Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ০১ || কাব বিন মালিক (রাঃ) এর ঘটনা থেকে শিক্ষা || শায়খ আবু আব্দুল্লাহ উসামা রহ. || পর্ব- ০৪

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ০১ || কাব বিন মালিক (রাঃ) এর ঘটনা থেকে শিক্ষা || শায়খ আবু আব্দুল্লাহ উসামা রহ. || পর্ব- ০৪


    দারুল ইরফান কর্তৃক প্রকাশিত
    কা‘ব বিন মালেক রাযি. এর ঘটনা থেকে শিক্ষা
    শায়খ আবু আব্দুল্লাহ উসামা রহ.

    এর থেকে
    পর্ব-৪
    ================================================== ===============================



    প্রকৃত বিপদের চিন্তা করুন!


    নিঃসন্দেহে জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট সর্বশ্রেষ্ঠ আমলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন,
    رَجُلٌ خَرَجَ يُخَاطِرُ بنَفْسِهِ ومَالِهِ، فَلَمْ يَرْجِعْ بشيءٍ.


    ‘ঐ ব্যক্তির আমল সর্বশ্রেষ্ঠ যে জিহাদ ফী সাবীলিল্লায় বের হয়ে নিজের জীবন ও ধন সম্পদকে আশংকায় ফেলে দিয়েছে এবং কোন কিছুই নিয়ে ফিরে আসেনি।‘ [1]

    আজকে আমাদের অধিকাংশ ভাই আমাদেরকে বিপদ-আপদের ভয় দেখায়। কিন্তু জেনে রাখুন! প্রকৃত বিপদ তো কবরে। প্রকৃত ভয় তো জীবনের হিসাবের এবং শেষ বিচার দিনের যা নিশ্চিত প্রতিষ্ঠিত হবে! এমন যেন না হয় যে, দুনিয়ার এই বিপদ-আপদ থেকে বাঁচতে গিয়ে আপনি ঐ দিনের বিপদের মাঝে পড়ে গেলেন। আপনার জীবন আয়ু শেষ হয়ে গেল। অথবা অহেতুক কথাবার্তায় আপনার মূল্যবান সময় ফুরিয়ে গেল। দ্বীনের সাহায্য করা আপনার ভাগ্যে জুটল না।



    মুনাফিকরাই পিছনে রয়ে গিয়ে ছিল

    আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্যাবলীর নিকটবর্তী হতে সর্তক করেছেন। মুনাফিকদের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল, আল্লাহর দ্বীনের সাহায্য না করে পিছনে বসে থাকা। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

    وَجَاءَ الْمُعَذِّرُونَ مِنَ الْأَعْرَابِ لِيُؤْذَنَ لَهُمْ وَقَعَدَ الَّذِينَ كَذَبُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ


    “আর ছলনাকারী বেদুঈন লোকেরা এলো, যাতে তাদের অব্যাহতি লাভ হতে পারে এবং নিবৃত্ত থাকতে পারে তারা যারা আল্লাহ ও রাসূলের সাথে মিথ্যা বলে ছিল। তাদের উপর শীঘ্রই আসবে বেদনাদায়ক আযাব যারা কাফের।“ [2]

    আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর এবং তার রাসূলের সাহায্য না করার অশুভ মনোভাব থেকে রক্ষা করুন। একটু ঐ আসলাফদের দিকে লক্ষ্য করুন! হযরত কা‘ব রাযি. বলেন, ‘বাহিনী চলে যাওয়ার পর যখন আমি শহরে বের হতাম, তখন আমাকে সব চেয়ে বেশী এই বিষয়টি পেরেশান করত যে, শহরের অলিগলিতে ‘নিফাকে’ নিমজ্জিত মুনাফিক এবং অপারগ লোক ছাড়া অন্য কাউকে দেখতাম না।’

    এই হল আমাদের আসলাফগণ! যখন সংবাদ আসল যে, রোমানরা মুসলমানদের উপর আক্রমণের ব্যাপারে ভাবছে। তখনো ইসলামী ভূখণ্ডে প্রবেশ করেনি। শুধু আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবর এসেছে। তখন আমাদের নেতা ও পথপ্রদর্শক মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোকদের মাঝে ঘোষণা দিলেন,
    يا خيلَ اللهِ اركَبي


