হাকীমুল উম্মাহ মুহাজিদ শাইখ ডঃ আইমান আল-যাওয়াহিরি বলেছেনঃ
আইসিস তাকফিরের উন্মাদনায় উন্মত্ত হয়ে গেছে এবং জাবহাত আল-নুসরার মুজাহিদিনের সম্মানিতা, পবিত্র স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করে তাদেরকে যিনাকারী[১] আখ্যায়িত করার মাধ্যমে তারা সমস্ত সীমালঙ্ঘন করেছে। ইতিপূর্বে তারা আল-ক্বাইদার উপর অপবাদ আরোপ করেছে এবং বলেছে আল-ক্বাইদা নাকি সেই ব্যাভিচারির ন্যায়, যে নিজেকে পবিত্র দাবি করে। এ হল তাদের অধঃপতনের নমুনা, তারা এই জঞ্জালের বেসাতি করে। এই হল “নাবুওয়্যাতের মানহাজের খিলাফাহ”-র অবস্থা?
ইতিপূর্বেও আমি বলেছি, তাদের দ্বারা শাইখ আবু খালিদ আস-সুরির হত্যা, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয় আলজেরিয়াতে শাইখ মুহাম্মাদ সাইদ, শাইখ আব্দুর রাজ্জাক এবং তাদের ভাইদের হত্যাকান্ডকে। এ দুই মাশাায়খের হত্যাকান্ডের মাধ্যমে GIA [২] এর নৈতিক অধঃপতনের প্রকৃত রূপ প্রকাশিত হয়েছিল, আর নৈতিক পতনের পর জামা’আ হিসেবেও GIA এর পতন ঘটেছিল। একইভাবে, আমি মনে করি আবু খালিদ আস-সুরির হত্যাকান্ড, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, হল তার হত্যাকারীদের নৈতিক অধঃপতনের প্রকাশ, আর অনেক ক্ষেত্রেই কোন জামা’আর নৈতিক পতনের পর জামা’আ হিসেবেও তাদের পতন ঘটে।
আবু খালিদ আস-সুরির হত্যাকান্ড, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, আধুনিক যুগের তাকফিরি চরম্পন্থীদের বিকৃতি ও পাপাচারের এমন একটি দিককে প্রকাশ করে দিয়েছে, যা ইতিপূর্বে অপ্রকাশিত ছিল। পূর্ব যুগের আদি খারেজি আর এই তাকফিরি চরমপন্থীদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আদি যুগের খারেজিরা তাদের কৃতকর্ম উচ্চস্বরে ঘোষণা করতো আর তা নিয়ে গর্ব করতো। আবদুর রাহমান ইবন মুযলিম যখন সাইয়্যেদিনা ‘আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে তরবারী দ্বারা আঘাত করেছিল, সে চিৎকার করে বলছিলঃ আল্লাহ-র হুকুম ছাড়া কোন শাসন নেই, এ (শাসন) তোমারও নয়, তোমাদের সাথীদের জন্যও নয়!“ কিন্তু আজকের এদের অবস্থা হল এরা খুন করে, গুপ্তহত্যা করে, কিন্তু আদি খারেজিদের মতো নিজেদের কাজের ঘোষণা দেবার, দায়স্বীকার করার সাহস তাদের নেই। কারণ তারা চায় না তাদের প্রকৃত রূপ সকলের সামনে প্রকাশিত হয়ে পড়ুক। আবু খালিদ আস-সুরির, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, হত্যাকারীর কাপুরুষ! তারা অন্য পথভ্রষ্টদের উৎসাহিত করে মুসলিমদের হত্যা করার জন্য, কিন্তু নিজেদের কাজের দায়িত্ব নেয়ার সাহসটুকু তাদের নেই।
আবু খালিদের হত্যার মাধ্যমে প্রকাশিত এই পার্থক্য ছাড়া আদি খারেজি আর আধুনিক যুগের এই তাকফিরি চরমপন্থীদের মধ্যে অন্য কিছু পার্থক্যও বিদ্যমান। আদি খারেজিরা মিথ্যা বলাকে কুফর গণ্য করতো। আর আধুনিকে যুগের তাকফিরি চরমপন্থীদের বৈশিস্ট্যই হল মিথ্যাচার। এমনকি তাদের নেতারাও মিথ্যা বলতে লজ্জা পায় না। এমনকি অনেক সময় এক মিথ্যা, আরেক মিথ্যার সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে দাড়ায়। তাদের একজন কিছু একটা ঘোষণা করে [যেমন – আবু মুহাম্মাদ আল-আদনানী], তার কিছুদিন পর সে সবার সামনে নির্লজ্জের মতো তা অস্বীকার করে। আদি খারেজিরা বাই’য়াহ (আনুগত্যের শপথ) ভঙ্গ করাকে কুফর গণ্য করতো। আধুনিক যুগের তাকফিরি চরমপন্থীরা বাই’য়াহ থেকে বাই’য়াতে লাফিয়ে বেড়ানোকে রাজনৈতিক ধূর্ততা মনে করে, আর তাদের ক্ষমতার তৃষ্ণা মেটানোর জন্য তারা একে (বাই’য়াহ) ব্যবহার করে। আদি যুগের খারেজিরা গুনাহ করার কারণে মুসলিমদের তাকফির করতো। আধুনিক যুগের তাকফিরি চরমপন্থীরা তাকফির করে সন্দেহ আর মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে। এমনকি তারা নেক আমলের কারণে মুসলিমদের কাফির ঘোষণা করে। আদি খারেজিদের তাকফির করার প্রবণতা ছিল তাদের আক্বিদার সাথে সম্পর্কিত। আর আধুনিক তাকফিরি চরমপন্থীদের তাকফির হল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সুবিধাবাদী, সুযোগসন্ধানী তাকফির। যে তাদের সাথে একমত পোষণ করে, অথবা যার আস্থে সম্পর্ক রাখাকে তারা লাভজনক মনে করে, তারা তার ভূয়সী প্রশংসা করে। তারউপর তারা সেই ব্যক্তিকে ক্রমাগত তাদের ব্যাপারে বক্তব্য দেয়ার এবং তাদের প্রশংসা করার অনুরোধ জানায়, যাতে করে মানুষে চোখে তারা সম্মানিত এবং প্রশংসার পাত্র হতে পারে। আর যে তাদের সাথে একমত পোষণ করে না, তারা তার ব্যাপারে মিথ্যাচার করে, অপবাদ দেয় এবং তাকে কাফির ঘোষণা করে। তারা অনুসরণ করে তাকফির, বিস্ফোরণ, বহিষ্করণ, শোষণ ও স্বেচ্ছাচারিতার মানহাজ।
একইভাবে আইসিসের “দাবিক্ব” ম্যাগাযিন আবু আবদুর রাহমান আমীনের (জামাল যাইতুনী), “রাব্বুল ‘আলামীনের নির্দেশনা”[৩] শীর্ষক বক্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আর এটা তাদের পতনের একটি চিহ্ন। শামের আরিহা শহর মুক্ত হবার পর, আরিহার মাসজিদে সিয়ামপালনকারী মুজাহিদিন ও মুসলিমদের ওপর আইসিসের হামলা, সুদানের ওমদুরমানে আনসার সুন্নাহ মাসজিদের মুসল্লিদের উপর মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল-খিলাইফি ও তার অনুসারীদের চালানো হত্যাযজ্ঞের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।(১৯৯৪ সালের ১৯শে সেপ্টেম্বর সুদানের ওমদুরমানে “তাকফির ওয়াল হিজরাহ/জামাতুল মুসলিমীন/জামাত আল-খিলাফাহ” নামক দলের এ হামলায় কমপক্ষে ১৯ জন সালাতরত মুসল্লি নিহত হন। এ হামলার পর একই দলের আব্বাস আল-বাক্বির ২০০০ সালের ৮ই ডিসেম্বর একই রকম একটি হামলা চালায় আনসার সুন্নাহর জারাফা মাসজিদে সালাতরত মুসল্লিদের উপর। ২২ জন মুসল্লি নিহত হন। এ হামলাটিও ওমদুরমানে সংঘটিত হয়।) তারপর তারা আল-খার্তুমে শাইখ উসামার একটি গেস্টহাউসেও আক্রমণ চালায়, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন।
যখন আল-খিলাইফিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কেন তারা আনসার সুন্নাহ মাসজিদে হামলা করেছে, সে জবাব দিয়েছিল, এটা মাসজিদ না, মুশরিকদের মন্দির। যখন তার কাছে শাইখ উসামার, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, গেস্টহাউস আক্রমণের কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল, সে বলেছিল – শাইখ উসামা হল সর্বাপেক্ষা গোমরাহ ব্যক্তি। তাই আগে তাকে হত্যা করেই শুরু করা উচিৎ। আর পেশাওয়ারে এই তাকফিরি চরমপন্থীরা আমাকে কাফির ঘোষণা করেছিল কারণ আমি আফগান মুজাহিদিনকে কাফির মনে করি না। তারপর তারা শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসি হাফিযাহুল্লাহর উপর তাকফির করেছিল, কারণ তিনি আমাকে কাফির মনে করেন না।
