ফ্রান্সে ফের নবীজিকে নিয়ে কটূক্তি,
মুসলিম যুবকের হামলায় নিহত শাতিমে রাসূল
মুসলিম যুবকের হামলায় নিহত শাতিমে রাসূল
ফ্রান্সে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করার অপরাধে এক শাতিমে রাসূল (রাসূলকে নিয়ে কটূক্তিকারী) কলেজ শিক্ষককে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে রাজধানী প্যারিসের নিকটবর্তী একটি সড়কে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বরকতময় এ হামলা চালান ১৮ বছরের এক চেচেন মুসলিম যুবক। পরে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে শাহাদাতবরণ (ইনশাআল্লাহ) করেন তিনি।
বার্তাসংস্থা এএফপির বরাতে জানা যায়, নিহত ইসলামবিদ্বেষী শিক্ষক ক্লাসে ‘বাকস্বাধীনতা’ এর নামে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে প্রকাশিত ব্যঙ্গচিত্র ও কটূক্তিকে ‘বাকস্বাধীনতার অংশ’ দাবি করে এসবের পক্ষে সাফাই গায়।
কিছু মুসলিম শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা জানায়, ক্লাসে নবিজীকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের ঘটনায় আমরা স্কুলকর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আমাদের অভিযোগ নাকচ করে দেয়।
এরপর শুক্রবার বিকেলে কলেজ থেকে ফেরার পথে তাকে হত্যা করেন ১৮ বছর বয়সী একজন নবীপ্রেমী চেচেন মুসলিম যুবক। ওই সাহসী যুবক আল্লাহু আকবার তাকবির দিয়ে প্রথমে শাতিমে রাসূল শিক্ষককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। এরপর শিরোশ্ছেদ করে ব্যক্তিগত টুইটার একাউন্টে বিচ্ছিন্ন মাথার ছবি পোস্ট দেন এবং ক্যাপশনে ইসলামবিদ্বেষী ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে উদ্দেশ্য করে লিখেন:
‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর এক বান্দার পক্ষ থেকে কুফফার নেতা ইমানুয়েল ম্যাঁক্রোর প্রতি-
তোমার এক জাহান্নামের কুকুরকে আমি হত্যা করেছি; যে কিনা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অবমাননার দুঃসাহস দেখিয়েছিল। তোমাকে বলছি, তোমার প্রতিও এমন উচিৎ শাস্তি আসা পর্যন্ত রাসুল অবমাননাকারীদের সমর্থন দিতে থাকো।’
হামলার পরে ইসলামবিদ্বেষী ফরাসি প্রেসেডিন্ট ম্যাঁক্রো ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেখানেও বাকস্বাধীনতার নামে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অবমাননার পক্ষে কথা বলেছে সে। ইসলামের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের অবস্থান সুস্পষ্ট। তারা বাকস্বাধীনতার নামে রাষ্ট্রীয় সহায়তায় ইসলাম ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আক্রমণ করে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শাতিমে রাসূলদের জন্য এক নিরাপদ ঘাঁটিতে পরিণত করতে চাচ্ছে ফ্রান্সকে।
কিন্তু রাসূলপ্রেমী মুসলিম যুবকরা তাদেরকে নিরাপদে থাকতে দিতে পারেন না । তাই বার বার ফ্রান্সের মাটিতেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে অবমাননাকারী এসব জাহান্নামের কিটকে লক্ষ্য করে হামলা করেছেন, হত্যা করে তাদের প্রাপ্য মিটিয়ে দিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতাতেই রাসূলকে অবমাননাকারী ফরাসি শিক্ষককে হত্যা করেছেন চেচেন মুসলিম যুবক এবং পুলিশের হামলায় শহীদ হয়েছেন। আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের এই চেচেন ভাইকে শহিদ হিসেবে কবুল করুন; যিনি নবির সম্মানে বিলিয়ে দিয়েছেন নিজের জীবন।
একইভাবে গেল মাসে নিকৃষ্ট চিন্তাধারার ফরাসি পত্রিকা শার্লি এবদোর প্রাক্তন অফিসের সামনে আরেকটি হামলার ঘটনা ঘটেছিল। এক পাকিস্তানি মুসলিম যুবক হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করেছিলেন।
শার্লি এবদো আবারো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছিল। বাকস্বাধীনতার দোহাই দিয়ে শার্লি এবদোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে খোদ ফরাসি সরকার। বিপরীতে নবিপ্রেমী মুসলিমরাও ধর্মীয় স্বাধীনতার বাস্তবায়নে কাফেরদের এহেন বাকস্বাধীনতার উপযুক্ত জবাব দিচ্ছেন।
২০১৫ সালে শার্লি এবদো হামলার মধ্য দিয়ে শাতিমে রাসূলের প্রায়শ্চিত্তের পথ এঁকে দেয় আল-কায়েদা ইয়েমেন শাখার মুজাহিদিন। এরপর এই পথ ধরে ফ্রান্সে একের পরে এক লাশ পড়ছে শাতিমের। বাংলাদেশেও ২০১৩ সালের পর থেকে আল-কায়েদা উপমহাদেশ শাখার মুজাহিদিন ও আল-কায়েদা সমর্থিত মুজাহিদগণের দশের অধিক হামলায় প্রায় ১০ শাতিমে রাসূল নিহত হয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো এর মতো আর ফরাসী পত্রিকা শার্লি এবদোর মতোই এসব শাতিমে রাসূলের পক্ষাবলম্বন করেছে প্রথম আলো, বিবিসি বাংলার মতো ইসলামবিদ্বেষী পত্রিকাগুলো।অচিরেই হয়তো ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো এর মতো এসব ইসলামবিদ্বেষীর প্রতি বার্তা পৌছে দেবেন কোনো রাসূলপ্রেমী মুসলিম যুবক, বিইযনিল্লাহ।
লেখক: আবু নাফি আল-হিন্দি
Comment