আফগানিস্তান ইসলামী ইমারতের সম্মানিত মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ হাফিজাহুল্লাহ-এর সাথে শামশাদ টিভি চ্যানেলের সাক্ষাতকারটির চুম্বকাংশের বাংলা অনুবাদ নিচে পেশ করা হলো-
প্রশ্নঃ আমেরিকা ও তালেবানের মাঝে আলোচনা চলছে। মার্কিন সরকার তাদের কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা দিতে অন্ততঃ একটি সেনা ঘাঁটি রেখে যেতে চায়। শোনা যাচ্ছে, তালেবানরা বিষয়টি মেনে নিতে পারে, এমন সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে আপনাদের অভিমত কি?
উত্তরঃ ইসলামী ইমারার অবস্থান একেবারে পরিস্কার। কোন অবস্থাতেই আমাদের মাটিতে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি মেনে নেয়া হবেনা। আমেরিকার সামনে দুটি পথ খোলা আছে। আলোচনার মাধ্যমে সেনা প্রত্যাহার করা। এর ব্যতিক্রম হলে,বল প্রয়োগের মাধ্যমে বিতাড়িত করা হবে।
আর কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা দেয়া অন্যান্য রাষ্ট্রের মত আফগান সরকারের দায়িত্বে থাকবে। এর জন্য বিদেশি সেনার প্রয়োজন নেই।
প্রশ্নঃ তালেবানদের বিভিন্ন বিবৃতিতে প্রকাশিত হয়েছে, তারা দায়েশ প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। তারা কি আল-ক্বায়েদাসহ অন্যান্য সংগঠনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে? আল-ক্বায়েদা প্রকাশ্যে তালেবানের হাতে বাইআত নিয়েছে। আল-ক্বায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন না করার ক্ষেত্রে তারা এই নিশ্চয়তা কীভাবে দেবে যে, তারা মার্কিন স্বার্থে আঘাত হানবেনা?
উত্তরঃ কিছু মিডিয়া স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু সংগঠনের ব্যাপারে যেভাবে ভাবছে এবং সংবাদ প্রচার করছে, বিষয়টি আদৌ তেমন নয়। আমরা কার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ব আর কার সাথে ছিন্ন করব তা একান্তই আমাদের ব্যাপার। এটি নির্ধারণ করার অধিকার অন্য কারো নেই। তাছাড়া এটি চলমান আলোচনার অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে এতটুকু আলোচনায় এসেছে যে, আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে কেউ আমেরিকার স্বার্থে আঘাত হানবেনা।
প্রশ্নঃ অনেকের মনেই প্রশ্ন,আপনারা আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নন । কেন?
উত্তরঃ মার্কিন দখলদারিত্বের অবসান হলে, তখন আমরা অভ্যন্তরীণ বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দেবো। যেসব সংগঠন বা দলের সাথে আমাদের দ্বন্ধ আছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব। অপরদিকে, বর্তমান কাবুল সরকার গঠিত হয়েছে মার্কিন স্বার্থ রক্ষার জন্য। এরা আফগান জনগণের কাঁধে চড়ে বসে জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে। দখলদারদের সাহায্য ছাড়া এই সরকারের কানাকড়ি মূল্যও নেই। এমন সরকার আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারিনা। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ইংরেজ দখলদারিত্বের সময় এদের পূর্বসূরীরা দখলদারদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। পূর্বসূরীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এরাও ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
প্রশ্নঃ আমেরিকার ভাষ্য, চলমান আফগান যুদ্ধে কারো পক্ষেই জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। এজন্যই তারা আপনাদের সাথে আলোচনায় অংশ নিচ্ছে। আপনাদের মতামত কী?
