গোপনে চলছে LGBTQ+ এজেন্ডা বাস্তবায়নের কর্মযজ্ঞ! যার নাটের গুরু "BLAST" {NGO}
একটি গবেষণা প্রতিবেদন:
আইনি ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশে বিদেশি এবং বিদেশি-তহবিল-পুষ্ট স্থানীয় এনজিওগুলো গোপনে LGBTQ+ এজেন্ডা প্রচার করছে। এমনি একটি বেসরকারি সংস্থা হলো BLAST (Bangladesh Legal Aid and Services Trust)। ইন্টারনেটে প্রতিষ্ঠানটির উপস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে বিভিন্ন শব্দ, পরিভাষা ও প্রতীকের মারপ্যাঁচে এটি এলজিবিটিকিউ এর আইনি বৈধতা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে, যেগুলো বিভিন্ন লিটমাস টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। সেই সাথে অনুমান করা গিয়েছে কীভাবে BLAST অদূর ভবিষ্যতে সমকামিতাবান্ধব দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করবে। Bangladesh Legal Aid and Services Trust) বা BLAST তাদের মধ্যে অন্যতম।
অনুসন্ধানের শুরুতে হাইপোথিসিস ছিল, প্রতিষ্ঠানটি শুধু শব্দের মারপ্যাঁচেই এলজিবিটি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।একারণে প্রথমে এই দিকটা নিয়েই গবেষণা শুরু করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে গিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট https://blast.org.bd/ ঘেটে জানা যায়, তারা মূলত এলজিবিটি এজেন্ডার আইনি ভিত্তি তৈরিতে কাজ করছে এবং এর পাশাপাশি জনগণের অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রবেশ করে সমকামীদের জন্য নির্দিষ্ট একাডেমিক বয়ান তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।
এরপর গবেষণার এক পর্যায়ে জানতে পারি, ব্লাস্টের পার্টনার হিসেবে রয়েছে তাদের মতোই আরও কিছু দেশী সংস্থা, যারা বহুদিন যাবৎ এলজিবিটি নিয়ে কাজ করে আসছে। এছাড়াও ব্লাস্টকে অর্থায়ন করছে বড় বড় বিদেশী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা, যারা সমকামিতা, জেন্ডার স্টাডিজ ও ট্রান্সজেন্ডারিজমের পেছনে কোটি কোটি টাকা অর্থায়ন করে থাকে। আর এসকল কিছুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় কিছু লিটমাস টেস্টের মাধ্যমে। পাশাপাশি সামগ্রিক অনুসন্ধান ও প্রাপ্ত ফলাফলের উপর ভিত্তি করে ব্লাস্টের পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া গিয়েছে।
অনুসন্ধান পদ্ধতি:
BLAST (Bangladesh Legal Aid and Services Trust) একটি এডভোকেসি প্রতিষ্ঠান। তাই স্বভাবতই তারা সুচারুভাবে এলজিটিবি এজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজ করে থাকে। ফলে তাদের ব্যাপারে সরাসরি খুব বেশি তথ্য জানা যায় না। একারণে ব্লাস্টের তৎপরতা ভালোমতো বুঝতে ও শনাক্ত করতে ৪টি লিটমাস ব্যবহার করি-
১.এলজিবিটি প্রজেক্ট।
২.দাতা ও সহযোগী সংস্থা।
৩.শব্দের মারপ্যাঁচ।
৪.সন্দেহজনক চিহ্ন, প্রতীক ও ছবি।
**‘এলজিবিটি প্রজেক্ট’ লিটমাস হলো, তারা সরাসরি কোনো এলজিবিটি গবেষণা বা প্রজেক্টের সাথে যুক্ত আছে কিনা সেটার নির্দেশক।
**‘দাতা ও ও সহযোগী সংস্থা’ লিটমাস দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে যে BLAST কাদের সাথে মিলে কাজ করছে এবং কাদের অর্থে চলছে। আদর্শিক মিল খুঁজে পেতে এবং এজেন্ডার সূত্র শনাক্ত করতে এভাবে অনুসন্ধান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তাদেরই ওয়েবসাইটের Our Partners এবং Our Donors পেইজ দুটি চেক করা হয়েছে।
**‘শব্দের মারপ্যাঁচ’ লিটমাসের অংশ ছিল Inclusive, Gender Discrimination, Equality, Marginalized, লিঙ্গ-নিরপেক্ষতা, ধর্ষণের লিঙ্গ-নিরপেক্ষ সংজ্ঞা, কাউকে বাদ দিয়ে নয় ইত্যাদি শব্দ ও টার্ম।
**‘সন্দেহজনক চিহ্ন, প্রতীক ও ছবি’ লিটমাস হিসেবে SDG-5 এর চিহ্ন, সমকামিতার প্রতীক, প্রাইড সিম্বল, ট্রান্সজেন্ডারিজম ও নন-বাইনারির চিহ্নসমূহ ইত্যাদি নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরপর তাদের কার্যক্রমের মাঝে এগুলো খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।
এ ৪টি লিটমাস টেস্ট থেকে ৪ ধরণের ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।
