উভয় সঙ্কটে ফিলিস্তিনি মুসলিমরা :
একদিকে ইসরায়েলের বোমা হামলা, আরেকদিকে আব্বাসের ধরপাকড়!

একদিকে ইসরায়েলের বোমা হামলা, আরেকদিকে আব্বাসের ধরপাকড়!

ফিলিস্তিনি মুসলিমদের জন্য পরিস্থিতি দিন দিন কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। হামাস-ফাতাহ উভয়ই গোপন অস্ত্রচুক্তি করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে ইহুদীদেরই বেঁধে দেওয়া ছকে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে।
পশ্চিম তীরের ফাতাহ সেটা করেছে বহু আগেই; ইহুদীদের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে সেখান থেকে মুসলিমদের উচ্ছেদ ও অবৈধ ইহুদীবসতি নির্মাণ কিংবা ইচ্ছে হলেই তল্লাশীর নামে মুসলিমদের বাড়িঘরে রাত বিরাতে ইহুদীদের হানা,হত্যা,লুটপাট,শ্লীলতাহানী – এসব নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া শুধু নিন্দা প্রকাশ আর জাতিসঙ্ঘের কাছে ‘নালিশ’ দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
অপরদিকে অবরুদ্ধ গাযা ভূখণ্ডে সশস্ত্র যুদ্ধের শ্লোগান তুলে একসময় জনপ্রিয়তা পাওয়া হামাস নিজেদের গণতান্ত্রিক বেড়াজালে আটকিয়ে ফেলেছে – সেও প্রায় দেড় দশক।
সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে মুসলিমদের হৃত ভূমি পুনরুদ্ধারের কার্যক্রম দৃশ্যত কোন পক্ষেরই নেই। বরং তাদের কাছ থেকে উল্টো চিত্র লক্ষ্য করা গিয়েছে সময়ে সময়ে।
গতো রমাজান মাসে গাযায় চালানো ইসরায়েলী আগ্রাসনোত্তর যুদ্ধবিরতির পরও নতুন সংকটে পড়ে ফিলিস্তিনিরা। একদিকে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভের কারণে ধরপাকড় চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী, অন্যদিকে একইভাবে নিজ নাগরিকদের ওপর আটক অভিযান চালিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। পশ্চিম তীরে বেছে বেছে বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। [১] এ যেন জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ!
গত ৪ জুলাই দখলকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পর এক ফিলিস্তিনি মানবাধিকার আইনজীবীকে গ্রেফতার করেছে ইসরায়েলের নিরাপত্তাবাহিনী। ফরিদ আল-আতরাশ নামের আইনজীবীকে রবিবার জেরুজালেমের পূর্বাঞ্চলীয় একটি চেকপোস্টে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তিনি রামাল্লায় আব্বাসবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন। ইহুদি প্রভুদের ভক্ত ও তাদের স্বার্থের গোপন রক্ষক মাহমুদ আব্বাসের বিরুদ্ধে বিক্ষভকে কোনভাবেই সহ্য করতে পারেনি তারা। [২]
ইসরায়েলের দখলদারির জেরে ফিলিস্তিনকে মূলত দুভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এর একটি মিসর সীমান্তে ও ভূমধ্যসাগরের পূর্ব উপকূলবর্তী ভূখণ্ড গাজা উপত্যকা – যার নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। আরেকটি জর্ডান নদীর পাড়ের ওয়েস্ট ব্যাংক বা পশ্চিম তীর – প্যালেস্টাইনিয়ান অথোরিটি বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নামে (পিএ) যার শাসন করছে মাহমুদ আব্বাসের সরকার।
হামাস, রাফা শহরে ২০০৯ সালের ১৪ই আগস্ট মোতাবেক ১৪৩০ হিজরীর ২৩ শে শাবান শুক্রবার জুন্দ আনসারুল্লাহ নামক একটি সশস্ত্র ইসলামিক দলের নেতা সহ ৫০ এর অধিক মুসলিম প্রতিরোধ যোদ্ধাকে হত্যা করে ও ইবনে তাইমিয়াহ মসজিদসহ আরও ৩টি বাড়ি গুড়িয়ে দেয়। [৩] [৪]
এই তথাকথিত গণতান্ত্রিক শাসকশ্রেণীকে দিয়ে কি ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তি বা আলআকসার পুনরুদ্ধার আদৌ সম্ভব?… উত্তর হচ্ছে কখনই না…এদের দ্বারা ফিলিস্তিন ও আকসার পুনরুদ্ধার দিবাস্বপ্ন বৈ কিছুই নয়।
তথ্যসূত্র :
——–
[১]আব্বাস কর্তৃপক্ষের ধরপাকড় – https://tinyurl.com/bs28uckm
[২] আব্বাসবিরোধী আইনজীবী গ্রেফতার – https://tinyurl.com/4kt6abh6
[৩]আল জাজিরা’র নিউজ – https://tinyurl.com/5u2t7dhw
[৪]বিবিসি’র নিউজ – https://tinyurl.com/r5vfs3wx
লেখক: জামিল মাহমুদ
Comment