উত্তরঃ সবাই জানে, আমেরিকা ইতিপূর্বে এত দীর্ঘ যুদ্ধে কখনো জড়ায়নি। আমাদের সাথে যে দীর্ঘ আলোচনায় অংশ নিচ্ছে এত দীর্ঘ আলোচনা আর কারো সাথে করেনি। সামরিকভাবে ব্যর্থ হয়ে এখন আলোচনার টেবিলে বসেছে। কতিপয় মার্কিন জেনারেল বিষয়টি স্বীকার করেছে। সুতরাং জয়-পরাজয় অমীমাংসিত থেকে যাবে, মার্কিনীদের এমন বক্তব্য সঠিক নয়।
প্রশ্নঃ কতিপয় মার্কিন সামরিক নেতা নতুন বিবৃতিতে বলেছে যে, তারা এখনো সেনা প্রত্যাহার সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা পায়নি। আপনারা কী বলেন?
উত্তরঃ মনে হচ্ছে এসব বলে সেনাদের মনোবল কিছুটা হলেও ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যথায় সেনারা হঠাৎ করে ভেঙ্গে পড়বে। আঠারো বছর ধরে তাদের সাথে যুদ্ধ চলছে। তাদের সবকটি রণকৌশল একটির পর একটি ব্যর্থ হয়েছে। তাই মার্কিনীরা পাততাড়ি গুটিয়ে নেবে,এটাই স্বাভাবিক। অন্যথায় তাদেরকে আফগানিস্তান ত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।
প্রশ্নঃ ভবিষ্যত আফগানিস্তানকে আপনারা ইসলামী ইমারাহ বলবেন না ইসলামী প্রজাতন্ত্র বলবেন?
উত্তরঃ নামের বিষয়টি আসলে ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। রাষ্ট্রযন্ত্র কোন নীতিতে চলবে সেটিই মূখ্য বিষয়। আমরা এমন একটি শক্তিশালী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই যা আফগান মুসলিম জাতির স্বার্থ রক্ষায় সক্ষম হবে। আর নাম নির্বাচিত হবে আফগান জনগণের ঐক্যমতের ভিত্তিতে।
প্রশ্নঃ কেমন সময়ের মধ্যে মার্কিনীরা আফগানিস্তান ছেড়ে যাক বলে প্রত্যাশা করেন? তিন বা পাঁচ বছর, আরো কম বা বেশি?
উত্তরঃ আফগান জাতির চাহিদা ও চলমান জিহাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব মার্কিন দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো। বছর নয় বরং কয়েক মাসের মধ্যে এমনটি আশা করছি।
উত্তরঃ ইসলামী ইমারার অবস্থান একেবারে পরিস্কার। কোন অবস্থাতেই আমাদের মাটিতে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি মেনে নেয়া হবেনা। আমেরিকার সামনে দুটি পথ খোলা আছে। আলোচনার মাধ্যমে সেনা প্রত্যাহার করা। এর ব্যতিক্রম হলে,বল প্রয়োগের মাধ্যমে বিতাড়িত করা হবে।
আর কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা দেয়া অন্যান্য রাষ্ট্রের মত আফগান সরকারের দায়িত্বে থাকবে। এর জন্য বিদেশি সেনার প্রয়োজন নেই।
প্রশ্নঃ তালেবানদের বিভিন্ন বিবৃতিতে প্রকাশিত হয়েছে, তারা দায়েশ প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। তারা কি আল-ক্বায়েদাসহ অন্যান্য সংগঠনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে? আল-ক্বায়েদা প্রকাশ্যে তালেবানের হাতে বাইআত নিয়েছে। আল-ক্বায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন না করার ক্ষেত্রে তারা এই নিশ্চয়তা কীভাবে দেবে যে, তারা মার্কিন স্বার্থে আঘাত হানবেনা?
উত্তরঃ কিছু মিডিয়া স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু সংগঠনের ব্যাপারে যেভাবে ভাবছে এবং সংবাদ প্রচার করছে, বিষয়টি আদৌ তেমন নয়। আমরা কার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ব আর কার সাথে ছিন্ন করব তা একান্তই আমাদের ব্যাপার। এটি নির্ধারণ করার অধিকার অন্য কারো নেই। তাছাড়া এটি চলমান আলোচনার অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে এতটুকু আলোচনায় এসেছে যে, আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে কেউ আমেরিকার স্বার্থে আঘাত হানবেনা।
প্রশ্নঃ অনেকের মনেই প্রশ্ন,আপনারা আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নন । কেন?
