আল হিকমাহ মিডিয়া পরিবেশিত
“এবং মুমিনদের উদ্বুদ্ধ করুন!”
।।কমান্ডার সাদ বিন আতিফ আল-আওলাকি হাফিযাহুল্লাহ ||
এর থেকে– শেষ পর্ব
“এবং মুমিনদের উদ্বুদ্ধ করুন!”
।।কমান্ডার সাদ বিন আতিফ আল-আওলাকি হাফিযাহুল্লাহ ||
এর থেকে– শেষ পর্ব
ষষ্ঠত: জাতির যুবসমাজের প্রতি আহ্বান, তারা যেন সত্যিকার মুজাহিদদের সারিতে যোগদান করে, বিশেষত তাদের ঐ ভাইদের সারিতে, যারা আল-কায়েদা সংগঠনে রয়েছে। কয়েক দশক হয়ে গিয়েছে তারা আমেরিকান ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে পবিত্র জিহাদ ঘোষণা করেছে। তাদের নেতা ও আলেমগণ তাদের আহ্বানকে তাদের পবিত্র ও নির্মল রক্তে সিক্ত করেছেন। সুতরাং হে যুবসমাজ! তাদের সাথে যোগদান করে প্রশিক্ষণ নাও, প্রস্তুত হও, শারীরিক ও মানসিকভাবে তৈরি হও, অস্ত্র চালনা ও যুদ্ধের কৌশল রপ্ত করো, যাতে তোমরা অগ্রসর হতে পারো এবং জাতিকে দীর্ঘদিনের অত্যাচার, অবিচার ও দুর্বল অবস্থা থেকে মুক্ত করতে পারো। আর পবিত্র স্থানগুলোকে কাফের ও অত্যাচারীদের হাত থেকে মুক্ত করো। তবে যোগদানের আগে পূর্ব সমন্বয় করা এবং যোদ্ধাদের গ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া আবশ্যক।
সপ্তমত: সমগ্র আরব উপদ্বীপের তরুণ ও গর্বিত গোত্রসমূহ, বিশেষত ইয়েমেনের গোত্র ও তার যুবকদের প্রতি আমাদের আহ্বান, তারা যেন মার্কিন বাহিনী ও তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়, যদি তারা ইয়েমেনের পবিত্র ভূমিতে পদার্পণ করে। আমরা ইয়েমেনের সকল মুসলিম জনগণকেও আহ্বান জানাই, তারা যেন—এই পবিত্র ভূমিকে কাফির ও তাদের দোসরদের কবল থেকে মুক্ত করতে এবং আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করতে শরিয়া সমর্থকদেরকে সাহায্য করে—মানুষ, অস্ত্র, অর্থ ও সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে।
অষ্টমতঃ কেউ যদি হত্যার সুন্নাতকে পুনর্জীবিত করতে সক্ষম হয় তার কর্তব্য: যারা গাজায় যুদ্ধের সমর্থক (আরবের ইহুদিদের) নেতৃত্বের কাছাকাছি রয়েছে—যেমন মিসর ও জর্ডানের শাসক এবং আরব উপদ্বীপের সকল শাসক, যারা অর্থ সরবরাহ ও লজিস্টিক সহায়তার মাধ্যমে জায়নবাদীদের পক্ষে এই যুদ্ধকে সমর্থন করছে—তাদের ব্যাপারে এক মুহূর্তও দেরি না করে গুপ্তহত্যার মিশন আরম্ভ করে দেওয়া। নিশ্চয়ই এটি বর্তমান সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ। এই শাসকেরা তাদের নির্লজ্জ মিডিয়া চ্যানেলগুলিতে এবং পর্দার সামনে যা বলে, তা দ্বারা কেউ যেন প্রতারিত না হয়। যদি তারা না থাকত, তাহলে গাজা অবরুদ্ধ হতো না, হাজারো মানুষ নিহত হতো না এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতো না। তাই যে ব্যক্তি তাদের সেনাবাহিনীতে আছে এবং তার হৃদয়ে ঈমান আছে; যে ব্যক্তি আল্লাহর শাস্তিকে ভয় পায়—ফিলিস্তিনে তার ভাইদের সাহায্য না করার কারণে—তার এখনই এই