Announcement

Collapse
No announcement yet.

১৪৪৫ হিজরীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমীরুল মুমিনীন মৌলভী হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ'র "ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বার্তা"

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ১৪৪৫ হিজরীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমীরুল মুমিনীন মৌলভী হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ'র "ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বার্তা"


    مؤسسة الشهداء
    আশ শুহাদা মিডিয়া
    Ash Shuhada Media

    تـُــقدم
    পরিবেশিত
    Presents

    في اللغة البنغالية
    বাংলা ভাষায়
    In the Bengali Language

    بعنوان:
    শিরোনাম:
    Titled:


    بيان أمیرالمؤمنین الشیخ المولوي هِبة الله آخندزاده _حفظه الله
    ورعاه بمناسبة حلول عيد الفطر السعيد لعام ۱۴۴٥هـ

    ১৪৪৫ হিজরির ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে
    আমিরুল মু’মিনিন শাইখুল হাদিস হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ’র
    “ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা বার্তা”

    Message of Felicitation of the Esteemed
    Amir-ul-Mumineen Sheikh-ul-Hadith Mawlawi Hibatullah Akhundzada (may Allah protect him)
    on the occasion of Eid-ul-Fitr 1445




    بسم الله الرحمن الرحیم



    االحمد لله نحمده ونستعينه ونستغفره ونتوب إليه ونعوذ بالله من شرور أنفسنا ومن سيئات أعمالنا من يهده الله فلا مضل له ومن يضلل فلا هادي له وأشهد أن لا إله إلا الله وحده لا شريك له وأشهد أن محمدا عبده ورسوله

    আলহামদুলিল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আমরা তার প্রশংসা করছি, তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি, তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তার নিকট তওবা করছি। আমাদের নফসের অনিষ্টসমূহ থেকে তার আশ্রয় কামনা করছি। আমাদের মন্দ কাজের ব্যাপারেও তার আশ্রয় চাচ্ছি! তিনি যাকে হেদায়েত দান করেন তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না; আর তিনি যাকে বিভ্রান্ত করেন কেউ তাকে পথ দেখাতে পারেনা! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা'বুদ নেই, তার কোন শরীক নেই! আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।

    আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:

    قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّىٰ

    অর্থঃ অবশ্যই সাফল্য লাভ করবে যে (ঈমানের মাধ্যমে গুনাহ থেকে) পরিশুদ্ধ হয় (সূরা আলা ৮৭:১৪)

    وَذَكَرَ ٱسۡمَ رَبِّهِۦ فَصَلَّىٰ

    অর্থঃ এবং তার রবের নাম স্মরণ করে (তাকবীরের সাথে) এবং সালাত কায়েম করে। (সূরা ৮৭:15)

    তাফসীরে কাবুলির রেফারেন্স সহকারে সলফে সালেহীনের কেউ কেউ বলেছেন যে, এখানে তাজকিয়া বা শুদ্ধি অর্জন দ্বারা বোঝানো হয়েছে সদকায়ে ফিতরকে। জিকিরের দ্বারা বোঝানো হয়েছে ঈদের তাকবীরসমূহকে এবং নামাজের দ্বারা ঈদের নামাজ বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ ঈদের দিন সদকায়ে ফিতর আদায় করো, অতঃপর তাকবীর বলো এবং ঈদের নামাজ আদায় করো।

    عن ابن عباس رضی اللّٰه تعالیٰ عنه قال: في آخر رمضان أخرجوا صدقة صومکم فرض رسول اللّٰه ﷺ هذہ الصدقة صاعاً من تمر او شعیر او نصف صاع من قمح علی کل حرٍ او مملوکٍ ذکرٍ او أنثی، صغیرٍ او کبیرٍ. [رواه ابوداؤد

    অর্থঃ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রমজানের শেষে তোমরা তোমাদের রোজার সদাকা আদায় কর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সা' খেজুর বা জব অথবা আধা সা' গম সদাকা করাকে স্বাধীন অথবা গোলাম, পুরুষ অথবা মহিলা, ছোট কিংবা বড় সকলের উপর ফরজ করেছেন। (ইমাম আবু দাউদ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন)

    عنه قال: فرض رسول الله صلى الله عليه وسلم زكاة الفطر طُهرةً للصائم من اللغو والرفث، وطعمةً للمساكين -رواه ابوداؤد

    অর্থঃ তার থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা অবস্থায় অনর্থক কথাবার্তা ও আলাপচারিতা থেকে পবিত্র করার জন্য এবং গরিবদের আহারের জন্য সদকায়ে ফিতরকে ওয়াজিব করেছেন।

    قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من صام رمضان ايمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه متفق عليه

    অর্থঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন: যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং সাওয়াব অর্জনের জন্য (রিয়া তথা লোক দেখানোর জন্য নয় বরং শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য) রোজা রাখবে, তার পূর্বের জীবনের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

    আফগানিস্তানের মুমিন মুজাহিদ জনসাধারণ এবং দুনিয়ার সকল মুসলিমদের প্রতি…

    আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

    হামদ ও সালাতের পর আমি সকল মুসলিমকে ঈদুল ফিতরের মোবারকবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ তাআলা আপনাদের রোজা, তারাবি, সদাকাতুল ফিতর, দুআ সমূহ এবং অন্যান্য শারীরিক ও আর্থিক ইবাদতকে কবুল করুন!!

