বি.দ্র. এ নোট তাদের জন্য নাসিহা যারা সংশয় থেকে বের হতে চায়। তবে তাদের জন্য নয় যারা বক্রতার পেছনেই ছুটে চলে।
আল্লাহ বলেন
هُوَ الَّذِيَ أَنزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ فَأَمَّا الَّذِينَ في قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاء الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاء تَأْوِيلِهِ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلاَّ اللّهُ وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا وَمَا يَذَّكَّرُ إِلاَّ أُوْلُواْ الألْبَابِ
“তিনিই আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন। তাতে কিছু আয়াত রয়েছে সুস্পষ্ট, সেগুলোই কিতাবের আসল অংশ। আর অন্যগুলো রূপক। সুতরাং যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে, তারা ফিৎনা বিস্তার এবং অপব্যাখ্যার উদ্দেশে রুপক আয়াতগুলোর অনুসরণ করে। আর সেগুলোর ব্যাখ্যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর, তারা বলেনঃ আমরা এর প্রতি ঈমান এনেছি। এই সবই আমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। আর বোধশক্তি সম্পন্নেরা ছাড়া অপর কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না” [ সুরা ইমরান ৩:৭ ]
অতঃপর, দয়াময় আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল আমাদেরকে দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন যেন আমরা অন্তরের বক্রতা থেকে তাঁর কাছে পানাহ চাই -
رَبَّنَا لاَ تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
“হে আমাদের পালনকর্তা! সরল পথ প্রাপ্ত হওয়ার পর তুমি পুনরায় আমাদের হৃদয়কে বক্র করে দিওনা এবং তোমার নিকট থেকে আমাদিগকে অনুগ্রহ দান কর। তুমিই সব কিছুর দাতা” [ সুরা ইমরান ৩:৮ ]
আলহামদুলিল্লাহ, ইতিমধ্যে চলতি সময়ের একটি টিভি সাক্ষাৎকার সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। শামশাদ টিভি চ্যানেলে যে সাক্ষাৎকারটি প্রদান করেন তালিবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ হাফিযাহুল্লাহ। এ সাক্ষাৎকারের মূল বিষয় ছিলো আফগানিস্থান থেকে এ্যামেরিকাসহ বহিঃবিশ্বের সর্বশেষ তাগুত সৈন্য নিজ নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া ও তৎসংশ্লিষ্ট কিছু পারস্পারিক চুক্তি সংক্রান্ত।
আমরা জানি, কিছুদিন পূর্বে এ্যামেরিকার অনুরোধে তালিবানের একটি প্রতিনিধি দল মস্কাে কনফারেন্সে যোগদান করেছিলো শান্তি আলোচনার জন্য। পরবর্তীতে মস্কো কনফারেন্সের উপর তালিবান মুখপাত্র তাঁদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে যখন বিবৃতি প্রদান করেন তখন শত্রু-মিত্র অনেকেরই চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। কারণ, এই শান্তি আলোচনায় তালিবান প্রতিনিধি দল কুফ্ফার প্রধান রাষ্ট্রগুলোকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কনফারেন্সে প্রতিনিধিত্বের আসনে থেকে দ্বিপার্শ্বিক আলোচনা সম্পন্ন করে আসে।
পৃথিবীর বাঘা বাঘা যুদ্ধ বিশ্লেষক ও কূটনীতিকদের মতে, এ্যামেরিকার বিরুদ্ধে প্রতিনিধিত্বমূলক এই শান্তি আলোচনা তালিবানের জন্য এক বিরাট কূটনৈতিক সাফল্য যার চমকপ্রদ ফলাফল খুব দ্রুতই সমগ্র পৃথিবী প্রত্যক্ষ করবে বিইযনিল্লাহ। কেন বলা হচ্ছে এই শান্তি আলোচনায় তালিবান প্রতিনিধিত্বের আসনে ছিলো? এর কারণ হচ্ছে, পুরো আলোচনায় তালিবান প্রতিনিধি দল নিজেদেরকে সম্বোধন করেছে "ইসলামিক ইমারাহ আফগানিস্থান" নামে এবং তাঁদের আরোপিত শর্তগুলোর কোন একটি থেকেও তাঁরা সরে আসেনি ও কোন একটি শর্ত পরিবর্তন বা পরিমার্জন করেনি।