লিটমাস-১: এলজিবিটি প্রজেক্ট;
বাংলাদেশে যে কয়টি এলজিবিটি প্রজেক্ট বাস্তবায়নের কাজ চলছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো Right Here Right Now বা RHRN, যারা মূলত সমকামিতা স্বাভাবিক করতে কাজ করে থাকে এবং বিভিন্ন টার্ম ও শব্দের আড়ালে ট্রান্সজেন্ডার সামাজিকীকরণেও কাজ করছে। এছাড়াও এই প্রজেক্টের আওতায় অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে যে এই প্রজেক্টটির সাথে সরাসরি BLAST (Bangladesh Legal Aid and Services Trust) এর সম্পর্ক রয়েছে।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, Right Here Right Now – Bangladesh Platform এর ফেসবুক পেইজ থেকে BLAST-কে প্রমোট করা হয়, আবার BLAST এর পেইজ থেকে সমকামীদের সংগঠন বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি এবং RHRN-কে তুলে ধরে একসাথে পোস্ট করা হয়। আরও জরুরি প্রাপ্ত ফলাফল হলো, দেখা যায়, Right Here Right Now – Bangladesh Platform এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্লাস্টের অনারারি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্ট ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
BLAST এর একজন উপদেষ্টা, বিচারপতি মোহাম্মদ নিজামুল হক ২০১৯ সালে RHRN এর ‘Agreement Signing Ceremony’ তে স্বাক্ষর করছেন, যেটা আবার Right Here Right Now – Bangladesh Platform এর ফেসবুক পেইজ থেকে ফলাও করে প্রচারও করা হয়েছে।
সবশেষে RHRN এর আরেকটি ফেসবুক পোস্ট পাওয়া যায়, যেখানে বড় করে BLAST-কে তুলে ধরা হয়েছে।
RHRN এর সাথে BLAST এবং ব্যারিস্টার সারা হোসেনের এমন গভীর সম্পর্ক থেকে পরবর্তীতে সারা হোসেনের আরও কিছু কার্যক্রম খুঁজে পাওয়া যায়।
২০১৭ সালের ১২-১৪ ফেব্রুয়ারি জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ ‘ট্রান্সফর্মিং এসআরএইচআর: ট্রান্সজেন্ডার ডাইভারসিটিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি ফ্ল্যাগশিপ কোর্স পরিচালনা করে। এই কোর্সে ট্রান্সজেন্ডারবাদের বৃহত্তর ইতিহাস এবং এই শব্দটির পরিবর্তনশীল অর্থের উপর আলোকপাত করা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন এই ব্যারিস্টার সারা হোসেন। আর ব্র্যাক এটাকে ‘Breaking new ground in SRHR training’ শিরোনাম দিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে।
ব্যারিস্টার সারা হোসেন এবং BLAST-কে একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার সাথেও যুক্ত থাকতে দেখা গিয়েছে। সেটি হলো টুয়ার্ডস ইক্যুয়ালিটি অ্যান্ড ইনক্লুশন: অ্যা রিভিউ অব ল‘স অ্যান্ড পলিটিকস ইন বাংলাদেশ। এই গবেষণায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অন্তরালে ট্রান্সজেন্ডারদের কথাও সরাসরি উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, BLAST ২০১৫ সালে সমকামী সংগঠন বয়েজ অব বাংলাদেশ এর সাথে আইনী ক্ষমতায়ন নিয়ে যৌথভাবে কাজ করে। এমনকি ব্যারিস্টার সারা হোসেন বয়েজ অব বাংলাদেশ এর নারী সমকামী কমিক ম্যাগাজিন ধী এবং প্রথম সমকামী ম্যাগাজিন রূপবান-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সমকামী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
