Announcement

Collapse
No announcement yet.

আত্ব-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ কারা?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আত্ব-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ কারা?

    [b]


    আলোচনার বিষয় হল
    আত-ত্যাইয়াতুল মানসুরাহ


    ইন্নাল হামদালিল্লাহ,
    ওয়াসালাতু ওয়াসালামু আ’লা রাসুলিল্লাহ।
    আউযুবিল্লাহ হিমিনাশায়তনির রজিম।
    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
    কলাল্লাহু সুবহাবুয়া তা’আলা-
    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ۚ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ

    হে ঈমানদারগন-তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ স্বীয় দ্বীন থেকে ফিরে যাবে,অচিরেই আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন যাদের তিনি ভালবাসেন এবং তারাও তাকে ভালবাসে।তারা হবে মুমিনদের প্রতি কোমল,কাফেরদের প্রতি হবে কঠোর।তারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে।কোন নিন্দাকারীর নিন্দাকে তারা কোন পরওয়া করবে না।এটা আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন।আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী,মহাজ্ঞানী।
    মায়েদা-৫৪।
    সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক মহান রাব্বুল আলামিনের ।যিনি আমাদের ঈমান নামক দৌলত দিয়ে কতই না অনুগ্রহ করেছেন।তার দেয়া অসংখ্য নেয়ামতের মধ্যে সবচেয়ে বড় নেয়ামত হল তার দ্বীনের কাজ করার জন্য কবুল করেছেন।হে আল্লাহ আপনি আমাদের এই পথে অটল রাখুন।আমিন।
    সালাত ও সালাম বর্ষিত হউক নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর।যার উপর এই দ্বীন অর্পিত হয়েছে এবং তিনি তা আমাদের নিকট স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে গেছেন।
    আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলার দয়া,অনুগ্রহ ও রহমত বর্ষিত হউক তার ঐ সকল বান্দাদের উপর যারা কাফেরদের দ্বীনকে পরাস্ত করে আল্লাহর দ্বীনকে উচু করেছেন।বর্তমানেও করে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন।আর আল্লাহর কালিমাকে বুলন্দ করার জন্য নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিচ্ছেন।হে রব আপনি তাদের সেই আশা পূরণ করেন যা তারা নিজেদের অন্তর দিয়ে কামনা করে।আর তা হল-শাহাদাহ।

    আমরা আমাদের আলোচনা শুরু করব সেই আয়াত দিয়ে যা আল্লাহ তা'আলা আমাদের বলেছেন-
    قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ هَلْ تَنقِمُونَ مِنَّا إِلَّا أَنْ آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنزِلَ إِلَيْنَا وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلُ وَأَنَّ أَكْثَرَكُمْ فَاسِقُونَ
    বল,হে আহলে কিতাবগণ,আমাদের সাথে তোমাদের শত্রুতা এজন্যই যে আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি আল্লাহর প্রতি,আমাদের উপর অবতীর্ণ গ্রন্থের প্রতি এবং পূর্বে অবতীর্ণ গ্রন্থের প্রতি।আর তোমাদের অধিকাংশই নাফরমান।
    মায়েদা-৫৯।
    যেহেতু তারা আমাদের সাথে শত্রুতা করে আল্লাহর প্রতি এবং তার নাজিলকৃত কিতাবসমুহের প্রতি ঈমান না আনার কারনে,তাই আমরাও তাদের সাথে শত্রুতা করি ঠিক এই কারনে যা আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা আমাদের শিখিয়েছেন।আর এই ঘোষণা হল-
    قَدْ كَانَتْ لَكُمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِي إِبْرَاهِيمَ وَالَّذِينَ مَعَهُ إِذْ قَالُوا لِقَوْمِهِمْ إِنَّا بُرَآءُ مِنكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ أَبَدًا حَتَّىٰ تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَحْدَهُ
    তোমাদের জন্যে ইব্রাহিম ও তার সঙ্গিসাথিদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিলঃতোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদত কর,তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই।আমরা তোমাদের মানিনা।তোমাদের সাথে শুরু হল চরম শত্রুতা ও বিদ্বেষ,যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করবে।
    মুমতাহিনা-০৪।

    যে বিষয়ে আজকে আলোচনা করব তা হল আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ।প্রথমে আমরা আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু বুঝার চেষ্টা করব।

    আত-ত্যাইফা বলতে যা বুঝায় তা হল “দল”।
    আর মানসুরাহ বলতে বুঝায় তা হল “সাহায্যপ্রাপ্ত বা নৈকট্যপ্রাপ্ত”।
    আমাদের আলোচনার বিষয় হল আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ অর্থাৎ আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত বা সাহায্যপ্রাপ্ত দল সম্পর্কে।

    আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত দল কথাটি যদিও সংক্ষিপ্ত কিন্তু খুবই তাৎপর্যপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।আর কেবল সুগভীর জ্ঞানীরা ছাড়া কেউ তা অনুধাবন করতে পারবে না।

