Announcement

Collapse
No announcement yet.

আল্লাহর অস্তিত্বে সংশয় ও অস্বীকারকারীদের প্রতি খোলা চ্যালেঞ্জ

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আল্লাহর অস্তিত্বে সংশয় ও অস্বীকারকারীদের প্রতি খোলা চ্যালেঞ্জ

    আল্লাহর অস্তিত্বে সংশয় ও অস্বীকারকারীদের প্রতি খোলা চ্যালেঞ্জ
    [ 'জাগো মুজাহিদ' জানুয়ারী-১৯৯৭ সংখ্যায় প্রকাশিত ]

    ১৪০০ বছর আগের কথা। আরবে ঘটল এক মহা-বিপ্লব। মানবতার মহা-মুক্তির পয়গাম নিয়ে আবির্ভূত হলেন মানব-কুল শ্রেষ্ঠ হযরত মুহাম্মদ ()ঘোষণা করলেন মানব মুক্তির মহা-সনদ, দ্বীন-ইসলামের সংবিধান। এ দুনিয়ার একচ্ছত্র অধিপতি আল্লাহ্, আমারা তাঁর সৃষ্টি। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ করে আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে তারই গুণাগুণের জন্য। জলে, স্থলে, মহাকাশে যা কিছু দৃশ্যমান সবকিছুই তিনি সৃষ্টি করেছেন, সবকিছুর জীবন বিধানও তিনি প্রণয়ন করে দিয়েছেন। মানুষের কল্যাণে, মানুষের ভোগ-ব্যবহারের জন্যই এসব নিয়ামতকে মানুষের আওতাধীন করে দিয়েছেন। মানুষ এসব ভোগ-ব্যবহার করে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে-এই উদ্দেশ্যে।

    এ ঘোষণার সাথে সাথে তিনি মানুষকে সকল মনগড়া উপাস্য থেকে ফিরিয়ে আনেন, সকল ভ্রান্তি থেকে মুক্ত করে এক আল্লাহর পথের পথিক বানান। দুনিয়ার মানুষকে জানিয়ে দেন, আল্লাহ্ এক, অদ্বিতীয়। তিনিই সর্ব-শক্তিমান, সকল সৃষ্টি স্রষ্টা। তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। বিশ্ব পরিমন্ডলে যা কিছু আছে সব কিছুরই যেমনি তিনি স্রষ্টা তেমনি নিয়ন্ত্রণকারীও। তাঁর এই ক্ষমতার কোন চ্যালেঞ্জকারী নেই।

    রাসূল ()-এর এই ঘোষণা মেনে নিয়ে সে যুগে দলে দলে মানুষ যেমনি তাঁর ঝান্ডার তলে সমবেত হয়েছিলেন, তেমনি গুটি কতেক লোক তাঁর বিরুদ্ধাচারণও করেছিলো। বিরুদ্ধবাদীদের ‘আল্লাহ্ এক’ একথা মনঃপুত হয়নি বলে তারা রাসূল ()-এর বিরুদ্ধাচারণ করত। এর পর ১৪০০ বছর পার হয়েছে। প্রতি যুগেই কিছু না কিছু ইসলামের বিরুদ্ধাচারণকারী ছিল। এক সময় আল্লাহ্ অর্থ্যাৎ কোন সৃষ্টিকর্তা নেই এ মতবাদ নিয়ে একশ্রেণীর বিভ্রান্ত চিন্তাধারার মানুষের আবির্ভাব ঘটে।

    ধর্মবিমুখ ইউরোপে এর প্রবণতা মহামারির রূপ ধারণ করে। বিজ্ঞান চর্চায় তারা যতই উন্নতি সাধন করে ততই নিজেদের মহা ক্ষমতাশালী ভাবতে থাকে। বিজ্ঞানকে খোদার আসনে অধিষ্ঠিত করে নেয়। অথচ বিজ্ঞান হল আল্লাহর সৃষ্টি আকাশ-বাতাসও জল-স্থলে ছড়িয়ে থাকা উপাদানসমূহ সংযোজন করে নিত্য-নতুন আবিস্কারের নাম। বিজ্ঞান চর্চায় প্রমাণ হয়েয়েছে যে, বিজ্ঞান নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। পারে শুধু সীমিত কিছু বিষয়ে আল্লাহ্র সৃষ্ট উপাদান সমূহের নিত্য-রূপ দিতে।

    বিভিন্ন উপাদানের সংমিশ্রণ ও সংযোজনের মাধ্যমে নতুন আবিষ্কার করতে। অর্থ্যাৎ বিজ্ঞানের আবিষ্কারও আল্লাহর সৃষ্ট উপাদানের ওপর নির্ভরশীল। যেমন বেতারের কথা ধরা যাক। বেতার বা রেডিও হল লোহা, তামা, দস্তা, এলমুনিয়াম, রাং, সিসা প্রভৃতি ধাতুর সংমিশ্রনে তৈরী। কিন্তু এসব ধাতু কি মানুষ সৃষ্টি করেছে? করেনি। এগুলো ছিল বলেই মানুষ বেতার আবিষ্কারে সমর্থ হয়েছে। যদি তা না থাকত, মানুষের কি ক্ষমতা ছিল-লোহা, তামা, দস্তা, সীসা, রাং তৈরী করে বেতার আবিষ্কার করার? জ্ঞানে-বুদ্ধিতে শ্রেষ্ঠ হয়েও মানুষ যখন এই সামান্য কিছু ধাতু তৈরীতে অক্ষম, তখন ভাবতে হবে, নিশ্চয় এসব সৃষ্টির পেছনে অন্য কোন মহাশক্তি রয়েছে।

    বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে সেই মহাশক্তির সৃষ্টির এইসব সূক্ষ্ম ও জটিল সৃষ্টি প্রক্রিয়া উন্মোচন করে সেই মহান স্রষ্টার শক্তি সম্পর্কে অবগত হয়ে তাঁর নিকট নতি স্বীকার করা উচিৎ ছিল। কিন্তু কিছু মানুষ বিজ্ঞানকে এর বিপরীত পথেই ব্যবহারে অভ্যস্থ হয়ে পড়ে। এই মহাশক্তির ক্ষমতার নিকট নিজেদের ক্ষমতা, জ্ঞান, বুদ্ধি একেবারেই অচল দেখেও তারা তাঁর নিকট নতি স্বীকার করেনি। বরং কতিপয় মানুষ সৃষ্টিকর্তা নেই বলে এক ধরণের অস্বাভাবিক প্রতারণায় মেতে ওঠে।

    মুসলিম বিশ্বে যখন নৈতিক অবক্ষয় দেখা দেয়, চিন্তা-চেতনায় বিজাতীয় মতাদর্শ প্রধান্য পেতে থাকে, আল-কুরআনের শিক্ষা থেকে তারা দূরে সরে যায়, তখন পাশ্চাত্যের আত্মঘাতি এ মতবাদও তাদের চিন্তার খোরাক হয়। গুটি কয়েক মুসলিম পরিবারের সন্তানরাও যুক্তি-বিবেক বিসর্জন দিয়ে আল্লাহ্ নেই এ দাবিতে উল্লাস বোধ করতে থাকে। দ্বিতীয় মুসলিম প্রধান দেশ বাংলাদেশও এ সমস্ত কলংকিত মানব সন্তানদের কবল থেকে মুক্ত নয়। নিজেরা বিভ্রান্ত হওয়ার পর এখন তারা বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে এদেশের তরুণ সমাজকেও তাদের বিকৃত পথে পরিচালিত করতে সচেষ্ট রয়েছে।

    তারা তাদের মতবাদ, যুক্তি, দর্শন,বক্তৃতা, বিবৃতি, লেখনি, বই-পুস্তকের সয়লাবে এদেশের মানুষের চিন্তা-চেতনার জগতে মহাতান্ডব সৃষ্টির প্রয়াসে লিপ্ত রয়েছে। তাদের এই অশুভ তৎপরতার ফলে দেশের একশ্রেণীর মানুষ ইতিমধ্যে বিভ্রান্তির মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে। তারা আল্লাহ্র অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় পোষণ করেছ। সংশয়ী এ মানুষদের নিকট অনুরোধ রইল, বিজ্ঞানের আলোকে নিম্নের বিষয়গুলোর নিরপেক্ষভাবে বিচার করে নিজের মনকে প্রশ্ন করুন, আল্লাহ্ আছেন কি নেই।

    ১। মানব দেহের এক জটিল এবং অদৃশ্য শক্তি হল আত্মা। আত্মা আছে তো মানুষ সচল, আত্মা নেই মানুষ অচল। বেতারে আমরা যে পাওয়ার ব্যবহার করি তাঁর সাথে এই আত্মার তুলনা করা যেতে পারে। বেতারের বিদ্যুৎ সরবরাহ করলে যেমন বেতার জীবন্ত হয়ে ওঠে তেমনি মানব দেহে আত্মা থাকলে বেতার অচল। বিদ্যুৎ না থাকলে বেতারের যন্ত্রাংশ দ্বিগুন করে দিলেও বেতার চলবে না। তদ্রূত মানবদেহে ১০ খানা হাত, ২০ খানা পা, ১৪ টি মাথা সংযোজন করলেও মানব দেহ সচল হবে না যদি না আত্মা থাকে। বিদ্যুৎ যেমন চোখে দেখা যায় না অনুভব করা যায়, আত্মাও তদ্রুপ।

    বিজ্ঞানীরা বিদ্যুতের প্রকৃতি উৎঘাটন করলেও আজ পর্যন্ত শত গবেষণা করেও বলতে পারেননি, আত্মা কি, তা দেহের কোথায় থাকে, কোন উপাদানে সৃষ্টি। অথচ সেই আদি যুগ থেকেই আমরা দেখছি, আত্মার একটি নির্দিষ্ট ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় মানুষের জন্ম মৃত্যু ঘটছে। আল্লাহ্ যদি নাই থাকবে তবে এ অদৃশ্য মহাশক্তি কে সৃষ্টি করেছে, কেই বা সুনিয়ন্ত্রিতভাবে এর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ঘটিয়ে মানুষের জন্ম মৃত্যুকে নিয়ন্ত্রণ করছে?

