AQS এর NGH ম্যাগাজিনসহ মুজাহিদদের গুরুত্বপূর্ণ রিসালা অনুবাদে আগ্রহী ভাইয়েরা সাড়া দিন!
الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وعلى آله وصحبه ومن والاه، أما بعد
الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وعلى آله وصحبه ومن والاه، أما بعد
হামদ ও সালাতের পর-
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ.
প্রিয় দ্বীনি ভাইয়েরা! আমরা জানি যে, বর্তমান সময়ে মুসলিম উম্মাহ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। মাজলুম উম্মাহর আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ক্রমেই ভারি হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে খোরাসানের পুণ্যভূমি আফগান থেকে আসন্ন বিজয়ের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। আল্লাহ যেন বিজয়ের ক্ষণকে ত্বরান্বিত করেন ও মুসলিমদের হৃদয়কে প্রশান্ত করেন।
পর কথা হলো-
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেছেন-
وَ سَارِعُوْۤا اِلٰی مَغْفِرَةٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَ جَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمٰوٰتُ وَ الْاَرْضُ اُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِیْنَ
“তোমরা তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে ক্ষমা এবং এমন জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও, যার প্রশস্ততা হবে আকাশসমূহ ও জমিনসম। তা মুত্তাকিদের জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।” [সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৩৩]
অন্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন-
فَاسْتَبِقُوْا الْخَیْرٰتِ.
“তোমরা কল্যাণকর কাজে প্রতিযোগিতা করো।” [সূরা বাকারা (২) : ১৪৮]
“তোমরা তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে ক্ষমা এবং এমন জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও, যার প্রশস্ততা হবে আকাশসমূহ ও জমিনসম। তা মুত্তাকিদের জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।” [সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৩৩]
অন্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন-
فَاسْتَبِقُوْا الْخَیْرٰتِ.
“তোমরা কল্যাণকর কাজে প্রতিযোগিতা করো।” [সূরা বাকারা (২) : ১৪৮]
হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنَ النّاسِ: الصِّحّةُ وَالْفَرَاغُ
অর্থ: “দু’টি নিআমত এমন, যার বিষয়ে অনেক মানুষ ধোঁকায় থাকে; সুস্থতা ও অবসর।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৪১২]
অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন-
مِنْ حُسْنِ إِسْلاَمِ الْمَرْءِ تَرْكُهُ مَالاَ يَعْنِيهِ
অর্থ: “মানুষের ইসলামের একটি সৌন্দর্য হল, যে কাজে দ্বীন বা দুনিয়ার কোনো ফায়দা নেই তা ছেড়ে দেয়া।” [জামে তিরমিযী, হাদীস নং-২৩১৮]
উপরোক্ত আয়াতদ্বয় ও হাদীসদ্বয়ের অর্থ দ্বারাই এগুলোর মর্মার্থ ও আবেদন আমাদের সবার নিকট সুস্পষ্ট। তাই আমার পক্ষে এগুলোর বিশদ ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।
প্রিয় দ্বীনি ভাইয়েরা! আপনারা আরো জানেন যে, করোনা ভাইরাস সংকটে পুরো বিশ্ব আজ স্থবির। বাংলাদেশেও চলছে লকডাউন/শাটডাউনের মহড়া। যার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে সমস্ত মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি বন্ধ। বন্ধ অধিকাংশ অফিসও। তো চলমান পরিস্থিতির কারণে অধিকাংশ মানুষই নিজ নিজ বাসস্থানে আছেন। উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে মানুষজন লম্বা একটা অবসর সময় পেয়েছেন। তাই আমাদের উচিত- এই অবসর সময়টাকে গনিমত মনে করে কাজে লাগানো। অনর্থক ও দ্বীন বা দুনিয়ার কোনো ফায়দা বিহীন কাজে সময়কে নষ্ট না করা।
অন্যদিকে এই অবস্থায় শুধু আমরা মুসলিমরা একা না। গোটা বিশ্বের কাফের- মুশরিকরাও আজ নিজ নিজ বাড়িতে বন্দী। বাড়িতে থেকেও তাদের সময় কাটছে গুনাহের মধ্যে। আর আমাদের সময় কাটছে ইবাদত ও ইস্তেগফারে।
প্রিয় ভাইয়েরা, ইবাদত ও ইস্তেগফারের বাইরে যে সময়টা আপনি পাচ্ছেন সেটা কি এই মাজলুম উম্মাহের জন্য দেয়া যায় না?
অনেক ভাইয়েরা আফসোস করতেন সময় নেই বলে। আজ আপনার রব আপনাকে অবসর দিয়ে পরীক্ষা করে নিচ্ছেন আপনার সেই আফসোস সত্যি ছিল কিনা?