তবে সাধারণ বিবেচনার কারো কারো কাছে তালিবানের এই সুপ্ত বিজয়ের পরিধি উপলব্ধি করা সম্ভব হয়নি। আর যারা উম্মাহর পক্ষে তালিবানের বিজয় সহ্য করতে পারছে না তারা নিজেদের অন্তরে প্রজ্জ্বলিত হিংসার আগুনে জ্বলে-পুড়ে খাঁক হয়ে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে তারা কিছু ফিৎনা ছড়ানোর অপচেষ্টায় নিরঃলস চেষ্টা চালাচ্ছে এবং চালিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।
আল্লাহ বলেন
يُرِيدُونَ لِيُطْفِؤُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
“তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে” [ সুরা সফ ৬১:৮ ]
তালিবানের এ বিজয়ের সূত্রপাত এই নির্যাতিত উম্মাহ তথা আল্লাহর দ্বীনের বিজয়েরই সূত্রপাত বিইযনিল্লাহ। যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। তবে তালিবানের জন্য আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল সাফল্যের যে সূত্রপাত ঘটিয়েছেন তা ভালোভাবে বুঝার জন্য নিকট অতীত থেকে একটু ঘুরে আসা যাক।
আজ থেকে প্রায় ২ যুগ আগে আধুনিক বিশ্বের হুবাল এ্যামেরিকা তালিবানকে তাদেরই ভূমিতে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলো এবং প্রায় ৪৮ টি তাগুত রাষ্ট্রের সম্মিলিত মানব ইতিহাসের অন্যতম ঘৃণিত হামলা পরিচালিত হয়েছিলো তালিবানকে উৎখাত করার জন্য। সবাই বলেছিলো বিশ্বের সুপারপাওয়ার (!) এ্যামেরিকার বিরুদ্ধে কিভাবে তালিবান তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবে। এরপর সভ্যতা থেকে পিছিয়ে থাকা আফগান জাতি আবারও ইতিহাসের পাতায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। আঁকতে থাকে নতুন নতুন পটভূমি। কয়েক বৎসরের মধ্যে ন্যাটোভূক্ত সমস্ত তাগুত রাষ্ট্রই আফগানিস্থান থেকে তাদের সমস্ত সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়। ধাক্কা খায় আধুনিক বিশ্বের যুদ্ধ বিশ্লেষকগণ। কারণ আল্লাহ আজ্জাওয়াজালের পরিকল্পনা অনুযায়ী একের পর এক যা ঘটতে থাকে তা ছিলো তাদের বিশ্লেষণের উর্ব্ধে। অথচ সেটা ছিলো আল্লাহ যা পরিকল্পনা করেছেন তার ভূমিকা মাত্র। পরবর্তীতে সম্ভাব্য অনেক কিছুই খ্যাতনামা যুদ্ধ বিশ্লেষক, কূটনীতিকগনের লিখায় বা বক্তব্যে উঠে এসেছে। আফগানিস্থান থেকে সব তাগুত রাষ্ট্রের পলায়ন এ্যামেরিকার জন্য ছিলো অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ। আমরা না দেখলেও উপলব্ধি করতে পারি এই চ্যালেঞ্জের মুখে কুফ্ফারদের মিলনমেলা হোয়াইট হাউজ নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলো। তাদের নেতাদের মুখে ভেসে ওঠা দুঃশ্চিন্তার কালো রেখাগুলো স্পষ্ট ও দীর্ঘ হয়েছিলো।
এরপরের ঘটনাপ্রবাহ খুব দ্রুত পট পরিবর্তন করতে থাকে। সম্ভাব্য পরিণতি বুঝতে পেরে এ্যামেরিকা সম্মানজনক পলায়নের রাস্তা খোঁজা শুরু করে। আর সেই সম্মানজনক পলায়নের রাস্তা হলো বর্তমানের "শান্তি আলোচনা"। সুবহানাআল্লাহ! আমাদের শাইখ, উমারাহ, নেতাগনকে আল্লাহতাআলা কতোটা দূরদর্শীতাই না দান করেছেন! প্রায় ২ যুগ আগে আগ্রাসী এ্যামেরিকা যখন আফগানিস্থানের ভূমিতে প্রবেশ করে তখন আমীরুল মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমার (রহিমাহুল্লাহ) দ্ব্যর্থ কন্ঠে ঘোষণা করলেন,
"এ্যামেরিকা আফগানিস্থানে এসেছে নিজের ইচ্ছায়, কিন্তু আফগানিস্থান থেকে ফিরে যাবে আমাদের ইচ্ছায়"