    ২। বিজ্ঞান আমাদের শিখিয়েছে পৃথিবীতে কোন কিছু আবিষ্কার, প্রতিটি প্রাকৃতি সংঘটনার মুলে পরিকল্পনা থাকতে হবে। তাই বেতার যন্ত্র দেখলে মনে পড়ে মার্কনীর মত গবেষণা, কত পরিকল্পনা, পরিশ্রম, সাধনার কথা। তদ্রূপ উড়োজাহাজ দেখলে রাইট ভ্রাতৃদ্বয়, এটম বোমার কথা শুনলে আইনস্ট্যাইন, বৈদ্যুতিক বাতির জন্য এডিসন, রকেটের জন্য রবার্ট গার্ডাড, চন্দ্র অভিযানের জন্য আমেরিকার নভোচারীদের কথা মনে পড়ে। সবাই জানে, এরা নিজ নিজ আবিষ্কারের জন্য কত পরিশ্রম, কত সাধনা, কত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে কাটছাট করেছে গবেষণায় ভুল ধরা পরার পর। অবশেষে তারা কাংখিত লক্ষ্যে পৌছেছেন।

    এবার আসুন প্রকৃতির প্রতি লক্ষ্য করা যাক। আমরা যে সৌরজগতে বাস করি তাঁর প্রাণ ও কেন্দ্র স্থল হল সূর্য। পৃথিবী থেকে ৯ কোটি ৩০ লক্ষ মেইল দূরে থেকে সূর্য পৃথিবীর যেখানে যতটুকু আলোর প্রয়োজন ততটুকু আলো দান করছে।

    এর নিজস্ব তাপমাত্রা ১১০০০ ফরেন হাইট। দিবা-রাত্রি শীত-গ্রীষ্ম, তরল, হিম, বাস্প, উষ্ণতা, আদ্রতা সবই এ সূর্যের ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফল। যেখানে বরফের দরকার সেখানে ৪ ডিগ্রি উত্তাপ পৌঁছুচ্ছে আবার যেখানে বাষ্পের দরকার সেখানে ঠিকই ১০০ ডিগ্রি উত্তাপ পৌঁছুচ্ছে। যদি সূর্যের তাপমাত্রা কম বা বেশী হয়, তাহলে পৃথিবীর সকল জীব-জন্তু, গাছ-পালা অতিরিক্ত উত্তাপে পুড়ে ছাই হয়ে যেত অথবা শীতে জমাট বেধে পাথরের পাহাড়ে পরিণত হত। সূর্য বর্তমানে পরিমিত পরিমাণ আলো দান করছে বলে পৃথিবী জীবন ধারণের উপযোগী। তা ছাড়া সূর্যের আলো-তাপ জীবন ধারণের অপরিহার্য উপাদান।

    তাই বলা হয়, সূর্য না থাকলে জীবনের অস্তিত্ব কল্পনাও করা যেত না। বিজ্ঞানীদের অনুমান, সূর্যের কেন্দ্রের ৪ কোটি ডিগ্রীর তাপের ফলে অতি উচ্চচাপের সৃষ্টি হয় যা মৌলিক পদার্থকে ভেঙ্গে অসংখ্য অনু-পরমানুর সৃষ্টি করে ও বিরাট শক্তির অধিকারি হয়। অনু-পরমানুগুলির আভ্যন্তরিণ সংঘর্ষে তা বোমার রূপ ধারন করে। প্রচণ্ড তাপের ফলে হাইড্রোজেন গ্যাস হিলিয়ামে রুপান্তরিত হয়। আর এ সংঘর্ষের ফলেই তাপ ও আলোর সৃষ্টি হয়। এ প্রচণ্ড শক্তির অধিকারী সূর্যও একদিন নিস্প্রভ হয়ে যাবে। সেদিন পৃথিবীর সকল জীবনেরও মৃত্যু ঘটবে। সূর্য-শক্তির প্রধান উৎস হাইড্রোজেন। প্রতি সেকেন্ডে তা ৮০ কোটি টন হাইড্রোজেন ধ্বংস করে।

    তাই নাস্তিক বুদ্ধিজীবীদের কাছে আমার প্রশ্ন, প্রতি সেকেন্ডে এই বিপুল পরিমাণের হাইড্রোজেনের যোগান দাতা কে? কে সৃষ্টি করেছেন এই হাইড্রোজেন? সৃষ্টিকর্তা যদি নাই থাকে, তবে পৃথিবীতে জীবন ধারণের উপযোগী এর দূর এই বিশাল সূর্যের সৃষ্টির পরিকল্পক কে ? যদি চিরাচরিত পদ্ধতিতে বলেন যে, প্রকৃতি থেকে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় সব কিছুর উদ্ভব ঘটেছে, তবে উত্তর দিন, মানব জন্মের পূর্বে মানুষের সাথে প্রকৃতির কোন চুক্তি হয়েছিল বা প্রকৃতি মানুষের নিকট এত দায়গ্রস্থ হয়েছিল কেন যে, তাকে পৃথিবী থেকে এত দূরে মানুষকে বেঁচে থাকার জন্য এর মহা-শক্তির একটা সূর্যই তৈরি করে দিতে হয়েছে; ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় সূর্য ছাড়া চাঁদের বা গ্রহের সৃষ্টি হল না কেন? এতে আবার কোন পরিকল্পনারও প্রয়োজন হয়নি! যুগের পর যুগ ধরে একই প্রক্রিয়ায় মানুষের খেদমত করে যাচ্ছে এই সূর্য।

