মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারিত্বের অবসানের লক্ষ্যে ক্রুসেডার আমেরিকার সাথে চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের প্রধান, মুহতারাম আমীরুল মু’মিনীন শাইখুল হাদীস মৌলবী হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ’র
গুরুত্বপূর্ণ বার্তা
----------------------------------
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ.
اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيرًا وَسُبْحَانَ اللَّهِ بُكْرَةً وَأَصِيلًا.
الحمد لله الذي صدق وعده، ونصر عبده، وأعز جنده، وهزم الأحزاب وحده، والصلاة والسلام على من لا نبي بعده، وعلى آله وأصحابه الذين نشروا دينه، أما بعد
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য। যিনি তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন, তাঁর বান্দাদেরকে সাহায্য করেছেন, তাঁর সৈন্যবাহিনীকে শক্তিশালী করেছেন এবং এককভাবেই শত্রু বাহিনীকে পরাজিত করেছেন। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক শেষনবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর- যার পরে আর কোন নবীর আগমন ঘটবে না, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীগণের উপর- যারা তাঁর দ্বীনকে দুনিয়ার বুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
হামদ ও সালাতের পর-
২০০১ সালের ৭ অক্টোবর আমেরিকা ও তার মিত্র দেশগুলো আফগানিস্তানের পুণ্যভূমিতে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য আক্রমণ করেছিল। কিন্তু অবশেষে মহান আল্লাহ তা‘আলার অপার সাহায্য ও অনুগ্রহে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান- গর্বিত আফগান জনগণের প্রতিনিধি হয়ে- এই দখলদারিত্বের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে সক্ষম হয়েছে। তবে তা প্রায় ১৯ বছর যাবৎ চলমান জিহাদ ও সংগ্রামের পর বাস্তবায়িত হয়েছে।
নিঃসন্দেহে এটি আমাদের মহান বিজয়। আর এই বিজয়ে সমগ্র আফগান জাতির প্রত্যেক মুজাহিদ নর-নারী সম্মিলিতভাবে অংশীদার। কারণ, তারা প্রত্যেকেই প্রায় দুই দশক ধরে এই সংগ্রামে নিজেদের মূল্যবান জীবন ও সম্পদের অসাধারণ ত্যাগ স্বীকার করে আসছেন।
আফগানিস্তান থেকে সমস্ত বিদেশী সৈন্যের পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং ভবিষ্যতে এখানে তাদের কোন ধরনের হস্তক্ষেপ না করার চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া; নিঃসন্দেহে তা একটি গৌরবময় বিজয় হিসাবেই বিবেচিত হবে।
সুতরাং এই গৌরবময় বিজয় উপলক্ষে ইমারতে ইসলামিয়া সকল স্তরের জনগণকে অন্তরের অন্তস্তল থেকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছে। বিশেষ করে মুজাহিদীন, শহীদদের পরিবার, কারাবন্দী, আহত, রোগাক্রান্ত, মুহাজিরীন ও সমগ্র জাতির প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছে। পাশাপাশি এই প্রকাশ্য বিজয়কে মহান আল্লাহ তা‘আলা পক্ষ থেকে একান্ত দয়া ও অনুগ্রহ মনে করছে। এমনিভাবে তা মুজাহিদীনের আত্মত্যাগ, আমাদের জাতির বিশ্বস্ততা ও আন্তরিকতা এবং এই পথে তাদের অগণিত দুঃখ-কষ্ট সহ্য করা ও বিভিন্ন মসীবতে ধৈর্য ধারণ করার ফসল মনে করছে।
এই গৌরবময় বিজয় অর্জনের পর আমি আসন্ন পরিস্থিতি সম্পর্কে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষভাবে মুজাহিদীন এবং সমগ্র জাতির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই:
