দ্রব্যমূল্যের চওড়া গতির বাজারে নিয়ন্ত্রণ হারানোর সাথে সাথে শেখ মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার অব্যাহত রেখেছিল প্রতারণামূলক এবং গণবিরোধী বিভিন্ন নীতি। বড় কথা ‘কেমন বুঝছেন শহরের সাহেবেরা’ ধরনের নির্মম রসিকতার মধ্যে শেখ মুজিব শেষ পর্যন্ত ডুবে থাকতে চেয়েছিলেন। বাস্তবোচিত কোন প্রতিকারের পদক্ষেপ মুজিব নেননি এবং তার ফলেই ’৭৪ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছিল স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের এযাবতকালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। লাখ লাখ মানুষ এই দুর্ভিক্ষে অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করে। বেসরকারি হিসেবে উঠে আসে দুর্ভিক্ষে মৃত্যের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ লক্ষ। তাদের অধিকাংশের কাফনের কাপড় পর্যন্ত মেলেনি। এমনকি কলাপাতাও নয়। কেননা, দুর্ভিক্ষ পীড়িত মানুষের কাছে সামান্য একটি কলাপাতাও তখন অত্যন্ত দুর্লভ এক খাদ্যদ্রব্যে পরিণত হয়েছিল।
বহু নারীকে কাপড়ের অভাবে বাড়িতে পড়ে থাকা পুরনো জাল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করতে দেখা গেছে, অনেকের আবার সেটুকু জোটেনি। অনেকে ডাস্টবিনে কুকুরের সাথে সন্ধান করেছেন একমুঠো খাবারের। কুকুরের সাথে ভাগাভাগি করে খেতে পারলে হয়তো সে দিনের জন্য প্রাণ টা বাজবে, এটাই ছিল গ্রাম থেকে অন্নের আশায় শহরে ছুটে আসা বহু মানুষের শেষ ভরসা। বহু নারী বাধ্য হন খাদ্যের বিনিময়ে নিজের দেহ বিক্রি করতে। তৎকালীন মানুষের অবর্ণনীয় কষ্টের কিছুটা প্রকাশ ঘটে এ প্রসঙ্গে লেখা কবি রফিক আজাদ এর ভাত দে হারামজাদা কবিতায়। কবি লিখেন,
আমার ক্ষুধার কাছে কিছুই ফেলনা নয় আজ
ভাত দে হারামজাদা,
তা না হলে মানচিত্র খাবো।
৭৪ সনে বন্যার প্রেক্ষিতে বিদেশ থেকে প্রচুর সাহায্য সামগ্রী এদেশে আসেছিলো। কিন্তু তাও শেখ মুজিব আওয়ামী 'লুটপাট' সমিতির সদস্যদের দিয়ে বন্টন করার উদ্যোগ নেন। সেই পুরাতন নিয়মে রিলিফ বন্টনের কর্মটি সম্পাদিত হয়, লুটপার করে সব রিলিফ নিজেদের গোডাউনে মজুত করতো। সরকারের এহেন গরিমসি কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের আগষ্টের শেষের দিকে হুঁশিয়ারী প্রদান করে মজলুম জননেতা ভাসানী এক বিবৃতিতে বলেন, ‘দুর্গত লোকদের ত্রাণ কাজ ত্বরান্বিত না হইলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করিবে। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে একমাত্র বিলম্বের জন্যই ৫২ লাখ লোক মারা গিয়াছিল। এবারও সেই ভুল করিলে মৃত্যুর সংখ্যা ১৯৪৩ সালে মন্বন্তরকে
ছাড়াইয়া যাইবে।’
২৩ সেপ্টেম্বর সারাদেশে দুর্ভিক্ষ পীড়িত মানুষের খাবারের জন্য ৪৩০০ লঙ্গরখানা খোলার কথা সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সরকারীভাবে পরিচালিত সেই লঙ্গরখানায় কত মানুষ আশ্রয় নিয়ে মৃত্যুর কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে তা কেউ বলতে পারবে না। সে সময় পরিস্থিতি কতখানি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল তা অনুধাবন করা যায় ২৪ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত সরকারী দলের এক সংসদ সদস্যের বিবৃতি লক্ষ্য করলে। নওগাঁর সংসদ সদস্য তার বিবৃতিতে বলেন, ‘সারা নওগাঁ জেলার লোক ৩ দিন ধরে না খেয়ে আছে।’
৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৪ জন শিক্ষক এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন,
‘জাতির জীবনে দুর্যোগ মোকাবিলার প্রতি এত অনাসক্তি, অত অবজ্ঞা, এত অদ্ভুদ রকম ঔদাসীন্য কখনও দেখা গেছে বলে বিশ্বাস হয় না। নিজের প্রতি আস্থাহীন জাতি যে কি পরিমাণ জড় পদার্থে পরিণত হতে পারে, বর্তমান বাংলাদেশ তার জ্বলন্ত উদাহরণ। স্বাধীনতা সংগ্রামের সেই একাত্মতা, ত্যাগের সহজ শক্তির সেই প্রচন্ডতা, পরবর্তীকালে সিদ্ধান্তহীনতা, ভুল সিদ্ধান্ত, প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা আর গুটিকতক লোকের লাগামহীন দুর্নীতির সয়লাবে সব ধুয়ে গেছে। দেশের নেতৃত্বের প্রতি এই জাতীয় দুর্দিনে আমাদের আকুল প্রার্থনা, জাতি হিসেবে আমাদের শক্তিতে আস্থাবান হওয়ার পরিবেশ ফিরিয়ে দিন।’
একই দিনে শ্রমিক লীগের আব্দুল মান্নান এমপি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘লবণের দুষ্প্রাপ্যতা সম্পর্কে সম্ভাব্য সকল প্রকার খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে যে, মজুতদার উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে ২ টাকা মণ দরে লবণ কেনে। মজুতদারদের জন্য অশোধিত লবণের সরকারী দাম ১৫ টাকা, আর শোধিত লবণের দাম ৫৫ টাকা। অশোধিত লবণের দাম ৪০ টাকা করা হলে বাজারে প্রচুর লবণ পাওয়া যাবে বলে মজুতদাররা মত প্রকাশ করেছেন ..... এ
ব্যাপারে আমাদের দলীয় কোনো কোনো এমপি জড়িত রয়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।’
১১ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবী ও সামাজিক ও অরাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় ১ নভেম্বর বিকেলে বায়তুল মোকাররমে একটি গণজমায়েত অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তাছাড়া সে সভায় ‘মন্বন্তর প্রতিরোধ আন্দোলন’ নামে একটি বিবৃতিমূলক প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়। তারা বিবৃতিমূলক প্রচারপত্রে বলেছিলেন,
‘বাংলাদেশ আজ ভয়াল মন্বন্তর, সর্বগ্রাসী আকাল ও মহামারী এবং চরম জাতীয় দুর্যোগের কবলে নিপতিত। এ কথা বললে অত্যুক্তি হবে যে, বাংলাদেশে বর্তমান খাদ্যাভাব ও অর্থনৈতিক সংকট অতীতের সবচাইতে জরুরী সংকটকেও
দ্রুতগতিতে ছাড়িয়ে যাচ্ছে এবং ১৯৪৩ সালের সর্বগ্রাসী মন্বন্তরের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। …বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দেশের বর্তমান সংকটকে 'সামরিক' বলে অভিহিত করেছেন এবং দুর্ভিক্ষে রাজনীতিতে লিপ্ত না হবার জন্য বিরোধী দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই উক্তিতে কোনরকম দূরদর্শিতা ও বাস্তববোধের পরিচয় আছে বলে মনে করি না।....আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে বাংলাদেশের বর্তমান মন্বন্তর মনুষ্য সৃষ্ট এবং উৎপাদন যন্ত্রের সাথে সম্পর্কবিহীন একশ্রেণীর মজুতদার, চোরাচালানী ও রাজনৈতিক সমর্থনপুষ্ট ব্যবসায়ীরাই এই মারি ও মন্বন্তর এর জন্য দায়ী। এককথায় বর্তমান শাসকগোষ্ঠী এই শ্রেণীরই প্রতিনিধি ও স্বার্থ রক্ষায় নিয়োজিত।.... গত তিন বছর ধরে একশ্রেণীর মানুষ নামধারী রাজনৈতিক ক্ষমতাবান অমানুষের নির্লজ্জ শোষণ, তস্করবৃত্তি, সন্ত্রাসবাদ, চাটুকারিতা, প্রতারণা ও দুঃশাসনের যে প্রতিযোগিতা চলছে, তারই ফল বর্তমান মন্বন্তর। এক কথায় বাংলাদেশের বর্তমান দুর্ভিক্ষ ও অর্থনৈতিক সংকট গত তিন বছরের লুটেরা শাসন, শোষণ ও অর্থনৈতিক নিষ্পেষণেই ফল..."