এই শান্তি আলোচনায় তালিবানের অনড় অবস্থান হচ্ছে, আগে সমস্ত বহিরাগত সৈন্য আফগানিস্থান থেকে বের করে নিয়ে যেতে হবে অতঃপর আলোচনার অন্যান্য এজেন্ডা নিয়ে দ্বিপার্শ্বিক বৈঠক হবে। সৈন্য প্রত্যাহারের আগে কোন আলোচনা নেই বরং তোমাদের সৈন্যদের উপর উপর্যুপরি হামলা চলতেই থাকবে। সুবহানাআল্লাহ! পৃথিবীর কোন্ রাষ্ট্র বা সংগঠন এ্যামেরিকার সাথে শান্তি আলোচনা চলমান থাকাবস্থাতেই তাদের সৈন্যদের উপর হামলা চালানোর সাহস রাখে? আর ক্যাম্প বোস্টন হামলা ছিলো গত ১৮ বছরে এ্যামেরিকান সন্ত্রাসীদের উপর তালিবান পরিচালিত অসংখ্য হামলার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সেটা পরিচালিত হয়েছে চলমান শান্তি আলোচনার মধ্যেই। অথচ এই হামলার প্রেক্ষিতে এ্যামেরিকার পক্ষ থেকে কোন হুঙ্কার আসেনি শান্তি আলোচনা ভেঙ্গে দেয়ার। এ্যামেরিকার আকাশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে যুদ্ধ বিমান প্রতিশোধের জন্য আফগানিস্থানের আকাশসীমায় আর প্রবেশ করেনি।
টানা ১৮ বছর এ্যামেরিকার বিরুদ্ধে বরকতময় জিহাদ পরিচালনার পর বর্তমান প্রেক্ষাপটে তালিবানের এ সুদৃঢ় অবস্থান উম্মাহ'র বিজয়ের যে প্রতিচ্ছবি বহণ করছে তা মুমিন হৃদয় ছাড়া আর কোন হৃদয়কে প্রশান্ত করবে না। তাই, বিজয়ের যে দ্বার উন্মোচিত হয়েছে তা বক্র হৃদয়ের কারো উপলব্ধিতে না আসাই স্বাভাবিক। আর যারা শত্রুতা পোষণ করে তারা নিজেদের বুক চাপড়ে আক্রোশ মিটিয়ে নিতে থাকুক।
সংশয়বাদীদের মাথামোটা ধাঁচের সংশয় ও তার জবাবঃ
সংশয়ঃ আফগানের মাটি ব্যবহার করে মার্কিন স্বার্থে আঘাত করতে দেওয়া হবেনা এরকম টা যদি হয় তাহলে নিঃসন্দেহে আল কায়দা ও তালিবানের মধ্যে দূরত্ব বাড়বে।
জবাবঃ কোনো দেশের মাটি ব্যবহার বলতে সাধারণত বুঝায় সেই দেশের ভূমি ব্যবহার করে শত্রু ভূমিতে আক্রমণ করা অথবা শত্রুদেশে আক্রমণ করার জন্য সেই দেশে প্রশিক্ষণ নেয়া। কিন্তু আমরা জানি মুজাহিদরা পশ্চিমা বিশ্বে যে হামলাগুলো চালায় এগুলোকে বলা হয় ইস্তেসহাদী অপারেশন।
তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ রকম হামলা পরিচালনার জন্য আল-কায়দার মুজাহিদদের আফগানের ভূমি ব্যবহার করার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ, এখন অন্যান্য ভূমিতে প্রশিক্ষণ নিয়েই মুজাহিদরা এ্যামেরিকান তথা পশ্চিমা স্বার্থে আঘাত হানতে সক্ষম আলহামদুলিল্লাহ।
তবে এই চুক্তি অনুযায়ী, মুজাহিদরা ৯/১১ এর হামলা পরিচালনার জন্য যেভাবে আফগানিস্থানের ভূমিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছে সেটা আর পারবে না। কিন্তু মজার বিষয় হলো, এরুপ প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য আফগানের ভূমি ব্যবহার করার আর কোন প্রয়োজনই নেই। কারণ, আল্লাহ’র ইচ্ছায় প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য অনেক ভূমিই আল-কায়দার মুজাহিদদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
আর আল-কায়দার আছে AQIM, AQAP, AQIS, Hurrash Ad-deen ইত্যাদি। তো আল-কায়দার এই শাখাগুলো বিভিন্ন ভূমিতে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করছে। যে ভূমিতে যে শাখা কাজ করছে সে ভূমিতেই সেই শাখা হামলা পরিচালনা করে থাকে। AQIM কি ইসলামিক মাগরেব-এ এ্যামেরিকান স্বার্থে আঘাত হানার জন্য আফগানের মাটি ব্যবহার করে? AQAP কি এ্যারাবিয়ান পেনিনসুলাতে এ্যামেরিকান স্বার্থে আঘাত হানার জন্য আফগানের মাটি ব্যবহার করে? AQIS কি ভারতবর্ষে এ্যামেরিকান স্বার্থে আঘাত হানার জন্য আফগানের মাটি ব্যবহার করে? AQIS বাংলাদেশ শাখা কি এ্যামেরিকান এক্সপ্রোটোকল অফিসার জুলহাস মান্নান ও তার সহযােগী তনয়কে হত্যা করার জন্য আফগানের ভূমি ব্যবহার করেছিলো?
