আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের নায়েবে আমীর ও দুই সাথীর শাহাদাত সম্পর্কে বিবৃতি
আল-কায়েদা সমর্থিত কাশ্মীরভিত্তিক সবচেয়ে জনপ্রিয় জিহাদী তানযিম “আনসার গাজওয়াতুল হিন্দ” এর নায়েবে আমীর (ডিপুটি) শহিদ শাইখ বুরহান কোকা ওরফে আবু বকর শোপিয়ানী রহিমাহুল্লাহ্ তাঁর জিহাদী সফরের প্রিয় দুই সাথীসহ গত ২৮-২৯ এপ্রিল উগ্র হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় মুশরিক সৈন্যদের সাথে বীরত্বপূর্ণ তীব্র এক লড়াইয়ে শাহাদাতবরণ করেছেন।
তাদের গৌরবময় শাহাদাত উপলক্ষ্যে মুসলিম উম্মাহর প্রতি সুসংবাদ জানিয়ে একটি নতুন বার্তা প্রকাশ করেছে “আনসার গাজওয়াতুল হিন্দ”। বার্তাটি আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের অফিসিয়াল “আল হুর মিডিয়া” থেকে গত ৩০শে এপ্রিল প্রচার করা হয়। বাংলাভাষী মুসলিমদের খেদমতে উক্ত বার্তাটির বাংলা অনুবাদ নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো।
তাদের গৌরবময় শাহাদাত উপলক্ষ্যে মুসলিম উম্মাহর প্রতি সুসংবাদ জানিয়ে একটি নতুন বার্তা প্রকাশ করেছে “আনসার গাজওয়াতুল হিন্দ”। বার্তাটি আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের অফিসিয়াল “আল হুর মিডিয়া” থেকে গত ৩০শে এপ্রিল প্রচার করা হয়। বাংলাভাষী মুসলিমদের খেদমতে উক্ত বার্তাটির বাংলা অনুবাদ নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো।
অনুবাদ:
بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
إِذْ تُصْعِدُونَ وَلَا تَلْوُونَ عَلَىٰ أَحَدٍ وَالرَّسُولُ يَدْعُوكُمْ فِي أُخْرَاكُمْ فَأَثَابَكُمْ غَمًّا بِغَمٍّ لِّكَيْلَا تَحْزَنُوا عَلَىٰ مَا فَاتَكُمْ وَلَا مَا أَصَابَكُمْ ۗ وَاللَّـهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ.
অতঃপর তোমাদের উপর এলো শোকের উপর শোক, যাতে করে তোমরা হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়া বস্তুর জন্য দুঃখ না করো এবং যার সম্মুখীন হচ্ছো সেজন্য বিমর্ষ না হও। আর আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের কাজের ব্যাপারে অবহিত আছেন। (সূরা আল-ইমরান, আয়াত: ১৫৩)
আমরা পুরো উম্মাহ, বৈশ্বিক জিহাদী নেতৃবৃন্দ, ইসলামী কাশ্মীর ও উপমহাদেশ, বিশেষত আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের সম্মানিত নেতৃবৃন্দ, মুজাহিদ, আনসার ও হিতাকাঙ্খীদের, তানযিমের নায়েবে আমীর দায়ী মুজাহিদ ফি সাবিলিল্লাহ কমান্ডার আবু বকর শোপিয়ানী (তাকাব্বালাল্লাহু তা’আলা) এর গৌরবময় শাহাদাতের বিষয়ে মুবারকবাদ জানাচ্ছি।
