উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার
(প্রথম পর্ব)
" পার্ট - ১ "
(প্রথম পর্ব)
" পার্ট - ১ "
আমরা কি চাই?
উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন – প্রকৃত বাস্তবতা!
অনুবাদ
আন নাসর অনুবাদ টিম
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। সম্মানিত দর্শকবৃন্দ, আজ আমরা জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ এর সাথে কথা বলার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। অনেক দিন থেকে এই সাক্ষাৎকারের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল; কিন্তু অনিবার্য কিছু পরিস্থিতির কারণে আমাদের এই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। যেহেতু আল-কায়েদা উপমহাদেশের প্রতিষ্ঠার পরে এটা প্রথম সাক্ষাৎকার এজন্য অনেক প্রশ্ন জমে থাকায় এই বৈঠককে কয়েকটি পর্বে বিভক্ত করা হয়েছে। আজ এই ধারাবাহিক বৈঠকের প্রথম পর্ব। সম্মানিত উস্তাদ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আস-সাহাব উপমহাদেশের পক্ষ থেকে আপনাকে মুবারকবাদ জানাচ্ছি।
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ জাযাকুমুল্লাহু খায়রান। আল্লাহ আপনাদের উত্তম প্রতিদান প্রদান করুন।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আল-কায়েদা উপমহাদেশের মুখপাত্র হিসেবে আপনার সাথে অনেক বিষয়ে আলাপ করার প্রত্যাশা ছিল। জিহাদি আন্দোলন পুরো দুনিয়ায় প্রসারিত হয়েছে সেই সাথে এই উপমহাদেশও বর্তমানে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করছে। সুতরাং অনেক প্রশ্ন সাধারণ মানুষ এবং এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের অন্তরে জন্ম নিচ্ছে। আশা করি আপনার সঙ্গে কয়েক পর্বের বৈঠকে ইনশাআল্লাহ এসব প্রশ্নের উপর ফলপ্রসূ কথোপকথন সম্ভব হবে।
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আপনাদের, আস-সাহাব উপমহাদেশের ভাইদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যে, আপনারা আমাকে এই সাক্ষাৎকারের সুযোগ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা এই বৈঠকগুলোকে আমাদের সবার জন্য এবং পুরো মুসলিম উম্মতের জন্য কল্যাণ এবং ফায়দার কারণ বানিয়ে দিন।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমীন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আপনাদের মাধ্যমে এই সুযোগে আমি শ্রদ্ধাভাজন আমীরুল মুমিনীন শায়খুল হাদীস শায়খ হেবাতুল্লাহ হাফিযাহুল্লাহ এবং সম্মানিত আমীর শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহসহ দুনিয়ার সব জিহাদি নেতৃত্ব, মুজাহিদ এবং মুসলমান ভাইদের সেবায় আমার পক্ষ থেকে, সম্মানিত আমীর আসেম উমর হাফিযাহুল্লাহ এবং আমাদের জামাআতের পক্ষ থেকে সালাম জানাচ্ছি। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ এক বুনিয়াদি প্রশ্নের মাধ্যমে শুরু করছি। আল-কায়েদা উপমহাদেশের মূল দাওয়াত কী এবং কী উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য এটি গঠিত হয়েছে?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আমরা জুলুম ও ফাসাদের সমাপ্তি ঘটানোর জন্য, আল্লাহর দীনকে বিজয়ী করার জন্য এবং নিজেদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলাকে খুশি করার জন্য বের হয়েছি। আল্লাহর সন্তুষ্টি মুসলমানদের প্রতি কল্যাণকামিতার সাথে শর্তযুক্ত। এজন্য আপনি এটাকে এভাবেও বলতে পারেন যে, আমাদের লক্ষ্য মুসলমান জনসাধারণের পথপ্রদর্শন, তাঁদের প্রতিরক্ষা এবং তাঁদের কল্যাণকামিতা। এরপর এটাও বাস্তবতা যে, আজ এই ভূখণ্ড জুলুম, ফিতনা এবং ফাসাদে যেভাবে ছেয়ে গেছে, তার সমাপ্তি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা জিহাদের মাঝে রেখেছেন। জিহাদ অব্যাহত থাকলে এগুলো বন্ধ ও অবসান হবে। আর যদি জিহাদ অবসান কিংবা স্থবির হয়ে যায়, তবে এগুলো প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেয়ে চারদিকে ধ্বংস ও বিপর্যয় ছড়াতে থাকবে। যেমনটি রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেছেন :
وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَفَسَدَتِ الْأَرْضُ
অর্থাৎ “আল্লাহ যদি একজনকে অপরজনের দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে গোটা দুনিয়া বিধ্বস্ত হয়ে যেতো।” [সূরা বাকারা, ২:২৫১]
আল্লামা ইবনে আবি হাতিম রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ
لَوْلا الْقِتَالُ وَالْجِهَادُ.لَفَسَدَتِ الأَرْضُ ۔
অর্থাৎ “যদি কিতাল ও জিহাদ না হত, তাহলে গোটা দুনিয়া বিধ্বস্ত হয়ে যেতো।”
এসব ফিতনা ও ফাসাদের প্রতিকার, জুলুম ও শোষণের আঁধারের নিরাময় আল্লাহ তাআলা শরীয়ত মোতাবেক জিহাদ এবং কিতালের মাঝে রেখেছেন। এরপর এটাও বাস্তবতা যে, মুসলমানদের কল্যাণকামিতা এবং তাঁদের পথপ্রদর্শনের যে দাবি তা সত্যি হতে পারে না যতক্ষণ তলোয়ার নিয়ে এই জালেমদের মুখোমুখি না হওয়া যায়, তাদের শক্তিকে ভেঙে না দেওয়া যায় যারা আল্লাহর দীন এবং তাঁর বান্দাদের মাঝে প্রতিবন্ধক, যারা আল্লাহর সৃষ্টিকে নিজেদের দাস বানিয়ে রেখেছে এবং যারা আল্লাহদ্রোহী। আজ এসব জালেমের কারণে মনুষ্যত্ব বিপথগামী হচ্ছে এবং এদের কারণেই ধ্বংসের গহ্বরে পৌঁছে গেছে। আল্লাহ এমন অহংকারী জালেমদের বিরুদ্ধে শুধু দাওয়াত অথবা অনুনয় বিনয়ের রাস্তা দেখাননি, বরং আল্লাহ কিতাবের সাথে তলোয়ারও দিয়েছেন, দাওয়াতের সাথে কিতালও ফরয করেছেন।
فَقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ لَا تُكَلَّفُ إِلَّا نَفْسَكَ وَحَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَسَى اللَّهُ أَنْ يَكُفَّ بَأْسَ الَّذِينَ كَفَرُوا وَاللَّهُ أَشَدُّ بَأْسًا وَأَشَدُّ تَنْكِيلًا
অর্থাৎ “আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, আপনি নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কোনো বিষয়ের যিম্মাদার নন! আর আপনি মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন। শীঘ্রই আল্লাহ কাফেরদের শক্তি-সামর্থ্য খর্ব করে দেবেন। আর আল্লাহ শক্তি-সামর্থ্যের দিক দিয়ে অত্যন্ত কঠোর এবং কঠিন শাস্তিদাতা।” [সূরা নিসা, ৪:৮৪]
কাজেই আমরা কি চাই? আমরা জুলুম, ফিতনা এবং ফাসাদ খতম করতে চাই। আমরা আল্লাহর দীনকে বিজয়ী করার মাধ্যমে দীন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা মুসলিম জনসাধারণের পথপ্রদর্শন, প্রতিরক্ষা এবং কল্যাণ চাই। আর এইসব লক্ষ্য অর্জনের শরীয়তসম্মত রাস্তা হলো দাওয়াত ও জিহাদ তথা দাওয়াত ও কিতাল। এই দুইটি অর্থাৎ দাওয়াত ও জিহাদকে আমরা পারস্পরিক অবিচ্ছেদ্য এবং পরিপূরক মনে করি। এটাই আমাদের মানহাজ, এটার দিকে আমরা আমাদের উম্মতকে ডাকি এবং এর মাধ্যমেই ইনশাআল্লাহ মাজলুমদের সাহায্য করা সম্ভব হবে, এর মাধ্যমেই বঞ্চিতদের আল্লাহ তাআলা অধিকার দেবেন, এর মাধ্যমেই এখানকার দলিত, পীড়িত, মাজলুম জনসাধারণের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতার রাস্তা আল্লাহ তাআলা খুলে দিবেন এবং এই দাওয়াত ও কিতালের রাস্তা উপমহাদেশের ভেতর জুলুম ও ফাসাদের এই কালরাত্রিকে ন্যায়পরায়ণতা, নিরাপত্তা ও বরকতে পরিপূর্ণ ভোরে পরিবর্তন করার কারণ হবে ইনশাআল্লাহ।
চলবে...
Comment