এলোকেরা দাবি করতো তারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আর মানহাজে আছে, এবং তারা গুনাহ করার কারণে মুসলিমদের কাফির ঘোষণা করে না। যেমন আজকে জামাতুল বাগদাদী দাবি করছে। তারা দাবি করছে তারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আর মানহাজে আছে। অথচ তারা মুসলিমদের কাফির ঘোষণা করছে, মিথ্যা অপবাদ আর সন্দেহের ভিত্তিতে আর এমন কাজের কারণে যে কাজের কারণে কোন মুসলিমকে কাফির ঘোষণা করা যায় না। এমনকি তারা ভালো কাজ এবং কুর’আন ও সুন্নাহর অনুসরণের জন্যও মুসলিমদের তাকফির করে। যেমন তারা আবু সাইদ আল-হাদরামির, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, উপর তাকফির করেছিল কারণ তিনি FSA এর কাছ থেকে আনুগত্য ও জিহাদের শপথ (বাই’য়াহ) গ্রহণ করেছিলেন [৪]। আর তারা আমাকে কাফির ঘোষণা করেছে কারণ আমি নাকি সংখ্যগরিষ্ঠের অনুসরণ করি, আর আমি তাউয়াগীতের উপর তাকফির করি না, আমি মযলুম জনগণের বিপ্লবকে (আরব বসন্ত) সমর্থন জানিয়েছি, কারণ আমি বন্দী মুহাম্মাদ মুরসিরকে উদ্দেশ্য করে কোমল ভাষায় কথা বলেছি – এসব কারণে আমি কাফির। অথচ আমি দাওয়াহর ব্যাপারে কুর’আন ও সুন্নাহর নির্দেশনার অনুসরণ করছিলাম। কিন্তু এই তাকফির আর অপবাদের প্রকৃত কারণ হল, আমি মুসলিমদের রক্ত সংরক্ষণের চেষ্টা করেছি এবং তাদের ক্ষমতালিপ্সার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছি।
আমি মিশরে বিভিন্ন ধরণের তাকফিরিদের খুব কাছ থেকে দেখেছি[৫]। তাদের সত্তরের দশকে আমি তাদের যুক্তিখণ্ডন করে একটি লেখা লিখেছিলাম, এবং হাতেলেখা এই যুক্তিখণ্ডন প্রচার ও করেছিলাম। যারা দ্বীনের সকল মধ্যে গোমরাহী ও বিদ’আ প্রত্যাখ্যান করে, তাকফিরিরা এমন সব মুসলিম যুবকদের উৎসাহ ও উদ্দীপনার অপব্যবহার করে। একারণে অনেক সত্যান্বেষী যুবক না বুঝে তাদের ফাঁদে পা দেয়, এবং তাদের সাথে যোগ দেয়। কিন্তু তাদের অনুসারীদের থেকেই আমরা জানতে পেরেছি, যারা তাদের সাথে যোগ দেয় তাদেরমধ্যে অনেকেই পরবর্তীতে তাদেরকে ত্যাগ করে। আর এটি একটি সুসংবাদ। আর যারা তাদের ছেড়ে আসে, তারা আহলুস সুন্নাহর মানহাজ আঁকড়ে ধরার ব্যাপারে অত্যন্ত দৃঢ় হয়ে থাকে, এবং তাদের পূর্বের অভিজ্ঞতার কারণে মুসলিমদের জান ও মালের হেফাযতের ব্যাপারে অত্যন্ত যত্নশীল হয়ে থাকে। আর একারণেই আমাদের তাদের প্রতি দাওয়াহ অব্যাহত রাখতে হবে। যাতে করে আমরা তাদের সামনে বাস্তবতা তুলে ধরতে পারি এবং তাদের মিডিয়ার মিথ্যাচার উন্মোচন করতে পারি। কারণ কোন মিডিয়া যতোই চাকচিক্যময় হোক না কেন। যতোই মিথ্যাচার করুক না কেন, সত্য সত্যি থাকবে, মিথ্যা মিথ্যাই থাকবে। আনুগত্য আনুগত্যই থাকবে, আর বিশ্বাসঘাতকতা বিশ্বাসঘাতকতাই থাকবে।
——
সম্প্রতি প্রকাশিত শাইখের অডিও বিবৃতি “শাম- আপনার ঘাড়ের উপর আমানত” থেকে সংকলিত।[http://justpaste.it/ISIS_downfall]
——
১। জামাতুল বাগদাদীর প্রকাশিত ম্যাগযিন দাবিক্বে উম্ম সুমাইয়্যা নামের এক লেখিকা ফাতাওয়া দেয়, শামেরর সকল মুজাহিদ জামা’আর অন্তর্ভুক্ত মুজাহিদিনের সাথে তাদের স্ত্রীদের তালাক হয়ে গেছে। কারণ শামের সকল মুজাহিদিন মুরতাদীন হয়ে গেছে। একারণে এ নারীরা এখন যিনার অবস্থায় আছে।
২। GIA – Groupe Ismaique Army/ইসলামী সশস্ত্র দল। নব্বইয়ের দশকে আলজেরিয়াতে উত্থান ঘটা একটি খারেজি জামা’আ। তারা প্রথমে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আর মানহাজের ছিল, পরবর্তীতে তারা আলজেরিয়ার সকল মুসলিমদের তাকফির করে, তাদের হত্যা করে এবং মুসলিমদের স্ত্রীদের দাসী হিসেবে গ্রহণ করে, ধর্ষণ করে, এমনকি মুসলিমদের সন্তানদেরকেও হত্যা করে।