লিটমাস-২: দাতা ও সহযোগী সংস্থা;
BLAST এর ওয়েবসাইটের Our Partners[14] পেইজটিতে ঢুকলে তাদের সহযোগী সংস্থাগুলো সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা পাওয়া যায়। এই সংস্থাগুলোর মধ্যে পাওয়া কিছু এলজিবিটি সম্পর্কিত এনজিওসমূহ হলোঃ
✓BRAC James P. Grant School of Public Health (JPGSPH) ✓Light House
✓Naripokkho ✓Nijera Kori
এরপর BLAST এর Our Donors পেইজটি থেকে এনজিওটির অর্থের উৎস সম্পর্কে অনেকটা ধারণা লাভ করা যায়। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, উক্ত তালিকার মধ্যে থাকা সংস্থাগুলোর মধ্যে ৩টি বাদে বাকি সকল সংস্থাই প্রকাশ্যে অথবা শব্দের মারপ্যাঁচে (যেমনঃ Marginalized, Gender Equality ইত্যাদি) এলজিবিটিকিউ এজেন্ডা বাস্তবায়নে বা অর্থায়নে কাজ করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা নিম্নরূপঃ
✓Diakonia ✓Christian Aid
✓BRAC ✓Open Society Foundations
✓WINROCK ✓giz ✓crea ✓Laudes Foundation
✓Foundation for a Just Society (fjs)
✓actionaid ✓ The Asia Foundation
✓UNHCR ✓UN Women ✓European Union
✓FEMNET
আর Bestseller Foundation, AMBERO এবং Global Innovation Fund এর ব্যাপারে পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ ১৮টি দাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫টিই সরাসরি সমকামী আন্দোলনের সাথে জড়িত। সুতরাং প্রায় ৮৩% দাতা প্রতিষ্ঠানই নিশ্চিতভাবে এলজিবিটিকিউ এর সাথে জড়িত।
লিটমাস-৩: শব্দের মারপ্যাঁচ;
যেহেতু আগের দুই লিটমাসে অনেক নেতিবাচক তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাই ৩য় লিটমাসের অধীনে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম শব্দগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে বেশ কিছু উদ্বিগ্নজনক ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।
প্রথমে, ‘বিচার ব্যবস্থার সংস্কার বিষয়ে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এর প্রস্তাবনা' থেকে দেখা যায়, BLAST তাদের প্রস্তাবনার ভূমিকায় সরাসরি ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠী’ ও ‘লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠী’ এর উপর গুরুত্বারোপ করেছে। এই কথার মাধ্যমে যে তারা সমকামী গোষ্ঠীর বিশেষত ট্রান্সজেন্ডারদের কথা বুঝিয়েছে, তা জানা যায় ঐ সুপারিশ ওয়েবসাইটটির যে পেইজে প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানকার শেষের দিকের একটি লাইন থেকে। সেখানে ‘বিচার বিভাগীয় সংস্কারে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের সুপারিশ’ নামক শিরোনামের একটি ছোট প্রবন্ধে বলা হয়েছে, “পুলিশ সংস্কারের জন্য জাতিসংঘ নির্যাতন বিরোধী সনদ ও এর ঐচ্ছিক প্রোটোকল এবং ইস্তাম্বুল প্রটোকলসহ গুরুত্বপূর্ণ সনদের অনুমোদন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী ৫৪ ও ১৬৭ ধারাসহ ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন, পুলিশ প্রশিক্ষণের শিক্ষাক্রমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের (আদিবাসী, দলিত, লিঙ্গ বৈচিত্র্যপূর্ণ জনগোষ্ঠী) প্রথা এবং সাংস্কৃতিক নিয়মাবলী সম্পর্কে সচেতনতামূলক পাঠ অন্তর্ভুক্ত করা, কোন শিশুকে হেফাজতে নেয়ার সময় বা তাকে নিয়ে পরিবহন করার সময় আলাদা স্থানে রাখার ব্যবস্থা করা এবং লিঙ্গভিত্তিক ও পারিবারিক সহিংসতার ক্ষেত্রে, অভিযোগকারী যাতে অনলাইনে অভিযোগ দায়ের করতে পারে তার জন্য একটি নির্ধারিত ওয়েব পোর্টাল চালু করা সহ আরো বেশ কয়েকটি সুপরিশ উপস্থাপনা করেন।” এখানে ‘লিঙ্গ বৈচিত্র্যপূর্ণ জনগোষ্ঠী’ কথাটি এলজিবিটিউকিউকে নির্দেশ করে। এছাড়াও যেই ইস্তাম্বুক প্রটোকলের কথা বলা হয়েছে, সেটিও সমকামিতার সাথে সম্পর্কিত। তুরষ্কের একটি সরকারি বিবৃতিতে বলা হয় যে ইস্তাম্বুল কনভেনশন মূলত নারী অধিকার প্রচারের উদ্দেশ্যে তৈরি হলেও তা সমকামিতাকে স্বাভাবিক করতে ভূমিকা রাখা লোক দ্বারা হাইজ্যাক হয়েছে।