এই বিবৃতিমূলক প্রচারপত্রে ৮২ জন ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন সিকান্দার আবু জাফর, সভাপতি, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটি, ড. আনিসুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আইনজীবী মির্জা গোলাম হাফিজ, ভাষা সৈনিক গাজীউল হক, মহিলা সংসদ সদস্যা কামরুন্নাহার লাইলী, মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সভাপতি বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, গিয়াস কামাল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ সাংবাদিক ইউনিয়ন, ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ, সম্পাদক নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটি, আমেনা বেগম, মহিলা সংসদ সদস্যা, ওয়াহিদুল হক, সাংবাদিক, এনায়েত উল্লাহ খান, সভাপতি জাতীয় প্রেস ক্লাব, ড. সাঈদ উর রহমান বাংলাদেশ লেখক শিবির, ফয়েজ আহমদ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটি, অধ্যক্ষ এ.এম. মোঃ ইছহাক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আহমদ ছফা, বাংলাদেশ সংস্কৃতি শিবির, আবুল কাসেম ফজলুল হক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিনোদ দাশগুপ্ত,
সাংবাদিক, সৈয়দ জাহাঙ্গীর, চিত্রশিল্পী, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আনোয়ার জাহিদ, সাংবাদিক এবং বদরুদ্দীন ওমর, সম্পাদক সংস্কৃতি প্রমুখ। [১]
ক্রমে দুর্ভিক্ষ এত প্রবল আকার ধারণ করে, যা অনেকের কল্পনাকেও হার মানায়। ক্ষুধার যন্ত্রনায় দেশ জুড়ে বহু মানুষ অত্মহত্যা করতে শুরু করে। জাতীয় দৈনিকে উঠে আসে, জঠর জ্বালায় ঝিনাইদহে ৪৪১ জনের আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে ৩৩৮ জনই মহিলা।[২]
১৯৭৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ইত্তেফাকের এক প্রতিবেদনে রাজধানী ঢাকার বর্ণনা দিতে বলা হয়,
'শীর্ণকায় কঙ্কালসার আদম সন্তান। মৃত না জীবিত বুঝে উঠা দুষ্কর। পড়িয়া আছে রাজধানী ঢাকা নগরীর গলি হইতে রাজপথের এখানে সেখানে। হাড় জিরজিরে হাত রাখিয়াই অনুভব করা যায় ইহারা জীবিত না মৃত।'
১ নভেম্বর ('৭৪) রাতে বিবিসির খবরে বলা হয়, বেসরকারি হিসাবে বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষে পর্যন্ত লক্ষাধিক লোক প্রাণ হারাইয়াছে।[৩]
৮ ডিসেম্বর ('৭৪) গণকন্ঠ প্রতিবেদনে বলা হয়,
'দুর্ভিক্ষ: ৫ লাখ মরেছে, ১০ লাখ মরবে।'
রাজধানী পথে পথে অগনিত মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখতে পাওয়া যায়। তখন কেবল ‘আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম’ নামক একটি সংস্থা শুধু রাজধানী শহরেই ২৮৬০টি বেওয়ারিশ লাশ দাফন করেছিল।
সে সময় দেশের অবস্থা কতোটা ভয়াবহ ছিলো তার প্রমাণস্বরূপ এই ভিডিওটি দেখা যেতে পারে- John Pilger: An Unfashionable Tragedy (1975)- https://tinyurl.com/yy7xvk27
অবস্থা এতো বেশি শোচনীয় হয়ে উঠেছিল যে আওয়ামী লীগ সরকারকেও বাধ্য হয়ে মৃত্যুর হিসেব প্রকাশ করতে হয়েছে।
“ ৭৪ এর নভেম্বরে সাড়ে ২৭ হাজার মানুষ ‘অনাহার ও ব্যাধির ফলে’ মৃত্যূবরণ করেছে বলে খাদ্যমন্ত্রী আবদুল মোমেন জানিয়েছিলেন।”[৪]
শেখ মুজিব অবশ্য দুর্ভিক্ষকালীন সময়ে বিদেশি সাংবাদিকের সাক্ষাৎকারে অনেকটা দম্ভভরে বলেছিলেন,
"সাতাশ হাজার মানুষ মারা গেছে, অনেকে তো বলেছিলেন মিলিয়ন,মিলিয়ন মানুষ মারা যাবে"
