Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৩১ || “ফিতনার যুগে মুজাহিদদের প্রতি নসিহত” ।। ড. শায়খ সামী আল-উরাইদী হাফিযাহুল্লাহ || ৯ম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৩১ || “ফিতনার যুগে মুজাহিদদের প্রতি নসিহত” ।। ড. শায়খ সামী আল-উরাইদী হাফিযাহুল্লাহ || ৯ম পর্ব

    আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত

    ফিতনার যুগে
    মুজাহিদদের প্রতি নসিহত ।।
    ড. শায়খ সামী আল-উরাইদী হাফিযাহুল্লাহ ||


    এর থেকে ৯ম পর্ব


    রাসূলের অনুসরণ, বিদআত ও কুমন্ত্রণা থেকে সংবরণ


    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ অমান্য করা, তাঁর অনুসরণ না করা ফিতনার বড় একটি কারণ। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেমনটি তাঁর মহাগ্রন্থে ইরশাদ করেছেন,

    ‘যারা তাঁর নির্দেশ অমান্য করে তাদেরকে যেন সতর্ক করে দেয় যে, তাদেরকে ফিতনা গ্রাস করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে আক্রান্ত করবে।’

    অপরদিকে হিদায়েত ও জান্নাতে অনুপ্রবেশকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্যের সাথে জুড়ে দিয়েছেন।

    قُلْ أَطِيعُوا اللَّـهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ ۖفَإِن تَوَلَّوْا فَإِنَّمَا عَلَيْهِ مَا حُمِّلَ وَعَلَيْكُم مَّا حُمِّلْتُمْ ۖوَإِن تُطِيعُوهُ تَهْتَدُوا ۚوَمَا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ﴿٥٤


    ‘বলুন, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রাসূলের অনুসরণ করযদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে তাঁর উপর ন্যস্ত দায়িত্বের জন্যে সে দায়ী এবং তোমাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্বের জন্যে তোমরা দায়ী। তোমরা যদি তাঁর আনুগত্য কর, তবে সৎ পথ পাবে। রাসূলের দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টরূপে পৌঁছে দেয়া।’ -সূরা নূর 24:৫৪)

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

    مَنْ أَطَاعَنِي فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ عَصَى اللهَ وَمَنْ أَطَاعَ أَمِيرِي فَقَدْ أَطَاعَنِي وَمَنْ عَصَى أَمِيرِي فَقَدْ عَصَانِي.


    অর্থ: যে আমার আনুগত্য করল, সে আল্লাহ্‌রই আনুগত্য করল। আর যে আমার নাফরমানী করল, সে আল্লাহ্‌রই নাফরমানী করল। এবং যে আমার (নির্বাচিত) আমীরের আনুগত্য করল, সে আমারই আনুগত্য করল। আর যে আমার (নির্বাচিত) আমীরের নাফরমানী করল সে আমারই নাফরমানী করল। [বুখারী-৭১৩৭; মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৩৫, আহমাদ ৯৩৯৬]

