জীবনে চলার পথে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত নানা বিপদ-আপদের সম্মুখীন হতে হয়।
আর দ্বীন পালনের পথটা তো আরও বেশি বিপদসংকুল।
বিপদের সময় সালাফদের
ঈমান বেড়ে যেত, অথচ আমাদের ঈমান তখন নিভু নিভু হয়ে যায়। অনেকে তো
সামান্য বিপদে পড়েই দ্বীন-পালনে বিতৃষ্ণ হয়ে যান, আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল হারিয়ে ফেলেন,
তাকদীরে বিশ্বাসের ভীত হয়ে পড়ে নড়বড়ে।
বিপদ বেশিরভাগ সময়ই আবির্ভূত হয় পরীক্ষারূপে।
আমাদের একটু সতর্কতা
বিপদরূপী সেই ঘন কালো মেঘকে রহমতের বারিধারায় পরিণত করতে সক্ষম।
অন্যদিকে আমাদের সামান্য অসতর্কতার দরুন সেই বিপদ কালবৈশাখীর রূপ ধারণ করতে পারে, ধ্বংস করে দিতে পারে আমাদের দুনিয়া এবং আখিরাত।
আর শাস্তিরূপী বিপদের আগমন তো নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য নিয়ামাত।
কেননা দুনিয়ার সামান্য
কষ্টভোগ জাহান্নামের অসহনীয় শাস্তির পরিপূরক হয়ে যায়।
সর্বোপরি,
আমাদের সম্পূর্ণ উম্মাহ-ই আজ বিপদের ঘোর অমানিশায় দিন
কাটাচ্ছে।
সাফল্যের সূর্যোদয় তখনই হবে,
যখন আমরা সেই বিপদরূপী অন্ধকারের স্বরূপ অনুধাবন করতে পারব।
অমুসলিমদের চোখে দুঃখ-দুর্দশা হচ্ছে অতিশয় যাতনার ব্যাপার।
কিন্তু মুসলিমদের জন্য দুনিয়াবি কষ্টগুলো হচ্ছে এক ধরনের পরীক্ষা,
আল্লাহর সাথে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করে নেওয়ার এক সুবর্ণ সুযোগ।
মহামহিম আল্লাহ তাঁর বান্দাদের কখনও স্বচ্ছলতা ও স্বাচ্ছন্দ্য দান করে পরীক্ষা করেন।
আবার কখনও তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য বিপদের মধ্যে ফেলেন।
একজন মুমিন ব্যক্তি যদি বিপদের সময় ধৈর্যধারণ করতে পারেন, তা হলে দয়াময় আল্লাহ তাকে অজস্র পুরস্কার দান করবেন,
তার পাপ মোচন করে দেবেন এবং জান্নাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন
আল্লাহ তাআলা বলেন,
ولنبلونكم بشيء من الخوف والجوع ونقص من الأموال والأنفس والثمرات
وبشر الصابرين و الذين إذا أصابتهم مصيبة قالوا إنا لله وإنا إليه راجعون *
أوليك عليهم صلوات من ربهم ورحمة وأوليك هم المهتدون *
এবং অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়,
ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে।
সুসংবাদ দাও সবরকারীদের।
যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে :
নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাব।
তারা সে সমস্ত লোক,
যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হিদায়াত-প্রাপ্ত।"৷৷
[১] সূরা বাকারাহ, ০২: ১৫৫-১৫৭
পক্ষান্তরে অবিশ্বাসীরা তো এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ ক্ষতির মাঝে ডুবে আছে।
কারণ তারা যে ধৈর্য ধারণ করে,
তার বিনিময়ে তাদের কোনো প্রতিদান পাওয়ার আশা নেই।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
ولا تهنوا في ابتغاء القوم إن تكونوا تألمون فإنهم يألمون كما تألمون وترجون
من الله ما لا يرجون وكان الله عليما حكيما *
যদি তোমরা কষ্ট পেয়ে থাকো
(তবে জেনে রাখো),
তারাও তো তোমাদের
মতোই কষ্ট পাচ্ছে।
কিন্তু তোমরা আল্লাহর কাছে
আশা করো
(পুরস্কার এবং জান্নাতের),
যা তারা আশা করে না।
আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।”
জীবনে আরাম-আয়েশ, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য এলে একজন মুসলিমের উচিত সবার
