আন নাসর মিডিয়াপরিবেশিত
“এই তো গাযা…
গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4)
”
।।সালেম আল শরীফ||
এর থেকে– ২য় পর্ব
“এই তো গাযা…
গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4)
”
।।সালেম আল শরীফ||
এর থেকে– ২য় পর্ব
সমকালীন যুদ্ধ সমূহ:
অমুখোমুখি যুদ্ধের দর্শনে (মিসাইল ও ড্রোন হামলা) সবচেয়ে নিকৃষ্ট দিক হলো এই যুদ্ধের মাধ্যমে জনসাধারণের স্থিতিশীলতা ধ্বংস এবং নাগরিকদের ভবিষ্যৎ পুরোপুরি বিনষ্ট করে দেয়া হয়। এই অবস্থায় জনসাধারণের উচিত তাৎক্ষণিকভাবে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা, যা শত্রুপক্ষের এমন পন্থা অবলম্বনে বাধার সৃষ্টি করবে। শত্রুপক্ষকে নিবৃত্ত রাখার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে জনসাধারণ শুধু হুমকি দিয়েই থেমে থাকবে না বরং শত্রুপক্ষের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং অর্থনৈতিক স্বার্থসমূহের ওপর জোরালো আঘাত হানবে। শত্রুর সামরিক ঘাঁটিসমূহ বয়কট করা, তাবেদারদেরকে নিশ্চিহ্ন করা এবং গুপ্তচরদেরকে চিহ্নিত করে অপসারণ করাও নাগরিক কর্তব্যের শামিল। এই কাজগুলো আমাদের ভূখণ্ডেও হতে পারে আবার যেই ভূখণ্ডগুলো থেকে তাদের অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ হয় সেখানেও হতে পারে। এই পদক্ষেপের কারণে ধারাবাহিক রক্তক্ষরণে খুব দ্রুত শত্রুর পতন ঘটতে বাধ্য, চাই শত্রুপক্ষ এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের সময় যত রকম প্রতিক্রিয়া দেখাক না কেন। যেকোনো মুসলিমের পক্ষে এবং বিশ্বের যেকোনো স্থানে সাহসিকতা, আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষী যেকোনো দুর্বল ব্যক্তির পক্ষে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব। এই সমস্ত পদক্ষেপের পাশাপাশি একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সে প্রতিষ্ঠানের ছায়াতলে জনসাধারণ ঐক্যবদ্ধ হবে, নিজেদের প্রয়াসকে সমন্বিত করবে এবং জনজীবনের সকল সেক্টরের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করবে। এর পরের পদক্ষেপ হলো, উক্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও প্লাটফর্মটি চেষ্টা করে যাবে জনসাধারণের সবচেয়ে প্রতিভাবান সচেতন সন্তানদেরকে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের এবং বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র প্রযুক্তির ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য। তাদেরকে আরো নির্দেশনা দিতে হবে এমন মিসাইল ও ড্রোন প্রযুক্তি নিয়ে আসার, যেগুলোর ধ্বংস-ক্ষমতা শত্রুর মিসাইল ও ড্রোন সক্ষমতার কম না হয়। প্রকৃত উন্নয়ন পরিকল্পনার মাধ্যমে জনজীবন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে হবে। জাতীয় সম্পদ রক্ষা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে