রমাদানে চব্বিশ ঘন্টা কীভাবে কাটাবেন?
মুসলিম উম্মাহর জীবনে প্রতি বছর রমাদান আসে। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে, দূর্ভীক্ষ মহামারি আর বিপর্যয়ে এই কঠিন সময়ে যথারিতি আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র মাহে রমাদান কষ্ট ও পেরেশানির এই দূর্দিনে রমাদান নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য আল্লাহ রব্বুল আলামিনের এক বড় নিয়ামত।
প্রিয় ভাই! মুমিনের জীবনে রমাদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এই মাসেই সে তার পুরো বছরের পুঁজি সংগ্রহ করে, অতিতের সব গুণাহ থেকে তাওবা করে নতুন করে জীবন শুরু করার শপথ গ্রহণ করে, তাই খুব সর্তকতার সাথে হিসেব করে পরিকল্পনা মাফিক এই মাস অতিবাহিত না করতে পারলে কাঙ্খিত সাফল্য অর্জন করা যায় না উপকৃত হওয়া যায় না রমাদানের আসমানি বরকত থেকে।
মুসলিম ভাইয়েরা! রমাদানের চব্বিশ ঘন্টা কিভাবে কাটাবেন এই নিয়ে আজ আমরা সংক্ষেপে কিছু আলোচনা করব। রাতে তারাবি আদায় করে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ুন অনর্থক গল্পগুজব করে সময় নষ্ট করবেন না, দিনে ঘুমানোর চেয়ে রাতে ঘুমানো আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অধিক উপকারি আর এতে আপনার সময়ের প্রচুর সাশ্রয়ী হবে।
শেষ রাতে সেহেরী খাওয়ার জন্য একটু আগেভাগে উঠে পড়ুন, যাতে দু'চার রাকাত তাহাজ্জুদ আদায় করা যায়, জাগতে না পারার আশষ্কা না থাকলে প্রয়োজনে এলাম সেট করে রাখুন, তাহাজ্জুদ আদায়ের পর আল্লাহর দরবারে প্রাণ ভরে দোয়া করুন, নিজের জন্য পরিবারের জন্য এবং সর্বপরি মুসলিম উম্মাহ সর্বঙ্গীণ কল্যাণ ও সাফ্যলের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন, আপনার অতীত জীবনের গুণাহ সরণ করে কাদোঁন অশ্রু ঝরান রোনাজানি করুন। সুনানে তিরমিযিতে বর্ণিত একটি সহিহ হাদিসে এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
عَيْنَانِ لَاتَمَسُّهُمَا النَّارُ ٭ عَيْنُ بَكَتْ مِنْ خَشْيَةِ الله٭ وَعَيْنُ بَاتَتْ تَحْرُسُ فِي سَبِيلِ اللهِ
" জাহান্নামের আগুন দুটি চোখকে স্পর্শ করবে না - যে চোখ আল্লাহর ভয়ে কাঁদে এবং যে চোখ আল্লাহর রাস্তায় পাহারা দিয়ে নির্ঘুম রাত যাপন করে। ( সুনানুত তিরমিজি: ১৬৩৯)
সাহারি দেরিকরে খাওয়া সুন্নাহ তাই আগেভাগে সেহেরি না খেয়ে শেষ সময়ে খাবেন। সাবধান! সাহারি খাওয়ার পর কখনো বিছানায় শুবেন না এতে আপনার চোখে ঘুম নেমে আসতে পারে এতে ফজরের সালাত কাজা হয়ে যেতে পারে। রমাদানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হল পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতের সঙ্গে মসজিদে আদায় করা, খিয়াল রাখবেন রমাদানের পুরো মাসে এক ওয়াক্ত সালাতের জামাআত যেন আপনার ছুটে না যায়। যদি এই মাসে জামাআতে সালাতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেন তবে এটাই হবে রমাদানের আপনার সবচেয়ে বড় অর্জন।