আগে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা
দুনিয়াবি সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দেখে কারও এমন ভাবা উচিত হবে না যে,
তার ধার্মিকতা ও সদাচারের কারণেই তাকে এত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য
দেওয়া হয়েছে।
কারণ, দুনিয়াবি বিপদ-আপদই জগতের একমাত্র পরীক্ষা নয়।
বরং দুনিয়াবি সমৃদ্ধি, সম্পত্তি আর শারীরিক সুস্থতাও তো এক ধরনের পরীক্ষা।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
ونبلوكم بالشر والخير فتنة وإلينا ترجعون©
...আমরা তোমাদের মন্দ ও ভালো
(এ উভয়) অবস্থার মধ্যে ফেলেই পরীক্ষা করি।”
এর মানে হচ্ছে আল্লাহ আমাদেরকে কখনও দুরবস্থার মধ্যে ফেলে পরীক্ষা
করবেন,
আবার কখনও স্বচ্ছলতার মধ্যে রেখে পরীক্ষা করবেন; যাতে তিনি যাচাই
করতে পারেন—
কারা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে আর কারা অকৃতজ্ঞ হয়, কারা
ধৈর্যধারণ করে আর কারা অধৈর্য হয়ে পড়ে।
আলি ইবনু আবী তালিব এ বর্ণনা করেন যে,
ইবনু আব্বাস বলতেন,
“আল্লাহ তোমাদের কখনও বিপদে ফেলে পরীক্ষা করবেন আবার কখনও আরাম-
আয়েশে রেখে পরীক্ষা করবেন।
কখনও সুস্বাস্থ্য দান করে পরীক্ষা করবেন আবার কখনও রোগাক্রান্ত করে পরীক্ষা করবেন।
কখনও সম্পত্তি দ্বারা পরীক্ষা করবেন
আবার কখনও দারিদ্র্যের মধ্যে রেখে পরীক্ষা করবেন।
কখনও হারাম জিনিস দিয়ে
(১) সূরা আন নিসা, ০৪ : ১০৪
[২) সূরা আল আম্বিয়া, ২১:৩৫
জীবন মানেই পরীক্ষা |
পরীক্ষা করবেন আবার কখনও হালাল জিনিস দিয়ে।
কখনও আনুগত্যের মাধ্যমে
পরীক্ষা করবেন আবার কখনও গুনাহের মাধ্যমে।
কখনও হিদায়াতের মাধ্যমে পরীক্ষা করবেন
আবার কখনও কক্ষচ্যুত করে পরীক্ষা করবেন।"
📖 বিপদ যখন নিয়ামত
📝 প্রিয় শাইখ আহমেদ মুসা জিবরীল হাফিঃ
আর দ্বীন পালনের পথটা তো আরও বেশি বিপদসংকুল।
বিপদের সময় সালাফদের
ঈমান বেড়ে যেত, অথচ আমাদের ঈমান তখন নিভু নিভু হয়ে যায়। অনেকে তো
সামান্য বিপদে পড়েই দ্বীন-পালনে বিতৃষ্ণ হয়ে যান, আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল হারিয়ে ফেলেন,
তাকদীরে বিশ্বাসের ভীত হয়ে পড়ে নড়বড়ে।
বিপদ বেশিরভাগ সময়ই আবির্ভূত হয় পরীক্ষারূপে।
আমাদের একটু সতর্কতা
বিপদরূপী সেই ঘন কালো মেঘকে রহমতের বারিধারায় পরিণত করতে সক্ষম।
অন্যদিকে আমাদের সামান্য অসতর্কতার দরুন সেই বিপদ কালবৈশাখীর রূপ ধারণ করতে পারে, ধ্বংস করে দিতে পারে আমাদের দুনিয়া এবং আখিরাত।
আর শাস্তিরূপী বিপদের আগমন তো নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য নিয়ামাত।
কেননা দুনিয়ার সামান্য
কষ্টভোগ জাহান্নামের অসহনীয় শাস্তির পরিপূরক হয়ে যায়।
সর্বোপরি,
আমাদের সম্পূর্ণ উম্মাহ-ই আজ বিপদের ঘোর অমানিশায় দিন
কাটাচ্ছে।
সাফল্যের সূর্যোদয় তখনই হবে,
যখন আমরা সেই বিপদরূপী অন্ধকারের স্বরূপ অনুধাবন করতে পারব।
অমুসলিমদের চোখে দুঃখ-দুর্দশা হচ্ছে অতিশয় যাতনার ব্যাপার।
কিন্তু মুসলিমদের জন্য দুনিয়াবি কষ্টগুলো হচ্ছে এক ধরনের পরীক্ষা,
আল্লাহর সাথে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করে নেওয়ার এক সুবর্ণ সুযোগ।
মহামহিম আল্লাহ তাঁর বান্দাদের কখনও স্বচ্ছলতা ও স্বাচ্ছন্দ্য দান করে পরীক্ষা করেন।
আবার কখনও তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য বিপদের মধ্যে ফেলেন।
একজন মুমিন ব্যক্তি যদি বিপদের সময় ধৈর্যধারণ করতে পারেন, তা হলে দয়াময় আল্লাহ তাকে অজস্র পুরস্কার দান করবেন,