    সেই আদিকাল থেকে পূর্ব থেকে উদিত হচ্ছে পশ্চিমে অস্ত যাচ্ছে। কে এর লাগাম টেনে ধরেছে যে, প্রতিদিন একই পথে ঘুরছে? অন্যান্য গ্রহ উপগ্রহগুলি শক্তিহীন এবং ছোট বলে তাদের সাথে সংঘর্ষ বাধায়নি কেন? রাজপথে ট্রাফিক পুলিশ না থাকলেই যানজট লেগে যায়, অহরহ দূর্ঘটনা ঘটে। অথচ ট্রাফিক ছাড়া মহাবিশ্বে হাজার হাজার লক্ষত্র, গ্রহ, উপগ্রহ, উল্কা, ধুমকেতু নিজ নিজ কক্ষ পথে চলছে, কোন জটের সৃষ্টি হচ্ছে না কেন?

    ৩। এবার আসা যাক সমুদ্রের রহস্যে। পৃথিবীর চতুর্দিক পানি দ্বারা বেষ্টিত। কিন্তু তা সুপেয় নয়, লোনা। এর দ্বারা সেচ কার্য চলে না, কাপড় কাচা যায় না, কেননা লোনা পানিতে গাছ-পালা বাঁচে না। অতএব সমুদ্রের কি প্রয়োজন আমাদের? কিন্তু পৃথিবিতে জীবন ধারণের জন্য সমুদ্রও অপরিহার্য উপাদান।

    বিজ্ঞানের গবেষণায় দেখা যায় যে, সমুদ্র পৃথিবীর চতুর্দিকে বেষ্টন করে থাকায় পৃথিবী একেবারে শীতল হয়ে হীম হচ্ছে না, আবার গরমেও লোহা, তামার মত উতপ্ত হয়ে উঠছে না। যখন সূর্যের প্রখর কিরণে পৃথিবি উতপ্ত হয়ে ওঠে, তখন জীব-জন্তুকে বাচিয়ে রাখার জন্য এটা তাপ বিকিরণ করে। কিছু অংশ তরুলতা গ্রহণ করে আর বাকী অংশ সমুদ্র চুষে নেয়। ফলে পৃথিবীর মাটি ঠান্ডা ও বাসপোযোগী হয়। আবার যখন ঠান্ডা হয়ে পৃথিবী হীম শীতল হওয়ার উপক্রম হয়, তখন সমুদ্রের পানি তাপ বিনিময় করে। সমুদ্রের উষ্ণতা পৃথিবীকে দিয়ে দেয় আর পৃথিবীর ঠান্ডা অংশ সমুদ্রের পানি চুষে নেয়। ফলে জীব-জন্তু ঠান্ডা হয়ে পাথরে পরিণত হয় না।

    আল্লাহ্ যদি নাই থাকত তবে এই মহান কৌশল প্রণেতা কে? কে পৃথিবী সৃষ্টির সময় জীব-জন্তুর বাসপোযোগী রাখার জন্য সমুদ্র সৃষ্টির পরিকল্পনা করেছেন? এখানেই শেষ নয়। আমরা জানি, পানি বাষ্পে পরিণত করতে ১০০ ডিগ্রি তাপমাত্রার প্রয়োজন। সমদ্রের পানি বাষ্পে পরিণত করতে সূর্য সেই পরিমাণ তাপমাত্রাই প্রদান করছে। সমুদ্রের লোনা পানি বাষ্প হয়ে আকাশে উড়ে বেরাচ্ছে মেঘের আকারে। মেঘ থেকে হচ্ছে বৃষ্টি । কি আশ্চর্য, বৃষ্টির পানি তো লোনা নয়। তবে কোন বৈজ্ঞানিক, কোন ল্যাবরেটরিতে আকাশে ফিল্টার করে লোনা পানিকে মিষ্টি পানিতে পরিণত করল। এই বৃষ্টির পানির ছোয়ায় অনুর্বর ভুমি প্রাণ পায় ও গুলবাগিচার সৃষ্টি করে।

    পৃথিবী হয় শীতল। গাছপালা, তরুলতা পায় নতুন প্রাণ, শস্য কণা এই বৃষ্টির পানি পেলেই অঙ্কুরিত হয়। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, বৃষ্টির পানি যখন বিভিন্ন বায়ুস্তর ভেদ করে আসে তখন সাথে করে নিয়ে আসে অ্যামোনিয়া, নাইট্রোজেন। তা আবার মাটির বিভিন্ন উপাদানের সাথে মিশে অ্যামোনিয়াম নাইট্রোড ও অ্যামোনিয়াম সালফেটের সৃষ্টি করে, যা উত্তম সার রূপে ব্যবহৃত হয়। তাই দেখা যায়, বৃষ্টির পানি সাধারণ পানির চেয়ে বেশী উপযোগী। যদি কোন পরিকল্পনা না থাকে, তবে সমুদ্রের মাধ্যমে কে এই অদ্ভুত কৌশলে গাছ-পালা, তরুলতা বাঁচিয়ে রেখেছে এবং নিয়ন্ত্রণ করছে সুচারুভাবে?

