Announcement

Collapse
No announcement yet.

আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার রূপরেখাঃ - আমীরুল মুমিনীন এর বার্তা

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার রূপরেখাঃ - আমীরুল মুমিনীন এর বার্তা

    আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার রূপরেখা


    ১৪৩৯ হিজরির পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সম্মানিত আমীরুল মুমিনীন শাইখুল হাদীস হেবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিজাহুল্লাহ’র গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।





    pdf




    word


    আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!

  • #2
    আল্লাহ তায়ালা শাইখ কে হিফাজত করুন। সকল মুজাহিদ উমারাদের নিরাপদ রাখুন। কাফের দারা দখল কৃত সকল ভূখন্ডগুলো উদ্ধার করুন, মজলুমানদের সহায্য করুন ও বিজয় দান করুন, আমিন।

    হে আল্লাহ! আমাদের রব্ব, আপনি আমাদের কবুল করুন, আমিন।

    Comment


    • #3
      সম্মানিত ভাইরা! অনলাইনে ও অফলাইনে বার্তাটি খুব প্রচার করুন! দরবারী আলিমদের অনেক জিজ্ঞাসার জবাবও এখানে আছে...

      Comment


      • #4
        Originally posted by আবু আব্দুল্লাহ View Post
        সম্মানিত ভাইরা! অনলাইনে ও অফলাইনে বার্তাটি খুব প্রচার করুন!
        ইংশাআল্লাহ
        ( গাজওয়া হিন্দের ট্রেনিং) https://dawahilallah.com/showthread.php?9883

        Comment


        • #5
          জাযাকুমুল্লাহ।
          والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

          Comment


          • #6
            আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার রূপরেখা
            [১৪৩৯ হিজরির পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সম্মানিত আমীরুল মুমিনীন শাইখুল হাদীস হেবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিজাহুল্লাহ’র গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।]


            بسم الله الرحمن الرحیم
            الله اکبر، الله اکبر، لا اله الا الله والله اکبر، الله اکبر و لله الحمد.‏
            إن الحمد لله نحمده ونستعينه ونستغفره ونعوذ بالله من شرور أنفسنا ومن سيئات أعمالنا من يهده الله فلا مضل له ومن ‏يضلل فلا هادي له، ونشهد أن لا إله إلا الله وحده لا شريك له، ونشهد أن محمداً عبده ورسوله صلی الله علیه و علی آله و اصحابه ‏اجمعین. و بعد
            অতিশয় দয়ালু ও পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি।
            আল্লাহু আকবার! আল্লাহু আকবার! লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার! আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ!

            নিশ্চয় সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার জন্য। আমরা তার-ই প্রশংসা করি, তার-ই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি, তারই নিকট ক্ষমা চাই, এবং আমরা আমাদের নফসের অনিষ্টতা ও কর্মের খারাবী থেকে তার-ই নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি। যাকে তিনি হিদায়াত দান করেন তাকে কেউ গোমরাহ করতে পারবে না। আর যাকে তিনি গোমরাহ করেন তাকে কেউ হিদায়াত দিতে পারবে না। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন হক্ব ইলাহ নেই। তিনি একক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন অংশীদার নেই। এবং আমরা আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা’আলার বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তা’আলার রহমত বর্ষিত হোক তাঁর উপর, তাঁর পরিবার পরিজনের উপর এবং তাঁর সকল সাহাবাদের উপর।
            হামদ ও ছানার পর-
            মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন:
            إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ (سورة الحجرات ١٥)
            “তারাই মুমিন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না এবং আল্লাহর পথে প্রাণ ও ধন- সম্পদ দ্বারা জিহাদ করে। তারাই সত্যনিষ্ঠ।
            (হুজরাত: ১৫)

            হে মুসলিম উম্মাহ ও আফগানের সাধারণ মুজাহিদগণ!
            আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ!