৩। আবু আব্দুর রাহমান আমীন ওরফে জামাল যাইতুনি ১৯৯৪ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর, GIA ঘোষিত খিলাফাতের আমির বা খালিফা নিযুক্ত হয়। মুরগি বিক্রেতার সন্তান যাইতুনি ছিল কৈশোর থেকেই “তাকফির ওয়াল হিজরাহ”-র আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং সে নিয়মিত তাদের হালাকায় অংশগ্রহণ করতো। ১৯৯৫ সালের ৩ই মে, লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাউদী নাগরিকের মালিকানাধীন দৈনিক আল-হায়াতে যাইতুনির একটি বক্তব্য প্রকাশিত হয়, যার GIA এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, কিংবা GIA এর ঘোষিত খিলাফাতকে স্বীকার করে নি, এমন সব আলজেরিয়ানদের উদ্দেশ্য করে সে বলে – “ সকল বিদ্রোহীর স্ত্রীদের অবশ্যই তাদের স্বামীদের ত্যাগ করতে হবে। তাদের বিবাহ বাতিল হয়ে গেছে, কারণ তাদের স্বামীরা মুরতাদীন।“ GIA এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার কারণে এবং বাই’য়াহ না দেয়ার কারণে যাইতুনি সকল আলজেরিয়ানকে মুরতাদ ঘোষণা করে। যেরকম দাবিক্ব ম্যাগাযিনে উম্ম সুমাইয়্যা নামক হতভাগ্যা নারী করেছে, এবং আদনানী আল-কাযযাব তার বক্তব্য শামের স্কল মুজাহিদীনকে মুর*তাদ ঘোষণা করেছে। GIA এবং জামাতুল বাগদাদীর মধ্যে সাদৃশ্য বিস্ময়কর।
যাইতুনির মৃত্যুর পর আলজেরিয়ান গোয়ান্দা বাহিনীর সাবেক সদস্যরা জানায়, যাইতুনি গোয়েন্দাদের হয়ে কাজ করছিল। লা হাওলা ওয়ালা কু’আতা ইল্লাহ বিল্লাহ
৪। FSA [Free Syrian Army] থেকে একটি দল বের হয়ে জাবহাত আল-নুসরার কমান্ড্যার আবু সাইদ আল-হাদরামি রাহিমাহুল্লাহ হাতে জিহাদ ও কুর’আন সুন্নাহর অনুসরণের জন্য বাই’য়াহ দেয়। জামাতুল বাগদাদি এ কাজের জন্য আবু সাইদের উপর তাকফির করে এবং তাকে হত্যা করে। এ ব্যাপারে তানজীম আল-ক্বাইদার শূরা সদস্য শাইখ আবু ফিরাস আস-সুরির বিস্তারিত বক্তব্য আছে। অথচ রাসূলুল্লাহ ﷺ নিজে মুশরিক গোত্রদের কাছ থেকে কুর’আন ও সুন্নাহর অনুসরণ ও জিহাদের বাই’য়াহ নিয়েছেন। উপরন্তু জামাতুল বাগদাদি নিজে বিভিন্ন FSA দলের কাছ থেকে বাই’য়াহ নিয়েছে।
৫। আধুনিক যুগে তাকফিরি মতাদর্শের উত্থান ঘটে মিশরে ৬০ দশকের শেষ দিকে। আবুল ‘আল শুকরি মুস্তফা নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে। এই ব্যক্তি “জামাতুল মুসলিমীন” নামে একটি দল গঠন করে। কিন্তু এটি “জামাত আত-তাকফির ওয়াল হিজরাহ” নামে পরিচিতি লাভ করে। শাইখ আইমান হাফিযাহুল্লাহ কৈশোর থেকে জিহাদ আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকার কারণে, মিশরের আল-জিহাদ তানজীমের আমীর হবার সুবাদে সকল আন্ডারগ্রাউন্ড তানজীমের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল ছিলেন। ১৯৭৮ এ শুকরি মুস্তফাকে ফাসি দেয়া হয়। জামাতুল মুসলিমিনের সদস্যদের কিছু অংশ পেশাওয়ারে চলে যায়, কিছু আফগানিস্তানে যায়, আর কিছু আলজেরিয়াতে যায়। পরবর্তীতে আরা জামাতুল খিলাফাহ নামেও পরিচিতি লাভ করে। শাইখ উসামার উপর হামলা এ জামা’আর সদস্যরাই চালায়। তারা পরবর্তীতে বেশ কিছু ভাগে বিভক্ত হয়।
সংগৃহীতঃ https://almurabiteen.wordpress.com/2...6%A4%E0%A6%A8/
আইসিস তাকফিরের উন্মাদনায় উন্মত্ত হয়ে গেছে এবং জাবহাত আল-নুসরার মুজাহিদিনের সম্মানিতা, পবিত্র স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করে তাদেরকে যিনাকারী[১] আখ্যায়িত করার মাধ্যমে তারা সমস্ত সীমালঙ্ঘন করেছে। ইতিপূর্বে তারা আল-ক্বাইদার উপর অপবাদ আরোপ করেছে এবং বলেছে আল-ক্বাইদা নাকি সেই ব্যাভিচারির ন্যায়, যে নিজেকে পবিত্র দাবি করে। এ হল তাদের অধঃপতনের নমুনা, তারা এই জঞ্জালের বেসাতি করে। এই হল “নাবুওয়্যাতের মানহাজের খিলাফাহ”-র অবস্থা?
