তালিবানদের বিজয়ে উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য রয়েছে অমূল্য পাথেয়
গত ১৫/০৮/২০২১ তারিখে ইসলামের ইতিহাস বিজয়ের এক নতুন অধ্যায় লিখে নিয়েছে। বর্তমান বিশ্বের তথাকথিত সুপার পাওয়ারদের বিরুদ্ধে, দীর্ঘ বিশ বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আফগানিস্তানের পূর্ণ ক্ষমতা তালেবানদের হাতে এসেছে৷ নিঃসন্দেহে এ বিজয় ইসলামের এবং সমগ্র মুসলিম উম্মতের। এ নিয়ে কোনো অস্পষ্টতা নেই। ধোঁয়াশার কোনো অবকাশ নেই। ঐতিহাসিক এ বিজয়ের ফলে, বিশ্বের সকল মুসলিম অবশ্যই আনন্দিত হয়েছেন। রবের কৃতজ্ঞতায় তারা সিজদাবনত হয়েছেন। শুধুমাত্র তারা ব্যতীত, যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে এবং যাদের অন্তর ইসলাম বিদ্বেষে পরিপূর্ণ। আল্লাহ কত সুন্দর করে তাঁর কালামে মাজিদে বর্ণনা করেছেন –
قَاتِلُوۡہُمۡ یُعَذِّبۡہُمُ اللّٰہُ بِاَیۡدِیۡکُمۡ وَیُخۡزِہِمۡ وَیَنۡصُرۡکُمۡ عَلَیۡہِمۡ وَیَشۡفِ صُدُوۡرَ قَوۡمٍ مُّؤۡمِنِیۡنَ ۙ
وَیُذۡہِبۡ غَیۡظَ قُلُوۡبِہِمۡ ؕ وَیَتُوۡبُ اللّٰہُ عَلٰی مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَاللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ
তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, আল্লাহ তা’আলা তোমাদের হাতে তাদের শাস্তি দিবেন, লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের বিজয়ী করবেন, মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন এবং তাদের মনের ক্ষোভ দূর করবেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন, তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সূরা আত-তাওবাহঃ ১৪-১৫)
তালিবানদের এই বিজয় যাদেরকে আনন্দিত করেনি তাদের উচিৎ নিজেদের ঈমানকে যাচাই করে নেওয়া। এই বিজয়ের মাধ্যমে হক্ব ও বাতিল আলাদা হয়ে গেছে এবং আরো আলাদা হতেই থাকবে ইনশা আল্লাহ।
আজকের এই বিজয়ের দিনে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি আমীরুল মুমিনীন শহীদ মোল্লা উমর রাহিমাহুল্লাহকে। যাঁর ফিকরী ও আমলী ত্যাগের উপর ভর করে গড়ে উঠেছিল আজকের তালিবান। যে শতাব্দীর শুরুর দিকে উম্মাহ বঞ্চিত হয়েছিলো ইসলামী হুকুমত থেকে, সেই বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকেই যিনি উম্মাহকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ইসলামী হুকুমতের মহান নিয়ামত।
শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম এবং শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিমাহুমাল্লাহকে। যাঁদের দূরদর্শিতার কাছে এই উম্মাহ চিরদিন ঋণী হয়ে থাকবে৷ খোরাসানের ভূমি থেকে বিচ্ছুরিত জিহাদের এই নতুন ধারার অগ্নিস্ফুলিঙ্গকে যারা ছড়িয়ে দিয়েছেন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। যাদের ত্যাগের ওপর ভর করে সোমালিয়া, মালি ও ইয়েমেন সহ পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিতে কাফেরদের লজ্জাজনক ইতিহাস নতুন করে রচিত হচ্ছে এবং উম্মাহ দিন দিন তাদের হারানো গৌরবের দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
আমরা আরো স্মরণ করছি শাইখ আইমান আজ জাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহকে। যাঁর সফল নেতৃত্বে এখনো কাফেরদের সিংহাসনে কাঁপন ধরাচ্ছেন আল কায়েদার জানবাজ মুজাহিদগণ।
মক্কা বিজয়ের কথাঃ
