কায়িদাতুল জিহাদ - কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব
কৃতজ্ঞতা ও আনন্দের বার্তা
সোমালিয়ায় দখলদার আমেরিকা ও ইহুদী বাহিনীর উপর সফল হামলা
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ইমেজ ডাউনলোড করুন
[১]
[২]
[৩]
আগ্রাসী আমেরিকার ক্রুসেড বাহিনী সোমালিয়ায় তাদের জঘণ্য অপকর্ম ও আক্রমণগুলি গোপন করতে যতবার চেষ্টা করেছে,আশ-শাবাবের বীর মুজাহিদরা প্রতিবার তাদেরকে পরাস্ত ও লাঞ্ছিত করতে এবং বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করতে তার চেয়ে বেশী সফল হয়েছে। তাঁদের সর্বশেষ কঠিন হামলাটি হয়;সোমালিয়ায় আমেরিকার সবচেয়ে বড় সেনাঘাঁটিতে। ইতিপূর্বে এমন বড় ও তীব্র আক্রমণ আর কখনো হয়নি। হয়তো সামনেও হবেনা। এই হামলার পর কয়েক ডজন মার্কিন সেনাকে কফিনে করে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাদের পরিবারের সদস্যরাও যেন শোকের অংশীদরার হতে পারে। এটি মূলত: ১৯৯৩ এর অক্টোবরে মোগাদিশুর মহাসড়কে পরিচালিত হত্যাযজ্ঞের শান্তনা। আমেরিকার নিহত সৈন্যদের সংখ্যা ছিলো: ১১-ই সেপ্টেম্বরে মুসলিম বীর মুজাহিদদের সংখ্যার সমান। নিঃসন্দেহে এটি একটি হত্যাযজ্ঞের বিনিময়ে আরেকটি হত্যাযজ্ঞ। একটি আঘাতের বদলায় আরেকটি আঘাত। কালের পরিক্রমায় আর যুগের পালা বদলে আশ-শাবারের মুজাহিদরা শেতাঙ্গ আর কৃষ্ণাঙ্গ ক্রুসেডারদের রক্তের মাঝে পার্থক্য করেনি। বরং মোগাদিশু থেকে নির্লজ্জ আমেরিকার কাছে তাদের সৈন্যদের কফিন পাঠানোর ধারা অব্যাহত রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে,ইনশা আল্লাহ।
আফ্রিকান শিং-এ ক্রুসেড হামলার দুই দশকেরও অধিক সময় ধরে সোমালিয়ার মুজাহিদগণের অনবরত প্রেরিত যুদ্ধের বার্তা এই আমেরিকা আজ অবধি বুঝতে পারেনি। আরো বুঝতে পারেনি ইথিওপিয়ার (পূর্ব আফ্রিকা) বালুকাময় ভূমিতে ক্রুসেডীয়দের জমাটবাধা রক্ত আর নষ্ট হওয়া সম্পদের ব্যয়বহুল পরিধির কথা। আর কিছুদিন পূর্বে দক্ষিণ সোমালিয়ায় শাবিলি প্রদেশে ইসরাইলী ও ক্রুসেড বাহিনীর রক্ত প্রবাহকারী যে বড় বড় অভিযানগুলো হয়েছিল,তা সোমালিয়ায় সমসাময়িককালে ক্রুসেড আগ্রাসনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিযান। সেখানে ইসরাইল ও আমেরিকার আহত এবং নিহত সৈন্য সংখ্যা কয়েক ডজন হবে। এছাড়াও কিছু স্বয়ংক্রিয় মেশিন,ট্যাংক ও বিমান তাদের বহরের সামনে বিধ্বস্ত হয়েছে। কিন্তু সেখানে তারা ক্ষেপনাস্ত্র ও যুদ্ধের সরঞ্জামাদী নিয়ে তার ক্রুসেডার প্রভুদের রক্ত রক্ষায় অক্ষম হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল।
আমরা এই সাহসিকতাপূর্ণ কাজের কারণে এবং একই সময়ে মোগাদিশুতে মুরতাদ বাহিনী ও ইউরোপিয়ান যৌথ বাহিনীর বহরে টার্গেটপূর্ণ হামলায় মহান আল্লাহর প্রতি বিনম্র কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা জ্ঞাপন করছি। তিনি মহাপবিত্র,তিনিই প্রশংসার যোগ্য,সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তাই নিষ্কলুষভাবে তাঁরই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমরা আশ-শাবাবের ত্যাগী ভাইদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন ও পূর্ণ সমর্থন করছি। মহান আল্লাহর কাছে করজোড়ে প্রার্থনা করছি- হে আল্লাহ,আমাদের ইস্তেশহাদী সিংহ এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজে ব্যাপৃত বীর বাহাদুর ভাইদের পক্ষ থেকে এ মহান কাজকে কবুল করুন। তাঁদের দেহ এবং আত্মার প্রতি অফুরন্ত রহমত ও অজস্র মাগফেরাত বর্ষণ করুন। এ বরকতময় কাজে যারা নিজেদের সবটুকু বিলিয়ে পূর্ণ অবদান রেখেছেন,তাঁদের প্রত্যেককে পরিপূর্ণ প্রতিদান দান করুন। (আল্লাহুম্মা আমীন)
দখলদার ক্রুসেড বাহিনীকে আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলছি,আমাদের এ বার্তা নির্মল ঝর্ণার পানির চেয়েও স্বচ্চ যে,মুসলিম ভূমিগুলোতে তোমাদের জন্য কোন নিরাপত্তা নেই। শাস্তি ছাড়া তোমাদের আমরা এক কদমও সামনে বাড়তে দিব না। তোমাদের হাতে অন্যায়ভাবে প্রবাহিত মুসলিম রক্তের বদলা তোমাদের রক্ত ছাড়া অন্য কিছুই নয়। এসব আঘাত ও আক্রমণ তোমাদেরই পাপের বোঝা,যা তোমরা সোমালিয়া,ফিলিস্তিন,আফগানিস্তান,সিরিয়া,ইরাক ও অন্যান্য মুসলিম দেশে আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছ। আর এ অপরাধের কোন কমতি ছাড়া এসব আপদ টেনে এনেছে। সুতরাং সোমালিয়ার মুজাহিদদের দোষারোপ করো না বরং নিজেদেরকেই তিরস্কার করো। কারণ তোমরাই প্রথমে ক্রুসেড হামলার অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করেছ। তাই এর লেলিহান শিখায় তোমরাই দগ্ধ হও।
ক্রুসেডের সহযোগী,নিম্নশ্রেণীর হাবশী,সোমালিয়ার মুরতাদ শাসক ও সোমালিয়ায় আমাদের উপর প্রত্যেক নির্যাতনকারী অন্যান্য কাফির জাতি যেন মনে রাখে,কুফরের নিরাপত্তার চাদর সত্যের শক্তিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। ইসলামের সিংহ পুরুষদের মোকাবেলায় তাদের সব ধরনের প্রতিরোধব্যবস্থা মাকড়সার জালের চেয়েও দুর্বল। হায়,যদি তারা বুঝতো!
হে সম্মানিত মুজাহিদগণ! আজ ক্রুসেডার আমেরিকা এক বিশাল বিভক্তির মাঝে দিনাতিপাত করছে। যা তাদের অভ্যন্তরীন অবস্থা সম্পর্কে অবগত সকলেই বুঝে ফেলেছে। এ বিভক্তি তাদের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার চূড়ান্ত পর্যায় অতিক্রম করছে। আর এ সব কিছুই অর্জিত হয়েছে,দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে উম্মাহর কিছু শ্রেষ্ঠ মানুষের রক্তভেজা হাত ধরে। এতটুকু অপমান আর নির্লজ্জতার স্বীকার হওয়ার পরেও খৃষ্টবাদের ধ্বজাধারী আমেরিকা শেষবারের মত রাসূলে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূণ্যময় আরব ভূমিতে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা ট্রাম্প ও তার সেনা বাহিনীকে লক্ষ্য করে বলব,যদি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র ভূমির সিংহ শার্দুলেরা নিউইয়র্ক,ওয়াশিংটন, ইরাক ও আফগান যুদ্ধের মাধ্যমে তোমাদেরকে ভিয়েতনাম যুদ্ধের ভয়াবহতা ভুলিয়ে দিতে পারে,তবে আল্লাহর অনুগ্রহে অচিরেই নাইন ইলিভেন ও তার পরবর্তী যুদ্ধসমুহের ভয়াবহতাও তোমরা ভুলে যাবে। কারণ আরব বীরদের সাথে তোমাদের আগামীর যুদ্ধগুলো আরো কঠিন ও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।
