আত–তিবইয়ান পাবলিকেসন্স পরিবেশিত
“জিহাদেঅংশগ্রহণ এবংসহায়তার৩৯টিউপায়”।।
মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আস-সালিম (‘ইসা আল-‘আশীন) হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ৪র্থ পর্ব
==================================================
=====
“জিহাদেঅংশগ্রহণ এবংসহায়তার৩৯টিউপায়”।।
মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আস-সালিম (‘ইসা আল-‘আশীন) হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ৪র্থ পর্ব
==================================================
=====
৮. আহত এবং কারারুদ্ধ মুজাহিদীনদের পরিবারের দেখাশুনা করাঃ
জিহাদ-কে সহায়তা করা ও মুজাহিদীনদের সাহায্য করার পদ্ধতি সমূহের মধ্যে আরেকটি হল তাদের মধ্যকার কারারুদ্ধ এবং আহত মুজাহিদীনদের পরিবারের ভরণ-পোষণ করা,কারণ তারা নিজেরা তা (ভরণ-পোষণ) করার জন্য উপস্থিত নেই এবং তাদের পরিবারের সাহায্য প্রয়োজন। সুতরাং তাদেরকে একা ছেড়ে দেওয়া যাবে না। বরং তাদের দেখাশুনা করা এবং তাদের বিষয়াদির খবরা-খবর নেয়া বাধ্যতামূলক, কারণ তাদের অবস্থাও ঠিক মুজাহিদ ও শহীদদের পরিবারের মত। কারাবন্দীদের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত কারণ (কারাবন্দী) সন্তানের জন্য তাদের মানসিক যন্ত্রণা অনেক বেশী হয়। যখনই তারা তাকে (কারাবন্দী সন্তানকে) স্মরণ করে তখনই তাদের দুঃখ ও তাদের (কারাবন্দী) সন্তানের নিয়তি (ভাগ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে) জানার আকাঙ্খা বারবার পুনরুজ্জীবিত হয়। সুতরাং এটা খুবই জরুরী যে তাদেরকে সবর করতে ও ইসতিকামাত (অটল) থাকার জন্য বলা এবং আমরাও এই সংকটময় মূহূর্তে তাদের পাশে আছি তা জানিয়ে দেয়া। দেখা যায় যে, কারাবন্দী কিছু ভাইদের স্ত্রীরা যখন আশে-পাশের সমাজের চাপের সম্মুখীন হয়, তখন কিছু মূর্খরা তাদের স্বামীদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করার মাধ্যমে তাদের উত্যক্ত করে এবং তাদের সুযোগের অপব্যবহার করে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে এটা তেমন ব্যক্তির দ্বারাই সংঘটিত হয় যার কোন চরিত্র বা নৈতিকতা নেই। তাই কারাবন্দী ভাইদের স্ত্রীদের পাশে সাহায্যকারী, রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং অবলম্বন বা সমর্থনকারী হিসেবে এবং ধৈর্য্য ধরার সাহস দানকারী হিসেবে দাঁড়ানো ছাড়া আমাদের আর কোন বিকল্প নেই। এবং আল্লাহ্ তাঁর দাসকে ততক্ষণ পর্যন্ত সাহায্য করতে থাকবেন যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার ভাইয়ের সাহায্যে নিয়োজিত থাকবে।
৯. মুজাহিদীনদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করাঃ
এতে কোন সন্দেহ নেই যে জিহাদের চালিকা শক্তি হল অর্থ যার মাধ্যমে জিহাদ এবং মুজাহিদীনরা সবচেয়ে বেশী উপকৃত হয়। উম্মাহর মধ্যে একদল লোক অথবা পুরো উম্মাহ্ অর্থ সংগ্রহ করে যুদ্ধে অবস্থানরত অগ্রগামী মুজাহিদীনদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। আর জিহাদে এই অর্থের প্রভাব কারও কাছেই অজানা নয়। এটাই বিশ্বের সকল কাফিরদেরকে হতভম্ব করে দিয়েছে যেহেতু তারা চেষ্টা করে আসছিল মুজাহিদীনদের অর্থের উৎসগুলোকে বন্ধ করতে এবং তাঁদের উপর চাপ প্রয়োগ করতে যাঁরা তাঁদের (মুজাহিদীনদের) সহযোগিতা করছে। তা সত্ত্বেও মুজাহিদীনরা তাঁদের পথের উপর অবিচল; কারণ “… তাঁরা তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না যারা তাঁদের বিরোধিতা করে অথবা বিশ্বাসঘাতকতা করে।”