এবং উন্নয়নকল্পে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে—তবে শর্ত হচ্ছে জাতির নিষ্ঠাবান ব্যক্তিরাই যেন সেই উন্নয়ন প্রকল্পে যুক্ত হন। এই উম্মাহর জাগরণ তার এমন সন্তানদের হাতেই সফলতা বয়ে আনবে, যারা নিজেদের আকীদা-বিশ্বাস, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আচার-ব্যবহার ঘনিষ্ঠভাবে আঁকড়ে ধরে আছে। তারা জাতির নিষ্ঠাবান সন্তান। তারা এই জাতির জন্য এমন ভূমিকা পালন করবে, যা এই জাতিকে শক্তিশালী করবে; ধ্বংস নয়।
মৌলিক যে বিষয়টা পরিবর্তন করা খুবই কঠিন তেমনি একটি বিষয় হচ্ছে, স্থলযুদ্ধগুলো হলো সংশ্লিষ্ট ভূখণ্ডবাসীর জন্য সবার আগে পূর্ব মীমাংসিত, তাই তাদের যত ক্ষয়ক্ষতি হোক না কেন অথবা আগ্রাসনকাল যত দীর্ঘ হোক না কেন, স্থলযুদ্ধের সমাপ্তি সুনিশ্চিত। ... আর পারমাণবিক বোমার একমাত্র প্রতিকার হচ্ছে পাল্টা পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জন করা অথবা প্রতিরোধমূলক এমন অস্ত্র আবিষ্কার করা, যার ভার বহন করা শত্রুর পক্ষে দুষ্কর। প্রতিরোধমূলক সেই অস্ত্র আমাদের হাতে এলে গুরুত্বপূর্ণ হলো তা ব্যবহার করার সাহস রাখা।
অর্থনৈতিক যুদ্ধ:
মুসলিম উম্মাহর ও জনসাধারণের অবশ্য কর্তব্য হলো পশ্চিমা বিশ্বের সকল পণ্য বয়কট করা। কারণ পশ্চিমা বিশ্ব থেকে এমন যে কোনো পণ্য ক্রয় করা হারাম, মুসলিম দেশগুলোতে যেগুলোর বিকল্প রয়েছে— যদিও সেগুলো কিছুটা নিম্নমানের হোক না কেন। অতএব যারা পশ্চিমা দেশ থেকে কোনো গাড়ি ক্রয় করবে তারা গাজার মুসলিম গণহত্যার অর্থায়নে অংশগ্রহণকারী। আমাদের মুসলিম দেশগুলোতে যে সকল পণ্যের বিকল্প রয়েছে; চাই সেগুলোর মূল্য কম হোক কিংবা বেশি, সেই সমস্ত পণ্য ইউরোপ, পশ্চিমা বিশ্ব আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও চীনের কাছ থেকে ক্রয় করা হারাম। একই কথা প্রযোজ্য এমন যেকোনো দেশের ব্যাপারে যারা ইহুদীদেরকে রাজনৈতিকভাবে, সামরিকভাবে অথবা অর্থনৈতিকভাবে সমর্থন করে যাচ্ছে।
আকাশ পথে হামলার জটিলতা নিরসন:
বিমান তথা উড়োজাহাজ এক বিরাট বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই যুদ্ধের ময়দান থেকে এই বিমানকে বের করে দেয়া সম্ভব হবে তার দুর্বলতার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে আঘাত করার মাধ্যমে। তন্মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে বিমানবন্দর সমূহ, সামরিক বিমান ঘাঁটি, গোলাবারুদ ও জ্বালানি ডিপো, পাইলট, অস্ত্র প্রযুক্তির এক্সপার্ট, স্থলে অবস্থানকারী পাইলট এবং বিমান সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান ও সেক্টর।
