Announcement

Collapse
No announcement yet.

উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার (দ্বিতীয় পর্ব) | পার্ট - ৪

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার (দ্বিতীয় পর্ব) | পার্ট - ৪


    উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার | (দ্বিতীয় পর্ব)
    উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন – প্রকৃত বাস্তবতা!
    পার্ট - ৪

    আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আপনি বলেছেন কাশ্মীরের ব্যাপারে জাতিসংঘের দিকে চেয়ে থাকা যাবে না। আবার পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর কাছ থেকেও ভালো কোনো আশা নেই। তাহলে আপনার মতে কাশ্মীরের সমস্যার কার্যকর সমাধান কি?

    উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ সমাধান বলতে যদি এমন কোনো ফর্মুলা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, যাতে কোনো কুরবানী, কষ্ট ও ক্লেশ ছাড়াই দুই তিন বছরের মধ্যেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়া যাবে, তো আমরা মনে করি এমন কোনো সমাধান সম্ভব নয়; বরং সত্য এটাই পুরো উম্মত আমাদের এইসব সমস্যার কারণ। আজ পর্যন্ত আমরা এমন কোনো সমাধান খুঁজেছি যাতে রক্ত প্রবাহিত হওয়া ছাড়াই, হিজরত ও জিহাদের কষ্ট কাঠিন্য সহ্য করা ব্যতীত, দৈনন্দিন জীবনে কোনো বাঁধা-বিঘ্নহীন এবং শান্তিপূর্ণ সাময়িক প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমরা কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে যাব। আসলে আজ এমন সমাধানের সন্ধানই মুসলিম উম্মতের অবনতির কারণ।

    বাস্তবতা এটাই যে, সমাধান আল্লাহর ইচ্ছাধীন। নুসরত ও বিজয় আল্লাহর হাতে। আর আমরা, আমরা তো আল্লাহ প্রদত্ত রাস্তা অর্থাৎ শরীয়তের অনুসরণে বাধ্য এবং এ ব্যাপারেই আমরা জিজ্ঞাসিত হবো। এ পথ অনুসরণ করে যদি বিজয় পাওয়া যায়, তাহলে আল্লাহর শুকরিয়া, এটি আল্লাহর নেয়ামত। আর যদি বিজয় পেতে বিলম্ব হয়, তাহলে এমন বাস্তবতাকেও আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাময় এবং আমাদের জন্য কল্যাণকর গণ্য করবো । এমন অবস্থায় আবার ব্যক্তি, জামাআত ও জাতি হিসেবে আমরা সফল হবো, কারণ আল্লাহর আনুগত্যের ফলে আল্লাহর কাছে সম্মান ও সফলতা পাওয়া যাবে, যা আমাদের প্রকৃত আকাঙ্ক্ষা। এটা আলাদা কথা যে, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আছে যে, যখন আমরা উম্মত হিসেবে সরল পথের অনুসরণ করবো, তো ইনশাআল্লাহ ভালো ফলাফলই দেখা যাবে।

    এজন্য প্রথম করণীয় এটাই যে, আমরা শরীয়তের অনুসারী হয়ে যাই। শরীয়ত বলে কুফরের আধিপত্য থেকে পরিত্রাণের রাস্তা হলো জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ। এজন্য আমাদের ব্যক্তিগত ও সামগ্রিক পর্যায়ে জিহাদকে দাঁত দিয়ে যেন আঁকড়ে ধরতে পারি, হিন্দু সামরিক বাহিনী এবং শাসকদের সাথে আমরা তলোয়ারের ভাষায় কথা যেন কথা বলি। গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষতা অথবা ‘কিছু নিন কিছু দিন’ সহ সব এমন পথ ও পন্থাকে নিজেদের জন্য হারাম মনে করি, যা শরীয়ত বহির্ভূত এবং যাতে কুফরী শাসনব্যবস্থা প্রাধান্য পায় অথবা একে সহযোগিতা করার জন্য অংশ নেওয়া হয়।