এই প্রশ্নগুলোর সোজা-সাপ্টা জবাব হচ্ছে “না”। সুতরাং এই ইস্যুতে তালিবান-আলকায়দা সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ারও কিছু নেই। তবে, এই ইস্যুতে এ্যামেরিকা ও তার দোসর তাগুত রাষ্ট্রগুলো হলুদ মিডিয়াতে ব্যাপক প্রোপাগান্ডা চালাবে এটাই স্বাভাবিক।
সংশয়ঃ তালিবান আল-কায়দাকে আফগানিস্থান থেকে বের করে দিলে অথবা তালিবান তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে তো আল-কায়দা দুর্বল হয়ে পড়বে।
জবাবঃ এর জবাবে শুরুতেই তালিবান মুখপাত্রের নিচের বক্তব্যটুকু পড়ে নেই। সম্পর্ক রাখা না রাখার বিষয়ে উনি বলেছেন -
আমরা কার সাথে সম্পর্ক গড়ব আর কার সাথে ছিন্ন করব তা একান্তই আমাদের ব্যাপার। এটি নির্ধারণ করার অধিকার অন্য কারো নেই। তাছাড়া এটি চলমান আলোচনার অন্তর্ভুক্ত নয়।
এরপরও যারা এ প্রসঙ্গ টেনে ফিৎনা ছড়ানোর চেষ্টা করে তাদের উদ্দেশ্যে বলবো,
আল-কায়দা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কাজ করে। প্রতিটি ভূ-খন্ডে আলাদা আলাদা ঘাঁটি তৈরি করে আল-কায়দা কাজ করে থাকে। তাহলে আল-কায়দাকে আফগানিস্থান থেকে বের করে দেয়ার প্রসঙ্গটা অবান্তর চিন্তা-চেতনা বৈ আর কি হতে পারে?
তবে এ বিষয়টি খোলাসা করার জন্য আবু বাসির (রদিয়াল্লাহু) এর ঘটনাটি উদাহরণ হিসেবে আনা যথেষ্ঠ হবে ইনশাআল্লাহ।
বদর উহুদ খন্দকসহ অনেকগুলো যুদ্ধ’র পর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে মক্কার মুশরিকদের হুদাইবিয়ার সন্ধি হয়। চুক্তি অনুযায়ী মদিনার মুসলিমরা মক্কাবাসি কাফির দের আক্রমন করবে না এবং মক্কার কাফিররাও মদিনা’র উপর কোনো আক্রমন চালাবে না। কিন্তু, কাফিররা মদিনা’র বাহিরে মক্কায় অবস্থিত মুসলিমদের উপর ঠিকই নির্যাতন জারি রেখেছিলো। তা সত্ত্বেও মদীনায় কোনো মুসলিম পালিয়ে আসলে চুক্তি অনুযায়ী তাকে মক্কায় ফেরত দিতে হতো। তো এক পর্যায়ে আবু বাসির রদিয়াল্লাহ যখন মদিনায় পালিয়ে আসেন তখন উনাকেও চুক্তি অনুযায়ী মক্কায় ফেরত পাঠানো হয়। প্রেক্ষিতে আবু বাছির রদিয়াল্লাহ আরো কিছু মুসলিম সহ উপকূলীয় এলাকায় চলে যান ও মক্কার কাফিরদের উপর চোরাগোপ্তা আক্রমন চালাতে থাকেন। যদিও রাসুল এর সাথে কাফিরদের চুক্তি ছিল কিন্তু এই চুক্তি মানতে বাধ্য ছিলেন কেবলমাত্র মদিনায় বসবাসরত মুসলিমরা। মদিনা’র বাহিরে অবস্থানকারী আবু বাছির এই চূক্তির আওতায় ছিলেন না। একারণে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম আবু বসিরের এই গুপ্ত হামলার বিরুদ্ধে কখনো মুখ খোলেননি এবং কোন পদক্ষেপও নেননি। আর মক্কার কাফিররাও আবু বাসিরের জন্য রসুলকে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত করতে পারেনি। এখন তালেবানদের সাথে আমেরিকার যে চুক্তি সেটা হলো আফগান থেকে কেউ আমেরিকার স্বার্থে আক্রমন চালাতে পারবে না ঠিক যেমন মদিনা থেকে কেউ মক্কার কাফিরদের উপর আক্রমন চালাতে পারতো না। আফগানের বাহিরে থেকে আল কায়দা এই চুক্তির আওতাভূক্ত নয় যেমনটি মদীনার বাহিরে অবস্থানরত আবু বাসির হুদাইবিয়া সন্ধির আওতাভূক্ত ছিলেন না। তাই আফগানের বাহিরে আল-কায়দার মতো যেসব মুজাহিদ আছেন তারা কেউই এই চূক্তির আওতাভুক্ত নন। একারণে আফগানের বাহিরে অবস্থিত সমস্ত মুজাহিদ আবু বাসিরের বাহিনীর মত এ্যামেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে বিইযনিল্লাহ। এখানে শরঈ কোন সমস্যাও নেই আলহামদুলিল্লাহ।