    পবিত্র কোরআনে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা বলেন-
    فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُوا لِي وَلَا تَكْفُرُونِ
    সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর,আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো।
    বাকারা-১২।
    ওহে মুমিন আপনি একটু আয়াতটি নিয়ে চিন্তা করুন।আপনার মত একজন নাফরমান বান্দার প্রতি আল্লাহর কি মহিমাময় আহবান।আপনি যদি আল্লাহকে স্মরণ করেন,তাহলে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলাও আপনাকে স্মরণ রাখবেন।
    উদাহরণ স্বরূপ আমরা বলতে পারি যে আপনি যদি কোন বদ-দীনি লোককে কোরআন-সুন্নাহর রশ্নিতে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসেন আর ব্যক্তি যদি ইসলামের হুকুমাত নিজের জীবনে প্রতিষ্ঠিত করে এবং এর শান্তিময়তা অনুভব করতে পারে তাহলে সে আপনাকে তার মৃত্যু পর্যন্ত আপনাকে স্মরণ করবে এবং সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে আপনার জন্যও তাই পছন্দ করবে।ঐ ব্যক্তি আপনাকে স্মরণ রাখবে।আপনি চিন্তা করেছেন কি?আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলার ইশারায় আপনি একজন বদকার ব্যক্তিকে আলোর দিকে অর্থাৎ কোরআন-সুন্নাহর দিকে নিয়ে আসলেন এতে সে আপনাকে সবসময় স্মরণ রাখবে।আর প্রজ্ঞাময়,অসীম ক্ষমতাধর,সার্বভৌমত্তের মালিক মহান রাব্বুল আলামিন আপানকে আহবান করছেন যে আপনি যদি আল্লাহ তা’আলাকে স্মরণ করেন তাহলে তিনি আপনাকে স্মরণ রাখবেন।আপনি যদি আল্লাহকে স্মরণ করেন অর্থাৎ আল্লাহর হুকুম-আহকাম গুলো মানেন তাতে আপনার লাভ কি?তা অবশ্যই আপনার মনে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে?কারন সবকিছুতেই একটাই হিসাব=লাভঃক্ষতি।আপনি যদি আল্লাহর হুকুমগুলো মানেন তাহলে আপনার দুনিয়ার লাভ হল আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা আপানকে সমস্ত পেরেশানি মুক্ত রাখবেন এবং আপনার হৃদয়ে শান্তি দিবেন এবং আপনাকে সকল বিপদাপদ থেকে সাহায্য করবেন।আপনি কি জানেন আপনার বিপদগুলো কি কি?অবশ্যই জানেন।কিন্তু আপনার বিপদের তালিকার মধ্যে এইগুলো তালিকাভুক্ত করতে ভুলে গেছেন।যেসকল বিপদে তিনি আপনাকে সাহায্য করবেন তাহল-সাকরাতুল মউত অবস্থায় ঈমানের সাথে মৃত্যু দিবেন,কবরের আজাব থেকে নাজাত দিবেন,হাশরের দিন আরশের নিচে ছায়া দিবেন,আপনাকে ডানের বাহিনীর সাথে রাখবেন,মিজানের পাল্লা ভারি করে দিবেন,পুলসিরাতের পুল দ্রুত পার করাবেন,আর সর্বশেষ বিপদ জাহান্নাম থেকে ফিরিয়ে জান্নাতের প্রবেশ করাবেন।
    হে ভাই,আপনি চিন্তা করুন-আপনি আল্লাহর হুকুম পালন করবেন আর আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা আপনাকে স্মরণ করবেন অর্থাৎ উপরে উল্লখিত বিপদসমুহে আপনাকে সাহায্য করবেন।তার উপরে কোন সাহায্যকারী নেই।
    আর আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা এই বিপদসমুহে যাদের সাহায্য করবেন তারাই হল আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ অর্থাৎ আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত বা সাহায্যপ্রাপ্ত দল।এখন আমরা আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত দলের সম্পর্কে আলোচনা করব এবং তাদের কি কি গুন থাকবে সে বিষয়ে আলোচনা করব যা আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা কোরআনে বর্ণনা করেছেন আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসে বর্ণনা করেছেন।তাদের কিছু বিশেষ গুনাগুন থাকবে যাতে সহজে চেনা যায়।বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট থাকার কারন হল-সকলেই তো আল্লাহর হুকুম পালন করে,আবার আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত দলের লোকেরাও আল্লাহর হুকুম পালন করে।এখন কিভাবে আপনি যাচাই করবেন যে কারা আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত দল।এই জন্য বিশেষ কিছু গুন থাকা প্রয়োজন।তবে আরেকটা শর্ত এক্ষেত্রে আপনাকে কোরআন-হাদিস সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকতে হবে কেননা বাতিল দলেরাও এসকল আয়াত-হাদিস তাদের সমর্থনে ব্যবহার করে থাকে।
    হে ভাই,এখন আপনাকে পরিচয় করিয়ে দেব আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহদের সাথে আর আপনিও নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করে নিন সেই দলের সাথে যাদের ব্যাপারে আল্লাহর বানী আর রাসুলের বানী।আপনি চিন্তা করুন তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার ব্যাপারে ভবিষ্যৎ করেছেন।আপনি হবেন আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ এবং দাজ্জালী বাহিনীর বিরুদ্ধে জিহাদকারী,ইমাম মাহদির সাথে খিলাফাহ কায়েমকারী,রাসুলের আদর্শের,আল্লাহর সৈনিক।
    আমরা যে আয়াতটি নিয়ে আলোচনা করব সেই আয়াতটি হল সুরাতুল মায়েদার ৫৪ নং আয়াত।

    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ۚ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
    হে মুমিনগণ তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ স্বীয় দ্বীন থেকে ফিরে যাবে,অচিরেই আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন,যিনি তাদেরকে ভালবাসেন এবং তারাও তাকে ভালবাসবে।তারা হবে মুমিনদের প্রতি কোমল এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর।তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে।কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না।এটা আল্লাহর অনুগ্রহ,তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন।আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী,মহাজ্ঞানী।
    মায়েদা-৫৪।
    আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা এই আয়াতে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা অর্থাৎ আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত দলের ব্যাপারে আলোচনা করেছেন এবং তাদের গুনাগুন নিয়ে আলোচনা করেছেন।তিনি মুমিনদের সতর্ক করে বলছেন যে-হে মুমিনরা তোমাদের মধ্য যে কেউ আল্লাহর দ্বীন থেকে ফিরে যাবে তাতে আল্লাহর দ্বীনের কোন ক্ষতি হবে না।আল্লাহর কোন ক্ষতি হবেনা,তার দ্বীনেরও কোন ক্ষতি হবেনা।বরং যে কেউ আল্লাহর দ্বীন ত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে যাবে তাহলে আল্লাহ তা'আলা অচিরেই এমন একদল নিষ্ঠাবান মুমিনদের দল নিয়ে আসবেন।যারা আল্লাহর দ্বীনের জন্য নিজের সব কিছু এমনকি জান-মাল কোরবান করে তারা আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করবে।এখানে আমাদের চিন্তার বিষয় হল আল্লাহ তা’আলা মুমিনদের উল্লেখ করে বলছেন যে তাদের থেকে কেউ যদি মুরতাদ হয়ে যায় তাহলে তিনি আরেকটি দল নিয়ে আসবেন যাদেরকে আলাহ সুবহানুয়া তা’আলা নির্বাচন করেছেন।এর মানে হল যারা মুসলিম জাতির দায়িত্বে থাকবেন তাদের মধ্য থেকে একদল ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাবে এবং বেরিয়ে যাওয়ার পর এই শুন্যতা পুরন করার জন্য আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা অচিরেই এমন একটি দল নিয়ে আসবেন।আর তারাই হল আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ অর্থাৎ আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত দল।আর বর্তমান সময়ে কারা আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ তা আপনাদের সামনে স্পষ্ট করে তুলব ইনশাল্লাহ।
    আল্লাহ তা'আলা এখানে তার নিয়ে আসা সাহায্যপ্রাপ্ত দলের ৬টি গুনের কথা আলোচনা করেছেন।অর্থাৎ যারাই আল্লাহর নির্ধারিত দল দাবী করবে অবশ্যই তাদের মধ্যে ৬টি গুন থাকতে হবে।নিম্নে আমরা এই ৬টি গুন নিয়ে আলোচনা করা হলঃ


    প্রথম গুনঃ

    يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ
    তিনি তাদেরকে ভালবাসেনঃ
    আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা কত স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছেন যে তিনি তাদেরকে ভালবাসেন।তারা কারা?তারা হলেন আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ।কত সৌভাগ্য তাদের যে আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা তাদের ভালবাসেন।এখন জানার বিষয় হল আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা কেন তাদের ভালবাসেন।নিশ্চয়ই এমন কোন কারন আছে যার জন্য তিনি তাদের ভালবাসেন।
    কারন হল এই যা আল্লাহ তা'আলা আল-কোরআনে ঘোষণা দিয়েছেন-
    وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْرِي نَفْسَهُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ
    'মানুষের মধ্যে এমনও লোক রয়েছে যারা আল্লাহর সন্তোষটির জন্য জীবন দিয়ে থাকেন''।
    বাকারা-২০৭।

    হে মুমিন ভাই একটু ভেবে দেখুন তো কারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজেদের জীবনগুলো বিলিয়ে দিচ্ছে।তারা কিসের জন্য নিজেরদের জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে একটাই উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা এবং আল্লাহর হুকুমাত কায়েম করা।অনেককেই দেখা যায় ইসলামের জন্য কাজ করতে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যারা আল্লাহর জন্য,তার দ্বীনের জন্য কাজ করে তারা আল্লহর সন্তুষ্টির জন্য নিজেদের জীবন কোরবানি করে?
    যারা তার সন্তুষ্টির জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত তিনি তাদের ভালবাসবে এটাই স্বাভাবিক।আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা মুমিন বান্দাদের ভালবাসার আরও কারন হল-

    إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُم بُنْيَانٌ مَّرْصُوصٌ
    নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে সীসাঢালা প্রাচীরের মত,আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন।
    সফ-০৪।
    এই আয়াতে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছেন যে তিনি ঐ লোকদের ভালবাসেন যারা তার পথে সীসাঢালা প্রাচীরের মত যুদ্ধ করে।কিন্তু যারা যুদ্ধ করে না তাদের তিনি ভালবাসেন না।তাহলে তারা কিভাবে দাবি করে যে তারা আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ।
    বর্তমান সময়ে দেখবেন অনেক মুসলিম বা নামধারী মুসলিম দল তারা নিজেদেরকে আল্লাহর প্রিয় দল হিসাবে দাবি করে কিন্তু না তারা আল্লাহর দ্বীনের জন্য জান-মাল কোরবানি করে।আর না তারা তাগুতদের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করে,তারা আটকে গেছে নিজেদের দলীয় চিন্তা-ভাবনায় ইসলামের সঠিক আকিদাহ ত্যাগ করে।অথচ দাবি করে আল্লাহ সাহায্যপ্রাপ্ত দল।কথা এবং কাজে তাদের কোন মিল নেই।এরাই হল প্রকৃতপক্ষে মুনাফিক।তাই যারাই আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ দাবি করবে তাদেরকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিজেদের জীবন বিলিয়ে দেয়ার মাধ্যমে আল্লাহর ভালবাসা অর্জন করতে হবে।

    দ্বিতীয় গুনঃ
    وَيُحِبُّونَهُ
    তারাও তাকে ভালবাসবে।
    আগে একটা সংশয় নিরসন করব এইগুণটি আলোচনা করার আগে।
    আল্লাহ তা’আলাকে ভালোবাসা ও তার সাথে গভীর সম্পর্কের দাবিদার ইয়াহুদিগনকে লক্ষ করে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা বলেন-
    قُلْ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ هَادُوا إِن زَعَمْتُمْ أَنَّكُمْ أَوْلِيَاءُ لِلَّهِ مِن دُونِ النَّاسِ فَتَمَنَّوُا الْمَوْتَ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
    বলুন হে ইহুদীগণ, যদি তোমরা দাবী কর যে, তোমরাই আল্লাহর বন্ধু-অন্য কোন মানব নয়, তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর যদি তোমরা সত্যবাদী হও।

    জুমুআহ-০৬।

    قُلْ إِن كَانَتْ لَكُمُ الدَّارُ الْآخِرَةُ عِندَ اللَّهِ خَالِصَةً مِّن دُونِ النَّاسِ فَتَمَنَّوُا الْمَوْتَ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
    বলে দিন, যদি আখেরাতের বাসস্থান আল্লাহর কাছে একমাত্র তোমাদের জন্যই বরাদ্দ হয়ে থাকে-অন্য লোকদের বাদ দিয়ে, তবে মৃত্যু কামনা কর, যদি সত্যবাদী হয়ে থাক।

    বাকারা-৯৪।


    পৃথিবীতে যত মানুষ আছে সকলের দাবি হল তারা আল্লাহ তা’আলাকে ভালোবাসে,তারাই হল আল্লাহর প্রিয় বান্দা।যেমন-ইয়াহুদিগন দাবি করেছিল।
    আল্লাহর ভালোবাসা ও প্রিয় পাত্র হওয়ার দাবীদার সকলকে লক্ষ করে মহান আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা বলেন-
    যারাই আমাকে ভালবাসার দাবি করবে তাহলে তোমরা আমার সন্তুষ্টির জন্য মৃত্যু কামনা কর?হায়,আফসস-এমন একটা লোক পাওয়া খুবই কষ্ট সাধ্যব্যাপার যে আল্লাহর জন্য নিজের জীবন কোরবানি করবে।তাদেরকে যদি বলা হয় হে ভাই-আল্লাহর রাসুলের বর্ণনা করা আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ কালো পতাকা উত্তোলন করা বাহিনী অর্থাৎ তালিবান-আল কায়েদার মুজাহিদদের সাথে মিলেমিশে জিহাদ করতে হবে,সমস্ত ফিতনার অবসান করতে হবে এবং আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান কায়েম করতে হবে দেখবেন অধিকাংশ লোকই অজুহাত দেখিয়ে দূরে সরে যাবে যেভাবে-জুদ ইবনে কায়সার মুনাফিক তাবুক যুদ্ধের সময় মিথ্যা অজুহাত দেখিয়েছিল।আজকেও একশ্রেণীর জুদ ইবনে কায়সা রয়েছে যারা ঈমানদার দাবি করে কিন্তু তারা হল খাস মুনাফিক।এই ঘটনাটি পাবেন আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়ার ৫ম খণ্ডের ১৭ পৃষ্ঠায়।আপনি যদি আল্লাহকে ভালবাসেন তাহলে অবশ্যই এর প্রমাণ দিতে হবে আর যদি না পারেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি সন্দেহ আছে।যদি সন্দেহ নাই থাকে তাহলে আল্লাহর ভালবাসার জন্য জীবন দিতে বাধা বা গড়িমসি কেন?এবার আপনি যেই হউন না কেন?হতে পারেন আপনি ঐ নামকরা শায়েখ,দানবীর।ভালোবাসার দাবিই হল যাকে আমি ভালবাসবো,আমার হৃদয়ের আসনে যাকে বসাবো তার সন্তুষ্টিই হল আমার কামনা-বাসনা।তাকে খুশি করার জন্য আমার অনুকুল-প্রতিকূল সব অবস্থায় তার কথা মেনে নিব।তার কথার বিরুদ্ধাচরণ করবো না।তার ভালবাসার সামনে আমার ব্যক্তিত্ব মূল্যহীন।
    আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা বলছেন আল্লাহর এই মুমিন বান্দারাও তাকে ভালবাসবে।আল্লাহর এই বান্দারা আল্লাহকে স্মরণ করবে।
    কেন স্মরণ করবে?নিশ্চয় এর কোন কারন রয়েছে।সবচেয়ে বড় কারন হল আল্লাহ তাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন
    তার নির্ধারিত কউমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে।
    এটা আল্লাহর ঘোষণা-
    ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
    এটা আল্লাহর অনুগ্রহ,তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন।আল্লাহ প্রাচুর্যদানকারী,মহাজ্ঞানী।
    মায়েদা-৫৪।
    আল্লাহর বান্দারা আল্লাহকে ভালবাসার আর একটি কারন হল-
    وَاللَّهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ
    বস্তুত আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি অত্যাধিক দয়ালু।
    বাকারা-২০৭।
    তিনি তাদের অনুগ্রহ করে ধন্য করেছেন।আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা তাদেরকে সঠিক পথের অনুসারী
    করেছেন।এজন্যই তারা আল্লাহকে ভালবাসেন।
    মুমিনরা আল্লাহকে ভালবাসার আরও কারন হল-
    يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ۚ ذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
    আল্লাহ তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদের প্রবেশ করাবেন এমন এক জান্নাতে যার পাদদেশে নদিসমূহ প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসস্থান।এটাই মহাসাফল্য।
    সফ-১২।


