আল্লাহর নামে শুরু করছি, যিনি পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু।
সকল প্রশংসা আল্লাহ’র, যিনি ওয়াদা করেছেন এবং তা পরিপূর্ণ করেছন, ওয়াদা করেছেন এবং ক্ষমা করেছেন, এবং সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক সম্মানিত রাসূল, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবিদের উপর……
সম্মানিত ভাই/আযমারাই, আল্লাহ আপনাকে হেফাযত করুন।
আল্লাহর শান্তি,অনুগ্রহ ও রহমত আপনার উপর বর্ষিত হোক। আমি আশা করি আপনি ও আপনার সাথে যারা আছেন তাঁরা সকলেই ভালো আছেন। আল্লাহ যেন আমাদেরকে তাঁর পছন্দনীয় ও সন্তোষজনক বিষয়াদির উপর একত্রিত করেন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে বিজয় দান করেন…..
অতঃপর, গত ১২-ই জুলহিজ্জাতে (কোনো সাল উল্লেখ করা নেই, খুব সম্ভবত ১৯ নভেম্বর ২০১০ হতে পারে) আমি আপনাকে যে চিঠি প্রেরণ করেছিলাম, সেগুলোর উপর এখানে কিছু মতামত ব্যক্ত করছি।
আপনার কাছে আমাদের বন্ধু (NFI) যে চিঠিটি পাঠিয়েছেন তার সম্পর্কে আমার মতামত তুলে ধরছি। আল্লাহর রহমত ও কুদরতে আল-কায়েদার আকার ও আয়তনের পরিবর্ধন বেড়ে যাওয়ার কারণে হয়ত ভাইয়েরা খুব উদ্বিগ্ন এবং এই ভয় থেকেই হয়ত তাঁরা আপনাকে চিঠিটি পাঠিয়েছেন।
উপরন্তু, তাঁরা মনে করেন এই বিশাল তানজিমের ভার বহন করা সহ্যসীমার বাইরে। দল ভারি হওয়ার কারণে তাঁরা মনে করেন তাদের শক্তি সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং আরও অন্যান্য গ্রুপের সাথে নানা সমস্যায় জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। বিশেষত, তাঁরা চান দলের উন্নয়ন হোক এবং দলের ভিত্তি মজবুত হোক। একারণেই, তাঁরা মনে করেন দলের বর্তমান যে অবস্থা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকা এবং দল ভারি না করা। অর্থাৎ, তাঁরা দল বৃদ্ধিকরণে ইচ্ছুক নন।
কিন্তু আমার ভয় হয় যদি বাস্তবিকপক্ষেই তাঁরা এধরনের চিন্তাভাবনা করেন থাকেন তবে পরিবর্তিতে তাঁরা হয়ত আমাদের উপর ছড়ি ঘোরাবার চেষ্টা করবেন। তাঁরা হয়ত আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করবেন যে এমন এমন বলা যাবে না, বা অমুক অমুকের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে, বা অমুক অমুকের সাথে সংযোগ অস্বীকার করতে হবে, বা অমুক অমুকের সাথে সম্পৃক্ততা অস্বীকার করতে হবে…… ইত্যাদি।
কিন্তু, আমি মনে করি আল-কায়েদার জন্য নিজেদের শাখাগুলোর সাথে সম্পর্ক ঘোষণা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে এটি সত্যিকার একটি তথ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এবং এটা অস্বীকার করার মধ্যেও কোনো লাভ নেই। তাই, দয়া করে তাঁদের চাপের কারণে সোমালিয়ার ভাইদের সাথে ঐক্যের ঘোষণা না দেওয়ার ব্যপারে আপনার সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করবেন। পরিবর্তিতে এমন যেন না হয় যে, ভাইদের চাপে আমাদেরকে অন্যান্য় গ্রুপগুলোর সাথেও ঐক্য ভঙ্গ করতে হয়!