            সবাইকে জানাই ঈদ মোবারক। আপনাদের উৎসর্গিত সকল আনুগত্য, কোরবানি ও ইবাদতকে আল্লাহ তা’আলা কবুল করুন। আল্লাহ তা’আলা শহীদদের শাহাদাতকে কবুল করুন, মুজাহিদদের পূর্ণ সফলতা, জিহাদের পথে আহত ব্যক্তিবর্গের পূর্ণ শিফা, বন্দীদের দ্রুত মুক্তি, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ব্যক্তিদের উত্তম ধৈর্য ও উত্তম বদলা দান করুন। আল্লাহ তা’আলা এতীমদের সহায়ক ও সাহায্যকারী হোন।

            হে আফগান মুজাহিদ জাতি!

            এই বছর ঈদুল আজহা এই অবস্থায় আগমন করছে যে, আগ্রাসী আমেরিকার মোকাবেলায় আফগান জিহাদী আন্দোলন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় দ্বারা সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌছতে যাচ্ছে। কাফের দখলদার সেনারা মোকাবেলা করার শক্তি হারিয়েছে। তাদের যুদ্ধ কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। তাদের আধুনিক টেকনোলোজী ও যুদ্ধ সামগ্রী বৃথা গেছে। মুজাহিদদের বিরুদ্ধে ফিৎনা ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী সম্প্রদায় পরাজয়ের অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হয়েছে। ধোঁকাবাজ আমেরিকান জেনারেল আফগানিস্তানের সাধারণ জিহাদী শ্রেষ্ঠত্বের সামনে নত হয়েছে।
            قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ (سورۃ یونس -٥٨ )
            “বল আল্লাহর দয়া ও মেহেরবাণীতে। সুতরাং এরই প্রতি তাদের সন্তুষ্ট থাকা উচিৎ। এটিই উত্তম সে সমুদয় থেকে যা সঞ্চয় করেছে।”
            (সূরা: ইউনুস: ৫৮)
            আমাদের উচিত অধিক পরিমানে জিহাদী চেষ্টাপ্রচেষ্টা ও খেদমতের মাধ্যমে আল্লাহ প্রদত্ত এই সাহায্য, বিজয় এবং জিহাদী সফলতার শুকর আদায় করা। আপন নিয়ত ও আমলের সংশোধনের মাধ্যমে নিজেকে আল্লাহ তা’আলার আরো অধিক নুসরত ও সাহায্যের নিকটতম স্থানে পৌছে দেওয়া। কেননা সৎকাজ জিহাদে দৃঢ়পদ ও পরিপক্বতা সৃষ্টি করে। নেক আমলের বরকতে যুদ্ধে অতি দ্রুত সফলতা অর্জন হয়। জিহাদের জন্য এখলাস একটি গুরুত্বপূর্ণ আবশ্যকীয় শর্ত।
            আবু দারদা (রাজিয়াল্লাহু আনহু) বলেন:
            «إِنَّمَا تُقَاتِلُونَ بِأَعْمَالِكُمْ» ‏‘( البخاری: باب عمل صالح قبل القتال)
            “নিশ্চয় তোমরা নেক আমলের দ্বারা-ই লড়াই করো।”
            (বোখারী: অধ্যায়:- যুদ্ধের পূর্বে নেক আমল করা)
            সম্মানিত দেশবাসী!
            সন্ধি, শান্তি ও নিরাপত্তাকে বাকি রাখা ইমারাতে ইসলামিয়্যাহের অন্যতম লক্ষ্য। কিন্তু আগ্রাসীদের উপস্থিতিতে সন্ধির বাস্তবায়ন অসম্ভব। ইসলামী শাসন বাস্তবায়ন ছাড়া দ্বিতীয় কোন পথ খোলা নেই। আফগান জনগন ইসলামী শাসন বাস্তবায়ন ও স্বাধীনতা লাভে মহা কোরবানি স্বীকার করেছেন। তাদের কোন মূল্যেই শর্তারোপ করে দমানো যাবে না। এই মহা উদ্দেশ্যের বিপরীতে কারো সমঝোতার আশা না করা