নবুওয়াতের ১৩তম বছরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সহ সকল সাহাবায়ে কেরামকে বের করে দেওয়া হয় আপন মাতৃভূমি মক্কা নগরী থেকে। ঘর-বাড়ি, ভিটে-মাটি ও আত্মীয়-স্বজন, সব ছেড়ে তাঁরা হিজরত করেন মদীনার পথে। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় মাত্র ৮ বছর পর (অষ্টম হিজরির ২০ শে রমাদান) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে আসেন মক্কা নগরীতে৷ প্রায় বিনা রক্তপাতে বিজয়ী বেশে তিনি মক্কায় প্রবেশ করেন। কৃতজ্ঞতার সাজদায় লুটিয়ে পড়েন পবিত্র কাবার চত্ত্বরে। যাদের অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে না পেরে রাতের আঁধারে তিনি মক্কা ছেড়েছিলেন, যারা তাকে হত্যা করার দুরভিসন্ধি করেছিলো, সেই তাদেরকেই তিনি ক্ষমা করলেন। পৃথিবীর সকল রাজা-বাদশাদের অবাক করে তিনি ঘোষণা করলেন:
“مَاذَا تَظُنُّونَ يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ” قَالُوا: خَيْرًا، أَخٌ كَرِيمٌ، وَابْنُ أَخٍ كَرِيمٍ وَقَدْ قَدَرْتَ، قَالَ: “وَأَنَا أَقُولُ كَمَا قَالَ أَخِي يُوسُفَ” لَا تَثْرِيبَ عَلَيْكُمُ الْيَوْمَ”” فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: فَفِضْتُ عَرَقًا مِنَ الْحَيَاءِ مِنْ قَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ، ذَلِكَ أَنِّي قَدْ كُنْتُ قُلْتُ لَهُمْ حِينَ دَخَلْنَا مَكَّةَ: الْيَوْمَ نَنْتَقِمُ مِنْكُمْ وَنَفْعَلُ، فَلَمَّا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ مَا قَالَ اسْتَحْيَيْتُ مِنْ قَوْلِي.
হে কুরাইশ জাতি! আজ আমার ব্যাপারে তোমরা কীরূপ ধারণা করছো? তারা জবাব দিলো, আপনার থেকে মহানুভবতা প্রত্যাশা করছি। ইতিপূর্বে আপনি তো আমাদের মাঝে মহৎ ছিলেন, আপনার পিতাও ছিলেন মহৎ গুণের অধিকারী। আজ আমাদের উপর আপনার ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাই আপনার থেকে উদারতাই কামনা করছি!
সব শুনে প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আজ আমি তোমাদেরকে তা-ই বলবো, হযরত ইউসুফ আঃ তাঁর ভাইদের যা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আজ তোমাদের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই”
হযরত উমর রা: বলেন: রাসূলের কথা শুনে আমি প্রচণ্ড লজ্জায় ঘর্মাক্ত হয়ে যাই। কারণ মক্কায় প্রবেশ করার সময় আমি তাদেরকে বলেছিলাম, আজ প্রতিশোধ গ্রহণের দিন। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবলীলায় তাদের সকলকে ক্ষমা করে দিলেন!
( আল-আহকামুস সুগরা-৫৫৮/ তাফসীরে কুরতুবী/সিরাতে ইবনে হিশাম-৪/৫৪-৫৫ সনদের দিক থেকে হাদীসটিকে কেউ কেউ জঈফ বলেছেন)
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে। আফগান বিজয়ের ক্ষেত্রেও ঘটেছে। মক্কা বিজয়ের সেই আত্ম প্রশান্তিকর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে খোরাসানের মাটিতে। বিশ বছর পূর্বে যাদেরকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিলো, আজ তারা বিজয়ী বেশে পূর্বের চেয়েও শক্তিশালী হয়ে ক্ষমতার আসনে আসীন হয়েছেন। দীর্ঘ বিশ বছর তাদের বিরুদ্ধে যারা সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত ছিলো, তাদেরকে শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা শুনালেন। কুফফার বিশ্ব অবাক হয়ে শুনলো সেই ঘোষণা। আল্লাহর পথের মুজাহিদগণ দেখিয়ে দিলেন, শত্রুকেও আমরা ক্ষমা করতে জানি। এটাই আমাদের প্রিয় রাসূলের আদর্শ। দীর্ঘ সময়ের এই ব্যাবধান আমাদেরকে প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ থেকে বিন্দুমাত্রও টলাতে পারেনি৷ শত্রুর থেকে প্রতিশোধ গ্রহণের পরিপূর্ণ ক্ষমতা বিদ্যমান থাকার পরও শত্রুকে ক্ষমা করতে পারার মাঝেই তো বিকাশ ঘটে নববী আদর্শের, উত্তম চরিত্রের! যুগে যুগে এই চরিত্রের মাধ্যমেই ইসলামের প্রচার হয়েছে। কাফের-মুরতাদদের অধীনে জীবন-যাপন করে তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখানো, দয়া ও মানবতা দেখানোকে উত্তম চরিত্র বলে না; বরং এখানে তো এতটুকু নম্রতা না দেখানোর কোনো অবকাশ-ই নেই!