তাই তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেয়া হয় যে, তালিবান আফগানিস্থান থেকে আল-কায়দাকে বের করে দেবে অথবা আল-কায়দার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে তাহলে আল-কায়দা আবু বাসির হয়ে যাবে। আর এরজন্য পৃথিবীর বিভিন্ন ভূমিতে আল-কায়দার অনেক অভয়ারণ্য তৈরি আছে আলহামদুলিল্লাহ।
সংশয়ঃ এই আলোচনার ধরন দেখে মনে হচ্ছে ইসলামী খেলাফত নয় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। আমার মনে হয়, মুসলিম বিশ্বে মুসলিমদের মুক্তি রয়েছে ইসলামি খেলাফতে, একাধিক রাষ্ট প্রতিষ্ঠা হলে সম্ভব নয়। কেননা একাদিক রাষ্ট্রের ফলে মুসলিম জাতীয়তিবাদের পরিবর্তে রাষ্ট্র ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটবে।
জবাবঃ তালিবানে আফগানিস্থানের বাহিরে বিভিন্ন দেশে শরীয়া কায়েমের জন্য তাদের অধীনস্ত শাখাগুলোকে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে। যেমন - আলকায়দা, টিটিপি, জিংজিয়াং প্রদেশের মুজাহিদদেরকে ইত্যাদি।
এভাবে যখন তালিবানের অধীনস্ত এসব শাখার মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে ও নিয়ন্ত্রীতভাবে অনেকগুলো ইসলামি দাওলা প্রতিষ্ঠিত হবে তখন মুসলিমরা একটা পর্যায়ে শক্তিশালী হয়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ। পাশাপাশি খিলাফাহকে নিরাপত্তা দেয়ারও সামর্থ্য অর্জন করবে বিইযনিল্লাহ। তখন খলীফা’র গুণাবলী সম্পন্ন কোন একজনকে কেন্দ্রীয়ভাবে খলীফা হিসেবে ঘোষণা করে পূর্ণাঙ্গ খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
এটাই ছিলো আমীরুল মুজাহিদীন শাইখ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ’র পরিকল্পনা।
খিলাফাহকে নিরাপত্তা দেয়ার সামর্থ্য অর্জন না করেই খিলাফাহ ঘোষণা করলে পরিণতি হবে খারেজী আইএস-এর মতো এটা আমাদের উমারাহগণ আগে থেকেই বুঝতেন আলহামদুলিল্লাহ।
সংশয়ের দ্বিতীয় অংশে বলা হয়েছে আফগানিস্থানে তালিবান কর্তৃক ইসলামিক রাষ্ট্র গঠিত হলে মুসলিম জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে রাষ্ট্র ভিত্তিক জাতীয়তা বাদের উত্থান ঘটবে। কিন্তু আসল বিষয় হচ্ছে, মুসলিম জাতীয়তাবাদ বলে ইসলামে কোন টার্ম নেই। এই টার্মটা এসেছে জাতীয়তাবাদী মুসলিম ব্রাদারহুড এবং তাদের অনুসৃত পথে হাঁটা জামাত-ই-ইসলামের মতো জাতীয়তাবাদী দলের মাধ্যমে। মূলত ইসলামে জাতীয়তাবাদের কোন স্থান নেই।
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেন
"সে আমাদের দলভুক্ত নয় যে আসাবিয়্যাহ’র কারণে মৃত্যুবরণ করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয় যে আসাবিয়্যাহ’র দিকে আহ্বান করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয় যে আসাবিয়্যাহ’র কারণে যুদ্ধ করে”। [আবু দাউদ, হাদিস নং ৫১২১]
নোটঃ জাতীয়তাবাদ, গোত্র প্রীতি, বংশীয় আভিজাত্য ও অহংকারবোধকে আরবী পরিভাষায় আসাবিয়্যাহ বলা হয়।
