শাইখ আবু মুসয়াব আব্দুল ওয়াদুদ রাহিমাহুল্লাহর শাহাদাত উপলক্ষ্যে নতুন একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করেছে আল-কায়েদা।
বৈশ্বিক ইসলামী প্রতিরোধ সংগঠন আল-কায়েদা ইসলামিক মাগরিবের আমীর শাইখ আবু মুসয়াব আব্দুল ওয়াদুদ রাহিমাহুল্লাহর শাহাদাত উপলক্ষ্যে গত ১৮ জুন, দীর্ঘ ১১ মিনিটের নতুন একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করেছে আল-কায়েদা ইসলামিক মাগরিব।
আল-কায়েদা ইসলামিক মাগরিব শাখার অফিসিয়াল “আল-আন্দুলুস” মিডিয়া ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত উক্ত ১১ মিনিটের অডিও বার্তাটিতে শাইখ আবু মুস’আব আব্দুল ওয়াদুদ রহিমাহুল্লাহ্ এর শাহাদাতের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষনা করা ছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন শাইখ “আবু আব্দুল ইলাহ্ আহমাদ” হাফিজাহুল্লাহ্।
বাংলাভাষী মুসলিম ভাই-বোনদের সুবিধার্থে মূল আলোচনার অনুবাদ তুলে ধরছি..
বৈশ্বিক ইসলামী প্রতিরোধ সংগঠন আল-কায়েদা ইসলামিক মাগরিবের আমীর শাইখ আবু মুসয়াব আব্দুল ওয়াদুদ রাহিমাহুল্লাহর শাহাদাত উপলক্ষ্যে গত ১৮ জুন, দীর্ঘ ১১ মিনিটের নতুন একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করেছে আল-কায়েদা ইসলামিক মাগরিব।
আল-কায়েদা ইসলামিক মাগরিব শাখার অফিসিয়াল “আল-আন্দুলুস” মিডিয়া ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত উক্ত ১১ মিনিটের অডিও বার্তাটিতে শাইখ আবু মুস’আব আব্দুল ওয়াদুদ রহিমাহুল্লাহ্ এর শাহাদাতের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষনা করা ছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন শাইখ “আবু আব্দুল ইলাহ্ আহমাদ” হাফিজাহুল্লাহ্।
বাংলাভাষী মুসলিম ভাই-বোনদের সুবিধার্থে মূল আলোচনার অনুবাদ তুলে ধরছি..
অনুবাদ: আল্লাহ তায়ালা আমাদের থেকে সদ্য বিদায়ী নেয়া আল-কায়েদা ইসলামিক মাগরিবের সম্মানিত আমীর শাইখ আবু মুসয়াব আব্দুল ওয়াদুদ রাহিমাহুল্লাহর প্রতিদান বৃদ্ধি করুন। উনার ২৭ বছরের দীর্ঘ জিহাদী জীবনের উত্তম সমাপ্তি হয়েছে ইনশাআল্লাহ। এই সময়ে তিনি কখনো বিশ্রাম বা অস্ত্র রেখে দেন নি, যতক্ষণ না উনি তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে গেছেন এবং বান্দা ও রবের মাঝে মহামূল্যবান চুক্তির পন্য পেশ করেছেন। যেমনটা আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন। আমরা এমনটাই ধারণা করি।
আমাদের এই বীর মুজাহিদ শাইখ, নব্বইয়ের দশকে দুর্ভাগ্যজনক অভ্যুত্থানের পর জিহাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তিনি নিজ জ্ঞানকে জিহাদের খেদমতে ব্যয় করতে বুলাইদাহ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়নকালে ছাত্রজীবনের ইতি টেনে জিহাদী জামাতের সাথে জড়িত হয়ে যান। যাতে করে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং ও কারগরি ক্ষেত্রে মুজাহিদদের সহায়তা করতে পারেন। পূর্বের আমীর মুস্তাফা রাহিঃ শাহাদাতের পর তিনি নিজ সাথীদের মাঝে নেতৃত্বের সিঁড়ি পাড়ি দিয়ে ২০০৪ সালে “জামায়াতু সালাফিয়্যাহ ওয়াল ইকতিসাদী” এর আমীর নিযুক্ত হন।