এখানে আরেকটি বিষয় আছে। আর সেই বিষয়টি হচ্ছে একটি দলের সাধারণ দিকগুলোর নিয়ন্ত্রণ, যেমনঃ মেম্বারশিপ তথা সদস্য সংগ্রহ এবং বিশেষত (আল কায়েদার সাথে বিভিন্ন দলের বা কোনো ব্যক্তির) সংযুক্তির ব্যপারটি। আমি চাই এই বিষয়টির প্রতি আপনি সতর্কতার সাথে নজর দেন। এটি আপনার কাছে গোপন নয় যে, অতীতে এতে আমাদের অনেক ইতিবাচক দিকের সাথে সাথে অনেক ত্রুটিও ছিলো।
যাইহোক, আমি যে বিষয়ে জোর দিতে চাচ্ছি এই চিঠিতে, তা হলো একক কোনো ব্যক্তির (Individual তথা একজনের) আমাদেরকে আনুগত্যের অংগীকার (বাইয়াত) দেওয়া এবং আমাদের সাথে সংযুক্ত হওয়ার ব্যপারে।
কিন্তু, পুর্বের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, কোনো সম্পূর্ণ দল ও ব্যক্তিবিশেষে (Individual) আনুগত্যের অংগীকার (বাইয়াত) যারা দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে নানা ধরনের ভিন্নতা রয়েছে।
সমস্যা হলো আল-কায়েদা একটি বিশাল ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে যেখানে প্রত্যেকেই অযাচিত অনুপ্রবেশ করে ফেলেন ও তাঁদের আনুগত্য ঘোষণা করে ফেলেন। কিন্তু তিনি এটা দেখেন না যে, তানজিমের পক্ষ থেকে তাকে গ্রহণ করা হয়েছে কিনা! যদিও বাইয়াত হলো চুক্তিকারীদের মধ্যে কৃত একটি চুক্তির মত, তবে উভয় দিক থেকে গ্রহণযোগ্যতা পেলেই তবে তা কার্যকর হবে।
অবশেষে, উন্নত গুণসম্পন্ন, মহান কতক ব্যক্তিত্ব এবং দলের আবির্ভাব ঘটেছে, আমাদের তানজিমে যাদের সংযুক্তি আমাদের জন্য ফায়দাজনক ছিল।
অন্যদিকে এমন কিছু ব্যক্তিত্ব এবং দলের আবির্ভাব ঘটেছে যাদের সম্পৃক্ততা কোনো দলকেই লাভবান করতে পারে নি। তারপরও আল-কায়েদায় যোগদান করায় তাদের মধ্যে একপ্রকার লোক দেখানো দিক প্রকাশ পেয়েছে। তাদের মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বশীলরা নির্দিষ্ট উপাধি যুক্ত করে তা প্রকাশ করেছেন যে, ইনি হলেন অমুক দলের সদস্য, এবং উনি অমুক দায়িত্বে আছেন। এটি আল-কায়েদার নীতি নয়। আল-কায়েদার পথ থেকে এগুলো বিচ্ছিন্ন।
উপরন্তু এটি যদি কোনো আল্লাহ ওয়ালা ব্যক্তির মাধ্যমে হয়ে থাকত, তবে গভীরভাবে এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব থাকত। কিন্তু, যারা গুনে ও মানে এমন পর্যায়ের নয় এমন ব্যক্তিদের থেকে যদি এই ধরণের কার্যকলাপ প্রকাশ পায় তবে আপনার কি ধারণা, এর কী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না?