প্রিয় দ্বীনি ভাইয়েরা! দুনিয়ায় মানুষের জীবনে নানা অবস্থার সূত্রপাত হবে। এটা নিয়েই আমাদেরকে কাজ করতে হবে। আমাদের সময়গুলোকে মহিমান্বিত ও কল্যাণপূর্ণ করতে হবে। তো জীবনের নানা অবস্থা কীভাবে মহিমান্বিত হয়? এ ব্যাপারে উর্দূতে একটি পংক্তি আছে-
زمانہ بيك حال رہتا نہیں + گذشتہ زمانہ پهر آتا نہیں
“সময় কখনো এক অবস্থায় থাকে না। আর যে সময় যায় তা আর ফিরে আসে না।”
“সময় কখনো এক অবস্থায় থাকে না। আর যে সময় যায় তা আর ফিরে আসে না।”
মানুষের জীবন নিত্য পরিবর্তনশীল। সুখ-দুখ, সচ্ছলতা-অসচ্ছলতা, সুস্থতা-অসুস্থতা, সফলতা-ব্যর্থতা ইত্যাদি নানা অবস্থা নিয়েই জীবন। এই নানা রূপ-অবস্থার মধ্য দিয়েই জীবন এগিয়ে চলে এবং সময় ফুরোতে থাকে। জীবনের অনভিপ্রেত অনাকাঙ্খিত অবস্থাগুলোকে জীবন থেকে বিয়োগ করা যায় না। এগুলো জীবনেরই অংশ।
এই অবস্থাগুলোও কি মহিমান্বিত ও কল্যাণপূর্ণ হতে পারে? এমন কোনো উপায় কি আছে, যার দ্বারা জীবনের এই অংশটিও ইতিবাচক হতে পারে? সঞ্চয়ের খাতায় কিছু যোগ করতে পারে? জী, সে উপায় আছে এবং তা মুমিনের জন্য।
তো আমার মুমিন ভাইয়েরা! আমাদের এই অবসর সময়টাকে মহিমান্বিত ও কল্যাণপূর্ণ করতে আমরা নতুনভাবে ফোরামে ‘অনুবাদ প্রজেক্ট’ নামে নতুন একটি প্রজেক্ট চালু করতে যাচ্ছি। আমরা আশা করি- আপনারা আনন্দ ও আগ্রহের সাথে ব্যাপকভাবে অংশগ্রহন করবেন এবং এই অবসর সময়টাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগাবেন। কারণ, জীবনে দ্বিতীয়বার এমন সুযোগ পাবেন কিনা? তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
কারা কারা অংশগ্রহন করতে পারবেন?
যারা যারা আরবী, উর্দূ ও ইংরেজী ভাষা থেকে অনুবাদ করতে পারেন, তারা সকলেই অংশগ্রহন করতে পারবেন।
কিভাবে অংশগ্রহন করবেন?
ফোরামের এই পোস্টের নিচে কমেন্ট করে জানাবেন ও তার সাথে সাথে একক মশওয়াহতে যোগাযোগ করবেন।
পরিশেষে আমার দ্বীনি ভাইয়েরা! নেক কাজে বিলম্ব নয়। তাই আজকের সুযোগকে, সুস্থতা ও অবসরকে আল্লাহ তা‘আলার নিআমত মনে করে কাজে লাগাতে হবে। আজকের কাজ আজকেই করতে হবে। ভবিষ্যত অনুশোচনা থেকে মুক্তির পথ এই একটাই।
নতুবা আমাদের হালত এমনই হয়ে যাবে, যেমনটি ফিকহ ও হাদীস উভয় শাস্ত্রের আলেম উজির ইয়াহইয়া ইবনে হুবায়রা বলেছিলেন-
الوقت أنفسُ ما عُنِيتَ بحفظِه.
وأراه أسهلَ ما عليك يَضِيع.
অর্থাৎ তুমি যা কিছু সযত্বে সংরক্ষণ করবে তার মধ্যে সময়ই ছিল সবচেয়ে মূল্যবান; অথচ এটাই তোমার কাছে সবচেয়ে মূল্যহীনভাবে বিনষ্ট হয়ে যায়।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আমাদেরকে সময়ের মূল্য বুঝার তাওফীক দান করুন। আমাদেরকে কবুল করে নিন। সদকায়ে জারিয়ার এই মহতি প্রজেক্টে অংশগ্রহনের তাওফীক দান করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।
***********
মৃত্যুর পূর্বেই কিছু করে যাও:
হযরত মাজযুব রাহ. বলেন, বাহ্যিক সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হলে নশ্বর পৃথিবী দ্বারা ধোঁকা খাবে। পৃথিবী তো নকশওয়ালা সাপ, যা দংশন করে।
মনে রেখো অন্যথায় পস্তাবে। একদিন তো মরতে হবে। আখের হল মৃত্যু। সুতরাং যা করার করে নাও।
**************
وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين، وصلى الله على نبينا محمد.
Comment