আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত
গাজার পয়গাম
উম্মাহর জাগরণ ও উম্মাহর জিহাদের যুগান্তকারী বাঁক।।
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ১ম পর্ব
===================
গাজার পয়গাম
উম্মাহর জাগরণ ও উম্মাহর জিহাদের যুগান্তকারী বাঁক।।
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ১ম পর্ব
===================
بسم الله الرحمن الرحيم، والحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على إمام المجاهدين نبينا وحبيبنا وصفي ربنا محمد وآله وصحبه أجمعين ومن تبعه بإحسان إلى يوم الدين
.
.
قال الله تعالى بعد أعوذ بالله من الشيطان الرجيم: وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الْبُرُوجِ ﴿١﴾ وَالْيَوْمِ الْمَوْعُودِ ﴿٢﴾ وَشَاهِدٍ وَمَشْهُودٍ ﴿٣﴾ قُتِلَ أَصْحَابُ الْأُخْدُودِ ﴿٤﴾ النَّارِ ذَاتِ الْوَقُودِ ﴿٥﴾ إِذْ هُمْ عَلَيْهَا قُعُودٌ ﴿٦﴾ وَهُمْ عَلَىٰ مَا يَفْعَلُونَ بِالْمُؤْمِنِينَ شُهُودٌ ﴿٧﴾ وَمَا نَقَمُوا مِنْهُمْ إِلَّا أَن يُؤْمِنُوا بِاللَّهِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ ﴿٨﴾ الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ ﴿٩﴾
وقال جل وعلا: أَلَا تُقَاتِلُونَ قَوْمًا نَّكَثُوا أَيْمَانَهُمْ وَهَمُّوا بِإِخْرَاجِ الرَّسُولِ وَهُم بَدَءُوكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ ۚ أَتَخْشَوْنَهُمْ ۚ فَاللَّهُ أَحَقُّ أَن تَخْشَوْهُ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ﴿١٣﴾ قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللَّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِينَ ﴿١٤﴾ وَيُذْهِبْ غَيْظَ قُلُوبِهِمْ ۗ وَيَتُوبُ اللَّهُ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ ﴿١٥﴾
হামদ ও সালাতের পর...
ভারত উপমহাদেশ এবং পুরো দুনিয়ায় বসবাসকারী আমার ঈমানদার ভাই ও বোনেরা!
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ!
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর দয়া ও বিশেষ অনুগ্রহে ‘মসজিদে আকসা’ পুনরুদ্ধারের জিহাদ, যা মূলত আকসার সম্মান রক্ষা করা এবং তাকে স্বাধীন করার জন্য সমগ্র উম্মাহর জিহাদ, তা আজ একটি বিশেষ স্তরে পৌঁছেছে। আজ পৃথিবীর সকল ঘটনা প্রবাহ এটাই বর্ণনা করছে যে, এই অধ্যায়টি উম্মতে মুসলিমার ইতিহাসে একটি সম্পূর্ণ নতুন যুগের সূচনা হিসেবে প্রমাণিত হবে, ইনশাআল্লাহ। এই অধ্যায়ের বর্তমান চিত্র, হৃদয়ে প্রশান্তি ও আনন্দ দানকারী মহান ঘটনা হল ‘তুফানুল আকসা’। এই বরকতময় ও অতুলনীয় তুফান গাজার মহান মুজাহিদ এবং ধৈর্যশীল ও দৃঢ়চেতা জনতার, লাঞ্ছনার জিন্দেগির উপর ইজ্জতের জিন্দেগিকে প্রাধান্য দেয়ার দ্বারাই সম্ভব হয়েছে। তারা ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার উপর চিরস্থায়ী পরকালের নেয়ামতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। নিশ্চয়ই তারা উম্মতের উপর থেকে লাঞ্ছনা ও অপমানের সেই দাগ ধুয়ে দিবেন, যা উম্মাহর প্রতারকদের নিকৃষ্ট প্রতারণা এবং গাদ্দারীর কারণে উম্মাহর গায়ে লেগে ছিল।
একথা বাস্তব যে, তাদেরকে দেখে প্রত্যেক ঈমানদারের অন্তরের গভীরে ইসলাম ও মুসলিমদের ইজ্জত ও মর্যাদার একটি নতুন অনুভূতি জাগ্রত হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, এই ‘তুফানুল আকসা’ এবং এর পরের ঘটনাগুলোর দ্বারা পুরা উম্মতের মাঝেই জিহাদ ও ইস্তিশহাদের আগ্রহ প্রবল হতে দেখা যাচ্ছে। শিশু, বৃদ্ধ এবং যুবকেরা, সাথে মহিলারা সহ সকলেই জিহাদের ময়দানে অবতীর্ণ হওয়ার পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে। কৃতজ্ঞতায় আমাদের চোখ ভিজে যায়, আমরা যখন দেখি যে, আকসার জন্য বাঁচতে-মরতে এবং শহীদ হতে সারা বিশ্বে মানুষ শপথ নিচ্ছে।