অবশেষে কিছু কথা না বললেই নয় যে, কিছু ব্যক্তির আবির্ভাব হয়েছে যারা আল-কায়েদার নামে অর্থ সংগ্রহ করছেন এবং আমার মনে হয় আপনি “আল-যায়াত”-এর ভাইদের কথা শুনে থাকবেন (NFI)। তাদের মধ্যে এমন কিছু ভাইয়েরা আছেন যারা বিভিন্ন মাত্রায় অর্থের খিয়ানত করেছেন।
যাইহোক, সম্মানিত ভাই, গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হলো, এই ব্যাপারগুলোকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে। যেমনঃ আল-কায়েদার সদস্য কে? তার দায়িত্ব কি? সে কোন পক্ষকে অনুসরণ করে? তাকে কোন পন্থায় জবাবদিহি করা যায়, যাতে আমরা লোভ-লালসা লালনকারী বন্ধু এবং ধার্মিকতা ও নৈতিকতা লালনকারী বন্ধুদের পৃথক করতে পারি।
যদি এই দূর্বলতাটি, নববী যুগের সন্নিকটে থাকা সত্ত্বেও প্রথম প্রজন্মের লোকদের মধ্যেও অনুপ্রবেশ করতে পারে, তবে আপনি কি মনে করেন না যে এই দূর্বলতা আমাদের মধ্যেও অনুপ্রবেশ করতে পারে?
পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের আমীর, ইসলামের তৃতীয় খলিফা সাইয়্যেদুনা উসমান (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)- উনার নিকটাত্মীয়দের ক্ষমতায় নিয়ে আসা শুরু করলেন এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার ধারাবাহিকতায় উনাকে হত্যা করা হলো। আল্লাহ উনার উপর সন্তুষ্ট হোন। এরপর স্থিতিশীলতা ততক্ষণ পর্যন্ত ছিল যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ চাইলেন।
এরপরে যখন মুসলিমরা নিজেদের আবার সামলিয়ে নিলো এবং “গ্রুপ”-এর বছরে পরিস্থিতি ভালো হতো শুরু করলো তখন আমাদের আমীর, সাইয়্যেদুনা মুয়াউইয়াহ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) সন্তোষজনক ভাবে তাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, ততক্ষণ যাবৎ যতক্ষণ না তিনি উম্মাহ’র দায়ভার নিজের সন্তানের উপর ন্যস্ত করতে ইচ্ছে করলেন। তারপর হোসাইনের (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বিদ্রোহ, তারপর যুবায়েরের পুত্রের (আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বিদ্রোহ। আল্লাহ তাদের উভয়ের প্রতি সন্তুষ্ট হোন। অতঃপর বিদ্রোহ সবদিকে ছড়িয়ে পড়লো, যার প্রভাব আজ অবধি বর্তমান।
যাইহোক সম্মানিত ভাই, আশা করা যায়, আল্লাহর রহমত ও অনুমতিতে, বিজয় নিকটবর্তী। এবং এর ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ এবং দল ত্বড়িৎগতিতে বাইয়াত প্রদানের জন্য ভিড় জমাবেন।
অতএব, দয়া করে এখন থেকে এমন এক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করুন যাতে এর মাধ্যমে পরবর্তিতে এই আপনি মানুষের সাথে আন্তরিকতা, ন্যায়নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের সাথে বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং শরিয়াহর মাধ্যমে লোকদের পরিচালনা করতে পারেন। এটি যারা যারা সৎ ও ধার্মিক তাদের পরস্পরের সাথে ঘনিষ্ঠ করে তুলবে ও তাদের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি করবে।
একটি শেষ ব্যক্তিগত অনুরোধ, যা হলো, আমি আপনার কাছে দুয়ার দরখাস্ত করছি আমার জন্য, এবং আমার পরিবারের দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যানের জন্য এবং উত্তম উত্তরসূরী লাভের জন্য।
অবশেষে আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন আপনাকে,আমাদেরকে এবং সকল মুসলমানদের সর্বপ্রকার বিপদ-আপদ থেকে হেফাযত করেন।
আমি আপনাকে আল্লাহর জিম্মায় রাখলাম, যার আমানত কক্ষনো বিনষ্ট হয় না।
দয়া করে পড়া শেষ হলে চিঠিটা ধ্বংস করে দিবেন, এবং আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।
সালাম
আপনার প্রিয় ভাই
০৬-ই মুহররম (বিঃদ্রঃ কোনো সাল দেয়া নেই। সম্ভবত খুব সাম্প্রতিক ১৩ ডিসেম্বর ২০১০ হতে পারে)।
সকল প্রশংসা আল্লাহ’র, যিনি ওয়াদা করেছেন এবং তা পরিপূর্ণ করেছন, ওয়াদা করেছেন এবং ক্ষমা করেছেন, এবং সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক সম্মানিত রাসূল, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবিদের উপর……
সম্মানিত ভাই/আযমারাই, আল্লাহ আপনাকে হেফাযত করুন।
আল্লাহর শান্তি,অনুগ্রহ ও রহমত আপনার উপর বর্ষিত হোক। আমি আশা করি আপনি ও আপনার সাথে যারা আছেন তাঁরা সকলেই ভালো আছেন। আল্লাহ যেন আমাদেরকে তাঁর পছন্দনীয় ও সন্তোষজনক বিষয়াদির উপর একত্রিত করেন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে বিজয় দান করেন…..