প্রথম হলো ড্রোন বিমান: ড্রোন বিমানের দুর্বল পয়েন্ট অনেকগুলো। এগুলো ধীরগামী। উচ্চতায় কম, রাডারে চিহ্নিত করা সহজ। একইভাবে আগুনের মাধ্যমে এগুলোর মোকাবিলা করা, এগুলোকে বিভ্রান্ত করা এবং নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। পাশাপাশি এগুলোর আরো কিছু দুর্বল পয়েন্ট হলো: যে স্থান থেকে এগুলোকে চালানো হয় সে সমস্ত ঘাঁটি, এগুলো চালনাকারী এক্সপার্ট দল, যে সমস্ত টেকনোলজি সেন্টারে এগুলো তৈরি হয়, যে সমস্ত গুপ্তচর এগুলোর কাছে তথ্য সরবরাহ করে অথবা চিপ বসানোর মাধ্যমে এগুলোর কাছে দিকনির্দেশনা প্রেরণ করে ইত্যাদি। এগুলোর সাথে আনুষঙ্গিক বিষয় যত বেশি হবে সেই সব কিছুই দুর্বল পয়েন্ট হিসেবে আমাদের সামনে থাকবে এবং আমাদের শক্তি অনুযায়ী প্রতিটি পয়েন্টে আমরা আঘাত করতে পারব। এক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে গুপ্তচর চিহ্নিত করে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করার মাধ্যমে শত্রুদেরকে অন্ধ করে দেয়া, সামরিক ঘাঁটি বা ড্রোন বিমানের ঘাঁটি অথবা এগুলোর প্রযুক্তি কক্ষ টার্গেট করে অভূতপূর্ব অপারেশন পরিচালনা করা। স্থলে অবস্থানকারী যে সমস্ত বিমান এক্সপার্ট অথবা পাইলট বিমান চালায়, নেতৃত্ব দেয়, তাদেরকে হত্যা অথবা অপহরণমূলক অপারেশন চালানো। এমনিভাবে বিমানের জ্বালানি ও গোলাবারুদ ডিপোতে বিস্ফোরণ ঘটানো, এগুলোর কাজে যে সমস্ত এক্সপার্ট ব্যক্তি নিয়োজিত তাদেরকে অপহরণ অথবা হত্যা করা। এভাবেই এই ভয়াবহ অস্ত্রের মোকাবেলা করা সম্ভব। এমনকি শুরু থেকেই বৈদ্যুতিকভাবে নির্দেশিত আত্ম-উৎসর্গী বিমানগুলোর মোকাবেলা করাও সম্ভব। কারণ এগুলো অল্প রেঞ্জের মধ্যেই চলে আর তা থেকে বোঝা যায়, এগুলো যেখান থেকে আসছে, যেখান থেকে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং যারা এগুলো চালাচ্ছে, তারা আমাদের হাতের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। তাই আমাদের ভূখণ্ডে তথ্য সরবরাহের কাজে আমাদের যে সমস্ত গোয়েন্দা রয়েছেন তাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে উপর্যুক্ত আত্মঘাতী বিমান প্রেরণকারীদের ক্ষতি সাধন করা সম্ভব। শত্রুপক্ষের মাঝে ফাটল ধরানোর জন্য এবং শত্রু সারিতে খুব গভীরে ক্ষতিসাধনের জন্য আমাদের বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত অংশটিরও এক্ষেত্রে ভূমিকা থাকতে পারে। এমনিভাবে শত্রুপক্ষের মাঝে আমাদের কিছু লোক থাকবে যারা আমাদেরকে তথ্য সরবরাহ করবে, বিমান হামলার বিভিন্ন পরিকল্পনা বিভ্রান্ত করবে।
এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ আরো একটি পয়েন্ট হচ্ছে প্রতিটি ফ্রন্টে এবং রণাঙ্গনের সর্বত্র মুজাহিদদের মাঝে যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা, জনসাধারণের সঙ্গে উত্তমরূপে যোগাযোগ রক্ষা করা, তাদেরকে দীক্ষিত করা, ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রশিক্ষণ, বিস্ফোরক দ্রব্য এবং সেগুলো নিক্ষেপের উপযোগী করে তৈরির প্রশিক্ষণ। কারণ আমাদের লড়াই অস্তিত্ব রক্ষার। তাই উম্মাহর প্রতিটি সন্তানকেই এখানে প্রয়োজন। পূর্ব থেকে পশ্চিম গোটা বিশ্বের সমর বিশেষজ্ঞ এই উম্মাহর সন্তানেরা নিজেদের মাঝে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত, আবিষ্কার ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন, যেন শত্রুপক্ষের ভয়ানক অস্ত্রের মোকাবেলায় ব্যাপক স্ট্র্যাটেজি ও কৌশল অবলম্বন করা যায়।