    সম্মানিত ভাইয়েরা!

    সর্বপ্রথম আমি আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করব যিনি আমাদেরকে ইসলামী শরীয়ত ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা দান করেছেন। সেই ব্যবস্থার অধীনেই আমরা এখন জীবনযাপন করছি। আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহে আমরা নিরাপদ পরিবেশে রোজা রাখতে পারছি। সামনে আমরা ঈদুল ফিতরের নামাজও আদায় করবো ইনশা আল্লাহ। ঈদের আনন্দ আমরা নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল এক পরিবেশে উদযাপন করতে যাচ্ছি ইনশা আল্লাহ।

    আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:

    وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ

    অর্থঃ যদি তোমরা পূর্বের নেয়ামত ও অনুগ্রহসমূহের ওপর শুকরিয়া আদায় কর তাহলে অবশ্যই আমি তোমাদের নেয়ামত বৃদ্ধি করে দেব। আর যদি তোমরা আমার নেয়ামত ও অনুগ্রহ সমূহের কৃতজ্ঞতা আদায় না কর, তাহলে নিঃসন্দেহে আমার আজাব খুবই কঠোর। (সূরা ইবরাহীম ১৪:৭)

    অন্যত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:

    قُلْ بِفَضْلِ اللّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُواْ هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ

    অর্থঃ (হে মুহাম্মাদ) ইমানদারদেরকে আপনি বলে দিন যে আল্লাহর অনুগ্রহ (আল কুরআন) এবং তার রহমত (তার দেয়া দ্বীন ইসলাম) এর কারণে তারা যেন আনন্দিত হয়। (সূরা ইউনুস ১০:৫৮)

    আল্লাহর অনুগ্রহ এবং রহমতের প্রতি ইমানদারদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করা উচিত। কারণ এই অনুগ্রহ ও রহমত খুবই উত্তম। দুনিয়ার যে সমস্ত মাল সম্পদ লোকেরা সঞ্চয় করে তদাপেক্ষা উত্তম হলো এই নেয়ামত। এ কারণে ইমানদারদের উচিত এই নেয়ামত লাভ করে খুবই আনন্দিত হওয়া। কারণ উপরোক্ত জিনিসগুলো তথা আল কুরআনুল কারীম, দ্বীন ইসলাম এবং অন্যান্য পবিত্র বিষয়গুলো অতি উত্তম এবং শ্রেষ্ঠ [তাফসীরে কাবুলি]

    যেই নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা হয় আল্লাহ তাআলা সে নেয়ামত বৃদ্ধি করে দেন। আর আল্লাহ না করুন, যদি শুকরিয়া আদায় করা না হয়, তাহলে আল্লাহ তাআলা আজাব ও শাস্তির ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। সেই আজাব ও শাস্তি খুবই ভয়াবহ ও কঠোর। এ কারণে আমি মুসলিম ভাইদেরকে জোর দিয়ে বলতে চাই, আপনারা অবশ্যই অবশ্যই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন। সর্বদা আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে জীবনযাপন করুন।

    আল্লাহ প্রদত্ত শরীয়ত ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা, নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ব, একতা এবং এজাতীয় আরো অনেক বিষয় থেকে আমরা দশকের পর দশক বঞ্চিত ছিলাম। আজ আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সেই সমস্ত নেয়ামত দান করেছেন। তাই প্রথমে এই বিষয়গুলোর উপর আমাদের শুকরিয়া আদায় করতে হবে। এই বিষয়গুলোর পক্ষে জোরালো অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে হবে। কোন ভুল ত্রুটি থাকলে সংশোধন করতে চেষ্টা করতে হবে এবং সর্বদা কল্যাণকামী হয়ে থাকতে হবে।

    সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব হল ওলামায়ে কেরামের। সাধারণ মানুষকে এবং ইসলামী ইমারতকে আল্লাহ তাআলার অভিমুখী রাখার মহান দায়িত্ব রয়েছে তাদের কাঁধে। তারা সংশোধন প্রক্রিয়া জারি রাখবেন। ইসলামী ইমারত এবং জনসাধারণকে উত্তম পরামর্শ দান করবেন। তাদেরকে নসিহত করবেন। তাদের কল্যাণকামী হয়ে থাকবেন। সর্বদা তাদেরকে ইবাদতের দাওয়াত দেবেন।

    মসজিদের ইমামদের দায়িত্ব হল – আপনারা আপনাদের মুসল্লি এবং তাদের বাচ্চাদেরকে আকায়েদ, আমাল ও আদব-আখলাক শেখাবেন। তাদের জীবন সংশোধন এবং তরবিয়তের ব্যাপারে দৈনিক সময় দেবেন। ধারাবাহিকভাবে তাদের ওপর মেহনত করবেন। বিশেষ করে সমকালীন ফিতনা থেকে তাদেরকে বাঁচাবেন।

    ইসলামী শরীয়ত বাস্তবায়ন:

    ইসলামের এক পবিত্র বিধান জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ'র গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো কালিমাতুল্লাহ বুলন্দ করা (আল্লাহর বাণীকে প্রতিষ্ঠিত করা) এবং ইসলামী শরীয়ত বাস্তবায়ন করা। ইসলামী ইমারতও জিহাদের এই পবিত্র লক্ষ্য অর্জন এবং মুজাহিদিনের কুরবানি ও ত্যাগ তিতিক্ষা হেফাজতের জন্য এই মৌলিক লক্ষ্যকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য নানান চেষ্টা প্রচেষ্টা ইসলামী ইমারত জারি রেখেছে।

    ইনসাফ প্রতিষ্ঠা, শরীয়তের বিচার ও শাস্তিবিধি নিশ্চিতকরণ এবং শরিয়া আদালত প্রতিষ্ঠার কাজ ইসলামী ইমারত শরীয়তের মূলনীতি অনুসারেই সুষ্ঠুভাবে জারি রাখতে চেষ্টা করছে। জুলুম অত্যাচারের পরিসমাপ্তি এবং মাজলুমের অধিকার ফিরিয়ে আনার কাজ করে যাচ্ছে। অন্যায় ও গর্হিত কার্যকলাপ বন্ধ করছে এবং আমর বিল মারুফ ও সৎকাজের আদেশ দিয়ে যাচ্ছে। এ জাতীয় বিষয়গুলো এবং মজলুমের অভিযোগ শ্রবণ ইত্যাদি বিষয়গুলো শরীয়তের নীতিমালা অনুসারেই নিশ্চিত করে যাচ্ছে।

    প্রদেশগুলোতে ‘ওলামা কাউন্সিল’ - প্রাদেশিক শাসকবর্গের কাজকর্মে শরিয়া বিধি-বিধানের উপর আমল নিশ্চিতকরণ, শাসকবর্গকে উত্তম পরামর্শ দান, আলেমদের মাঝে পারস্পরিক একতা ও ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং জনসাধারণের সঙ্গে সরকারের আস্থাপূর্ণ সম্পর্ক বিনির্মাণে খুবই পরীক্ষিত কর্মপন্থা অনুসারে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। প্রাদেশিক শাসকেরা ওলামা কাউন্সিলের আনুগত্যে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রাদেশিক পর্যায়ের পর একই রকম ওলামা কাউন্সিল এখন জেলাগুলোতেও চালু করা হয়েছে। ধীরে ধীরে পুরো দেশের সমস্ত জেলায় ওলামায়ে কেরাম এবং গোত্রীয় নেতৃবৃন্দের কাউন্সিল গঠন করে দেয়া হবে।

    আদালতগুলোর সুষ্ঠু কার্যকলাপ ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা, আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রাখা, আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকারের উপদেশ বাণীসমূহের উপর আমল করা, বিভিন্ন বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ এবং ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে শরীয়ত মেনে চলা - প্রত্যেক মুসলমানেরই দায়িত্ব ও কর্তব্য।

    তালিম তরবিয়ত / শিক্ষা দীক্ষা:

    নতুন প্রজন্মকে ধর্মীয় এবং সেই সাথে জাগতিক শিক্ষা প্রদানের জন্য সমস্ত প্রদেশ ও জেলাগুলোতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম চালু রয়েছে। শত শত ধর্মীয় ও জাগতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হচ্ছে। অনাথ, অসহায় বাচ্চাদের লালন পালন, শিক্ষা দীক্ষা এবং দায়িত্ব গ্রহণের জন্য প্রত্যেক প্রদেশে বিভিন্ন জেলায় দারুল আইতাম বা অনাথ আশ্রম চালু করা হয়েছে। রীতিমত একটা মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

    সন্তান-সন্ততির শিক্ষাদীক্ষা নিশ্চিত করা, তাদেরকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা এবং ধর্মীয় শিক্ষা লাভের জন্য তাদেরকে সুযোগ করে দেয়া প্রত্যেক মুসলিম ভাইয়ের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

    নিরাপত্তা ও স্থিতি:

    কয়েক দশক যাবত আফগানিস্তান দুরবস্থা, দুর্গতি ও নানান সমস্যায় জর্জরিত ছিল। অনেক জটিলতা, প্রতিকূলতা, পেরেশানি, কুরবানি ও ত্যাগ তিতিক্ষার পর আল্লাহ তাআলা আফগানিস্তানকে এক বিরাট নেয়ামত দান করেছেন। এখানে আজ নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাহ্যিকভাবে নিরাপত্তা ও স্থিতি বিরাজ করছে, আবার অভ্যন্তরীণ ও রুহানি বা আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রেও এই একই পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

    বাহ্যিক নিরাপত্তা হলো- জনসাধারণের জানমাল, ইজ্জত, আব্রু আজ কারো হুমকির মুখে নেই। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হলো, আফগানিস্তানে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও স্বশাসন নিশ্চিত হয়েছে। এটা আল্লাহ তাআলার অনেক বড় নেয়ামত। এখন জনসাধারণের দায়িত্ব হল, আপনারা এই উভয় প্রকার নিরাপত্তার হেফাজত করবেন। সিকিউরিটি ও নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা নিয়োজিত, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন এবং সেটাকে নিজেদের দায়িত্ব বলে মনে করবেন। কারণ আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এ দায়িত্ব দিয়েছেন যে, আমরা ভালো কাজের সহযোগিতা করবো, কিন্তু খারাপ কাজে কারো সঙ্গে সহযোগিতা করব না। তাইতো অনিষ্ট সাধনকারীদেরকে বাধা প্রদান করতে হবে।