    তৃতীয় গুন
    أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ
    তারা হবে মুমিনদের প্রতি কোমল
    ঐ দল মুমিনদের প্রতি বিনয়ী নম্র ও হৃদয়বান হবে।মুমিনদের ব্যাপারে তাদের গুন বর্ণনা করতে গিয়ে মহান আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা পবিত্র কোরআনে বলেন-
    مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ ۚ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ
    মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল।
    ফাতাহ-২৯।
    আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা বলছেন যে,
    প্রথমে আমাদের জানতে হবে মুমিন কারা?আমরা এটা জানবো আল্লাহর ভাষা দিয়ে যা তিনি আল-কোরআনে বলেছেন-
    إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ أُولَٰئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ
    আল্লাহ তা'আলা বলেন-প্রকৃত মুমিন তারাই যারা আল্লাহ ও তার রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না এবং নিজেদের জান-মাল দিয়ে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে,তারাই সত্যবাদী।
    হুজুরাত-১৫।
    এরাই হল চরম এবং এটাই হল আল-ওয়ালা ওয়াল বারাআ আকিদাহ যে মুমিনরা মুমিনদের প্রতি কোমল হবে।মুনাফিক ছাড়া কক্ষনও মুমিনদের প্রতি বিদ্বেষ রাখেনা।
    মুমিনদের সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা বলছেন-
    إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ
    মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই।
    হুজুরাত-১০।
    আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহদের সম্বন্ধে বলছেন তারা মুমিনদের প্রতি হবে কোমল।নিজেদের মধ্যে যতই সমস্যা হোক তা সমাধান করার জন্য আল্লাহ তা'আলা বলে দিয়েছেন।তারা নিজেদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করবেনা।তারা সীসাঢালা প্রাচিরের ন্যায় একসাথে মিলেমিশে কাজ করবে।এটাই হল মুমিনদের গুন যে তারা মুমিনদের প্রতি হবে কোমল।এটাই আল্লাহর ঘোষণা।তাই আমাদেরকেও মুমিনদের প্রতি কোমল হতে হবে।
    আর এব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
    عليه وسلم قَالَ ‏ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله رضى الله عنه عَنْ أَنَسٍ
    ‏ لِنَفْسِهِ ‏"‏‏.‏ "‏ لا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لأَخِيهِ مَا يُحِبُ
    আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্* (সা) ইরশাদ করেনঃ তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ করবে, যা নিজের জন্য পছন্দ করে।
    সহিহ বুখারী।খন্ড১/অধ্যায় ২/হাদিস ১২।

    চতুর্থ গুন
    أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ
    তারা কাফেরদের প্রতি হবে কঠোর
    কাফেরদের সাথে থাকবে মুমিনদের চিরশত্রুতা।তবে আমাদের জানতে হবে এই শত্রুতার ধরন কেমন হবে?
    তা আমরা জানব আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলার কালামে পাক থেকে।তাদের ব্যাপারে কেমন কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা আল-কোরআনে মুমিনদের সেই নির্দেশনা দিয়েছেন যে।শত্রুতার মাপকাঠি আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।তা হল কোরআনের ভাষাই-
    الشَّهْرُ الْحَرَامُ بِالشَّهْرِ الْحَرَامِ وَالْحُرُمَاتُ قِصَاصٌ ۚ فَمَنِ اعْتَدَىٰ عَلَيْكُمْ فَاعْتَدُوا عَلَيْهِ بِمِثْلِ مَا اعْتَدَىٰ عَلَيْكُمْ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
    নিষিদ্ধ মাসের পরিবর্তে নিষিদ্ধ মাস এবং নিষিদ্ধ মাসেও বদলার ব্যাবস্থা করা হবে ঐ অবস্থায় যদি কেউ তোমাদের প্রতি কঠোরতা করে,তবে সে তোমাদের প্রতি যেরুপ কঠোরতা করবে তোমারাও তার প্রতি সেরুপ কঠোরতা করবে এবং জেনে রেখো,আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।
    বাকারা-১৯৪।
    এটা হল কাফেরদের সাথে মুমিনদের শত্রুতার অবস্থা।অর্থাৎ চূড়ান্ত নীতি।তারা যেমন আমাদের সাথে কঠোরতা করছে ঠিক তেমন ভাবে তাদের সাথে আমাদের কঠোরতা করতে হবে।এটাই আল্লাহর নির্দেশ।
    এখন এই চূড়ান্ত নীতির পক্ষে আল-কোরআনের দৃষ্টান্তগুলো সম্পর্কে আমরা জানব।
    কাফেরদের ব্যাপারে আমাদেরকে সেই নীতিমালা গ্রহন করতে হবে যেই নীতিমালা গ্রহন করেছিলেন মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লাম।আর আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা এই নীতিমালাকে আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।পবিত্র কোরআনে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা বলেন-
    قَدْ كَانَتْ لَكُمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِي إِبْرَاهِيمَ وَالَّذِينَ مَعَهُ إِذْ قَالُوا لِقَوْمِهِمْ إِنَّا بُرَآءُ مِنكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ أَبَدًا حَتَّىٰ تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَحْدَهُ
    তোমাদের জন্যে ইব্রাহীম ও তাঁর সঙ্গীগণের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার এবাদত কর, তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের মানি না।তোমাদের মধ্যে ও আমাদের মধ্যে শুরু হল চরম চিরশত্রুতা যতক্ষন না তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করবে।
    মুমতাহিনা-০৪।
    এই আয়াতটি আমাদের চিন্তা করা উচিত যে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা এখানে কি বলতে চাচ্ছেন।আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ হল এই আমরা আমাদের সম্পর্ক তৈরি করব তাদের সাথে যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের নীতিমালা অনুসরণ করে চলে আর যারা আল্লাহর ও তার রাসুলের নীতিমালা অনুসরণ করে না তাদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক রাখা যাবে না।তাদের সাথে শত্রুতা রাখতে হবে ততক্ষন পর্যন্ত যে পর্যন্ত না তারা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান না আনে।এটাই আল্লাহর ঘোষণা,আর এটাই হল আমাদের উত্তম আদর্শ।