দ্বিতীয়ত, জেট বিমান ও হেলিকপ্টার:
কাঁধের ওপর বহনযোগ্য বিধ্বংসী রকেট লাঞ্চার দিয়েই এই সমস্ত বিমান ভূপাতিত করা যায়। আবার স্থলঘাঁটি থেকে নিক্ষেপ করা যায়। তবে এই সমস্ত রকেটের জন্য যেরকম রাডার প্রয়োজন এবং যেই প্রযুক্তি দরকার, তা ক্রয় করা, ব্যবস্থা করা, সেগুলো পরিবহন এবং সেগুলো নিয়ে উপযুক্ত জায়গায় পৌঁছা একটু কঠিন হতে পারে। তবে হেলিকপ্টার ও জেট বিমানগুলো যে জায়গা থেকে উড়ে আসে সেখানে অনুপ্রবেশ করা অথবা বিস্ফোরক ও বিধ্বংসী ড্রোনের মাধ্যমে সে জায়গাগুলোর ক্ষয়ক্ষতি করা, পাইলট ও টেকনিশিয়ানদের হত্যা করা, তাদের পরিবারকে হুমকি দেওয়া, গোলাবারুদ ডিপো ও জ্বালানি ভাণ্ডার উড়িয়ে দেওয়া, এমনকি বিমানবাহী রণতরীও বুদ্ধিমত্তার সাথে মোকাবিলা করা যেতে পারে। দেড় টন বিস্ফোরক বোঝাই একটি ছোট নৌকা আড়াই দশক আগে এডেনে একটি আমেরিকান ডেস্ট্রয়ারকে সরিয়ে দিয়েছিল। পরিবর্তনের জন্য, শত্রু এবং তার মিত্রদের আঘাত করার জন্য একটি উন্মুক্ত দিগন্তের প্রয়োজন। আরো প্রয়োজন এমন আত্মোৎসর্গী একদল কর্মী যারা উম্মাহ ও দীনের সাহায্যের জন্য সর্বস্ব বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত।
তৃতীয়ত, উম্মাহর সন্তানদের ভেতর থেকে একদল হ্যাকার থাকতে হবে, যারা শত্রুর নিরাপত্তা ও সামরিক ব্যবস্থায় নাশকতা ঘটাতে পারে। এটা এমন একটা শক্তি যা এখন পর্যন্ত শত্রুপক্ষকে বাধা দেয়ার জন্য সেভাবে ব্যবহৃত হয়নি। ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র বা এমনকি জেট প্লেন নেভিগেশন সিস্টেম অক্ষম করা, জ্যাম করা বা টার্গেট প্রোগ্রামিং হ্যাক করা ইত্যাদি কাজ এমন এক একটি অস্ত্র, যা জাদুকরের বিরুদ্ধেই তার জাদু কাজে লাগাতে পারে। এই কাজগুলো যারা করবে, তাদের অবশ্যই নিরাপত্তা ও তথ্যের ক্ষেত্রে প্রকৃত নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে, শত্রুর প্রতিষ্ঠানগুলি— বিশেষ করে বিদ্যুৎ, জল, স্থল, সমুদ্র এবং বিমান পরিবহন সম্পর্কিত বেসামরিক সংস্থাগুলোর কার্যক্রম ব্যাহত করতে হবে। সেই সাথে শত্রুর পারমাণবিক স্থাপনাগুলিকে ধ্বংস করতে হবে, যা দিয়ে তারা রাতদিন আমাদেরকে হুমকি দেয়। পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো ধ্বংস এবং ব্যবহারের অনুপযুক্ত করে দিতে হবে। শত্রুর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর আঘাত করে তাদের অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করতে হবে... এই কয়েকটা কথায় আসলে আমাদের সামনের টার্গেট এবং আমাদের চিন্তাধারার সবটুকু উঠে আসবে না কিন্তু মুক্তির পথে এগুলো রোপিত চারা ও বপনকৃত বীজ।
