1ptgk

    অনলাইনে পড়ুন

    রমাযানের করণীয় ও বর্জনীয় || Al Ehsar Media

    بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ

    إِنَّ الْحَمْدَ لِلّٰهِ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُوْلِ اللّٰهِ وَعَلَى اٰلِهِ وَصَحْبِهِ أَجْمَعِيْنَ

    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,

    يَا أَيّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

    “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সওম ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পার।” (সুরা বাকারাহ্ ২ : ১৮৩)

    প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা!

    রমাযান মাস আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে একটি বিশেষ নিয়ামাত। এই নিয়ামাত শুধু তাদের জন্য যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ, তাঁর রসূল ও তাঁর কিতাবের প্রতি। আর যারা এর প্রতি ঈমান আনেনি, তাদের জন্য রমযানের ফযিলাত নয়। আর এটাই হলো ঈমান ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন–

    الَّذِينَ آَمَنُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ

    “যারা ঈমানদার তারা কিতাল (যুদ্ধ) করে আল্লাহ্র রাহে। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা কিতাল (যুদ্ধ) করে তাগুতের পক্ষে।” (সূরা নিসা ৪ : ৭৬)

    রমযানের ফযিলাত পাওয়ার জন্য বান্দাকে একমাত্র আল্লাহর দাসত্ব এবং তারই সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত করতে হবে। সাথে সাথে কুফর ও তাগুতকে সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে এবং যারা কুফর ও তাগুতের সাথে সম্পর্ক রাখে তাদের সাথেও সম্পর্কচ্ছেদ করতে হবে।

    যদি আমরা সম্পূর্ণরূপে রমযান মাসের ফযিলাত পেতে চাই, তাহলে যে সকল ব্যক্তিরা পৃথিবীতে আল্লাহর দাসত্ব করার পরিবেশ তৈরীতে নিজেদের জীবন কুরবানী করছেন তাদের সাথে সম্পর্ক রাখা, তাদের অভাব দূর করার চেষ্টা করা, তাদের জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা। আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী ও মুসলিম জাতির অধিকার আদায়ে স্বচেষ্ট হওয়া। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন–

    ‏الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يُسْلِمُهُ مَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ أَخِيهِ كَانَ اللَّهُ فِي حَاجَتِهِ وَمَنْ فَرَّجَ عَنْ مُسْلِمٍ كُرْبَةً فَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُ بِهَا كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

    “এক মুসলমান আরেক মুসলমানের ভাই। সে তার প্রতি যুলুম করে না এবং তাকে দূশমনের হাতে সোপর্দও করে না। যে ব্যক্তি তার ভাই –এর অভাব পূরণ করবে আল্লাহ তার অভাব দূর করবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ তা‘আলা তার বিনিময়ে কিয়ামত দিবসে তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন। যে ব্যক্তি মুসলমানের দোষক্রটি গোপন রাখবে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামত দিবসে তার দোষক্রটি গোপন রাখবেন।” (সহিহ মুসলিম ৬৪৭২, ইফাবা হা: ৬৩৪২)

    প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা!

    মহান রব্বুল আলামীন পবিত্র রমযান মাসে বান্দার সকল নেক আমলের সওয়াব অন্য মাসের তুলনায় বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেন। তাই এ মাসে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ও আখেরাতে জাহান্নাম থেকে মুক্তির আশায় বেশী বেশী নেক আমল তথা ভাল কাজ করতে হবে। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি রমযান মাসের কল্যাণ ও ফযিলাত থেকে বঞ্চিত হলো সে কেমন যেন সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো।

    তাই পবিত্র রমযান মাসের গুরুত্বপূর্ণ করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে আমাদের সচেতন থাকতে হবে, যাতে আমালগুলো আল্লাহ তা‘আলার নিকট গ্রহণীয় হয়, বিফলে না যায়। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

    مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ

    “যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।” (সহিহ বুখারি ১৯০৩, ইফাবা হা: ১৭৭৯)

    * রমযান মাসের করণীয়: (শারীরিক)

    * রমাযানের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা (ইবাদাতের জন্য):

    রমযানের প্রারম্ভেই যথা সম্ভব পার্থিব কাজ কমিয়ে ফেলুন যাতে কাজের ব্যস্ততায় রমযানের ফযিলাতপূর্ণ সময় অবহেলায় কেটে না যায়। মা–বোনেরাও যেন রমযানের বারাকাত থেকে বঞ্চিত না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখুন। তাদেরকে আত্মশুদ্ধি এবং তাক্বওয়া অর্জনের নাসীহা প্রদান করুন। সাংসারিক কাজের ব্যস্ততা যেন রমযানের অপরিহার্য কাজ এবং ইবাদাত থেকে মহিলাদের দূরে সরিয়ে না রাখে সেদিকটা খেয়াল রাখুন। তাদের কাজগুলো হালকা করে দিন, অবসর সময়ে ঘরে অবস্থান কালে তাদের কাজে সাহায্য করুন।

