Announcement

Collapse
No announcement yet.

উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার (দ্বিতীয় পর্ব) | পার্ট - ২

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার (দ্বিতীয় পর্ব) | পার্ট - ২

    উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার | (দ্বিতীয় পর্ব)
    উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন – প্রকৃত বাস্তবতা!
    পার্ট - ২

    আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমীন। বলা হয়ে থাকে কাশ্মীরের সমস্যা ভারত এবং পাকিস্তানের মাঝে বিরাজমান এক পারস্পরিক সমস্যা। আর এটাও বলা হয় যে, এটা একটা রাজনৈতিক সমস্যা এবং দুই পক্ষের অথবা তিন পক্ষের মাঝে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান বের করা উচিত। এ সম্পর্কে আপনার মতামত কি?

    উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ কাশ্মীরের সমস্যাকে রাজনৈতিক হিসেবে আখ্যা দিয়ে যদি দীন ও শরীয়তের দৃষ্টিতে ফরয থেকে পালানোর রাস্তা খোঁজা হয় তাহলে এই অর্থে এটা মোটেই রাজনৈতিক হবে না। এটা একটি দীনি এবং শরীয়তি মামলা। এটা সুস্পষ্ট যে, হিন্দু ও মুসলমানদের আলাদা করার কারণ দেশ, ভাষা, বংশ অথবা জাতীয়তা নয়; এর কারণ আকীদা ও দীন, যা হিন্দু ও মুসলমানদেরকে আলাদা করে। এরপর এরকম কথা যে, এটা দুইটি রাষ্ট্রের মাঝে সমস্যা এবং এরাই অধিকার রাখে যেভাবে ইচ্ছা এই সমস্যা সমাধান করার; এমন কথা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। এই সমস্যা দুইটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নয়, এটা দুইটি উম্মত, দুইটি জাতি, মুসলিম জাতি এবং কাফের জাতির মাঝে সমস্যা। কাশ্মীরি জাতি মুসলিম উম্মতের একটি প্রধান ব্রিগেড এবং তাঁরা বাকি উম্মতের চেয়ে হিন্দুদের মোকাবেলায় অগ্রগামী, তাঁরা হিন্দুদের মোকাবেলায় দৃঢ় আছে। বাস্তবতা হলো উপমহাদেশের বরং সমস্ত মুসলমান উম্মত এই ব্যাপারে শরীয়তের উপর ভিত্তি করে তাঁদের অংশীদার। এটা প্রত্যেক ঐ ব্যক্তির সমস্যা, যে তাওহীদের কালেমা পড়েছে এবং যে নিজেকে এই উম্মতের একজন মনে করে। এখন কোনো মুসলমানের এই অনুভূতি হোক অথবা না হোক কিন্তু কুরআনের আয়াত তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা কাশ্মীরের মুসলমানদের সাহায্যের জন্য প্রত্যেক মুসলমানকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন … কাশ্মীরের জখম উপমহাদেশের মুসলমানদের জন্য একটা অগ্নি পরীক্ষা। কাশ্মীরি জাতি তো সৌভাগ্যবান যে, আল্লাহ তাঁদেরকে হিন্দুদের সামনে এই বরকতময় জিহাদের জন্য নির্বাচিত করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে, এই মহান জাতির মাধ্যমে উপমহাদেশের সব মুসলমানের আজ পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের জখম, রক্তাক্ত ও একাকী অসহায় অবস্থা দেখে আমাদের সব মুসলমানের উপর আজ দলীল প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

    আবার এটাও আল্লাহর নিশানা যে, শরীয়ত এবং প্রাকৃতিক দুই দৃষ্টিকোণ থেকে আজ সুস্পষ্ট যে, এই পরীক্ষায় শুধু তখনই আমরা সফল হতে পারবো, যখন এর সাথে আমাদের আচরণ শরীয়ত মোতাবেক হবে। আল্লাহ ফলাফলকে বিশেষ কারণের সাথে যুক্ত করেছেন, স্বাধীনতা এবং সফলতা যদি আমরা চাই, জুলুম বন্ধ করা যদি আমাদের উদ্দেশ্য হয়, তবে আল্লাহ একে এই শরীয়তের অনুসরণের সাথে শর্তযুক্ত রেখেছেন।

    وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ‎﴿١٣٩﴾‏

    অর্থাৎ “আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না; যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে।” [সূরা আলে ইমরান, ৩:১৩৯]

    একইভাবে আল্লাহর বাণীঃ

    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن تَنصُرُوا اللَّهَ يَنصُرْكُمْ

    অর্থাৎ “হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন।” [সূরা মুহাম্মাদ, ৪৭:৭]

    ঈমান এবং আমল ঠিক হবে, শরীয়তের উদ্দেশ্যের সাথে শরীয়ত মোতাবেক সফর হবে তাহলে লক্ষ্যে পৌঁছা যাবে, এটা আল্লাহর সুন্নাত এবং এই সুন্নাত কখনও পরিবর্তন হয় না। শরীয়ত বলে কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ। আর জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ ওটাই যা আল্লাহর কালিমাকে সুউচ্চ করা, আল্লাহর দীনের বিজয় এবং মাজলুমদের সাহায্যের জন্য করা হয়ে থাকে। কিন্তু যদি আমরা সব সময় বাহ্যিক লাভ দেখি, প্রবৃত্তির অনুসরণের মাধ্যমে কাজ করি এবং এই মামলার দীনি বাস্তবতাকে অস্বীকার করি, এর বদলে অন্য নাম রাজনৈতিক, স্বাদেশিক, জাতীয় অথবা অন্য কোনো নাম ব্যবহার করে এই মামলার সাথে দীনের সম্পর্ক অস্বীকার করি, এরপর শরীয়ত বহির্ভূত শ্লোগানের সাথে শরীয়ত বহির্ভূত পথেও চলতে শুরু করি তাহলে এসবের মাধ্যমে কি আল্লাহর মাপকাঠি পরিবর্তন হয়ে যাবে? বাস্তবতা কি পরিবর্তন হয়ে যাবে? অত্যাচারের রাস্তা কি বন্ধ হয়ে যাবে এবং কাশ্মীর স্বাধীন হয়ে যাবে? কখনও না, আল্লাহর সুন্নাত এটা নয়। কুফর পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং আমরা মনের মতো শরীয়ত বহির্ভূত পথে চলে এই আশা করব যে, আমরা সফল হয়ে যাব; তো এর অর্থ এটাই যে, আমরা বাস্তবতা থেকে চোখ বন্ধ করে আছি। কুরআনের আয়াত, পূর্ববর্তী উম্মতদের ইতিহাস এবং বর্তমান সময়ের নিদর্শন থেকে, এগুলো থেকে কি আমরা কোনো শিক্ষা নিতে চাই না?​

    চলবে...
Working...
X