চাই। ১৭ বছর পূর্বে যখন আমেরিকা আফগানিস্থানের উপর আগ্রাসনের জন্য বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের ঐক্যতা প্রতিষ্ঠা করছিল, তখন ইমারাতে ইসলামীয়া তাকে জ্ঞান, বিবেক ও যুক্তিসঙ্গত রাজনীতি প্রতিষ্ঠার দাওয়াত দিয়েছিল, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট দায়িত্বহীনতার পথ অবলম্বন করে এমন যুদ্ধ শুরু করে যার ফলে আমেরিকার জনসাধারণকে চড়া মূল্য দিতে হয়। এই যুদ্ধ আমেরিকার ইতিহাসে সর্বাধিক দীর্ঘ, ধ্বংসাত্মক ও অসফল-অকৃতকার্য যুদ্ধ ছিল। কিন্তু এই যুদ্ধ আফগানিস্তানসহ পৃথিবীব্যাপী সকল স্থানকে অত্যন্ত নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি করে। এই যুদ্ধ আমেরিকাকে বিশ্ব ও জাতির সম্মুখে নিরাপত্তাহীনতা, অশ্রদ্ধা ও মানসিক অস্থিরতার মুখোমুখি করে। আর ইমারাতে ইসলামিয়া আজও নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের পরিবর্তে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার দা’ওয়াত দেয়। ইমারাতে ইসলামিয়্যাহ আমেরিকাকে এমন পলিসির দিকে পথ প্রদর্শন করে, যা এই দীর্ঘ যুদ্ধের অবসানের নিশ্চয়তা দেয়। সেই পলিসি হল: আফগানিস্তান ত্যাগ করা।
            কাবুলে নিযুক্ত করা প্রশাসনের দূর্ণীতি, অযোগ্যতা ও অকৃতকার্যতায় এখন আমেরিকাও অক্ষম হয়ে গেছে। এখন আমেরিকা তাদের উপর ভরসা করতে চায়না। সেই দুর্নীতিগ্রস্থ প্রশাসনের নেতৃত্ব এমন ব্যক্তির হতে অর্পণ করা হয়েছে, যার নেতৃত্বকালে রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের সাথে বিবাদ, চিপ এগজিকিউটিভকে প্রতারিত করা, তার নায়েবকে লাঞ্চিত করা, মন্ত্রী পরিষদের সাথে বিতর্ক ও গভর্ণরের সাথে দ্বন্দের মাঝে অতিবাহিত হয়েছে। যেহেতু আগামীতে সরকার বানানোর জন্য যেই কথিত ইলেকশনের পরিকল্পনা শুরু করা হয়েছে, তা এ পরিমানে অকৃতকার্য হয়েছে যে, স্বয়ং দুর্নীতিগ্রস্থ প্রশাসনের সদস্যরাও নির্বাচনের বাস্তবায়নকে দুরূহ মনে করছে।
            আপন দ্বীন ও রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষার জন্য দখলদারদের বিরুদ্ধে চেষ্টা-প্রচেষ্টা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ইমারতে ইসলামিয়ার জিম্মদারী। আলহামদুলিল্লাহ! ইমারাতে ইসলামিয়া সামরিক, রাজনৈতিক ও ব্যবস্থাপনার দৃষ্টিকোন থেকে যুদ্ধকে প্রতিরোধ করার উত্তম যোগ্যতা রাখে। এই খিত্তার প্রতিবেশীরা রাষ্টের জন্য একটি মধ্যম পলিসি অবলম্বন করে। এমন কি আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনীও স্বীকার করেছে যে, আফগানিস্থানের অর্ধেক ভূখন্ডের অধিক স্থান ইমারাতে ইসলামিয়্যার কন্ট্রোলে আছে। যুদ্ধ পরিস্থিতির এই প্রতীয়মান বৈশিষ্টতার উপস্থিতিতে যদি আমেরিকা আফগানিস্থান থেকে বের হয়ে যায় তাহলে আমরা আমেরিকাসহ সমগ্র বিশ্বের নিরাপত্তাহীনতার দূরিকরণ ও শান্তি-নিরাপত্তা বহাল রাখার গেরান্টি দিতে পারি।

