إِنَّ اللَّهَ وَمَلٰئِكَتَهُ يُصَلّونَ عَلَى النَّبِىِّ ۚ يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا صَلّوا عَلَيهِ وَسَلِّموا تَسليمًا
আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করা অনেক মর্যাদাপূর্ণ আমল। এবং এটি আল্লাহর একটি ইবাদত। কারণ এখানে আল্লাহ তায়ালা আদেশ পালন করা হচ্ছে।
এবং এখানে আল্লাহকে স্মরণ করা হচ্ছে। কারণ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ পাঠ করতে হলে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে হয়।কেননা আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজিদের মধ্যে বলেছেন
[152] فَاذكُرونى أَذكُركُم وَاشكُروا لى وَلا تَكفُرونِ
[152] সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; অকৃতজ্ঞ হয়ো না। এবং এখানে আল্লাহর কাছে দোয়া করা হচ্ছে।কারণ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ পাঠ করতে হলে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হয়। এবং সে জন্য সাওয়াব হচ্ছে। কারণ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন
[60] وَقالَ رَبُّكُمُ ادعونى أَستَجِب لَكُم ۚ إِنَّ الَّذينَ يَستَكبِرونَ عَن عِبادَتى سَيَدخُلونَ جَهَنَّمَ داخِرينَ
[60] তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে লাঞ্ছিত হয়ে. এবং এখানে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করা হচ্ছে। কারণ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلاَةً وَاحِدَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشْرَ صَلَوَاتٍ وَحُطَّتْ عَنْهُ عَشْرُ خَطِيئَاتٍ وَرُفِعَتْ لَهُ عَشْرُ دَرَجَاتٍ
আনাস বিন মালিক (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করে, (তার বিনিময়ে) সেই ব্যক্তির উপর আল্লাহ দশটি রহমত বর্ষণ করেন, তার দশটি পাপ মোচন করেন এবং তাকে দশটি মর্যাদায় উন্নীত করেন। নাসাঈ শরীফ।
সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি পৃথিবীতে নিজের উপর আল্লাহর রহমত চায় । সে যেন অধিক পরিমাণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করে। وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم: «إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ, أَكْثَرُهُمْ عَلَيَّ صَلَاةً». أَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ وَصَحَّحَهُ ابْنُ حِبَّانَ
১৫৫৫। ইবনু মাস’উদ (রাঃ) হতে বৰ্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উপর অধিক দরূদ পাঠকারী কিয়ামতের দিনে আমার বেশি সান্নিধ্য অর্জনকারী হবে।[1]وَعَن جَابِرٍ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم، قَالَ: إنَّ مِنْ أحَبِّكُمْ إليَّ، وَأقْرَبِكُمْ مِنِّي مَجْلِساً يَوْمَ القِيَامَةِ، أحَاسِنَكُم أخْلاَقاً، وَإنَّ أبْغَضَكُمْ إلَيَّ وَأبْعَدَكُمْ مِنِّي يَوْمَ القِيَامَةِ، الثَّرْثَارُونَ وَالمُتَشَدِّقُونَ وَالمُتَفَيْهقُونَ » قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَدْ عَلِمْنَا الثَّرْثَارُونَ وَالمُتَشَدِّقُونَ ، فمَا المُتَفَيْهقُونَ ؟ قَالَ: المُتَكَبِّرُونَ ». رواه الترمذي، وقال: حديث حسن
وروى الترمذي عن عبد الله بن المبارك رحمه الله في تفسير حسن الخلق قال: هو طلاقة الوجه، وبذل المعروف، وكف الأذى.জাবের রাদিয়াল্লাহু ’আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’তোমাদের মধ্যে আমার প্রিয়তম এবং কিয়ামতের দিন অবস্থানে আমার নিকটতম ব্যক্তিদের কিছু সেই লোক হবে যারা তোমাদের মধ্যে চরিত্রে শ্রেষ্ঠতম। আর তোমাদের মধ্যে আমার নিকট ঘৃণ্যতম এবং কিয়ামতের দিন অবস্থানে আমার নিকট থেকে দূরতম হবে তারা; যারা ’সারসার’ (অনর্থক অত্যধিক আবোল-তাবোল বলে যারা) ও ’মুতাশাদ্দিক’ (বা আলস্যভরে টেনে টেনে কথা বলে যারা) এবং যারা ’মুতাফাইহিক’ লোক; সাহাবায়ে কিরাম বললেন, ’সারসার’ (অনর্থক কথাবার্তা যারা বলে) এবং মুতাশাদ্দিক (আলস্যভরে বা কায়দা করে টেনে-টেনে কথা বলে) তাদেরকে তো চিনলাম; কিন্তু ’মুতাফাইহিক’ কারা? রাসূল বললেন, অহংকারীরা।’’ (তিরমিযী, হাসান) [1]
ইমাম তিরমিযী আব্দুল্লাহ ইবন মুবারক (রাহিমাহুল্লাহ) হতে সচ্চরিত্রতার ব্যাখ্যা বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, ’তা হল, সর্বদা হাসিমুখ থাকা, মানুষের উপকার করা এবং কাউকে কষ্ট না দেওয়া।’সুতরাং আমরা বুঝতে পারলাম যে, যে ব্যক্তি অধিক উত্তম চরিত্রের অধিকারী হবে সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে। এবং যে ব্যাক্তি অধিক পরিমাণে দুরূদ শরীর পাঠ করবে সেও কিয়ামতের দিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে। তাই এই দুইটি হাদিসকে একত্রিত করে আমরা কি পেলাম? এই দুইটি হাদিসকে আমরা একত্রিত করে আমরা পেলাম যে, যে ব্যাক্তি বেশি পরিমাণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করবে তার চরিত্র তত বেশি সুন্দর হবে এবং যার চরিত্র বেশি সুন্দর হবে কিয়ামতের দিন সে তত বেশি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বর্তী হতে পারবে।
Comment