“দাওয়াতে খিলাফত ও মানহাজে রাসূল ﷺ” ।।
মাওলানা আসেম উমর হাফিযাহুল্লাহ||
এর থেকে– ৩য় পর্ব
===================
মাওলানা আসেম উমর হাফিযাহুল্লাহ||
এর থেকে– ৩য় পর্ব
===================
দুই. শ্রোতার মেজাজ ও ব্যক্তিত্ব বুঝা
শ্রোতার মন-মেজাজ এবং তার ব্যক্তিত্ব ও সে অনুযায়ী চাহিদা বুঝতে হবে। কোন আন্দোলন যদি তার শ্রোতার মন ও মেজাজকে না বুঝে তাকে সম্বোধন করে তাহলে ভবিষ্যতে দাওয়াতের মধ্যে এমন ভুল-ভ্রান্তি প্রকাশ পাবে যার কারণে শ্রোতা তার সঙ্গ দেওয়ার পরিবর্তে তার বিরোধী হয়ে যাবে অথবা কমপক্ষে তার দাওয়াতের প্রতি উদাসীন হয়ে যাবে। যেমন আরব বিশ্ব এবং হিন্দুস্থান-পাকিস্তানের কথাই ধরুন। এখানে প্রত্যেক এলাকার বাসিন্দাদের মেজাজ ভিন্ন ভিন্ন। কারো সাথে কারো মেজাজের মিল নেই। এখানে যদি আপনারা একই পদ্ধতিতে সকল এলাকার মুসলমানদেরকে আপনার বার্তা পৌছাতে চান তাহলে তারা আপনার দাওয়াতের প্রতি মনোযোগী হবে না। এমনিভাবে শ্লোগান ও প্রচারণার ক্ষেত্রেও যদি আপনি আপনার দেশের শুধুমাত্র এক এলাকার অবস্থাকেই সামনে রাখেন এবং এই দাওয়াত ও শ্লোগানকে পুরো দেশের মুসলিমদের জন্য ঘোষণা দিয়ে দেন তাহলে ঐ নির্দিষ্ট শ্রেণি তো অবশ্যই আপনার দাওয়াতের প্রতি মনোযোগী হবে যাদের অবস্থার ওপর ভিত্তি করে আপনি শ্লোগান নির্বাচন করেছেন কিন্তু বাকি এলাকার মুসলিমগণ এদিকে মোটেই কর্ণপাত করবে না।
এমনিভাবে কোন বাক্য কোন একটি এলাকার লোকজনের জন্যে অনেক অর্থবোধক এবং তেজোদীপ্ত হতে পারে কিন্তু সেই একই বাক্য অন্য কোন এলাকার জন্য একেবারেই অনর্থকও হতে পারে; যা শুনে তাদের কানে মাছিও সরবে না। আবার কখনো একটি বাক্য কোন এলাকাবাসীর জন্যে তেমন মন্দ বা বাজে কিছু নয় কিন্তু সেই একই বাক্য অন্য এলাকায় যারপর নাই মন্দ, লজ্জাকর ও সমাজ-সামাজিকতার ক্ষেত্রে চরম আপত্তিকরও মনে হতে পারে। তাইতো আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে এই দাওয়াতী উসূলের গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন,
وَمَا أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلاَّ بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْ فَيُضِلُّ اللّهُ مَن يَشَاء وَيَهْدِي مَن يَشَاء وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
অর্থাৎ এবং আমি কোন রাসূল প্রেরণ করিনি তার স্বজাতির ভাষা ব্যতীত যেনো সে তার স্বজাতিকে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করতে পারে। [সূরা ইবরাহীম–৪]
সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে যে দাঈ তার শ্রোতাকে এমন চমৎকারভাবে তার দাওয়াতকে বুঝাবে যে শ্রোতা খুব সহজেই গোটা দাওয়াতকে বুঝে যাবে। চমৎকার বর্ণনা তো তা যা শ্রোতার মন ও মেজাজ অনুযায়ী হবে। খুলে বর্ণনা করার দ্বারা উপকার হয় এই যে, লোকেরা ভালোভাবে আপনার আন্দোলন সম্পর্কে অবগতি লাভ করে, তারা আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত হয়ে যায়। কিন্তু আপনি যদি আপনার শ্লোগান তথা মূল মিশন ও উদ্দেশ্য খোলাখুলি বর্ণনা না করেন তাহলে লোকজন আপনার দিকে মনোযোগী হওয়া কঠিন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাওয়াতের বেলায় সর্বদাই শ্রোতার মেজাজ ও মর্তবা – ব্যক্তিত্বের প্রতি লক্ষ রাখতেন এবং সংক্ষিপ্ত ও হৃদয়গ্রাহীভাবে দাওয়াত দিতেন। হজ্জের মৌসুমে