            আমেরিকার সাথে আলোচনা সম্পর্কে বলবো যে-

            বর্তমান আফগানিস্থানে চলমান যুদ্ধ আমেরিকারই সৃষ্ট। ইমারাতে ইসলামিয়্যাহ শুরু থেকেই যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য আমেরিকাকে সঠিক পথে আলোচনার প্রতি বারবার তাকিদ দিয়ে আসছে। অপরদিকে আমেরিকা এই যুদ্ধের জবাবদিহীতার জন্য তৈরী নয়। উপরন্তু সে প্রকাশ্যে যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য এমন চালাকি করে বসে, যাতে যুক্তি ও বিজ্ঞানের কোন নাম নিশানা নেই।
            নিঃসন্দেহে আমেরিকা এই যুদ্ধপদ্ধতির দীর্ঘায়িত করার মাধ্যম হচ্ছে। যদি আমেরিকা আফগানিস্থানের মৌলিক ভূমি অর্পণ করে ইমারতে ইসলামিয়্যাহ এর সাথে সঠিকভাবে আলোচনার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তবে এটা একটি প্রশংসনীয় কাজ হবে। বাস্তবিক, পরিষ্কার ও ফলদায়ক আলোচনা আমাদের পলিসির গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এতে কোন প্রকার ধোকা ও প্রতারণা হবে না। ইমারাতে ইসলামীয়্যাহ আফগান জনসাধারণ ও সমস্ত মুসলমানদের এই নিশ্চয়তা দিচ্ছে যে, আমাদের জন্য আলোচনায় শুধু ঐ ফয়সালাই গ্রহণযোগ্য হবে যাতে আমাদের ইসলামী লক্ষ্য নিশ্চয়তার ভিত্তিতে পুরা হবে, আফগানিস্থানের স্বাধীনতা ও যুদ্ধের সমাপ্তির বাস্তব দায়িত্ব গ্রহণ করা হবে।

            আমেরিকার সৈনিক, ধর্মবিশ্বাস ও সামাজিক ভীতির ব্যাপারে বলবো-

            এটি বাস্তব যে, আমেরিকা আফগানিস্থানের উপর অন্যায়মূলক যুদ্ধ ও আফগানীদের উপর অত্যাচারকে দীর্ঘায়িত করতে সতের বছরে অনিষ্ঠতা ও অত্যাচারে কোন প্রকার চিন্তা-ভাবনা করে নি। সে এখনো আমাদের প্রতিরক্ষা যুদ্ধকে দূর্বল করার জন্য ফেতনা সৃষ্টিকারী বন্দুকধারীদের ব্যবহার করছে। উলামাদেরকে ধর্মীয় বৈঠকের নামে বিভিন্ন দেশে একত্রিত করছে। একত্রিত করার নামে নির্বোধদের প্রতারণায় ফেলে জাতির মনোযোগকে তাদের অত্যাচার থেকে সরানোর চেষ্টা করছে। রাষ্ট্র ও ধর্মকে বিভক্তি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক, বংশীয় ও বাকপটুত্বের মাধ্যমে প্রতারিত করার চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের প্রতিরোধমূলক বৈধ জিহাদী কার্যক্রমকে হক মনে করি এবং আমরা এতে নিশ্চিন্ত যে, শত্রুপক্ষের এ পরিমান অত্যাচারমূলক কার্যকলাপ তাদের অকৃতকার্যের প্রমাণ। শত্রু কখনো আফগান জনসাধারণের জিহাদী লক্ষ্যকে পূর্ণ হওয়া থেকে বাধা দিয়ে রাখতে পারবে না। আফগানবাসী শতাব্দীকাল ধরে পরস্পর ভাই ভাই হয়ে জীবন যাপন করছে। আফগানিস্থান আমাদের সম্মিলিত বাসস্থান। তার সংরক্ষণ, পরস্পর ঐক্যবদ্ধতা ও সর্বপ্রকার প্রকাশ্য এবং গোপনীয় ষড়যন্ত্রসমূহের মূলোৎপাটন আফগানীদের দায়িত্ব। যেন এই ভূখণ্ড ফেতনার স্বীকার না হয়ে যায়। মুজাহিদরা আল্লাহ তা’আলার সাহায্য ও আপন বাহুবলে এমন ফেতনা প্রতিহত করার জন্য সফল আগহের সাথে প্রস্তুত আছে। আফগান জনসাধরণের উচিৎ তাদের পিছনে নিজেদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। এই উম্মতের বিবেকবান সকল ব্যক্তির উচিৎ মুজাহিদদের সাহয্য-সহযোগিতা করা।