    * জ্ঞান অর্জন করা:

    রমাযান সম্পর্কে বিশুদ্ধ জ্ঞান অর্জন করুন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে রমযানের সিয়াম ও অন্যান্য ইবাদতের মাসআলা–মাসাইল আলোচনা করুন, এতে আপনি রমযানের ইবাদতসমূহ সঠিকভাবে পালন করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ, উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা বৃদ্ধি পাবে। রমাযান সম্পর্কে আপনি যত বেশি জানবেন ততো বেশি ইবাদাত করে আপনার প্রতিদানকে বহুগুণে বাড়িয়ে নিতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

    * যত্ন সহকারে সিয়াম পালন:

    রমাযানের সিয়াম যত্ন সহকারে পালন করুন। সওম ভঙ্গ করে বা সওমকে হালকা করে দেয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকুন। এসব কাজের আশপাশে না যেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।

    * যথা সময়ে সলাত আদায়:

    প্রতি ওয়াক্তের ফরয সলাত সময় মত আদায় করুন, ফরয সলাতের পাশাপাশি বেশী বেশী নফল সলাত আদায় করার চেষ্টা করুন। সুন্নাত এবং নফল ইবাদত আপনার পক্ষে যতটা সম্ভব বাড়িয়ে দিন। এ মাসের নফল ইবাদত অন্য মাসের ফরযের সমান। সন্তানদেরকেও ইবাদতে অভ্যস্ত করে তুলুন।

    * কুরআন তিলাওয়াত:

    তারতীলের সাথে বেশী বেশী কুরআন তিলাওয়াত করুন। যথাসাধ্য অর্থ বুঝে কুরআন পড়ার চেষ্টা করুন। এতে খুশু–খুজু ও তাকওয়া বৃদ্ধি পাবে এবং কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য এবং তা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বুঝতে পারবেন। কুরআনের এ দরসে আপনার অধিনস্ত পরিবারবর্গকেও শামিল রাখুন। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসে অধিক পরিমানে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। (সহিহ মুসলিম)

    * কিয়ামুল লাইল:

    রমযানে কিয়ামুল লাইল তথা রাত জেগে সলাত আদায়ের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন ও নিজেকে কিয়ামুল লাইলে অভ্যস্ত করে তুলুন। আল্লাহ তা‘আলার নিকট বেশী বেশী দু‘আ করুন, কারণ রমযান মাসের প্রতি রাতেই আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দার দু‘আ কবুল করেন।

    * লাইলাতুল ক্বদর:

    আল্লাহর ইবাদতে অধিক মনোযোগী হোন। লাইলাতুল ক্বদর পাওয়ার জন্য রমযানের শেষ দশকে সম্ভব হলে মাসজিদে ইতেকাফ করুন। লাইলাতুল কদরের রাত এক হাজার মাসের চেয়ে উত্তম (সূরা আল–ক্বদর)। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল। (সুনানে নাসাঈ ২১০৫)

    * রমযানের করণীয়: (আর্থিক)

    একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা আমাদের মুসলিম সমাজ ভুলেই গিয়েছে, যা স্মরণ করালেও স্মরণে আসেনা। এবং তারা মনে করে এটা রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবাদের যুগে ছিল, আমাদের যুগে নাই বা আমাদের দেশে নাই। সেটি হলো– মুজাহিদদের সাহায্য সহযোগিতা করা, তাদের পরিবারের ভরণ পোষণ করা এবং যারা বন্দী আছেন তাদের মুক্ত করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন–

    وَيُطْعِمُونَ الطَّعَامَ عَلَىٰ حُبِّهِ مِسْكِينًا وَيَتِيمًا وَأَسِيرًا

    “তারা আল্লাহর ভালবাসায় অভাবগ্রস্থ, ইয়াতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে।” (সূরা আল–ইনসান ৮–৯)