অতঃপর এই জামা’আত ২০০৬ সালে আল কায়েদা ইসলামিক মাগরিব এর সাথে মিলিত হওয়ার পর শহিদ শাইখ উসামা বিন লাদের রাহিঃ এর অধীনে মাগরেবের আল কায়দা শাখার আমির নিযুক্ত হন। অতঃপর শাইখ আইমান জাওয়াহীরী হাফিজাহুল্লাহ এর অধীনে ২০১১ সালে তিনি নিজ বায়’আহকে নবায়ন করেন। তাঁর স্লোগান ছিলো আমরা কখনো আত্মসমর্পণ করবো না, আমরা “হয়তো বিজয়ী হবো নয়তো শহীদ হবো”।
এই বিশাল দুঃখের মাঝেই আমরা আপনাদের সামনে কয়েকটি বার্তা দিতে চাইঃ-
আমাদের প্রথম বার্তা হচ্ছে ক্রুসেডার সেনাদের প্রতি, তোমরা জেনে রাখো, আমাদের এই যুদ্ধ কেবল শুরু হয়েছে মাত্র। কিছু ভাই এবং কমান্ডারদের শাহাদাতে আমাদের এই মহান জিহাদের গতিপথ পরিবর্তিত হবে না, যতদিন না ক্রুসেডারদের সর্বশেষ সেনা সমগ্র আফ্রিকান অঞ্চল থেকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। আর তোমরা এখন বাস্তব ক্ষেত্রে তা দেখছো, এই অঞ্চলের সমস্ত জনগণ মুজাহিদদের ইচ্ছার সাথে একাত্মতা পোষণ করেছে এবং তোমাদেরকে বের করে দেয়ার জন্য ঐক্য বদ্ধ হচ্ছে। আল্লাহর শুকরিয়া, তোমরা নিজেরাও পরিমান ও আয়তনের দিক থেকে জিহাদের ফলাফলের কথা স্বীকার করছো তোমাদের মিথ্যাবাদী মিডিয়াগুলো থেকেই। ইতিহাসের সর্বযুগেই দখলদারদের ধ্বংসাত্মক পরিনতি হয়েছে, সময় যতই দীর্ঘ হোক না কেন। কিন্তু লোভ ও চাহিদা তোমাদের অন্ধ করে রেখেছে। জালেমরা অতি শীঘ্রই জেনে যাবে তাদের শেষ পরিণতি কোথায় নিয়ে যায়।
দ্বিতীয় বার্তা হচ্ছে, এই অঞ্চলের মুরতাদ ও গাদ্দার শাসকদের প্রতি,
তোমরা যারা নিজেদের দ্বীনকে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে দিয়েছো তোমরা দেখতে পাচ্ছো জাতিসংঘ তোমাদেরকে মুজাহিদদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারছে না, যতই অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হোক না কেন। তোমাদের জাতি তোমাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার পবিত্র সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছে, তোমাদের ক্রুসেডার প্রভুদের আনুগত্যের বিরুদ্ধাচারণ করে রুখে দাঁড়িয়েছে। তাই আহ্বান করি তোমরাও সময় শেষ হয়ে যাওয়ার আগে সত্য পথে ফিরে আসো এবং হকদারকে তাদের আমানত পৌঁছে দাও। নয়তো তোমাদের পরিনতি হবে গাদ্দাফি, বেন আলী এবং হাফতারের পরিণতির মতই। কেননা এই ব্যর্থ কাফেরদের গোলাম প্রশাসনের সময় শেষ হয়ে এসেছে।
তৃতীয় ব্যর্থতা হচ্ছে পুরা মুসলিম বিশ্বের যুবকদের প্রতি এবং বিশেষভাবে ইসলামিক মাগরিবের যুবকদের প্রতি এবং ভার্সিটিতে অধ্যায়নরত যুবকদের প্রতি, হে উম্মাহর যুবকেরা! শহিদ শাইখ আবু মুসয়াব আব্দুল ওয়াদুদ রাহিমাহুল্লাহ হচ্ছেন তোমাদের সামনে এক জীবন্ত উদাহরণ। ভার্সিটিতে অধ্যায়নরত এই যুবকের পক্ষে সম্ভব ছিলো মাথাকে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা এবং দখলদারিত্বের ঝড়ের সামনে মাথা নত করার, যাতে তার ডিগ্রী শেষ করতে পারেন। অতঃপর আলেযাজায়ের ছেড়ে আরো বড় ডিগ্রির জন্যে বড় কোন নামকরা ভার্সিটিতে যেতে পারতেন এবং ভোগবাদী জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতে পারতেন। যা তাকে এই যুদ্ধ ও লড়াইয়ের পরিবেশ থেকে অনেক দূরে সরিয়ে রাখতে পারতো, যেখানে কোন হত্যা-নির্যাতন বা গ্রেপ্তারি নেই এবং যেখানে প্রিয়জনরা দূরে সরে যায় না। কিন্তু মহান হৃদয়ের অধিকারীদের অবস্থা এমন নয়।
