Announcement

Collapse
No announcement yet.

তালেবানদের সাম্প্রতিক বিজয়, এবং আমাদের উপলব্ধি

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • তালেবানদের সাম্প্রতিক বিজয়, এবং আমাদের উপলব্ধি

    তালেবানদের সাম্প্রতিক বিজয়
    এবং আমাদের উপলব্ধি


    গত ঈদুল আজহার (২০২০) যুদ্ধবিরতির পরে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের তালেবানরা দেশের অনেক অঞ্চল থেকে কাবুল প্রশাসনকে হটিয়ে সেখানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন। বিশেষত গত কয়েক মাসে তালেবানরা বিস্ময়কর এবং দ্রুত অগ্রগতি লাভ করেছেন। যা গত ২০ বছরেও দেখা যায় নি। আমরা তালেবানকে মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেও দেশের ২৪টি জেলা বিজয় করতেও দেখেছি, হয়ত সমানে বিজয়ের এই ধারা আরো বৃদ্ধি পাবে। যা আগে একটি অকল্পনীয় বিষয় ছিল। আবার নতুন বিজিত এই জেলাগুলোর বেশিরভাগই দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা। যেখানে তালেবান বিরোধী শক্তিগুলো সবচাইতে শক্তিশালী অবস্থানে ছিল।

    তালেবানরা তাঁদের এই অগ্রগতি মাধ্যমে মিডিয়া এবং রাজনৈতিক বিতর্কের দু’টি উদ্বেগ হ্রাস করে দিয়েছেন।পশ্চিমা মুজাহিদ বিরোধী মিডিয়াগুলো প্রথমদিকে তালেবানদের বিজয় দেখে জনসাধারণ ও কাবুল বাহিনীর মাঝে বিভিন্নভাবে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিল-এখন যদি তালেবানরা পুনরায় বিজয়ী হয়ে দেশটির ক্ষমতায় আসে, তাহলে তালেবানরা তাদের সাথে ঘটা প্রতিটি অন্যায়ের জন্য কঠিন প্রতিশোধ গ্রহণ করবে। ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়াগুলো এভাবেই মানুষের মনে একধরণের আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে তালেবানদের বিরুদ্ধে পুনরায় দাড় করানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিল। পশ্চিমা এই মিডিয়াগুলোর সাথে ছিল উত্তরাঞ্চলের যেসব প্রাক্তন তালেবান বিরোধী বিদ্রোহী ও সন্ত্রাসী, যাদের সহায়তায় ২০০১ তালেবান সরকারের পতন হয়েছিল। এবং যারা তালিবানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল।

    কিন্তু তালেবানদের সাম্প্রতিক বিজয় এবং অগ্রগতি ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়ার এই অপপ্রচারের ফলে যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল তা অনেকাংশেই হ্রাস হয়েছে। যার ফলে দলে দলে কাবুল সৈন্যরা তালেবানদের কাছে আত্মসমর্পণ করছে। তালেবানদের কাছে নিজেদের অতীত ভুলের জন্য ক্ষমা চাচ্ছে।

    এদিকে তালেবানদের অগ্রগতির সাথে সাথে এই উদ্বেগ বাড়ছিল যে, তালেবানরা ক্ষমতায় এলে দেশের উত্তরাঞ্চলের তালেবান বিরোধী সাবেক বন্দুকধারীরা আবারও কিছু লোককে বিভিন্ন নামে সজ্জিত করে তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করবে। যার ফলে দেশটিতে আবারও নতুন যুদ্ধ এবং বিপর্যয়ের সূচনা হবে।

    কিন্তু তালেবানরা বর্তমানে তাঁদের বেশিরভাগ অগ্রগতিই অর্জন করেছেন দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় জাউজান, তাখার, ফারিয়াব, কুন্দুজ এবং অন্যান্য অনেক অঞ্চলে। তালেবানদের সাম্প্রতিক ও সর্বশেষ অগ্রগতি বিষয়ে আন্তর্জাতিক ও দেশটির আঞ্চলিক মিডিয়ায় একটু নজর দিলেই এটি বোঝা যায়। তালেবানরা তাঁদের বিজয় আর অগ্রগতির মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে, এই উদ্বেগ একেবারেই ভিত্তিহীন। বরং দেশের চারটি অংশেই এখন তালেবানদের বিশাল উপস্থিতি রয়েছে। আর দেশের উত্তরাঞ্চলে তালেবানরা আগের চেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছেন এবং স্থানীয় মুজাহিদীনের সহায়তায় বহু অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছেন। এমনকি এটাও বলা হয় যে, এই সাম্প্রতিক বিজয়গুলোর মধ্যে এমন অঞ্চলগুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ লড়ায়ের পরেও তালেবানরা বিজয় করতে সক্ষম হননি। এসব অঞ্চল দুর্নীতিবাজ, শিয়া বিদ্রোহী ও তালেবান বিরোধীদের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসাবেই পরিচিত ছিল। আর এইসব অঞ্চলে এখন প্রথমবারের মতো নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছেন তালেবানরা।