আমরা আমাদের মুজাহিদ ভাইদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি! তারা যেন ইসলামের পতাকা বহন করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে, ইহুদি-খৃষ্টানদের শক্তির সকল উৎসকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে এবং তাদের উপর ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখে।
সুতরাং হে আরবের বীর পুরুষরা! আপনারা ধৈর্য্যের প্রশিক্ষণ নিন,যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন,সতর্ক থাকুন এবং কঠোর অধ্যবসায়ের পোশাক পরিধান করুন। আল্লাহর দ্বীনের জন্য সর্বোচ্চ কোরবানী পেশ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করুন। আর বিশেষকরে আপনারা স্বজাগ দৃষ্টি রাখবেন যে,বাইতুল মাকদিস ও হারামাইন হবে আপনাদের প্রথম টার্গেট। আমাদেরকে সবসময় আগত প্রজন্মকে এই বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতে হবে। তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার বিষয়টি যেন আমরা ভুলে না যাই। আমরা অবশ্যই বায়তুল মাকদিসকে ইহুদিদের দখলদারিত্ব থেকে পুনরুদ্ধার এবং পবিত্র হারামাইন থেকে মুশরিদের বের করার মিশনকে হাতে হাত রেখে,দৃঢ়পদে এগিয়ে নিয়ে যাবো। যেন ইহুদি-খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে আমাদের এই অটলাবস্থার হাত ধরে ফিলিস্তিন,হারামাইন শারীফাইন এবং সকল মুসলিম দেশগুলো মুক্ত হয়ে যায়।
পাশাপাশি উম্মাহর প্রতি ধারাবাহিক উপদেশ,হৃদয় নিংড়ানো আহ্বান এবং তাদের চেতনা জাগানিয়া নসিহত অব্যহত রাখবো। উম্মাহকে তাদের আত্মমর্যাদাবোধ ও সাহসকিতার গল্পগুলো স্মরণ করিয়ে দিবো, যেন এর থেকে তারা ইহুদি-খৃষ্টান এবং আমাদের মধ্যে তাদের দোসরদের উপর এমন চূড়ান্ত আক্রমণের শক্তি অর্জন করতে পারে,যার ফলে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর কালিমা পৃথিবীর আনাচে কানাচে বুলন্দ হবে। নিজেদের জীবনগুলো কোরবান করে করে রক্ত বন্যার মাঝে সম্মুখে অগ্রসর হন,যেন সেই রক্ত শ্রোতে নব্য বিশ্বব্যবস্থা সমূলে ধ্বংস হয়ে ভেসে যায়। সুতরাং ইহুদি-খৃষ্টান এবং তাদের মুসলিম চাটুকারদের মোকাবেলায় বীরের অবস্থান গ্রহণ করুন। আর নয় সুখের সাগরে গা ভাসিয়ে দেওয়া,আর নয় শান্তির নিদ্রায় বিভোর থাকা। যতক্ষণ না আল্লাহর দুশমনরা আত্মসমর্পন করে। আপনাদের বরকতময় এই যুদ্ধের মাধ্যমে মুসলিমদের গৌরবোজ্জ্বল সোনালী ইতিহাসের পাতায় সম্মান ও সৌভাগ্যের ইতিহাস রচনা করুন।
যদি তারা হয় আপনদের চেয়ে সংখ্যা ও সম্পদে অফুরন্ত,তবে আপনারা হোন তাদের চেয়ে ধৈর্য্য ও দৃঢ়তায় অতুলনীয়। আপনারা সেসব বীরদের অন্তর্ভুক্ত হন,যারা কুফুরি ও সীমালঙ্ঘনের প্রাচীর ভেঙ্গে উম্মাহকে আযাদি উপহার দেওয়ার আগে ক্ষান্ত হয় না। তবেই আপনাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইসলাম ও ঈমানের ছায়াতলে জীবন কাটাতে পারবে। এটি আল্লাহর কাছে কোন কঠিন কিছু নয়। সকল প্রশংসা তো তাঁরই জন্য।
সফর ১৪৪০ হিজরী
অক্টোবর ২০১৯ ইংরেজি
Comment