আল হিকমাহ মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত
দাওয়াতের পদ্ধতি ও জিহাদী মানহাজের হেফাযত
শাইখ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ.
এর থেকে
পর্ব- ২১
==================================================
===============================
দাওয়াতের পদ্ধতি ও জিহাদী মানহাজের হেফাযত
শাইখ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ.
এর থেকে
পর্ব- ২১
==================================================
===============================
ইন্টারনেটের ষড়যন্ত্র এবং জিহাদ ও মুজাহিদীনের
হেফাযতের গুরুত্ব ও পারস্পরিক সম্পর্ক
জিহাদের দাঈদের খেদমতে কিছু কথা
হেফাযতের গুরুত্ব ও পারস্পরিক সম্পর্ক
জিহাদের দাঈদের খেদমতে কিছু কথা
আমরা আবার দাওয়াত বিষয়ে ফিরে আসি। জিহাদের দাওয়াত ও মিডিয়ার সাথে সম্পৃক্ত ভাইদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলবো ইনশা আল্লাহ। আশা করি এই কথাগুলো জিহাদি মানহাজের উন্নতি ও হেফাযতের ক্ষেত্রে সাহায্যকারী হবে।
১৭. জিহাদি মিডিয়া এবং দাওয়াতের মধ্যে কোন অনৈসলামিক মাধ্যম গ্রহণ করা যাবে না। উদ্দেশ্য এবং মাধ্যম উভয়ের মধ্যে যত বেশি শরীয়তের প্রতি লক্ষ রাখা হবে, সে পরিমাণ আল্লাহর রহমত নাযিল হবে এবং দাওয়াত বরকতময় হবে। বিশ্বাস করতে হবে, যে বিষয় শরীয়তে নাজায়েয তা দ্বারা কখনও দাওয়াতের ফায়দা হয় না। সুতরাং মিথ্যা ও ধোঁকা থেকে পরিপূর্ণ দূরে থাকতে হবে। শরীয়ত যে ক্ষেত্রে এর অনুমতি দিয়েছে সে ক্ষেত্র দাওয়াত নয়, জিহাদ। তাই আমাদের মিডিয়ায় কোন খবর বাড়িয়ে প্রচার করা যাবে না যার কোন বাস্তবতা নেই। এমন বাড়িয়ে প্রচার করার দ্বারা দাওয়াতের ক্ষতি হয় এবং আমাদের সত্যবাদিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
১৮. যেই শ্রেণির সাথে কথা বলা হবে, নিজেকে তাদেরই একজন করে কথা বলতে হবে। এর বিপরীতে সম্বোধিত ব্যক্তিদের মানসিকতা, আবেগ উদ্দীপনা ও তাদের অবস্থাদি জানা ব্যতীত যদি তাদেরকে দাওয়াত দেয়া হয় তাহলে তারা কথা বুঝবে না এবং এই দাওয়াতের জন্য তাদের অন্তর খুলবে না। মঙ্গলগ্রহের দিকে তাকিয়ে থাকা ব্যক্তি মঙ্গলগ্রহের অবস্থাদি সম্পর্কে অবগত হয়ে যদি পৃথিবীবাসীর সমস্যার সমাধান করতে শুরু করে, তাহলে কিভাবে পৃথিবীবাসী তার কথা মনযোগ দিয়ে শুনবে? সম্বোধিত ব্যক্তিরা নিজেদের সমস্যাকে যেই দৃষ্টিতে দেখে দাঈকেও সেই দৃষ্টিতে দেখতে হবে। সম্বোধিত ব্যক্তিরা যেই সমস্যা ও বাধা দাঈর সামনে পেশ করে তা দাঈরও অনুভব করতে হবে। এই অনুভবের পরেই ঐ বিষয়ের দাওয়াত দিবে শরিয়ত যা চায় এবং আমলযোগ্য হয়। রোগ সম্মন্ধে জানা ছাড়াই যদি চিকিৎসার পর চিকিৎসা দেয়া হতে থাকে, তাহলে রোগ ভালো হবে কিভাবে? আর এমন ব্যক্তিকে রোগী চিকিৎসক হিসেবে গ্রহণ করবে কেন? দাঈ লোকদের মাঝে থেকে একটু সতর্ক থাকলে বুঝতে পারবে, কোন কথা কখন কার ওপর প্রভাব ফেলবে। সম্বোধিত ব্যক্তির চেহারার রং পরিবর্তনই দাঈকে অনেক কিছু বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু হাজার মাইল দূরে বসে থাকা সম্বোধিত ব্যক্তিকে যখন দেখা যায় না এবং দাঈ তাদের অবস্থাদি সম্পর্কে বেপরোয়া হয়ে নিজের জযবার কথা বলতে থাকে, তখন এই দাওয়াতের ফায়দা খুব কমই ইতিবাচক হয়।