উপদেশ গ্রহণকারীরা কোথায়; যারা উপদেশ গ্রহণ করবে?
২০০১ সালে আমেরিকা যখন আফগানিস্তানের উপর আগ্রাসী হামলা চালায়, তখন আমেরিকা নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক গণ মাধ্যমগুলো আফগান মুজাহিদদের জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরূপে তুলে ধরে বিশ্বের সামনে৷ মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্বকে বোঝানো হয়, আমেরিকা আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার মিশন নিয়ে কাজ করছে, কিন্তু সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাতে বাধা দিচ্ছে। একদল র*্যান্ড মোল্লাদের দিয়ে এই বিশ্বাসকে মুসলমানদের অন্তরে বদ্ধমূল করার প্রয়াস চালায় আমেরিকা। তালিবানদের বিজয়ে আজকে যারা আনন্দ প্রকাশ করছে তাদের অনেকেই তখন আমেরিকার প্রোপাগাণ্ডার শিকার হয়ে আফগান মুজাহিদদের সন্ত্রাসী মনে করতো। তাদের জিহাদের সঙ্গে ইসলামের জিহাদের কোনো মিল নেই বলে প্রচার করতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আজ তাদের সামনেও সত্য প্রকাশিত হয়েছে৷ পূর্বের ভুলের জন্য তাদের অনেকেই অনুতপ্ত হয়েছে৷
রক্ষণাত্মক জিহাদের জন্যও যারা প্রবল শক্তির অধিকারী একজন আমীরের শর্তকে আবশ্যক মনে করেন, এবং আমীর ছাড়া জিহাদকে শরীয়তের জিহাদ না, – বলে প্রচার করেন, তালিবানদের এই বিজয়ে তাদের জন্যও রয়েছে শিক্ষার উপাদান। তাদের উচিৎ নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর বের করা –
১. এই দীর্ঘ যুদ্ধের সূচনালগ্নে তালিবানদের আমীর কে ছিলেন??
২. যিনি ছিলেন তাঁর শক্তির পরিধি কতটুকু ছিলো?
৩. যতটুকু ছিলো, ততটুকু কি প্রবল শক্তির(কুওয়াতে কাহেরাহ)আওতায় পড়তো?
প্রবল শক্তির অধিকারী আমীর না থাকার খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে, জিহাদের ফরজ দায়িত্বকে এড়িয়ে যাওয়ার মত ঘৃণ্য অপচেষ্টারও অবসান ঘটেছে তালিবানদের এই বিজয়ের মাধ্যমে। তালিবানরা আমাদেরকে দেখিয়ে দিলেন, শর্ত পাওয়া যাচ্ছে না বলে জিহাদ থেকে দূরে না থেকে শর্ত পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াই মুমিনের দায়িত্ব।
মুসলিম ভূখণ্ডের শাসকদের যারা “উলূল আমর” মনে করেন, তাদের থেকে অসংখ্য স্পষ্ট কুফর প্রকাশ পাওয়ার পরেও যারা তাদের মুসলিম মনে করেন এবং শরঈ দলীল-প্রমাণের ভিত্তিতে এই জাতীয় শাসকদের মুরতাদ ঘোষণাকারীদের যারা উগ্রবাদী এবং চরমপন্থী মনে করেন, তালিবানদের এই বিজয়ে তাদের জন্যও শিক্ষা রয়েছে। এই সত্য আজ সকলের সামনেই স্পষ্ট হয়েছে যে, স্বদেশীয় মুরতাদ এবং মুনাফিকরাই যুগে যুগে ইসলামের বিজয়কে বিলম্বিত করেছে।
তালিবানদের এ বিজয়ে শিক্ষা রয়েছে তাদের জন্যও যারা কথিত সুপার পাওয়ার আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে আত্মহত্যার শামিল মনে করেন। যারা মনে করেন, আমেরিকা অপরাজেয়। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করা সম্ভব নয়। পরাজিত মানসিকতা লালনকারী এ ধরণের কাপুরুষদের চোখে আঙুল দিয়ে তালিবানরা দেখিয়ে দিলেন যে, আমেরিকা কেনো, পৃথিবীর কোনো শক্তিই অপরাজেয় নয়! রাসূলের আদর্শের অনুসারী হয়ে, কেউ যদি জিহাদের পথে অগ্রসর হয়, তাহলে অতি নগন্য উপকরণ দ্বারাও কথিত পরাশক্তির মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া সম্ভব। একই সাথে এ কথাটিও স্পষ্ট হয়ে গেলো জিহাদের পথ পরিত্যাগ করে এই উম্মাহ কখনই কাফেরদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হতে পারবেনা।