            কাবুল, মক্কা ও জিদ্দাহ’র কনফারেন্সের ব্যাপারে বলব-
            আমেরিকার সন্ত্রাসী মতবাদের ব্যাপারে কতেক দরবারী আলেমরা অর্ন্তবর্তীকালীন বৈঠকের পর তানযীমে তা’আবুনে ইসলামীর অধিনস্থ শ্রেষ্ঠ উলামা নামে সর্বশেষ বৈঠক, যা সৌদী আরবের জিদ্দাহ ও মক্বা মুকাররমার শহরগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়। তাতে আগ্রাসী আমেরিকার বিপক্ষে সাধারণ মুসলমানদের শরয়ী জিহাদকে আফগানীদের পরস্পরের যুদ্ধ বুঝানো হয়েছে। এ ব্যাপারে কিছু সূক্ষ্ম বিষয় এর আলোচনা করাকে জরুরী মনে করছি।
            এই বিষয়টি খুবই দুঃখজনক যে, যেই oic এর ভিত্তি সৌদী বাদশাহ ফয়সাল মরহুম রেখেছিল তার উদ্দেশ্য ছিল ইসলামী বিশ্বের অধিকার রক্ষা ও অন্যায় আচরণ প্রতিরোধ করা। দুর্ভাগ্যবসত ঐ সংস্থার প্লাটফর্ম থেকে শত্রুরা হীন প্রতারণার মাধ্যমে এমন সিদ্ধান্ত প্রকাশ করে যাতে ইসলামী বিশ্বের কল্যাণকামিতার পরিবর্তে শত্রুদের নোংরা উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের ভাষ্য পাওয়া যায়।
            আমি উম্মতে মুসলিমাহ’র উলামা ও ওআইসি’র ইতিপূর্বের ইসলামী বিশ্বের কল্যাণে সেবাসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক বলতে চাই যে, আফগানিস্তানে বিদ্যমান শরয়ী জিহাদের ব্যাপারে কাবুলের কনফারেন্স ও ওআইসি’র প্লাটফর্ম থেকে আসা জিহাদ বিরোধী সিদ্ধান্তকে স্পষ্ট কোরআনী নুছুছের বিপরীত ও এই সংগঠন ও এর বুঝমান প্রতিষ্ঠাতাদের অবমাননা মনে করছি।

