আত–তিবইয়ান পাবলিকেসন্স পরিবেশিত
“জিহাদেঅংশগ্রহণ এবংসহায়তার৩৯টিউপায়”।।
মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আস-সালিম (‘ইসা আল-‘আশীন) হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ৫ম পর্ব
==================================================
=====
“জিহাদেঅংশগ্রহণ এবংসহায়তার৩৯টিউপায়”।।
মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আস-সালিম (‘ইসা আল-‘আশীন) হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ৫ম পর্ব
==================================================
=====
১১. আহতদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহযোগিতা করাঃ
…এটা করা যায় তাদের জন্য ঔষধ ক্রয় করে, তাদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করার মাধ্যমে, তাদের চিকিৎসার জন্য অর্থ প্রদান করে বা তাদের চিকিৎসকের বেতন প্রদানের মাধ্যমে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে এই আহতদের বড় একটা অংশ হচ্ছেন মুজাহিদীনরা।সুতরাং যখন তাদের চিকিৎসার জন্য সাহায্য করা হয়, তখন তা তাদের জন্য একটি বিশাল সাহায্য। নিম্নোক্ত মানুষের কাছে এই সহযোগিতা প্রত্যাশা করা হয়ঃ
- চিকিৎসকগণ ও ফার্মাসিষ্ট যাদের আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রয়েছে;
- যারা এমন স্থানে অথবা আশে পাশে বসবাস করে যেখানে যুদ্ধ চলছে; তারা এমন অনেক কিছু করতে সক্ষম যা অন্যদের দ্বারা সম্ভব নয়, কারণ তারা ঐ সকল আহতদের স্থানে যেতে সক্ষম এবং চিকিৎসা দিতে পারেন।
- যাদের কাছে আহতরা অন্য স্থান থেকে আসে তাদের উচিৎ অবশ্যই প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা এবং আনুসাঙ্গিক সকল বিল পরিশোধ করা। অনুরূপভাবে, এটা সাধারণ ভাবে সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যে যারা মুজাহিদীনদের জন্য ব্যয় করার ক্ষমতা রাখেন তাদের উচিত আহত ও আঘাত প্রাপ্তদের জন্য ব্যয় করা।
১২. মুজাহিদীনদের প্রশংসা করা, তাঁদের কাজের যৌক্তিকতা তুলে ধরা এবং মানুষদেরকে তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করার দিকে আহবান করাঃ
জিহাদ ও মুজাহিদীনদের সাহায্যের অপর পদ্ধতিটি হল মুজাহিদীনদের প্রশংসা করা, তাদের সাথে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ানো, তাঁদের কাজের প্রশংসা করা এবং তাঁদের ঘটনাগুলো বর্ণনা করা এবং দ্বীনের শত্রুদের বিরুদ্ধে যে সব অলৌকিক ঘটনা ও বিজয় সংঘটিত হয়েছে তা প্রচার করা। এর মাধ্যমে অন্তর পুনরুজ্জীবিত এবং অতীতের মর্যাদা ও গৌরব স্মরন হয়। মুজাহিদীনরা তাঁদের পবিত্র রক্ত, অঙ্গপ্রতঙ্গ, এবং স্বচ্ছ ও পরিশুদ্ধ আত্মা উৎস্বর্গ করেছেন যা কলমের কালিকে ম্লান করে দিয়েছে।
প্রতিদিন, চলছে জান্নাতের কাফিলায় শহীদগণ যিনি সর্বজ্ঞ তিনি তাঁদের উপর সন্তুষ্ট
যা তাঁরা করে গেছেন তা কিভাবে আমি বর্ণনা করি? কথাগুলি থেমে গেছে আর কলমগুলি শুকিয়ে গেছে।
তাঁদের কাহিনীগুলো বর্ণনার মাধ্যমে মানুষকে তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করার প্রতি আহবান করা যেন তারা রসূল মুহাম্মাদ ﷺ-এর দেখানো পথে চলতে পারে। আপনার জন্য উত্তম আর কি হতে পারে যে আপনি এক উম্মাহর মুজাহিদীনদের উদাহরণ প্রদান করছেন যাঁরা দ্বীনের পতাকাকে তুলে ধরার জন্য তাঁদের জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছেন এবং এই জীবনের (দুনিয়ার) সুখ-স্বাচ্ছন্দের ব্যাপারে তাঁদের কোন লোভ-লালসা ছিল না।
উম্মাহর জানা উচিত যে জিহাদ, মুজাহিদীন ও শহীদদের ইতিহাস কোন বিছিন্ন ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়। বরং তা এই মহান উম্মাহর ইতিহাসের ধারাবাহিকতারই অংশ যার সূচনা হয়েছিল মুহাম্মাদ ﷺ এবং তাঁর মহান সাহাবাদের দ্বারা। তা আজ পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে তাদের মাধ্যমে যাঁরা তাঁদের পদাংঙ্ক অনুসরণ করেছে।
যে ব্যক্তি মুজাহিদীনদের কাফিলায় অংশ গ্রহণ করে, প্রকৃত ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে সে পথভ্রষ্ট নয় বরং সে সেই ইসলামের অনুসারী যেই ইসলাম নিয়ে রসূল ﷺ এসেছিলেন। বরং সে তার নিজের পথই পাড়ি দিচ্ছেন। যখন কোন ব্যক্তি প্রশ্ন করে, কেন বর্তমানের আলিমগণ জিহাদের জন্য বের হয় না এবং কেন আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে না, তখন আমরা তাকে বলিঃ (আমাদের) আদর্শ হল মুহাম্মাদ ﷺ; তারা নয় যারা এই দুনিয়ার জীবনের প্রতি আসক্ত এবং নিজেদেরকে দুনিয়ার কাজে ব্যস্ত রেখেছে। তাদেরকে যে নাম বা পদবী দ্বারা সম্বোধন করা হোক না কেন এতে আমাদের কিছুই আসে যায় না।
তারা বলেছিলঃ “আলিম বা তিলাওয়াতকারীদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে যার পদাংঙ্ক অনুসরণ করা যায়?”