করোনা পরিস্থিতির কারনে যদি মসজিদে সালাত আদায় না করেত পারেন তবে অন্তত বাসায় হলে জামাত করার চেষ্টা করুন, ফজরের সালাত পরে সাথে সাথে না ঘুমানো ভালো সময়টি অনেক বরকতপূর্ণ এই সময় আপনি সকালের আজকার আদায় করতে পারেন, কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেন, দ্বীনি কিতাবাদি অধ্যায়ন করতে পারেন একেবারে ইশরাকের সালাত আদায় করে ঘুমাতে পারলে ভালো, ইশরাকের পর এলাম সেট করে ঘুমিয়ে পড়ুন। রাত আর দিন মিলিয়ে ৭-৮ ঘন্টার বেশি ঘুমানোর দরকার নেই। রমাদানের প্রতিটি মূহুর্তই খুবই মূল্যবান, তাই প্রতিটি সেকেন্ড থেকে উপকৃত হওয়ার চেষ্টা করুন। রমাদানের অত্যান্ত মৌলিক আমল হল তিলাওয়াত, রমাদানে পুরো কুরআন অন্তত একবার হলেও খতম করার চেষ্টা করুন প্রতিদিন নিয়ম করে একপাড়া তিলাওয়াত করুন, কোন কোন সময় তিলাওয়াত করবেন তার জন্য একটা সময় নির্ধারণ করে নিন।
অনেক ভাই আছেন এখনো তিলাওয়াত করতে পারেন না, এটি দ্বীনের প্রতি অনেক বড় অবহেলা রমাদান তাদের জন্য অনেক বড় একটি সুযোগ কোনো উস্তাদ ধরে এই রমাদানে কুরআন শিখে নিন প্রথমিক ভাবে অন্ত্যত চারটি সূরা বিশুদ্ধ উচ্চারণে শিখে নিন যাতে সালাত আদায় করতে পারেন। শুধু এক ধরণে ইবাদত করলে একগিয়ামি চলে আসতে পারে তাই সময় গুলোকে বিভিন্ন ধরণে ইবাদতের জন্য ভাগ করে নিন, কিছুক্ষণ তিলাওয়াত করুন, কিছুক্ষণ কুরআন তরজমা ও তাফসির অধ্যায়ন করুন, কিছু সময় দ্বীনি কিতাবাদি পড়ুন, একেবারে বেশি ক্লান্ত হয়েগেলে নির্ভরযোগ্য শায়েখদের লিকচার শুনুন, খিয়াল রাখবেন রমাদানের একটি মূহুর্ত যেন অনর্থক বরবাদ না হয়।
সম্ভব হলে রমাদান উপলক্ষ্যে ইন্টারনেট থেকে একেবারেই বিদায় নিন, ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদির প্রতি আসক্তি আপনার রমাদানকে বরবাদ করে দেওয়ার জন্য যতেষ্ট, আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে হিফাজত করুন।
জবানের হিফাজত করুন মিথ্যা, পরনিন্দা, গিবত, চোগলখোরির মত জগন্ন গুনাহ থেকে নিজেকে দূরে রাখুন এসবের কারণে আপনি রোজার সওয়াব থেকে বঞ্ছিত হবেন সহিহ বুখারিতে এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالعَمَلَ بِهِ٭ فَلَيسَ للهِ حَاجَةُ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ
" যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহ কোনো প্রয়োজন নেই। (সহিহুল বুখারি: ১৯০৩)
রমাদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হল সাদাকা, অাশপাশের গরীব মিসকিনদের খোঁজ খবর নিন ,তাদেরকে সাধ্যমত সাহায্য করুন তারা যেন সুন্দর ভাবে রমাদানের রোজাগুলো আদায় করতে পারে সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে এসেছে হযরত আব্বাস রাযিঅাল্লাহু আনহু বলেন,
كَانَ رَسُولُ اللهِﷺ أَجْوَدَالنَّاسِ٭ وَكَانَ أَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ
" রাসূলুল্লাহﷺ ছিলেন সর্বাধিক দানশীল। রামাদান মাসে তার দানশীলতা অন্যান্য মাসের চেয়ে বেড়ে যেত।( সহিহুল বুখারি: ৬ :সহিহুল মুসলিম: ২৩০৮)
আসরের পরের সময়টি দোয়া তিলাওয়াত ও আজকার আদায় করে কাঁটান, ইফতার প্রস্তুতিতে অংশ নিতে পারেন ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে নিন, ইফতার দেরি না করা সুন্নাহ, ইফতার এত বেশি দীর্ঘ করবেন না যাতে মাগরিবের সালাত কাজা হয়ে যায়, মাগরিবের সালাতের পর পরিবারের লোকদের সঙ্গে দ্বীনি আলোচনা করতে পারেন রিয়াজুস সালেহীন ইত্যাদির মত কোনো কিতাব থেকে তালিম করতে পারেন, বা অন্য কোনো ইবাদত করতে পারেন তারপর যথারিতি ইশার সালাত ও তারাবি আদায় করুন। খিয়াল রাখবেন পুরো রমাদানে একদিনও যেন তারাবি মিস না হয় তারাবির পর দ্রুত ঘুমিয়ে পরোন যাতে শেষ রাতে দ্রুত জেগে উঠতে পারেন।
রমাদানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হল তাওবা ও ইস্তেগফার তাই রমাদান জুড়েই আপনার চিন্তা থাকবে কিভাবে অতীতের গুণাহগুলো সম্পূর্ণভাবে মাফ করানো যায়। রমাদান পেয়েও যে নিজের গুণাহ মাফ করাতে পারলনা তার ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম বদ দোয়া করছেন তাই আমাদের খুবই সর্তক থাকতে হবে।
প্রিয় ভাই! উল্লেখিত নিতিমালার আলোকে আপনি নিজের জন্য চব্বিশ ঘন্টার এটি রুটিন তৈরি করে নিন, এই মাসে আল্লাহ রব্বুল আলামিন অনেক মুমিনকে ক্ষমা করে দিবেন সুনানে তিরমিযিতে বর্ণিত একটি সহিহ হাদিসে এসেছে রমাদানের প্রথম রাত যখন শুরুহয় আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন ঘোষক ঘোষনা করেন,
يَا بَاغِيَ الخَيْرِ أَقْبِلْ٭ وَيَا بَاغِيَ اشَّرِّ أَقْصِرْ٭ وَلِلّهِ عُتَقَاءُ مِنَالنَّارِ
"হে কল্যাণ প্রত্যাশী! কল্যাণের দিকে অগ্রসর হও! হে গুনাহের ইচ্ছা পোষণকারী! গুনাহ থেকে বিরত হও! আর আল্লাহর পক্ষ থেকে এই মাসে জাহান্নাম থেকে বহু লোককে মুক্তি দেয়া হয়।
( সুনানুত তিরমিজি: ৬৮২: সুনানু ইবনে মাজাহ: ১৬৪২)
প্রিয় ভাই! আমাদের সর্বাত্রক চেষ্টা করে যেতে হবে আল্লাহর সৌভাগ্যবান মুক্তিপাত্ত বান্দাদের তালিকায় আল্লাহ যেন আমাদের নামটি অন্তর ভোক্ত করেন করেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দিন আমিন, ইয়া রব্বাল আলামিন।
মুসলিম উম্মাহর জীবনে প্রতি বছর রমাদান আসে। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে, দূর্ভীক্ষ মহামারি আর বিপর্যয়ে এই কঠিন সময়ে যথারিতি আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র মাহে রমাদান কষ্ট ও পেরেশানির এই দূর্দিনে রমাদান নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য আল্লাহ রব্বুল আলামিনের এক বড় নিয়ামত।
প্রিয় ভাই! মুমিনের জীবনে রমাদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এই মাসেই সে তার পুরো বছরের পুঁজি সংগ্রহ করে, অতিতের সব গুণাহ থেকে তাওবা করে নতুন করে জীবন শুরু করার শপথ গ্রহণ করে, তাই খুব সর্তকতার সাথে হিসেব করে পরিকল্পনা মাফিক এই মাস অতিবাহিত না করতে পারলে কাঙ্খিত সাফল্য অর্জন করা যায় না উপকৃত হওয়া যায় না রমাদানের আসমানি বরকত থেকে।
মুসলিম ভাইয়েরা! রমাদানের চব্বিশ ঘন্টা কিভাবে কাটাবেন এই নিয়ে আজ আমরা সংক্ষেপে কিছু আলোচনা করব। রাতে তারাবি আদায় করে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ুন অনর্থক গল্পগুজব করে সময় নষ্ট করবেন না, দিনে ঘুমানোর চেয়ে রাতে ঘুমানো আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অধিক উপকারি আর এতে আপনার সময়ের প্রচুর সাশ্রয়ী হবে।
শেষ রাতে সেহেরী খাওয়ার জন্য একটু আগেভাগে উঠে পড়ুন, যাতে দু'চার রাকাত তাহাজ্জুদ আদায় করা যায়, জাগতে না পারার আশষ্কা না থাকলে প্রয়োজনে এলাম সেট করে রাখুন, তাহাজ্জুদ আদায়ের পর আল্লাহর দরবারে প্রাণ ভরে দোয়া করুন, নিজের জন্য পরিবারের জন্য এবং সর্বপরি মুসলিম উম্মাহ সর্বঙ্গীণ কল্যাণ ও সাফ্যলের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন, আপনার অতীত জীবনের গুণাহ সরণ করে কাদোঁন অশ্রু ঝরান রোনাজানি করুন। সুনানে তিরমিযিতে বর্ণিত একটি সহিহ হাদিসে এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