    ঠিক একইভাবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সঙ্গিসাথিদের সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলছেন-
    مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ ۚ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ
    মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল।
    ফাতাহ-২৯।
    সর্বশেষে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা সেই দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন যা এই দুনিয়ার বুকে প্রায় ১৪৫০ বছর আগে আসমান থেকে নাজিল হয়েছিল রুহুল কুদ্দুছ জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে।মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সঙ্গিসাথিগন কাফেরদের ব্যাপারে কঠোর এবং নিজেদের ব্যাপারে কোমল।ঠিক এখনও যারা আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ হিসাবে নিজেদের দাবি করবে তাকে আল-কোরআনের দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং সেই নীতি অনুসরণ করে চলতে হবে।
    আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা তার রাসুলকে নির্দেশ দিচ্ছেন-
    يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ ۚ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ ۖ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
    হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ এবং তাহল নিকৃষ্ট ঠিকানা।
    তাওবাহ-৭৩।
    এখন আপনি কিভাবে বুঝবেন যে কোন মুসলিম কাফেরদের প্রতি কঠোর এবং মুমিনদের প্রতি কোমল।তাই আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা তাদের একটি নমুনা আল-কোরআনে উল্লেখ করেছেন যেমন তিনি বলেন-
    لَّا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ ۚ أُولَٰئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الْإِيمَانَ وَأَيَّدَهُم بِرُوحٍ مِّنْهُ
    আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে এমন কউম তুমি পাবে না যে তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুধিতাকারীদেরকে ভালবাসে।যদিও তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। তাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর অদৃশ্য শক্তি দ্বারা।
    মুজাদালাহ-২২।
    দেখুন এই আয়াতটা কত স্পষ্ট করে ঘোষণা করছে যে যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে তারা কখনও আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুধিতাকারিদেরকে ভালবাসবে না।বিরুধিতাকারী হউক তাদের পিতা,কিংবা পুত্র,ভাই অথবা জাতি গোষ্ঠী।
    উপরোক্ত আয়াতগুলোতে কাফেরদের শত্রুতার একটা মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে যে তাদের সাথে কোনভাবেই দুর্বলনীতি অবলম্বন করা যাবে না।আল্লাহ তা’আলা বলছেন ঈমানদারদের চতুর্থ গুন হল কাফেরদের প্রতি হবে কঠোর।তাই যারাই নিজেরদেরকে আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ বলে দাবি করবে তাদেরকে কাফেরদের ব্যাপারে সেই নীতিমালা গ্রহন করতে হবে যা আমাদের জন্য আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
    তারা কাফেরদের প্রতি হবে কঠোর।কাফের-মুশরিকদের প্রতি শুধুই কঠোর হবে।তাদের ক্ষেত্রে কোন ছাড়াছাড়ি নাই।তাদেরকে অবশয়ই কাফেরদের প্রতি কঠোর হতে হবে।কেননা আল-ওয়ালা ওয়াল বারাআ এর আকিদাই হল মুমিনদের প্রতি কোমল এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর।কাফেরদের সাথে আমাদের শত্রুতা এই জন্যই তারা আমাদেরকে আমাদের দ্বীন থেকে সরিয়ে দিতে চাই,তাহলে কিভাবে তাদের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব থাকতে পারে।তাদের সাথে আমাদের চরম শত্রুতা থাকে হবে।


    পঞ্চম গুন
    يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ
    তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে
    আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলার প্রশংসা করতে হবে ঐসকল লোকদের যারা নিজেদেরকে আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ হিসাবে দাবি করবে।
    তাকবির.........আল্লাহু আকবার তাকবির.........আল্লাহু আকবার
    জিহাদ নামক বিধানটি নাজিল করার প্রধান একটি কারন হল কে মুমিন এবং কে মুনাফিক তা আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা জেনে নিবেন এবং মুমিনদের নিকট যেন স্পষ্ট হয়ে যায়।যেমন আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা বলেন-
    وَمَا أَصَابَكُمْ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ فَبِإِذْنِ اللَّهِ وَلِيَعْلَمَ الْمُؤْمِنِينَ
    وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ نَافَقُوا ۚ
    আর যেদিন দু’দল সৈন্যের মোকাবিলা হয়েছে; সেদিন তোমাদের উপর যা আপতিত হয়েছে তা আল্লাহর হুকুমেই হয়েছে এবং তা এজন্য যে, তাতে ঈমানদারদিগকে জানা যায়।এবং তাদেরকে যাতে সনাক্ত করা যায় যারা মুনাফিক ছিল।

    আল-ইমরানঃ১৬৬-১৬৭।

    অর্থাৎ এখানে স্পষ্ট যে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা জিহাদ দ্বারা যাচাই করতে চেয়েছেন যে কারা মুমিন এবং কারা মুনাফিক।কেননা সকলেইতো দাবি করতে পারে নিজেদেরকে মুমিন।তাছাড়া জিহাদের যে অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে।জিহাদকে আকবর ও আসগার বলা হচ্ছে।শত্রুর সাথে লড়াই করাকে জিহাদে আসগার এবং নফসের সাথে জিহাদকে জিহাদে আকবর বলা হচ্ছে।

    এবার তাহলে জানা যাক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিহাদের সংজ্ঞা কিভাবে দিয়েছেন।

    رَسُولُ اَللَّه صلى الله عليه ِ قَالَ:قَالَ عنه الله رضى اَلْأَشْعَرِيِّ مُوسَى أَبِي وَعَن لِتَكُونَ كَلِمَةُ اَللَّهِ هِيَ عُلْيَا فَهُو فِي سَبِيلِ الله قَاتَلَ مَن وسلم

    আবূ মূসা আশ’য়ারী (রাঃ) হতে বর্ণিত; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে যুদ্ধ করলো,আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য,সেই আল্লাহর পথে জিহাদ করলো।
    বুখারী:৩১২৬,মুসলিম:১৯০৪,তিরমিজিঃ১৬৪৬,নাসাইঃ৩১৩৬,আব ু দাউদঃ২৫১৭,ইবনে মাজাহঃ২৭৮৩,মুসনাদে আহমদঃ১৮৯৯৯।
    আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা তার সাহায্যপ্রাপ্ত বান্দাদের সম্পর্কে বলছেন যে তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে।তাদের সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলার ঘোষণা-
    الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِندَ اللَّهِ ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ
    যারা ঈমান এনেছে, দেশ ত্যাগ করেছে এবং আল্লাহর রাহে নিজেদের জান ও মাল দিয়ে জেহাদ করেছে, তাদের বড় মর্যাদা রয়েছে আল্লাহর কাছে আর তারাই সফলকাম।
    তাওবাহ-২০।


    لَٰكِنِ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ جَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ ۚ وَأُولَٰئِكَ لَهُمُ الْخَيْرَاتُ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
    কিন্তু রসূল এবং সেসব লোক যারা ঈমান এনেছে, তাঁর সাথে তারা যুদ্ধ করেছে নিজেদের জান ও মালের দ্বারা। তাদেরই জন্য নির্ধারিত রয়েছে কল্যাণসমূহ এবং তারাই মুক্তির লক্ষ্যে উপনীত হয়েছে।
    তাওবাহ-৮৮।
    إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ
    আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে।
    তাওবাহ-১১১।
    إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَالَّذِينَ هَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَٰئِكَ يَرْجُونَ رَحْمَتَ اللَّهِ ۚ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
    আর এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই যে, যারা ঈমান এনেছে এবং যারা হিজরত করেছে আর আল্লাহর পথে লড়াই (জেহাদ) করেছে, তারা আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী। আর আল্লাহ হচ্ছেন ক্ষমাকারী করুনাময়।
    বাকারা-২১৮।
    وَالَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ آوَوا وَّنَصَرُوا أُولَٰئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا ۚ لَّهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
    আর যারা ঈমান এনেছে, নিজেদের ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং আল্লাহর রাহে জেহাদ করেছে এবং যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে, সাহায্য-সহায়তা করেছে, তাঁরা হলো সত্যিকার মুসলমান। তাঁদের জন্যে রয়েছে, ক্ষমা ও সম্মানজনক রুযী।
    আনফাল-৭৪।

    আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা বলছেন যে তারা জিহাদ করবে।এই একটা গুন দ্বারা নির্ধারণ করতে পারেন কারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা।তা না হলে সকলেই দাবি করতে পারে তারা আল্লাহর খাস বান্দা।এই জিহাদ নামক আমলটা আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা দিয়েছেন এই জন্যই দিয়েছেন যে কে মুমিন এবং কে মুনাফিক তা নির্ধারণ করার জন্য।যদিও অধিকাংশ মানুষ অপছন্দ করে কিন্তু আল্লাহ সুবহানুয়া তা'আলা তা ফরজ করেছেন।আমাদের সবসময় মনে রাখা উচিৎ মুনাফিকরা ছাড়া কেউ জিহাদের ব্যাপারে পিছুটান হয় না।
    বর্তমানে আমদেরকে দৃষ্টি দেয়া উচিত যে কারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করছে,তাহলেই আমাদের কাছে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।বেশি দূর যেতে হবে না।যদি যে কেউ বা যে কোন দল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত বলে দাবি করে তাহলে অবশ্যয় জিহাদ নামক আমলটা থাকতে হবে।এটা খুবই কষ্টসাধ্য আমল,তাই এর ফলাফলও সর্বোচ্চ।
    বর্তমানে যারা জিহাদ করছেন,তারা হলেন-taliban,aqap,jn,ahrar ash-sham,jaishul islam,jaishul fatiha,,al-shabab,ttp,boko haram,tip aqis.এছাড়া আরও অনেক দল আছে যারা জিহাদ করছেন।সকলের উচিৎ জিহাদে যোগদান করা।নিজেকে আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত দলের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া।

    ষষ্ঠ গুন
    وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ
    নিন্দাকারীর নিন্দাকে কোন পরওয়া করবে না
    আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত দলের ষষ্ঠ বৈশিষ্ট হল তারা কোন নিন্দাকারীর নিন্দাকে পরোয়া করবে না।তাদেরকে যতই গালাগালি করা হোক,জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসী বলা হোক।বলা হোক দেশদ্রোহী কিংবা বলা হোক ফিতনাবাজ।তারা এসব কথার কোন পরোয়া করবে না।তারা তাদের অভীষ্ট লক্ষে পোঁছে যাবে যা তারা নির্ধারণ করেছে।তা হল আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দেয়া জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
    ঠিক ১৪০০ বছর আগে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সঙ্গি-সাথীগণ দ্বীনের দাওয়াত দিতে থাকলেন তখনই তাদের শত্রু তৈরি হল এবং তার দাওয়াতের বিপরিত মন্তব্য শুরু করল কিন্তু এই বলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিন্তু তার দাওয়াত থেকে বিচ্যুত হন নি।ঠিক তেমনিভাবে যারা আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ হিসাবে নিজেদেরকে দাবি তাহলে তাদেরকে চরম ধৈর্যের পরিক্ষা দিতে হবে।তাদের বিরুদ্ধাচরণকারীরা যতই বিরুধিতা করুক কিংবা যতই নিন্দা করুক তাতে কোন পরোয়া করা যাবে না।
    ভয় কেবল একমাত্র আল্লাহ তা’আলাকেই করতে হবে।যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন-
    الَّذِينَ يُبَلِّغُونَ رِسَالَاتِ اللَّهِ وَيَخْشَوْنَهُ وَلَا يَخْشَوْنَ أَحَدًا إِلَّا اللَّهَ ۗ وَكَفَىٰ بِاللَّهِ حَسِيبًا
    সেই নবীগণ আল্লাহর পয়গাম প্রচার করতেন ও তাঁকে ভয় করতেন। তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যকাউকে ভয় করতেন না। হিসাব গ্রহণের জন্যে আল্লাহ যথেষ্ঠ।

    আহযাব-৩৯।

    বর্তমানে দুনিয়ায় যারাই আল্লাহর প্রিয় দল তাদের অবশ্যই কোরআনে বর্ণিত নবীর পদ্ধতিতে কাজ করতে গিয়ে ইহুদি বা খ্রিষ্টান কিংবা কোন মুশরিক নিন্দুকের নিন্দাকে কোন পরওয়া করবে না।কোন মিডিয়ার প্রচারণা অথবা কোন দরবারী আলেমের ফতোয়া তাদের মনোবল বিন্দু মাত্র কমাতে পারবে না।কোন বোমারু বিমান বা চোরা গুপ্তা ড্রোন তাদের সামান্যতম ভীত করতে পারবে না।আন্তর্জাতিক প্রলোভন কিংবা কোন রকম হুমকি-ধমকি কোনটাই তাদের প্ররোচিত করতে পারবে না।আমরা তাদের স্বীকৃতি দেই আর না দেই তাতে তাদের কিছু যায়ে আসে না।ঐ দলের স্বপ্নই হল আল্লাহর দ্বীন ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আল্লাহর প্রিয় দল হওয়া এবং মজলুম মুসলিমদের অভিভাবক হওয়ার জন্য দিক-দিগন্তে ছুটে যাওয়া।

    এব্যাপারে আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলা ইরশাদ করেন-

    وَمَن يَتَوَلَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا فَإِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْغَالِبُونَ
    আর যারা আল্লাহ তাঁর রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহর দল এবং তারাই বিজয়ী।

    মায়েদা-৫৬।

    ইনশাল্লাহ এখন আমরা যে বিষয়টি বর্ণনা করব তা হল বর্তমানে কারা আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ।
    কোরআন এবং হাদিসের আলোকে অবশ্যই তুলে ধরব।

    আল-কোরআনের আয়াত

    আল্লাহ তা’আলা বলেন-
    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ۚ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
    হে ঈমানদারগন-তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ স্বীয় দ্বীন থেকে ফিরে যাবে,অচিরেই আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন যাদের তিনি ভালবাসেন এবং তারাও তাকে ভালবাসে।তারা হবে মুমিনদের প্রতি কোমল,কাফেরদের প্রতি হবে কঠোর।তারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে।কোন নিন্দাকারীর নিন্দাকে তারা কোন পরওয়া করবে না।এটা আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন।আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী,মহাজ্ঞানী।
    মায়েদা-৫৪।

    আত-ত্যাইফাতুল মানসুরাদের সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বানী

    হাদিস=০১
    আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-ফেতনার সময় সর্বোত্তম মানুষ সেই ব্যক্তি নিজ ঘোড়ার লাগাম অথবা নাকের রশি ধরে আল্লাহর শত্রুকে ধাওয়া করবে।সে আল্লাহর শত্রুকে সন্ত্রস্ত করবে এবং তারাও তাকে ভীতি প্রদর্শন করবে।কিংবা সে ব্যক্তি উত্তম যে লোকালয় শূন্য এলাকায় যাযাবরের মত নিবৃত জীবন-যাপন করবে এবং আল্লাহর বিধানবলি পালন করবে।
    মুস্তাদরাকে হাকেম-৪/৫১০।
    হাদিস=০২
    জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-ইসলাম অপরিচিত অবস্থায় আত্বপ্রকাশ করেছে,আবার তা অপরিচিত হয়ে যাবে।সুতরাং গুরাবাদের সুসংবাদ।সাহাবী জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ জিজ্ঞেস করলেন?হে আল্লাহর রাসুল গুরাবা কারা?তারা হল ঐসকল লোক যে,মানুষ যখন দ্বীন থেকে বিগড়ে যাবে,তখন তাদের সংশোধনের দায়িত্ব আঞ্জাম দিবে।
    আল-মু’জামুল আওসাত-৫/১৪৯।
    হাদিস=০৩
    আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় হল গুরাবাগন।জিজ্ঞেস করা হল গুরাবা কারা?তিনি বললেন নিজ দ্বীন-ঈমান নিয়ে পলায়নকারীরা।কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ঈসা ইবনে মরিওয়মের আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে পুনরুত্থান করবেন।
    হিলয়াতুল আওলিয়া-১/২৫।
    হাদিস=০৪
    ইমরান ইবনে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,আমার উম্মতের একটি দল হকের পথে অবিচলভাবে জিহাদ ও কিতাল করে যাবে।তারা তাদের বিরুধিদের উপর সর্বদা বিজয়ী থাকবে।এদলটির সর্বশেষ অংশ ঈসা আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মিলে দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে।
    আবু দাউদ

