মুসলিমদের শত্রু আইভরি কোস্টে
বেড়েছে মুজাহিদিনের হামলা
বেড়েছে মুজাহিদিনের হামলা
আইভরি কোস্ট; পশ্চিম আফ্রিকার খ্রিষ্টান প্রধান একটি দেশ। প্রতিবেশী দেশ বুরকিনা ফাসোর মুরতাদ বাহিনী এবং ক্রুসেডার ফ্রান্সের সাথে জোট বেঁধেছে দেশটি। এই জোটের লক্ষ্য আফ্রিকায় মুসলিমদের দেশে আগ্রাসন চালিয়ে তা ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা, মুসলিমদের জান-মালের নিরাপত্তা কেড়ে নেওয়া, মুসলিমদের সম্পদ লুট করা, ইসলামি আদর্শকে ধূলিসাৎ করা। কিন্তু তাদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার আল-কায়েদার মুজাহিদগণ। ক্রুসেডার জোটের হাত থেকে মুসলিম ভূমি রক্ষার জন্য নিজেদের দেহের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়ে যাচ্ছেন তারা। এজন্য ক্রুসেডার জোটের প্রধান টার্গেটেও পরিণত হয়েছেন মুজাহিদগণ। মুজাহিদগণকে দমন করতে ক্রুসেডার জোটের অন্যতম সদস্য আইভরি কোস্টও চেষ্টা করে যাচ্ছে।
বৃহৎ এই শত্রু জোটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মুখোমুখি আল্লাহর অল্প কিছু সৈনিক। পরম করুণাময় আল্লাহর সাহায্যে এই অসম যুদ্ধেও বিজয়ের পথে এগিয়ে রয়েছেন মুজাহিদগণ। তাদের যুদ্ধকৌশলও ক্রুসেডার জোটের বিরুদ্ধে তাদেরকে সাহায্য করছে। মুজাহিদগণের অন্যতম ঘোষিত একটি যুদ্ধকৌশল হলো, শত্রুকে তার নিজভূমিতেই ব্যস্ত রাখা, শত্রুর ভূমিকে অনিরাপদ করে তোলা। আর এই লক্ষ্যেই ক্রুসেডার আইভরি কোস্টে চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষ দিক থেকে বেশ কিছু অভিযান চালিয়েছেন আল-কায়েদা ইসলামি মাগরিবের জানবায মুজাহিদিন।
এ অভিযানগুলো আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে, বিশেষ করে মালি এবং বুরকিনা ফাসোতে মুজাহিদদের ক্রমবর্ধমান শক্তিশালী অবস্থানকেও নির্দেশ করে। বর্তমানে মালি ও বুরকিনা ফাসোতে মুজাহিদরা একের পর এক শহর ও এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছেন পশ্চিম আফ্রিকার আরো ভেতরে। শুধু আইভরি কোস্ট নয়, মুসলিম ভূমি বিস্তারের এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে টোগো, ঘানাসহ পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলীয় আরও অনেকগুলো দেশে।
২০১৬ সালে আইভরি কোস্টের গ্র্যান্ড বাসসাম এলাকায় সমুদ্র সৈকতের একটি রিসোর্টে হামলার পর প্রায় ৪ বছর মুজাহিদরা আইভরি কোস্টে কোনো হামলা চালাননি। এরপর ২০২০ সালের জুনে কেবল একবার হামলা চালিয়েছেন দেশটিতে। আর এই বছর গত মার্চ মাসের ২৯ তারিখ থেকেই অন্তত ৯ বার হামলা চালিয়েছেন মুজাহিদগণ।
এসব অভিযানের মধ্য দিয়ে আইভরি কোস্টে প্রথম আইইডি-এর ব্যবহার লক্ষ্য করেছে বিশ্ব। আইভরি কোস্টে ২০২১ এর এপ্রিলে অন্তত ৪ বার আইইডি হামলা চালিয়েছেন JNIM এর কাতিবাত মাসিনা ব্রিগেডের মুজাহিদরা। পহেলা এপ্রিল সাভানেস জেলার কাফোলো এলাকায় আইইডি হামলা চালানো হয়। তার ১১ দিন পর দেশটির জান্দারমা বাহিনীর গাড়ি কাফোলো এলাকার দক্ষিণে আইইডি হামলার শিকার হয়। এরপর ২৬শে মে কাফোলোতে আইভোরিয়ান সামরিক বাহিনীর টহলদার দলের উপর আইইডি হামলা চালানো হয়। পরবর্তী মাসের ১২ তারিখ যানযান জেলার তেহিনি এলাকায় মুজাহিদদের আইইডি হামলায় ২ জান্দারমা এবং এক সেনা সদস্য ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
আইভরি কোস্টের সাম্প্রতিক হামলাগুলোর বেশ কয়েকটির অবস্থান ছিল সাভানেস এবং যানযান জেলায়। দুটো জেলা-ই বুরকিনা ফাসোর সীমান্তবর্তী। সেখানে আল-কায়েদা শাখা জামায়াত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (JNIM)-এর শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে। বর্তমানে আইভরি কোস্টের সীমান্তের ভেতরে কোমোয় ন্যাশনাল পার্ক ও উক্ত এলাকার বনাঞ্চলেও এখন শক্ত ঘাঁটি গেড়েছেন মুজাহিদগণ। সীমান্ত এলাকার বনাঞ্চলে নিজেদের অবস্থান মজবুত করার পর এখন পুরো বনাঞ্চল দিয়ে মুজাহিদিনের নিত্যপ্রয়োজনীয় রসদপত্র ও অস্ত্র আনা-নেয়া করছেন এবং এসব এলাকাগুলোকে নিজেদের ঘাঁটি ও আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করছেন।
এখন পর্যন্ত মুজাহিদদের অভিযানসমূহ আইভরি কোস্টের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে সীমাবদ্ধ আছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আইভরি কোস্টের প্রেসিডেন্ট ‘আলাসান উআত্তারার’ দীর্ঘকাল যাবৎ ক্ষমতায় থাকা দেশটিতে বিদ্রোহের সূচনা করতে পারে। একই সাথে গোত্রীয় সংঘর্ষ দেশটিতে যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি করবে। যুদ্ধ বা বিদ্রোহ দুটোতেই মুসলিমরা লাভবান হবেন। এছাড়াও দেশটির সামরিক বাহিনীতে নাগরিকদের জোরপূর্বক অংশগ্রহণে বাধ্য করায় মানুষের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি করবে, যার মাধ্যমে মুজাহিদদের জন্য এই ভূমিতে দাওয়াহ ও জিহাদের কাজ ইনশাআল্লাহ পূর্বের থেকে আরও সহজ হয়ে যাবে বলে মনে করা হয়।
লেখক: ত্বহা আলী আদনান, প্রতিবেদক, আল-ফিরদাউস নিউজ
Comment