ইতিপূর্বেও আমি বলেছি, তাদের দ্বারা শাইখ আবু খালিদ আস-সুরির হত্যা, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয় আলজেরিয়াতে শাইখ মুহাম্মাদ সাইদ, শাইখ আব্দুর রাজ্জাক এবং তাদের ভাইদের হত্যাকান্ডকে। এ দুই মাশাায়খের হত্যাকান্ডের মাধ্যমে GIA [২] এর নৈতিক অধঃপতনের প্রকৃত রূপ প্রকাশিত হয়েছিল, আর নৈতিক পতনের পর জামা’আ হিসেবেও GIA এর পতন ঘটেছিল। একইভাবে, আমি মনে করি আবু খালিদ আস-সুরির হত্যাকান্ড, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, হল তার হত্যাকারীদের নৈতিক অধঃপতনের প্রকাশ, আর অনেক ক্ষেত্রেই কোন জামা’আর নৈতিক পতনের পর জামা’আ হিসেবেও তাদের পতন ঘটে।
আবু খালিদ আস-সুরির হত্যাকান্ড, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, আধুনিক যুগের তাকফিরি চরম্পন্থীদের বিকৃতি ও পাপাচারের এমন একটি দিককে প্রকাশ করে দিয়েছে, যা ইতিপূর্বে অপ্রকাশিত ছিল। পূর্ব যুগের আদি খারেজি আর এই তাকফিরি চরমপন্থীদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আদি যুগের খারেজিরা তাদের কৃতকর্ম উচ্চস্বরে ঘোষণা করতো আর তা নিয়ে গর্ব করতো। আবদুর রাহমান ইবন মুযলিম যখন সাইয়্যেদিনা ‘আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে তরবারী দ্বারা আঘাত করেছিল, সে চিৎকার করে বলছিলঃ আল্লাহ-র হুকুম ছাড়া কোন শাসন নেই, এ (শাসন) তোমারও নয়, তোমাদের সাথীদের জন্যও নয়!“ কিন্তু আজকের এদের অবস্থা হল এরা খুন করে, গুপ্তহত্যা করে, কিন্তু আদি খারেজিদের মতো নিজেদের কাজের ঘোষণা দেবার, দায়স্বীকার করার সাহস তাদের নেই। কারণ তারা চায় না তাদের প্রকৃত রূপ সকলের সামনে প্রকাশিত হয়ে পড়ুক। আবু খালিদ আস-সুরির, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, হত্যাকারীর কাপুরুষ! তারা অন্য পথভ্রষ্টদের উৎসাহিত করে মুসলিমদের হত্যা করার জন্য, কিন্তু নিজেদের কাজের দায়িত্ব নেয়ার সাহসটুকু তাদের নেই।
আবু খালিদের হত্যার মাধ্যমে প্রকাশিত এই পার্থক্য ছাড়া আদি খারেজি আর আধুনিক যুগের এই তাকফিরি চরমপন্থীদের মধ্যে অন্য কিছু পার্থক্যও বিদ্যমান। আদি খারেজিরা মিথ্যা বলাকে কুফর গণ্য করতো। আর আধুনিকে যুগের তাকফিরি চরমপন্থীদের বৈশিস্ট্যই হল মিথ্যাচার। এমনকি তাদের নেতারাও মিথ্যা বলতে লজ্জা পায় না। এমনকি অনেক সময় এক মিথ্যা, আরেক মিথ্যার সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে দাড়ায়। তাদের একজন কিছু একটা ঘোষণা করে [যেমন – আবু মুহাম্মাদ আল-আদনানী], তার কিছুদিন পর সে সবার সামনে নির্লজ্জের মতো তা অস্বীকার করে। আদি খারেজিরা বাই’য়াহ (আনুগত্যের শপথ) ভঙ্গ করাকে কুফর গণ্য করতো। আধুনিক যুগের তাকফিরি চরমপন্থীরা বাই’য়াহ থেকে বাই’য়াতে লাফিয়ে বেড়ানোকে রাজনৈতিক ধূর্ততা মনে করে, আর তাদের ক্ষমতার তৃষ্ণা মেটানোর জন্য তারা একে (বাই’য়াহ) ব্যবহার করে। আদি যুগের খারেজিরা গুনাহ করার কারণে মুসলিমদের তাকফির করতো। আধুনিক যুগের তাকফিরি চরমপন্থীরা তাকফির করে সন্দেহ আর মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে। এমনকি তারা নেক আমলের কারণে মুসলিমদের কাফির ঘোষণা করে। আদি খারেজিদের তাকফির করার