facilitated Gender based Violence- TFGBV) বাড়তে থাকায়, নারী ও শিশুদের ডিজিটাল জগতে সুরক্ষিত রাখতে জরুরি এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।” এই TFHBV টার্মটিও এলজিবিটি জনগোষ্ঠীকে প্রান্তিক প্রমাণ করতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
অর্থাৎ, সংস্কার বিষয়ক BLAST চারটি প্রস্তাবনাতেই সমকামী আন্দোলনের উল্লেখ বা ইঙ্গিত রয়েছে।
এছাড়াও BLAST এর ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজের একাধিক কন্টেন্টেও শব্দের মারপ্যাঁচ পরিলক্ষিত হয়। তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে যে তারা Inclusive Society বিনির্মাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কাজের অন্যতম ক্ষেত্র হলো Social Justice and Inclusion। তাছাড়াও নারীর ক্ষমতায়নের সাথে Gender Justice শব্দেরও ব্যবহার দেখা গিয়েছে, যা মূলত সমকামী আন্দোলনের একটি তাৎপর্যপূর্ণ টার্ম।
লিটমাস-৪: চিহ্ন, প্রতীক ও ছবি;
BLAST এর ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেইজ ঘেঁটে এলজিবিটিকিউ এর সাথে সম্পৃক্ত কিছু ছবি পাওয়া যায়।
১ম যেই ছবিটা খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, সেটি হলো এসডিজির এলজিবিটি বান্ধব অভীষ্ট SDG-5 এর প্রতীক সংবলিত একটি ব্যানারের পেছনে BLAST এর বিভিন্ন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও কর্মীদের ছবি। এই ছবির একদম ডানে আবার একজন জুব্বা পরিধান করা দাঁড়িওয়ালা ব্যক্তিকেও রাখা হয়েছে। ছবিটি নিচে দেওয়া হলো।
এরপর ২য় আরেকটি ছবি পাওয়া যায় তাদের ওয়েবসাইট থেকেই, যেটি মূলত একটি কর্মশালার। এখানে পিছনে একটি ব্যানার দেখা যাচ্ছে, যেখানে লেখা
‘কাউকে বাদ দিয়ে নয়’, যা এলজিবিটি আন্দোলনের অন্যতম টার্ম ‘Inclusive Society’ এর সম্পূরক শব্দ।
৩য় আরেকটি ছবি ব্লাস্টের ফেসবুক পেইজের একটি পোস্টে দেখা যায়, যেখানে নকল হিজড়া তথা ট্রান্সজেন্ডারদেরদের সমালোচনার সাথে আসল হিজড়া সম্প্রদায়কে মিলিয়ে দেখানোর মাধ্যমে সহানুভূতি অর্জনের চেষ্টা করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে ব্লাস্টের সুকৌশকে এলজিবিটিকিউ এর সাথে সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এরপর থেকে তাদের ডকুমেন্ট, পোস্ট, রিসোর্স ইত্যাদিতে থাকা সমকামী আন্দোলনের প্রতিটি বিশেষায়িত শব্দ ও প্রতীককে গুরুত্বের সাথে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে ৩য় ও ৪র্থ লিটমাস টেস্টের ফলাফল আরও জোরালো হয়েছে। সব মিলিয়ে BLAST এর কার্যক্রমের ধরণ ও উদ্দেশ্য সফলভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
ফলাফল ব্যাখ্যা করলে দেখা যায়, BLAST সরাসরি RHRN প্রজেক্টের সাথে জড়িত। এই প্রজেক্টের আওতায় বিভিন্ন জেলার তরুণদেরকে যৌনশিক্ষার প্রসারে ট্রেইনিং দেওয়া হয়, যার মধ্যে সুকৌশলে এলজিবিটিকিউও অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং BLAST এ কাজে আইনি (অ্যাডভোকেসি) সহযোগিতা প্রদান করে। আর এসকল ক্ষেত্রে ব্লাস্টের যে অর্থ প্রয়োজন হয়, তা দিচ্ছে Open Society Foundations এর মতো সমকামিতা বাস্তবায়নে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ, লাইটহাইজ ও নারীপক্ষ-এর মতো চিহ্নিত এনজিওগুলো ব্লাস্টের সহযোগী হিসেবে টেকনিক্যাল সহযোগিতা প্রদান করছে।