            উলামাদের নামে আফগান জিহাদের ব্যাপারে সীদ্ধান্তদাতাদের নিকট আমার প্রশ্ন হল-
            আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডব্লিউ বুশের পক্ষ থেকে আফগান ভূমিতে সূচনাকৃত ক্রুসেডারদের যুদ্ধের ব্যাপারে আপনাদের কোন জ্ঞান আছে কি? যদি আপনারা আফগানের উপর ক্রুসেডার আগ্রাসনের মৌলিক জ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞ হন, তবে অজ্ঞতার ভিত্তিতে দেওয়া ফতওয়া শরীয়ত ও ইলমী দৃষ্টিকোন থেকে বাতিল ও প্রত্যাখ্যাত। আর যদি আপনাদের এ ব্যাপারে জ্ঞান আছে যে, আমেরিকা আফগানিস্থানের উপর আগ্রাসন চালিয়েছে। তবে আপনারা এই ইলম থাকা সত্ত্বেও দখলদারদের বিরুদ্ধে আফগান জিহাদী আন্দোলনকে অবৈধ মনে করেন! নাউজুব্বিল্লাহ। অতঃপর আপনারা আপনাদের ফতাওয়াকে নিম্মের কোরআনি নছের আলোকে কি ব্যাখ্যা দেবেন?
            وَقَاتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوا إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ (البقرۃ - ١٩٠ )‏
            “আর লড়াই কর আল্লাহর পথে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।” (সূরা: আল-বাক্বারা: ১৯০)
            فَمَنِ اعْتَدَى عَلَيْكُمْ فَاعْتَدُوا عَلَيْهِ بِمِثْلِ مَا اعْتَدَى عَلَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ (البقرۃ - ١٩٤ )‏
            ‏”সুতরাং যারা তোমাদের উপর সীমালঙ্ঘন করেছে, তোমরা তাদের উপর সীমালঙ্ঘন কর, যেমন সীমালঙ্ঘন তারা করেছে তোমাদের উপর। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রেখ, যারা পরহেযগার, আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন।” (আল-বাকারা: ১৯৪)
            وَلَا تَرْكَنُوا إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُوا فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ أَوْلِيَاءَ ثُمَّ لَا تُنْصَرُونَ (ھود ١١٣ --) -
            “আর পাপিষ্ঠদের প্রতি ঝুঁকবে না। নতুবা তোমাদেরকেও আগুনে ধরবে। আর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু নেই। অতঃপর তোমাদের সাহায্য করা হবে না।” ( সূরা: হুদ: ১১৩)
            আপনারা কোন যুক্তিতে আফগানিস্তানে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে চলমান জিহাদকে আফগান গৃহযুদ্ধ মনে করছেন? যদি আপনাদের কথা অনুযায়ী এটা আফগান গৃহযুদ্ধ হয়, তাহলে এ প্রতিরোধের বিরুদ্ধে আমেরিকা এবং নেটোর যুদ্ধকে আপনারা কি বলবেন? যারা আলেমদের নামে এ ফায়সালা প্রকাশ করে, আমি সে সকল হযরাতদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে, আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী কুফফারদের বিরুদ্ধে চলমান ফরজে আইন জিহাদ আফগানিস্তানের আহলে হক্ব আলেমদের শরয়ী তত্বাবধানে এগিয়ে চলছে। আমেরিকা ও নেটো নিজেদের সব ধরনের শক্তি-সামর্থ থাকা সত্বেও এই পবিত্র জিহাদের মোকাবেলা করতে অক্ষম হয়ে পড়েছে। এর বুনিয়াদী কারণ হলো জিহাদের হক্বানিয়াত, শরয়ী নছের উপর মুজাহিদদের ভরসা এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠায় তাদের এখলাছ।
            আমি মনে করি, আপনারা আফগানিস্তানের উপর বুশের ক্রুসেড আক্রমণের ব্যাপারে বে-খবর, আর শুধু জিহাদ সম্পর্কিত কুরআনের সূস্পষ্ট আয়াতের খেলাফ আক্বিদা পোষণ করছেন তাই নয়, যদি আপনারা এ সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক মজবুরী বা বাধ্যবাধকতার কারণে দিয়ে থাকেন, তাহলে এমনটি করবেন না! কুরআনকে অর্থ কামানোর মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করবেন না! আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করুন! ঐ সত্ত্বার নিকট বিনয়ের সাথে ক্ষমা চান! তিনি আপনাদেরকে এই মজবুরী থেকে মুক্তি দিবেন ইনশা আল্লাহ।
            সউদী বাদশাহদের প্রতি আমাদের পরামর্শ এই যে, সৌদী এবং আফগান জনগণের মাঝে একটি মজবুত ঈমানী ও ইসলামী সম্পর্ক রয়েছে। এটা এমন এক সম্পর্ক, যা সৌদীর জনগণ ও সরকারকে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে কুফরী আক্রমণকে ধ্বংস করার নির্দেশ দেয়। আর তাই আমি সৌদী বাদশাহদেরকে কনফারেন্সের আয়োজক হিসাবে হযরত উমর (রাঃ) এর ঐতিহাসিক বাণী স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি :
            ’نحن قوم أعزنا الله بالإسلام فإن ابتغينا العزة بغيره أذلنا الله‎
            “আমরা এমন এক জাতি, যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা ইসলামের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন। যদি আমরা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন জিনিসে নিজের সম্মান খুজি, তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে লাঞ্চিত করবেন।”
            মুসলমানদের আসল সম্মান ইসলামের আনুগত্য করার মধ্যে নিহিত। যে ইসলাম ছাড়া অন্য কিছুতে সম্মান তালাশ করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে লাঞ্চিত করবেন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে জিহাদ চলার সময় বহু সংখ্যক সউদী নওজোয়ান নিজেদের ইসলামী জিম্মাদারী আদায় করেছেন। অনেক বড় বড় মূল্যবান কুরবানী পেশ করেছেন। সৌদী এবং আফগান শহীদদের রক্তের মাধ্যমেই এখানে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্বের বৃক্ষ উৎজীবিত হয়ে উঠেছে। আপনারা ঐ সকল শহীদদের কুরবানীর লাজ রেখেই আফগান জিহাদে সাহায্য করুন!

