Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৩২ || “ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে একবিংশ শতাব্দীর গণতন্ত্র (সূরা আসরের আলোকে) ” ।। মাওলানা আসেম উমর হাফিজাহুল্লাহ || ৬ষ্ঠ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৩২ || “ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে একবিংশ শতাব্দীর গণতন্ত্র (সূরা আসরের আলোকে) ” ।। মাওলানা আসেম উমর হাফিজাহুল্লাহ || ৬ষ্ঠ পর্ব

    আন নাসর মিডিয়াপরিবেশিত

    ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে
    একবিংশ শতাব্দীর গণতন্ত্র’’

    (সূরা আসরের আলোকে)

    ।।মাওলানা আসেম উমর হাফিজাহুল্লাহ ||
    এর থেকে৬ষ্ঠ পর্ব



    চিন্তার খোরাক
    গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কি পার্লামেন্টকে এ অধিকার দেওয়া হয়নি? গণতন্ত্রের প্রবক্তারা কি এ কথা দাবি করে না?- আইন প্রণয়নের ক্ষমতা তো পার্লামেন্টের হাতে। তাছাড়া গণতান্ত্রিক সরকারগুলোতে বাস্তবেও কি এমন হচ্ছে না যে, সরকার যেটি ইচ্ছা হালাল করছে, যেটি ইচ্ছা নিষিদ্ধ করছে? তার আনুগত্য করা অবশ্যক করা হচ্ছে, তার বিরোধীদেরকে রাষ্ট্রের চোখে অপরাধী এবং অস্বীকারকারীদেরকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলা হচ্ছে??

    পূর্বে হোক বা পশ্চিমে, এটিই গণতন্ত্রের বাস্তবতা। সফলতার গ্যারান্টিদাতা(?) আসল গণতন্ত্রের প্রাণ এটিই। কয়েক ক্লাস পড়েছে আর এই গণতন্ত্রের সংজ্ঞা জানে না এমন কেউ কি আছে? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার আসল প্রাণ হলো, আইন প্রণয়নের অধিকার নিরঙ্কুশভাবে পার্লামেন্টকে সোপর্দ করা।
    এখন যদি কেউ বলে, পার্লামেন্ট তিয়াত্তরের আইন মেনেই চলে, যেখানে আইন প্রণয়নের সর্বোচ্চ ক্ষমতা আল্লাহর জন্য স্বীকার করা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, এই যে আইন প্রণয়নের সর্বোচ্চ ক্ষমতা আল্লাহর জন্য- এটি কে মঞ্জুর করেছে? নিশ্চয় সেই পার্লামেন্টই। পৃথিবীতে কি এমন কোনো গণতন্ত্র আছে, যেখানে পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত ছাড়া এ ক্ষমতাটি আল্লাহকে দেওয়া হয়েছে? যারাই গণতন্ত্রের সংজ্ঞা ও এর মূল প্রতিপাদ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, তারা এ প্রশ্নের জবাব ভালোভাবেই জানে। এ ব্যবস্থা যদি এতই ইসলামী হয়, এসব যদি এতই ইসলামী হয়; তো রজম তথা প্রস্তর নিক্ষেপের শরীয়াহ আইনকে আইনে রূপ দেওয়ার জন্য পার্লামেন্টের মঞ্জুরির বাধ্যবাধকতা কেন রাখা হয়েছে? আর সুদকে অবৈধ (হারাম) সাব্যস্ত করার জন্য পার্লামেন্ট নয় শুধু, বরং দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোট কেন লাগবে?

    পরিষ্কার কথা হলো, এ ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ আইনপ্রণেতা কে? যিনি মঞ্জুর করেন এবং যাকে মঞ্জুরির যোগ্য মনে করা হয়মঞ্জুরি পেলে তো ভালো। অন্যথায় রদ করে দিলেও সংবিধানের পবিত্রতায় (গণতন্ত্রপূজারিদের দৃষ্টিতে) কোনো ঘাটতি আসে না। সুতরাং ভাবুন!
    এ পার্লামেন্ট নিজের কাজের মাধ্যমে এ কথা বারবার প্রমাণ করছে যে, তার সামনে (নাউযুবিল্লাহ) আল্লাহর হাকিমিয়্যাহ তথা আইন প্রণয়নের ক্ষমতার কী মর্যাদা আছে? যেমন সুদ, বিবাহিত ব্যভিচারীকে প্রস্তর নিক্ষেপ, মুসলমানদের হত্যায় কাফেরদের সাহায্য করা, নির্লজ্জতা ও নাস্তিকতা প্রসারকারী ব্যক্তি ও মাধ্যমগুলোর রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা দান, সুদব্যবস্থাকে রক্ষার জন্য যুদ্ধের অনুমতি প্রদান; বরং এটি ইবাদত মনে করা, শরীয়াহ বাস্তবায়নে লড়াইকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে জিহাদ বলা, ইসলামের অটুট বিধান জিহাদকে অবৈধ ঘোষণা করা ইত্যাদি। এসব ব্যাপারে পার্লামেন্ট এ কথা প্রমাণ করেছে যে, আইন প্রণয়নের সর্বোচ্চ ক্ষমতা তাদেরই হাতে, আল্লাহর হাতে নয়। (নাউযুবিল্লাহ!)