যখন জিহাদের ডাক দেয়া হয় এবং অন্যদেরকে এই (জিহাদের) জন্য ব্যয় করতে উৎসাহিত করা হয় তার মানে এই নয় যে, এটি একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান যা প্রত্যেক মানুষের কাছে দানের বাক্স পাঠাবে অর্থ সংগ্রহ করার জন্য। কারণ এটি হল একটি কার্যক্ষেত্র যা প্রথমত (আল্লাহর পর) স্বয়ং এর উপরই নির্ভর করে। যখন তা সৎকর্মশীলদের দান গ্রহন করে, তার পূর্বেই দাওয়াহ ও জিহাদের ডাকে সাড়া দেয়ার ব্যাপারে তাদের সচেতনতার বহিঃপ্রকাশ তাদের সহানুভূতি ও সদাচরণ মাধ্যমে। সুতরাং এটা আপোষ করার জন্য তারা নিজেকে নিচে নামায় না যা তার ঈমানকে কলঙ্কিত ও তাদের জিহাদকে বাধাগ্রস্থ করবে। এর মাধ্যমে তারা রসূলুল্লাহ্ ﷺ যেভাবে সাহাবাদেরকে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করার জন্য উৎসাহ দিতেন তার উদাহরণকে অনুসরণ করছে এবং এই বরকতপূর্ণ দান দ্বারা মুজাহিদদের প্রস্তুত করছে।
সম্মিলিত ভাবে দায়িত্ব পালন করা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে সহযোগিতার উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত দেখা যায় মু’মিনদের মধ্যে যারা রসুল ﷺ এর সকল যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতা করতেন। এর উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হল তাবুকের যুদ্ধ, যেখানে মুসলিমরা ছূটে আসে (আল্লাহর রাস্তায় দান করার জন্য) এবং তারা সম্পদ ও সাদাকা প্রদান করে এবং অগ্রগামী নারী ও পুরুষগণ তাতে অংশ গ্রহণ করেন।
মুজাহিদীনদের জন্য এর চেয়ে উত্তম আর কি হতে পারে যে সে তার সন্তানদের গড়ে তুলবে পুনরুজ্জীবিত ইসলামিক ঐক্যের উপর যা মুসলিমদের জন্য মুক্ত হস্তে দান, সাহায্য ও ত্যাগ করা, আল্লাহর কালিমাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে জীবন উৎসর্গ করা এবং সেই কাজে প্রতিযোগিতা করতে শিখায়। নিশ্চয়ই, এটি হল প্রকৃত প্রতিপালনের শিক্ষাদীক্ষা; এই শিক্ষাদীক্ষা হচ্ছে সততা ও ন্যায়পরায়ণতাতে বৈশিষ্ট্যময়। এমন কোন মুসলিম নেই, যাদেরকে এই জিহাদের পরিবেশে লালন-পালন করে পর্যাপ্ত শিক্ষা-দীক্ষা দেয়া হয়েছে, অথচ সে সঞ্চয়কৃত শেষ সম্বলটুকু ব্যয় করতে কার্পণ্য করবে এবং সে তার মুজাহিদ ভাইয়ের সাহায্য ও সহযোগিতার আহবানে সাড়া দিতে দ্বিধাগ্রস্তহবে।
“হে আমার মুসলিম ভাই, নিশ্চয়ই ন্যায়পরায়ণতা হল এমন কিছু যা পুনরুত্থান দিবসে তোমাকে আনন্দিত করবে।
সুতরাং নিজেকে নিয়োজিত কর যা কিছু উত্তম ও প্রতিযোগিতা কর ত্যাগের ক্ষেত্রে যে জন্য বিচার দিবসে, আল্লাহ তোমাকে পুরস্কৃত করবেন।”
শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি (আল্লাহ্ তার প্রতি অনুগ্রহ করুন) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তির কাছে ব্যয় করার মত কোন অর্থ বা সম্পদ নেই, তার উচিৎ যাদের সম্পদ রয়েছে সেই সব নারী, শিশু বা বিশেষ কোন ব্যক্তি বা নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে থেকে অর্থ সংগ্রহ করা। এবং যে ব্যক্তি অর্থ সংগ্রহ করতেও অপারগ, তার পক্ষে অন্তত এতটুকু তো সম্ভব যে সে অন্যদেরকে অর্থ দিয়ে জিহাদ করার উৎসাহ দেবে এবং মুসলিমদের অনুরোধ করবে যখন তাদেরকে দান করার জন্য আহবান করা হয় তখন যেন তারা সম্পদের ব্যাপারে কৃপণতা না করে ।”
মুজাহিদীনদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করার বিভিন্ন প্রকার পন্থা আছে যার সবগুলো এখানে উল্লেখ করা সম্ভব নয়, কিন্তু তোমার জন্য যা গুরুত্বপূর্ণ তা হল অর্থ সংগ্রহের দৃঢ় সংকল্প। যদি এটা তোমার কাছে সত্যিকার অর্থেই গুরুত্বপূর্ণ হয় এবং যদি তুমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হও তবে তা করার জন্য অগণিত ও অসংখ্য পথ তোমার সামনে পাবে। তুমি সক্ষম হবে ক্রুসের সাহায্যকারী, মুজাহিদীনদের শত্রু মুনাফিক, ক্রুসেডারদের দ্বারা সৃষ্ট সমস্ত বাধা অতিক্রম করতে।
আমার কিছু আসে যায় না যদিও আমার পথ কঠিন হয়ে পরে এবং প্রতিবন্ধকতাপূর্ণ হয়ে যায়।
অতঃপর তোমাকে নিশ্চিতভাবে এটা জানতে হবে যে এই ব্যাপারটি অবশ্যকরণীয় এবং তোমার উপর তোমার ভাইয়ের অধিকার এবং এটা তোমার পক্ষ থেকে কোন অনুগ্রহ না। বরং এই অনুগ্রহ মহিমান্বিত আল্লাহর পক্ষ থেকে; তিনি সেই স্বত্তা যিনি প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য কারণ তিনি তোমাকে পথ দেখিয়েছেন এবং তোমাকে সুযোগ দিয়েছেন যুদ্ধে অবস্থানকারী অগ্রগামী মুজাহিদীনদের সাহায্য করার জন্য। কত মানুষই তার এই রহমত থেকে বঞ্চিত এবং কত কম সংখ্যককেই না তিনি এই কাজের জন্য পছন্দ করেছেন!
হে আল্লাহ্! আমাদেরকে এই অল্প সংখ্যকদের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করুন ……।
আসুন, আমরা স্মরণ করি মহিমান্বিত আল্লাহর কথাঃ
هَا أَنتُمْ هَٰؤُلَاءِ تُدْعَوْنَ لِتُنفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَمِنكُم مَّن يَبْخَلُ ۖ وَمَن يَبْخَلْ فَإِنَّمَا يَبْخَلُ عَن نَّفْسِهِ ۚ وَاللَّهُ الْغَنِيُّ وَأَنتُمُ الْفُقَرَاءُ ۚ وَإِن تَتَوَلَّوْا يَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ ثُمَّ لَا يَكُونُوا أَمْثَالَكُم ﴿٣٨﴾
“লক্ষ্য কর, তোমরাইতোতারা যাদেরকে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করার জন্য বলা হচ্ছে অথচ তোমাদের অনেকেকৃপণতা করছো। যারা কার্পন্য করে তারা তো কার্পন্য করে নিজেরই প্রতি।আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত। যদি তোমরা বিমুখ হও, তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলাবর্তী করবেন; তারা তোমাদের মত হবে না।”
আসুন, আমরা আমাদের প্রিয় মুহাম্মাদ ﷺ-এর কথাগুলি মাথায় রাখি “যে ব্যক্তি কোন ভাল কাজে সহযোগিতা করল, সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে তা সম্পন্ন করল।” এবং “হে আল্লাহ! তাকে উপযুক্ত প্রতিদান দিন যে মুক্ত হস্তে ব্যয় করে এবং তাকে নিশ্চিহ্ন করে দিন যে কৃপণ।”
১০. তাদেরকে যাকাত প্রদান করাঃ
