উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার
(প্রথম পর্ব)
পার্ট - ৭
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ এই অবস্থায় আপনি কি এটা প্রত্যাশা করেন যে, আমেরিকা নিকট ভবিষ্যতে মুসলিম উম্মতের উপর অপরাধ চালিয়ে যাওয়া থেকে বিরত হয়ে যাবে?(প্রথম পর্ব)
পার্ট - ৭
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ না, আমেরিকার নির্যাতনের ফিরিস্তি অনেক লম্বা, এখন যদি সে পিছু হটতে চায় তবুও এর অন্যায় অত্যাচারের পরিণাম এর পিছু নেবে। নিজের ধ্বংস আমেরিকার দৃষ্টিতে আসছে, এজন্য এর বোধশক্তি আরও কমে গেছে, এক আহাম্মক মানুষকে প্রেসিডেন্ট বানানোর পর যেভাবে সে ইয়েমেন, সিরিয়া ও আফগানিস্তানে জনসাধারণের বসতির উপর বোমাবর্ষণ করেছে, তা এর বোধশক্তির কমতিরই ইঙ্গিত। আর প্রবল সম্ভাবনা আছে যে, নিজেদের এরকম বোধশক্তির অভাব থেকে সে এমন পদক্ষেপ নিবে যা থেকে নিকট ভবিষ্যতে একে ভুগতে হবে।
তবে হ্যাঁ, পূর্ববর্তী এবং বর্তমানে চলমান যুদ্ধের মাঝে পার্থক্য আছে! পূর্বে ইসলামী বিশ্বকে জয় করার জন্য আমেরিকা লড়াই করছিল আর বর্তমানে সে নিজে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ভয়ে, নিজেকে বাঁচানোর জন্য লড়াই করছে। অতীতে সে নিজের শক্তি এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে সবকিছু করার দাবি করতো কিন্তু বর্তমানে সে নিজের শক্তির সীমাবদ্ধতা এবং নিজের পরাজয় অনুভব করছে! আল্লাহর কাছে আশা রাখি নিজেকে নিরাপদ ও রক্ষা করার ভাগ্য আমেরিকার হবে না; মুসলিম উম্মতের কুরবানী এবং জিহাদের আঘাতের নিচে তলিয়ে আমেরিকা ধ্বংস হবে ইনশাআল্লাহ।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমেরিকার এই পরাজয় এবং আগ্রাসন-প্রচেষ্টার ফলে মুসলিম উম্মতের উপর কি প্রভাব পড়ছে?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ বাস্তবতা এই যে, আজ মুসলিম উম্মত জিহাদি আন্দোলনের চেহারা সম্মান, প্রগতি এবং বিজয়ের যে সফরের দিকে পদার্পণ করছে, এটা কোনো ছোটখাটো ঘটনা নয়, এটা একটা বড় ঘটনা, এটা প্রত্যেক মুসলমানের অনুভব হওয়া জরুরি। দুইটা যুগের একটু তুলনা করে দেখেন, একটা যুগ ছিল যখন শরীয়ত প্রতিষ্ঠার সব আশা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, সব দিকে জুলুম ও ফাসাদের রাজত্ব ছিল, এই শয়তানদের তর্জন-গর্জন চরমে ছিল, পবিত্র ভূমি এবং মুসলমানদের অন্যান্য অধিকৃত ভূমির স্বাধীনতার জন্য এমন কোনো বড় শক্তি উম্মতের জন্য ছিল না, বৈশ্বিক জালেম শাসনব্যবস্থা পুরোপুরি উম্মতকে গ্রাস করে ফেলছিল; যেখানে চোখ যায় সেখানেই দেখা যাচ্ছিল পশ্চিমাদের আশীর্বাদপুষ্ট, পালিত শাসকগোষ্ঠী, তাদের রক্ষক এবং গোলাম বাহিনী। মুসলমানদের দীন এবং দুনিয়াকে এই জালেমদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কোনো শক্তি ছিল না। তাই পূর্ববর্তী যুগ ছিল হতাশা, অবনতি এবং পতনের যুগ। আর বর্তমানে চলমান এই যুগে উম্মত পুরো সম্মানের সাথে উম্মত হিসেবে শত্রুর মোকাবেলা করছে, দৃঢ়তা দেখাচ্ছে এবং শত্রুরাও নিজের বানানো ময়দানে সুবিধাজনক অবস্থানে নেই বরং এমন যুদ্ধের ময়দানে দাঁড়ানো যার কারণে দুনিয়ার এই গোলামদেরও জান চলে যাচ্ছে! সেই ময়দান যা থেকে বাঁচার জন্য বৈশ্বিক কুফর কত কিছু ব্যয় করছে, মুসলিম উম্মতের মাঝে নানা রকম ব্যক্তিত্ব, চিন্তা এবং আন্দোলন এরা সামনে নিয়ে আসছে যাতে মুসলমান কিতালের ময়দানে নামার আগে থেমে যায়; কিন্তু এইসব ষড়যন্ত্র, রাজনৈতিক প্রচেষ্টা, সব মেহনতই ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। আজ তাদের এত পদক্ষেপের পরও উম্মত জিহাদের ময়দানে দাঁড়িয়ে আছে। এসব জালেমের বিরুদ্ধে এই ময়দানে আর কে মোকাবেলা করছে? সেই সামরিক বাহিনী তো নেই যে বেতন, প্লট এবং উন্নতিকে নিজের জীবনের লক্ষ্য মনে করে, ওরা সবাই তো আজ এই জালেমদের গোলাম হয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এদের মোকাবেলায় ঐসব বীরই দাঁড়িয়ে আছে যারা উম্মতকে লুট করছে না বরং উম্মতের কল্যাণের আশায় নিজের সবকিছু এই উম্মতের জন্য ব্যয় করে যাচ্ছে … আলহামদুলিল্লাহ শরীয়ত প্রতিষ্ঠায়, স্বাধীনতা এবং সম্মান এবং ইসলামের উত্থানের স্বপ্ন আজ শুধু স্বপ্ন নয়, বরং আলহামদুলিল্লাহ বৈশ্বিক জিহাদি আন্দোলনের চেহারায় এসব স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে।
চলবে...