Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ২২ || ‘তুফানুল আকসা’ অভিযান এবং তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত কয়েকটি প্রশ্নোত্তর || রবিউল আখির ১৪৪৫ হিজরী || শায়খ খালিদ বিন উমর বাতারফি হাফিযাহুল্লাহ || ২য় পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ২২ || ‘তুফানুল আকসা’ অভিযান এবং তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত কয়েকটি প্রশ্নোত্তর || রবিউল আখির ১৪৪৫ হিজরী || শায়খ খালিদ বিন উমর বাতারফি হাফিযাহুল্লাহ || ২য় পর্ব

    আল-হিকমাহ মিডিয়া পরিবেশিত

    ‘তুফানুল আকসা’ অভিযান এবং তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত কয়েকটি প্রশ্নোত্তর

    ||
    শায়খ খালিদ বিন উমর বাতারফি হাফিযাহুল্লাহ
    এর থেকে ||
    ২য় পর্ব


    ===================



    আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান

    প্রশ্ন: আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থানকে আপনারা কিভাবে মূল্যায়ন করেন?

    মুসলিমদের যেকোনো ইস্যুতে আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান আমাদের সকলেরই জানা আছে। বিশেষ করে ফিলিস্তীন এবং গাজা ভূখণ্ডের ব্যাপারে তাদের অবস্থান আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সর্বদাই তারা নিপীড়িতের বিরুদ্ধে জল্লাদের পাশে দাঁড়ায়। বছরের পর বছর আমরা এমনটাই দেখে আসছি।
    এই কাফের গোষ্ঠীর অবস্থান নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নেই। এর দ্বারাই বোঝা যায়, তাদের মিত্র ইহুদী জায়নবাদী শক্তি ফিলিস্তীনে কতটা দুর্বল ও হীন! এই অবস্থানের ব্যাপারে এবং এই প্রেক্ষাপটে আমরা গোটা বিশ্বের সকল ফ্রন্টের মুসলিম উম্মাহকে ইহুদী ও ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে ঐ লড়াইয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যার ছক এঁকেছেন শায়খ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহতিনি কয়েকটি ইসলামিক সংগঠন, জিহাদী দল এবং মুসলিমদের উলামায়ে কেরামের ফতোয়া ও সমর্থন নিয়ে এই বৈশ্বিক ধারা চালু করেছেন।
    এর কারণ হলো: আমরা, আমাদের মত সকলেই; সেই সাথে শায়খ নিজে, জিহাদী অঙ্গনের শায়খগণ, উম্মাহর উলামায়ে কেরাম যারা তাদের সঙ্গে এই লড়াইয়ের ব্যাপারে সহমত, যারা তাদেরকে এ বিষয়ে সমর্থন দান করেছেনসকলেই ভালোভাবে জানেন যে, ইহুদী গোষ্ঠী, আমেরিকা ও কাফের পশ্চিমা বিশ্ব একই মুদ্রার দুই পিঠ।

    শায়খ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ’র দাওয়াত

    এ পর্যায়ে আমরা আমাদের মুসলিম ভাইদেরকে শায়খ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ’র দাওয়াতের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি তিনি আমেরিকানদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই হত্যা করতে উৎসাহিত করেছেনকারণ যদি আমেরিকানদের অস্তিত্ব না থাকতো, তাহলে এই দখলদার অপহরণকারী শক্তি আমাদের অঞ্চলে এবং মুসলিমদের দেশে এত দীর্ঘ বছর যাবৎ অবস্থান করতে পারতো না।
    তাইতো শায়খ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ বলেছেন: “যেখানেই হোক, আপনারা আমেরিকানদেরকে হত্যা করুনতাদেরকে হত্যা করার ব্যাপারে কোনো ফতোয়া খোঁজ করবেন না কিংবা কাউকে জিজ্ঞাসাও করবেন না। আল্লাহর বরকতে এগিয়ে যান এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা নবীগণ, সিদ্দিকগণ, শহীদগণ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের সঙ্গদানের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা বাস্তবায়িত হবার অপেক্ষা করুন

    মুসলিমদের প্রতি আহ্বান

    আমরা পৃথিবীর পূর্ব থেকে পশ্চিম সর্বস্থানের মুসলিম ভাইদেরকে, মুসলিম দেশ কিংবা অমুসলিম দেশযেকোনো জায়গায় বসবাসকারী মুসলিমদেরকে আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন কোনো ইহুদী, কোনো আমেরিকান কিংবা কোনো ব্রিটিশকে হত্যা না করে ছেড়ে না দেন। কারণ আল্লাহর কসম! তুফানুল আকসা মত বরকতময় অপারেশন ছাড়া তারা কিছুতেই ভীত-সন্ত্রস্ত হবে না।