পুতুল, নীচ ও ইহুদি ও মুরতাদ শাসকদের রক্ষাকারী সেনাবাহিনীর ভিতরে কিছু করার সময় এসেছে। বিশেষ করে পাইলটদের উচিত ইহুদিদের এবং এই অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা আমেরিকান ঘাঁটিগুলো ও সমুদ্রে অবস্থানরত বিমানবাহী জাহাজগুলো আক্রমণ করা। অন্ততপক্ষে আরব বিশ্বের এই গাদ্দার, দালাল শাসকদের প্রাসাদে আঘাত হানা উচিত। নাপাকির বিধানে কুকুরের মাথা ও লেজের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
নবম: ইরাক ও সিরিয়ার মুজাহিদ ভাইয়েরা—যারা সুন্নি সম্প্রদায়ের অগ্নিময়, বীর ও সাহসী সন্তান—তাদের কর্তব্য হলো ফিলিস্তিনে নিজেদের ভাইদের প্রতি দায়িত্ব পালন করা এবং আল্লাহকে ভয় করে অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য অজুহাতে তাদেরকে অসহায় অবস্থায় ফেলে না দেওয়া। আপনাদের আশেপাশের মুসলিমরা প্রতি মুহূর্তে হত্যা, রক্তপাত, রোগ, ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় নিপতিত হচ্ছে। আল্লাহই একমাত্র অভিযোগের স্থল। লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ!!
এরপর, আমরা এখন থেকেই একটি প্রাথমিক ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হিসেবে আমেরিকার জমিনে বসবাসকারী প্রতিটি মুসলিমকে আহ্বান জানাই—তা সে আরব বংশোদ্ভূত হোক, আমেরিকান হোক বা অন্য কোনো বংশের হোক—মূল বিষয় হলো তার ধর্ম ইসলাম এবং তার নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। যাদের সংখ্যা আমেরিকাতেই পৌঁছেছে সাড়ে চার মিলিয়ন মুসলিম, আমরা তাদের সবাইকে বলছি: প্রতিশোধ, প্রতিশোধ! আমেরিকান কাফেরদের হত্যার ব্যাপারে কারও সাথে পরামর্শ করবেন না। আপনাদের লক্ষ্য যেন মহৎ হয় এবং টার্গেট যেন কার্যকর হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধীদেরকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে—এই দেখুন ট্রাম্প ও তার ডেপুটি, এই তো তার উপদেষ্টা ও আর্থিক, প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তাদাতা ইলন মাস্ক। আর এই তো তাদের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং তাদের সমস্ত পরিবার। যারাই হোয়াইট হাউসের নীতিনির্ধারকদের সাথে কোনোভাবে সম্পর্কিত বা আত্মীয়, তাদের সবাইকে টার্গেট করুন। গাজায় আমাদের ভাইদের ওপর যা ঘটছে এবং চলছে—নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের উদ্দেশ্য করে গণহত্যা ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড—এর পর আর কোনো লাল রেখা (রেডলাইন) থাকতে পারে না। বদলা নেওয়া এখন বৈধ, বিশেষত যখন তারা ফিলিস্তিন, সিরিয়া, সোমালিয়া ও ইয়েমেনে আমাদের নারী ও শিশুদের হত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা যখন থামবে, তখনই আমরা থামবো।