    আর গত বিশ বছরে এই অঞ্চলের তালেবান বিরোধী এবং যুদ্ধবাজ নেতাদের প্রকৃত পরিচয়ও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এই অঞ্চলের জনসাধারণের কাছে। এখন কয়েক জন যুদ্ধবাজ ও বিদ্রোহীদের ষড়যন্ত্র ও প্রতারণার ফলে কোন অঞ্চলের মানুষই প্রতারিত হচ্ছেন না। কারণ তালেবানরা ইসলামী আদর্শ ও নিজেদের বিচক্ষণতা ও কার্যকরী কৌশলের মাধ্যমে দেশে জাতিগত কুসংস্কার, বিচ্ছিন্নতা এবং বিভাজনকে রোধ করেছেন। দেশের সমস্ত অঞ্চলকে ঐক্য ও সংহতির এক দৃষ্টান্তরূপে বিশ্বের সামনে দাঁড় করিয়েছেন। তাদের মধ্যে চিন্তা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে ভ্রাতৃত্বের অবিচ্ছেদ্য এক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন তালেবানরা। সুতরাং, এটি বলা যেতে পারে যে উপরে বর্ণিত উদ্বেগ বা আশঙ্কা এখন ভিত্তিহীন, ইনশাআল্লাহ্।

    দ্বিতীয়ত, কিছু লোক জনগণ ও কাবুল বাহিনীর মধ্যে থেকে যারা সঠিক পথে ফিরে আসতে চায় তাদের মাঝে একটি আশঙ্কা ছড়িয়ে দিচ্ছিল । আর তা হচ্ছে- যদি তালেবানরা এই দেশের নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে, তবে যারা বিদেশি হানাদারদের সহযোগিতা করেছিল এবং তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল, তালেবান তাদের থেকে প্রতিশোধ নেবে। তালেবান তাদের কাউকেই তিল পরিমাণ ছাড় দিবে না। তবে, তালেবানদের সাম্প্রদিক বিজয় কার্যকরভাবে এই উদ্বেগকে হ্রাস করেছে। তালেবানরা দেখিয়েছেন যে তাঁদের প্রতিশোধ নেওয়ার কোনও উদ্দেশ্য নেই। বরং জিহাদ ও যুদ্ধের সময় এবং সাধারণ ক্ষমার জায়গায় তাঁরা তাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ ﷺ পথে চলছেন।

    নবী করীম ﷺ যেমন মক্কা বিজয়ের সময় কুরাইশদেরকে সাধারণ ক্ষমার বাণী শুনিয়েছিলেন। তেমনি তালেবানরাও বলছেন যে, যারা লড়াই ছেড়ে দিয়েছে, যারা অতীত ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী, ইমারতকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে, যারা ভবিষ্যতে আর কাবুল বাহিনী ও হানাদারদের সহায়তা ও তাদের সাথে কোনো যোগাযোগ রাখবে না- যাও, তারা মুক্ত!

    আর এটি তালেবানরা বাস্তবে করেছেনও। তালেবানদের প্রতিশোধ নেওয়ার চিন্তাভাবনা না থাকায় দেশের অধিকাংশ স্থান থেকেই গত কয়েকদিনে কয়েক হাজার হাজার সৈন্য তালিবানের হাতে আত্মসমর্পণ করেছে। আবার যাদেরকে তালেবানরা যোদ্ধাদের ময়দান থেকে বন্দী করছেন, সেসব সৈন্যদের সাথেও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ও আহত সৈন্যদের চিকিৎসা নিশ্চিত করছেন। এতই সৌম্যপূর্ণ এবং করুণাময় ভিডিওর কয়েকটি দৃশ্যে তালেবান জনগণের আবেগ জাগিয়ে তুলেছিলেন এবং তাদের চোখ থেকে আনন্দ ও আশার জল ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। আল্লাহু আকবার।