তাগুত সরকারের হুকুমের গোলাম সামরিক বাহিনীর জন্যও শিক্ষা রয়েছে তালিবানদের এ বিজয়ে৷ আফগানের সরকারী বাহিনীর বাহ্যিক সাজ-সরঞ্জামের কোনো ঘাটতি ছিলো না। স্বয়ং অ্যামেরিকা তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সর্বাধুনিক অস্ত্রের যোগান দিয়েছে। এত কিছুর পরেও শেষ পরিণতি কী হলো? লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করে আত্মসমর্পণ করতে হলো তালিবানদের কাছে। আল্লাহর সৈনিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতা কে রাখে? তাই তালিবানদের এ বিজয়ে মুরতাদ সরকারের হাত শক্ত করা বাহিনীর জন্যও রয়েছে অনুপম শিক্ষার অমূল্য উপাদান।
তালিবানদের এ বিজয়ে শিক্ষা রয়েছে মুরতাদ শাসকদের জন্যও। ক্ষমতার মোহে পড়ে যারা আমেরিকা-ভারতের নির্লজ্জ গোলামী করে। ক্ষমতার স্বার্থে যারা নিজ দেশের মুসলিমদের হত্যা করতেও কুণ্ঠিত হয় না। আশরাফ ঘানির মত অন্যদের শিক্ষা নেয়া উচিৎ, ঘানির প্রভুরা ঘানিকে পরিত্যাগ করেছে যখন সে তার প্রভুদের আশ্রয় সবচেয়ে বেশী আকাঙ্ক্ষা করেছিল।
তালিবানদের এ বিজয়ে সবচেয়ে উত্তম শিক্ষা রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন ভূখণ্ডে লড়াইরত জানবায মুজাহিদদের জন্য। অল্পতেই যারা ভেঙে পড়েন, যারা আশাহত হন, তারা তালিবানদের এই বিজয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন। ধৈর্য্যের সঙ্গে জিহাদ অব্যাহত রাখুন। সমস্ত উপহাস, তিরস্কার, কটু কথা, নিন্দা কথা উপেক্ষা করেই আপনাকে এই অথে অবিচল থাকতে হবে। আপনাকে এই বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আজ হোক বা কাল, আল্লাহর ওয়াদা সত্য হবেই, বিজয় আসবেই! দ্বীন ও ইসলামের বিজয়ই তো মূল, সে বিজয় আমাদের দেখা মুখ্য নয়। শহীদ মোল্লা উমর ও শহীদ উসামা বিন লাদেন রাহিমাহুল্লাহ, নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু বিজয়ের এই দিনে তারা অনুপস্থিতই বটে!
সর্বোপরি উপদেশ রয়েছে দাম্ভিক আমেরিকা ও তার অনুসারীদের জন্যও! বিশ বছরের পূর্বের আমেরিকা এবং আজকের আমেরিকার মাঝে কতইনা ফারাক! ক্রোধ আর দম্ভে অগ্নিশর্মা হয়ে সেদিন নিরীহ আফগানীদের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছিলো যে আমেরিকা, দুই যুগেরও কম সময়ের মধ্যেই তাদের দম্ভ মিশে গেছে মাটির সাথে। আজ তারা নেড়ি-কুকুরের মত, গায়ের ক্ষত চাটতে চাটতে আফগান ছেড়ে পালাচ্ছে। সুতরাং আমেরিকা নিজের উপর অনেক দয়া করবে, যদি সে দ্বিতীয়বার অন্য কোনো মুসলিম ভূখণ্ডের দিকে চোখ তুলে না তাকায়।
আমেরিকা ও তার মিত্রদের জন্য পৃথিবীর প্রতিটা ভূখণ্ড-ই হবে আফগান, এবং তার অধিবাসীরা হবে তালিবান, ইনশাআল্লাহ।
فَٱعۡتَبِرُوا۟ یَـٰۤأُو۟لِی ٱلۡأَبۡصَـٰرِ
সুতরাং হে চক্ষুষ্মান ব্যাক্তিগণ, তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো! (সূরা হাশর-২)
লেখক: মাওলানা আব্দুল্লাহ মুনতাসির হাফিজাহুল্লাহ
Comment