তার পাপ মোচন করে দেবেন এবং জান্নাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন
আল্লাহ তাআলা বলেন,
ولنبلونكم بشيء من الخوف والجوع ونقص من الأموال والأنفس والثمرات
وبشر الصابرين و الذين إذا أصابتهم مصيبة قالوا إنا لله وإنا إليه راجعون *
أوليك عليهم صلوات من ربهم ورحمة وأوليك هم المهتدون *
এবং অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়,
ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে।
সুসংবাদ দাও সবরকারীদের।
যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে :
নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাব।
তারা সে সমস্ত লোক,
যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হিদায়াত-প্রাপ্ত।"৷৷
[১] সূরা বাকারাহ, ০২: ১৫৫-১৫৭
পক্ষান্তরে অবিশ্বাসীরা তো এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ ক্ষতির মাঝে ডুবে আছে।
কারণ তারা যে ধৈর্য ধারণ করে,
তার বিনিময়ে তাদের কোনো প্রতিদান পাওয়ার আশা নেই।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
ولا تهنوا في ابتغاء القوم إن تكونوا تألمون فإنهم يألمون كما تألمون وترجون
من الله ما لا يرجون وكان الله عليما حكيما *
যদি তোমরা কষ্ট পেয়ে থাকো
(তবে জেনে রাখো),
তারাও তো তোমাদের
মতোই কষ্ট পাচ্ছে।
কিন্তু তোমরা আল্লাহর কাছে
আশা করো
(পুরস্কার এবং জান্নাতের),
যা তারা আশা করে না।
আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।”
জীবনে আরাম-আয়েশ, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য এলে একজন মুসলিমের উচিত সবার
আগে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা
দুনিয়াবি সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দেখে কারও এমন ভাবা উচিত হবে না যে,
তার ধার্মিকতা ও সদাচারের কারণেই তাকে এত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য
দেওয়া হয়েছে।
কারণ, দুনিয়াবি বিপদ-আপদই জগতের একমাত্র পরীক্ষা নয়।
বরং দুনিয়াবি সমৃদ্ধি, সম্পত্তি আর শারীরিক সুস্থতাও তো এক ধরনের পরীক্ষা।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
ونبلوكم بالشر والخير فتنة وإلينا ترجعون©
...আমরা তোমাদের মন্দ ও ভালো
(এ উভয়) অবস্থার মধ্যে ফেলেই পরীক্ষা করি।”
এর মানে হচ্ছে আল্লাহ আমাদেরকে কখনও দুরবস্থার মধ্যে ফেলে পরীক্ষা
করবেন,
আবার কখনও স্বচ্ছলতার মধ্যে রেখে পরীক্ষা করবেন; যাতে তিনি যাচাই
করতে পারেন—
কারা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে আর কারা অকৃতজ্ঞ হয়, কারা
ধৈর্যধারণ করে আর কারা অধৈর্য হয়ে পড়ে।
আলি ইবনু আবী তালিব এ বর্ণনা করেন যে,
ইবনু আব্বাস বলতেন,
“আল্লাহ তোমাদের কখনও বিপদে ফেলে পরীক্ষা করবেন আবার কখনও আরাম-
আয়েশে রেখে পরীক্ষা করবেন।
কখনও সুস্বাস্থ্য দান করে পরীক্ষা করবেন আবার কখনও রোগাক্রান্ত করে পরীক্ষা করবেন।
কখনও সম্পত্তি দ্বারা পরীক্ষা করবেন
আবার কখনও দারিদ্র্যের মধ্যে রেখে পরীক্ষা করবেন।
কখনও হারাম জিনিস দিয়ে
(১) সূরা আন নিসা, ০৪ : ১০৪
[২) সূরা আল আম্বিয়া, ২১:৩৫
জীবন মানেই পরীক্ষা |
পরীক্ষা করবেন আবার কখনও হালাল জিনিস দিয়ে।
কখনও আনুগত্যের মাধ্যমে
পরীক্ষা করবেন আবার কখনও গুনাহের মাধ্যমে।
কখনও হিদায়াতের মাধ্যমে পরীক্ষা করবেন
আবার কখনও কক্ষচ্যুত করে পরীক্ষা করবেন।"
📖 বিপদ যখন নিয়ামত
📝 প্রিয় শাইখ আহমেদ মুসা জিবরীল হাফিঃ
Comment