গত বছর রমজান মাসে শহিদ জাকির মূসা রহিমাহুল্লাহ্ এর শাহাদাতের পর চলতি বছরের পবিত্র এই রমজান মাসে আমাদের নায়েবে আমীরের শাহাদাতের এই ধারাবাহিকতা বদরের সাথে আমাদের সম্পর্কের উপমা প্রদান করছে।
৪ রমজানুল মোবারক ১৪৪১ হিজরী মুতাবেক ২৮ এপ্রিল ২০২০ ঈসায়ী কয়েক হাজার ভারতীয় মুশরিক সৈন্য ভারী যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে শোপিয়ান জেলার মেলহুরা গ্রামে মুজাহিদদের একটি ঘাঁটি অবরোধ করে।এতে সেখানে আটকা পড়েন শহিদ কমান্ডার আবু বকর শোপিয়ানী রহিমাহুল্লাহ্সহ তাঁর ২ জন প্রিয় মুজাহিদ সাথী ভাই। তাঁদের মধ্যে কেবল একজনের কাছেই একটি মাত্র পিস্তল ছিল। কাআ’কা ও মুসান্না রাদিয়াল্লাহু আনহুর সুযোগ্য উত্তরসূরী উম্মাহর এই তিন নওজোয়ান একদিন বিকাল চারটা হতে পরের দিন দ্বিপ্রহর ১১ টা পর্যন্ত যেভাবে কয়েক হাজার অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্রে সজ্জিত ভারতীয় নাপাক মুশরিক বাহিনীর সাথে সাহসীকতার সাথে লড়াই করেছেন, এর জন্য আমরা শুধু মহান রবের প্রশংসাই বর্ণনা করছি।
শহিদ কমান্ডার আবু বকর শোপিয়ানী রহিমাহুল্লাহ্ এর ডাকনাম ছিল বুরহান কোকা, তিনি ছিলেন শহিদদের ভূমি শোপিয়ান জেলার অন্তর্গত মেলহুরা গ্রামের অধিবাসী। আর এই ভূমিতেই মহান রাব্বুল আলামীন তাঁকে শাহাদাতের সৌভাগ্য দান করেন।
শহিদ জাকির মুসা রহিমাহুল্লাহ্ এর নেতৃত্বেই কমান্ডার আবু বকর শোপিয়ানী রহিমাহুল্লাহ্ তাঁর জিহাদী সফর শুরু করেন। তিনি এক মুশরিক সৈন্যের রাইফেল ছিনিয়ে এনে মুজাহিদদের কাতারে যুক্ত হয়েছিলেন। তানযিমের দ্বিতীয় আমীর শাইখ আব্বাস রহিমাহুল্লাহ্ এর শাহাদাতের পর তানযিমের শূরা সদস্যগণ তাঁকে নায়েবে আমীর হিসাবে নির্বাচিত করেন। এরপর তিনি শুধু কাশ্মীরেই নয় বরং ভারতীয় উপমহাদেশে শরিয়াত ও শাহাদাতের মানহাযকে সমুন্নত করতে মুজাহিদ ভাইদেরকে দিকনির্দেশনা দেন; যা ছিল তাঁর অতুলনীয় খেদমতের বহিঃপ্রকাশ। তিনি কাশ্মীর ও উপমহাদেশের এই জিহাদকে বৈশ্বিক জিহাদী নেতৃবৃন্দদের সাথে সম্পর্ক রেখে তাঁকে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের আদলে রুপান্তর করতে জান-প্রাণ চেষ্টা শুরু করেন।
আমরা মহান রব্বুল আলামীনকে স্বাক্ষী রেখে এই অঙ্গীকার করছি যে, আমরা আপনার কর্মপন্থা ও মানহায থেকে এক পা’ও পিছু হটে বসে পড়বোনা, যতক্ষণ না আমরা হিন্দের শাসকদেরকে লোহার শিকল দ্বারা বন্দী করবো।