যখন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিভিন্ন গোত্রের নিকট গিয়ে দাওয়াত দিতেন তখন ওখানেও তিনি এবিষয়টি খুব লক্ষ্য রাখতেন, দাওয়াত যেনো শ্রোতার মন মেজাজ অনুযায়ী হয়। যেমন মদীনা থেকে আগত লোকদের যখন দাওয়াত দিলেন তখন তারা জিজ্ঞাস করল যে, আপনি কোন বিষয়ের প্রতি আমাদের দাওয়াত দিচ্ছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি তোমাদের এই কথার দাওয়াত দিচ্ছি যে, কোন শক্তিমান কোন দুর্বলের ওপর জুলুম করবে না, ইয়াতীম ও অসহায়ের প্রতি খেয়াল রাখবে, মেহমানের মেহমানদারী করবে ও মুসাফিরকে খানা খাওয়াবে। যেহেতু মদীনাবাসী ও অন্যান্য আরবদের মাঝে উল্লেখিত বিষয়গুলো ইজ্জত ও সম্মানী বিষয় মনে করা হতো তাই তাদের নিকট শুরুতেই ইসলামের ঐরূপকেই তুলে ধরা হয়েছে যা উক্ত গোত্রগুলোর নিকটও অনেক উত্তম হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছিল। এমনকি কুরাইশ সর্দারদের দাওয়াত দেয়ার বেলায়ও এই বাস্তবতাকে ভুলে যাননি। যার ফলে যখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাওয়াত দিন দিন বাড়তে লাগলো এবং কাফিরদের অত্যাচার, কঠোরতা এবং সমূহ নির্যাতন সত্ত্বেও সাহাবায়ে কিরাম (রা.) ইসলামের ওপর অটল অবিচল ছিলেন তখন কুরাইশের বিশেষ একটি শ্রেণি নবীজীর চাচা আবু তালেবের নিকট আসল এবং বিচার দিল, তোমার ভাতিজা আমাদের ধর্মের মধ্যে দোষ বের করে আমাদের দেবতাদেরকে মন্দ বলে এবং আমাদেরকে বোকা ও নির্বোধ সাব্যস্ত করে। সুতরাং আপনি তাকে বুঝান অথবা আপনি তার এবং আমাদের মধ্য থেকে সরে যান।
আবু তালেব নবীজীকে ডেকে পাঠালেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন তাশরিফ আনলেন তখন বললেন, ভাতিজা! তোমার জাতি তোমার নামে অভিযোগ করেছে এবং এমন এমন বলে, তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, চাচাজান! আমি তো তাদেরকে এমন এক কালিমার স্বীকারোক্তি দেয়ার কথা বলি, যদি তারা শুধু একবার এই কালিমাকে মেনে নেয় তাহলে তাদের গোটা আরব ও আজমের সর্দারি মিলে যাবে। এ কথা শুনামাত্র সকল সর্দার একবাক্যে বলে উঠল যে, আমাদেরকে দ্রুত বলে, এমন কালিমা তো আমরা একবার কেন দশবার পড়তে প্রস্তুত; যার দ্বারা আমাদের আরব ও আজমের সর্দারি মিলবে।
ফায়দা.
প্রিয় পাঠক, একটু ভাবুন তো! নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরাইশ সর্দারদের মেজাজের প্রতি লক্ষ রেখে এমন কথা বললেন, যা সেই সর্দারগণকে সাথে সাথে তার দিকে মনোযোগী করে তুললো। কেননা কুরাইশ সর্দারদের নবীজীর দাওয়াতের দ্বারা আসল ভয়ই ছিলো যে এই দাওয়াতের কারণে তাদের কর্তৃত্ব ও সর্দারি চলে যায় কি না? এ জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের এই আশঙ্কার জবাব দিয়েছেন যে আমি তো তোমাদেরকে এমন এক কালিমার দিকে আহ্বান করছি যেই কালিমা মানলে তোমরা শুধু আরবেরই নয় বরং আজমেরও সর্দার ও শাসক হয়ে যাবে।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বাহরাইনের বাদশাহকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন তখন সেখানেও তিনি এ কথা লিখলেন যে, কালিমা পড়ে নাও, তোমাদের গোটা এলাকা তোমাদের অধীনেই থাকবে। যদিও এই কালিমা পড়ার আসল ফায়দা তো আখেরাতে; কিন্তু মানুষের স্বভাব হলো সে প্রথম এই দুনিয়াবী দৃষ্টিতেই ভাবে, যে নতুন এই দাওয়াত যা আমাদের সামনে পেশ করা হচ্ছে এর মাঝে আমাদের জন্য কী রয়েছে?