যেমনটা কবি বলেছেনঃ “যখন কারোর হৃদয় অনেক বড় হয় তখন তার ইচ্ছা পূরণ করে শরীর অনেক ক্লান্ত হয়ে যায়”।
তাই আমাদের এই বীর ভোগের পরিবর্তে ত্যাগের পথ অনুসরণ করেছেন, যে পথে চলেছেন আমাদের পূর্ববর্তী সালাফগণ । যখনই উম্মাহর সম্মান বিনষ্ট হয়েছে; তখনই জিহাদ ও শাহাদাতের পথে উম্মাহর হারানো গৌরব ফিরিয়ে এনেছেন। এই পথের পথিকরা শত্রুদের পক্ষ থেকে সবচেয়ে বেশি আক্রমণের শিকার হয়েছেন। কারণ তারা এই পথের ফলাফল খুব ভালোভাবেই বুঝে এবং তারা জানে একজন মুসলিম যখন হেদায়াত প্রদর্শনকারী কিতাব ও বিজয় আনয়নকারী তরবারি আঁকড়ে ধরে তখন কতটা বড় হয়ে উঠে। তিনি আখেরাতের প্রতি আগ্রহী এই দুনিয়ার ব্যাপারে বিমুখ ছিলেন।
তাই হে যুবক ভাইয়েরা! জিহাদ ও শাহাদাতের পথে এগিয়ে আসুন এবং সেই জান্নাতের দিকে অগ্রসর হোন, যার প্রশস্ততা আকাশ জমিন থেকেও বেশি।
চতুর্থ বার্তা আল জাযায়ের, বুর্কিনা ফাসো, মালি, তিউনিসিয়া ও নাইজেরিয়ার মুসলিমদের প্রতি, আপনাদের সেই আমিরের অধীনস্থ অঞ্চলে আল্লাহ তাআলা আপনাদের প্রতিদান বৃদ্ধি করুন যার স্লোগান ছিলো; আমরা কখনো আত্মসমর্পণ করবো না, হয়ত বিজয়ী হবো নয়ত শহীদ হবো।
যিনি বলেছিলেন, “ওহে মুরতাদ ক্রুসেডাররা, তোমরা ব্যর্থ হয়েছো এবং তোমাদের চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। আমরা ঘর থেকে বের হওয়ার প্রথম দিন থেকেই দৃঢ়সংকল্প করেছি, কখনোই বিরত হবো না যতক্ষণ না সমস্ত কাফেরদেরকে ধ্বংস করবো। আমি তোমাদের সামনে আবার ঘোষণা করছি, যে ঘোষণা করেছিলো ইসলামী মাগরেবের সিংহ ওমর মুখতার রহিমাহুল্লাহঃ “আমরা কখনো আত্মসমর্পণ করবো না, হয়তো বিজয়ী হবো নয়ত শহীদ হবো” “আমরা কখনো আত্মসমর্পণ করবো না, হয়ত বিজয়ী হবো নয়ত মারা যাব” “আমরা কখনো আত্মসমর্পণ করবো না, হয়তো বিজয়ী হবো নয়তো শহীদ হবো”।
এখন তোমাদের প্রথম কর্তব্য হচ্ছে, বর্তমান প্রজন্মের মুজাহিদদের সাথে মিলে আগ্রাসী ক্রুসেডার ও তাদের সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, যারা রয়েছে পাহাড়ে ও উপত্যকায়, শহরেও মরুভূমিতে। যে জিহাদি জাতি আফ্রিকার পূর্ব থেকে পশ্চিমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, যারা তোমাদেরকে প্রচন্ডভাবে আক্রমণ করে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে দিচ্ছে। যদি আমাদের হাতে বিজয় লেখা থাকে তাহলে এটা দুই প্রতিদানের একটি। আর যদি দ্বিতীয় প্রতিদান লেখা থাকে, তাহলে তোমাদের উপর কর্তব্য হবে পরবর্তী প্রজন্মের সাথে যুদ্ধ করা। তারা এমন প্রজন্ম যাদের সামনে আমাদের রক্ত ও চেতনার মাধ্যমে জিহাদের পথ খুলে দিয়ে যাবো। আমাদের বীরত্ব ও ত্যাগের মাধ্যমে তাদের সামনে জিহাদ ও সম্মান এবং ইসলামের তামকীনের পথকে আলোকোজ্জ্বল করে যাবো।
তাই তোমরা তাঁর পথে চলো এবং সে পথে ধারাবাহিক অটল থাকো। জেনে রাখুন, বিজয় সর্বদা সবরের সাথেই আসে। আল্লাহ তাআলার নিকটবর্তী বিজয়ের সুসংবাদ গ্রহণ করুন, বি ইজনিল্লাহ। (সেদিন মুমিনগণ আনন্দিত হবে। আল্লাহর সাহায্যে।) (শক্তি তো আল্লাহ তাঁর রসূল ও মুমিনদেরই কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না। )
সূত্র: https://alfirdaws.org/2020/06/21/38977/
Comment