    শান্তি, নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা আপনাদের দায়িত্ব। যদি অন্যায় ভাবে কারো রক্ত প্রবাহিত হয়, তাহলে সকলেই তার জন্য দায়ী থাকবেন। কারণ সকল মুসলিমকে আল্লাহ তাআলা অসৎ কাজ করতে বাধা দেয়ার দায়িত্ব প্রদান করেছেন। আপনারা আপনাদের শহর এবং অলি গলিতে নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন থাকবেন। নিরাপত্তা সংস্থার লোকদেরকে পুরোপুরি সাহায্য সহযোগিতা করবেন।

    অর্থনীতি:

    ইসলামী শাসনব্যবস্থা এবং তার দায়িত্বশীলদের উপর শরিয়া প্রদত্ত দায়িত্বগুলোর মধ্যে একটি হলো: প্রজাদের অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতি মনোযোগী হওয়া এবং তাদেরকে অভাব অনটনের পথ থেকে বের করে আনা। প্রতিটি নাগরিক যেন স্বহস্তে উপার্জন করার যোগ্য হয়ে ওঠে সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। ইসলামী ইমারত সাধ্যের সবটুকু ব্যয় করে ফ্যাক্টরিগুলো চালু করার এবং জনহিতকর কাজগুলো আরম্ভ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে, যেন লোকদের রুজি ও উপার্জনের পথ প্রস্তুত হয়ে যায়।

    এই প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে এবং কিছু প্রকল্পের কাজ চলছে। আপনারাও হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবেন না! ব্যক্তিগত ও সম্মিলিতভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করুন। একসাথে ছোট-বড় কোম্পানি গঠন করুন। কৃষি ও শিল্পের জন্য পথ তৈরি করুন। ইসলামী ইমারতের সাথে একসাথে নিজেদের দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করুন। ইসলামী ইমারত আপনাদের কৃষিকাজের কল্যাণে পানি সরবরাহ এবং শিল্প স্থাপনের জন্য আরো ভাল সুবিধা দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আমাদের ভরসা থাকবে মহান আল্লাহর উপর। জীবিকা উপার্জনের সব বৈধ উপায় অবলম্বন করতে হবে। অবৈধ কাজ এড়িয়ে চলতে হবে। হালাল সম্পদ উপার্জন করতে হবে। অন্যের উপর নির্ভর করবেন না এবং কারও কাছ থেকে সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করবেন না।

    প্রত্যেক গ্রুপের সঙ্গে আচার-আচরণের ক্ষেত্রে শরীয়তের মূলনীতি অনুসরণ:

    ইসলামী ইমারত আফগানিস্তান ইসলামী শরীয়ত ভিত্তিক পলিসি অনুসারে সকলের সঙ্গেই দ্বিপাক্ষিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া মূলক সুসম্পর্ক গড়তে আগ্রহী। সকলের কাছে ইসলামী ইমারতের দাবি হলো, ইসলামী ইমারত নামক এই প্রতিষ্ঠানকে এবং তাদের নেক নিয়ত ও সদিচ্ছাকে কেউ সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখবেন না। আমাদের ওয়াদা সত্যিকার ওয়াদা। আমরা তাদের কাছেও আশা করব, আফগানিস্তানের ভূখণ্ড, সীমানা, স্বার্থ এবং সম্মানের প্রতি লক্ষ্য রাখবেন এবং আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলবেন।

    আমরা এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সঙ্গে ইসলামের পবিত্র নীতিমালার আলোকে ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক ও আদান-প্রদান মূলক রাজনৈতিক সম্পর্কের পলিসি (ইকোনমি ওরিয়েন্টেড) গ্রহণ করতে আগ্রহী। আমরা সকলের সঙ্গেই দূতাবাস ও সামাজিক সম্পর্ক রাখতে চাই। প্রতিবেশী দেশগুলোরও উচিত এ সময়টাকে আফগানিস্তানের শান্তি, নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব, উন্নয়ন ও অগ্রগতির সুবর্ণ সুযোগ মনে করে আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বিনির্মাণে এগিয়ে আসা। পারস্পরিক আস্থার পরিবেশ এবং সহযোগিতা মূলক পলিসি গ্রহণ করা।

    ইসলামী ইমারতের মন্ত্রণালয়গুলোকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যে, তারা সারা বিশ্বের সঙ্গে বিশেষ করে মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর সঙ্গে আস্থা এবং পারস্পরিক নির্ভরশীলতার পরিবেশে সম্পর্ক বিনির্মাণে কাজ করবে। মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ইসলামী ইমারতের সম্পর্ক হবে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে। “সকল মুসলিম আমাদের ভাই”- এই মূলনীতির আলোকে ইসলামী বিশ্বের সঙ্গে আমাদের দ্বীন, আকায়েদ-বিশ্বাস ও আস্থা মূলক সম্পর্ক ও আত্মীয়তা রয়েছে। আমাদের স্বার্থগুলো যৌথ ও সম্মিলিত। এজন্য আমাদের পলিসি এবং দৃষ্টিভঙ্গিগুলোও যৌথ ও সমন্বিত হওয়া উচিত। আমরা একে অপরের দুঃখ বেদনায় শরিক থাকবো এবং আমাদের ইসলামি শিক্ষা অনুযায়ী সরল মনে একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে আসব।