    হে আল্লাহর বান্দাগণ!
    আপনারা জেনে রাখুন, এ জাতীয় কাজের মধ্যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার নৈকট্য রয়েছে। হে আল্লাহর বান্দা! আপনি এই অপরাধীদেরকে হত্যার মাধ্যমে আল্লাহর নিকট্য অর্জন করবেন। তাদের রক্তের মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নিকটে পৌঁছুবেন। ইনশা আল্লাহ, খুব অচিরেই এমন একটা সময় আসবে, যখন আমরা যেকোনো জায়গায় আমেরিকাকে আঘাত করলেও এমন কাউকে পাবো না, যে এ কথা বলে আমাদের সমালোচনা করতে আসবে যে, আপনারা মুসলিম উম্মাহকে অসম যুদ্ধে জড়িয়ে দিয়েছেন
    কারণ সকল মানুষ অপরাধী অন্যায়কারী মার্কিন শত্রুর অহঙ্কার ও দম্ভ দেখতে পাচ্ছেকেমন করে তারা নিরপরাধ বেসামরিক নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের হত্যাকে সমর্থন করেছে - এটা সকলেই জানে। তাদের এই অন্যায় সকলের সামনে রয়েছে। তাই এই শত্রুপক্ষকে প্রকম্পিত করার একমাত্র উপায় হচ্ছে সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখের অপারেশন, তার পূর্ববর্তী এ জাতীয় অপারেশন এবং তার পরবর্তী অন্যান্য অপারেশন। মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে আমরা প্রার্থনা করি- যেন তিনি আমাদেরকে কাফেরদের নিজ ভূখণ্ডে অথবা অন্য যেকোনো স্থানে আঘাত করার তাওফীক দান করেন! নিশ্চয়ই তিনি সবকিছুর অভিভাবক এবং আমাদের প্রার্থনা পূরণে সক্ষম।

    ইরান এবং তার অনুসারীদের অবস্থানের বিষয়ে মতামত

    প্রশ্ন: ইরান এবং তার অনুসারীদের অবস্থানের ব্যাপারে আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি কী?

