উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার
(প্রথম পর্ব)
পার্ট - ৪
(প্রথম পর্ব)
পার্ট - ৪
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ বাংলাদেশের অবস্থা আপনার সামনে। আপনি বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থাকে কিভাবে দেখেন? এবং এখানকার মুজাহিদদের জন্য আপনি কোন কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি মনে করেন?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ বাংলাদেশের মুসলমানেরা আজ এক ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। আর তাঁদের এই অবস্থার জন্য জালেম, শরীয়তের শত্রু এবং উম্মতের সাথে খেয়ানতকারী এই পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ভূমিকা- ভারতীয় সরকারের থেকে কোনো দিক থেকে কম নয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর লজ্জাজনক জুলুম এই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি আজ পর্যন্ত ভুলতে পারেনি। এই জাতি ইসলামের জন্য পাকিস্তানের অংশ হয়েছিল কিন্তু ইসলামের শত্রু পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর ষড়যন্ত্র ও অত্যাচার তাঁদেরকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করে দিয়েছে। ভারতের এ থেকে ফায়দা নেওয়ার সুযোগ ছিল আর সেই সুযোগ ভারত পুরোপুরি কাজে লাগায়। ফলস্বরূপ, রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ পুরোপুরি ভারতের দাস হয়ে গেছে। এখানকার সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, আদালত এবং মিডিয়া সবকিছু আজ ভারতের ভাষায় কথা বলে এবং ভারতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করে; যদিও আলহামদুলিল্লাহ এখানকার জনসাধারণের মাঝে তাওহীদের সন্তান এবং রাসূলের (ﷺ) এর জন্য উৎসর্গিত মনোভাবের লোকের অভাব নেই। আর এই কারণেই এরকম আহলে ঈমান-দের জন্য জায়গা অত্যন্ত সংকীর্ণ হয়ে গেছে। মূর্তি এবং গরুর পূজারিদের লক্ষ্য এই মুসলিম জনপদকে তাঁদের সবচেয়ে বড় মূল্যবান সম্পদ ঈমান থেকে বঞ্চিত করা এবং নিজেদের পুরোপুরি দাস বানানো। দুঃখের বিষয় আজ চোর, লুটেরা, নিচ, ধর্মহীন এবং মুলহিদদের (নাস্তিকদের) সম্মান দেওয়া হচ্ছে আর দীনের অনুসারীদেরকে জাতি, দেশ বরং পুরো মানবজাতির শত্রু হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাঁদের উপর জুলুম করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে ঢাকার ভেতরে এক দীনি সমাবেশে রাতে অভিযান এবং শুধু এক রাতেই নীরবে এক হাজারেরও বেশি মুসলমানকে শহীদ করা; এরপর ভারতের সীমান্তে অবস্থিত সাতক্ষীরা জেলার ভেতরে স্বয়ং ভারতের সামরিক বাহিনীর পূর্ণ অনুপ্রবেশ এবং বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সাথে মিলে পঞ্চাশের বেশি মুসলমানকে হত্যা এবং তাঁদের ঘর-বাড়ি ধ্বংস … হায়! ঘটনা যদি এখানেই শেষ হতো, কিন্তু না.. এখানে শেষ হয়নি। আজ একদিকে আহলে ঈমানদের ফাঁসি, হত্যার পর হত্যা এবং বন্দী করার ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে এবং অন্যদিকে দীনের শত্রু মুলহিদ ও রাসূল (ﷺ) এর অবমাননাকারীদের মতো নিকৃষ্ট সৃষ্টিরা পুরোপুরি আশ্রয় প্রশ্রয় পাচ্ছে। অনেক লম্বা সময় থেকে বাংলাদেশের মুসলমানদের উপর এক যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে যা প্রকৃতপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষতার চেহারায় মুশরিক হিন্দুদের ইসলাম এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। এমন অবস্থায় বাংলাদেশের মুসলমানরা জানে যে, তাঁদের উপর জিহাদ ফরয হয়ে গেছে। এই জিহাদ বাংলাদেশ ও ইসলামের সঙ্গে ভারতের দুশমনির বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা হিসেবে হোক অথবা কাশ্মীরি এবং ভারতীয় মুসলমানদের সাহায্য হিসেবে হোক, প্রত্যেক অবস্থায়ই ভারতীয় সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়া আজ ফরযে আইন। এই কারণেই আমাদের জামাআতের কাছে বাংলাদেশ বরং পুরো উপমহাদেশে ভারতীয় সরকার গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় লক্ষ্যবস্তু।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আপনি কি এখানে বাংলাদেশে আমাদের জামাআতের সাথে সংশ্লিষ্ট মুজাহিদদের জন্য কোনো বার্তা দিতে চান?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আমি বাংলাদেশে আমাদের অত্যন্ত প্রিয় সাহসী মুজাহিদ ভাইদের প্রতি অনুরোধ করবো বাংলাদেশের মুসলমানদেরকে জিহাদের এই ইবাদতের দিকে ডাকা এবং গাযওয়ায়ে হিন্দের এই মহান আন্দোলনকে এখানে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আল্লাহ আপনাদেরকে নির্বাচিত করেছেন। বাংলাদেশের মুসলমানদের দীন ও দুনিয়ার প্রতিরক্ষা আপনাদের উপর ফরয এবং এই ফরয আদায়ে নিজ জাতিকে অত্যন্ত যত্নের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জিহাদে শামিল করুন, এতে আপনারা সফল হবেন তো আপনারা বাংলাদেশে ইসলাম এবং ইসলামের অনুসারীদের সাহায্য করতে পারবেন এবং কাশ্মীর থেকে বার্মা পর্যন্ত মাজলুমদের হৃদয়ও আপনারা শীতল করতে পারবেন। আপনারা আপনাদের হাতিয়ার মুশরিক, অপবিত্র এবং জালেম ভারতীয় সরকারের দিকে তাক করুন। যারা ঢাকা এবং সাতক্ষীরা থেকে শুরু করে কাশ্মীর এবং আহমাদাবাদ এমনকি পুরো উপমহাদেশের আহলে ঈমানের শত্রু এবং অপরাধী এই মুশরিক হীন শত্রুর বিরুদ্ধে অগ্রসর হোন …। যদি আপনার এই রাস্তায় কেউ বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে আপনারাও নিজেদের কাজের মাধ্যমে এই বার্তা দিন যে, আপনারা নিজেদের জিহাদ, আন্দোলন এবং দাওয়াত কীভাবে রক্ষা করতে হয় তা খুব ভালো করে জানেন। আল্লাহ আপনাদের সাহায্য করুন এবং আপনাদের মাধ্যমে উপমহাদেশের তাওহীদ ও জিহাদের এই বরকতময় পতাকা সুউচ্চ করুন। আমীন।
চলবে...