    এই ধরনের যৌথ ও সমন্বিত অবস্থান আমাদের যৌথ সমস্যাগুলোকে কমিয়ে আনবে এবং সমাধানের পথে নিয়ে যাবে। ইসলামী ইমারত এমনই এক পরিবেশ তৈরিতে আগ্রহী।

    ফিলিস্তিন:

    নিঃসন্দেহে ফিলিস্তিনের বিষয়টি সমগ্র মুসলিম উম্মাহর ইস্যু। ইসরাইলের আগ্রাসন ও জবরদখলের বিরুদ্ধে গাজাবাসীর প্রতিরোধের বিষয়ে আমরা সংহতি প্রকাশ করছি। নির্যাতিত ফিলিস্তিনবাসীর উপর আরোপিত দুর্দশার কারণ নিরূপণ করা সমগ্র মুসলিম উম্মাহর দায়িত্ব। আগ্রাসী ইসরাইলের যেকোনো ধরনের জুলুম ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধভাবে তিরস্কার জানাতে হবে। আমাদের সম্পদগুলো যেন ফিলিস্তিন বাসীর দুর্দশা লাঘব করার কাজে ব্যবহৃত হয়, সেই চেষ্টা করতে হবে। যার পক্ষে যেভাবে সম্ভব সেভাবেই তাদের কষ্ট লাঘব করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। এই যুদ্ধের শেষ যেন একটি ন্যায় ভিত্তিক সিদ্ধান্তের উপর হয়, সেটার জন্যও কাজ করতে হবে।

    ফিলিস্তিনবাসী অনেকদিন ধরেই নিপীড়নের শিকার। এত সময় অতিবাহিত হবার পরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনবাসীর দুর্দশার মূল কারণ নিরূপণ করতে প্রায়ই ভুল করে। এটা দুঃখজনক। তারা মানবতার কথা বলে, কিন্তু চলমান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তারা কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেনি। আগ্রাসী ইসরাইলের বিরুদ্ধে কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম এমন কোন উদ্যোগ তারা গ্রহণ করেনি। এমনকি আগ্রাসনের জন্য ইসরাইলকে দায়ী পর্যন্ত করতে সক্ষম হয়নি। এটা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের একটি বিষয়। তাই দল মত নির্বিশেষে সকলকে এখন নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে। নিজেদের কাঁধে ঝুলে থাকা দায়িত্ব সম্পাদন করতে হবে। ফিলিস্তিন বাসীর দুর্দশা লাঘব করতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার এখন কোনো বিকল্প নেই।

    মাদক নির্মূল:

    ইমারতে ইসলামিয়া আফগান ভূমিতে ইসলামী শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ইমারতে ইসলামিয়া সকল প্রকার মাদকের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে নিয়মিত পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমরা মাদকের চাষ, উৎপাদন ও পরিবহন বন্ধ করার বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এজন্য নিয়মিত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। ইমারতে ইসলামিয়া এই সমস্যার একটি টেকসই সমাধান বের করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা আমাদের জাতির কাছে মাদক নির্মূল প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত সকল বিষয়ে সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা আপনাদের সহযোগিতায় মাদক মুক্ত আফগান গড়তে বদ্ধ পরিকর। দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে মাদক নির্মূল একান্ত জরুরী।

    কাবুল ও অন্যান্য প্রদেশের মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চলমান আছে। মাদকাসক্তরা মাদক ছেড়ে যেন আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে সে লক্ষ্যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইমারতে ইসলামিয়া এই বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। আমরা মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারের দুর্দশা কষ্ট বুঝি। তাই চেষ্টা করছি বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে এই সমস্যার কার্যকর সমাধান করতে।

    ইমারতে ইসলামিয়ার অধিবাসীগণ! আপনারা এই সমস্যার সমাধানে যে সকল নির্দেশনা দেয়া হবে সেগুলো নিজেরা মেনে চলবেন। মুজাহিদদের এসকল নির্দেশনা বাস্তবায়নের কাজে সহযোগিতা করবেন ইনশা আল্লাহ।



    ইমারতে ইসলামিয়ার দায়িত্বশীল ও মুজাহিদিনের প্রতি নির্দেশনা:

    আমি নিম্নোক্ত নির্দেশনাগুলো সকলকে মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা আপনাদের অধীনস্থ সকলের কাছে এগুলো পৌঁছে দেবেন। আমাদের মূল লক্ষ্য আমাদের জাতির প্রয়োজনগুলো ঠিকভাবে পূরণ করা। তাদেরকে সঠিক পথে পরিচালনাই আমাদের মূল চাওয়া। আমাদের জাতির শরয়ী অধিকারগুলো যেন সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেয়া যায় সেলক্ষ্যে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো ইনশা আল্লাহ।

    ১। প্রতিটি মন্ত্রণালয়, প্রদেশ, অঞ্চল ও ডিপার্টমেন্টের সকল প্রশাসনিক দায়িত্বশীলরা নিজেদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করবেন। আফগানবাসীর মৌলিক অধিকারসমূহ যথাযথভাবে পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রত্যেকেই নিজদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন ইনশা আল্লাহ। যদি কেউ নিজ দায়িত্বে অবহেলা করেন তবে মনে রাখবেন, ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী আপনাকে আপনার কাজে অবহেলার বিষয়ে উপযুক্ত জবাবদিহি করতে হবে।