এইতো সিনেট, আসল ইহুদিবাদীদের আস্তানা। এরা হলো সমস্ত অশুভ শক্তির কেন্দ্র, পুঁজ ও কূটচালের গর্ত। এই তো ইহুদিবাদ সমর্থক ও আমেরিকান সরকারকে সমর্থনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো—মাইক্রোসফটের মতো সব কোম্পানি, যারা আমেরিকান সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীকে সহায়তা করে.. এবং যেসব প্রতিষ্ঠান অস্ত্র ও গোলাবারুদ তৈরি করে। এই দেখুন ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলো—এগুলো বৈধ টার্গেট এবং তার মতো আরও যারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেয়, তারাও লক্ষ্যবস্তু আমাদের।
হ্যাকিং যোদ্ধা, যাদেরকে মুসলিম হ্যাকার বলা হয়ে থাকে, আর পৃথিবীর বুকে যেকোনো স্বাধীনচেতা মানুষদের প্রতি যারা হত্যা ও অপরাধকে ঘৃণা ও প্রত্যাখ্যান করেন—আপনাদের সামনে রয়েছে আমেরিকা এবং উপসাগরীয় সেই সব রাষ্ট্রের অর্থনীতি, যারা ইহুদি ও আমেরিকানদের সহযোগিতা ও অর্থায়ন করে। এই কাজে আপনারা যেন হাত গুটিয়ে না নেন। কখনো হতাশ হবেন না, কারণ আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে যা ভালো পারি তা-ই করে যাচ্ছি। আপনাদের চেষ্টা ও হাতকে আল্লাহ্ বরকত দান করুন, আপনাদের বুদ্ধিমত্তা, ধূর্ততা এবং নিজের জাতির রক্ত ও মুসলিম ভাইদের সম্মান রক্ষার প্রতি যে গর্ব ও অনুরাগ রয়েছে, তা-ও যেন সুরক্ষিত থাকে। কারণ এই যুদ্ধ বহুস্তরবিশিষ্ট ও বহুমুখী, যা আমাদের জাতির সমস্ত শক্তি ও প্রতিভাকে ময়দানে আহ্বান জানায়। আপনারা নিজেদের দীন ও বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা মুসলিম ভাইদের পাশে দাঁড়ান। আজকের দিনে ইসলামী উম্মাহর বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ চলছে, তা স্পষ্টভাবেই এক জায়নবাদী-খ্রিস্টান জোটের যুদ্ধ, যা এখন তার আসল রূপ প্রকাশ করেছে। কাজেই উদ্যম আনুন, সংকল্প আনুন—আসুন সবাই একসাথে জেগে উঠি। কারণ বিজয় তো কেবল ধৈর্যের এক মুহূর্ত মাত্র। আর আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন।
সুতরাং হে আমেরিকায় বসবাসরত আমাদের মুসলিম ভাইয়েরা, আল্লাহর কসম! কাফির আমেরিকান স্নাইপার টমাস ক্রুক্স যেন আপনাদের চেয়ে বেশি সাহসী ও আত্মত্যাগী না হয়ে যায়—যে লোকটা দুরাচার ট্রাম্পকে হত্যা করতে তার স্নাইপার রাইফেল নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলো; অথবা সেই নাসারানি এলিয়াস রদ্রিগেজ, যে সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ইহুদি দূতাবাসের দুই কর্মীকে হত্যা করেছে; কিংবা আমেরিকান সৈন্য বুশনেল, যে ইহুদি দূতাবাসের সামনে মুসলিম নিধনের প্রতিবাদে নিজেকে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিলো। তাহলে আপনারা কোথায় এই সব আত্মত্যাগের সামনে? আল্লাহই একমাত্র সাহায্যকারী।