    ইমাম দারিমী উমর ইবনে ইয়াহয়া এর সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে তার পিতা থেকে বলতে শুনেছি, ‘আমরা ফজর সালাতের পূর্বে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এর দরজার কাছে এসে বসে থাকতাম; যখন তিনি ঘর থেকে বের হতেন আমরা একসাথে মসজিদে যেতাম। আবু মুসা আশআরী রা. এসে বললেন, আবু আব্দুর রহমান কি তোমাদের কাছে এসেছে? যখন আমরা না বললাম তখন তিনি তাঁর আসার আগ পর্যন্ত আমাদের সাথে বসে রইলেন। তিনি বের হলে আমরা সবাই দাঁড়িয়ে গেলাম। আবু মুসা আশআরী বললেন, হে আবু আব্দুর রহমান! আমি কিছুক্ষণ পূর্বে মসজিদে একটি বিষয় লক্ষ্য করতে পেলাম যা আমার অপছন্দ। তবে বিষয়টি আলহামদুলিল্লাহ! আমার কাছে কল্যাণজনক মনে হয়েছে। তিনি বললেন, বিষয়টি কী? আবু মুসা বললেন, কিছুক্ষণ থাকলে আপনিই দেখতে পাবেন। আমি দেখেছি, মসজিদে কয়েক দল লোক গোল হয়ে নামাজের অপেক্ষা করছে। তাদের হাতে রয়েছে পাথর। প্রত্যেক দলে আছে একজন করে লোক, সে বলছে, তোমরা একশ বার আল্লাহু আকবার বল, তারা একশ বার পাঠ করলতোমরা একশ বার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ কর, তারা একশ বার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করলঅতঃপর বলল, তোমরা একশ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ কর, তার একশ বার পাঠ করলআবু আব্দুর রহমান জিজ্ঞেস করলেন, তখন তুমি তাদেরকে কী বললে? আপনার মতামত ও সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আমি কিছু বলিনি। তিনি বললেন, আমি কি তাদেরকে গুনাহ পরিত্যাগ করার নির্দেশ দেয়নি, তারা যেন তাদের গোনাহের হিসাব কষে নেয় এবং আমি তাদের দায়ভার নিচ্ছি যে, তাদের নেক আমলকে কোনো কিছু বরবাদ করতে পারবে না? তিনি সামনে চলতে লাগলেন। আমরাও তাঁর সাথে চললাম। তিনি তাদের এক দলের কাছে এসে বললেন, তোমরা এসব কী করছ? তারা বলল, হে আবু আব্দুল্লাহ! আমরা পাথর দিয়ে আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ গণনা করছি। তিনি বললেন, তোমরা বরং তোমাদের গোনাহের হিসাব কষো, আমি তোমাদের দায়িত্ব নিচ্ছি, তোমাদের নেকীসমূহকে কোনো কিছু বরবাদ করতে পারবে না। তিনি লোকদের উদ্দেশ্য করে বললেন, হে মুহাম্মদের উম্মতগণ! কিসে তোমাদেরকে ধ্বংসের দিকে তাড়া করল? অথচ তোমাদের নবীর সাহাবীরা ভরপুর, তাঁর পোশাক এখনো শুকায়নি, তাঁর পাত্রগুলো এখনো ভাঙ্গেনি! সে সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ! তোমরা যে ধর্মের উপর রয়েছে তা হয়ত মুহাম্মদের ধর্মের চেয়ে শ্রেষ্ঠ নতুবা তোমরা গুমরাহীর দার উন্মোচনকারী। তারা বলল, আল্লাহর শপথ! হে আবু আব্দুর রহমান, আমরা তো কল্যাণেরই ইচ্ছা করেছি। তিনি বললেন, অনেক কল্যাণকামী এমন আছে যে সঠিকতায় পৌঁছতে পারে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এমন কিছু জাতি আছে যারা কুরআন পাঠ করে; কিন্তু কুরআন তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করে না। আল্লাহই ভালো জানেন, হয়ত তাদের অধিকাংশ তোমাদের মধ্য থেকে হবে। এরপর তিনি তাদের থেকে চলে গেলেন। আমর ইবনে সালমা বলেন, পরবর্তীতে তাদের অধিকাংশকে আমরা নাহরাওয়ানের দিন খারেজীদের সাথে দেখেছি।’ -দারিমী: ২১০

    যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনিত বিষয়ের বিপরীত হবে তা-ই ফিতনা। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

    لَّا تَجْعَلُوا دُعَاءَ الرَّسُولِ بَيْنَكُمْ كَدُعَاءِ بَعْضِكُم بَعْضًا ۚقَدْ يَعْلَمُ اللَّـهُ الَّذِينَ يَتَسَلَّلُونَ مِنكُمْ لِوَاذًا ۚفَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴿٦٣



    ‘রাসূলের আহ্বানকে তোমরা তোমাদের একে অপরের আহ্বানের মত গণ্য কর না। আল্লাহ তাদের সম্পর্কে জানেন, যারা তোমাদের মধ্যে চুপিসারে সরে পড়ে। অতএব তারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদেরকে স্পর্শ করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে’ -সূরা নূর 24:৬৩

    ইলম অন্বেষণ ও রব্বানী আহলে ইলমের দিকে প্রত্যাগমন


    মূর্খতা ও ইলম ছাড়া অন্য কোনো সমস্যা-সমাধানে আত্মনিয়োগ করা ফিতনা ও ভ্রষ্টতায় পতিত হওয়ার বড় একটি কারণ। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