প্রবণতা ছিল তাদের আক্বিদার সাথে সম্পর্কিত। আর আধুনিক তাকফিরি চরমপন্থীদের তাকফির হল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সুবিধাবাদী, সুযোগসন্ধানী তাকফির। যে তাদের সাথে একমত পোষণ করে, অথবা যার আস্থে সম্পর্ক রাখাকে তারা লাভজনক মনে করে, তারা তার ভূয়সী প্রশংসা করে। তারউপর তারা সেই ব্যক্তিকে ক্রমাগত তাদের ব্যাপারে বক্তব্য দেয়ার এবং তাদের প্রশংসা করার অনুরোধ জানায়, যাতে করে মানুষে চোখে তারা সম্মানিত এবং প্রশংসার পাত্র হতে পারে। আর যে তাদের সাথে একমত পোষণ করে না, তারা তার ব্যাপারে মিথ্যাচার করে, অপবাদ দেয় এবং তাকে কাফির ঘোষণা করে। তারা অনুসরণ করে তাকফির, বিস্ফোরণ, বহিষ্করণ, শোষণ ও স্বেচ্ছাচারিতার মানহাজ।
একইভাবে আইসিসের “দাবিক্ব” ম্যাগাযিন আবু আবদুর রাহমান আমীনের (জামাল যাইতুনী), “রাব্বুল ‘আলামীনের নির্দেশনা”[৩] শীর্ষক বক্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আর এটা তাদের পতনের একটি চিহ্ন। শামের আরিহা শহর মুক্ত হবার পর, আরিহার মাসজিদে সিয়ামপালনকারী মুজাহিদিন ও মুসলিমদের ওপর আইসিসের হামলা, সুদানের ওমদুরমানে আনসার সুন্নাহ মাসজিদের মুসল্লিদের উপর মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল-খিলাইফি ও তার অনুসারীদের চালানো হত্যাযজ্ঞের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।(১৯৯৪ সালের ১৯শে সেপ্টেম্বর সুদানের ওমদুরমানে “তাকফির ওয়াল হিজরাহ/জামাতুল মুসলিমীন/জামাত আল-খিলাফাহ” নামক দলের এ হামলায় কমপক্ষে ১৯ জন সালাতরত মুসল্লি নিহত হন। এ হামলার পর একই দলের আব্বাস আল-বাক্বির ২০০০ সালের ৮ই ডিসেম্বর একই রকম একটি হামলা চালায় আনসার সুন্নাহর জারাফা মাসজিদে সালাতরত মুসল্লিদের উপর। ২২ জন মুসল্লি নিহত হন। এ হামলাটিও ওমদুরমানে সংঘটিত হয়।) তারপর তারা আল-খার্তুমে শাইখ উসামার একটি গেস্টহাউসেও আক্রমণ চালায়, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন।
যখন আল-খিলাইফিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কেন তারা আনসার সুন্নাহ মাসজিদে হামলা করেছে, সে জবাব দিয়েছিল, এটা মাসজিদ না, মুশরিকদের মন্দির। যখন তার কাছে শাইখ উসামার, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, গেস্টহাউস আক্রমণের কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল, সে বলেছিল – শাইখ উসামা হল সর্বাপেক্ষা গোমরাহ ব্যক্তি। তাই আগে তাকে হত্যা করেই শুরু করা উচিৎ। আর পেশাওয়ারে এই তাকফিরি চরমপন্থীরা আমাকে কাফির ঘোষণা করেছিল কারণ আমি আফগান মুজাহিদিনকে কাফির মনে করি না। তারপর তারা শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসি হাফিযাহুল্লাহর উপর তাকফির করেছিল, কারণ তিনি আমাকে কাফির মনে করেন না।