    কোন পরিকল্পক যদি সাগর ও সূর্যের সৃষ্টি না করতো, তবে সাগরের পানিকে উত্তপ্ত করে বাষ্পে পরিণত করত কে? দুনিয়ার সমস্ত আগুন যদি সাগরের তলায় জ্বালানো হতো, তবুও কি সাগর উত্তপ্ত হত আর এমন ফিল্টার ব্যবস্থায় লোনা পানি মিষ্টি পানিতে পরিণত হত? বৃষ্টির পানিতে মেশানোর জন্য কে অহরহ অ্যামোনিয়া ও নাইট্রোজেনের যোগান দিচ্ছে, এর সৃষ্টিকর্তাই বা কে? কেউ যদি চাহিদা ও যোগান অনুপাতের হিসাব না করে সমুদ্র সৃষ্টি নাই করত, তবে পৃথিবীর উষ্ণতা ও আদ্রতার ভারসাম্যকে রক্ষা করত? মাত্র কয়েকটি নদী থাকলে কি পৃথিবী শীতল থাকত? এগুলো চাহিদা মত বৃষ্টির পানি যোগাতে পারত ? এই বৃষ্টির পানিকে পুনরায় সমুদ্রে পৌছানোর জন্য নদী-নালার পরিকল্পনাকারী ও স্রষ্টা কে? কে পাহাড় তৈরী করেছে?


    মেঘ বাতাসে তাড়িত হয়ে পাহাড়ে আঘাত লাগিয়ে বৃষ্টিপাত ঘটাচ্ছে। ফলে সৃষ্টি হয়েছে নদীর। এক সুয়েজ খাল খনন করতে যখন হাজার হাজার প্রকৌশলী, টেকনিশিয়ান শ্রমিকের বছরের পর বছর সময় লাগলো , তখন পৃথিবীর হাজার নদ-নদী সৃষ্টিতে কোন ইঞ্জিনিয়ার লাগেনি, শক্তির প্রয়োজন হয়নি একি পাগলামীপূর্ণ চিন্তা-ভাবনা নয়?

    ৪। মানব শিশু জন্মের পূর্বে মায়ের পেটে থেকে পরিপূর্নতা লাভ করে। ১০ মাস ১০ দিন সময় লাগে এই পূর্ণতা লাভ করতে। বিভিন্ন জাতি-প্রজাতির জীব-জন্তুর বেলায় এই সময়ের হেরফের আছে। যাই হোক, পরিপূর্ণতা লাভ করলেই বাচ্চা-ভূমিষ্ট হয়, আগে বা পরে নয়। মানব সন্তান চার মাসে যেমন পরিপূর্ণ আকৃতি নিয়ে ভূমিষ্ট হয় না, তেমন যৌবন কালও মায়ের পেটে কাটিয়ে ভূমিষ্ট হয় না। সেই আদিকাল থেকেই জন্মের একটি নির্দিষ্ট শিডিউল রক্ষিত হচ্ছে।
    মানব শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুদৃঢ় ও কার্যপোযোগী হওয়ার পরই ভূমিষ্ট হচ্ছে অথচ এতে সন্তান বা মায়ের কারো কোন ভূমিকা নেই। তবে কার নির্দেশে এটা ঘটছে?

    আশ্চর্য হতে হয়, এই দূর্বল শিশু কি করে কারো সাহায্য ছাড়া মায়ের পেটে বেঁচে থাকে! মায়ের রক্ত চুষে সে বর্ধিত হচ্ছে। একই মায়ের রক্তে মা ও শিশু বেঁচে থাকছে অথচ দু’জনারই খাবার আলাদা। মা খাচ্ছে ভাত মাছ আর শিশু তাঁর সারাংশ চুষে বড় হচ্ছে। অথচ কোন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োজন হচ্ছে না তাকে ভাত মাছ থেকে সারাংশ সংশোধিত করে দিতে। আবার এই অবলা শিশু মায়ের পেট হতে ভুমিষ্ঠ হবার পরই মার বুকে উপযুক্ত বলকারক, তরল, হজম উপোযোগী ও ঈষৎ উষ্ণ খাবার মজুদ পাচ্ছে।


    বেশী গরম হলে তাঁর মুখ পুড়ে যেত আবার বেশী ঠান্ডা হলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তাকে মরতে হতো। এ কার মহা বৈজ্ঞানিক কৌশল? কার নির্দেশে মায়ের বুকে সন্তানের জন্য খাদ্য জমা হচ্ছে? সন্তান ধারণের পুর্বে মায়ের বুকে এ খাবার থাকে না কেন? আবার সন্তান যখন বড় হয় তখনই বা এ খাবার শেষ হয়ে যায় কেন?