    হে আল্লাহর পথের অশ্বারোহীগণ! অভিযানে বের হয়ে পড়।

    তখন মুনাফিক এবং অপারগ ব্যক্তি ছাড়া কেউ বসে থাকেনি। আল্লাহর বান্দাগণ! যদি তোমরা নাজাতের প্রত্যাশী হও তাহলে ঐ মহান ব্যক্তিদের অনুসরণ করো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর সাথীদের অনুসরণ করো! আল্লাহ তাআলার বাণী,

    مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ


    ‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন আল্লাহর রাসূল, এবং যারা তাঁর সাথী তাঁরা কাফিরদের ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর এবং পরস্পরের প্রতি মেহেরবান, কোমল।’ [3]

    পূর্ণ অনুসরণকেই অনুসরণ বলে, চাই সেই বিষয় আপনার পছন্দ হোক কিংবা অপছন্দ। যেমন উবাদা বিন সামিত রাযি. এর হাদিসে বর্ণিত আছে,

    بايَعْنا رسولَ اللهِ صلَّى اللهُ عليهِ وسلَّم على السمعِ والطاعةِ، في اليُسْرِ والعُسْرِ، والمَنْشَطِ والمَكْرَهِ


    আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এ মর্মে বাইআত করলাম যে, আমরা কথা শুনবো এবং আনুগত্য করবো চাই সচ্ছল অবস্থা হোক কিংবা অসচ্ছল অবস্থা এবং চাই (সেই বিষয়) আমাদের পছন্দ হোক কিংবা অপছন্দ। [4]

    অতএব, লোকেরা জিহাদ অপছন্দ করলেও আপনার তা আদায় করা কর্তব্য। যেহেতু আপনার উপরও সে জিম্মাদারি আছে।



    জিহাদ পরিত্যাগকারীর সমালোচনা করা বৈধ

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন তাবুক পৌঁছলেন তখন বললেন,

    ما فعل كعب
    কা‘ব বিন মালিকের কি অবস্থা?


    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন তার কথা উল্লেখ করলেন, তখন বনু সালামা গোত্রের একজন সাহাবী রাযি. বললেন, ‘তাকে তাঁর দামী কাপড় এবং আত্মতুষ্টি বিরত রেখেছে।’ সেই সাহাবী রাযি. হযরত কা‘ব বিন মালিক রাযি. এর নিন্দা করলেন। কেননা তিনি এই নাযুক মুহূর্তে দ্বীনের সাহায্য থেকে পিছনে রয়ে গেছেন। উক্ত সাহাবীর দৃষ্টিতে হযরত কা‘ব বিন মালিক রাযি. এর থেকে এমন ত্রুটি প্রকাশ পেয়েছে যা কোনভাবেই ইমানদারদের জন্য সঙ্গত নয়। তখন হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাযি. হযরত কা‘ব বিন মালিক রাযি. এর আত্মপক্ষ অবলম্বন করে বললেন, ‘তুমি অত্যন্ত মন্দ কথা বলেছ, আল্লাহর কসম! আমরা তাঁর মাঝে শুধু কল্যাণকর দিকই দেখেছি।’

    হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বনু সালামা গোত্রের সাহাবীর কথার পর্যালোচনা করে বলেন, ‘আমি বলি যে, (এই কথা এ বিষয়ের দলীল যে) যে ব্যক্তি জিহাদ থেকে পিছনে বসে থাকবে তার সমালোচনা করা বৈধ হয়ে যায়। কেননা, দ্বীনের সাহায্য একটি মহান দায়িত্ব।’

    আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করি, আমাদের প্রাণ এ অবস্থায় বের হোক যে, আমরা দ্বীনের সাহায্যের জিম্মাদারি আদায় করার কাজে রত এবং আমরা আমাদের মালিকের সাথে এ অবস্থায় মিলিত হই যে, তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট!

    [1] বুখারী

    [2] সূরা তাওবা: ৯০

    [3] সূরা আল ফাতহ: ২৯

    [4] মুসলিম




    আরও পড়ুন
    ৩য় পর্ব -------------------------------------------------------------------------- ৫ম পর্ব


    Last edited by tahsin muhammad; 07-26-2023, 09:39 PM.