    ইরান এবং তার অনুসারীদের অবস্থানের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো: সাম্প্রতিক এই অপারেশন থেকে আমরা বুঝতে পারি, রাফেজী ইরান এ সম্পর্কে কিছুই জানতো না। শুধু তাই নয়, আমরা আরও বুঝতে পারি, এ জাতীয় অপারেশনের কথা তারা কল্পনাও করতে পারেনি।
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার অনুগ্রহে অপারেশনের পর প্রথম বিবৃতিতেই তারা সুস্পষ্টভাবে এ কথা জানিয়ে দিয়েছে। ইরানের রাফেজীদের সুস্পষ্ট বিবৃতি এই ছিল: যদি ইরান হামলা করতো তাহলে রকেটগুলো লেবানন, ইরান, ইরাক অথবা ইয়েমেন থেকে নিক্ষেপ করা হতো। যদি ইরান হামলা করতো, তাহলে অচিরেই গোলান থেকে সিরিয়ান বাহিনী তৎপর হয়ে উঠতো।” তাদের সুস্পষ্ট বিবৃতিতে এ জাতীয় কথাগুলোই তারা বলেছে।
    এ কথা থেকে আমাদের প্রমাণ মেলে, ফিলিস্তীন নিয়ে ইরানের কোনো চিন্তা নেই ইসলামী দলগুলোর ব্যাপারে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই ফিলিস্তীন অথবা অন্য কোনো ভূখণ্ডের মুসলিমদের অবস্থা, বিশেষ করে আহলে সুন্নাহ তথা সুন্নীদের ব্যাপারে তাদের কোনো ভাবনা নেই তাদের ভাবনা শুধু নিজেদেরকে নিয়ে।
    এই বিষয়ে যদি তুলনা করা হয় অর্থাৎ আল্লাহর শপথ করে যদি তুলনা করি ইরানের ভূমি রক্ষা করা কি বাইতুল মুকাদ্দাস অপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও শ্রেষ্ঠ? (তাহলে উত্তর হবেহ্যাঁ; ইরানের দৃষ্টিতে অন্তত তাই) ইরান কি আল-আকসা অপেক্ষা অধিক মূল্যবান?
    ইরান যদি হামলার শিকার হতো, তাহলে তার পৃষ্ঠপোষকতা গ্রহণকারীরা সকলেই তৎপর হয়ে উঠতো এবং মোকাবেলা করতে আরম্ভ করতো।
    আজ আল-আকসায় ইহুদীরা অপবিত্রতা ঘটাচ্ছে ইহুদীদের কারাগারগুলোতে মুসলিম বন্দীদেরকে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হচ্ছে আল-আকসা প্রাঙ্গনে মুসলিম নারীদেরকে অসম্মান ও লাঞ্ছিত করা হচ্ছে গাজায় গণহত্যা চালানো হচ্ছে এখানে নারী, শিশু কিংবা বৃদ্ধের সম্মান ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না এগুলোর কোনো কিছু নিয়েই ইরানের মাথা ব্যথা নেই! এগুলো নিয়ে রাফেজীদের কোনো ভাবনা নেই!! শুধু ইরান আঘাতপ্রাপ্ত হলেই তার সকল অনুসারীরা সর্বতোভাবে জেগে উঠতো।
    এই বিষয়ে আমি একটি ঘটনা উল্লেখ করতে চাই। সেই ঘটনা থেকে আলোচ্য ইস্যুতে ইরানের আচরণের বাস্তবতা আমাদের কাছে ফুটে উঠবে আমরা বুঝতে পারবো, মুসলিমদের ইস্যুতে তারা কতটা সোচ্চার! আমাকে প্রিয় আবু হাফস আরব রহিমাহুল্লাহ ঘটনাটি বলেছেন।
    তিনি যখন ইরানের কারাগারে ছিলেন, তখন জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য এক ব্যক্তি এসে তাকে বললো: “তোমরা কেমন করে এই কাজটা করলে?” অর্থাৎ সে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে বরকতময় হামলার কথা বুঝিয়েছে। তোমরা কেমন করে এ কাজ করে তোমাদের রাষ্ট্রের পতনের কারণ হলে?!” অর্থাৎ ২০০১ সালে তদানীন্তন ইমারতে ইসলামিয়া তালেবানের রাষ্ট্রের কথা বোঝানো হয়েছে।
    তখন ভাই আবু হাফস তাকে জবাবে বললেন: আমরা কিছু মূলনীতির অনুসারী। আমাদের আদর্শ রক্ষা ও বাস্তবায়নের জন্য আমরা সব কিছু উৎসর্গ করে দিতে প্রস্তুত।তখন ইরানি জিজ্ঞাসাবাদকারী তাকে বললো: “এটাই তোমাদের আর আমাদের মধ্যকার পার্থক্য তোমরা তোমাদের আদর্শের জন্য সবকিছু উৎসর্গ করে দাও আর আমাদের অবস্থা হল: ইরান তার স্বার্থ রক্ষার জন্য শয়তানের সঙ্গেও জোট গঠন করতে প্রস্তুত।
    এই হল ইসলামিক ইস্যুগুলোতে ইরানের আচরণের প্রকৃত চেহারা। ইরানের অনুসারীরা এই ইস্যুতে যা কিছু বলছে ও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সবই তাদের স্বার্থ রক্ষার বিনিয়োগ। আমরা নিজ চোখে দেখেছি, একেকজন উঠে মানুষকে অসংলগ্ন কথা-বার্তা শোনাচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে তাদের কার্যকরী পদক্ষেপ আমরা কিছুই দেখিনি।
    দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহ যা করছে, তা ফিলিস্তীনের বর্তমান বিপর্যয় মোকাবেলার মতো পর্যাপ্ত নয়। এছাড়াও হিজবুল্লাহ নামক দলটির যতটা শক্তি-সামর্থ্য আছে, তাদের বর্তমান কার্যকলাপ সে সবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। গাজায় সম্মিলিতভাবে সকল সশস্ত্র দলের শক্তি সামর্থ্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশী শক্তি রয়েছে হিজবুল্লাহর। এই দলটা এবং ইরানের অনুসারী অন্যান্য দলগুলো ওই মাত্রায় প্রতিরোধ তৈরি করছে না, যেমনটা তারা দাবি করে যাচ্ছে। কয়েক দশক যাবৎ তারা কেবল তাদের মিথ্যা প্রতিরক্ষার কাহিনী শুনিয়ে আসছে। এটা এক দিক।

    ইরানের আরেক চেহারা
    অন্যদিক হলো: ফিলিস্তীনের চলমান পরিস্থিতিতে সময়ের দাবি লক্ষ্য রেখে তারা যা করছে, আর সিরিয়াতে সিরিয়ান মুসলিম জনসাধারণের বিরুদ্ধে এক দশকের অধিককাল যাবৎ নুসাইরি আসাদ সরকারকে যে সাহায্য-সহায়তা ও সমর্থন দিয়ে আসছে, উভয়টার মাঝে কোনো তুলনাই হয় না!
    রাশিয়ার সঙ্গে মিলে সুন্নীদের বিরুদ্ধে তারা ইরান, ইরাক, ইয়েমেন, লেবানন এবং অন্য জায়গায় যেসকল লজ্জাজনক কর্মকাণ্ড করেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এটাই হচ্ছে তাদের পরিচয়। আসলে তারা মুসলিম জনসাধারণের সামনে তাদের অনুসারীদের মনকে বোকা বানাচ্ছে। তারা মনে করে, এগুলো করে তারা কিছু সময়ের জন্য মানুষকে ধোঁকা দিতে থাকবে। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় যখনই এই ধরনের অভিযান হয়, তখনই তাদের মুখোশ খসে পড়ে তাদের প্রকৃত চেহারা সবার সামনে চলে আসে। এই চেহারা তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য লুকিয়ে রাখতে পারবে না।



    আরও পড়ুন​
    ১ম পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 19 hours ago.
Working...
X