            আমেরিকা অন্যান্য দেশগুলোকে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে উৎসাহিত করছে-
            আমেরিকা ২০১৮ সালের শুরুতে আশরাফ ঘানিকে এ মর্মে এক দায়িত্ব অর্পণ করে যে, ইমারতে ইসলামিয়াহকে শান্তি-চুক্তির প্রস্তাব করুন। অন্য দিকে আমেরিকা নিজের পূর্ণ মনযোগ ইমারতে ইসলামিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী গঠনের উপর নিবদ্ধ রেখেছে। এমনকি ব্রাসেলসে নেটোর সাম্প্রতিক বৈঠকে নেটোর সদস্যদের ছাড়াও সংযুক্ত আরব-আমিরাত এবং কাতারের কাছে দাবি করে যে, তারা যেন নিজেদের সৈন্যদেরকে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করার জন্য পাঠায়। আমেরিকা সংবিধানে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতারের কাছে নেটোর এমন আবদার তাদের সামরিক দুর্যোগ ও ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতারকে বলতে চাই যে- আমেরিকা আপনাদেরকে এ যুদ্ধে এই জন্য শামিল করতে চাচ্ছে, যাতে করে এ যুদ্ধের যুদ্ধ, অর্থনৈতিক, এবং মানুষের ক্ষতিও আপনাদের মত উন্নত দেশগুলোতে আসে। যদি আমেরিকার মত সুপার-পাওয়ার এবং নেটোর মত আধুনিক সেনাবাহিনী সমৃদ্ধরাও এ যুদ্ধে জয়ী হতে না পারে, তাহলে আপনাদের ১০ এবং ১০০ সৈন্য মিলে কী কাজ আঞ্জাম দিবে? সাবধান থাকুন, যেন আমেরিকা আপনাদেরকে ধাক্কা দিয়ে কাদার এ গর্তে ফেলে না দেয়, যার মাঝে তারা নিজেরাই শেষ হতে চলেছে।

            জনগণের সুখ সম্পর্কে-
            আফগান জনগণের দুনিয়ার সুখ-শান্তির জন্য অর্থনৈতিক উন্নতি, নির্মাণ, বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক পলিসি অবলম্বন করাকে ইমারতে ইসলামিয়া গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন মনে করে। আফগানিস্তানের ধনীদের এবং শিক্ষিত শ্রেণীর লোকদের উপর অন্যান্য আফগান জনগণের তুলনায় আরও বেশি দায়িত্ব বর্তায়। তারা দেশের ভবিষ্যতের উন্নয়নের ব্যাপারে সফল প্রকল্প সম্পর্কে গবেষণা করবে। এ ভূখণ্ড আপনাদের মাধ্যমে উন্নতি করবে। এ ভূখণ্ড আপনাদের শান্তি ও আরামের স্থান। এ ভূখণ্ড আমাদের এবং আপনাদের যৌথ বাড়ি। এ ব্যাপারে আমাদের সকলের একই দায়িত্ব।