এলোকেরা দাবি করতো তারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আর মানহাজে আছে, এবং তারা গুনাহ করার কারণে মুসলিমদের কাফির ঘোষণা করে না। যেমন আজকে জামাতুল বাগদাদী দাবি করছে। তারা দাবি করছে তারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আর মানহাজে আছে। অথচ তারা মুসলিমদের কাফির ঘোষণা করছে, মিথ্যা অপবাদ আর সন্দেহের ভিত্তিতে আর এমন কাজের কারণে যে কাজের কারণে কোন মুসলিমকে কাফির ঘোষণা করা যায় না। এমনকি তারা ভালো কাজ এবং কুর’আন ও সুন্নাহর অনুসরণের জন্যও মুসলিমদের তাকফির করে। যেমন তারা আবু সাইদ আল-হাদরামির, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন, উপর তাকফির করেছিল কারণ তিনি FSA এর কাছ থেকে আনুগত্য ও জিহাদের শপথ (বাই’য়াহ) গ্রহণ করেছিলেন [৪]। আর তারা আমাকে কাফির ঘোষণা করেছে কারণ আমি নাকি সংখ্যগরিষ্ঠের অনুসরণ করি, আর আমি তাউয়াগীতের উপর তাকফির করি না, আমি মযলুম জনগণের বিপ্লবকে (আরব বসন্ত) সমর্থন জানিয়েছি, কারণ আমি বন্দী মুহাম্মাদ মুরসিরকে উদ্দেশ্য করে কোমল ভাষায় কথা বলেছি – এসব কারণে আমি কাফির। অথচ আমি দাওয়াহর ব্যাপারে কুর’আন ও সুন্নাহর নির্দেশনার অনুসরণ করছিলাম। কিন্তু এই তাকফির আর অপবাদের প্রকৃত কারণ হল, আমি মুসলিমদের রক্ত সংরক্ষণের চেষ্টা করেছি এবং তাদের ক্ষমতালিপ্সার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছি।
আমি মিশরে বিভিন্ন ধরণের তাকফিরিদের খুব কাছ থেকে দেখেছি[৫]। তাদের সত্তরের দশকে আমি তাদের যুক্তিখণ্ডন করে একটি লেখা লিখেছিলাম, এবং হাতেলেখা এই যুক্তিখণ্ডন প্রচার ও করেছিলাম। যারা দ্বীনের সকল মধ্যে গোমরাহী ও বিদ’আ প্রত্যাখ্যান করে, তাকফিরিরা এমন সব মুসলিম যুবকদের উৎসাহ ও উদ্দীপনার অপব্যবহার করে। একারণে অনেক সত্যান্বেষী যুবক না বুঝে তাদের ফাঁদে পা দেয়, এবং তাদের সাথে যোগ দেয়। কিন্তু তাদের অনুসারীদের থেকেই আমরা জানতে পেরেছি, যারা তাদের সাথে যোগ দেয় তাদেরমধ্যে অনেকেই পরবর্তীতে তাদেরকে ত্যাগ করে। আর এটি একটি সুসংবাদ। আর যারা তাদের ছেড়ে আসে, তারা আহলুস সুন্নাহর মানহাজ আঁকড়ে ধরার ব্যাপারে অত্যন্ত দৃঢ় হয়ে থাকে, এবং তাদের পূর্বের অভিজ্ঞতার কারণে মুসলিমদের জান ও মালের হেফাযতের ব্যাপারে অত্যন্ত যত্নশীল হয়ে থাকে। আর একারণেই আমাদের তাদের প্রতি দাওয়াহ অব্যাহত রাখতে হবে। যাতে করে আমরা তাদের সামনে বাস্তবতা তুলে ধরতে পারি এবং তাদের মিডিয়ার মিথ্যাচার উন্মোচন করতে পারি। কারণ কোন মিডিয়া যতোই চাকচিক্যময় হোক না কেন। যতোই মিথ্যাচার করুক না কেন, সত্য সত্যি থাকবে, মিথ্যা মিথ্যাই থাকবে। আনুগত্য আনুগত্যই থাকবে, আর বিশ্বাসঘাতকতা বিশ্বাসঘাতকতাই থাকবে।
——
সম্প্রতি প্রকাশিত শাইখের অডিও বিবৃতি “শাম- আপনার ঘাড়ের উপর আমানত” থেকে সংকলিত।[http://justpaste.it/ISIS_downfall]
——
১। জামাতুল বাগদাদীর প্রকাশিত ম্যাগযিন দাবিক্বে উম্ম সুমাইয়্যা নামের এক লেখিকা ফাতাওয়া দেয়, শামেরর সকল মুজাহিদ জামা’আর অন্তর্ভুক্ত মুজাহিদিনের সাথে তাদের স্ত্রীদের তালাক হয়ে গেছে। কারণ শামের সকল মুজাহিদিন মুরতাদীন হয়ে গেছে। একারণে এ নারীরা এখন যিনার অবস্থায় আছে।
২। GIA – Groupe Ismaique Army/ইসলামী সশস্ত্র দল। নব্বইয়ের দশকে আলজেরিয়াতে উত্থান ঘটা একটি খারেজি জামা’আ। তারা প্রথমে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আর মানহাজের ছিল, পরবর্তীতে তারা আলজেরিয়ার সকল মুসলিমদের তাকফির করে, তাদের হত্যা করে এবং মুসলিমদের স্ত্রীদের দাসী হিসেবে গ্রহণ করে, ধর্ষণ করে, এমনকি মুসলিমদের সন্তানদেরকেও হত্যা করে।