তবে, আফগানিস্থানে ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে তালিবানের ভূমিকাকে কিভাবে জাতীয়তাবাদের উত্থান হিসেবে আখ্যায়িত করা যেতে পারে যেখানে কি না স্বয়ং রসুল সল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম শুরুতে কেবলমাত্র মদীনাকে ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন। অতঃপর মক্কা বিজয়ের পর ধীরে ধীরে ইসলামি রাষ্ট্রের পরিধি বৃদ্ধি করেছেন। তাহলে কি সংশয়বাদীরা বলবে যে, শুরুতে শুধুমাত্র মদীনাকে কেন্দ্র করে ইসলামিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা জাতীয়তাবাদের উত্থান ছিলো (নাউযুবিল্লাহ)? মোদ্দা কথা হচ্ছে, সংশয়গ্রস্থ ব্যক্তি ছাড়া সাধারণ বোধশক্তি সম্পন্ন কোন মুসলিমও আফগান কেন্দ্রিক তালিবানের ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনের বিরুদ্ধে এহেন হাস্যকর ও অযৌক্তিক অভিযোগ উপত্থাপন করতে পারে না।
তারপরও সত্যান্বেষীদের জন্য এ সংশয়ের যুক্তি নির্ভর জবাব হিসেবে আমার লিখিত "সংশয়বাদীদের বক্রতাঃ তালিবান জাতীয়তাবাদী" শীর্ষক লিখাটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
পড়ুন এখানে - https://www.facebook.com/notes/%E0%A...0992309635050/
সংশয়ঃ তালিবান এই চুক্তির মাধ্যমে আল-কায়দার বিরোধীতা করতে চাচ্ছে। আর শুরু থেকেই তালিবানের চিন্তা-চেতনা আফগান কেন্দ্রিক হওয়ার পিছনে হেকমত কি?
জবাবঃ “এই চুক্তির মাধ্যমে তালিবান আল-কায়দার বিরোধীতা করতে চাচ্ছে” - এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং একটি ভূল ধারণা। খুবই অদ্ভূত যে চুক্তিতে এমন কােন কথাই নেই অথচ এরকম সংশয় উত্থাপন করা হচ্ছে।
তারপরও এর উত্তম জবাব আমাদের কাছে মজুদ আছে আলহামদুলিল্লাহ।
যখন কেনিয়া সরকার মুজাহিদদের বিরোধীতা শুরু করলো তখন আল শাবাবও কেনিয়াতে আক্রমণ করা শুরু করার পাশাপাশি কেনিয়ার বিভিন্ন্ এলাকা দখল করা শুরু করেলো। সেই সময় সাংবাদিকরা আলশাবাব আমীরকে প্রশ্ন করেন যে আপনারা তো আগে কেনিয়াতে আক্রমন করতেন না, এখন কেন করছেন? উনি জবাবে বলেন - আগে কেনিয়া সরকার আমাদের কোনো ক্ষতি করতো না, আর তখন আমরা দুর্বল ছিলাম। এখন এরা আমাদের ক্ষতি করছে তাই আমরাও এদের আক্রমন করছি।
সীরাত থেকে আমরা জানি যে, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম যখন মদীনায় গেলেন তখন মদীনা সনদ করে আশ-পাশের ইহুদী গোত্র গুলোর সাথে শান্তিচূক্তি করে নিলেন। যাতে একই সাথে সকল কাফিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে না হয়। এরপর যখন বনী কুরাইযা চুক্তি ভঙ্গ করলো রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম এদের আক্রমন করলেন। একইভাবে যখন অন্য ইহুদিরাও চুক্তি ভঙ্গ করলো তখন তাদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করলেন। কিন্তু এর আগ পর্যন্ত রাসুল তাদের সাথে চুক্তি বহাল রেখেছেন। এগুলেো থেকে বুঝা যায় যে দুর্বল অবস্থায় সাময়িক সময়ের জন্য আশপাশের কাফিরদের সাথে শান্তিচুক্তি করা যাবে। নাজুক অবস্থায় যতটা সম্ভব শত্রু সংখ্যা কমিয়ে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে।