• দখলদারিত্বের অবসান নিয়ে আমেরিকার সাথে এই চুক্তির মাধ্যমে আমাদের জাতি অচিরেই দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি লাভ করবে। নিশ্চয় এটা গৌরবময় বিজয়, মহান রবের দান এবং প্রকাশ্য বিজয়। সুতরাং আমাদের জন্য আবশ্যক হলো: এই বিজয়কে কোন বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি সম্বন্ধ না করা। বরং আমরা এই বিজয়কে মহান আল্লাহ তা‘আলার একান্ত দয়া ও অনুগ্রহ মনে করব। অতঃপর মুজাহিদীন ও সমগ্র জাতির বিরল আত্মত্যাগের ফসল মনে করব।
• ইমারতে ইসলামিয়ার পক্ষ হতে আমেরিকার সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার ক্ষেত্রে শরয়ী নীতিমালা ও বিধি-বিধানের প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়েছে। যেরূপ আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার প্রতি লক্ষ্য করা হয়েছে। কেননা, এই চুক্তিটি সকল মুজাহিদীন ও আফগানী জনগণের পক্ষ হতে একটি অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি হিসাবে বিবেচিত হবে। সুতরাং সকল সমন্বয়কারী, বাস্তবায়নকারী, ইমারতে ইসলামিয়ার সকল দায়িত্বশীল ও কর্মকর্তাগণ এবং সাধারণভাবে সমগ্র নাগরিকদের উপর আবশ্যক হলো: আপনারা কেউ এই চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করবেন না। বরং এটিকে বাধ্যবাধকতা হিসাবে বিবেচনা করবেন। কারণ, ইসলামে বিশ্বাসঘাতকতা ও ছলনার কোন স্থান নেই। এমনিভাবে ইসলাম এ ধরনের চুক্তি লঙ্ঘণ করাকে বড় ধরনের পাপ হিসাবে উল্লেখ করেছে। তবে অন্যপক্ষ যদি চুক্তির বিরোধিতা বা লঙ্ঘন করে, তাহলে সমগ্র জাতিকে অতীতের ন্যায় দৃঢ়তার সাথে তা প্রতিরোধ করার জন্য পূর্ণাঙ্গরূপে প্রস্তুত থাকতে হবে।
• আফগান *মুসলিম জাতি, বিশেষ করে মুজাহিদগণের উপর আবশ্যক হলো: তারা এই প্রকাশ্য বিজয়ের মত মহান নেয়ামতের শুকরিয়াস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলার বেশি বেশি কৃতজ্ঞতা আদায় করবে। তাদের রবের প্রতি বিনয়াবনত হবে, যাতে তিনি তাদের তাকওয়া, দ্বীনদারী, আমানতদারী ও বিনয়কে আরো বাড়িয়ে দেন। এমনিভাবে অহংকারবোধ, উচ্চ মর্যাদা কামনা, অন্যের উপর প্রাধান্য বিস্তার ও নিজেদেরকে বিশেষায়িত করার প্রবণতা থেকে দূরে থাকবে। কেননা এই বিষয়গুলো জিহাদের প্রাণশক্তি ও বিজয়ের চেতনার সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ।
• আমেরিকার সাথে সফল আলোচনা প্রমাণ করে যে, আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব মনে হওয়া সমস্যারও যুক্তিযুক্ত সমাধান করা সম্ভব। ইমারতে ইসলামিয়ার পক্ষ থেকে এই আলোচনার সাফল্য সকল অভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় দলগুলোকে এই বার্তা দিচ্ছে যে, আমরা যে কোন সমস্যার একটি যুক্তিসঙ্গত এবং সুষ্ঠু সমাধান করার জন্য প্রস্তুত আছি। তাই আসুন! আমরা আমাদের ধর্মীয় ও জাতীয় মূল্যবোধের আলোকে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজে বের করি এবং জনগণের উপর কাবুল প্রশাসনের অন্যায় অত্যাচার বন্ধ করি।
• ইমারতে ইসলামিয়া সমগ্র বিশ্বের সাথে, বিশেষভাবে আঞ্চলিক দেশগুলোর সাথে ইতিবাচক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখতে বিশ্বাস করে। এমনিভাবে প্রতিবেশীদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের নীতি অবলম্বন করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
• আমরা আমাদের নির্যাতিত জাতিকে নিশ্চিন্ত করতে চাই যে, অচিরেই এ দেশের সকল নারী-পুরুষ একটি ন্যায়পরায়ণ ও প্রকৃত ইসলামী সরকারের ছায়াতলে তাদের প্রাপ্য অধিকার বুঝে পাবে।
• যারা ইমারতে ইসলামিয়ার বিরোধিতা করেছিল অথবা ইমারতে ইসলামিয়ার বিরুদ্ধে যে কোন ধরনের অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল, মোটকথা ইমারতে ইসলামিয়ার বিরোধিতা করার কারণে যাদের উদ্বেগ রয়েছে; তাদের সকলকে অতীতের যাবতীয় কৃত কর্মের জন্য ক্ষমা করা হলো। পাশাপাশি আমরা তাদের জন্য ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ ও জাতীয় ঐক্যের ছায়ায় সমৃদ্ধ জীবন যাপন কামনা করছি।