অতঃপর, গত ১২-ই জুলহিজ্জাতে (কোনো সাল উল্লেখ করা নেই, খুব সম্ভবত ১৯ নভেম্বর ২০১০ হতে পারে) আমি আপনাকে যে চিঠি প্রেরণ করেছিলাম, সেগুলোর উপর এখানে কিছু মতামত ব্যক্ত করছি।
আপনার কাছে আমাদের বন্ধু (NFI) যে চিঠিটি পাঠিয়েছেন তার সম্পর্কে আমার মতামত তুলে ধরছি। আল্লাহর রহমত ও কুদরতে আল-কায়েদার আকার ও আয়তনের পরিবর্ধন বেড়ে যাওয়ার কারণে হয়ত ভাইয়েরা খুব উদ্বিগ্ন এবং এই ভয় থেকেই হয়ত তাঁরা আপনাকে চিঠিটি পাঠিয়েছেন।
উপরন্তু, তাঁরা মনে করেন এই বিশাল তানজিমের ভার বহন করা সহ্যসীমার বাইরে। দল ভারি হওয়ার কারণে তাঁরা মনে করেন তাদের শক্তি সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং আরও অন্যান্য গ্রুপের সাথে নানা সমস্যায় জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। বিশেষত, তাঁরা চান দলের উন্নয়ন হোক এবং দলের ভিত্তি মজবুত হোক। একারণেই, তাঁরা মনে করেন দলের বর্তমান যে অবস্থা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকা এবং দল ভারি না করা। অর্থাৎ, তাঁরা দল বৃদ্ধিকরণে ইচ্ছুক নন।
কিন্তু আমার ভয় হয় যদি বাস্তবিকপক্ষেই তাঁরা এধরনের চিন্তাভাবনা করেন থাকেন তবে পরিবর্তিতে তাঁরা হয়ত আমাদের উপর ছড়ি ঘোরাবার চেষ্টা করবেন। তাঁরা হয়ত আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করবেন যে এমন এমন বলা যাবে না, বা অমুক অমুকের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে, বা অমুক অমুকের সাথে সংযোগ অস্বীকার করতে হবে, বা অমুক অমুকের সাথে সম্পৃক্ততা অস্বীকার করতে হবে…… ইত্যাদি।
কিন্তু, আমি মনে করি আল-কায়েদার জন্য নিজেদের শাখাগুলোর সাথে সম্পর্ক ঘোষণা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে এটি সত্যিকার একটি তথ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এবং এটা অস্বীকার করার মধ্যেও কোনো লাভ নেই। তাই, দয়া করে তাঁদের চাপের কারণে সোমালিয়ার ভাইদের সাথে ঐক্যের ঘোষণা না দেওয়ার ব্যপারে আপনার সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করবেন। পরিবর্তিতে এমন যেন না হয় যে, ভাইদের চাপে আমাদেরকে অন্যান্য় গ্রুপগুলোর সাথেও ঐক্য ভঙ্গ করতে হয়!