عَيْنَانِ لَاتَمَسُّهُمَا النَّارُ ٭ عَيْنُ بَكَتْ مِنْ خَشْيَةِ الله٭ وَعَيْنُ بَاتَتْ تَحْرُسُ فِي سَبِيلِ اللهِ
" জাহান্নামের আগুন দুটি চোখকে স্পর্শ করবে না - যে চোখ আল্লাহর ভয়ে কাঁদে এবং যে চোখ আল্লাহর রাস্তায় পাহারা দিয়ে নির্ঘুম রাত যাপন করে। ( সুনানুত তিরমিজি: ১৬৩৯)
সাহারি দেরিকরে খাওয়া সুন্নাহ তাই আগেভাগে সেহেরি না খেয়ে শেষ সময়ে খাবেন। সাবধান! সাহারি খাওয়ার পর কখনো বিছানায় শুবেন না এতে আপনার চোখে ঘুম নেমে আসতে পারে এতে ফজরের সালাত কাজা হয়ে যেতে পারে। রমাদানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হল পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতের সঙ্গে মসজিদে আদায় করা, খিয়াল রাখবেন রমাদানের পুরো মাসে এক ওয়াক্ত সালাতের জামাআত যেন আপনার ছুটে না যায়। যদি এই মাসে জামাআতে সালাতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেন তবে এটাই হবে রমাদানের আপনার সবচেয়ে বড় অর্জন।
করোনা পরিস্থিতির কারনে যদি মসজিদে সালাত আদায় না করেত পারেন তবে অন্তত বাসায় হলে জামাত করার চেষ্টা করুন, ফজরের সালাত পরে সাথে সাথে না ঘুমানো ভালো সময়টি অনেক বরকতপূর্ণ এই সময় আপনি সকালের আজকার আদায় করতে পারেন, কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেন, দ্বীনি কিতাবাদি অধ্যায়ন করতে পারেন একেবারে ইশরাকের সালাত আদায় করে ঘুমাতে পারলে ভালো, ইশরাকের পর এলাম সেট করে ঘুমিয়ে পড়ুন। রাত আর দিন মিলিয়ে ৭-৮ ঘন্টার বেশি ঘুমানোর দরকার নেই। রমাদানের প্রতিটি মূহুর্তই খুবই মূল্যবান, তাই প্রতিটি সেকেন্ড থেকে উপকৃত হওয়ার চেষ্টা করুন। রমাদানের অত্যান্ত মৌলিক আমল হল তিলাওয়াত, রমাদানে পুরো কুরআন অন্তত একবার হলেও খতম করার চেষ্টা করুন প্রতিদিন নিয়ম করে একপাড়া তিলাওয়াত করুন, কোন কোন সময় তিলাওয়াত করবেন তার জন্য একটা সময় নির্ধারণ করে নিন।
অনেক ভাই আছেন এখনো তিলাওয়াত করতে পারেন না, এটি দ্বীনের প্রতি অনেক বড় অবহেলা রমাদান তাদের জন্য অনেক বড় একটি সুযোগ কোনো উস্তাদ ধরে এই রমাদানে কুরআন শিখে নিন প্রথমিক ভাবে অন্ত্যত চারটি সূরা বিশুদ্ধ উচ্চারণে শিখে নিন যাতে সালাত আদায় করতে পারেন। শুধু এক ধরণে ইবাদত করলে একগিয়ামি চলে আসতে পারে তাই সময় গুলোকে বিভিন্ন ধরণে ইবাদতের জন্য ভাগ করে নিন, কিছুক্ষণ তিলাওয়াত করুন, কিছুক্ষণ কুরআন তরজমা ও তাফসির অধ্যায়ন করুন, কিছু সময় দ্বীনি কিতাবাদি পড়ুন, একেবারে বেশি ক্লান্ত হয়েগেলে নির্ভরযোগ্য শায়েখদের লিকচার শুনুন, খিয়াল রাখবেন রমাদানের একটি মূহুর্ত যেন অনর্থক বরবাদ না হয়।
সম্ভব হলে রমাদান উপলক্ষ্যে ইন্টারনেট থেকে একেবারেই বিদায় নিন, ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদির প্রতি আসক্তি আপনার রমাদানকে বরবাদ করে দেওয়ার জন্য যতেষ্ট, আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে হিফাজত করুন।