    এত স্পষ্ট কর্মপদ্ধতি হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহর দ্বীন, কুরআন ও তাঁর নবীর আনীত শরীয়াহর বিরুদ্ধে (গণতন্ত্রপন্থীরা) এমন দুঃসাহস দেখাচ্ছে যে, প্রত্যেক কুফরীর উপর ইসলামের লেবেল লাগিয়ে দিয়ে তা গ্রহণ করা হচ্ছে। যদি কোনো কিছু (এ ব্যবস্থায়) গ্রহণ না করা হয়ে থাকে, তবে তা হলো আল্লাহর শরীয়াহ; যেটিকে তিনি সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ এর মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। এটিকে সম্পূর্ণ আইন-কানুন মেনে নেওয়ার পরিবর্তে কথিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক লড়াই, জাতীয় পর্যায়ের দমন অভিযান, নিরপরাধ মুসলমানদেরকে গণহত্যা, তাদেরকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। আচ্ছা, যদি তোমাদের সংবিধানই ইসলাম হয়, তো কুরআনের আইন-কানুনকে পার্লামেন্টের অনুমোদন ছাড়া মেনে নাও না কেন?
    আল্লাহর ওয়াস্তে তোমরা দু’দিনের এ তুচ্ছ জীবনের স্বার্থে কুরআন বিক্রয় করো নাআল্লাহর আয়াতসমূহকে তার আসল অর্থ ও তাৎপর্য থেকে সরিয়ে কুরআন-বিকৃতির অপরাধে জড়িত হইও না। সত্যের প্রতি জোর দেওয়ার সাহস যদি তোমার নাও থাকে, বা তোমার কোনো ওজর থাকে; তাহলে অন্তত এতটুকু তো করতে পার যে, মুখটা বন্ধ করে চুপ মেরে থাকবে। হক্বের আজান দিতে পারছ না, তাতে সমর্থন দিতে পারছ না, তাতে সঙ্গ দিতে পারছ না; তো অন্তত: কুফরকে ইসলাম প্রমাণ করা থেকে বিরত থাক। পরাশক্তিগুলোর ভয় আর গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আশঙ্কায় ইসলাম আর কুফরকে তো এক করে ফেলতে পারো না! সিংহভাগ কুফর আর একটু ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ ইসলাম বলা থেকে বিরত থাক! আমরা জানি, তোমাদের উপর গোপন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর চাপ ও তোমাদের অপারগতার কথা। এতটুকুতেই থামো! আল্লাহর জন্য থামো! কুফর ও তাকফীরের বিষয়গুলোর মধ্যে কুফর ও ইসলামকে গুলিয়ে ফেলো না। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের প্রসিদ্ধ নীতি হলো, কোনো কথা বা কাজের কুফরী হওয়া এবং তাতে জড়িত ব্যক্তিকে কাফের বলা- দু’টি আলাদা মাসআলা। এ কথায় আমরা শতভাগ একমত যে, কুফরীতে লিপ্ত ব্যক্তিকে কাফের বলার ক্ষেত্রে উলামায়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত যেসব শর্তাবলি আরোপ করেছেন, তা আমাদেরও আকীদা। আল-হামদুলিল্লাহ, আমরা আজও সেই আকীদার উপর অটল আছি। কিন্তু তোমরা তো কুফরকে ইসলাম প্রমাণ করতে চাচ্ছ। কুফরের পক্ষে প্রতিরোধ গড়তেই কুফরের প্রতিবন্ধকতাসমূহের দলিল দিচ্ছএখানে একটি পার্থক্য জেনে রাখবে যে, কুফরীতে লিপ্ত কোনো ব্যক্তিকে কাফের বলতে অনেক শর্ত আছে- এ কথার অর্থ এই নয় যে, সেই কুফরী কাজ বা কথাটি ইসলাম হয়ে গিয়েছে। এটি খুব ভালোভাবে বুঝে নাও। তোমরা জেনেশুনেই পুরো আলোচনায় বিষয়টা গুলিয়ে ফেলার চেষ্টা করছ। আল্লাহ তা‘আলা তা ভালোভাবেই জানেন। তোমরা মানুষকে কুফরী থেকে বাঁচাতে গিয়ে তাদের কুফরীগুলোকেই ইসলাম প্রমাণ করার চেষ্টা করছ। যা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের কারো আকীদা নয়। আল্লাহর সাথে সরাসরি কুফরীকে ইসলাম প্রমাণ করা- এটি খৃষ্টানদের সেই কথা থেকেও মারাত্মক, যা তারা আল্লাহর পুত্র সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে বলেছে।

    وَقَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمَٰنُ وَلَدًا ﴿مريم: ٨٨﴾لَّقَدْ جِئْتُمْ شَيْئًا إِدًّا ﴿مريم: ٨٩﴾تَكَادُ السَّمَاوَاتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنشَقُّ الْأَرْضُ وَتَخِرُّ الْجِبَالُ هَدًّا ﴿مريم: ٩٠﴾أَن دَعَوْا لِلرَّحْمَٰنِ وَلَدًا ﴿مريم: ٩١﴾وَمَا يَنبَغِي لِلرَّحْمَٰنِ أَن يَتَّخِذَ وَلَدًا ﴿مريم: ٩٢﴾

    “আর তারা বলে, দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। নিশ্চয় তোমরা তো এক অদ্ভুত কান্ড করেছ। হয়তো এর কারণে এখনই নভোমন্ডল ফেটে পড়বে, পৃথিবী খণ্ড-বিখণ্ড হবে এবং পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হবে। এ কারণে যে, তারা দয়াময় আল্লাহর জন্য সন্তান আহবান করে। অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্য শোভনীয় নয়।”(সূরা মারইয়াম : ৮৮-৯২)


    সুতরাং একটি সরাসরি কুফরীব্যবস্থা(গণতন্ত্র)কে ইসলামী প্রমাণ করা কত বড় অপরাধ? যদি তোমরা তা বুঝতে পারতে!!!






    আরও পড়ুন
    ৫ম পর্ব ----------------------------------------------------------------------------------------------------- ৭ম পর্ব



    Last edited by tahsin muhammad; 02-26-2025, 12:10 PM.
Working...
X