এখানে আরেকটি বিষয় আছে। আর সেই বিষয়টি হচ্ছে একটি দলের সাধারণ দিকগুলোর নিয়ন্ত্রণ, যেমনঃ মেম্বারশিপ তথা সদস্য সংগ্রহ এবং বিশেষত (আল কায়েদার সাথে বিভিন্ন দলের বা কোনো ব্যক্তির) সংযুক্তির ব্যপারটি। আমি চাই এই বিষয়টির প্রতি আপনি সতর্কতার সাথে নজর দেন। এটি আপনার কাছে গোপন নয় যে, অতীতে এতে আমাদের অনেক ইতিবাচক দিকের সাথে সাথে অনেক ত্রুটিও ছিলো।
যাইহোক, আমি যে বিষয়ে জোর দিতে চাচ্ছি এই চিঠিতে, তা হলো একক কোনো ব্যক্তির (Individual তথা একজনের) আমাদেরকে আনুগত্যের অংগীকার (বাইয়াত) দেওয়া এবং আমাদের সাথে সংযুক্ত হওয়ার ব্যপারে।
কিন্তু, পুর্বের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, কোনো সম্পূর্ণ দল ও ব্যক্তিবিশেষে (Individual) আনুগত্যের অংগীকার (বাইয়াত) যারা দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে নানা ধরনের ভিন্নতা রয়েছে।
সমস্যা হলো আল-কায়েদা একটি বিশাল ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে যেখানে প্রত্যেকেই অযাচিত অনুপ্রবেশ করে ফেলেন ও তাঁদের আনুগত্য ঘোষণা করে ফেলেন। কিন্তু তিনি এটা দেখেন না যে, তানজিমের পক্ষ থেকে তাকে গ্রহণ করা হয়েছে কিনা! যদিও বাইয়াত হলো চুক্তিকারীদের মধ্যে কৃত একটি চুক্তির মত, তবে উভয় দিক থেকে গ্রহণযোগ্যতা পেলেই তবে তা কার্যকর হবে।
অবশেষে, উন্নত গুণসম্পন্ন, মহান কতক ব্যক্তিত্ব এবং দলের আবির্ভাব ঘটেছে, আমাদের তানজিমে যাদের সংযুক্তি আমাদের জন্য ফায়দাজনক ছিল।
অন্যদিকে এমন কিছু ব্যক্তিত্ব এবং দলের আবির্ভাব ঘটেছে যাদের সম্পৃক্ততা কোনো দলকেই লাভবান করতে পারে নি। তারপরও আল-কায়েদায় যোগদান করায় তাদের মধ্যে একপ্রকার লোক দেখানো দিক প্রকাশ পেয়েছে। তাদের মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বশীলরা নির্দিষ্ট উপাধি যুক্ত করে তা প্রকাশ করেছেন যে, ইনি হলেন অমুক দলের সদস্য, এবং উনি অমুক দায়িত্বে আছেন। এটি আল-কায়েদার নীতি নয়। আল-কায়েদার পথ থেকে এগুলো বিচ্ছিন্ন।
উপরন্তু এটি যদি কোনো আল্লাহ ওয়ালা ব্যক্তির মাধ্যমে হয়ে থাকত, তবে গভীরভাবে এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব থাকত। কিন্তু, যারা গুনে ও মানে এমন পর্যায়ের নয় এমন ব্যক্তিদের থেকে যদি এই ধরণের কার্যকলাপ প্রকাশ পায় তবে আপনার কি ধারণা, এর কী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না?