চতুর্থত, উম্মাহকে তার হাতে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্রের ব্যাপারে সচেতন করে তোলা। এই অস্ত্র দিয়ে শত্রুর মাঝে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন ও প্রভাব বিস্তার করা সম্ভব। তাই এই অস্ত্রগুলোর চর্চা উন্নয়নে আমরা কাজ করব তার ধরন অনুসারে। সেটা স্ট্র্যাটেজিক অপারেশনে হতে পারে অথবা ট্যাকটিক। আমরা বলতে পারি উম্মাহর কাছে এমন তিনটি অস্ত্র রয়েছে যা মোকাবেলা করার সাধ্য শত্রুর নেই। তন্মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে: শহীদি অপারেশন তথা আত্মোৎসর্গী হামলা। শুধু স্ট্র্যাটেজিক অপারেশনে এই কাজ করা যেতে পারে; কারণ শুধু শুধু রাজনৈতিক অথবা সামরিক এমন কোনো লক্ষ্যে আঘাত হানার জন্য কোনো প্রাণ বিনষ্ট করা উচিত নয়, যেখানে বোমা বর্ষণ অথবা সামরিক অপারেশনের মাধ্যমে উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যায়। আমাদের হাতে থাকা আরেকটি অস্ত্র ট্যাকটিক্যালি অত্যন্ত কার্যকর: বিস্ফোরকের শক্তি, কারণ আমরা বোবি-ট্র্যাপিং (ফাঁদ) অপারেশন, গুপ্তহত্যা, অভিযান এবং অতর্কিত হামলা চালাতে পারি যা শত্রুদের পঙ্গু করে দেবে— বিশেষ করে যদি অপারেশনগুলো শত্রু অঞ্চলে অথবা বৈধ টার্গেটে হয়। এই অপারেশনগুলো শত্রুদের মাঝে নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ তৈরি করবে এবং আরো বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে, যা ফিলিস্তিনে জায়নবাদী ও ইহুদীবাদীদের সমর্থনকারী শক্তিগুলোকে হাত গুটিয়ে নিতে বাধ্য করবে। নতুন পুরাতন একটি অস্ত্র পিস্তল, যা একাকী অপারেশনের ক্ষেত্রে খুবই সুবিধা জনক, সব মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে; যদি আমরা সাহসী হৃদয়ে তার সাথে একটি সাইলেন্সার যোগ করি, তাহলে শত্রুর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, মিডিয়া এবং অন্যান্য সেক্টরের শীর্ষ ব্যক্তিরা আমাদের হাতের নাগালে সহজ টার্গেটে পরিণত হবে। শত্রুর সবচেয়ে প্রাণঘাতী অস্ত্র হলো: মনোবল। সেটাই আমাদের ভেঙে দিতে হবে। আর এই কাজগুলো উৎসারিত হবে আমাদের হৃদয়ের ভালোবাসা থেকে— আত্ম-উৎসর্গ, আল্লাহর জন্য, তাঁর দীনের জন্য, সম্মান ও গৌরবের জন্য নিজেকে বিলীন করে দেয়ার ভালোবাসা। কথা ও কাজের মাধ্যমে এই সুপ্ত ভালোবাসা স্থায়ী করে রাখতে হবে। কারণ ইজ্জত সম্মান এবং গৌরব বহনকারী অপারেশনগুলো উম্মাহর নীরব শক্তি ভাণ্ডারে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দেয়। সাজানো গোছানো কথামালা, চেতনা উদ্দীপক কাব্য, নাশিদ ইত্যাদি মানুষের হাতে অস্ত্র তুলে দেয় না বটে কিন্তু সেগুলোর কারণে সকল মানুষ অস্ত্রের দিকে ছুটতে থাকে।
***