অর্থাৎ BLAST একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করে ফেলেছে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন শব্দ ও প্রতীকের মারপ্যাঁচে ক্রমশ এলজিবিটিকিউকে তুলে ধরছে। আর এক্ষেত্রে ব্রেইনওয়াশ হিসেবে টুপিওয়ালা পুরুষ কিংবা হিজাব পরিহিতা নারীকে কাজে লাগানো হচ্ছে। সেই সাথে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করেও তারা ইতিবাচক ভাবমূর্তি অর্জন করছে।
BLAST প্রতিনিয়ত সুসংগঠিত হয়ে তাদের কারযক্রম কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এলজিওটি যেহেতু মূলত অ্যাডভোকেসি সংস্থা, তাই তাদের প্রধান নজর রয়েছে বাংলাদেশে এলজিবিটিকিউ এর আইনী ভিত্তি তৈরি বা সমকামিতাবান্ধব আইনি কাঠামো তৈরির উপরে। এক্ষেত্রে তাদের আগ্রহের ক্ষেত্রগুলো হতে পারেঃ
**ধর্ষণের সংজ্ঞা বদলে ‘লিঙ্গ নিরপেক্ষতা’ এর ধারণা প্রতিষ্ঠা।
**‘ট্রান্সজেন্ডার সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নে ভূমিকা পালন।
**মানবাধিকারের নামে সমকামীদেরকে গণহারে আইনি সহায়তা প্রদান।
**দরিদ্র অসচেতন জনগোষ্ঠীর মাঝে এলজিবিটি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি।
**দন্ডবিধি-৩৭৭ এর সংশোধন।
গবেষণাটির বেশিরভাগ ফলাফলই অনলাইনে থাকা তথ্যাবলি ব্যবহার করেই পাওয়া গিয়েছে। তাই যদি মাঠ পর্যায়ের কাজগুলো তদারকি করার সুযোগ থাকতো, তাহলে আরও গভীরে গিয়ে কিছু বিষয় জানা যেতো। এখানে এই সীমাবদ্ধতাটি থেকে গিয়েছে। তবে সামগ্রিক গবেষণাটি এই প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট যে BLAST সুনিপুণভাবেই এলজিবিটিকিউ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
আর অনুসন্ধানটি এই বার্তা বহন করে যে, সামাজিক সচেতনতা অবলম্বন করা অত্যাবশ্যক হয়ে গিয়েছে। নতুবা BLAST এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো খুব দ্রুতই পুরোপুরি এলজিবিটিকিউ বান্ধব সিস্টেম গড়ে তুলবে।
শেষ কথা:
পুরো গবেষণাটির প্রায় সকল ফলাফলই পাওয়া গিয়েছে BLAST এরই ওয়েবসাইট আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপর অনুসন্ধান চালানোর মাধ্যমে। যদি মাঠ পর্যায়ে তাদের কার্যক্রমগুলোকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা যেতো, তাহলে আরও কিছু সমাজবিধ্বংসী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানা যাবে বলে আশা করা যায়। এছাড়াও একই উপায়ে মিলতে পারে বিভিন্ন সন্দেহজনক প্রশ্নেরও জবাব। সমগ্র অনুসন্ধানটির প্রধান গুরুত্বের জায়গা হলো, এটি সরাসরি দেখায় যে কীভাবে আমাদের এই সংরক্ষণশীল সমাজে বিভিন্ন বিষয়ের অন্তরালে এলজিবিটিকিউ এজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজ হচ্ছে, কারা সহযোগীর ভূমিকা পালন করছে এবং সামনের দিনগুলো কতটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। গবেষণাটি থেকে আমাদের করণীয়সমূহের ব্যাপারেও প্রাথমিক ধারণা পাওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে।
হে আমাদের পালনকর্তা দয়াময় আল্লাহ, মুসলিম উম্মাহকে হিফাজত করুন এবং যাবতীয় দাজ্জালী ও শয়তানী চক্রান্তের বিরুদ্ধে যথা উপযুক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আমাদের তাওফীক দান করুন-আমীন।
সংগৃহীত:
কয়েকটি সূত্র:
**https://blast.org.bd/partners/
**https://blast.org.bd/our-donors/
**[https://rutgers.international/progra...ere-right-now/
**https://www.facebook.com/share/p/1L5Bqpr8Mz/
**https://bangla.thedailystar.net/news...sh/news-501561
**https://policy-practice.oxfam.org/re...ilence-620436/
**https://commission.europa.eu/news-an...-2025-10-08_en