উদাহরণস্বরুপ এর বিপরতীতে খারেজী আইএস এর অবস্থা বিবেচনা করার মতো। এক সাথে সব কাফিরের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে এখন কি পরিণতি হয়েছে তাদের? কাফিরদের পাশাপাশি মুজাহিদদের বিরুদ্ধেও এরা আক্রমণ পরিচালনা করেছে। অথচ আজ তাদের করুন পরিণতি কতই না কষ্টদায়ক যখন কিনা তাদের গোয়ার্তুমির কারণের উম্মাহর একটা অংশকে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। এখানে আরেকটা বিষয় উল্লেখ্য, আনুগত্যের বায়াতের মাধ্যমে আল-কায়দা তো তালেবানেরই শাখা। একারণে পৃথিবীর যে অঞ্চলেই আল-কায়দা যুদ্ধ করছে সে অঞ্চলের মুজাহিদরা তালিবানের অধীনেই বায়াহবদ্ধ হচ্ছে। যেমন পাকিস্থানের টিটিপি, সোমালিয়ার আল শাবাব, জিংজিয়াংয়ের মুজাহিদরা এরকম সবাই তালিবানের অধীনেই বায়াহবদ্ধ হয়ে জিহাদ পরিচালনা করে যাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।
তাই তালিবানের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র আফগান কেন্দ্রিক চিন্তা-চেতনার অভিযোগ তোলা অযৌক্তিক যেখানে তালিবানের হাতে বায়াহবদ্ধ অবস্থায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আল-কায়দার মুজাহিদগণ গ্লোবাল জিহাদ পরিচালনা করে চলেছে। মূলত আফগানিস্থানে পূর্ণ তামক্বীন অর্জনের প্রাক্কালে তালিবান কিছু কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করবে যেমনটি আমরা সীরাত থেকে শিক্ষা পাই।
সংশয়ঃ তালিবান শুধুমাত্র আফগানের মাটিতে বহিঃরাষ্ট্রের সেনাদের অবস্থান মেনে নেবে না বলছে, কিন্তু তারা মুসলিম বিশ্বের সব জয়গা থেকে মার্কিন সৈন্যদের প্রত্যাহার করার কথা বলছে না। এটা আফগান জাতিয়তাবাদের লক্ষন। আর এটাই যদি হয় তাহলে আমেরিকারা কিঞ্চিত পরিমান হলেও বিজয় পেয়েছে।
জবাবঃ পূর্বেই বলা হয়েছে যে, তালিবান আফগানের বাহিরে অন্য ভূমিগুলোর দায়িত্ব তার অধীনস্থ শাখাগুলোর উপর ন্যস্ত করে রেখেছে। আর অধীনস্থ শাখাগুলো যেহেতু তালিবানের কাছেই বায়াহবদ্ধ তাই এই বায়াহবদ্ধ শাখাগুলোর অন্যভূমি থেকে কুফ্ফার সেনা তাড়ানোর কাজ করা আর আলাদাভাবে এই কাজ তালিবান করার মধ্যে কোনই পার্থক্য নেই। বাহ্যিকভাবে তালিবান সেটা প্রকাশ্যে ঘোষণা করছে না, যা একজন বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তির কাছে দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট।
এরকম সংশয় পোষণকারীদের আসলে বাস্তবতা সম্পর্কে অজ্ঞতা বেশ প্রকোট এটা বোঝা যায়। তালিবান কি আইএস খারিজীদের মতো মাথা মোটা নাকি যে শুরুতেই সমস্ত মুসলিম ভূমির উপর কর্তৃত্ব জারী করবে যেখানে সব ভূমিতে তাদের তামক্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়নি ? চুক্তি হওয়ার আগেই কি তাদের মাষ্টার প্ল্যান প্রকাশ করে দেবে? শামের জিহাদের অন্যতম একটা উদ্দেশ্য ছিলো শামে মুজাহিদরা বিজয়ী হওয়ার পর তারা আল-কুদসের দিকে নজর দেবে। কিন্তু সেই মাথামোটা খারেজী আইএসের গোয়ার্তুমির কারণে সেই সুযোগ অনেক পিছিয়ে গেছে। আল্লাহ তাওফীক দানকারী।