  • #2
    জাযাকুমুল্লাহু খাইরান। আল্লাহ আপনাদের ও আমাদের দ্বীনের জন্য কবুল করুন আমিন।

    Comment


    • #3
      ‘ঐ ব্যক্তির আমল সর্বশ্রেষ্ঠ, যে জিহাদ ফী সাবীলিল্লায় বের হয়ে নিজের জীবন ও ধন সম্পদকে আশংকায় ফেলে দিয়েছে এবং কোন কিছুই নিয়ে ফিরে আসেনি।(বুখারী)

      Comment


      • #4
        হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বনু সালামা গোত্রের সাহাবীর কথার পর্যালোচনা করে বলেন, ‘আমি বলি যে, (এই কথা এ বিষয়ের দলীল যে) যে ব্যক্তি জিহাদ থেকে পিছনে বসে থাকবে তার সমালোচনা করা বৈধ হয়ে যায়। কেননা, দ্বীনের সাহায্য একটি মহান দায়িত্ব।’
        আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করি, আমাদের প্রাণ এ অবস্থায় বের হোক যে, আমরা দ্বীনের সাহায্যের জিম্মাদারি আদায় করার কাজে রত এবং আমরা আমাদের মালিকের সাথে এ অবস্থায় মিলিত হই যে, তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট!
        আল্লাহ তায়ালা কবুল করুন। আমিন

        Comment


        • #5
          আজকে আমাদের অধিকাংশ ভাই আমাদেরকে বিপদ-আপদের ভয় দেখায়। কিন্তু জেনে রাখুন! প্রকৃত বিপদ তো কবরে। প্রকৃত ভয় তো জীবনের হিসাবের এবং শেষ বিচার দিনের যা নিশ্চিত প্রতিষ্ঠিত হবে! এমন যেন না হয় যে, দুনিয়ার এই বিপদ-আপদ থেকে বাঁচতে গিয়ে আপনি ঐ দিনের বিপদের মাঝে পড়ে গেলেন।
          খুবই শিক্ষণীয় একটি কথা। এই দুনিয়ায় ভালো থাকতে গিয়ে আমরা ওই দুনিয়া হারিয়ে ফেলছি। অথচ আল্লাহ শাস্তি প্রদানে অতি কঠোর।
          হে আল্লাহর পথের সৈনিক! ধৈর্যধারণ করুন ও হকের উপর অবিচল থাকুন। নিশ্চয়ই আল্লাহর ওয়াদা সত্য।

          Comment


          • #6
            Ameen Yaa Rabbe kareem
            Abdullah

            Comment


            • #7
              আল্লাহ আপনি আমাদের মুজাহিদ হিসেবে কবুল করে নিন আমিন।

              Comment


              • #8
                আল্লাহ তাআলার বাণী,
                مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ

                ‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন আল্লাহর রাসূল, এবং যারা তাঁর সাথী তাঁরা কাফিরদের ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর এবং পরস্পরের প্রতি মেহেরবান, কোমল।’
                আমাদের চরিত্রে অনেক সময় এমন দেখা যায় যে, আমরা অনেক সময় মুমিন ভাইদের সাথে এমন আচরণ করি যা হয়ত কোন কাফেরের সাথেও করতাম না। আমরা যেন এব্যাপারে খুব খেয়াল রাখি ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাকে ও সকল ভাইকে প্রত্যেক মুমিনের প্রতি কোমলহৃদয় হওয়ার তাওফিক দেন। আমীন।

                Comment


                • #9
                  আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করি, আমাদের প্রাণ এ অবস্থায় বের হোক যে, আমরা দ্বীনের সাহায্যের জিম্মাদারি আদায় করার কাজে রত এবং আমরা আমাদের মালিকের সাথে এ অবস্থায় মিলিত হই যে, তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট!
                  আমীন ইয়া রব্বাল 'আলামিন। এই দুয়া যেন আমার প্রতিদিনের সাথি হয় ইনশাআল্লাহ।

                  Comment

                  Working...
                  X