    ৫। মানুষের অংগ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল অঙ্গ হল চক্ষু। চক্ষু ছাড়া দুনিয়া মানুষের কাছে আধার, প্রেতপুরির ন্যায়। মানবদেহ সৃষ্টিতে সৃষ্টিকর্তার কত বড় কৌশল কাজ করেছে তা এই চক্ষু বিশ্লেষণ বদৌলতে আমরা গবেষণাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারছি, চক্ষুর মধ্যে কি কি উপাদান আছে। রসায়নবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা ও চিকিৎসাবিদ্যায় আমরা এক্সপার্ট। আসুন, প্রথমেই একটি চোখকে ভাঙ্গুন। এর মধ্যে যেসব উপাদান আছে, সেগুলি লেবেল এটে আলাদা আলাদা করে রাখুন।

    ভাঙ্গবার সময় রেকর্ড করে রাখুন। প্রতিটি উপাদান তন্ন তন্ন এবং নিখুঁতভাবে আলাদা করে রাখার পর এবার আবার সেগুলিকে যথাযথভাবে একত্রিত করুন। তাপমাত্রাও ঠিক রাখুন। দেখুন চোখের পুরানো সেই জ্যোতি ফিরিয়ে আনতে পারেন কিনা বা এই মিলিত পদার্থ দ্বারা কোন চোখ তৈরী হয় কিনা। অথচ এ বিজ্ঞান একটি কম্পিউটার বা রেডিও সম্পূর্ণ ভেঙ্গে আলাদা করে পুনঃরায় সংযোজন করে অবিকল রেডিও বা কম্পিউটারে পরিণত করতে পারছে।

    পুনরায় তাকে সচল করে তুলছে, অথচ ছোট একটি চোখের বেলায় বিজ্ঞান ব্যর্থ। এই কৌশল, এই মহাবিজ্ঞানের কোন স্রষ্টা নেই?

    চোখের উপাদানসমূহ সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও, কোন উপাদান কত পরিমাণ তা পরিমাপ করতে পারা সত্ত্বেও বিজ্ঞান কোন চোখ নষ্ট হলে তা সজীব করতে পারছে না। নতুন চোখ বানাতে পারছে না। প্রয়োজনে অপরের চোখ ধার করে এনে বসিয়ে দিচ্ছে মাত্র। সামান্য চোখের নিকট বিজ্ঞান যখন ব্যর্থ, তবে এই মহা বিজ্ঞানের মালিক কে?


    বিজ্ঞানের গবেষণায় দেখা যায়, চোখের ঝিল্লিতে মোট নয়টি স্তর। এদের সমষ্টি সূক্ষ্ম কাগজের চাইতেও পাতলা। সকলের অভ্যন্তরস্থ ঝিল্লিস্তরটি তিন কোটি দন্ড ও ত্রিশ লক্ষ ঘনক্ষেত্র দিয়ে প্রস্তুত। এই স্তরগুলি পরস্পর সংগতি রক্ষা করে। চোখের কাঁচ পুটলিগুলি ঘনত্বের দিক দিয়ে পরস্পর বিচ্ছিন্ন, এর ফলে চোখের জ্যোতি একই ক্ষেত্রে কেন্দ্রীভূত হয়। চোখের মধ্যে যে সব ক্ষুদ্র দর্পণ বা প্রতিফলক রয়েছে সেগুলোর সাথে লক্ষ লক্ষ শিরা উপশিরা ও সূক্ষ্ম স্নায়ু মন্ডলীর মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রয়েছে। দেহের প্রতিটি ইন্দ্রিয় স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভ না করা পর্যন্ত দৃষ্টিশক্তি লাভ করা একরূপ অসম্ভব।

    কেউ এই তিন কোটি সূক্ষ্ম দন্ড কোন কারখানায় বানিয়ে সংযোজন করল? নাকি এটাও আপনা আপনি হয়ে গেলো? চোখের মধ্যেকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দর্পনগুলির সাথে দেহের শিরা উপশিরার কানেকশন দিয়ে চোখকে সচল করে তুললো কোন ইঞ্জিনিয়ার ?

    যারা বলে আল্লাহ্ নেই। এ পৃথিবী কেউ সৃষ্টি করে নি, প্রাকৃতিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন, তাদের এ দাবি ইসলামের ব্যাখ্যা ও বিশ্বাস বিরোধী এবং চ্যালেঞ্জও বটে। তাই একজন মুসলমান হিসেবে এ চ্যালেঞ্জ মেনে নেয়া অন্যায় এবং দুর্বলতাই মনে করি। সুতরাং আল্লাহ্ নেই দাবীদারদের বিজ্ঞানের আলোকেই কতিপয় চ্যালেঞ্জ আহ্বান করছি। আসুন এগুলি খণ্ডন করে প্রমাণ করুন যে, আল্লাহ্ নেই, এ পৃথিবী সৃষ্টির পেছনে কোন মহাশক্তি কাজ করে নি।