আমাদের সম্পত্তির ওপর আল্লাহর হক হল যাকাত এবং বর্তমানে যাকাত যাদের সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন তারা হলেন মুজাহিদীন। আর তারাই এটার সবচেয়ে যোগ্য কারণ তারাই সত্যিকার অর্থে আল্লাহর রাস্তায় (আছেন) এবং তারা বিত্তহীন, মুসাফির প্রভৃতি। শাইখ আব্দুল্লাহ্ আয্যাম (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) বলেছেনঃ “একবার ইবন তাইমিয়্যার (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল অর্থ সংকটের ব্যাপারে যা ক্ষুধার্তদের খাওয়ানোর জন্য প্রয়োজন পাশাপাশি জিহাদের জন্যও প্রয়োজন, যার সংকটে জিহাদ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তিনি জবাব দিলেনঃ ‘আমরা জিহাদকে অগ্রাধিকার দেই যদিও ক্ষুধার্তরা মৃত্যু বরণ করে, যেরূপ হয়ে থাকে মানব ঢালের ক্ষেত্রে (যে ক্ষেত্রে কুফ্ফারদেরকে আক্রমণ করতে হবে যদিও তারা মুসলিমদেরকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে এবং এই আক্রমনের ফলে সেই মুসলিমরা হয়ত অনিচ্ছাকৃত ভাবে মারা যেতে পারে) এবং এ বিষয়টি আমাদের ক্ষেত্রে আরো বেশী প্রযোজ্য (কিছু মুসলিমের মৃত্যু সত্ত্বেও বিরতিহীন ভাবে জিহাদ চালিয়ে যাওয়াকে অগ্রাধিকার দেয়া)। এটার কারণ মানব ঢালের ক্ষেত্রে, আমরা তাদেরকে আমাদের কর্ম দ্বারা হত্যা করছি, পক্ষান্তরে (তাদেরকে যাকাত দেয়া না দেয়ার কারণে যদি তারা ক্ষুধায় মারা যায়) তারা আল্লাহর হুকুমে মারা যাচ্ছে।’”
আল কুরতুবী (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) বলেছেনঃ “আলিমগণ এ বিষয়ে একমত যে যাকাত (বাইতুল মালে) প্রদানের পরে মুসলিমদের যদি কোন প্রয়োজন দেখা দেয়, তখন সেই প্রয়োজনে সম্পদ ব্যয় করা তাদের উপর ওয়াজিব (বাধ্যতামূলক)।”
ইমাম মালিক (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) বলেছেনঃ “এটা মানুষের (মুসলিম) উপর বাধ্যতামূলক যে তারা তাদের বন্দীদের মুক্তিপণ আদায় করবে যদিও তাতে তাদের সমস্ত সম্পদ নিঃশেষ হয়ে যায় এবং এই বিষয়ে (সবার) ঐকমত্য রয়েছে।”
শাইখ আব্দুল্লাহ্ আয্যাম (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) বলেছেনঃ “দ্বীনের সংরক্ষণকে (মুসলিমদের) জীবনের সংরক্ষণের উপর প্রাধান্য দেওয়া হয় এবং জীবন সংরক্ষণকে প্রাধান্য দেওয়া হয় সম্পদ সংরক্ষণের উপর। সম্পদশালীদের সম্পদ কখনই মুজাহিদীনদের রক্তের চেয়ে মূল্যবান নয়, সুতরাং সম্পদশালীদের উচিত সম্পদের ব্যাপারে আল্লাহর বিধানের দিকে মনোযোগ দেয়া। যখন জিহাদ এবং মুসলিমদের দ্বীন ও ভূমি সম্ভাব্য ধ্বংসের সম্মুখীন হওয়া থেকে রক্ষার জন্য অর্থের সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন; তখন সম্পদশালীরা ভোগবিলাসে লিপ্ত রয়েছে। যদি সম্পদশালীরা এক দিনের জন্য তাদের ভোগবিলাস থেকে বিরত থাকত এবং অপ্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে তাদের সম্পদ নষ্ট করা থেকে নিজেদের হাতগুলো সংযত রেখে তা মুজাহিদীনদের জন্য পাঠাতো যারা শীতে মারা যাচ্ছেন, যাদের পাগুলো তীব্র ঠান্ডায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে এবং নিজেদেরকে প্রতিপালন করার জন্যে যাদের কোন সহায়-সম্বল নেই অথবা তাঁদের রক্ত ঝরা বন্ধ করার জন্য, আমি বলি, যদি সম্পদশালীরা তাদের একদিন ব্যয়ের অর্থটুকু আফগান মুজাহিদীনদের জন্য ব্যয় করতো, তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় তাদের সম্পদ জিহাদে চূড়ান্ত বিজয়কে তীব্র বেগে ধাবিত করতো।”