    وَإِذَا جَاءَهُمْ أَمْرٌ مِّنَ الْأَمْنِ أَوِ الْخَوْفِ أَذَاعُوا بِهِ ۖوَلَوْ رَدُّوهُ إِلَى الرَّسُولِ وَإِلَىٰ أُولِي الْأَمْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِينَ يَسْتَنبِطُونَهُ مِنْهُمْ ۗوَلَوْلَا فَضْلُ اللَّـهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ لَاتَّبَعْتُمُ الشَّيْطَانَ إِلَّا قَلِيلًا﴿٨٣


    ‘আর যখন তাদের কাছে পৌঁছে কোনো সংবাদ শান্তি কিংবা ভয়ের, তখন তারা সেগুলোকে রটিয়ে দেয়। আর যদি সেগুলো পৌঁছে দিত রাসূল পর্যন্ত কিংবা তাদের শাসকদের পর্যন্ত, তখন অনুসন্ধান করে দেখা যেতো সেসব বিষয়, যা তাতে রয়েছে অনুসন্ধান করার মত। বস্তুত আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা যদি তোমাদের উপর বিদ্যমান না থাকত তবে তোমাদের অল্প কিছু লোক ব্যতীত সবাই শয়তানের অনুসরণ করা শুরু করত!’ -সূরা নিসা 4:৮৩

    আল্লাহ তা’আলা বলেন,
    وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ إِلاَّ رِجَالاً نُّوحِي إِلَيْهِمْ فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ


    আপনার পূর্বেও আমি প্রত্যাদেশসহ মানবকেই তাদের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম অতএব জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে; (সূরা আন-নাহল ১৬;৪৩)

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

    إِنَّ اللَّهَ لَا يَقْبِضُ الْعِلْمَ انْتِزَاعًا يَنْتَزِعُهُ مِنَ الْعِبَادِ وَلَكِنْ يَقْبِضُ الْعِلْمَ بِقَبْضِ الْعُلَمَاءِ حَتَّى إِذَا لَمْ يُبْقِ عَالِمًا اتَّخَذَ النَّاسُ رُءُوسًا جُهَّالًا فَسُئِلُوا فَأَفْتَوْا بِغَيْرِ عِلْمٍ فضلوا وأضلوا


    ‘আল্লাহ তা’আলা বান্দাদের থেকে ইলমকে একেবারে উঠিয়ে নিবেন না। তবে উলামায়ে কেরামকে উঠিয়ে নেয়ার দ্বারা ইলমকে উঠিয়ে নিবেন। যখন একজন আলেমও জীবিত থাকবে না, তখন মানুষ কিছু মূর্খ লোককে নেতা হিসেবে গ্রহণ করবে। তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে, তারা সমাধান দিবে। এতে নিজেরাও ভ্রষ্ট হবে অন্যদেরকেও ভ্রষ্ট করবে।’ -বুখারী: ১০০

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

    يَتَقَارَبُ الزَّمَانُ وَيُقْبَضُ الْعِلْمُ وَتَظْهَرُ الْفِتَنُ وَيُلْقَى الشُّحُّ وَيَكْثُرُ الْهَرْجُ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا وَمَا الْهَرْجُ قَالَ ‏"‏ الْقَتْلُ


    ‘সময় সংকীর্ণ হয়ে যাবে, ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে, ফিতনা দেখা দিবে, কার্পণ্য ও ‘হারজ’ বেড়ে যাবে।’ লোকেরা জিজ্ঞেস করল, ‘হারজ’ কী জিনিস? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘হত্যা’- (মুসলিম: ১৫৭)

    সুতরাং জ্ঞানী হলো সে ব্যক্তি, যে শরঈ কোনো বিষয়ে অগ্রসর হওয়ার আগে বিজ্ঞজনের কাছে জিজ্ঞেস করে, পর্যালোচনা ও অধ্যয়ন করে। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
    وَمَا أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي إِلَيْهِمْ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ


    ‘আপনার পূর্বে অল্প কিছু লোককেই পাঠিয়েছি, যাদের কাছে আমি ওহী প্রেরণ করতাম। সুতরাং তোমরা আহলে ইলমকে জিজ্ঞেস কর যদি তোমরা না জানো।’(সুরা আম্বিয়া-২১:৭)

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
    يرث هذا العلم من كل خلف عدوله ينفون عنه تأويل الجاهلين وانتحال المبطلين وتحريف الغالين" رواه البيهقي وصححه الألباني


    ‘এ ইলমের উত্তরাধিকার লাভ করবে পরবর্তী জমানার নিষ্ঠাবান লোকেরা। তাঁরা ইলম থেকে জাহেলদের অপব্যাখ্যা, বাতিল লোকদের বানোয়াট কথা, জালিমদের বিকৃতিকে দূর করবে।’ –(মিশকাত, বাইহাক্বী)

    জাবের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
    خَرَجْنَا فِي سَفَرٍ فَأَصَابَ رَجُلاً مِنَّا حَجَرٌ فَشَجَّهُ فِي رَأْسِهِ ثُمَّ احْتَلَمَ فَسَأَلَ أَصْحَابَهُ فَقَالَ هَلْ تَجِدُونَ لِي رُخْصَةً فِي التَّيَمُّمِ فَقَالُوا مَا نَجِدُ لَكَ رُخْصَةً وَأَنْتَ تَقْدِرُ عَلَى الْمَاءِ فَاغْتَسَلَ فَمَاتَ فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أُخْبِرَ بِذَلِكَ فَقَالَ ‏"‏ قَتَلُوهُ قَتَلَهُمُ اللَّهُ أَلاَّ سَأَلُوا إِذْ لَمْ يَعْلَمُوا فَإِنَّمَا شِفَاءُ الْعِيِّ السُّؤَالُ


    আমরা এক সফরে বের হলাম। আমাদের একজন পাথর দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হলে তার মাথা বেধে দেয়া হলএমতাবস্থায় তার স্বপ্নদোষ হয়ে গেলতার সাথী-সঙ্গীদের কাছে জিজ্ঞেস করল, এ অবস্থায় আমার জন্য কি তায়াম্মুম করার সুযোগ আছে? তারা বলল, না; তোমার জন্য কোনো সুযোগ দেখছি না, তুমি তো পানি ব্যবহারে সক্ষম। শেষপর্যন্ত সে গোসল করল এবং মারা গেলযখন আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলাম, তিনি ঘটনা জানতে পেরে বললেন, ‘তারা লোকটিকে হত্যা করেছে, আল্লাহ তাদেরকে হত্যা করুন! যেহেতু তারা জানে না তাহলে কেন জিজ্ঞেস করে নিলো না? নিশ্চয় না জানার ঔষধ হচ্ছে জিজ্ঞাসা করা।’ –(আবু দাউদ-৩৩৬)

    সালাফে সালেহীনের নীতি ছিল, যখন কোনো নতুন বিষয় বা মাসআলায় সন্দেহ দেখা দিত তখন নিজে গবেষণা করার আগে জিজ্ঞেস করে নিতেন। হুযাইফা ইবন ইয়ামান রা. বলেন,
    كَانَ النَّاسُ يَسْأَلُونَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْخَيْرِ وَكُنْتُ أَسْأَلُهُ عَنْ الشَّرِّ مَخَافَةَ أَنْ يُدْرِكَنِي فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا كُنَّا فِي جَاهِلِيَّةٍ وَشَرٍّ فَجَاءَنَا اللهُ بِهَذَا الْخَيْرِ فَهَلْ بَعْدَ هَذَا الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ قُلْتُ وَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الشَّرِّ مِنْ خَيْرٍ قَالَ نَعَمْ وَفِيهِ دَخَنٌ قُلْتُ وَمَا دَخَنُهُ قَالَ قَوْمٌ يَهْدُونَ بِغَيْرِ هَدْيِي تَعْرِفُ مِنْهُمْ وَتُنْكِرُ قُلْتُ فَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ دُعَاةٌ عَلَى أَبْوَابِ جَهَنَّمَ مَنْ أَجَابَهُمْ إِلَيْهَا قَذَفُوهُ فِيهَا قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صِفْهُمْ لَنَا قَالَ هُمْ مِنْ جِلْدَتِنَا وَيَتَكَلَّمُونَ بِأَلْسِنَتِنَا قُلْتُ فَمَا تَأْمُرُنِي إِنْ أَدْرَكَنِي ذَلِكَ قَالَ تَلْزَمُ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِينَ وَإِمَامَهُمْ قُلْتُ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ جَمَاعَةٌ وَلاَ إِمَامٌ قَالَ فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا وَلَوْ أَنْ تَعَضَّ بِأَصْلِ شَجَرَةٍ حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ وَأَنْتَ عَلَى ذَلِكَ.