বিআইডিএস গবেষক মহিউদ্দিন আলমগীর দুর্ভিক্ষে মোট মৃতের সংখ্যা ১৫ লাখ বলে উল্লেখ করেন।[৫]
অবশ্য ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেন বলেছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি ছিলো, ত্রাণ তৎপরতাও ছিলো খুবই দুর্বল। [৬]
দেশের লাখো লাখো মানুষ যখন জঠর জ্বালায় মৃত্যুবরণ করছিলো, মা-বোনেরা দেহ আবৃত করার জন্য এক টুকরো কাপড় পাচ্ছিল না, বাবা তার সন্তানকে খাবার দিতে না পেরে পানিতে ফেলে মেরে ফেলছিলো,[৭] বহু নারী যখন দেহ বিক্রির পথ বেছে নিচ্ছিলো, কষ্ঠ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করছিলো এমন নির্মম পরিস্থিতিতেও থেমে থাকেনি আওয়ামী সুবিধাভোগী শ্রেণীর ভোগবিলাস আর উন্মত্ততা। তারা তখনো বিদেশি মদ আমদানী করে খেয়েছে। তাস, জুয়া আড্ডায় মেতে থেকেছে।
৬ অক্টোবর দৈনিক ইত্তেফাকে সংবাদ বের হয়, ‘সারাদেশে মানুষ যখন দুর্ভিক্ষে মরণাপন্ন তখনও এদেশে ২১ লাখ টাকার বিদেশী মদ ও সিগারেট এসেছে।’ ঐদিনই খাদ্যমন্ত্রী জানান যে, এ পর্যন্ত অনাহারে কত লোক মরেছে, সরকারের তা জানা নেই।
'দেশের ঘরে ঘরে যখন বুভুক্ষ মানুষের হাহাকার তখন বৈদেশিক মুদ্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের তাস আমদানি করা হয়।'[৮]
এই ছিলো দুর্ভিক্ষের সময় আওয়ামী সুবিধাভোগী শ্রেণীর তৎকালীন অবস্থা। দেশের লাখো মানুষের ক্ষুধার জ্বালায় দুনিয়া ছাড়তে হলেও মুজিব পরিবারের দিব্যি আনন্দে কেটে গেছে দুর্ভিক্ষের সময়টা। এই দুর্ভিক্ষের মাঝে মার্চ ১৭, ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবের ঘটা করে জন্মদিন পালন করা হয়। সেদিন মুজিবের ৫৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ৫৫ পাউন্ড ওজনের কেক কাটে শেখ মুজিব নিজেই। যখন দেশের হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছেন তখন জন্মদিনের আনন্দে করতেই মুজিব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
এরপর ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী দুই পুত্রের বিয়ের অনুষ্ঠানে নতুন গণভবনে বিশাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বর্নাঢ্য জাকজমক পরিবেশে বিয়ের আয়োজনে ছিলো অগুনিত অতিথির ভীড়। বিয়ের মন্ডপে কামাল-জামাল দুই ভাই সোনার মুকুট মাথায় দিয়ে বর সেজে বসেছিলো। বিয়ের পরদিন প্রায় সবগুলো দৈনিক পত্রিকায় বড় করে ছাপানো হয় প্রধানমন্ত্রীর দুই ছেলের সোনার মুকুট মাথায় পড়ে বিয়ের খবর। সেইদিন একই পাতায় ছাপানো হয়েছিলো দুর্ভিক্ষপীড়িত, অনাহারক্লিষ্ট, হাড্ডিসার মুমূর্ষ মানুষ নামি কঙ্কালের ছবি এবং দুর্ভিক্ষের খবর। বলা যায় সারাদেশের মানুষ না খেয়ে গেলেও সেদিকে রাষ্ট্রপ্রধান মুজিবের কোন ভ্রুক্ষেপ ছিলো না। মুজিব তার পরিবার নিয়ে দিব্যি আয়েশেই ছিলেন দুর্ভিক্ষকালীন সময়ে।
চলবে ইনশা আল্লাহ…
তথ্যসূত্র:
১.মহিউদ্দিন আহমদ, 'জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি'; পৃ:১৩৮
২. ৭ অক্টোবর ১৯৭৩, সোনার বাংলা
৩. ২ নভেম্বর ১৯৭৪, ইত্তেফাক
৪. দৈনিক ইত্তেফাক, ২৩ নভেম্বর,১৯৭৪
৫. মহিউদ্দিন আহমদ, 'জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি'; পৃ:১৩৭
৬.Sen, Amartya (1981), Proverty and Famine: Eassay and Entitlements and Deprivation, Clarendon Press, Oxford, p. 134.
৭. ৩০সেপ্টেম্বর ১৯৭৪, গণকন্ঠ
৮. বঙ্গবার্তা: ১২ ডিসেম্বর ১৯৭৩
Comment