উত্তরঃ মার্কিন দখলদারিত্বের অবসান হলে, তখন আমরা অভ্যন্তরীণ বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দেবো। যেসব সংগঠন বা দলের সাথে আমাদের দ্বন্ধ আছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব। অপরদিকে, বর্তমান কাবুল সরকার গঠিত হয়েছে মার্কিন স্বার্থ রক্ষার জন্য। এরা আফগান জনগণের কাঁধে চড়ে বসে জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে। দখলদারদের সাহায্য ছাড়া এই সরকারের কানাকড়ি মূল্যও নেই। এমন সরকার আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারিনা। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ইংরেজ দখলদারিত্বের সময় এদের পূর্বসূরীরা দখলদারদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। পূর্বসূরীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এরাও ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
প্রশ্নঃ আমেরিকার ভাষ্য, চলমান আফগান যুদ্ধে কারো পক্ষেই জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। এজন্যই তারা আপনাদের সাথে আলোচনায় অংশ নিচ্ছে। আপনাদের মতামত কী?
উত্তরঃ সবাই জানে, আমেরিকা ইতিপূর্বে এত দীর্ঘ যুদ্ধে কখনো জড়ায়নি। আমাদের সাথে যে দীর্ঘ আলোচনায় অংশ নিচ্ছে এত দীর্ঘ আলোচনা আর কারো সাথে করেনি। সামরিকভাবে ব্যর্থ হয়ে এখন আলোচনার টেবিলে বসেছে। কতিপয় মার্কিন জেনারেল বিষয়টি স্বীকার করেছে। সুতরাং জয়-পরাজয় অমীমাংসিত থেকে যাবে, মার্কিনীদের এমন বক্তব্য সঠিক নয়।
প্রশ্নঃ কতিপয় মার্কিন সামরিক নেতা নতুন বিবৃতিতে বলেছে যে, তারা এখনো সেনা প্রত্যাহার সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা পায়নি। আপনারা কী বলেন?
উত্তরঃ মনে হচ্ছে এসব বলে সেনাদের মনোবল কিছুটা হলেও ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যথায় সেনারা হঠাৎ করে ভেঙ্গে পড়বে। আঠারো বছর ধরে তাদের সাথে যুদ্ধ চলছে। তাদের সবকটি রণকৌশল একটির পর একটি ব্যর্থ হয়েছে। তাই মার্কিনীরা পাততাড়ি গুটিয়ে নেবে,এটাই স্বাভাবিক। অন্যথায় তাদেরকে আফগানিস্তান ত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।
প্রশ্নঃ ভবিষ্যত আফগানিস্তানকে আপনারা ইসলামী ইমারাহ বলবেন না ইসলামী প্রজাতন্ত্র বলবেন?
উত্তরঃ নামের বিষয়টি আসলে ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। রাষ্ট্রযন্ত্র কোন নীতিতে চলবে সেটিই মূখ্য বিষয়। আমরা এমন একটি শক্তিশালী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই যা আফগান মুসলিম জাতির স্বার্থ রক্ষায় সক্ষম হবে। আর নাম নির্বাচিত হবে আফগান জনগণের ঐক্যমতের ভিত্তিতে।
প্রশ্নঃ কেমন সময়ের মধ্যে মার্কিনীরা আফগানিস্তান ছেড়ে যাক বলে প্রত্যাশা করেন? তিন বা পাঁচ বছর, আরো কম বা বেশি?
উত্তরঃ আফগান জাতির চাহিদা ও চলমান জিহাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব মার্কিন দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো। বছর নয় বরং কয়েক মাসের মধ্যে এমনটি আশা করছি।
সূত্র:http://gazwah.net/?p=19414
Comment