অবশেষে কিছু কথা না বললেই নয় যে, কিছু ব্যক্তির আবির্ভাব হয়েছে যারা আল-কায়েদার নামে অর্থ সংগ্রহ করছেন এবং আমার মনে হয় আপনি “আল-যায়াত”-এর ভাইদের কথা শুনে থাকবেন (NFI)। তাদের মধ্যে এমন কিছু ভাইয়েরা আছেন যারা বিভিন্ন মাত্রায় অর্থের খিয়ানত করেছেন।
যাইহোক, সম্মানিত ভাই, গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হলো, এই ব্যাপারগুলোকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে। যেমনঃ আল-কায়েদার সদস্য কে? তার দায়িত্ব কি? সে কোন পক্ষকে অনুসরণ করে? তাকে কোন পন্থায় জবাবদিহি করা যায়, যাতে আমরা লোভ-লালসা লালনকারী বন্ধু এবং ধার্মিকতা ও নৈতিকতা লালনকারী বন্ধুদের পৃথক করতে পারি।
যদি এই দূর্বলতাটি, নববী যুগের সন্নিকটে থাকা সত্ত্বেও প্রথম প্রজন্মের লোকদের মধ্যেও অনুপ্রবেশ করতে পারে, তবে আপনি কি মনে করেন না যে এই দূর্বলতা আমাদের মধ্যেও অনুপ্রবেশ করতে পারে?
পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের আমীর, ইসলামের তৃতীয় খলিফা সাইয়্যেদুনা উসমান (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)- উনার নিকটাত্মীয়দের ক্ষমতায় নিয়ে আসা শুরু করলেন এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার ধারাবাহিকতায় উনাকে হত্যা করা হলো। আল্লাহ উনার উপর সন্তুষ্ট হোন। এরপর স্থিতিশীলতা ততক্ষণ পর্যন্ত ছিল যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ চাইলেন।
এরপরে যখন মুসলিমরা নিজেদের আবার সামলিয়ে নিলো এবং “গ্রুপ”-এর বছরে পরিস্থিতি ভালো হতো শুরু করলো তখন আমাদের আমীর, সাইয়্যেদুনা মুয়াউইয়াহ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) সন্তোষজনক ভাবে তাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, ততক্ষণ যাবৎ যতক্ষণ না তিনি উম্মাহ’র দায়ভার নিজের সন্তানের উপর ন্যস্ত করতে ইচ্ছে করলেন। তারপর হোসাইনের (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বিদ্রোহ, তারপর যুবায়েরের পুত্রের (আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বিদ্রোহ। আল্লাহ তাদের উভয়ের প্রতি সন্তুষ্ট হোন। অতঃপর বিদ্রোহ সবদিকে ছড়িয়ে পড়লো, যার প্রভাব আজ অবধি বর্তমান।
যাইহোক সম্মানিত ভাই, আশা করা যায়, আল্লাহর রহমত ও অনুমতিতে, বিজয় নিকটবর্তী। এবং এর ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ এবং দল ত্বড়িৎগতিতে বাইয়াত প্রদানের জন্য ভিড় জমাবেন।
অতএব, দয়া করে এখন থেকে এমন এক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করুন যাতে এর মাধ্যমে পরবর্তিতে এই আপনি মানুষের সাথে আন্তরিকতা, ন্যায়নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের সাথে বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং শরিয়াহর মাধ্যমে লোকদের পরিচালনা করতে পারেন। এটি যারা যারা সৎ ও ধার্মিক তাদের পরস্পরের সাথে ঘনিষ্ঠ করে তুলবে ও তাদের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি করবে।
একটি শেষ ব্যক্তিগত অনুরোধ, যা হলো, আমি আপনার কাছে দুয়ার দরখাস্ত করছি আমার জন্য, এবং আমার পরিবারের দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যানের জন্য এবং উত্তম উত্তরসূরী লাভের জন্য।
অবশেষে আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন আপনাকে,আমাদেরকে এবং সকল মুসলমানদের সর্বপ্রকার বিপদ-আপদ থেকে হেফাযত করেন।
আমি আপনাকে আল্লাহর জিম্মায় রাখলাম, যার আমানত কক্ষনো বিনষ্ট হয় না।
দয়া করে পড়া শেষ হলে চিঠিটা ধ্বংস করে দিবেন, এবং আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।
সালাম
আপনার প্রিয় ভাই
০৬-ই মুহররম (বিঃদ্রঃ কোনো সাল দেয়া নেই। সম্ভবত খুব সাম্প্রতিক ১৩ ডিসেম্বর ২০১০ হতে পারে)।
পিডিএফ ডাউনলোড করুন