যারা জান্নাতে ও আল্লাহর সাক্ষাতে বিশ্বাস করে না, তারাও মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। তাহলে আপনারা যারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাসী, যদি দৃঢ় সংকল্প নিয়ে নিজেদের রবের জন্য নিষ্ঠা সহকারে এগিয়ে যান, তাহলে কত না উত্তম হবে সেই শাহাদাত! আল্লাহর কসম, তা হবে সর্বোত্তম। আর তা হবে আপনাদের দুর্বল ভাইদের জন্য সর্বোত্তম সাহায্য ও সমর্থন। আর যদি আপনারা এটাকে সুপরিকল্পিতভাবে পরিচালনা করেন, তাহলে তা হবে সর্বোত্তম জিহাদ। আহ! জান্নাতের সুঘ্রাণ! সুতরাং আসুন, আমাদেরকে দেখিয়ে দিন আপনাদের শক্তি ও মুহাম্মাদ ﷺ-এর উম্মতের প্রতি আপনাদের দায়িত্ববোধ।
আমি আপনাদেরকে ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত ‘ইনস্পায়ার’ ম্যাগাজিন নিয়মিত পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এতে রয়েছে প্রচুর মূল্যবান নির্দেশনা, যা প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তির জন্য উপকারী হবে। আমরা আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে, আমেরিকায় ইহুদীদের সংখ্যা কম নয়। প্রায় ছয় মিলিয়ন ইহুদী সেখানে বসবাস করে, যা ফিলিস্তিনে থাকা ইহুদীদের সংখ্যার প্রায় সমান। এমনকি, ফিলিস্তিনের দখলকৃত ভূমিতে থাকা ইহুদীদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি আমেরিকান নাগরিকত্ব ধারণ করে।
আর হে আমাদের ইউরোপের ভাইয়েরা! আপনাদের সংখ্যা প্রায় ষোল মিলিয়নে পৌঁছেছে। তাই ইহুদীদেরকে কোনো নিরাপদ আশ্রয় দেবেন না, যেমন তারা ফিলিস্তিনীদেরকে কোনো বাসস্থান, আশ্রয় বা শান্তি দেয়নি, এমনকি হাসপাতালেও রোগী, আহত, নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের উপর তারা বোমাবর্ষণ করে চলেছে। তাই প্রতিশোধ নিন, প্রতিশোধ নিন! প্রত্যেকে নিজ নিজ দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী (প্রতিরোধ গড়ে তুলুন)। আল্লাহ আপনাদেরকে সাহায্য করুন, শক্তি দিন, সফলতা দিন এবং সঠিক পথে পরিচালিত করুন। আমার বার্তা হোয়াইট হাউসের সেই নীতিনির্ধারকদের জন্য, যাদের আমরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে শুধু অবিচার, নিপীড়ন, হত্যা, ধ্বংস, গণহত্যা, জাতিগত নিধন ও অস্তিত্বের সাফাইয়ের যুদ্ধ দেখেছি। তারা যেখানেই তাদের স্বার্থ দেখেছে, সেখানেই—যেকোনো বাধাকে উৎখাত করতে তারা যুদ্ধের যন্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে—এমনকি যদি তা স্থানীয় জনগণের প্রাণহানির মাধ্যমেও হয়। তাদের কাছে কোনো নীতিবোধ বা মানবতা নেই, যতক্ষণ তাদের বিপক্ষ দুর্বল। তাদের কোনো সমস্যা নেই, যদি লক্ষ লক্ষ প্রাণ ঝরে যায় বা গোটা দেশের শিশু, নারী ও প্রতিটি প্রাণী নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়—এটা তাদের রক্তলোলুপ অভিধানে একটি সহজ ও ঠাণ্ডা মাথার হিসাব। এটাই আমেরিকান মানসিকতা: যতক্ষণ তা আমেরিকার স্বার্থসিদ্ধি করছে বা তাদের ৫১তম রাজ্য প্রতিষ্ঠা করছে—যেটা তারা একটি আরব-ইসলামি ভূমিতে গড়তে চায়। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায়, তা কখনোই সম্ভব হবে না। আর সেই অহংকারী, নীচ ট্রাম্পের ব্যাপারে বলবো—সে ইহুদি হিসেবে তার পূর্বসূরি বাইডেনকে ফিলিস্তিনি বলে উপহাস করে, অথচ এই অভিশপ্ত বৃদ্ধ বাইডেন ইসরাইলকে সামরিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক সমর্থন দিয়েছে। হে অহংকারী, তুমি যখন তোমার পূর্বসূরিকে এভাবে বিদ্রূপ করো, তখন আসলে নিজেকেই প্রকাশ করো—তুমি একজন জঘন্য জায়নবাদী ইহুদি, যে কোনো পরিণতি না ভেবেই প্রচণ্ড জেদ ও আগ্রাসী দাঁত দেখায়। তুমি ক্ষমতায় আসার প্রথম দিন থেকেই তা প্রমাণ করেছো। তুমি ধ্বংস হও! আর আমেরিকা ও তার ইতিহাসজুড়ে অপরাধী, খুনি নীতিনির্ধারকদের জন্য ধ্বংস! এভাবেই আমরা তোমাদের চিনি। স্বাধীন বিশ্বও তোমাদের চিনেছে।
ইহুদিদের প্রতি আমেরিকার রাজনীতিবিদদের অবস্থান সর্বদাই অটুট সমর্থন ও সহযোগিতার প্রতীক। তাদের সম্পর্ক নিবিড় ও অবিচ্ছেদ্য—যেন একই সংঘে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলা সহযোদ্ধা। আমরা যত আমেরিকান শাসককে চিনি বা তাদের সম্পর্কে শুনেছি, তাদের মধ্যে ইহুদিবিরোধী হিসেবে মাত্র একজনকে জানা যায়, প্রায় দুইশ বছর আগের প্রেসিডেন্ট জেফারসন। তিনিই সম্ভবত একমাত্র আমেরিকান শাসক, যিনি ইহুদিদের বিষাক্ত চরিত্র বুঝতে পেরেছিলেন এবং তাঁর জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন এক সত্য উপদেশ দিয়ে, যা সময়ের পরীক্ষায় সত্য প্রমাণিত হয়েছে। তিনি তখন তাঁর জনগণকে বলেছিলেন: “যদি তোমরা ইহুদিদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বের করে না দাও, তাহলে তারা তোমাদেরকে দাসে পরিণত করবে এবং তোমাদের নিজের দেশেই তোমাদেরকে গোলাম বানিয়ে ফেলবে।” আল্লাহর শপথ! তিনি সত্যই বলেছিলেন। জেফারসনের পর থেকে আজকের এই অহংকারী ও দাম্ভিক ট্রাম্প পর্যন্ত সকল আমেরিকান শাসকের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে এই সত্যটি সুস্পষ্টভাবে দেখা যায়। তারা সকলেই ইহুদিদের অনুগত দাসে পরিণত হয়েছে, তারা বিশ্বব্যাপী জায়নবাদী-ক্রুসেডার নেতাদের আজ্ঞাবহ অনুসারী হিসেবে তাদের সকল ইচ্ছা বিনা প্রশ্নে পূরণ করে চলেছে।
হে আমেরিকানরা, তোমরা যদি তোমাদের প্রেসিডেন্ট জেফারসনের উপদেশ মেনে চলতে এবং তাঁর কথার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে, তাহলে কখনোই সেই ভয়াবহ ‘ব্ল্যাক টিউজডে’ দেখতে না—যেদিন তোমাদের দেশের আকাশে অন্ধকার নেমে এসেছিলো। আর তার পরিণতি তো তোমরাই ভোগ করেছো একের পর এক, এমনকি এখন দেউলিয়া হওয়ার এবং জাতিগতভাবে ধ্বংসের প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছো। আজও তোমরা একই ভুল করছো, বরং আরও ভয়ঙ্কর ও নৃশংসভাবে। হায়! তবুও কি শিক্ষা নেবে না?