    ২। প্রশাসনিক দায়িত্বশীলরা নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক বজায় রাখবেন। অনৈক্য ও স্বার্থপরতা এড়িয়ে চলবেন। এই ভ্রাতৃত্ববোধ আমাদের দীর্ঘদিনের জিহাদের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। ইসলামী জীবনব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখে ও শক্তিশালী করে এই ‘ভ্রাতৃত্ববোধ’। এভাবে চলতে পারলে এই ভ্রাতৃত্ববোধ টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে ইনশা আল্লাহ। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও সমাজতন্ত্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের জিহাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি শুধুমাত্র নেতৃবৃন্দের মধ্যকার অনৈক্যের কারণে। ফলে ইসলামী শরীয়া ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। ফলস্বরূপ আফগানিস্তান ও আফগানবাসী দীর্ঘদিন নানান সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন।

    ৩। মানুষের সাথে রূঢ় আচরণ করা বা হত্যার মাধ্যমে নিরাপত্তা আসে না, স্থিতি নিশ্চিত হয় না। বরং শরীয়ত মেনে চলা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমেই নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। ইনসাফ না করা এবং শরীয়া আইনের বিরুদ্ধাচরণ - নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করে। একারণে আত্মশুদ্ধি খুব জরুরি। কারণ প্রশাসনিক দায়িত্বশীল ও ব্যক্তির অন্যায় শুধুমাত্র নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বরং এই অন্যায় সামগ্রিক ব্যবস্থার উপর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে।

    ৪। যদি জুলুম ও জালিমরা অধিক প্রভাবশালী হয়ে ওঠে, তবে নিঃসন্দেহে এটা গোটা ব্যবস্থাকে ভুল পথে পরিচালিত করবে। যদি একজন মানুষও জুলুমের শিকার হন, তবে তা সমগ্র শাসন ব্যবস্থার সততার বিষয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আর মজলুম ও আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা থাকে না।

    ৫। সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জিহাদে সফলতা পাবার পর আমাদের শত্রুরা মুজাহিদদের মধ্যে অনৈক্যের বীজ রোপণ করতে সক্ষম হয়েছিল। তারা এখন আশা করছে ইমারতে ইসলামিয়ার নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনিক দায়িত্বশীলদের মধ্যেও অনৈক্য প্রসারিত হবে। আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করে তোমাদের নিশ্চিত জানিয়ে দিচ্ছি, তোমাদের এই স্বপ্ন কখনো বাস্তবায়িত হবে না। তোমাদের এই লক্ষ্য তোমরা কখনোই অর্জন করতে সক্ষম হবে না, ইনশা আল্লাহ।

    ৬। আফগানবাসী মানসিক দিক থেকে অনেক শক্তিশালী। ইতিপূর্বে তারা অনেক জুলুমের শিকার হয়েছেন। অনেক বড় বড় কুরবানি তারা করেছেন। আমাদের বর্তমান সফলতা এমনি এমনি আসেনি। অনেক মানুষের অনেক বড় বড় কুরবানির বিনিময়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের এই সফলতা দান করেছেন। তাই নিঃসন্দেহে আফগানরা একটি সম্মানিত জাতি। তাই আমাদের উচিত হবে, এই সম্মানিত জাতিকে উপযুক্ত সম্মান করা এবং তাদের কষ্টের বিষয়গুলো মনোযোগ সহকারে জানা ও শোনা। আমাদের উচিত হবে, আমরা যে ওয়াদা করেছিলাম সেটার সাথে জুড়ে থাকা। এই আফগানরা বিগত দিনের জিহাদে সবচেয়ে বড় কুরবানিগুলো করেছেন। তাই তাদের সাথে আমরা কোনভাবেই যেন বিশ্বাসঘাতকতা না করি সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

    ৭। অন্যায়ভাবে কাউকে হেনস্তা করা করা যাবে না। যদি কাউকে আটক করা হয়, তবে তার অপরাধ নির্ণয় করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উপযুক্ত প্রশ্নের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধের মাত্রা কিরূপ সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। কেউ যেন অন্যায়ভাবে হেনস্তার শিকার না হন সেজন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং কাজের সময় সতর্ক থাকতে হবে।

    ৮। ইমারতে ইসলামিয়াতে কোনো দলান্ধতা বা গোত্র প্রীতির স্থান নেই। যারা দক্ষিণাঞ্চলের অধিবাসী তারা প্রয়োজন পড়লে উত্তরাঞ্চলের অধিবাসীদের দেখাশোনা করবেন। একইভাবে উত্তরাঞ্চলের অধিবাসীরা প্রয়োজন পড়লে দক্ষিণাঞ্চলের অধিবাসীদের দেখাশোনা করবেন। মূল কথা হচ্ছে, যাকে যেখানেই নিযুক্ত করা হোক না কেন, প্রত্যেকেই নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে আদায় করবেন।