    যেহেতু আপনাদের দাবী অনুযায়ী আল্লাহ্ নেই এবং এই বিশ্ব জগত কেউ সৃষ্টি করেন নি, এর কোন নিয়ন্ত্রক নেই। প্রাকৃতিক ঘাত-প্রতিঘাতে পৃথিবী এবং বিশ্বের সব কিছুর সৃষ্টি হয়েছে। এর পেছনে কোন পরিকল্পনা কাজ করেনি। বর্তমান বিশ্বে বিজ্ঞানের বদৌলতে মানুষই প্রধান বুদ্ধিমান জীব। মানুষ জ্ঞান, বুদ্ধির জোড়ে অন্য সব জীব-জানোয়ার ও প্রকৃতিকে বশ করেছে। সুতরাং আল্লাহ্ না থাকলে এই বিশের একমাত্র মালিক এবং নিয়ন্ত্রণকারী মানুষেরই হওয়ার কথা। মানুষ তার যে কোন ইচ্ছাকে কার্যে পরিণত করতে পারবে। তাকে বাধা দেয়ার কেউ নেই, সবাই তার বিদ্যা-বুদ্ধির নিকট পরাস্ত। যেমন মানিব বসতিহীন এক বিশাল ভূখণ্ড মালিক আপনি। এখানে আপনি ইচ্ছা করলে প্রাসাদ গড়তে পারেন আবার টিনের ঘরও তুলতে পারেন।

    আপনি ইচ্ছে করলে ফুলের বাগান করতে পারেন আবার পরক্ষণে কেটে সাফ করে ঘুঘু চড়ানোরও ব্যবস্থা করতে পারেন। আপনি ঘরের মধ্যে বা উন্মুক্ত প্রান্তরে নাচের আসর বসান, কে বাধা দেবে। কেননা এখানে আপনি সর্বাধিনায়ক, সব কিছু করার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ও অধিকার আপনার রয়েছে। তদ্রূপ বিশ্বে আপনার ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করা বা নিয়ন্ত্রণ করার কোন শক্তি নেই, তখন তো আপনি নিজের খুশি মত বিশ্বকে ভেংগে চুড়ে সাজাতে পারেন। আপনার মালিকানাধীন বিশাল ভূখণ্ডের ন্যায় এ বিশ্বেও যা ইচ্ছা করতে পারেন।

    আসুন আপনার ক্ষমতাকে একবার প্রমাণ করুন-


    ১। মানুষ আদিকাল থেকে জন্ম-মৃত্যুর শৃঙ্খলে আবদ্ধ। এ শৃঙ্খলা পালটে দিন। প্রকৃতিকে বাধ্য করুন মায়ের পেট থেকে দুর্বল অবস্থায় সন্তান জন্মগ্রহণ পদ্ধতি থেকে ভিন্ন কোন উপায়ে ২০ বছরের যুবক সন্তান উপহার দিতে। এতে লালন-পালন ব্যয় হ্রাস পাবে এবং জন্ম নিয়েই সন্তান উপার্জনক্ষম হবে। মায়ের প্রসব যন্ত্রনায় ভুগতে হবে না।

    ২। একলক্ষ বা ততোধিক শক্তিশালী সন্তান জন্ম দিন। এদের রোগ, শোক, ক্ষুধা, দারিদ্র, ব্যধি এবং মৃত্যুর কবল থেকে মুক্ত রাখুন। এদের দ্বারা বিশ্ব জয় করে নিজের একচ্ছত্র সাম্রাজ্য স্থাপন করুন।

    ৩। চন্দ্র-সূর্য কোটি কোটি বছর ধরে একই পথে পরিভ্রমণ করে একঘেয়েমিতে ভুগছে। ওদের একঘেয়েমি হতে মুক্তি দিন। নতুন শক্তি দিয়ে উল্টো দিকে ধাবিত করুন।

    ৪। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র, দুর্ভিক্ষ, অনাহারের শিকার। আসুন তাদের সকলের হাতে এক একটা রাজ প্রাসাদ তুলে দিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলুন, আর যারা সমাজে সম্পদ লুটছে তাদের কাঙ্গাল বানিয়ে দিন। পৃথিবীকে খাদ্যভান্ডারে পূর্ণ করে তুলুন। পৃথিবীর সকল মানুষকে এক বেলা হালুয়া রুটি অথবা বিরানী খাইয়ে ধন্য করুন।

    ৫। পৃথিবীতে যা কিছু সৃষ্ট জড় পদার্থ রয়েছে সবকিছু রয়েছে জোড়ায় জোড়ায়। প্রাণী, উদ্ভিদ, পদার্থ, বিদ্যুৎ শক্তি এমনকি অনু পরমাণুও জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি। ব্যতিক্রম শুধু পৃথিবী। আশ্চর্যই বটে! পৃথিবীর বুকে অবস্থিত সবকিছু জোড়ায় জোড়ায় অথচ পৃথিবীর কোন জোড়া নেই। আসুন এই নিঃসঙ্গ পৃথিবীর জোড়া সৃষ্টি করে তার একটা খেলার সাথী জুটিয়ে দিন।

    ৬। পৃথিবী, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্রপুঞ্জ বিশাল ও জটিল সব সৃষ্টি আপনা আপনি হতে পারল, কোন স্রষ্টার প্রয়োজন হলো না, প্রয়োজন হল না পরিকল্পকের। অথচ অসীম ক্ষমতার অধিকারী হয়েও মানুষের সামান্য প্লেন, কম্পিউটার তৈরীতে বছরের পর বছর গবেষণা, বিশ্লেষণ, পরিকল্পনা প্রণয়ণ ও পরিশ্রমের প্রয়োজন হবে কেন?