আমি বলিঃ “রসূল মুহাম্মাদﷺ এবং তাঁর সাহাবাগণ; জিহাদের ব্যাপারে তারা ছিলেন অনড়।
নিশ্চয়ই, আমার আদর্শ হলেন ইবন আল-ওয়ালীদ এবং মুসআব এবং ইবন আয-যুবায়ব এবং বাকি আনসারগণ।”
তারা বলেঃ “তোমার পথে ছড়িয়ে আছে দুর্ভোগ সুতরাং, কেন তুমি এমন ঝুঁকিপূর্ণ জীবন খুঁজে বেড়াও?”
আমি বলিঃ দূর্ভোগের পথই হলো আমাদের জান্নাতের পথ!! আর ভোগ-বিলাস তা হল আগুনের (জাহান্নমের) পথ।”
সুতরাং জনগণ এবং এই উম্মাহকে জীবনের আদর্শ হিসেবে মুজাহিদীনদেরকে গ্রহণ করার জন্য আহবান করা অত্যাবশ্যক যাতে করে উম্মাহ্ তার অতীতের উজ্জ্বল পথে ফিরে পেতে পারে।
১৩. মুজাহিদীনদের অনুপ্রেরণা দান করা এবং তাঁদেরকে (জিহাদ) চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করাঃ
কোন সন্দেহ নেই যে গাদ্দার (বিশ্বাসঘাতক) ও প্রত্যাখানকারীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা মুজাহিদীনদের মনোবলের উপর (নেতিবাচক) প্রভাব ফেলে। তারপরও তা তাঁদের দমাতে পারে না কারণ রসূল ﷺ বলেছেন, “…. তাঁরা তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে না যারা তাঁদের বিরোধীতা করবে বা গাদ্দারি করবে।” তবে এটা খুবই প্রয়োজন যে মুজাহিদীনদের উৎসাহিত করা এবং তাদের সাথে থাকা এবং তাদেরকে সহায়তা করা এবং তাঁদেরকে আশ্বস্ত করা যে শত্রুদের বিরুদ্ধে সর্ব অবস্থায়, সবখানে আমরা তাঁদের সাথে আছি। অনুরূপভাবে, আমরা অবশ্যই তাঁদেরকে উৎসাহিত করব জিহাদ চালিয়ে যাওয়ার জন্য এবং এই ব্যাপারে ধৈর্য্য ধারণ করার জন্য যত বিপদ-আপদই আসুক না কেন। সুতরাং এটা হচ্ছে নৈতিক সহযোগিতার সর্বোচ্চ পর্যায় যা আমরা মুজাহিদীনদের দিতে পারি এবং হয়ত এ জন্য আমাদেরকে আল্লাহ্ ক্ষমা করবেন। বর্তমান সময়ে মুজাহিদীনদের কাছে এটার প্রয়োজনীয়তা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে যা তাঁদের সিদ্ধান্তকে শক্তিশালী করবে, কারণ এখন প্রতারক এবং সত্যের সাথে যারা মিথ্যার সংমিশ্রন ঘটায় তাদের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে । (লা হাওলা ও’য়ালা কুউয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) মহান আল্লাহ্ ছাড়া আর কোনই (কুউয়া) শক্তি নেই।
রসূলুল্লাহ্ ﷺ সত্যই বলে গিয়েছিলেন,
“তোমাদের পর এমন দিন আসবে যখন সৎকর্মশীলদের ধৈর্য্যের পুরস্কার তোমাদের (সাহাবাগণের) পঞ্চাশ জনের সমান হবে।কারণ তোমাদের পাশে এমন অনেকে আছেন যারা তোমাদেরকে ভাল কাজে উৎসাহিত করেএবং তারা তাদের পাশে এমন কাউকে পাবে না যারা তাদেরকে ভাল কাজে উৎসাহিতকরবে।”
সুতরাং আসুন আমরা তাদেরই একজন হই যাঁরা মুজাহিদীনদের উৎসাহিত করে।
দেওয়ার মত তোমার কাছে কোন অশ্ব নেই বা নেই কোন সম্পদ।
সুতরাং, জিহবার দ্বারা সাহায্য কর যদি পরিস্থিতি (শারীরিকভাবে সাহায্য) করতে না দেয়।
আরও পড়ুন