স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা যিনি এই কথার মুখাপেক্ষী নন যে কে এই দ্বীনকে মানলো আর কে মানলো না। তিনিও কুরআনে কারীমে যেখানে ইসলামের দাওয়াত গ্রহণকারীদেরকে জান্নাতের বিশ্বাস স্থাপন করাতে চেয়েছেন সেখানে দুনিয়ার ব্যাপারেও তাদেরকে এক উত্তম নিরাপদ জীবনের ওয়াদা দিয়েছেন। আরব্য সমাজে দুর্ভিক্ষ ও অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তি এবং ব্যাপক জুলুম অত্যাচারের পরিবেশ এর পরিবর্তে নিরাপদ জীবন। এ দুটি বিষয় ছিল তাদের জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথা সবিশেষ কামনার বস্তু। যেমন আল্লাহ তা’আলা মহাগ্রন্থ আল কুরআনে ইরশাদ করেন,
فَلْيَعْبُدُوا رَبَّ هَذَا الْبَيْتِالَّذِي أَطْعَمَهُم مِّن جُوعٍ وَآمَنَهُم مِّنْ خَوْفٍ
অর্থ, সুতরাং তারা যেন তাদের সেই ঘরের প্রতিপালকের ইবাদত করে যিনি তাদেরকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় আহার দিয়েছেন এবং ভয়ের সময়ে নিরাপত্তা। [সূরা কুরাইশ- ৩-৪]
আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা আরো ইরশাদ করেন,
وَضَرَبَ اللّهُ مَثَلاً قَرْيَةً كَانَتْ آمِنَةً مُّطْمَئِنَّةً يَأْتِيهَا رِزْقُهَا رَغَدًا مِّن كُلِّ مَكَانٍ فَكَفَرَتْ بِأَنْعُمِ اللّهِ فَأَذَاقَهَا اللّهُ لِبَاسَ الْجُوعِ وَالْخَوْفِ بِمَا كَانُواْ يَصْنَعُونَ
অর্থ. আল্লাহ তা’আলা দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন এমন এক জনপদের যা ছিল নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত, যেথায় অসততা সর্বদিক থেকে প্রচুর জীবনোপকরণ, অতঃপর তারা আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করলো, ফলে তারা যা করতো তার জন্যে আল্লাহ তাদেরকে আস্বাদন করালেন ক্ষুধা ও ভীতির আচ্ছাদন। [সূরা নাহল -১১২]
এই আয়াতে আল্লাহ তা’আলা এমন এক এলাকার দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন যা সম্পূর্ণ শান্তিময় ও নিরাপদ ছিলো। সেখানে সামাজিক নিরাপত্তা ছিল এবং তাদের সর্ব প্রকার জীবনোপকরণের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু তথাপিও তারা আল্লাহ তা’আলার হুকুমের বিরুদ্ধাচরণ ও আল্লাহ তা’আলার এই সকল নিয়ামতের না শুকরি করেছিল, যার ফলে আল্লাহ তা’আলা সেই এলাকাবাসীর ওপর থেকে উক্ত নিয়ামত ছিনিয়ে নিলেন এবং তাদের জীবনোপকরণ ধ্বংস করে তাদের ওপর দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিলেন এবং নিরাপত্তা ছিনিয়ে নিয়ে তাদের ওপর ভীতির সঞ্চার করে দিলেন।
এই বাস্তবতাও স্মরণ রাখা জরুরি, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এটাও অন্তর্ভুক্ত যে তারা সেই সময় পর্যন্ত কোন জিনিসের গুরুত্ব অনুভব করে না অথবা সেদিকে পরিপূর্ণ মনোযোগী হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের সামনে এই দেখা ও না দেখা বস্তুসমূহের দৃশ্যপট তুলে না ধরা হবে। তাইতো চির অমুখাপেক্ষী প্রভুও এই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি লক্ষ রেখেছেন এবং তাঁর জান্নাতের দিকে দাওয়াত দেয়ার সময় এমনভাবে জান্নাতের দৃশ্যপট এঁকেছেন যেনো শ্রবণকারী ব্যক্তি তার চোখের সামনে তা দেখতে পায়। তাই আমরা কুরআনে কারীম তিলাওয়াত করার সময় যখন ঐ সব আয়াত পাঠ করি যেখানে জান্নাতের বাগানসমূহ এবং ঝর্ণার আলোচনা রয়েছে- সর্বোত্তম পোশাকে সজ্জিত হয়ে, হাতের মধ্যে পানপাত্র নিয়ে, দোলনার মধ্যে হেলান দিয়ে জান্নাতী লোকজন এবং তাদের আশেপাশে শুভ্র মুতি ও পদ্ধরাগ চুনির ন্যায় ঘোরাফেরাকারী হুর গিলমানদের দৃশ্য যেন গোচরীভূত হতে থাকে। তখন হৃদয় তার অজান্তেই রবের জান্নাতের প্রতি লালায়িত হয়ে যায়।