    উল্লেখ্য যে, ঈমান এবং কুফরের যুদ্ধ চিরন্তন। এ যুদ্ধ ততদিন চলবে যতদিন না আল্লাহর দ্বীন আল্লাহর জমিনে পরির্পূণরূপে কায়েম হয় এবং সকল প্রকার কুফর দূরীভূত হয়। উপমহাদেশের এ অঞ্চলে আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য যে সকল ভাইয়েরা নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে এই জিহাদি কাফেলায় শরীক হয়েছিলেন তাদের অনেকেই আজ ত্বগুতের জিন্দান খানায় বন্দি হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। তাদের অনেককে হত্যা করা হয়েছে, অনেকের উপর চালানো হয়েছে নির্যাতনের স্টিম রোলার, এখনও চালানো হচ্ছে অমানবিক নির্যাতন–যা এ স্বল্প পরিসরে উপস্থাপন করা অসম্ভব। অনেককে দীর্ঘ কারাভোগের পর ত্বগুতের প্রহসনমূলক বিচারে মৃত্যুদন্ডাদেশের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে (ইনশাআল্লাহ শহীদ), আবার অনেকের এখন তা কার্যকর করার ঘৃণ্য পরিকল্পনা চলছে।

    তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুধু একটাই তারা চেয়েছেন আল্লাহর দ্বীনের বিজয়। তারাতো আমাদেরই ভাই, আমরা কী করে তাদেরকে ভুলে থাকতে পারি! কী করে ভুলে থাকতে পারি ঐসকল মাযলুম বোনদেরকে যারা এ অঞ্চলের ত্বগুতের বাহিনী দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন, দীর্ঘ এক যুগের চেয়েও বেশী সময় ধরে ত্বগুতের টর্চার সেলরূপী কারাগারে বন্দি থেকে অমানবিক জীবন যাপন করছেন। অথচ আমরা মুক্ত অবস্থায় আমাদের পরিবার পরিজনের নিকট অবস্থান করে আরাম–আয়েশে সময় কাটাচ্ছি। সুস্বাদু ও মুখরোচক পানাহারে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছি। কী জবাব দেবো আল্লাহর কাছে! যদি আমরা ঐ মাযলুমদের আর্তনাদে তাদের উদ্ধারে এগিয়ে না যাই।

    যুলুমের চার দেয়ালের মাঝে অন্তরীণ থাকায় তাদের কষ্টের আহাজারিতো ঐ দেয়াল ভেদ করে আমাদের কান পর্যন্ত পৌছে না। আজকে আমাদের দেশে যেভাবে জুলম নির্যাতন অব্যাহত আছে ঠিক তেমনিভাবে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ বার্মার আরাকানে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর চলছে নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, লুট। দেশ থেকে তারা বিতারিত হয়ে আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতিবেশি মুসলিম হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের অবশ্য কর্তব্য। তারা শরনার্থী ক্যাম্পগুলোতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সেখানে তাদেরকে মানবিক সহায়তা করা আমাদেরই দায়িত্ব। পাশাপাশি যে সকল মুজাহিদ ভাইগণ প্রতিরোধ জিহাদে অবতীর্ণ হয়েছেন, তাদেরকে অস্ত্র, গোলাবারুদ দিয়ে সাহায্য করাও আমাদের দায়িত্ব!

    মহা পরাক্রমশালী আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের অসহায়ত্ব জানেন, মাযলুমের আর্তনাদ শুনেন। তারা তো ঐ সকল অসহায় মানুষ যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে দায়িত্ব পালনে একনিষ্ঠ ও সর্তক হতে বলেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

    وَمَا لَكُمْ لَا تُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ وَالْوِلْدَانِ الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَل لَنَا مِنْ لَدُنْكَ وَلِيًّا وَاجْعَل لَنَا مِنْ لَدُنْكَ نَصِيرًا

    “তোমাদের কি হল যে তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করছো না ওই সকল অসহায় পুরুষ, নারী এবং শিশুর জন্য, যারা বলছে হে আমাদের রব! আমারদেরকে এই যালিম অধ্যুষিত এলাকা থেকে বের করে নিয়ে যান। আপনার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একজন ওয়ালী নিয়োগ করে দিন। এবং আপনার পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী নিয়োগ করে দিন।” (সূরা নিসা ৪ : ৭৫)

    সুতরাং এই সকল মাযলুম বন্দী মুসলিম ও আরাকানী মুসলিমদের সাহায্যে আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদেরকে মুক্ত করতে একদিকে যেমন আমাদেরকে আল্লাহর রাহে অস্ত্র ধরতে হবে, নিতে হবে সামরিক প্রস্তুতি। অন্যদিকে ব্যয় করতে হবে আমাদের ধন সম্পদ, আমাদের প্রিয় জিনিস। এটাই আল্লাহর হুকুম। নতুবা কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে আমাদের জবাব দেয়ার মতো কোন ওজর থাকবে না। সমগ্র মানবজাতির সামনে লজ্জিত ও অপমানিত হতে হবে। পাকড়াও হতে হবে কঠিন শাস্তিতে। আমরা আল্লাহর সেই শাস্তি থেকে আশ্রয় চাই যা তিনি তার হুকুম অমান্যকারী বান্দাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন। পূর্ববর্তী সৎকর্মশীল বান্দারা যথার্থই আল্লাহর হুকুম বাস্তবায়ন করেছেন। আমাদের জন্য রেখে গেছেন অনুসরণীয় অনুপম আদর্শ। তারা আল্লাহ এবং তার রসূলের (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুকুম অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন।