    খোরাসান সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যৎ বানীঃ
    ১।সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-যখন তোমরা খোরাসানের দিক থেকে কালো পতাকাবাহীদের আসতে দেখবে,তখন হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাদের সাথে যোগদান করবে।কারন তাদের মধ্যেই রয়েছে আল্লাহর খলীফা মাহদি আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
    মুসতাদরাকে হাকিম-৪/৫৪৭।
    ২।সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-খোরাসান থেকে কালো পতাকাবাহীরা আত্বপ্রকাশ করবে।কেউ তাদেরকে প্রতিহত পারবে না।শেষ অবধি তারা বায়তুল মুকাদ্দাসে এসে ঝাণ্ডা গেড়ে দেবে।
    মুসবাদে আহমাদ-৮৭৭৫।
    শাম,ইয়েমেন,ইরাকঃএই তিন অঞ্চল সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি মৌলিক ভবিষ্যৎ বানীঃ
    ১।আব্দুল্লাহ ইবনে হাওয়ালা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-অচিরেই তিনটি বাহিনী বের হবে।একটি শামে,একটি ইয়েমেনে এবং একটি ইরাকে।বর্ণনাকারী সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন?হে আল্লাহর রাসুল আমি কোনটাতে যোগদান করব?তিনি বললেন,তুমি শামকে বেছে নেবে।যে তা না পারবে সে যেন ইয়েমেনের বাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে যায় এবং তার কুপগুলো থেকে পানি পান করে।কারন আল্লাহ তা’আলা আমার জন্য শামের দায়িত্ব নিয়েছেন।
    আবু দাউদ-২৪৮৩।

    শাম সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যৎ বানীঃ
    ১।আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-মহাযুদ্ধের সময় মুসলিমদের তাবু হবে গুতাহ নামক স্থানে।যেটি দামেস্ক শহরে অবস্থিত।এটি শামের উত্তম শহরগুলোর একটি।
    মুসতাদরাকে হাকিম।
    ২।আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে আরেকটি বর্ণনায় শামের এদলটির ব্যাপারে কথা আছে।এরা সে সময়ে আরবের সেরা অশ্বারোহী হবে এবং অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত থাকবে।আল্লাহ এদের মাধ্যমে দ্বীনকে শক্তিশালী করবেন।
    তারিখে দিমাশক।

    ইয়েমেন সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যৎ বানীঃ
    ১।আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ”আদনে আবইয়ান”(ইয়েমেনের একটি অঞ্চল)থেকে বার হাজার যোদ্ধা বের হবে।তারা আল্লাহ ও তার রাসুলকে সাহায্য করবে।আমার ও তাদের মধ্যবর্তী সবার চেয়ে তারা সর্বোত্তম লোক।
    মুসনাদে আহমাদ।

    হিন্দুস্তান সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যৎ বানীঃ
    ১।সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-আমার উম্মতের দুইটি দলকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন।তার একটি দল হল হিন্দুস্তানে যুদ্ধরত বাহিনী।অপরটি হল ঈসা আলাইহি ওয়াসাল্লামের দল।
    নাসায়িঃ৬খণ্ড,পৃষ্ঠা-৪৬।
    ২।আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-আমাদেরকে হিন্দুস্তানের অভিযানের ব্যাপারে ভবিষ্যৎ করেছেন এবং বলেছেন যদি আমি(আবু হুরায়রা) শহীদ হয়,তাহলে আমি হব সর্বোত্তম শহীদ।আর যদি গাজি হয়ে ফিরি,তাহলে আমি জাহান্নাম থেকে মুক্ত স্বাধীন আবু হুরায়রা।
    নাসায়িঃ৬খণ্ড,পৃষ্ঠা-৪৬।
    ৩।আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,রাসুলুল্লাহ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিন্দুস্তান প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন,অবশ্যই হিন্দুস্তানে যুদ্ধ হবে।সে যুদ্ধে তুমাদের এমন এক বাহিনী লড়বে যাদের আল্লাহ বিজয় মালা পড়াবেন।এমনকি তারা হিন্দুস্তানের শাসকদের শিকলে বেধে নিয়ে আসবে।আল্লাহ এদলটির গুনাহ মাফ করে দিবেন।তারা যখন যুদ্ধ শেষে ফিরবে,তখন শামে এসে ঈসা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পেয়ে যাবে।আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন যে আমি যদি এযুদ্ধে অংশগ্রহনের সুযোগ পায়,তাহলে আমি আমার নতুন-পুরাতন সকল সম্পদ ব্যয় করে সে যুদ্ধে অংশগ্রহন করব।অতপর আল্লাহ যখন আমাদের বিজয় দান করবেন,আমরা ফিরে আসব।তখন আমি হব মুক্ত স্বাধী্ন আবু হুরায়রা।এ বাহিনীটি শামের দিকে মার্চ করবে।সেখানে তারা ঈসা আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মিলিত হবে।আমার ইচ্ছা তার সাক্ষাৎ পাওয়ার।পেলে বলব-আমি আল্লাহর রাসুলের সাহাবী।একথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসতে হাসতে বলেন-এত তারাতারি নয়,আরও পরে,আরও পরে।
    আল-ফিতান: খণ্ড ০১, পৃষ্ঠা-৪০৯।
    ৪।হযরত কা’ব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-জেরুসালেমের (বাই’ত-উল-মুক্বাদ্দাস)একজন রাজা তার একটি সৈন্যদল হিন্দুস্তানের দিকে পাঠাবেন, যোদ্ধারা হিন্দের ভূমি ধ্বংস করে দিবে, এর
    অর্থ-ভান্ডার ভোগদখল করবে, তারপর রাজা এসব ধনদৌলত দিয়ে জেরুসালেম সজ্জিত করবে, দলটি হিন্দের রাজাদের জেরুসালেমের রাজার দরবারে উপস্থিত করবে, তার সৈন্যসামন্ত তার নির্দেশে পূর্ব থেকে পাশ্চাত্য পর্যন্ত সকল এলাকা বিজয় করবে, এবং হিন্দুস্তানে ততক্ষণ অবস্থান করবে যতক্ষন না দাজ্জালের ঘটনাটি ঘটে।

    (ইমাম বুখারী (রঃ) এর উস্তায নাঈম বিন হাম্মাদ (রঃ) এই হাদিসটি বর্ণনা করেন তার ‘আল ফিতান’ গ্রন্থে । এতে, সেই উধৃতিকারীর নাম উল্লেখ নাই যে কা’ব (রাঃ) থেকে হাদিসটি বর্ণনা করেছে)।