• ইমারতে ইসলামিয়া মানসম্মত (ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক) শিক্ষার প্রসার, চাকরির ক্ষেত্র, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ সুবিধাসহ সকল জনকল্যাণমূলক সেক্টরে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি আনয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাবে। কেননা, এগুলো সকল আফগানি জনগণের মৌলিক অধিকার এবং আমাদের জাতীয় উন্নতি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণের জন্য আবশ্যকীয়ভাবে প্রয়োজন।
• ইমারতে ইসলামিয়ার মুজাহিদীনের কর্তব্য হলো: তারা তাদের সারিগুলোকে আরও সুদৃঢ়, সুসংগঠিত এবং সক্রিয় করবে। যেন তারা তাদের একটি ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে পারে এবং দখলদারিত্বের অবসানের পর তাদের জাতির মাঝে সমৃদ্ধি আনতে পারে। এমনিভাবে ভবিষ্যতে দুর্ভাগ্য বয়ে আনতে পারে এমন বিষয়ের মোকাবেলা করার, ইসলামী সরকারের প্রতিরক্ষা করার, সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা ও ব্যাপক শান্তি নিশ্চিত করার এবং জাতির সেবা করার ক্ষেত্রে সকল সম্ভাব্য ঝুঁকির মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি বজায় রাখবে।
• আমাদের মুসলিম জাতির বিজ্ঞ আলেম-উলামা, গোত্রীয় নেতা, ধর্মীয় নেতা, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনগণ তথা সকল স্তুরের মানুষের প্রতি ইমারতে ইসলামিয়ার আহ্বান হলো: আপনারা যেমনভাবে দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে আপনাদের মুজাহিদীন ভাইদের সাথে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। এখন আপনাদের উপর আবশ্যক হলো: ঠিক সেভাবেই সংকট নিরসনের ক্ষেত্রে এবং আমাদের দেশীয় ইস্যুগুলোর সমাধান খুঁজতে আপনারা পারস্পরিক সহযোগিতা, প্রচেষ্টা ও মেহনত চালিয়ে যাবেন। যেন এই পর্যায়টি চূড়ান্ত স্বাধীনতা ও সাফল্যের উপকূলে পৌঁছে যায় এবং আফগানিস্তানে শান্তির ধারা প্রবাহিত হয় ও একটি ন্যায়পরায়ণ ইসলামী সরকার গঠন করা যায়।
• পরিশেষে শান্তি আলোচনা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে মধ্যস্থতায় অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখায় এবং আন্তরিকভাবে নিরবিচ্ছিন্ন সহযোগিতা করায় কাতার ও কাতারের আমীর শেখ তামিম বিন হামদ আল সানিকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যেমনিভাবে আমি সর্বাগ্রে ধন্যবাদ জানাচ্ছি- পাকিস্তান, উজবেকিস্তান, চীন, ইরান, রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুর্কমেনিস্তান, কিরগিজিস্তান, সংযুক্ত আরব-আমিরাত। এমনিভাবে শান্তি আলোচনায় অন্যান্য দেশগুলোর যারাই সহযোগিতা করেছেন, আমি তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা তাদের প্রচেষ্টাকে কবুল করুন এবং তাদেরকে উত্তম বিনিময় প্রদান করুন।
***
ওয়াসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ.
আমিরুল মু’মিনীন শাইখুল হাদীস মৌলবী হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ
আমীর, ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান
০৫/০৭/১৪৪১ চান্দ্র হিজরী
১০/১২/১৩৯৮ সৌর হিজরী
২৯/০২/২০২০ ঈসায়ী
***
পূর্ণ বার্তাটি ডাউনলোড করুন
PDF
DOCX
https://www.mediafire.com/file/dmyg7...rta-.docx/file
গুরুত্বপূর্ণ বার্তা
----------------------------------
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ.
اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيرًا وَسُبْحَانَ اللَّهِ بُكْرَةً وَأَصِيلًا.
الحمد لله الذي صدق وعده، ونصر عبده، وأعز جنده، وهزم الأحزاب وحده، والصلاة والسلام على من لا نبي بعده، وعلى آله وأصحابه الذين نشروا دينه، أما بعد
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য। যিনি তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন, তাঁর বান্দাদেরকে সাহায্য করেছেন, তাঁর সৈন্যবাহিনীকে শক্তিশালী করেছেন এবং এককভাবেই শত্রু বাহিনীকে পরাজিত করেছেন। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক শেষনবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর- যার পরে আর কোন নবীর আগমন ঘটবে না, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীগণের উপর- যারা তাঁর দ্বীনকে দুনিয়ার বুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
হামদ ও সালাতের পর-
২০০১ সালের ৭ অক্টোবর আমেরিকা ও তার মিত্র দেশগুলো আফগানিস্তানের পুণ্যভূমিতে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য আক্রমণ করেছিল। কিন্তু অবশেষে মহান আল্লাহ তা‘আলার অপার সাহায্য ও অনুগ্রহে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান- গর্বিত আফগান জনগণের প্রতিনিধি হয়ে- এই দখলদারিত্বের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে সক্ষম হয়েছে। তবে তা প্রায় ১৯ বছর যাবৎ চলমান জিহাদ ও সংগ্রামের পর বাস্তবায়িত হয়েছে।
নিঃসন্দেহে এটি আমাদের মহান বিজয়। আর এই বিজয়ে সমগ্র আফগান জাতির প্রত্যেক মুজাহিদ নর-নারী সম্মিলিতভাবে অংশীদার। কারণ, তারা প্রত্যেকেই প্রায় দুই দশক ধরে এই সংগ্রামে নিজেদের মূল্যবান জীবন ও সম্পদের অসাধারণ ত্যাগ স্বীকার করে আসছেন।
আফগানিস্তান থেকে সমস্ত বিদেশী সৈন্যের পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং ভবিষ্যতে এখানে তাদের কোন ধরনের হস্তক্ষেপ না করার চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া; নিঃসন্দেহে তা একটি গৌরবময় বিজয় হিসাবেই বিবেচিত হবে।
সুতরাং এই গৌরবময় বিজয় উপলক্ষে ইমারতে ইসলামিয়া সকল স্তরের জনগণকে অন্তরের অন্তস্তল থেকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছে। বিশেষ করে মুজাহিদীন, শহীদদের পরিবার, কারাবন্দী, আহত, রোগাক্রান্ত, মুহাজিরীন ও সমগ্র জাতির প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছে। পাশাপাশি এই প্রকাশ্য বিজয়কে মহান আল্লাহ তা‘আলা পক্ষ থেকে একান্ত দয়া ও অনুগ্রহ মনে করছে। এমনিভাবে তা মুজাহিদীনের আত্মত্যাগ, আমাদের জাতির বিশ্বস্ততা ও আন্তরিকতা এবং এই পথে তাদের অগণিত দুঃখ-কষ্ট সহ্য করা ও বিভিন্ন মসীবতে ধৈর্য ধারণ করার ফসল মনে করছে।
এই গৌরবময় বিজয় অর্জনের পর আমি আসন্ন পরিস্থিতি সম্পর্কে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষভাবে মুজাহিদীন এবং সমগ্র জাতির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই:
• দখলদারিত্বের অবসান নিয়ে আমেরিকার সাথে এই চুক্তির মাধ্যমে আমাদের জাতি অচিরেই দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি লাভ করবে। নিশ্চয় এটা গৌরবময় বিজয়, মহান রবের দান এবং প্রকাশ্য বিজয়। সুতরাং আমাদের জন্য আবশ্যক হলো: এই বিজয়কে কোন বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি সম্বন্ধ না করা। বরং আমরা এই বিজয়কে মহান আল্লাহ তা‘আলার একান্ত দয়া ও অনুগ্রহ মনে করব। অতঃপর মুজাহিদীন ও সমগ্র জাতির বিরল আত্মত্যাগের ফসল মনে করব।