তাঁর সাথে শাহাদাতবরণকারী উমার ভাইয়ের ডাকনাম ছিল বেলাল আহমাদ খান, তিনি পুলওয়ামার অধিবাসী ছিলেন, তিনিও শহিদ জাকির মুসা রহিমাহুল্লাহ্ এর নেতৃত্বে জিহাদী সফর শুরু করেন। তিনি অধিক পরিমাণ আমলকারী ও উসূলের প্রতি যত্নবান ছিলেন। তিনি তাঁর ইলমকে আমলে পরিণত করেছেন এবং নিজ রবের জান্নাতে নিজের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। (আমরা এমনটাই ধারণা করি)।
শহিদ হওয়া তৃতীয় মুজাহিদ ভাই আম্মার রহিমাহুল্লাহ্-এর ডাকনাম ছিল নাছির আহমাদ বাট। তাঁর কাছে থাকা একটি পিস্তল দিয়েই মুজাহিদগণ মুশরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে থাকেন এবং ভারতীয় এক মুশরিক সৈন্য হতে অন্য একটি অস্ত্র ছিনিয়ে এনে তা দিয়ে তীব্র লড়াই শুরু করেন। যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত গনিমত প্রাপ্ত অস্ত্রটি দ্বারা তাঁরা লড়াই চালিয়ে যান। আল্লাহু আকবার কাবিরা। অবশেষে তিনিও শাহাদাতের সৌভাগ্য লাভে ধন্য হন।
এর কয়েকদিন পূর্বে একই এলাকায় আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের দুজন কমান্ডারসহ ৪ জন মুজাহিদ শাহাদাতবরণ করেন। এখন তানযিমের নায়েবে আমীরসহ তাঁর ২ সাথীর শাহাদাত যেমন চিন্তা ও পেরেশানির কারণ, তেমনি কাশ্মীর ও উপমহাদেশের জন্য সুসংবাদ বহনকারীও। বিইযনিল্লাহ্ ভারতীয় মুশরিকদের সাথে এই বরকতময়ী অভিযান একটি সূচনামাত্র, যা ইতিপূর্বে বৈশ্বিক ক্রুসেডার জোট বাহিনীর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিলো। তো এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভারতীয় মুশরিকরা কি ক্রুসেডার আমেরিকা ও তার মিত্রদের থেকে অধিক শক্তিশালী..!? কখনোই না।
ওহে ভারতীয় মুশরিক হিন্দুরা! একটু ভাবো তো…, মহান রবের বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি কে রাখে?
উপত্যকায় আমাদের মুজাহিদ ও উমারাদের শাহাদাত ও বিভিন্ন লড়াইয়ের ঘটনার পর মুশরিক নেতাদের মিথ্যা দাবীর মুখোশ আজ জনসম্মুখে উন্মোচিত হচ্ছে; তারা বলে আসছে যে, কাশ্মীর হতে আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের নাম নিশানা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আল্লাহ তা’আলা তাঁর মু’মিন বান্দাদের সম্পর্কে বলেন,
مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّـهَ عَلَيْهِ ۖ فَمِنْهُم مَّن قَضَىٰ نَحْبَهُ وَمِنْهُم مَّن يَنتَظِرُ ۖ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا.
“তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।” (সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ২৩)
২০২০ ঈসায়ীর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের মুজাহিদদের শাহাদাতের জাদওয়াল প্রত্যেক জ্ঞান সম্পূর্ণ লোকদের এটা বুঝাতে যথেষ্ট যে, শরিয়াত ও শাহাদাতের মানহায প্রতিষ্ঠাকারী মুজাহিদীন মহান আল্লাহ তা’আলার সাহায্যে উপত্যকা ও হিন্দের মুজাহিদদের মধ্যে সবচাইতে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। আলহামদুলিল্লাহ্।
আর ২২ এপ্রিলও নতুন এই যুদ্ধে অস্ত্র ও সংখ্যার স্বল্পতা সত্যেও ১০ হাজারের ভারতীয় বিশাল মুশরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে এতো দীর্ঘ সময় যাবৎ লড়াই চালিয়ে যাওয়া…! আলহামদুলিল্লাহ, এটাও মুজাহিদ আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের বীরত্বেরই মুকুট।
এই পরিস্থিতিতে আমরা উম্মতে মুসলিমা এবং ঐসকল নওজোয়ানদের স্বরণ করছি, যারা নিজেদের মূল্যবান জীবন বাজি রেখে ভারতীয় মুশরিক বাহিনীর চোখে চোখ রেখে প্রতিবাদ করছেন। এসময় মুশরিক সৈন্যদের আঘাতে আহত মুসলিম পুরুষ ও মহিলাদের জন্য মহান রবের দরবারে অতি দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আর আমরা এই দো’আ করছি যে, হে আল্লাহ! আপনি তাঁদের এই কাজকে কবুল করে নিন এবং এটাকে তাদের নাজাতের উসিলা বানান।
আমরা কাশ্মীরী মুসলিম ও মুজাহিদদের এই বার্তা দিচ্ছি যে, আল্লাহর কসম! আপনারা এই পথে দৃঢ় থাকুন এবং আপনাদের মুজাহিদ সন্তানদের হাতকে মজবুত করুন, নিশ্চয়ই আল্লাহ আপনাদের এই কুরবানিকে বিফল করবেন না। এখন প্রত্যেক মুশরিক হিন্দুদের শত্রুতা ঐসকল লোকদের সাথে, যারা কোনো দেশের নিয়মনীতির নিকট মাথা নত করেনি, যারা আল্লাহ তা’আলার বিধানের পরিবর্তে কোনো গাইরুল্লাহের বিধানে সন্তুষ্ট নয়। আমরা দো’আ করি আল্লাহ তায়ালা আনসার গাজওয়াতুল হিন্দর মুজাহিদদেরকে সঠিক মানহাযের উপর দৃঢ় রাখুন। আমীন।
আমরা ভারতীয় উপমহাদেশ ও বৈশ্বিক জিহাদের নেতৃবৃন্দকেও এই কথা বলতে চাই যে, হে আমাদের প্রিয় ও সম্মানিত উমারাগণ! আপনারা ভরসা রাখুন এবং নিশ্চিন্ত থাকুন, কাশ্মীর ও হিন্দে আপনার অনুগত সৈনিকগণ মহান আল্লাহ্ তা’আলার সাথে করা তাদের অঙ্গীকারে দৃঢ় রয়েছেন, তাঁরা কোনো নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করেন না, বিনা দ্বিধায় আপনাদের মূল্যবান নির্দেশনা পরিপূর্ণরূপে বাস্তবায়ন ও মেনে চলা হবে, আল্লাহর কসম তা পরিপূর্ণ করা হবে ইনশাআল্লাহ। আপনারা দো’আর মাধ্যমে আমাদেরকে সাহায্য করবেন, আপনাদের মূল্যবান দিকনির্দেশনা আমাদের জন্য পরম সৌভাগ্যের বিষয়। জম্মু-কাশ্মীর বিষয়ে মুহসীনে উম্মত শাইখ ওসামা রহিমাহুল্লাহ্ এর স্বপ্নের বিশ্লেষণ বর্তমান অবস্থায় বিদ্যমান রয়েছে, ইনশাআল্লাহ।
সর্বশেষ আমাদের শত্রু মুশরিক হিন্দুদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই,
قُلْ هَلْ تَرَبَّصُونَ بِنَا إِلَّا إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ ۖ وَنَحْنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمْ أَن يُصِيبَكُمُ اللَّـهُ بِعَذَابٍ مِّنْ عِندِهِ أَوْ بِأَيْدِينَا ۖ فَتَرَبَّصُوا إِنَّا مَعَكُم مُّتَرَبِّصُونَ.
“আপনি বলুন, তোমরা তো তোমাদের জন্য দুটি কল্যাণের একটি প্রত্যাশা কর; আর আমরা প্রত্যাশায় আছি তোমাদের জন্য যে, আল্লাহ তোমাদের শাস্তি দিন নিজের পক্ষ হতে নয়তো আমাদের হস্তে।” (সূরা আত-তাওবা, আয়াত: ৫২)
----------------------------------------------------------------
Comment