    তালেবানদের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র- মুহতারাম জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ হাফিজাহুল্লাহ্ তালেবান যোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে একটি অডিও বার্তায় বলেছেন, “সৈনিক এবং পুলিশ সদস্যরা যারা অস্ত্র রেখে মুজাহিদ ভাইদের সাথে যোগ দেয়, তাদের বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি যেন হয় সম্পূর্ণ মানবিক, সংবেদনশীল এবং সদয়”।

    তিনি আরও বলেন, ‘কাবুল প্রশাসনের সৈন্যদের অবশ্যই তাদের মুজাহিদ ভাইদের এই আশ্বাস দিতে হবে- আমরা আপনাদের এবং আপনাদের পরিবারকে সুরক্ষা প্রদান করব। আমাদের দ্বারা আপনাদের কোনো ক্ষতি করা হবে না। আত্মসমর্পণ এবং অস্ত্র রেখে এই লড়াই ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে; আপনারা আমাদের ভাই।

    তাদের সাথে আমাদের আচরণ হবে অত্যন্ত দয়ালু এবং মমতাময়ী’।

    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহুল প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একজন তালেবান মুজাহিদ আত্মসমর্পণকারী সৈন্যদের অত্যন্ত আন্তরিক সুরে নিরাপত্তার আশ্বাস দিচ্ছেন।

    অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তালেবান মুজাহিদরা ফারিয়াব প্রদেশে আত্মসমর্পণকারী সৈন্যদের আশ্বাস দিয়ে বলছেন, “স্বাগতম! স্বাগতম! আপনাদের কোনও ভয় ও সমস্যা নেই। শুধু ফিরে আসুন আমার ভাই, কেউ আপনাদেরকে বিরক্ত করবে না, কেউ আপনাদেরকে বিরক্ত করবে না। ”

    তালেবান মুজাহিদরা অত্যন্ত কঠোরভাবে শরীয়াহ মেনে চলেন। আর এই বিষয়টি তালেবান মুজাহিদ কর্তৃক অযৌক্তিকভাবে প্রতিশোধ নেওয়ার ভয় দূর করেছে।

    এদিকে গত ২২ জুন, ইমারতের ইসলামিয়া আফগানিস্তানের আমীরুল মু’মিনিন শাইখুল হাদিস হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা হাফিজাহুল্লাহ্ মুজাহিদদের উদ্দেশ্যে একটি বার্তায় বলেছেন, ” কেউ আপনার কাছে আত্মসমর্পণ করলে, তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করুন।” এটি তালেবান যোদ্ধাদের জন্য কেবল একটি ছোট বাক্যই ছিল না, যা বলা এবং করা হয়। বাক্যটি শুনে মুজাহিদরা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন এই বলে, “আমরা আপনার দেওয়া প্রতিটি শরয়ী নির্দেশনা মনে চলাকে নিজেদের জন্য আবশ্যক মেনে করি, কারণ আমরা আল্লাহকে ভয় পাই।”


    লেখক: ত্বহা আলী আদনান, প্রতিবেদক: আল ফিরদাউস নিউজ।
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    আল্লাহু আকবার!
    আল্লাহু আকবার!!
    আল্লাহু আকবার!!!
    ওয়া লিল্লাহিল হামদ!!!!
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      আল্লাহু আকবার!
      আল্লাহু আকবার!!
      আল্লাহু আকবার!!!
      ওয়া লিল্লাহিল হামদ!!!!
      গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

      Comment


      • #4
        আল্লাহ সর্বদা তাঁর নেক বান্দাদের সাহায্য করে থাকেন।

        Comment


        • #5
          ইসলাম এতো সুন্দর। আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ। ভাইয়েরা, অনুগ্রহ করে এ-ই সময়ের মুজাহিদ ভাইদের ভিডিওগুলো ছড়িয়ে দিন, বিশেষ করে আত্নসমর্পণ করলে নিঃশর্ত ক্ষমা করা হচ্ছে। আপনাদের কাজগুলো আল্লাহ কবুল করুন।
          বিলাসিতা জিহাদের শুত্রু,শাইখ উসামা রাহ।

          Comment


          • #6
            আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
            বিজয়ের এই ধারা অব্যাহত থাকুক...!
            ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

            Comment

            Working...
            X