জবানের হিফাজত করুন মিথ্যা, পরনিন্দা, গিবত, চোগলখোরির মত জগন্ন গুনাহ থেকে নিজেকে দূরে রাখুন এসবের কারণে আপনি রোজার সওয়াব থেকে বঞ্ছিত হবেন সহিহ বুখারিতে এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالعَمَلَ بِهِ٭ فَلَيسَ للهِ حَاجَةُ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ
" যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহ কোনো প্রয়োজন নেই। (সহিহুল বুখারি: ১৯০৩)
রমাদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হল সাদাকা, অাশপাশের গরীব মিসকিনদের খোঁজ খবর নিন ,তাদেরকে সাধ্যমত সাহায্য করুন তারা যেন সুন্দর ভাবে রমাদানের রোজাগুলো আদায় করতে পারে সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে এসেছে হযরত আব্বাস রাযিঅাল্লাহু আনহু বলেন,
كَانَ رَسُولُ اللهِﷺ أَجْوَدَالنَّاسِ٭ وَكَانَ أَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ
" রাসূলুল্লাহﷺ ছিলেন সর্বাধিক দানশীল। রামাদান মাসে তার দানশীলতা অন্যান্য মাসের চেয়ে বেড়ে যেত।( সহিহুল বুখারি: ৬ :সহিহুল মুসলিম: ২৩০৮)
আসরের পরের সময়টি দোয়া তিলাওয়াত ও আজকার আদায় করে কাঁটান, ইফতার প্রস্তুতিতে অংশ নিতে পারেন ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে নিন, ইফতার দেরি না করা সুন্নাহ, ইফতার এত বেশি দীর্ঘ করবেন না যাতে মাগরিবের সালাত কাজা হয়ে যায়, মাগরিবের সালাতের পর পরিবারের লোকদের সঙ্গে দ্বীনি আলোচনা করতে পারেন রিয়াজুস সালেহীন ইত্যাদির মত কোনো কিতাব থেকে তালিম করতে পারেন, বা অন্য কোনো ইবাদত করতে পারেন তারপর যথারিতি ইশার সালাত ও তারাবি আদায় করুন। খিয়াল রাখবেন পুরো রমাদানে একদিনও যেন তারাবি মিস না হয় তারাবির পর দ্রুত ঘুমিয়ে পরোন যাতে শেষ রাতে দ্রুত জেগে উঠতে পারেন।
রমাদানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হল তাওবা ও ইস্তেগফার তাই রমাদান জুড়েই আপনার চিন্তা থাকবে কিভাবে অতীতের গুণাহগুলো সম্পূর্ণভাবে মাফ করানো যায়। রমাদান পেয়েও যে নিজের গুণাহ মাফ করাতে পারলনা তার ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম বদ দোয়া করছেন তাই আমাদের খুবই সর্তক থাকতে হবে।
প্রিয় ভাই! উল্লেখিত নিতিমালার আলোকে আপনি নিজের জন্য চব্বিশ ঘন্টার এটি রুটিন তৈরি করে নিন, এই মাসে আল্লাহ রব্বুল আলামিন অনেক মুমিনকে ক্ষমা করে দিবেন সুনানে তিরমিযিতে বর্ণিত একটি সহিহ হাদিসে এসেছে রমাদানের প্রথম রাত যখন শুরুহয় আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন ঘোষক ঘোষনা করেন,
يَا بَاغِيَ الخَيْرِ أَقْبِلْ٭ وَيَا بَاغِيَ اشَّرِّ أَقْصِرْ٭ وَلِلّهِ عُتَقَاءُ مِنَالنَّارِ
"হে কল্যাণ প্রত্যাশী! কল্যাণের দিকে অগ্রসর হও! হে গুনাহের ইচ্ছা পোষণকারী! গুনাহ থেকে বিরত হও! আর আল্লাহর পক্ষ থেকে এই মাসে জাহান্নাম থেকে বহু লোককে মুক্তি দেয়া হয়।
( সুনানুত তিরমিজি: ৬৮২: সুনানু ইবনে মাজাহ: ১৬৪২)
প্রিয় ভাই! আমাদের সর্বাত্রক চেষ্টা করে যেতে হবে আল্লাহর সৌভাগ্যবান মুক্তিপাত্ত বান্দাদের তালিকায় আল্লাহ যেন আমাদের নামটি অন্তর ভোক্ত করেন করেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দিন আমিন, ইয়া রব্বাল আলামিন।
Comment