            হে ইমারতে ইসলামিয়ার দায়িত্বশীলগণ!
            যে সব এলাকা ইমারতে ইসলামিয়ার কন্ট্রোলে রয়েছে, সেগুলোর প্রতি মুজাহিদদের দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। সমস্ত এলাকার সামরিক ও বেসামরিক কর্তৃপক্ষের উচিত হলো, ইসলামী হুকুমতের বাস্তব ধারণাকে জীবিত করা। আল্লাহ তায়ালার সকল বান্দাদের অধিকারসমূহে ছাড় দেওয়া। অত্যাচার, নিপীড়ন এবং বদ-আখলাকী থেকে বেঁচে থাকা। অত্যাচারীদেরকে লাগাম পড়িয়ে দেওয়া। মুসলিম জনগণের জান, মাল, ইজ্জত এবং সকল অধিকার রক্ষায় যে কোন ধরণের কুরবানী ও অন্যকে প্রাধান্য দিতে কুণ্ঠাবোধ না করা।
            আমি আবারও আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন মুসলিম উম্মাহ’র উপর তাঁর বিশেষ অনুগ্রহ দান করেন। দুনিয়ার যে কোন মুসলমান, যে কোন দুশমনের জুলুম এবং নিষ্ঠুরতার মধ্যে রয়েছে, আল্লাহ তায়ালা তার সহায় হোন। আল্লাহ তায়ালা দখলকৃত ফিলিস্তিনকে দখলদার ইয়াহুদীদের অত্যাচার থেকে মুক্ত করুন। আল্লাহ তায়ালা সকল মুসলমানদেরকে ঐক্য এবং একতার তাওফীক দান করেন। আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করি যে, তিনি আফগানিস্তানকে আমেরিকার আক্রমণ থেকে মুক্তি দান করেন। দরিদ্র আফগান জনগণের এ দীর্ঘ মছিবতকে নিজ ফযল ও করমে শেষ করে দেন। আফগান মুসলিম জনগণকে পরস্পরের ঐক্য ও একতার বরকতে শত্রুর সকল ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করুন। তাঁর গোটা জমীনে ইসলামী নেযামের বাস্তবায়নের নিয়ামত দ্বারা ধন্য করুন।
            পরিশেষে আমি এ কথা বলতে চাই যে, যারা কুরবানী করবে বা কুরবানী করতে সক্ষম, তাদের নিকট আমার আবেদন যে, শহীদ, বন্দী, দরিদ্র এবং অসহায় মুসলিম পরিবারের খুশির এ দিনগুলিতে কৃপণতা দেখাবেন না। তাদেরকে সহযোগিতা করুন। যাতে তারাও ঈদের খুশিতে অংশগ্রহণ করতে পারে।
            এই প্রত্যাশায় আবারও একবার আপনাদেরকে ঈদুল আযহার মোবারকবাদ পেশ করছি। হে মুসলিম উম্মাহ! “ঈদুল আযহা মোবারক হোক”– আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সকল ইবাদাত কবুল করুন। আমীন!!
            ওয়াস্ সালাম




            মহামান্য আমীরুল মু’মিনীন শাইখুল হাদিস
            মৌলভী হেবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ
            আমীর- ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান
            ০৭ যিলহজ্জ ১৪৩৯ হিঃ মোতাবেক ১৮ আগষ্ট ২০১৮ ঈঃ



            আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!

            Comment


            • #7
              অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা। হে আল্লাহ! আফগানিস্তানে মুসলিমদের বিজয়কে ত্বরান্বিত করুন। আমীন।

              Comment

              Working...
              X