• ইমারতে ইসলামিয়ার পক্ষ হতে আমেরিকার সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার ক্ষেত্রে শরয়ী নীতিমালা ও বিধি-বিধানের প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়েছে। যেরূপ আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার প্রতি লক্ষ্য করা হয়েছে। কেননা, এই চুক্তিটি সকল মুজাহিদীন ও আফগানী জনগণের পক্ষ হতে একটি অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি হিসাবে বিবেচিত হবে। সুতরাং সকল সমন্বয়কারী, বাস্তবায়নকারী, ইমারতে ইসলামিয়ার সকল দায়িত্বশীল ও কর্মকর্তাগণ এবং সাধারণভাবে সমগ্র নাগরিকদের উপর আবশ্যক হলো: আপনারা কেউ এই চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করবেন না। বরং এটিকে বাধ্যবাধকতা হিসাবে বিবেচনা করবেন। কারণ, ইসলামে বিশ্বাসঘাতকতা ও ছলনার কোন স্থান নেই। এমনিভাবে ইসলাম এ ধরনের চুক্তি লঙ্ঘণ করাকে বড় ধরনের পাপ হিসাবে উল্লেখ করেছে। তবে অন্যপক্ষ যদি চুক্তির বিরোধিতা বা লঙ্ঘন করে, তাহলে সমগ্র জাতিকে অতীতের ন্যায় দৃঢ়তার সাথে তা প্রতিরোধ করার জন্য পূর্ণাঙ্গরূপে প্রস্তুত থাকতে হবে।
• আফগান *মুসলিম জাতি, বিশেষ করে মুজাহিদগণের উপর আবশ্যক হলো: তারা এই প্রকাশ্য বিজয়ের মত মহান নেয়ামতের শুকরিয়াস্বরূপ আল্লাহ তা‘আলার বেশি বেশি কৃতজ্ঞতা আদায় করবে। তাদের রবের প্রতি বিনয়াবনত হবে, যাতে তিনি তাদের তাকওয়া, দ্বীনদারী, আমানতদারী ও বিনয়কে আরো বাড়িয়ে দেন। এমনিভাবে অহংকারবোধ, উচ্চ মর্যাদা কামনা, অন্যের উপর প্রাধান্য বিস্তার ও নিজেদেরকে বিশেষায়িত করার প্রবণতা থেকে দূরে থাকবে। কেননা এই বিষয়গুলো জিহাদের প্রাণশক্তি ও বিজয়ের চেতনার সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ।
• আমেরিকার সাথে সফল আলোচনা প্রমাণ করে যে, আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব মনে হওয়া সমস্যারও যুক্তিযুক্ত সমাধান করা সম্ভব। ইমারতে ইসলামিয়ার পক্ষ থেকে এই আলোচনার সাফল্য সকল অভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় দলগুলোকে এই বার্তা দিচ্ছে যে, আমরা যে কোন সমস্যার একটি যুক্তিসঙ্গত এবং সুষ্ঠু সমাধান করার জন্য প্রস্তুত আছি। তাই আসুন! আমরা আমাদের ধর্মীয় ও জাতীয় মূল্যবোধের আলোকে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজে বের করি এবং জনগণের উপর কাবুল প্রশাসনের অন্যায় অত্যাচার বন্ধ করি।
• ইমারতে ইসলামিয়া সমগ্র বিশ্বের সাথে, বিশেষভাবে আঞ্চলিক দেশগুলোর সাথে ইতিবাচক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখতে বিশ্বাস করে। এমনিভাবে প্রতিবেশীদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের নীতি অবলম্বন করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
• আমরা আমাদের নির্যাতিত জাতিকে নিশ্চিন্ত করতে চাই যে, অচিরেই এ দেশের সকল নারী-পুরুষ একটি ন্যায়পরায়ণ ও প্রকৃত ইসলামী সরকারের ছায়াতলে তাদের প্রাপ্য অধিকার বুঝে পাবে।
• যারা ইমারতে ইসলামিয়ার বিরোধিতা করেছিল অথবা ইমারতে ইসলামিয়ার বিরুদ্ধে যে কোন ধরনের অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল, মোটকথা ইমারতে ইসলামিয়ার বিরোধিতা করার কারণে যাদের উদ্বেগ রয়েছে; তাদের সকলকে অতীতের যাবতীয় কৃত কর্মের জন্য ক্ষমা করা হলো। পাশাপাশি আমরা তাদের জন্য ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ ও জাতীয় ঐক্যের ছায়ায় সমৃদ্ধ জীবন যাপন কামনা করছি।