৩। আবু আব্দুর রাহমান আমীন ওরফে জামাল যাইতুনি ১৯৯৪ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর, GIA ঘোষিত খিলাফাতের আমির বা খালিফা নিযুক্ত হয়। মুরগি বিক্রেতার সন্তান যাইতুনি ছিল কৈশোর থেকেই “তাকফির ওয়াল হিজরাহ”-র আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং সে নিয়মিত তাদের হালাকায় অংশগ্রহণ করতো। ১৯৯৫ সালের ৩ই মে, লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাউদী নাগরিকের মালিকানাধীন দৈনিক আল-হায়াতে যাইতুনির একটি বক্তব্য প্রকাশিত হয়, যার GIA এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, কিংবা GIA এর ঘোষিত খিলাফাতকে স্বীকার করে নি, এমন সব আলজেরিয়ানদের উদ্দেশ্য করে সে বলে – “ সকল বিদ্রোহীর স্ত্রীদের অবশ্যই তাদের স্বামীদের ত্যাগ করতে হবে। তাদের বিবাহ বাতিল হয়ে গেছে, কারণ তাদের স্বামীরা মুরতাদীন।“ GIA এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার কারণে এবং বাই’য়াহ না দেয়ার কারণে যাইতুনি সকল আলজেরিয়ানকে মুরতাদ ঘোষণা করে। যেরকম দাবিক্ব ম্যাগাযিনে উম্ম সুমাইয়্যা নামক হতভাগ্যা নারী করেছে, এবং আদনানী আল-কাযযাব তার বক্তব্য শামের স্কল মুজাহিদীনকে মুর*তাদ ঘোষণা করেছে। GIA এবং জামাতুল বাগদাদীর মধ্যে সাদৃশ্য বিস্ময়কর।
যাইতুনির মৃত্যুর পর আলজেরিয়ান গোয়ান্দা বাহিনীর সাবেক সদস্যরা জানায়, যাইতুনি গোয়েন্দাদের হয়ে কাজ করছিল। লা হাওলা ওয়ালা কু’আতা ইল্লাহ বিল্লাহ
৪। FSA [Free Syrian Army] থেকে একটি দল বের হয়ে জাবহাত আল-নুসরার কমান্ড্যার আবু সাইদ আল-হাদরামি রাহিমাহুল্লাহ হাতে জিহাদ ও কুর’আন সুন্নাহর অনুসরণের জন্য বাই’য়াহ দেয়। জামাতুল বাগদাদি এ কাজের জন্য আবু সাইদের উপর তাকফির করে এবং তাকে হত্যা করে। এ ব্যাপারে তানজীম আল-ক্বাইদার শূরা সদস্য শাইখ আবু ফিরাস আস-সুরির বিস্তারিত বক্তব্য আছে। অথচ রাসূলুল্লাহ ﷺ নিজে মুশরিক গোত্রদের কাছ থেকে কুর’আন ও সুন্নাহর অনুসরণ ও জিহাদের বাই’য়াহ নিয়েছেন। উপরন্তু জামাতুল বাগদাদি নিজে বিভিন্ন FSA দলের কাছ থেকে বাই’য়াহ নিয়েছে।
৫। আধুনিক যুগে তাকফিরি মতাদর্শের উত্থান ঘটে মিশরে ৬০ দশকের শেষ দিকে। আবুল ‘আল শুকরি মুস্তফা নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে। এই ব্যক্তি “জামাতুল মুসলিমীন” নামে একটি দল গঠন করে। কিন্তু এটি “জামাত আত-তাকফির ওয়াল হিজরাহ” নামে পরিচিতি লাভ করে। শাইখ আইমান হাফিযাহুল্লাহ কৈশোর থেকে জিহাদ আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকার কারণে, মিশরের আল-জিহাদ তানজীমের আমীর হবার সুবাদে সকল আন্ডারগ্রাউন্ড তানজীমের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল ছিলেন। ১৯৭৮ এ শুকরি মুস্তফাকে ফাসি দেয়া হয়। জামাতুল মুসলিমিনের সদস্যদের কিছু অংশ পেশাওয়ারে চলে যায়, কিছু আফগানিস্তানে যায়, আর কিছু আলজেরিয়াতে যায়। পরবর্তীতে আরা জামাতুল খিলাফাহ নামেও পরিচিতি লাভ করে। শাইখ উসামার উপর হামলা এ জামা’আর সদস্যরাই চালায়। তারা পরবর্তীতে বেশ কিছু ভাগে বিভক্ত হয়।
সংগৃহীতঃ https://almurabiteen.wordpress.com/2...6%A4%E0%A6%A8/
Comment