মা কে উদ্দেশ্য করে এক মুজাহিদ ভাইয়ের কিছু কথা ।
মা তুমি আমার সালাম নিবা, তুমি কেমন আছো আমি সেটা জানতে চাইব না। কারন আমি জানি যখন কোন মার কলিজার টুকরো তার কাছথেকে দূরে অজানা কোন এক দেশে চলে যায় তখন তার উপর কেমন অবস্থা অতিবাহীত হয় । মা যখন আমি আপনার কাছে ছিলাম, আমার খুব মনে পরে আপনি আমাকে কখনও একটি রাতের জন্যেও আপনার কাছে ছাড়া অন্য কোথায়ও রাত্রি যাপনের অনুমতি দিতেন না। এবং আমার ও মনে পরেনা যে কোন রাতের খাবার আমি খেয়েছি আর আপনি আমার সামনে ছিলেন না। এখন ও যখন আপনাকে মনে পরে আমার অজান্তেই চোখ দু’টি পানিতে ভরে যায়।
কিন্তু মা তুমি দেখো, আজকে প্রায় গোটা বিশ্বে ঈহুদী-খ্রীষ্টান ও নপাক হিন্দু-মুশরিক গোষ্ঠি দের দ্বারা আমরা নির্যাতিত।প্রতিটা দিন আমার শত শত ভাই-বোন দের জীবন নিয়ে ছিনি মিনি খেলা হচ্ছে । শত শত বোন ধর্ষিতা হচ্ছে । শত শত ভাই কে তারা শহীদ করেদিচ্ছে। শত শত মায়ের ইজ্জত লুন্ঠন করা হচ্ছে । শত শত শিশু কে তারা হত্যা করতে ছে। ধ্বংসাত্বক বোমার আঘাতে তাদের ঘর বাড়ী গুলো ধূলোয় মিশিয়ে দিচ্ছে । তাদের কান্নায় আকাশ বাতাশ ভাড়ি হয়ে আছে। তাদের অবস্থাতো মা এই রকম যে তারা সকালে ১০ জন পুরুষে জানাজা আদায় করে। দুপুরে তারা ১০ জন মহিলার জানাজা আদায় করে। বিকেলে আবার ১০ জন শিশুর জানাজা আদায় করেন। সন্ধ্যায় আবার মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে।
মাগো আজকে তাদের অবস্থাতো এইরূপ, খাবারের অভাবে তারা কুকুর খাওা জায়েজ কিনা সেই ফাতওয়া ইফতা বিভাগ গুলাতে তালাশ করতেছে। তাদের শরীরের হাড্ডি গুলো চাইলে একটা একটা করে গনে বলাযাবে । আমরাতো আলহামদুলিল্লাহ তিন বেলাই খুব ভালো খাবার খেতে পারতেছি। কিন্তু একটা বারও কি আমারা আমাদের সেই আশহায় নির্জাতিত মুসলিম ভাইদের খবর নিয়েছি ? না নেই নি। কিন্তু আমদের উপড় দ্বায়ীত্ব কি ছিল এই মুহুর্তে ? কুরআন আমাদের কে এই মুহুর্তে কিসের নির্দেশ দেয় ?
আল্লাহ পাক পবিত্র কালামে পাকে এরশাদ করতেছেন......
وَالَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ آوَوْا وَنَصَرُوا أُولَٰئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا ۚ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ [٨:٧٤]
আর যারা ঈমান এনেছে, নিজেদের ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং আল্লাহর রাহে জেহাদ করেছে এবং যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে, সাহায্য-সহায়তা করেছে, তাঁরা হলো সত্যিকার মুসলমান। তাঁদের জন্যে রয়েছে, ক্ষমা ও সম্মানজনক রুযী।
আরেক জায়গায় বর্নিত হয়েছে,
وَمَا لَكُمْ لَا تُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ وَالْوِلْدَانِ الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَٰذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ وَلِيًّا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ نَصِيرًا [٤:٧٥]
আর তোমাদের কি হল যে, তেমারা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষালম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও।
সুতরাং মা আমি কিভাবে আল্লাহ তা’লার এই আহবানে স্বারা না দিয়ে বসে থাকতে পারি? আমি তো আল্লাহর কালাম অধ্যায়ণ করেছি অধ্যায়ন করেছি রাসুল সা. এর বানী সমুহ । কিন্তু এত সব কিছুর পরে ও কিভাবে আমি মা স্থীর বসে থাকবো ? তাই মা আমি তোমাকে কষ্টের এক অতল, গভীর সাগর মাঝে নিমজ্জিত করে চলে এসেছি জিহাদের ময়দানে।
মাগো আমার এই চলে আসাটা যেন তোমার কাছে আনন্দের হয়। দুঃখের যেন না হয়। আমি শহীদ হয়ে গেলে কাল ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহর দরবারে গোটা পৃথীবির মানুষের সামনে তুমি বনলবে হে “হে আল্লাহ আমি শহিদের মা” । তুমি কি একটু ভাবতে পারো যে কি আনন্দের হবে সেই মুহুর্ত টা, সবাই বলাবলি করতে থাকবে কোণ শহিদের মা সে ? তার ছেলের নাম টা কি ? এই সৌভাগ্যবাণ মায়ের ছেলে কে ? তখন আল্লাহ তায়ালা আমাকে এবং তোমাকে সকলের সামনে উপস্থিত করবেন। ইনশাআল্লাহ।
পকৃত সুখ-সান্তি তো মা জান্নাতের সুখ-সান্তি । যেখানে নেই কোণ হৈচৈ নেই কোন কলাহল নেই কোন কষ্ট দায়ক কিছু। সুতরাং আমাদের জীবনের লক্ষতো হবে পরকালিন সুখ-সান্তি অর্থাৎ জান্নাত। তাই হে মা, তুমি আমার জন্যে এবং গোটা উম্মাহর জন্যে দু’য়া করবে। এবং নিজের খেয়াল রাখবে।
ইতি
আপনার একমাত্র স্নেহময়ী ছেলে
খুবায়েব
তারিখঃ ১-৪-২০১৮
সময়ঃ ১২:৫৩
Comment