১৯. একটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, তা হলো: দাওয়াতের মধ্যে আমাদের শত্রু শুধু কুফুরি শাসনব্যবস্থা ও তার নেতৃত্ব এবং সশস্ত্র বাহিনীকে বর্ণনা করা। তাদের বিরুদ্ধে জিহাদের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হবে। তেমনিভাবে সেক্যুলারিজমও আমাদের আসল প্রতিপক্ষ। আর যেই দ্বীনদার শ্রেণি আমাদের বিরোধিতা করে তারা আমাদের শত্রু নয়, তাদেরকে আমরা দাওয়াত দেব।
২০. দাওয়াতের মধ্যে জিহাদ দ্বারা আমাদের আসল উদ্দেশ্য ই’লায়ে কালেমাতুল্লাহ বর্ণনা করা। অর্থাৎ ব্যক্তিজীবন, সামাজিকজীবন, রাষ্ট্রীয়জীবনে শরিয়ত বাস্তবায়ন করা। মাজলুমদের সাহায্য করা এবং কাফেরদের হাত থেকে মুসলিমদের ভূমিগুলো উদ্ধার করাও জিহাদের উদ্দেশ্য। তবে এগুলো সব মূল উদ্দেশ্যের (দ্বীনের বিজয়) অধীন।
২১. ইসলামি অধিকৃত ভূমি, বিশেষ করে বাইতুল মাকদিস ও হারামাইনকে মুক্ত করার কথা বলতে থাকা। তেমনিভাবে ফিলিস্তিনের ওপর ইহুদিদের দখলদারিত্বে আমেরিকা ও আরব তাগুতদের সংশ্লিষ্ট থাকার কথা বারবার স্পষ্ট করতে থাকা। এ কারণে আমেরিকার প্রতি শত্রুতা পোষণ ও সারা দুনিয়ার মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে হামলার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা। কাশ্মীর উম্মতে মুসলিমার তাজা যখম। কাশ্মীরের জিহাদেরও দাওয়াত দেয়া হবে এবং তাতে এজেন্সিগুলোর অধীনস্থতার থেকে বের হওয়া এবং শরীয়তের মাকসাদের অনুগামী করার চেষ্টা করা। ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের সাহায্য সহযোগিতার কথা বলা দাওয়াতের বুনিয়াদি বিষয়।
২২. দাওয়াতের মধ্যে জিহাদি আন্দোলনের শত্রু কমানো এবং বড় শত্রু (কুফুরি শাসন ব্যবস্থার লিডার ও রক্ষকদের) বিরুদ্ধে উম্মতকে এক করা।
২৩. পাকিস্তানে জিহাদের দাওয়াত শুধু দেশীয় তাগুতদের বিরুদ্ধে সীমাবদ্ধ নয়। তাদের বিরুদ্ধেও হবে এবং এটা বর্তমানে জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু শুধু তাদের বিরুদ্ধেই হবে না। প্রথমত তাদের বিরুদ্ধে করতে হবে, যাদের যুলম, কুফুর এবং মুসলমানদের দুশমন হওয়ার ব্যাপারে মুসলমান জনসাধারণ সবাই একমত। শায়খ উসমা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ’র মতে যেই কাফেরের কুফুরি স্পষ্ট সাধারণ মুসলমান তাদের বিরুদ্ধে জিহাদের দাওয়াতকে সহজে কবুল করে। কিন্তু যদি কোন কাফের ইসলামের পোশাক পরে এবং ধোকা-জালিয়াতির মাধ্যমে কাজ করে তাহলে এই লোকের কুফুরি আসল কাফের থেকেও ভয়ঙ্কর হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করাকে অত সহজে মেনে নেয় না। আমেরিকা ও ভারত এমন কাফের রাষ্ট্রের মাঝে এমন যে, যাদের কুফুর, যুলুম, আগ্রাসন এবং মুসলমানদের শত্রু হওয়ার ব্যাপারে কোন সাধারণ মানুষেরও মতবিরোধ নেই। এই দুই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জিহাদ করা আসল উদ্দেশ্যের অন্তর্ভুক্ত এবং খুবই জরুরি। সাথে সাথে এই জিহাদি আন্দোলনকে শক্তিশালি করা, আঞ্চলিকভাবে বাতিল শাসনব্যবস্থাকে বোঝানো এবং তার বিরুদ্ধে মুসলমানদেরকে দাঁড় করানোর জন্যও জরুরি। আমেরিকা ও ভারতের বিরুদ্ধে জিহাদ স্থানীয় তাগুতদের নেফাকি প্রকাশ করে দেয়। এর মাধ্যমে তাদের দ্বীনের সাথে শত্রুতাও প্রকাশ পেয়ে যায়
আরও পড়ুন
Comment