    ৯। যোগ্যতা ও বিশ্বস্ততার উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিকে নিয়োগ ও সম্মানিত করা হবে। গোত্র, ভাষা, অবস্থান ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ইত্যাদির দ্বারা প্রভাবিত হওয়া যাবে না। প্রশাসনিক দায়িত্বশীলরা এবিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করবেন। যদি কোনো কাজের ক্ষেত্রে কোনো দায়িত্বশীলের সিদ্ধান্তের মধ্যে উপরোক্ত বিষয়গুলোর প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে সে সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বাতিল করা হবে।

    ১০। কার সাহায্যের প্রয়োজন এবং কে সাহায্য প্রদান করছেন - এটা মুখ্য বিষয় নয়। মূল বিষয় হচ্ছে, যার সাহায্যের দরকার তার অবস্থান ও পরিচয় যাই হোক না কেন, সে সাহায্য পাবে। যাদের সাহায্যের দরকার তাদের কাছে দ্রুততার সাথে সাহায্য পৌঁছে দেয়ার বিষয়ে সতর্কতা কাম্য।

    ১১। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের কাছ থেকে যেন উত্তম শিক্ষা পায় সেই চেষ্টা করতে হবে। আমরা যেন তাদের জন্য উত্তম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যেতে পারি। আমরা তাদের জন্য অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত রেখে যাবার চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও ইসলামী শরীয়া অনুসরণের বিষয়ে তাদের জন্য আমরা অনুকরণীয় হবার চেষ্টা করবো। আমরা আমাদের আখিরাতের বিষয়ে সর্বোচ্চ মনোযোগ দেবো। আমাদের সকল কাজের মূল লক্ষ্যই যেন হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।

    ১২। নিঃসন্দেহে আল্লাহই সবচেয়ে বড় রক্ষাকর্তা। আমাদের রিযিক একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকেই। আল্লাহ ছাড়া কেউ আমাদের রিযিক বৃদ্ধি করতে বা কমাতে পারে না। আল্লাহর ইচ্ছাতেই আমাদের হায়াত নির্ধারিত হয়। তাই একমাত্র আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখুন এবং তার সন্তুষ্টি অর্জনকে জীবনের মূল লক্ষ্য বানিয়ে নিন।

    ১৩। ইসলামী মূল্যবোধ ও নীতিমালার দিকে মানুষকে আহ্বান করুন। এগুলো মেনে চলার বিষয়ে মানুষকে উৎসাহিত করুন। তাদেরকে বল প্রয়োগের মাধ্যমে এগুলো মানতে বাধ্য করবেন না। বরং তাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করার চেষ্টা করুন। বল প্রয়োগ করা হলেই সে বিষয়ের উপর মানুষের বিরক্তি চলে আসে। অপরদিকে অনুপ্রেরণা দান মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ও একাগ্রতা সৃষ্টি করে।

    ১৪। জিহাদের সময়কালে যেসকল ইবাদত ও ভালো আমলে নিজেকে অভ্যস্ত করেছিলেন, সেগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করুন। নতুন বিষয় নিজে শেখা ও অন্যকে শেখাবার ধারা চালু রাখুন।

    ১৫। নিজেকে কুরআনের সাথে জুড়ে রাখুন। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় করে কুরআন তিলাওয়াত করা ও তা নিয়ে চিন্তা ফিকির করাকে নিজের জন্য বাধ্যতামূলক করে নিন।

    ১৬। বড় কোন পদ লাভ করলে সেটা দ্বারা আনন্দিত হবেন না। যোগ্যতার উন্নতি সাধনের চেষ্টা অব্যাহত রাখুন। তবে সাবধান, এবিষয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগবেন না। নিজের অবস্থান নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগা বা অহংকারী হওয়া যাবে না। যদি আপনার অবস্থান থেকে আপনাকে সরিয়ে দেয়া হয় তবে সেটা নিয়ে দুঃখ পাওয়া যাবে না।

    ১৭। নিজের ভুল ও পূর্বের সরকারগুলোর অপকর্ম থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন। তাদের খারাপ কাজগুলো যেন আপনাকে একথা সরণ করিয়ে দেয় যে, এগুলোতে লিপ্ত হওয়া যাবে না। নিজেকে ভালো আমল ও উত্তম মূল্যবোধের সাথে জুড়ে রাখুন। সালাফে সালেহীনের আদব-আখলাক দ্বারা নিজেদেরকে সুসজ্জিত করুন।

    গরীবদেরকে সহযোগিতা করুন:

    ঈদুল ফিতরের এই পবিত্র দিনে গরীব ও দুস্থ লোকজনের কথা স্মরণ রাখুন। আমি আফগানিস্তানের ধনী ও সম্পদশালীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা এই গরীব ও দুস্থ আফগানদের প্রতি আপনাদের সহযোগিতার হাত প্রসারিত করুন। আপনাদের সম্পদ গরিব আফগান নাগরিকদের উপকারে ব্যয় করার চেষ্টা করুন। আমাদের গরীব আফগান নাগরিকদের উপকারের নিমিত্তে আপনাদের সম্পদ কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।

    পরিশেষে আমি আবারও আপনাদের সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের মোবারকবাদ জানাই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে সকল ধরনের ক্ষতি ও বিপর্যয় থেকে হেফাজত করুন। আল্লাহ আপনাদের সকল ক্ষেত্রে সফলতা দান করুন, আমীন।


    ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের প্রধান

    আমীরুল মুমিনীন শাইখুল কুরআন ও হাদীস মৌলভী হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ

    ২৭/০৯/১৪৪৫ হিজরী চন্দ্র-বর্ষ

    ০৬/০৪/২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

    **********

    للقرائة المباشرة والتحميل
    সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
    For Direct Reading and Downloading






    روابط بي دي اب
    PDF (259 KB)
    পিডিএফ ডাউনলোড করুন [২৫৯ কিলোবাইট]


    https://archive.org/download/eid-ul-...%20Muminin.pdf
    https://workdrive.zohopublic.eu/file...0b6862fbd9494c
    https://drive.internxt.com/sh/file/bb8aebb3-91e6-4408-a5a1-280b593bc323/8d6b5742ca4d425a2b0ed30c8cbcbff894f885f92c43181293 2f55d1b8d35e1a
    https://asshuhada3.files.wordpress.c...ul-muminin.pdf

    https://www.mediafire.com/file/v9ejz...minin.pdf/file
    https://mega.nz/file/8PNxFQbJ#wPFy0j...dke-2tlwjr6z5E


    روابط ورد
    Word (530 KB)
    ওয়ার্ড [৫৩০ কিলোবাইট]


    https://archive.org/download/eid-ul-...20Muminin.docx
    https://workdrive.zohopublic.eu/file...d54df42c9c5479
    https://drive.internxt.com/sh/file/9c66f38f-2ac2-4e6f-8da6-766e6d0e6978/d97b086b368620d03b58e6e07d4d40c547e6b213dfb3d8c760 b4d2aca996771f
    https://asshuhada3.files.wordpress.c...l-muminin.docx

    https://www.mediafire.com/file/5may5...inin.docx/file
    https://mega.nz/file/MTEXmCLa#REqFxUf5nYRTkHBA8lhUF6knI4eOJ6InZcwlVj__P Hc


    روابط الغلاف- ١
    book Banner (3.4 MB)
    বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [৩.৪ মেগাবাইট]


    https://archive.org/download/eid-ul-...in%20Cover.jpg
    https://workdrive.zohopublic.eu/file...1c9904edac136a
    https://drive.internxt.com/sh/file/c05c4381-14f9-4957-ba0a-36db3868fb74/71f26f1c38b41c7b4efcac81c42ecc4789666d6f4ae68be40d 64c1e9e7c2d751
    https://asshuhada3.files.wordpress.c...inin-cover.jpg

    https://www.mediafire.com/file/k8gx0...Cover.jpg/file
    https://mega.nz/file/JSVWASZL#iXd770uTrN4SJlTg9yTbXWfic5RrVHl1LpyeLOx3j rc


    روابط الغلاف- ٢
    Banner (781 KB)
    ব্যানার ডাউনলোড করুন [৭৮১ কিলোবাইট]


    https://archive.org/download/eid-ul-...n%20Banner.jpg
    https://workdrive.zohopublic.eu/file...2dcad679d197a0
    https://drive.internxt.com/sh/file/be6dbddc-6f7f-4635-a5e5-17d5d9bffca8/c179883d75edf03500b352af3d42f0b7de9264afadc7684e8c c5e3be0002e2b2
    https://asshuhada3.files.wordpress.c...nin-banner.jpg

    https://www.mediafire.com/file/0u3do...anner.jpg/file
    https://mega.nz/file/AHUQxDLK#B71JFFuVCrBa8NzwiAJSzdQSSfY1foePrBhIsf80J V4


    ************

    مع تحيّات إخوانكم
    في مؤسسة الشهداء للإنتاج الإعلامي
    আপনাদের দোয়ায়
    আশ শুহাদা মিডিয়ার ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
    In your dua remember your brothers of
    Ash Shuhada Media
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 04-21-2024, 08:35 AM.

  • #2
    আলহামদুলিল্লাহ!! আল্লাহ তায়ালা আমীরুল মুমিনিন হাফিজাহুল্লাহকে নিরাপদে রাখুন!!
    রার্তাটির অপেক্ষায় রইলাম।

    Comment


    • #3
      নতুন মিডিয়া দেখা যাচ্ছে!
      আলহামদুলিল্লাহ! সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ!!
      আল্লাহ আশ শুহাদা মিডিয়াকে কায়েম ও দাওয়াম রাখুন । পরিচালক ভাইদের আল্লাহ কবুল করুন , মাকবুল করুন।
      আমীন আমীন!!
      Last edited by Munshi Abdur Rahman; 04-10-2024, 09:59 PM.

      Comment


      • #4
        আশ শুহাদা মিডিয়া
        শিরোনাম থেকে অচিরেই আসছে ইনশাআল্লাহ... এটা কেটে দিলে ভাল হয়।
        ফোরামের মোডারেটর ভাইদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment


        • #5
          Originally posted by abu ahmad View Post
          আশ শুহাদা মিডিয়া
          শিরোনাম থেকে অচিরেই আসছে ইনশাআল্লাহ... এটা কেটে দিলে ভাল হয়।
          ফোরামের মোডারেটর ভাইদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।
          জ্বী ভাই! কেটে দিলে ভালো হয়।
          জাযাকাল্লাহু খাইরান

          Comment

          Working...
          X