    আসুন আর পাগলামি নয়, প্রকৃতি যে সব ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় এত সব সৃষ্টি করতে পারল সেই ক্রিয়া-বিক্রিয়া ঘটিয়ে প্রকৃতিকে ইচ্ছেমতো যন্ত্রপাতি, যানবাহন তৈরিতে বাধ্য করুন। চন্দ্র, সূর্য যদি ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় হতে পারে, তবে সামান্য একটা কম্পিউটার বা রকেট কেন ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় তৈরী হতে পারবে না?


    ৭। আমাদের প্রতিবেশী মঙ্গল গ্রহ। কি এক আকর্ষণে নাকি আমাদের নিকট থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে অবিরাম একই গতিতে ঘুরছে তো ঘুরছে। আসুন ঐ অদৃশ্য আকর্ষণ শক্তি নষ্ট করে দিয়ে মঙ্গল গ্রহকে আমাদের হাতের নাগালে নিয়ে আসি। পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা নাকি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। কিছু মানুষ মঙ্গল গ্রহে চালান করে দিয়ে এ আশঙ্কা থেকে আমাদের মুক্ত করুন।

    ৮। বৃক্ষরাজী সেই অনাদীকাল থেকে একই কান্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে। আম গাছে আম আর জাম গাছে জাম। আসুন এই জন্ম প্রক্রিয়ায় বৈচিত্র ঘটিয়ে জাম গাছে আম আর আম গাছে জাম ফলান।

    ৯। সাগরের পানি লবনাক্ত এবং পানের অযোগ্য। একে সুপেয় এবং মিষ্টি পানিতে পরিণত করুন।

    ১০। সাপের বিষ বিষাক্ত এবং মানুষকে ছোবল দিলে মানুষ মারা যায়। সাপের বিষকে মধুতে রূপান্তরিত করুন এবং বিশ্ব মানুষকে নিশ্চিত করুন যে, সাপে কামড়ালে আর মানুষের কোন ক্ষতি হবে না।

    ১১। এদেশের কতিপয় নারীবাদী নেতা-নেত্রী আবিষ্কার করেছেন যে, পুরুষ নাকি নারীদের ওপর নির্যাতন চালায় এবং ধর্ম নাকি নারীদের নির্যাতন চালানোর জন্য পুরুষের হাতিয়ার স্বরূপ। আসুন এই নারীবাদী নেত্রী এবং নির্যাতনের শিকার নারীদের শক্তিশালী পুরুষে পরিণত করুন, যাতে তারা যে কোন নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে এবং নির্যাতনকারী পুরুষদের ওপর প্রতিশোধ নিতে পারে।

    ১২। এ দেশের একজন বিতর্কিত নারীবাদী লেখিকা নাকি মৌলবাদীদের কথিত ‘হত্যার’ হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেছেন। বিদেশে গিয়েও নাকি তার শান্তি নেই। আসুন আর কোন মানুষের জন্য নাই পারলেন আপনাদের সমগোত্রীয় এবং একই চিন্তা-চেতনার ধারক এই মহিলাকে কখনো মৃত্যুর শিকার হতে হবে না এ গ্যারান্টি দিয়ে তার আতঙ্ক দূর করুন। ওর মৃত্যুকে বধ করে ফেলুন। বেচারী আর কত পালিয়ে বেড়াবে!



    কৃতজ্ঞতায়- মাসিক জাগো মুজাহিদ - জানুয়ারী ১৯৯৭ ।। নির্বাচিত প্রবন্ধগুলোর টেক্সটসমগ্র
    Last edited by Sabbir Ahmed; 05-13-2023, 09:13 PM.

  • #2
    সম্মানিত ভাইয়েরা,
    বর্তমান স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্র ছাত্রীরা নূন্যতম দ্বীনি জ্ঞানটুকুও পাচ্ছে না। ফলে আপনার আত্মীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে এমন কারো থাকা অস্বাভাবিক না, যার মধ্যে নানান সংশয় দানা বেঁধে রয় নাই।

    'জাগো মুজাহিদ' জানুয়ারী-১৯৯৭ সংখ্যায় প্রকাশিত এই লিখাটি আপনি ঐ ভাই বোনকে পৌঁছে দিয়ে, তার সংশয় দূর করতে ভূমিকা রাখতে পারেন।

    আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রজন্মকে রক্ষা করুন, হিদায়াত নসিব করুন। আমীন।
    Last edited by Sabbir Ahmed; 05-13-2023, 09:12 PM.

    Comment


    • #3
      আল্লাহ আমাদেরকে ও আমাদের প্রজন্মকে হিদায়েতের উপর অটল রাখুন। আমীন
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment

      Working...
      X