    * বেশী বেশী দান সদাকা করা:

    আল্লাহ তা‘আলা বলেন–

    فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى – وَصَدَّقَ بِالْحُسْنَى – فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْيُسْرَى

    “অতএব, যে দান করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে। এবং উত্তম বিষয়কে সত্য মনে করে। আমি তার জন্য সহজ পথে চলা সহজ করে দেব।” (সূরা আল লাইল ৯২ : ৫–৭)

    “আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল, রমাযানে তিনি আরো অধিক দানশীল হতেন। রমযান মাসে তিনি প্রবাহিত বাতাসের ন্যয় দান করতেন। (সহিহ বুখারি ৫, ইফাবা হা: ৫, সহিহ মুসলিম ৩২০৮)

    অন্য মাসের তুলনায় রমাযান মাসে দান করলে বেশী সওয়াব পাওয়া যায়। তাই রমাযান মাসে বেশী বেশী দান করতে হবে। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

    كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ ، الْحَسَنَةُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعمِائَة ضِعْفٍ

    “মানব সন্তানের প্রতিটি নেক কাজের সওয়াব দশ গুণ থেকে সাতশগুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়।” (সহিহ মুসলিম ২৫৯৬, ইফাবা হা: ২৫৭৩)

    রমাযান মাসে বন্দী মুক্তি ও মুজাহিদদের সাহায্যের জন্য বেশী বেশী ব্যয় করুন।

    * ইফতার করা/করানো:

    ইফতার করুন খেজুর/পানি দ্বারা এবং সায়েমদের ইফতার করান, বিশেষ করে আত্মীয় স্বজন, অসহায় গরীব মুসলিম ও মুজাহিদীনদের মধ্যে খেজুর ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ করুন।

    * যাকাতের অর্থ ব্যয়:

    সম্পদে যাকাতের নিসাব পূর্ণ হয়েছে এমন প্রত্যেকের উপর যাকাত প্রদান করা ফরয, ঠিক যেমনিভাবে সলাত ফরয। যাকাতের ৮ টি খাতের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দু‘টি খাত হল ‘ফী সাবিলিল্লাহ’ এবং ‘বন্দি মুক্ত করণ (ফির রিক্বাব)’। এই দু‘টি খাতে যাকাত প্রদান করলে বাকী প্রায় সব খাতে যাকাত প্রদানের হক্ব আদায় হয়ে যায়। কারণ এখানে রয়েছে ফকির, মিসকিন, যাকাত আদায়কারী, ঋণগ্রস্থ, মুসাফির এবং কিছু ক্ষেত্রে এমন মানুষ যাদেরকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করতে অর্থ ব্যয় করার প্রয়োজন হয়। তাই শরীয়াহর হুকুম ও বাস্তবতার আলোকে এ দু‘টি খাতে যাকাতের অর্থ প্রদান করা বেশী জরুরী।

    সম্পদ থেকে যাকাত প্রদান কারও প্রতি অনুগ্রহ করা নয় বরং যাকাত প্রদানকারী তার সম্পদকে পবিত্র করেন প্রাপকদের প্রাপ্য প্রদান করার মাধ্যমে। সুতরাং কোন মুসলিমের এমন চিন্তা করা কখনই যথার্থ হবে না যে, নামে মাত্র যাকাত প্রদান করে নিজেদেরকে তার দায় থেকে মুক্ত করবে। তাই আমরা যাকাত প্রদানে সামর্থ্যবান আমাদের দ্বীনি ভাই ও বোনদের আহবান করছি, আপনারা যাকাত, উশর, ফিতরা সঠিকভাবে হিসাব করে বের করুন এবং সঠিক খাতে প্রদান করুন। মনে রাখবেন, এটা আল্লাহর ফরয বিধান। শরীয়াহ মোতাবেক আদায় না হলে অবশ্যই আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে। নিজে সঠিকভাবে যাকাত প্রদান করুন এবং অন্য ভাইদেরকেও যাকাত প্রদানে উদ্ধুদ্ধ করুন। মনে রাখবেন, আল্লাহ আপনাকে সম্পদশালী করেছেন, আপনি কী আমল করেন সেটা তিনি দেখবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে এবং নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।” (সূরা আল–বাকারাহ্ ২ : ১৯৫)

    * অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো:

    গরিব–দুঃখী অসহায় মানুষের খোঁজ খবর নিন এবং তাদের প্রতি সহানুভূতি ও দয়া প্রদর্শন করুন। বিশেষ করে নিজের গরীব আত্মীয়–স্বজনদের এবং দ্বীনের পথে চলার কারণে যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, ত্বগুত দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের খোঁজ–খবর রাখুন তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করুন। তাদের প্রতি সাহায্য–সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিন। এবং যে সকল মুজাহিদ আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়েছেন তাদের স্ত্রী ও ইয়াতিম সন্তানদের দেখাশুনা করুন। কেননা রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

    السَّاعِي عَلَى الأَرْمَلَةِ وَالمِسْكِينِ ، كَالْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ، أَوِ القَائِمِ اللَّيْلَ الصَّائِمِ النَّهَارَ

    “বিধনা ও মিসকীন–এর জন্য খাদ্য জোগাড় করতে চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের মত অথবা রাতে সলাতে দন্ডায়মান ও দিনে সিয়াম পালনকারীর মত। (সহিহ বুখারি ৫৩৫৩, ইফাবা হা: ৪৮৪৯; সহিহ মুসলিম ২৯৮২)

    মানুষ সৎ কাজ করছে বলে বিবেচিত হবে তখনই, যখন সে তার প্রিয় বস্তু আল্লাহর রাস্তায় দান করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন–

    لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ وَمَا تُنْفِقُوا مِنْ شَيْءٍ فَإِنَّ اللَّهَ بِهِ عَلِيمٌ

    “তোমরা কখনই কল্যাণ লাভ করতে পারবেনা যতক্ষন না তোমরা তোমাদের প্রিয় বস্তু থেকে (আল্লাহর পথে) ব্যয় কর।” (সূরা আল–ইমরান ৩ : ৯২)।

    রমাযানে বর্জনীয় বিষয় সমূহ:

    * শিরক বিদআত পরিপূর্ণরূপে বর্জন করা।

    * হারাম খাবার ভক্ষণ না করা, অবৈধ পন্থায় আয় না করা। সুদ–ঘুষ, মাপে কম, ভ্যাজাল না দেয়া।

    * মিথ্যা কথা ও অশ্লীল কাজকর্ম থেকে বিরত থাকা।

    * অনর্থক কথা বার্তা বর্জন করা। তর্ক বিতর্ক, অশ্লীল গালি গালাজ থেকে বিরত থাকা।

    * গান বাজনা, নাটক, ইত্যাদি অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকুন। যথা সম্ভব হাত, পা, চোখ, কান ইত্যাদির হিফাযত করুন।

    * এমন কোন কাজ করা যাবেনা, যাতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন।

    * রমাযানের শেষ দশদিন কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত না থাকা, অপচয় ও অপব্যয় করা থেকে বিরত থাকুন।

    * ধোকাবাজী, গীবাত ও চোগলখুরী থেকে বেচে থাকুন।

    * রিয়া বা লোক দেখানোর জন্য ইবাদত না করে আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে ইবাদত করুন। কারণ যে ব্যক্তি ‘লোক’ দেখানোর জন্য ইবাদত করে কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করবেন।

    আমরা আল্লাহরই কাছে নেক আমল করার তাওফীক্ব কামনা করছি এবং তারই দিকে প্রত্যাবর্তন করছি।

    سُبْحَانَكَ اللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ اَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ اَسْتَغْفِرُكَ وَاَتُوْبُ اِلَيْكَ
    الَّذِينَ يَسْتَمِعُونَ الْقَوْلَ فَيَتَّبِعُونَ أَحْسَنَهُ أُولَئِكَ الَّذِينَ هَدَاهُمُ اللَّهُ وَأُولَئِكَ هُمْ أُولُو الْأَلْبَابِ

    “যারা মনোযোগ সহকারে কথা শুনে এবং উত্তম কথাসমূহের অনুসরণ করে; এরাই হচ্ছে সেসব লোক যাদের আল্লাহ তা’আলা সৎপথে পরিচালিত করেন, আর এরাই হচ্ছে বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষ।” (সূরা আয যুমার ৩৯: ১৮)

  • #2
    জাযাকাল্লাহ।
    আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
    আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

    Comment


    • #3
      আলহামদুলিল্লাহ

      .........................

      Comment

      Working...
      X