অন্তর্ভুক্তিমূলক (Inclusive) রাষ্ট্র আসলে কী?
আজকাল কথায় কথায় ইনক্লুসিভ বা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বা দেশ গড়ার কথা বলা হচ্ছে। এই ট্রেন্ডটা ফ্যাসিবাদের পতনের পর থেকে জোরে শোরে শুরু হয়েছে। আসলে এটি পশ্চিমাদের চাপিয়ে দেওয়া ও শিখিয়ে দেওয়া বুলি যা বুঝে বা না বুঝে আমাদের নেতৃবৃন্দ আওড়াতে শুরু করেছেন। অনেকেই ভাবছেন অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বা দেশ মানে এমন একটি সমাজ বা দেশ যেখানে সকলের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা হবে। যদি বলা হয় অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বলতে এমন একটি সমাজ বুঝানো হয় সেখানে সমকামীরা ‘সমকামী’ পরিচয়ের কারণে সমাজে ‘বিশেষ সুবিধা’ ও ‘মর্যাদা’ লাভ করবে এবং সমকামিতার কারণে তারা যখন এইডস ও অন্যান্য গুরুতর রোগে আক্রান্ত হবে তখন তারা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বিশেষ চিকিৎসা সুবিধা লাভ করবে, এমনকি বিশেষ কোটায় তাদেরকে সংসদেও স্থান দেওয়া হবে- একদল লোক তেড়ে আসবেন এই বলে যে ‘তোমরা তো অন্তর্ভুক্তিমূলক শব্দের অর্থই বোঝ না’।
‘অন্তর্ভুক্তি’ বা ‘Inclusion’ একটি আন্তর্জাতিক পরিভাষা। আমি বা আপনি এই শব্দের দ্বারা কী বুঝি বা না বুঝি তাতে কিছুই যায় আসে না, জানতে হবে অন্তর্ভুক্তি বলতে তারা কী বুঝাতে চান যারা এই পরিভাষার প্রণেতা। এলজিবিটি বা সমকামী অন্তর্ভুক্তি জাতিসংঘ ও পশ্চিমা বিশ্বের কাছে অন্তর্ভুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কোন দেশ বা সমাজ কতটুকু এলজিবিটি বা সমকামী-বান্ধব তা পরিমাপের জন্য পাঁচটি ক্ষেত্রে ৫১টি সূচক রয়েছে UNDP-র। এই সূচকগুলোকে বলা হয় এলজিবটিআই ইনক্লুশন ইনডেক্স।
আসুন, এবার কিছু এলজিবিটি ইনক্লুশন ইনডেক্স থেকে দেখে নেই, এসব ইনডেক্স কীভাবে ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামিতা প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম নিশ্চিত করে থাকে।
সূচক-এই সূচক কী নিশ্চিত করে:
1.7 স্কুলের শিক্ষাক্রমে সমকামী আচরণসহ বিভিন্ন ধরণের যৌনতাসংক্রান্ত তথ্য অন্তর্ভুক্তকরণ।
2.1 সমকামিতাকে অবৈধ হিসেবে গণ্য না করা।
2.2 রাষ্ট্রে সমকামিতা বিরোধী কোন আইন না থাকা।
2.3 নিজের ইচ্ছামত নিজের লিঙ্গ(জেন্ডার) নির্ধারণ করতে পারা।
2.7 a এলজিবিটি বা সমকামী স্বার্থ প্রমোটকারী এনজিওদের রেজিস্ট্রেশনের অনুমোদন।
2.7 b এলজিবিটি তথা সমকামী অধিকার(!) নিয়ে কাজ করা এনজিওদের প্রকাশ্য কার্যক্রম পরিচালনা করা।
2.8 জাতীয় সংসদে প্রকাশ্য এলজিবিটি তথা সমকামীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
3.9 এলজিবিটি তথা সমকামী মালিকাধীন বা পরিচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি।
4.9 এলজিবিটি বা সমকামীদের এইডস চিকিৎসা সেবা।
4.10 সমকামীদের যৌন স্বাস্থ্যসেবা।
5.7 বিচার বিভাগীয় ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের LGBT তথা সমকামী অধিকার(!) সংক্রান্ত বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ।
এগুলো নিশ্চিত করা ছাড়া আপনি কখনোই একটি সমাজ বা রাষ্ট্রকে জাতিসংঘ বা পশ্চিমাদের কাছে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ বা ‘Inclusive’ বলে দাবি করতে পারবেন না।
তাহলে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বা ইনক্লুসিভ রাষ্ট্র বলতে আমরা এমন একটি রাষ্ট্রকে বুঝি যেখানে-
✓জাতীয় সংসদে সমকামীদের কোটা থাকবে।
✓স্কুলের শিক্ষাক্রমে সমকামী আচরণসহ বিভিন্ন ধরণের যৌনতাসংক্রান্ত তথ্য থাকবে।
✓সমকামিতা বৈধ হবে। সমকামিতা বিরোধী কোন আইন থাকবে না।
✓ট্রান্সজেন্ডার বৈধ হবে।
✓সমকামিতা প্রমোটকারি এনজিওদের রেজিস্ট্রেশন ও কার্যক্রম অবাধ হবে।
✓সমকামীরা সমকামিতায় জড়িত হয়ে এইডসসহ যেসব জটিল রোগে আক্রান্ত হবে সে চিকিৎসা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় করা হবে।
সম্প্রতি জনাব তারেক জিয়া এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেনঃ -এবারের আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের মূল প্রতিপাদ্য – ‘এ্যাচিভিং জেন্ডার ইকুইলিটি একশন বাই একশন’ অর্থাৎ পদক্ষেপের পর পদক্ষেপ গ্রহণ করে লিঙ্গ সমতা অর্জন করতে হবে। গণতন্ত্রে নারী-পুরুষ বা অন্য যেকোন লিঙ্গের মানুষ লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলের সমান সুযোগ ও মর্যাদা লাভ করে। এটি একটি মূল মানবাধিকার। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র-সমাজে কেউ বঞ্চনার শিকার হলে জোরালো প্রতিবাদের পরিবেশ থাকে, সে কারণে নারী-পুরুষ বা অন্য যেকোন লিঙ্গের ভেদরেখা তীব্র হতে পারে না এবং ক্রমান্বয়ে সমানাধিকার নিশ্চিত হওয়ার পথে অগ্রসর হয়।
সংগৃহীত:
তথ্য সূত্রঃ
United Nations Development Programme (UNDP), 2024 LGBTI Inclusion Index: Report on the Pilot Implementation, April 24, 2024, 5, accessed September 27, 2025, https://www.undp.org/sites/g/files/z...ementation.pdf
সমকামিতার আমদানি রক্তের
বেঈমানি।
বেঈমানি।
Comment