• ইমারতে ইসলামিয়া মানসম্মত (ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক) শিক্ষার প্রসার, চাকরির ক্ষেত্র, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ সুবিধাসহ সকল জনকল্যাণমূলক সেক্টরে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি আনয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাবে। কেননা, এগুলো সকল আফগানি জনগণের মৌলিক অধিকার এবং আমাদের জাতীয় উন্নতি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণের জন্য আবশ্যকীয়ভাবে প্রয়োজন।
• ইমারতে ইসলামিয়ার মুজাহিদীনের কর্তব্য হলো: তারা তাদের সারিগুলোকে আরও সুদৃঢ়, সুসংগঠিত এবং সক্রিয় করবে। যেন তারা তাদের একটি ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে পারে এবং দখলদারিত্বের অবসানের পর তাদের জাতির মাঝে সমৃদ্ধি আনতে পারে। এমনিভাবে ভবিষ্যতে দুর্ভাগ্য বয়ে আনতে পারে এমন বিষয়ের মোকাবেলা করার, ইসলামী সরকারের প্রতিরক্ষা করার, সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা ও ব্যাপক শান্তি নিশ্চিত করার এবং জাতির সেবা করার ক্ষেত্রে সকল সম্ভাব্য ঝুঁকির মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি বজায় রাখবে।
• আমাদের মুসলিম জাতির বিজ্ঞ আলেম-উলামা, গোত্রীয় নেতা, ধর্মীয় নেতা, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনগণ তথা সকল স্তুরের মানুষের প্রতি ইমারতে ইসলামিয়ার আহ্বান হলো: আপনারা যেমনভাবে দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে আপনাদের মুজাহিদীন ভাইদের সাথে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। এখন আপনাদের উপর আবশ্যক হলো: ঠিক সেভাবেই সংকট নিরসনের ক্ষেত্রে এবং আমাদের দেশীয় ইস্যুগুলোর সমাধান খুঁজতে আপনারা পারস্পরিক সহযোগিতা, প্রচেষ্টা ও মেহনত চালিয়ে যাবেন। যেন এই পর্যায়টি চূড়ান্ত স্বাধীনতা ও সাফল্যের উপকূলে পৌঁছে যায় এবং আফগানিস্তানে শান্তির ধারা প্রবাহিত হয় ও একটি ন্যায়পরায়ণ ইসলামী সরকার গঠন করা যায়।
• পরিশেষে শান্তি আলোচনা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে মধ্যস্থতায় অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখায় এবং আন্তরিকভাবে নিরবিচ্ছিন্ন সহযোগিতা করায় কাতার ও কাতারের আমীর শেখ তামিম বিন হামদ আল সানিকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যেমনিভাবে আমি সর্বাগ্রে ধন্যবাদ জানাচ্ছি- পাকিস্তান, উজবেকিস্তান, চীন, ইরান, রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুর্কমেনিস্তান, কিরগিজিস্তান, সংযুক্ত আরব-আমিরাত। এমনিভাবে শান্তি আলোচনায় অন্যান্য দেশগুলোর যারাই সহযোগিতা করেছেন, আমি তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা তাদের প্রচেষ্টাকে কবুল করুন এবং তাদেরকে উত্তম বিনিময় প্রদান করুন।
***
ওয়াসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ.
আমিরুল মু’মিনীন শাইখুল হাদীস মৌলবী হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ
আমীর, ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান
০৫/০৭/১৪৪১ চান্দ্র হিজরী
১০/১২/১৩৯৮ সৌর হিজরী
২৯/০২/২০২০ ঈসায়ী
***
পূর্ণ বার্তাটি ডাউনলোড করুন
DOCX
https://www.mediafire.com/file/dmyg7...rta-.docx/file
Comment