আফগান কেন্দ্রিক তালিবানের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়ে গেলে প্রথমেই তারা আল-কুদস বা ফিলিস্তিন থেকে জয়নিস্ট সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করার জন্য আলটিমেটাম দিয়ে দেবে ইনশাআল্লাহ। এরপর একে একে সব ভূমির দিকে তারা নজর দেবে ইনশাআল্লাহ। বরং চুক্তি অনুযায়ী আফগানিস্থান থেকে কুফ্ফার সন্ত্রাসীরা বিতাড়িত হওয়ার পর অন্য মুসলিম ভূমির বিষয়ে কথা বলা তালিবানের জন্য সহজ হবে এবং সেই প্রেক্ষাপটে অন্য মুসলিম ভূমিগুলোর বিষয়ে তালিবানের কথা বলা যুক্তিযুক্তও হবে বিইযনিল্লাহ। তাছাড়া চুক্তিনামায় তো এমন কোন পয়েন্ট নেই যে তালিবান ভবিষ্যতে অন্য কোন মুসলিম ভূমির বিষয়ে এ্যাপ্রোচ করতে পারবে না। কারণ, তালিবানের আন্তার্জাতিক ক্ষেত্রে কূটনৈতিক পরিকল্পনা ও সম্পর্ক কেমন হবে এটা এ্যামেরিকা নির্ধারণ করে দেয়ার কেউ না।
তাই, বর্তমানে তালিবান অন্য মুসলিম ভূমিগুলোর বিষয়ে চুপ থাকার মানে এ্যামেরিকার কিঞ্চিৎ বিজয় নয় বরং তা এ্যামেরিকার জন্য অসনী সংকেত। কারণ, তালিবান তাদের আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা সম্পর্কে কোন দাবি চুক্তি নামায় আনেনি বিধায় এ্যামেরিকা তালিবানের মাষ্টার প্ল্যানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে গেলো। তাই তারা জানে না, অদূর ভবিষ্যতে তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে।
তবে এই উম্মাহকে নিয়ে যে তালিবানের দীর্ঘমেয়াদী মাষ্টার প্ল্যান আছে তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ আমাদের বোন ড. আফিয়া সিদ্দিকী’র মুক্তি। আলহামদুলিল্লাহ, এ্যামেরিকার সাথে শান্তি আলোচনায় তালিবানের পক্ষ থেকে উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে এটি ছিলো অন্যতম একটি দাবী। অচিরেই এ্যামেরিকার কারাগার থেকে মুক্ত হচ্ছেন আমাদের এই নিরপরাধ বোন। উম্মাহ’র এই বোনকে তো জাতীয়তাবাদী পারভেজ মোশারফের তাগুত বাহিনী সিআইএ’র হাতে তুলে দিয়েছিলো। নিজের বোনকে ধর্ষকদের হাতে তুলে দিয়েছিলো। আর এটাই হচ্ছে জাতীয়তাবাদী তাগুত রাষ্ট্র নায়কদের নিকৃষ্ট চরিত্রের আসল রুপ।
সংশয়বাদীদের কাছে তাই প্রশ্ন রেখে গেলাম, ড. আফিয়া সিদ্দিকী কি আফগানি ছিলেন? তিনি কি তালিবানের কোন আমীরের বোন ছিলেন? কারা তাকে মুক্ত করছেন? যামানার সুলতান এরদোয়ান, ইমরান খান?
না, না, না
বরং তালিবানই আমাদের এই বোনকে মুক্ত করতে অগ্রগামী হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ’র ইচ্ছায় অচিরেই বোন আফিয়া সিদ্দিকী মুক্তি পাবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ উম্মাহ’র লুন্ঠিত মর্যাদার প্রতিচ্ছবি এই বোনের মুক্তি ত্বরান্বিত করুন। আমীন
না, না, না
বরং তালিবানই আমাদের এই বোনকে মুক্ত করতে অগ্রগামী হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ’র ইচ্ছায় অচিরেই বোন আফিয়া সিদ্দিকী মুক্তি পাবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ উম্মাহ’র লুন্ঠিত মর্যাদার প্রতিচ্ছবি এই বোনের মুক্তি ত্বরান্বিত করুন। আমীন
পরিশেষে, সংশয়বাদীদের উদ্দেশ্যে বলবো - "ওহে বক্র হৃদয়ের অধিকারীগন! তোমরা জেনে রেখো তোমাদের সৃষ্ট সংশয় সত্যান্বেষীদের দৃঢ়তাকে দুর্বল করতে পারবে না বিইযনিল্লাহ। সত্যান্বেষীরা তোমাদের সৃষ্ট সংশয়ে দুর্বল হওয়ার নয়। কারণ যারা সত্যের তালাশ করে আল্লাহ তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসেন।
কাফেলা এগিয়ে যায় আর কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করে। কুকুরের ঘেউ ঘেউ কি সিংহের অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারে!
Comment