এমনিভাবে যেখানে আল্লাহ তা’আলা জাহান্নামের ভয় দেখিয়েছেন তো তার ব্যাপারেও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন যেনো মানুষের হৃদয়ে জান্নাতের নিয়ামত সমূহ অর্জনের আগ্রহ হয় এবং জাহান্নামের ভয় তাদের চিন্তা-চেতনায় বদ্ধমূল হয়ে যায়। এমনকি আমরা দেখতে পাই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দাজ্জালের বর্ণনা প্রসঙ্গে নাওয়াস বিন সাময়ান (রা.) বলেন যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – এর বর্ণনাভঙ্গি এমন ছিলো য, আমাদের এমন মনে হচ্ছিল যেনো আমাদের সামনের খেজুর বাগান হতে এখনই দাজ্জাল বের হয়ে আসবে।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরে তার খলিফাগণও এই মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি লক্ষ্য রাখতেন। হযরত আনাস বিন মালেক (রা.) বলেন, হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) যখন আমাদের সামনে মানুষের জন্মের বর্ণনা দিতেন তখন আমাদের নিজেদের প্রতি নিজেদের ঘৃণা চলে আসতো। তিনি বলতেন, মানুষ দুইবার প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে বের হয়েছে।
সুতরাং খিলাফতের দাওয়াত প্রদানকারীকেও এই মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি লক্ষ্য রাখা চাই। আজ নতুন এক দাওয়াত আপনি দিচ্ছেন, তাই তা এমনভাবে খুলে খুলে বর্ণনা করা চাই যেনো মানুষের নিকট সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, খিলাফত প্রতিষ্ঠা হলে সাধারণ মুসলমানরা আখেরাতের পূর্বে স্বয়ং এই পৃথিবীতে কী পাবে। এর মধ্যে ব্যবসায়ীদের জন্য কী আকর্ষণ রয়েছে? একজন কৃষক কেন আপনার সঙ্গী হবে? একজন শ্রমিক, হত দরিদ্র মুসলমান কিভাবে আপনার আন্দোলনে অংশ দিবে? জুলুম অত্যাচার, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দুর্নীতির করালগ্রাসে জর্জরিত এই জাতি কোন ভিত্তির ওপর আপনার দাওয়াতের প্রতি মনোযোগী হবে? শুধু কি এজন্যই যে আপনার দাওয়াত সত্যের দাওয়াত? না কখনোই না! যদি মানুষের জন্যে শুধুমাত্র এতটুকুই যথেষ্ট হতো তাহলে আল্লাহ তা’আলা এই দাওয়াতকে শব্দ এবং বাক্য পরিবর্তন করে করে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে বর্ণনা করতেন না? শুধু এতটুকু ঘোষণা করে দিতেন যে, এটা সত্যের দাওয়াত যে মানবে সে জান্নাত পাবে এবং যে না মানবে সে জাহান্নামী হবে।
উচিত তো ছিলো, আমাদের দাওয়াতে শুধু মুসলমান নয় বরং সাধারণ কাফেরও মনোযোগ দেবে যে এই লোক যেই কথার শ্লোগান লাগাচ্ছে যে, জুলুমের জায়গায় ইনসাফ, ভয় দূর করে শান্তি, বিশেষ শ্রেণির হাতে লাঞ্ছনার পরিবর্তে মানবতার সম্মান, পুঁজিবাদের গ্রাস থেকে মুক্তি, নারীদেরকে বাজারী পণ্য বানানোর পরিবর্তে ঘরের শাহজাদী ও রাণী বানানো। এ সকল শ্লোগান শুনে কাফিরও চিৎকার করে বলে উঠবে যে, এই সবগুলো তো আমারও প্রয়োজন।
আরও পড়ুন
২য় পর্ব