আমরা দোয়া করি, এই আগ্রহ যেন কখনও দমে না যায়। এই মহান উদ্দেশ্য ও সংকল্প যেন কখনও থেমে না যায়। এই ঘটনা এবং এই যুদ্ধ যেন আমাদের জীবনে এমন একটি সার্থক পরিবর্তন নিয়ে আসে যার লক্ষ্য, কেন্দ্র এবং ভিত্তি হবে আল্লাহ তাআলার প্রতি ভালোবাসা ও তাঁর বন্দেগি করা। আল্লাহ যেন আমাদের জীবনে এমন পরিবর্তন ও জাগরণ আনেন - যার পথ হবে জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ। গন্তব্য হবে আকসায় পৌঁছে বিজয় অর্জন করা অথবা আকসার জিহাদে কুরবান হয়ে শাহাদাতের পেয়ালা পান করা।
আল্লাহর কাছেই আমরা দোয়া করি, তিনিই দোয়া শ্রবণকারী এবং তা কবুলকারী। হে আল্লাহ! উম্মতে মুসলিমার সকল মুজাহিদকে, সকল ঈমানদারকে আপনি তাওফীক দান করুন, তারা সকলেই যেন কুদসের মুজাহিদদের সঙ্গী হতে পারে। তারা যেন ক্রন্দনরত মা, বোনদের এবং কুদসের ভূমিতে শহীদ হওয়া আমাদের শিশু বাচ্চাদের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ইহুদী খ্রিস্টানদের শয়তানি জোটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে। তারা যেন এই জালেমদের উপর আযাবে ইলাহী হয়ে নাযিল হয়।
হে আল্লাহ! পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ - সর্বত্র যেন এই উম্মতে মুসলিমা এই মহান জিহাদের সৈন্যদলে যোগ দিয়ে এমন দৃশ্য তৈরি করে, যা দেখার জন্য ইতিহাসকে শত বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে[1]। তাদেরকে সেই মহান সৈন্য দলে পরিণত করুন, যাদের আবির্ভাব ও অগ্রগতির জন্য সারা বিশ্বের নির্যাতিত মুসলিমরা চোখের অশ্রু ঝরিয়ে এই দোয়া করছে যে,
رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَـذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ وَلِيًّا وَاجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ نَصِيرًا
অর্থঃ “হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষালম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও।।” (সূরা নিসা.. ০৪:৭৫)
আজ যদি এই মাজলুমদের আর্তনাদে সাড়া দেয়া হয়, আমাদের উপর যে ফরয দায়িত্ব আছে তা আদায় করার পথে সমস্ত সংশয় যদি দূর হয়ে যায়, মসজিদে আকসা স্বাধীন করতে যদি আবশ্যকীয় এবং কাঙ্ক্ষিত জিহাদ শুরু হয়ে যায়, উম্মাহর যুবকরা খোরাসান ও ভারত উপমহাদেশ থেকে নিয়ে জাযীরাতুল আরব, সিরিয়া ও আফ্রিকা থেকে যদি এই জিহাদী সৈন্যদলে যুক্ত হয় এবং ইবলীসের লস্করের উপর হামলা করার জন্য যদি পুরা পৃথিবীকে জিহাদের ময়দান বানিয়ে নেয়...(আল্লাহর ইচ্ছায় এখন এমনই হবে, কারণ এছাড়া আকসাকে মুক্ত করার আর কোনো পথ নেই) তবে ইনশাআল্লাহ, সাহায্য ও বিজয় বেশি দূরে নয়।
ইনশাআল্লাহ, এরাই হবে সেই বাহিনী যাদের শেষ বিজয়ের সুসংবাদ নবীউল মালাহিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখন থেকে চৌদ্দশত বছর আগেই দিয়েছেন। যারা একটা বিজয়ের পরে দ্বিতীয় বিজয়ের দিকে ছুটে যাবে, এবং এক অঞ্চলের পরে অন্য অঞ্চলের দিকে অগ্রসর হবে। এক হাত কেটে যাওয়ার পরে অন্য হাতে জিহাদের পতাকা আঁকড়ে ধরবে। মৃত্যু তাদের পথে বাঁধা হবে না। বরং তাদের রক্ত উম্মতের সম্মান ও মর্যাদার এই সফরে শক্তি যুগিয়ে এই কাফেলাকে আরও অগ্রসর করবে। সর্বশেষ সেই সময় আসবে, যখন আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আদল ও ইনসাফ কায়েম হবে। জুলুম ও কুফরের উপর প্রতিষ্ঠিত দাজ্জালি শাসন ব্যবস্থার জন্য পৃথিবীর কোথাও জায়গা হবে না। ইনশাআল্লাহ।
১ ১৯২৪সালেউসমানীসালতানাতের পতনের পর মুসলিম উম্মাহ কুফফারদের গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। আল্লাহর দীন ভূলুন্ঠিত হতে থাকে। উম্মতে মুসলিমার গোলামী, লাঞ্ছনা এবং কুফফার গোষ্ঠীর উন্নতি, আধিপত্যের সময়কাল এখনও একশত বছর পূর্ণ হয়নি। আলহামদুল্লিাহ! এরই মধ্যে মুসলিম উম্মাহ জিহাদ ও দৃঢ়তার পথে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি জানান দিচ্ছে যে, উম্মাহ তার প্রকৃত ফরয দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হয়েছে। এই দায়িত্ব আদায়ের মাধ্যমে অচিরেই পৃথিবীর চিত্র ও মানচিত্র পরিবর্তন হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
Comment