মুজাহিদীনদের যাকাত প্রদান করা আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক কারণ এটা আমাদের সম্পদের উপর আল্লাহর হক এবং শাইখ মুহাম্মাদ বিন উছাইমিন (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) এবং শাইখ আব্দুল্লাহ্ বিন জিব্রীন (আল্লাহ্ তাকে হিফাযত করুন) বলেছেনঃ “কিছু কিছু ক্ষেত্রে আগেই যাকাত দিয়ে দেয়া অনুমতি রয়েছে যদি তা মুজাহিদীনদের এবং (জিহাদের ভূমিতে) নির্যাতিত মুসলিমদের জন্য কল্যাণকর হয়।”
এতে কোন সন্দেহ নেই যে যাকাতের শুধুমাত্র এক-চুতর্থাংশ যদি জিহাদ ও মুজাহিদীনদের জন্য ব্যয় করা হত তবে আমরা এক অসামান্য ফলাফল দেখতে পেতাম এবং তা পৃথিবীর সকল মুজাহিদীনদের প্রয়োজন মিটানোর জন্য যথেষ্ট হত। যদি তুমি কিছু মানুষকে বলো ‘রাফিদাহ্’ (ইরাক,ইরান ও অন্যান্য এলাকার শিয়া)-রা তাদের বিশ্বাসের (দ্বীনের) জন্য কি পরিমানে ব্যয় ও উৎসর্গ করে তাহলে তুমি নিম্নের উত্তর দু’টি,পাবে যেঃ
১. তাঁদেরকে সাহায্য করার জন্য রাষ্ট্র রয়েছে এবং
২. তাঁরা তাঁদের নেতাদেরকে ‘খুমুস’ প্রদান করে।
আমি এর উত্তরে বলিঃ আমরা আহলুস-সুন্নাহ -গণ জিহাদের অর্থায়নের জন্য কোন রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বা ‘খুমুসের’ অংশ চাচ্ছিনা । বরং আমরা শুধুমাত্র যাকাতের এক চুতার্থাংশ চাচ্ছি যারমাধ্যমে এক অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হবে ও সমগ্র পৃথিবীর মুজাহিদিনদের জন্য যথেষ্ট হবে। নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুনঃ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসলামিক ইমারাত নির্মানের জন্য আপনার যাকাতের কতটুকু ব্যবহৃত হয়েছে; যখন তালিবানদের স্থাপিত নতুন ইসলামিক রাষ্ট্রের মুসলিমদের সাহায্যের প্রয়োজন ছিল কিন্তু তা সত্ত্বেও সে মুহুর্তে যখন আমীর উল-মু’মিনীন আল মুল্লা মুহাম্মাদ উমার (আল্লাহ্ তাঁকে হিফাজত করুন) গজনীতে মুজাহিদীনদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারলেন, তিনি মুসলিমদের বায়তুল মালের তত্ত্বাবধায়ককে জিজ্ঞেস করলেন যে আমাদের কত অর্থ জমা আছে। তাঁকে জানানো হলো যে মাত্র তিন লক্ষ ($ ৩০০,০০০) ডলার রয়েছে। তখন তিনি তত্ত্বাবধায়কে তা থেকে এক তৃতীয়াংশ চেচনিয়ার মুজাহিদীনদেরকে প্রদান করতে আদেশ দিলেন!!
দেখুন! একটি পূর্ণাঙ্গ মুসলিম রাষ্ট্রের সঞ্চায়িত সম্পদের পরিমান হলো মাত্র তিন লক্ষ ($ ৩০০,০০০) ডলার যেখানে মুসলিমদের যাকাতের অর্থ এখানে ওখানে ব্যয় করা হয়েছে, যেখানে ব্যয় করার কথা সেখানে ব্যয় না করে অপ্রয়োজনীয়ভাবে খরচ করা হয়েছে! পক্ষান্তরে যখন আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক ক্রুসেড (ধর্মযুদ্ধ) শুরু হয়, তখন সেই ইসলামিক রাষ্ট্রে কোষাগারে সংরক্ষিত ছিল মাত্র ($ ৭০,০০০) ডলার!!
হে আল্লাহ্! কতই না আশ্চর্যজনক এই আহলুস সুন্নাহগণ! এমন কি তাদের সম্পত্তির যাকাত সঠিক খাতে ব্যয় করা হচ্ছে না। আল্লাহ্ হলেন সমস্ত সাহায্যের উৎস এবং তাঁর উপরই সমস্ত নির্ভরশীলতা।
আরও পড়ুন
Comment