কী নির্লজ্জতা আর স্পর্ধা নিয়ে তোমরা নিজেদেরকে আমাদের জমি ও পবিত্র স্থান কেনা-বেচা, উচ্ছেদ করা এবং সেখানে বসতি স্থাপনের অধিকার দিয়েছো—যেন আমরা তোমাদের সামনে রক্ত-মাংসের মানুষ নই, যেন আমাদের কোনো অনুভূতি, আত্মমর্যাদা বা গর্ব নেই। এতে আশ্চর্যের কী আছে? তোমাদের চরিত্র ও ইতিহাস তো সবার জানা। তোমাদের পূর্বপুরুষদের আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ানদের প্রতি আচরণ—যাদের জমি জোর করে দখল করে নেওয়া হয়েছিল—সেটা তো বিশ্ববাসী জানে।
কিন্তু হে আমেরিকানরা, তোমরা একটা জিনিস বুঝতে ভুল করেছো—আমরা আর দুনিয়ার অন্য জাতির মতো নই। আমরা মুসলিম, ঈমানদার, ত্যাগী ও বীরের জাতি। আল্লাহর শপথ! আমাদের সৈন্যরা মৃত্যু ও শাহাদাতকে তোমরা যেমন মদকে ভালোবাসো, তার চেয়েও বেশি ভালোবাসে। কিন্তু উভয় ভালোবাসা এক নয়! যে আল্লাহর সঙ্গে থাকে, তাঁর হক আদায় করে, তাঁর আদেশ মানে ও নিষেধ থেকে দূরে থাকে, আর কাফির-ফাসিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করে—আল্লাহ তাকে নবীদের, সিদ্দিকদের, শহীদদের ও সালেহদের সঙ্গে জান্নাতুল ফিরদাউসে স্থান দেবেন। আর যে ব্যক্তি তার প্রেমিকাকে প্রতিশ্রুতি দেয় যে, সে শীঘ্রই ফিরে আসবে, তারপর আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসে—সে কি কখনো আমাদের সমান হতে পারে? তোমরা তো আমাদেরকে আফগানিস্তান, ইরাক ও সোমালিয়ায় পরীক্ষা করে দেখেছো—কেমন পেয়েছো আমাদের?
আমরা আশা করি, গণমাধ্যমের কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও নীরবতা সত্ত্বেও, দুই দশক পর তোমাদের দেশে শায়খ উসামা (রহিমাহুল্লাহ)-এর বার্তা পুনরায় ছড়িয়ে পড়ার পেছনে যে হিকমাহ (দূরদর্শিতা ও গভীর তাৎপর্য) রয়েছে, তা হলো—আমেরিকার নতুন প্রজন্ম যেন এই বার্তাটি পড়ে, তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে এবং আমাদের ন্যায়বিচারের দাবি যে কতটা সঠিক ও যৌক্তিক—তা যেন বুঝতে পারে।
হে আল্লাহ, হে সমস্ত প্রয়োজন পূরণকারী, হে দোয়া কবুলকারী, হে বিপদে শান্তি দানকারী—আমাদের ও গাজাসহ দুনিয়ার সব প্রান্তে অবস্থিত নির্যাতিত মুসলিম ভাইদের জন্য তুমি প্রতিটি সংকীর্ণতা থেকে মুক্তির পথ করে দাও, প্রতিটি দুঃখ-কষ্ট থেকে স্বস্তি দান করো এবং তুমি আমাদের ও তাদের অভিভাবক ও সাহায্যকারী হও, হে সকল জগতের প্রতিপালক!
হে আল্লাহ, তুমি আমেরিকা এবং তাদের মিত্রদের, আর ইহুদিদের এবং তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নাও। হে আল্লাহ, তুমি তাদের সংখ্যা নিরূপণ করে নাও, তাদেরকে গুনে গুনে রাখো, তাদের বিচ্ছিন্নভাবে ধ্বংস করে দাও, তাদের ধ্বংস করো এবং তাদের কাউকেই বাকি রেখো না।
আর আমাদের শেষ কথা এই যে—সব প্রশংসা আল্লাহ্ তাআলারই, যিনি সকল জগতের পালনকর্তা।
*****
Comment