    দ্বিতীয়ত, এই জিহাদের লক্ষ্য যেন আমাদের সবার সামনে থাকে—শরীয়তের শাসন এবং মাজলুমদের সাহায্য। এ-ই জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহর বুনিয়াদি উদ্দেশ্য হওয়া জরুরি। এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো সামনে রেখে আমরা অগ্রসর হই অর্থাৎ শরীয়তের শাসন আমাদের গন্তব্য হোক এবং শরীয়তের অনুসরণ আমাদের রাস্তা হোক।[2]

    তৃতীয়ত, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীসহ সমস্ত তাগুতি সামরিক বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রভাব থেকে নিজেদের আন্দোলনকে মুক্ত রাখা।

    চতুর্থত, কাশ্মীরের জনগণ একা একা এই যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয়ী হতে পারবে না। কারণ, এটা সব মুসলমানের সমস্যা, সবার উপর এই জিহাদ ফরযে আইন। তাই পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ভারতসহ পুরো উপমহাদেশের মুসলমানদের এই যুদ্ধে নিজের ফরয আদায় করা জরুরি। ভারতের বিরুদ্ধে পুরো উপমহাদেশে জিহাদি আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করা অত্যাবশ্যকীয়। কাশ্মীরি জাতির সাহায্য কেবল তখনই সম্ভব, যখন এই জিহাদি আন্দোলন উপমহাদেশের পর্যায়ে শক্তিশালী হবে এবং পুরো উপমহাদেশের মুসলিম জনসাধারণ কাশ্মীরের জনগণের পিছনে দাঁড়িয়ে যাবে। উপমহাদেশের পর্যায়ে এই জিহাদি আন্দোলনের তিনটি দায়িত্ব– কাশ্মীরি জনগণকে সাহায্য করা প্রথম দায়িত্ব। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীসহ সব তাগুতি ষড়যন্ত্র ও আগ্রাসনের মোকাবেলায় জিহাদি আন্দোলনের প্রতিরক্ষা করা দ্বিতীয় দায়িত্ব। আর তৃতীয় দায়িত্ব হলো, ভারতীয় সামরিক বাহিনী এবং হিন্দু প্রশাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিধি পুরো উপমহাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া … কাশ্মীরের ছোট এলাকাতেও ভারত ছয় লক্ষ সৈন্য মোতায়েন করে নিজেকে সুরক্ষিত করে রেখেছে। ভারতকে কলকাতা, ব্যাঙ্গালোর এবং দিল্লীসহ পুরো উপমহাদেশে টার্গেট বানালে তখন এর উচিত শিক্ষা হবে। আমেরিকার দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে, যেভাবে আমেরিকার জন্য দুনিয়া জুড়ে নিজেকে নিরাপদ রাখা মুশকিল হয়ে গেছে, একইভাবে ভারতীয় বাহিনী এবং হিন্দু শাসকদের জন্যও নিরাপদ দুনিয়াকে যুদ্ধের ময়দান বানানো জরুরি।

    পঞ্চমত, যা গুরুত্বের দিক থেকে প্রথম, তা হলো উল্লেখিত চারটি বিষয়ের দিকে উপমহাদেশের সমস্ত মুসলমানের নিয়ে আসা। অর্থাৎ দাওয়াত ও জিহাদের নবুওয়্যাতি মানহাজের উপর দাঁড় করানো এবং এর পূর্বে আখিরাতের চিন্তা, তাকওয়া এবং আল্লাহ তাআলার জন্য সব– এরকম প্রকৃত পথের সম্বল দিয়ে তাদের অলংকৃত করা … এসব ঐ পথ যা আমাদের দৃষ্টিতে আল্লাহর অনুমতিক্রমে কাশ্মীরসহ এই পুরো উপমহাদেশে জুলুম ও কুফরের প্রতিপত্তিকে শেষ করার কারণ হতে পারে। আর আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।​

    চলবে...
Working...
X