    ৫।সাফওয়ান বিন উমরু রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-আমার উম্মাহর একদল লোক হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ তাদের সফলতা দান করবেন, এমনকি তারা হিন্দুস্তানের রাজাদেরকে শিকলবদ্ধ অবস্থায় পাবে। আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন। যখন তারা সিরিয়া ফিরে যাবে, তখন তারা ঈসা ইবনে মারিয়ামকে (আঃ) এর সাক্ষাত লাভ করবে।
    আল-ফিতান=খণ্ড ০১, পৃষ্ঠা-৪১০।

    ওহে মুমিন!এতক্ষনে হয়তো রাসুলের ভবিষ্যৎদ্বানী পরে ফেলেছেন।এবার পৃথিবীর একটা মানচিত্র হাতে নিন।দেখুন,আল্লাহর রাসুল বলেছেন যে খুরাসান থেকে কালপতাকাবাহী একটা দল আত্বপ্রকাশ করবে।তাদের মধ্যে থাকবে আল্লাহর খলীফা মাহদি।আপনি দেখুন সারা দুনিয়ার মধ্য থেকে একটা পাহাড়ি এলাকা থেকে অর্থাৎ আফগানিস্তান থেকে কালো পতাকাবাহী দল আত্বপ্রকাশ করেছে।পৃথিবীর উত্তর থেকে দক্ষিন।পূর্ব থেকে পশ্চিম অঞ্চল থেকে আল্লাহর মুমিন বান্দাগন সেখানে গিয়ে জড়ো হয়েছে।তারপর তারা সাদা কুকুর রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয় অর্জন করে।মুজাহিদিনদের পরাজিত করতে পারেনি।যা আল্লাহর রাসুল বলেছেন যে এই কালপতাকাবাহী বাহিনীকে কেউ প্রতিহত করতে পারবে না।এরই মধ্যে আল্লাহর রাসুলের ভবিষ্যৎদ্বানী অনুসারে এই কালপতাকাবাহিনী শামে,ইয়েমেনে,হিন্দুস্তানে,ইরাকে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পরে।এই দলটিই হল গ্লোবাল জিহাদের কাণ্ডারি আল-কায়েদা।অর্থাৎ তানজিম আল-কায়েদাই হল আত্ব-ত্যাইফাতুল মানসুরাহ অর্থাৎ আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত দল।
    এখন আমাদের করনীয় কি?যে বা যারা নিজেদেরকে মুমিন দাবি করবে তাহলে তাদেরকে অবশ্যই এইগুণের অধিকারী হতে হবে যা আল্লাহ তা’আলা বলেছেন-
    وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا
    তারা বলল-আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম।
    বাকারা-২৮৫।
    এই অনুসারে একটাই কথা যদি আমরা মুমিন হয় তাহলে আল্লাহ ও তার রাসুল বলেছেন তা আমাদেরকে শুনতে হবে এবং কোন প্রকার যুক্তি-তর্ক ছাড়া,সন্দেহ-শুবুহাত ছাড়া,নিজের অনুরাগে-বিরাগে সন্তুষ্টচিত্তে এবং পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করতে হবে।
    এবার সেই হাদিসটি আলোচনা করব যা আল্লাহর রাসুল বলে গেছেন-
    সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-যখন তোমরা খোরাসানের দিক থেকে কালো পতাকাবাহীদের আসতে দেখবে,তখন বরফে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাদের সাথে যোগদান করবে।কারন তাদের মধ্যেই রয়েছে আল্লাহর খলীফা মাহদি আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
    মুসতাদরাকে হাকিম-৪/৫৪৭।
    রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি নির্দেশ দিচ্ছেন আমাদের?যে খোরাসান থেকে কালপতাকাবাহী একটা দল আত্বপ্রকাশ করবে।যেকোন ভাবেই হোক তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবার কথা বলেছেন তিনি,বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাদের মধ্যে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করে নিতে হবে।ওহে মুমিন-আপনি চেয়ে দেখুন সারা পৃথিবীতে এই কালপতাকাবাহিনী ছড়িয়ে পড়েছে।প্রত্যেকে এবার একটি খেলায় মত্ত যে হয়তো শরীয়ত,নয়তো শাহাদাত।সকলের জীবনের একটাই টার্গেট।তা হল আল-খিলাফাহ আলা মিনহাজিন নুবুয়্যাহ।হে ভাই,আপনিও হয়ে যান দ্বীনের সহযোগী।নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করে রাসুলের ভবিষ্যৎ করা সঠিক এবং ইসলামের উপর পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত আল্লাহর দল।
    আল্লাহ সুবহানুয়া তা’আলার নিকট কামনা করি হে আল্লাহ আপনি আমাদের খোরাসানের কালো পতাকাবাহিনীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে দিন এবং সকলকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন।আমীন।

    (৫) হযরত সাফওয়ান বিন উমরু (রাঃ)
    তিনি বলেন কিছু লোক তাকে বলেছেন যে রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ
    “আমার উম্মাহর একদল লোক হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ তাদের সফলতা দান করবেন, এমনকি তারা হিন্দুস্তানের রাজাদেরকে শিকলবদ্ধ অবস্থায় পাবে। আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন। যখন তারা সিরিয়া ফিরে যাবে, তখন তারা ঈসা ইবনে মারিয়ামকে (আঃ) এর সাক্ষাত লাভ করবে”।
    (আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪১০)

  • #2
    জাজাক আল্লাহ্* খাইর।

    হে মুমিনগণ তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ স্বীয় দ্বীন থেকে ফিরে যাবে,অচিরেই আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন,যিনি তাদেরকে ভালবাসেন এবং তারাও তাকে ভালবাসবে।তারা হবে মুমিনদের প্রতি কোমল এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর।তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে।কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না।এটা আল্লাহর অনুগ্রহ,তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন।আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী,মহাজ্ঞানী।
    মায়েদা-৫৪।
    রবের প্রতি বিশ্বাস যত শক্তিশালী হবে, অন্তরে শয়তানের মিত্রদের ভয় তত কমে যাবে।

    Comment


    • #3
      জাযাকুমুল্লাহ প্রিয়!
      উত্তম আলোচনা।
      আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের আত-ত্বয়াইফাতুল মনসুরায় শামিল করেন।
      আমিন।
      "এখন কথা হবে তরবারির ভাষায়, যতক্ষণ না মিথ্যার অবসান হয়"

      Comment


      • #4
        গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট।
        আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে আত্ব-ত্যাইফাতুল মানসূরাহ এর গুণাবলী অর্জন করে আত্ব-ত্যাইফাতুল মানসূরার দলভুক্ত করুন। আল্লাহুম্মা আমীন
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment


        • #5
          মাশাআল্লাহ, উপকৃত হলাম।

          Comment


          • #6
            আসসালামু আলাইকুম ভাই। ভাই, আমার এই পোস্ট টার পিডিএফ দরকার ছিল। দাওয়াতি কাজে তায়েফাতুল মানসুরাহ খুব কাজে লাগে।

            Comment


            • #7
              .........................
              গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

              Comment


              • #8
                ...............................
                Last edited by Munshi Abdur Rahman; 07-07-2021, 10:51 AM.
                গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

                Comment


                • #9
                  Originally posted by khalid bin ayubi View Post
                  আসসালামু আলাইকুম ভাই। ভাই, আমার এই পোস্ট টার পিডিএফ দরকার ছিল। দাওয়াতি কাজে তায়েফাতুল মানসুরাহ খুব কাজে লাগে।
                  ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ.
                  আশা করি কোন ভাই এগিয়ে আসবেন।
                  ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                  Comment

                  Working...
                  X