    ‘লোকেরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে কল্যাণের বিষয়াবলী জিজ্ঞেস করতকিন্তু আমি তাঁকে অকল্যাণের বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতাম এ ভয়ে যে, অকল্যাণ আমাকে পেয়ে না বসে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তো জাহিলিয়্যাত ও অকল্যাণের মাঝে ছিলাম। এরপর আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে এ কল্যাণের মধ্যে শামিল করলেন। এ কল্যাণের পর আবারও কি অকল্যাণ আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তবে এর মধ্যে কিছুটা ধূম্রজাল থাকবে। আমি প্রশ্ন করলাম, এর ধূম্রজাল কিরূপ? তিনি বললেন, এক জামাআত আমার তরীকা ছেড়ে অন্য পথ ধরবে। তাদের থেকে ভালো কাজও দেখবে এবং মন্দ কাজও দেখবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সে কল্যাণের পর কি আবার অকল্যাণ আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী এক সম্প্রদায় হবে। যে ব্যক্তি তাদের আহ্বানে সাড়া দেবে, তাকে তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করে ছাড়বে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তাদের কিছু স্বভাবের কথা আমাদের বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, তারা আমাদের লোকই এবং আমাদের ভাষায়ই কথা বলবে। আমি বললাম, যদি এমন অবস্থা আমাকে পেয়ে বসে, তাহলে কী করতে হুকুম দেন? তিনি বললেন, মুসলিমদের জামাআত ও ইমামকে আঁকড়ে থাকবে। আমি বললাম, যদি তখন মুসলিমদের কোনো জামাআত ও ইমাম না থাকে? তিনি বললেন, তখন দলমত ত্যাগ করে সম্ভব হলে কোনো গাছের শিকড় কামড়িয়ে পড়ে থাকবে, যতক্ষণ না সে অবস্থায় তোমার মৃত্যু উপস্থিত হয়।’ -বুখারী: ৭০৮৪

    ইয়াহইয়া ইবনে ইয়া’মুর থেকে ইবনে বুরাইদাহ এর বর্ণনা।
    عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، قَالَ كَانَ أَوَّلَ مَنْ قَالَ فِي الْقَدَرِ بِالْبَصْرَةِ مَعْبَدٌ الْجُهَنِيُّ فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَحُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِمْيَرِيُّ حَاجَّيْنِ أَوْ مُعْتَمِرَيْنِ فَقُلْنَا لَوْ لَقِينَا أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْنَاهُ عَمَّا يَقُولُ هَؤُلاَءِ فِي الْقَدَرِ فَوُفِّقَ لَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ دَاخِلاً الْمَسْجِدَ فَاكْتَنَفْتُهُ أَنَا وَصَاحِبِي أَحَدُنَا عَنْ يَمِينِهِ وَالآخَرُ عَنْ شِمَالِهِ فَظَنَنْتُ أَنَّ صَاحِبِي سَيَكِلُ الْكَلاَمَ إِلَىَّ فَقُلْتُ أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنَّهُ قَدْ ظَهَرَ قِبَلَنَا نَاسٌ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ وَيَتَقَفَّرُونَ الْعِلْمَ - وَذَكَرَ مِنْ شَأْنِهِمْ - وَأَنَّهُمْ يَزْعُمُونَ أَنْ لاَ قَدَرَ وَأَنَّ الأَمْرَ أُنُفٌ ‏.‏ قَالَ فَإِذَا لَقِيتَ أُولَئِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنِّي بَرِيءٌ مِنْهُمْ وَأَنَّهُمْ بُرَآءُ مِنِّي وَالَّذِي يَحْلِفُ بِهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ لَوْ أَنَّ لأَحَدِهِمْ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا فَأَنْفَقَهُ مَا قَبِلَ اللَّهُ مِنْهُ حَتَّى يُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ


    ইয়াহইয়া ইবনে ইয়া’মুর থেকে ইবনে বুরাইদাহ বর্ণনা করেনতিনি বলেন, বসরায় সর্বপ্রথম যে তাকদীর নিয়ে কথা বলে, সে হচ্ছে মা’বাদ আল-জুহানী। আমি এবং উমাইদ ইবনে আব্দুর রহমান হিময়ারী হজ্ব বা উমরায় গমন করেছিলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, যদি রাসূলের কোনো সাহাবীকে পাই তাহলে এসব লোকেরা তাকদীর সম্পর্কে যা বলাবলি করছে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবতো মসজিদের ভিতর আমরা আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ইবনুল খত্তাব রা.-কে পেয়ে গেলাম। আমি এবং আমার সঙ্গী তাকে ঘিরে ধরলাম। আমাদের একজন তাঁর ডানে অপর জন বামেআমি ধারণা করলাম, আমার সঙ্গী কথা বলার দায়িত্ব আমার উপর ন্যস্ত করবে। আমি বললাম, হে আবু আব্দুর রহমান! আমাদের এলাকায় কিছু মানুষের আত্মপ্রকাশ হয়েছে, যারা কুরআন পড়ে, ইলম অন্বেষণ করে। (এভাবে তাদের পরিচয় তুলে ধরলেন)। তাদের ধারণা, তাকদীর বলতে কিছু নেই। যে কোনো বিষয় যখন-তখন হতে পারে। তিনি বললেন, যখন তোমাদের সাথে তাদের সাক্ষাত হয় তখন বলে দেবে, আমার উপর তাদের কোনো দায়িত্ব নেই, তাদের উপরও আমার কোনো দায়িত্ব নেই। সে সত্তার শপথ! যার নামে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর শপথ করে থাকে, তাদের কেউ যদি উহুদ পরিমাণ স্বর্ণ দান করে, তাহলে আল্লাহ তা’আলা তাদের দান কবুল করবেন না, যতক্ষণ না তারা তাকদীরের উপর ঈমান আনে। -মুসলিম

    ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন, ‘আল্লাহ ভালো জানেন, আমি শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. এর চেয়ে সুখী জীবন-যাপনকারী কাউকে দেখিনিসংকীর্ণ জীবনের অধিকারী, যেখানে বিলাসিতা নেই, স্বাচ্ছন্দ্য নেই; সেইসাথে রয়েছে বন্দি জীবন, ধমকি ও কষ্টের জীবন; তা সত্ত্বেও তিনি মানুষের মাঝে উত্তম জীবন-যাপনকারী; খোলা মন, মজবুত হৃদয় ও সবচেয়ে বেশি আনন্দের অধিকারী। তার চেহারায় স্বাচ্ছন্দ্যের ভাব সর্বদা প্রস্ফুটিত। আমাদের যখন ভয় বেড়ে যেতো, ধ্যান-ধারণার অবনতি ঘটত, জমিন সংকীর্ণ হয়ে আসত, তখন আমরা তাঁর কাছে আসতাম, তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতাম, তাঁর কথা শুনতাম; এতেই আমাদের সব সমাধান হয়ে যেতো, আমারা শক্তি, দৃঢ়তা ও প্রশান্তি লাভ করতাম।’ -আল-ওয়াবিলুস সায়্যিব: ৬৭





    আরও পড়ুন​
    ৮ম পর্ব ---------------------------------------------------------------------------------------------------- ১০ম পর্ব

    Last edited by tahsin muhammad; 15 hours ago.

  • #2
    মাশাআল্লাহ, অনেক উপকারী নসীহত। জাযাকাল্লাহ ভাই tahsin muhammad
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ, অনেক উপকারী নসীহত। জাযাকাল্লাহ ভাই tahsin muhammad
      আমীন ওয়া ইয়্যাকা মুহতারাম ভাই!

      Comment

      Working...
      X